তিতিক্ষা-৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি
লিখেছেন জুলিয়ান সিদ্দিকী (তারিখ: শুক্র, ১২/০৯/২০০৮ - ১২:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাত বেড়ে যাচ্ছে।

হয়তো রাত বৃদ্ধির সঙ্গেসঙ্গে বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকাদের কান্না গাঢ় থেকে আরো গাঢ়তর হচ্ছে। সামনে উচ্ছিষ্ট ভাতের থালা থাকলেও কুপির নরম আলোর দিকে তাকিয়ে মনেমনে হাতেম আলির চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করছিলো রবিউল। আর আজকের এই জটিলতায় নিজকে জড়িয়ে ফেলার অপরিণামদর্শিতার জন্য গাল-মন্দ করছিলো অদৃষ্টকে।

এতদিন সে জেনে এসেছে যে, হাতেম আলি সত্যিই একজন ভালো মানুষ। গ্রমের কোনো বিরোধ হাঙ্গামার সাথে এ পর্যন্ত তার নাম কোথাও উচ্চারিত হয়নি। তেমন একজন মানুষ যার বিরুদ্ধে না বলে কারো কুঁটোটাও ধরার অভিযোগ নেই, সেই মানুষ কী করে এতটা অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে?

যতদিন ধরে গয়নাকে জানে রবিউল, তার রাগী আর অভিমানী স্বভাবের কথাই জেনে এসেছে। কিন্তু তার যে এতটা সহনশীল আর ধৈর্যশীল একটি মন রয়েছে, সেই সংবাদ কখনও হাতেম আলির কাছ থেকে জানা যায়নি। হয়তো বা গয়নার সেই শান্ত দিকটি আবিষ্কার করতে পেরেই দিনকে দিন অসৎ আর লোভী হয়ে উঠেছে সে।

যদিও হাতেম আলির ঘরে ফিরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই গয়নার, তবুও কোনোভাবে যদি তার মন গলে আর সে ফিরে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে অনুরূপ ঘটনা ঘটলে সে নিজেও দায়ী না হয়ে পারবে না। আর এ দায় একবার তার কাঁধে চাপলে গয়নার সামনে সে কখনোই সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। তখনই রবিউলের মনে হয় যে, এ নিয়ে আগে হাতেম আলির সঙ্গে কথা বলা দরকার। সেখানকার খুঁটি পোক্ত না হলে এদিককার খুঁটি হেলানো সম্ভব হবে না।

গয়না হঠাৎ ঘরে এসে বললো, ‘ভাই, আপনের খাওয়াডা আমি নষ্ট কইরা দিলাম! আবার ভাত দেই কয়ডা? খাইয়া মনে হয় আপনের পেট ভরে নাই!’

রবিউল ত্রস্ত-ব্যস্ত হয়ে বললো, ‘না না বইন, আমার পেট ঠিকই ভরছে! আপনে নতুন কইরা আর ঝামেলা কইরেন না!’

গয়না ফের রবিউলের সামনে বসলে দেখা যায় যে, গয়না তার শাড়ি ব্লাউজ দুইই পাল্টেছে। চুলে চিরুনিও লাগিয়েছে। চুলগুলো পেছনের দিকে টানটান করে বেঁধেছে নতুন খোঁপা। চেহারায় নেই কিছুক্ষণ আগের সেই ভয়াল-রূদ্র রূপ। আধ-ঘোমটায় দেখাচ্ছেও বেশ চমৎকার আর পরিপাটি।

রবিউল মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে গয়নার মুখের দিকে। কিন্তু রবিউলের মুগ্ধতা বুঝতে পারে না গয়না। বলে, ‘চিন্তা করেন কি?’

রবিউল বললো, ‘রাইত বাইড়া যাইতাছে। দেরি হইলে গাড়ি পামু না!’

গয়না কেমন আশাহতের মত বলে, ‘আমার সব কথা তো কইতে পারলাম না! রাইতটা থাইক্যা যান! জোনাকে বইয়া সারা রাইত দুইজনে কথা কমু!‘

‘থাকতে পারলে তো ভালাই হইতো! কিন্তু জনু যে ঘরে একলা!’

‘রাইত কইরা যাইবেন, এইডা কি ভালা দেখাইবো?’

‘কোনো উপায় নাই বইন! তয় আপনে আরো ভালো মতন ভাইব্যা দ্যাখেন, এতগুলা পোলাপান আপনেরে হারাইয়া এতিম হইয়া যাইবো। মা ছাড়া বাইত্যে হ্যারা কোই থাকবো, কোই ঘুমাইবো? কে হ্যাগো তত্ত্ব-তালাশ করবো?’

গয়না মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে একদৃষ্টে। যেন রবিউলের কোনো কথাই তার কানে প্রবেশ করছে না।
গয়নার নিরবতায় রবিউল আবার বলে, ‘তার উপরে আপনে যাইবেন না এইডাই যদি শ্যাষ কথা হয়, তাইলে ঘরে হতাই মা আইবো। হতাই মা ঘরে থাকলে যে পোলাপানের কেমন দুর্দশা হয় কৌকা আর বুইট্যারে দেইখ্যা বুঝতে পারেন না?’

গয়না রবিউলের উচ্ছিষ্ট ভাতের থালা, ভাত-তরকারির হাঁড়ি-পাতিল গুছাতে গুছাতে বলে, ‘অখন আমি নিজে কিছুই ঠিক করতে পারি না। কিছু কইতেও পারি না। মা আছে, ভাইয়েরা আছে, হ্যারা যেমন কইবো আমারও হ্যামনই করতে হইবো!’

কথাগুলো বলে, গয়না তার বড়বড় দু'চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে রবিউলের দিকে। কিন্তু অকস্মাৎ রবিউলের যে কি হয়, চোখ দুটো জ্বালা করে কেমন টলমল করে ওঠে। আর তা দেখেই বুঝি গয়নার বুকের ভেতর চাপা পড়ে থাকা অবশিষ্ট কান্নাটুকু চোখের বাঁধ উপচিয়ে গড়িয়ে পড়ে।

একবার চোখ মুছে গয়না আস্তে-ধীরে বলতে থাকে, ‘ময়নার বাপের লগে যখন আমার বিয়া ঠিক হইলো, তখন তার বয়স চল্লিশ। আমি কেলাস সিক্সে পড়ি। আমার বয়স তখন খুব বেশি হইলেও চৈদ্দ বছর পার হয় নাই। হেই সময় আমারে একবার কেউ জিগায় নাই যে, বিয়া করতে আমার মত আছে কি নাই! নিজেও মুখ ফুইট্যা কইতে পারি নাই যে, এমন মানুষরে আমি বিয়া করতে পারমু না, তার লগে সংসার করতে পারমু না! বিয়ার সময় নিজের ইচ্ছা বইল্যা কিছু আছিলো না। এখনও আছে বইল্যা বুঝতে পারি না। খালি আমি ক্যান, কোনো মাইয়া মানুষের মনের ইচ্ছার দাম আছে বইল্যা মনে হয় না। তারা যারডা খায়, পিন্দে, যার বাইত্যে থাকে, তাগো ইচ্ছাই সব!’

রবিউলের সামনে আশার শেষ প্রদীপটাও প্রায় নিভতে বসেছে দেখে সে বলে উঠলো, ‘হেইডা মানি! তাও আপনে য্যামনে কইবেন হ্যামনে যদি হাতেম ভাই রাজি হয়, আপনের সব কথা মাইন্যা লয়, তাইলে তো আপনের ফিরা যাইতে আপত্তি নাই?’

রবিউল তার জিজ্ঞাসার কোনো উত্তর না পেয়ে উদ্ভ্রান্তের মত গয়নার একটি হাত চেপে ধরে বলে, ‘ভাবি,আপনে ভাইব্যা দ্যাখেন, একটা ঘর ভাইঙ্গা ফালাইতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু ঘরটা বানাইতে না যত সময় লাগে, গুছাইতে লাগে আরো বেশি দিন! তাই কইতাছিলাম, আপনের গুছাইন্যা ঘর ফালাইয়া নতুন কইরা ঘর-সংসার সাজাইতে গেলে হেই মন আর ধৈর্য আপনের হইবো না!’

কথা শেষ করে গয়নার মুখের দিকে রাজ্যের প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে রবিউল। কিন্তু গয়না হ্যাঁ কিংবা না কোনোটাই বলে না।

রবিউল গয়নার হাত ছেড়ে দিয়ে আবার বলে, ‘কাইল-পরশু হাতেম ভাইরে নিয়া আমু। আমি কথা দিতাছি, পরে এমন ঘটনা ঘটলে সুপারিশ নিয়া কোনোদিন আমু না!’

তারপরই ঝাঁকি দিয়ে উঠে দাঁড়ায় সে। ঘর থেকে বের হয়ে উঠোনে নামলে গয়নাও বেরিয়ে আসে। বলে, ‘কামডা বেশি ভালা করলেন না। রাইতটা থাকলে খুশি হইতাম!’

‘আইজ আর না! আপনেগরে নিয়া যেই বিপদে আছি, তা আগে দূর হউক!’

‘মায়ের লগে দ্যাখা করবেন না?’

‘সময় নাই!’ বলে, রবিউল দ্রুতপায়ে বাড়ির ঢাল বেয়ে পাকা সড়কের সংযোগ রাস্তায় উঠে যায়। একবার কি মনে করে যেন থামে সে। মাথা ঘুরিয়ে হয়তো গয়নাকে দেখে। কিন্তু কিছু না বলেই আবার ঘুরে হাঁটতে থাকে।

পূবাকাশে গোলগাল বড় চাঁদ দেখা যায়। চাঁদের আবছা আলোয় রবিউলকে চলে যেতে দেখে গয়না। মনে হয় তার যাবতীয় স্বপ্ন, সুখ-শান্তি আর আশা-আকাঙ্খা মুঠোবন্দি করে নিয়ে যাচ্ছে মানুষটা। গয়নার একবার ইচ্ছে হয়, চিৎকার করে বলে, ‘রবু ভাই, আমারে সঙ্গে নিয়া যাও!’
কিন্তু তার গোপন ইচ্ছে নিরাশ বুকের অـকার গহ্বরেই খাবি খায়। যেখানে প্রতিনিয়ত মৃত্যুবরণ করছে তার যাবতীয় আশা-আকাঙ্খা আর স্বপ্ন-ভালোবাসার রঙিন প্রজাপতিগুলো।

নারী হয়ে জন্মানোর যে পাপ ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আতুর ঘর থেকে শিরোধার্য করে সে জীবনের এতটা কন্টকিত পথ অতিক্রম করে এসেছে, সেই পথ পরিক্রমার অনিবার্য মাশুল হিসেবেই তার সমস্ত ইচ্ছে আর অনিচ্ছার সাদা-কালো পায়রাগুলোকে গলা টিপে হত্যা করতে হবে। যখন থেকে সে বুঝতে শিখেছে, তখনই জেনে গেছে এ আপ্তবাক্য। এ সত্য কেউ তাকে শিখিয়ে দেয়নি বা মমতা দিয়েও বুঝিয়ে দেয়নি। সে শিখেছে তার চার পাশের অবরুদ্ধতা থেকে। অবিশ্বাস আর নির্ভরশীলতার হীনতা থেকে। নারী-পুরুষ সবাই মিলে তাকে বুঝতে বাধ্য করেছে যে, তুমি শুধুই নারী। সেই কারণেই তুমি পরাধীনা। যার উপর নির্ভরশীল, তুমি তারই ইচ্ছাধীন।

সে যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে, তখনই শুরু হয় তার পাত্র সন্ধানের কাজ। মেয়ের কারণে কখন পিতাকে সমাজের কাছে অপদস্ত হতে হয়, সেই ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন। মা তার কন্যাকে কিশোরী থেকে যুবতী করতে ভয় পান। স্কুলে যাওয়ার পথে পাশ থেকে নানা রকম মন্তব্য শুনে মেয়ের চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসে। মা জানতে পেরে মেয়েকে প্রতিবাদ করা বা মাথা উঁচু করা না শিখিয়ে বলেন, ‘মাটির দিকে চাইয়া চুপচাপ হাঁটবি!’

গ্রমের উঠতি বয়সের ছেলে-ছোকরারা বাড়ির সীমানা পেরিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ বেসুরো কন্ঠে শোনো তাজেল গো বলে রূপবানের গান গেয়ে ওঠে। রাতের বেলা দুশ্চিন্তায় পিতা-মাতার ঘুম হয় না। দিনের বেলা মেয়ের কোনো বিপদ হয় কিনা ভেবে, কাজে মন বসাতে পারেন না। মেয়েটি যতক্ষণ স্কুল থেকে ফিরে না আসে, ততক্ষণ পথের উপর চোখ রেখে মা দোওয়া ইউনুস পড়তে থাকেন।

নয়তো গয়নার ইচ্ছে ছিলো আরো পড়বে। সেই সঙ্গে আরও একটি বাসনা ছিলো হাবিব বি.এস.সিকে ঘিরে। যদিও হাবিব তখন ছাত্র মাত্র। ছুটি-ছাটায় বাড়ি এলে অংক আর বিজ্ঞানের ক্লাস নিতো। তবুও কেমন করে যেন ছাত্রাবস্থাতেই তার নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিলো বি.এস.সি কথাটি।

হাবিবকে কোনো কথা জানানোর সুযোগ বা বয়স তখন হয়নি গয়নার। তার আগেই তার বিয়ের জন্যে হন্যে হয়ে উঠলেন সবাই। কিন্তু কিশোরী মেয়েটির ছোট্ট মনটির ভেতর যে, কোনো গোপন বাসনার কলি প্রস্ফুটিত হওয়ার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিলো, তা জানবার কিংবা খেয়াল করার কথা মনে হয়নি কারো।
কিন্তু হায়, হতদরিদ্র হাতেম আলির সংসারে এসে ছ'মাসের মাথাতেই প্রথমবারের মত ছেঁড়া আর ময়লা কাপড় পরা শুরু হয় তার। আশা এবং চেষ্টা ছিলো যে, হাতেম আলির সংসারের দুর্দশা ঘুঁচিয়ে দেবে। তার বদলে এক সময় সে নিজেই হয়ে উঠলো দুর্দশাগ্রস্ত।
বিয়ের আগে যেমন কেউ জানতে চায়নি যে, হাতেম আলির সঙ্গে সে সংসার করতে পারবে কিনা। বিয়ের পরও কেউ একবার জিজ্ঞেস করেনি যে, হাতেম আলির ঘরে তার দিন কাটছে কেমন!

অভাবের সংসারে হাতেম আলির পাশাপাশি একজন সমর্থ পুরুষের মতই হ্যান্ড-ট্রাক্টর অথবা হালের বলদের অভাবে নিজের হাতে কোদাল দিয়ে জমি কুপিয়ে বা একাএকা লাঙল টেনে জমিকে ফসলের উপযোগী করেছে গয়না। জন-কামলার মজুরী জুটাতে না পেরে স্বামীর সঙ্গে সেঁউতি দিয়ে জমিতে পানি তুলেছে। জমির আগাছা নিড়িয়ে নিয়ম মত সার ছিটিয়ে কীটনাশক দেওয়া থেকেও পিছিয়ে থাকেনি। অথচ তার স্বামী এসব শ্রমের অবদানকে কখনও মূল্যায়ন করেনি। এতটুকু সহানুভূতি জানিয়েও স্বীকৃতি দেয়নি কখনও। সে কি হাতেম আলির সংসারে জীবনভর দিয়েই যাবে? সামান্য প্রতিদান কি আশা করতে পারে না? এ জীবনে কী পেলো সে? না ভাত-কাপড়, না সুখ-শান্তি। না সামান্যতম সোহাগ-ভালোবাসা!

অথচ হাতেম আলির জীবনে চৈত্রের খরাদহে এক টুকরো ছায়ার মত লেগে থাকা বা জড়িয়ে থাকা রবিউলকে তার ভালো লাগে প্রথম থেকেই। তার স্ত্রী জয়নাবও অসম্ভব ভালোবাসে স্বামীকে। কিন্তু জয়নাবের আচরণে তা প্রকাশ পায় না কখনো। যদিও বিয়ে তার মনোপূত হয়নি, তবুও চেয়েছিলো হাতেম আলিকেই ভালোবাসতে। জয়নাবের মত অতটা না হোক, সিকি পরিমাণ হলেও তো চলতো! কিন্তু সে যে ন্যূনতম ভালোবাসাটুকুও দিতে পারে না হাতেম আলিকে! দিতে পারবে কি, চেষ্টা করেও মানুষটাকে কখনও ভালোবাসতে পারেনি সে। তাই সেই চেষ্টাও এখন আর করে না।

হাতেম আলির তাড়নার বলি হতে হতে গয়নার গর্ভ স্ফীত হয়েছে বারংবার। কিন্তু কোন সন্তানটি যে হাতেম আলির বাঞ্ছিত, তা নিশ্চিত করে বলতে পারবে না। অথচ জন্ম দেওয়ার আগেই অনাগত সন্তানের প্রতি পিতার ভালোবাসা আর স্নেহ দুইই থাকা কর্তব্য। এমনি নানা কথা ভাবতে ভাবতে গ্রাম্য-অশিক্ষিত আর বর্বর হাতেম আলির বিকট মুখভঙ্গী ও সেই সঙ্গে অশ্লীল ভাষার বাচনিক বিভিষীকা কল্পনা করে শিউড়ে ওঠে গয়না।

দূরের পথচলতি রবিউলের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেও পরিষ্কার চাঁদের আলোতে সে কাউকে দেখতে পায় না। হঠাৎ করেই কেন জানি তার কান্না পায়। ইচ্ছে হয় খুব জোরে জোরে চিৎকার করে কাঁদে।

(চলবে...)


মন্তব্য

পুতুল এর ছবি

ইচ্ছে হয় খুব জোরে জোরে চিৎকার করে কাঁদি! গয়নার সাথে।
ভাল হচ্ছে, তাড়াহুড়োর কিছু নেই। সময় লাগে লাগুক। গয়নাদের কথা খুব যত্ন করে লিখতে হবে। সব খানেই তো গয়নারা অবহেলীত! কবির চরণে যেন পুরো মনোযোগ পায়।
উদৃতি;
"সে যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে, তখনই শুরু হয় তার পাত্র সন্ধানের কাজ। মেয়ের কারণে কখন পিতাকে সমাজের কাছে অপদস্ত হতে হয়, সেই ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন। মা তার কন্যাকে কিশোরী থেকে যুবতী করতে ভয় পান। স্কুলে যাওয়ার পথে পাশ থেকে নানা রকম মন্তব্য শুনে মেয়ের চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসে। মা জানতে পেরে মেয়েকে প্রতিবাদ করা বা মাথা উঁচু করা না শিখিয়ে বলেন, ‘মাটির দিকে চাইয়া চুপচাপ হাঁটবি!’

গ্রমের উঠতি বয়সের ছেলে-ছোকরারা বাড়ির সীমানা পেরিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ বেসুরো কন্ঠে শোনো তাজেল গো বলে রূপবানের গান গেয়ে ওঠে। রাতের বেলা দুশ্চিন্তায় পিতা-মাতার ঘুম হয় না। দিনের বেলা মেয়ের কোনো বিপদ হয় কিনা ভেবে, কাজে মন বসাতে পারেন না। মেয়েটি যতক্ষণ স্কুল থেকে ফিরে না আসে, ততক্ষণ পথের উপর চোখ রেখে মা দোওয়া ইউনুস পড়তে থাকেন।"

খুব ভাল পর্যবেক্ষণ, সব খানে যেন এমনই নিখুত হয়।
পরিবেশ, পরিস্থিতি, আবহাওয়া ইত্যাদিও আসতে পারে।
নষ্ট সময় পড়ছি। শেষ হলে কিছু লিখব।
শুভেচ্ছা জানবেন।

**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

আপনার মন্তব্য সব সময়ই আমার জন্য এক বিরাট প্রাপ্তি বলে মনে হয়। কিন্তু সমালোচনা করেন আমার পিঠ বাঁচিয়ে। এটা কি আমার জন্য শুভ হবে? আমি চাই সমালোচনা হোক সবকিছু নিয়ে। যেখানে লেখক মার খাবে তাহলে তাই সই। মুখিয়ে আছি কঠিন সমালোচনার জন্যে।

উপন্যাসটি তো লিখে ফেলেছি আগেই। পোস্ট করার সময় একটু আধটু এডিট করছি। তাড়াহুড়োর সুযোগ নেই। এখানে অর্থাৎ সৌদি আরবে এসে যে ক'টা লিখেছি চেষ্টা করেছি পুরো মনোযোগ দিতে। এবং গয়না কে আবহমান নারী চরিত্র থেকে খানিকটা আলাদা করে দেখাতে চেষ্টা আছে আমার।

"নষ্ট সময়" হচ্ছে একটি সময়কালকে ধরার চেষ্টা। কতটুকু পেরেছি বুঝতে পারছি না। আপনার সমালোচনা যাকে বলে নির্মম হলেই ভালো হয়। আমার অন্তর্গত আমিটার দিকে একটু তাকানোর সুযোগ পাবো।

মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। এবং প্রত্যাশা আগামীর সমালোচনা।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বড় সাধ ছিল উপন্যাস লিখিব। হইল না। জুলিয়ান একটা পোস্ট দেন কেমনে উপন্যাস লেখা যায় তার উপর।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

মুর্শেদ, কী বিপদে ফালাইসেন আমারে! লগে লগে মডারেটরগোরেও বিপদে ফালাইতে চান নাকি? এমনিতেই মডারেটররা আমার উল্টা-সিধা পোস্ট আর মন্তব্য মুছতে মুছতে কাহিল। আবার কইতাসেন কেমনে উপন্যাস লেখা যায় তার উপরে একটা পোস্ট দিতে। আপনের কথা হুইন্যা শেষে মাইর খাই আরকি!

তয় চুপ্পে চুপ্পে কই- লেখা শুরু কইরা পোস্ট দিতে থাকেন। আর নিজের পোস্ট দেখতে দেখতেই টের পাইবেন কয় ভাপে ধান সিদ্ধ হয়!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।