শিল্লা সাম্রাজ্যের কথা-উপকথার শহর গিয়ংজু; ভ্রমন ও ছবি ব্লগ

কাজী মামুন এর ছবি
লিখেছেন কাজী মামুন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/১১/২০১০ - ৯:২০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

..দেশের নাম “দে হান মিন গুক” সংক্ষেপে ‘হানগুক’ শুনেছেন কখনো? এই নামেই নিজেদের দেশকে সম্মোধন করে কোরিয়ানরা।তাহলে কোরিয়া নামটি এলো কি করে?

এই ইতিহাস খূঁজতে হলে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে ২০০০ বছর আগের কোরিয়ার দিকে। তিন সাম্রাজ্যে বিভক্ত কোরিয়ার সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যটির নাম ছিল গোগোরিও, অপর দুটির একটি হলো ব্যাকজু অন্যটি শিল্লা। অনেক ভাঙা গড়ার পরে দশম শতাব্দীতে একত্রিত হয়ে শুরু হয় গোরিও সাম্রাজ্য। এই গোরিও থেকেই এসেছে কোরিয়া নামটি। কোরিয়ার তিন সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি
তিন সাম্রাজ্যের এক সাম্রাজ্য হলো শিল্লা; অর্থে, বিত্তে, ঐতিহ্যে, সংস্কৃতিতে সম্মৃদ্ধ এক সাম্রাজ্য। ইতিহাস বিরক্তিকর, জানি, তারচে আসুন আমরা ভ্রমন করে আসি।

[ছিন্নকথনের ৪র্থ পর্বে এই ভ্রমনের কথা উল্লেখ করেছিলাম, কয়েকটা ছবিও। পূর্বপাঠ জরুরী নয়]

গিয়ংজু আমার পাশের শহর, ১ ঘন্টার ড্রাইভ। প্রফেসর ফিলিপ এর গল্প শুনতে শুনতে ১ ঘন্টা কখন পার হয়ে গেছে টের পাই নি। প্রথম যাত্রাস্থল গিয়ংজু মিউওজিয়াম, সহকর্মী জাং অতি উৎসাহে আমাদের গাইড করছে।

DSC_5702
গেট পার হয়ে টের পেলাম মিউওজিয়ামটা ভিতরে সুবিশাল।

শুরুতেই দেখতে এলাম মূল মিউওজিয়াম এর বাইরে ‘এমিলি বেল’। প্রায় ২০ টন ওজন ও সাড়ে তিন মিটার উচ্চতার এই সুবিশাল ঘন্টাটি তৈরী করা হয়েছিল সপ্তম শতাব্দীতে। কথিত আছে যে এই ঘন্টাটি বাজানো হলে ৪০ মাইল দূর থেকেও এর শব্দ শোনা যায়। মর্মান্তিক একটি উপকথা এই ঘন্টার সাথে জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে বড় বড় দীঘিগুলোর পেছনে এমন কিছু উপকথা জড়িয়ে আছে, কিন্তু ঘন্টার সাথেও যে এমন উপকথা থাকতে পারে সেটা এই প্রথম দেখলাম। এই এমিলি নামটাও এসেছে উপকথা থেকেই। শিল্লার ভাষায় এ-মী-লি টার্মে’র মানে হলো কোরিয়ান ভাষায় ‘অম্মা’, বাংলা মানে ‘মা’। প্রথম বার রাজা গিয়ংদক এই ঘন্টাটি বানানোর কাজ শুরু করেন, বানানোর পর প্রায় এক ফুট পুরুত্বের এই ঘন্টা থেকে শব্দ বের হলো না কিছুতেই। এরপর আরো কয়েকবার সেই ব্রোঞ্জ গলানো হলো পুনরায় বানানো হলো, শব্দ হলো না। রাজা মারা গেলেন তাঁর স্বপ্নের ঘন্টার এর শব্দ শুনতে পেলেন না। এরপর তাঁর ছোট পুত্র আবার ঐ কাজ শুরু করলেন, কিছুতেই কিছু হয় না। ব্রোঞ্জ গলানো হচ্ছে ঘন্টা তৈরীর জন্যব্রোঞ্জ গলানো হচ্ছে ঘন্টা তৈরীর জন্যএরপর একদিন একজন বৌদ্ধ মঙ্ক স্বপ্ন দেখলেন যদি একটি জীবন্ত শিশুকে ঐ ব্রোঞ্জ এর সাথে গলানো হয় তাহলে ঐ ঘন্টা থেকে শব্দ হবে। তাই করা হলো, গ্রাম থেকে এক নিস্পাপ শিশু কন্যাকে নিয়ে এসে জীবন্ত গলানো হলো ঐ ২০ টন ব্রোঞ্জের সাথে। বানানো হলো ঘন্টা, প্রথমবার আঘাত করার সাথে সাথেই চমৎকার মিহি এক সূর ভেসে গেলো দূর দূরান্তে। কিন্তু সেই শব্দের সাথে মিশে গেলো সেই শিশুটির অম্মা বলে চিৎকারের ডাক। এখনো ঐ ঘন্টা বাজানো হলে শিশুটির অম্মা ডাক শুনতে পাওয়া যায়।
.

DSC_5672
এত সুন্দর ডিজাইনের এই বৃহদাকার বেল আমিও এই প্রথম দেখলাম।

এরপর মিউজিয়াম এর ভিতরটা ঘুরে দেখা- ট্যু বি অনেস্ট- মিউওজিয়ামটি বাইরে থেকে যতোটা সম্মৃদ্ধ মনে হয়েছে ভিতরে গিয়ে ততটাই হতাশ হয়েছি। আমাদের আঞ্চলিক জাদুঘরগুলোও (ময়নামতি বা বরেন্দ্র) এরচেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ, আমাদের নেই শুধু ভালো ব্যবস্থাপনা আর উপস্থাপনা। এরপরও কিছু জিনিশ ভালো লেগেই গেল- সোনা, গয়না, বুদ্ধ মুর্তি, ছোট খাটো কিছু ভাষ্কর্য।

Untitled
মিউজিয়াম এর বারান্দায় আটকে আছে কিছু সবুজ, ছবির ফ্রেমের মতো।

Untitled1
মিউজিয়াম এর ভিতরে দেখা ছোট্ট একটি সোনার হাত।

DSC_5701
গুহাচিত্র। আস্ত গুহার দেয়ালই তুলে এনে মিউজিয়ামে বসিয়ে দেয়া হয়েছে।

মিউজিয়াম থেকে বের হয়ে গাড়িতে করে আরো ৩০ মিনিট ড্রাইভের পর আমরা গেলাম বুলগুকসা টেম্পেল। ষষ্ট শতাব্দীতে তৈরীকৃত এই মন্দিরটিতে আছে কোরিয়ার বিখ্যাত দুটি প্যাগোডা। বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন মন্দির, অপূর্ব কাঠের কারুকার্য। চারপাশের পরিবেশ মুগ্ধ হওয়ার মতো। ধর্মীয় উপসনালয়গুলো এমনিতেই গুরু গম্ভীর একটা পরিবেশের হয়, বুলগুকসাও ভিন্ন নয়। শরৎ এখানে নানা রঙে সেজেছে।

DSC_5720
বুলগুকসার শরৎ

DSC_5734
প্যাগোডা

DSC_5744
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মন্দির

DSC_5733
মন্দিরে কাঠের কারুকার্য

বুলগুকসা থেকে ঘুরে ফিরে আমরা গেলাম গিয়ংজু এবং কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী টম্বগুলো দেখতে। সোজা বাংলায় গোরস্থান দেখতে। গোরস্থানও যে দেখার মতো জায়গা এটা এই ছনমা টম্বে না এলে জানা হতো না। গোধুলীর আলোয় অদ্ভুত লাগছিল সবুজে ছাওয়া পাহাড়্গুলো। এই পাহাড়্গুলোই নাকি একেকজনের সমাধী। এগুলোও পঞ্চম-ষষ্ট শতাব্দীর। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যার পাহাড়টির পেটের মধ্যে আছে ছোট একটা মিউজিয়াম এর মতো। রাজার সমাধীস্থলে এখনো একই ভাবে পড়ে আছে রাজার মাথার স্বর্ণের মুকুট, বেল্ট ও অন্যান্য সরঞ্জাম, ঠিক পাশেই ছোট একটি স্তুপের মধ্যে রাজার প্রিয় এবং ব্যবহারের সব মূল্যবান জিনিশপত্র। এটাই নাকি নিয়ম ছিল, মৃতব্যক্তির সাথে সাথে তাঁর প্রিয় সবকিছু সমাধীতে দিয়ে দেয়া হতো।

DSC_5788
ছনমা টম্ব

সন্ধ্যে ঘনিয়ে এলে আমরা গেলাম ট্রেডিশনাল একটা রেস্টুরেন্টে খেতে। POSTECH এর প্রফেসর ভদ্র মহিলা আমাদের জন্য আগেই খাবার অর্ডার করে রেখেছেন। খাবার মেন্যু হলো এক ধরনের সী ফুড স্যুপ। সয়াবিন এর সাথে ঝিনুক এবং চিংড়ি। মূল খাবারটির ছবি তোলা হয় নি, এখানে যা দেখছেন সবই হলো সাইড ডিশ। কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট এর এই প্রথাটা আমার বেশ লাগে। মোটামোটি ভালো রেস্টুরেন্ট হলেই ২০/৩০ প্রকারের সাইড ডিশ দেবে- এর মধেয় থাকে, নানা রকমের সবজি, শুটকি, সী ফুড, প্রিজার্বড ফুড, বাদাম, সালাদ, আরো আরো অনেক কিছু, এবং এই সবকিছুই ফ্রি। মানে এগুলো যত পরিমানেই খান, আপনাকে কোনো পয়সা দিতে হবে না।

DSC_5802
রেস্টুরেন্টে মূল খাবারের অপেক্ষায় থাকা সাইড ডিশ।

আনাপজি পন্ড, পরবর্তী গন্তব্য। শিল্লা সাম্রাজ্যের প্রমোদ কেন্দ্র। এখন এর চারপাশ জুড়ে গিয়ংজু ন্যাশনাল পার্ক। জায়গাটির মোহনীয় সৌন্দর্যের বর্ননা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। নানা রকম, খোলা মাঠ, সচ্ছ পুকুর, ঝর্ণা, ফোয়ারা, শান্ত পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে আমি এতটাই মোহিত ছিলাম যে, ফেরার পর টের পেয়েছি, বেশির ভাগ ছবি তোলার সময়ই আমি ফোকাস করতে ভুলে গেছি। একসাথে থাকার জোড় চেষ্টা করেও আমরা কয়েকজনকে হারিয়ে ফেললাম, এরপর অনেকক্ষন পরে ওদের খুঁজেও পাওয়া গেল। সঙ্গে থাকা সহযাত্রী, বন্ধু ও গাইড জাং বললো এরপর আমরা যাচ্ছি ছমছংদে অবজার্ভেটরিতে। ছমছংদে হলো সপ্তম শতাব্দীর শিল্লা সাম্রাজ্যের NASA; এখান থেকে হতো মহাকাশ গবেষণা। ছমছংদে হলো এখন পর্যন্ত টিকে থাকা পূর্ব এশিয়ার সবচেরে পুরোনো অবজার্ভেটরি। অন্ধকারে জ্বলজ্বল করতে থাকা তারা দেখার ঐ স্থাপনাটিকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল।

DSC_5808
আনাপজি পন্ডের পাশে খোলা মাঠ।

DSC_5857
বহু বর্নিল আনাপজি পন্ড

DSC_5882
শিল্লা সাম্রাজ্যের NASA

DSC_5919
জিরিম জঙ্গলের পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে ফিরছি আমরা।

DSC_5896
ফেরার পথে দেখা কোরিয়ান একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি।

ততক্ষনে রাত নটা বেজে গেছে। আমাদের গাড়িগুলো পার্ক করা আরো দুই কিলোমিটার দূরে, জাং এর সিদ্ধান্ত অনুসারে আমরা বিখ্যাত জিরিম ফরেস্ট একপাশে রেখে ভিতর দিয়ে হাটা শুরু করলাম। গিয়ংজু ট্যুরিস্ট সিটি। খুব কম মানুষজন বাস করে এখানে, বেশরভাগই বেশি বিদেশি ট্যুরিস্ট। এ কারণে কোরিয়ার এ শহরটি অন্যান্য শহরগুলোর চাইতে অনেক বেশি সুন্দর। রাস্তা ঘাট, এমন কি জঙ্গলগুলোকেও এত চমৎকার আলো দিয়ে ওরা সাজিয়ে রেখেছে যে, একবার আসলে যে কেউ মনে রাখবে এই শহরের কথা।
ফেরার পথে গাড়িতে উঠে টের পেলাম একটা দিন কত দ্রুত কেটে গেল!


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার এই লেখাটাও অন্য লেখার মতোই খুব ভালো লেগেছে....এই পোস্টের ছবি গুলা ও ভালো লেগেছে....!!!

tofayel71@gmail.com

কাজী মামুন এর ছবি

থ্যাঙ্কস তোফায়েল!

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শুধু সাইড ডিশগুলো খেয়ে আসলে হয় না? চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কাজী মামুন এর ছবি

যতবার ভালো রেস্টুরেন্টে খেতে যাই ততবার ঠিক এই কথাটাই মনে হয়। হাসি
সাইড ডিশের একটা ছবি দেখাই দেখেন-

কোরিয়ান সাইড ডিশ

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

তারাপ কোয়াস এর ছবি

ভ্রমণ ভালো লাগলো।
ঘণ্টার উপকথা গত পর্বেই অনুমান করছিলাম!
খাওয়াদাওয়া বিষয়ে নজরুল ভাইয়ের মন্তব্যের উপরে কথা নাই চোখ টিপি


love the life you live. live the life you love.

কাজী মামুন এর ছবি

থ্যাঙ্কস!
কোরিয়ান খাবার নিয়ে আলাদা করে একদিন পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে রাখছি।

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

কৌস্তুভ এর ছবি

সময় করে পড়ব, ইটা রাইখ্যা গেলাম... রেখে গেলাম।

কোরিয়ান এক বালিকাকে নিয়েও কিছু গল্প ছিল, সময় করে বলা যাবে। কিন্তু আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, চীনা বালিকাদের তুলনায় কোরিয়ান বালিকাদের বালিকা-বন্ধু (ট্রান্সলেশন প্রার্থনীয়) হিসাবে পাওয়া অনেক সহজতর কেন? অন্তত আমাদের ডেটা তাই বলছে।

কাজী মামুন এর ছবি

"চীনা বালিকাদের তুলনায় কোরিয়ান বালিকাদের বালিকা-বন্ধু (ট্রান্সলেশন প্রার্থনীয়) হিসাবে পাওয়া অনেক সহজতর কেন?"

ডাটা এনালাইসিস প্রয়োজন আসলেই- তবে আমার মনে হয়, নর্থ-আমেরিকাবাসী কোরিয়ান/চাইনিজ বালিকা আর চায়না/কোরিয়া বাসী চাইনিজ/কোরিয়ান বালিকাদের মধ্যে এই ডাটায় কিছু একটা পার্থক্য তৈরী হবে। যাই হোক অভিজ্ঞতা থেকে কিছু হাইপোথিসিস করতে তো দোষ নেই! খাইছে

১- চৈনিকরা কোরিয়ানদের চাইতে একটু বেশি চালাক চতুর।
২- চীন-কোরিয়া-জাপান এদের রুপের বিশ্লেষণে- এভারেজ কোরিয়ান মেয়েরা দেখতে চীনাদের চাইতে খারাপ--তবে এদের টাকা হয়ে গেছে বলে প্লাস্টিক সার্জারী করে পুষিয়ে ফেলে--৫০ ভাগের বেশি মেয়েই তা করে।
৩- একটা ম্যুভি দেখেছিলাম- স্লিপিং ডিকশনারী, দেখে নিবেন। ক্ষেত্র বিশেষে এই স্লিপিং ডিকশনারীটা হওয়াটা একটা পার্থক্য তৈরী করে।
৪- আপনার কোরিয়ান বালিকার গল্প যুক্ত করুন-
৫- আপনার বিশ্লেষণ

দেঁতো হাসি

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

কৌস্তুভ এর ছবি

নর্থামেরিকাবাসী আর দেশীয়দের মধ্যে তফাত হয়ত অনেকটাই হবে, কিন্তু সদ্যাগত আর দেশীয়দের মধ্যে তফাত তো তত বেশি হবার কথা নয়।

আমি যেটা শুনেছি, সেটা এই যে কোরিয়ান-জাপানীরা বেশি উদারমনা হয় চীনাদের তুলনায়, সেটা বালক-বন্ধু পাতানোর ক্ষেত্রেও।

আপনি বলছেন চীনারা বেশি চালাকচতুর হয়? আমার তো ধারণা ছিল কোরিয়ানরা বেশি খোলামেলা আর ফলে চটপটে হয়।

এইখানে হঠাৎ স্লিপিং ডিকশনারির কথা কেন এল বুঝলুম না। মনে হচ্ছে আপনি (নিজের?) কিছু স্লিপিং ডিকশনারির গল্প শোনাতে আগ্রহী। ভাল, শুনিয়ে ফেলুন।

আর আজকাল এত বড়োদের সিনেমার লিঙ্ক দিচ্ছেন ক্যান যখন তখন? এইটায় তো যুবা ট্যাগও দেন নাই। বলি অইল কি?

হ্যাঁ, এই প্লাস্টিক সার্জারি ইত্যাদির ব্যাপারটা পড়েছিলাম কোথাও। কোরিয়ার ছেলেরা নাকি এখন ইউরোপিয়দের মত লম্বা হতে উৎসুক, লম্বা না হলে মেয়েরা আজকাল পাত্তা দেয় না, ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার এবং অন্যান্যদের কোরিয়ান বান্ধবী তথা বালিকা-বন্ধুর গল্প এখানে দিব ক্যানে? ওসব রস আমার পোস্টে ঢাললে বরং দুটো কমেন্ট বেশি আসবে খাইছে

আরো কিছু ব্যাখ্যা থাকলে কইয়া ফ্যালান...

কাজী মামুন এর ছবি

"মনে হচ্ছে আপনি (নিজের?) কিছু স্লিপিং ডিকশনারির গল্প শোনাতে আগ্রহী। ভাল, শুনিয়ে ফেলুন।
আর আজকাল এত বড়োদের সিনেমার লিঙ্ক দিচ্ছেন ক্যান যখন তখন? এইটায় তো যুবা ট্যাগও দেন নাই। বলি অইল কি?"

ভাই লিখলাম ভ্রমন পোস্ট, আপনি কই থেইক্যা বালিকা বন্ধু ধরে নিয়ে আসলেন, আমি একটু ব্যাখ্যার চেষ্টা করলাম বইলা আমার দোষ হইলো? খাইছে

কোরিয়ান বান্ধবী তথা বালিকা-বন্ধুর গল্প লিখুন- আপনার ব্লগেই লিখুন- দুইটা কমেন্ট না হয় বেশিই দিয়া আসবো নে!

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সোনার হাতের ছবিটা ভালো লেগেছে।

কয়েকবার সেই ব্রোঞ্জ গলানো হলো পুনরায় বানানো হলো, শব্দ হলো না। রাজা মারা গেলেন তাঁর স্বপ্নের ঘন্টার এর শব্দ শুনতে পেলেন না। এরপর তাঁর ছোট পুত্র আবার ঐ কাজ শুরু করলেন, কিছুতেই কিছু হয় না। ব্রোঞ্জ গলানো হচ্ছে ঘন্টা তৈরীর জন্যব্রোঞ্জ গলানো হচ্ছে ঘন্টা তৈরীর জন্যএরপর একদিন একজন বৌদ্ধ মঙ্ক স্বপ্ন দেখলেন যদি একটি জীবন্ত শিশুকে ঐ ব্রোঞ্জ এর সাথে গলানো হয় তাহলে ঐ ঘন্টা থেকে শব্দ হবে। তাই করা হলো, গ্রাম থেকে এক নিস্পাপ শিশু কন্যাকে নিয়ে এসে জীবন্ত গলানো হলো ঐ ২০ টন ব্রোঞ্জের সাথে।

... আমি যেটা জানতাম সেটা আরেকটু রোমান্টিক। ঘন্টা প্রস্তুতকারক বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হবার পর রাজা তাকে হুমকি দেন- এইবার ব্যর্থ হলে তার গর্দান কেটে নেয়া হবে। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ঘন্টা প্রস্তুতকারক স্বপ্নে দেখেন, একটি নরবলির অভাবেই তার চেষ্টা সফল হচ্ছে না। তবুও নরবলিতে রাজি না হয়ে ঘন্টা প্রস্তুতকারক কেবল তার অভিজ্ঞতা দিয়েই ঘন্টা প্রস্তুত করবার কাজে নামে। আর ব্রোঞ্জ গলানোর সময় ঘন্টা প্রস্তুতকারকের কুমারী কন্যাটি ভেতর থেকে ছুটে এসে নিজেই সেই পাত্রে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে- পিতার মানসিক যাতনা সহ্য করতে না পেরে। এবং, এইবার ঘন্টার শব্দ শোনা যায় দূরদূরান্ত থেকে...

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় পড়েছিলাম, ফসফরাসের অভাবেই বিশাল ঘন্টাটি থেকে জুতমত আওয়াজ বেরুচ্ছিলো না। মানুষের শরীরের ফসফরাস এই অভাবটা মিটিয়ে দিয়েছিলো...

কোনটা সত্যি- কে জানে। উপকথাগুলো এইরকমই একটু একটু রুপ বদল করে ধরা দেয়...
_________________________________________

সেরিওজা

কাজী মামুন এর ছবি

সুহান ভাই,
আপনার গল্পটা আসলেই আরো বেশি রোমান্টিক!!
এই লেখার সাথের সংযুক্ত করে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা পড়তে পড়তে কখন যে হারিয়ে গেলাম টের পাই নি। মনে হল কোরিয়া ভ্রমণ করে এসেছি।

ভাল লাগল অনেক।

আদনান0০৭

কাজী মামুন এর ছবি

ভু প্রাকৃতিক ও সংস্কৃতির দিক থেকে চীন জাপান কোরিয়ার অনেক ভিন্নতা। কোরিয়াকে অনেকটা চীন জাপানের মিশ্রন বলা যায়। এদিক থেকে ভ্রমনের জন্য কোরিয়া খুব একটা খারাপ জায়গা না।

থ্যাঙ্কস আদনান।

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।