আমি একটুও কাঁদতে পারিনি

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি
লিখেছেন নুরুজ্জামান মানিক (তারিখ: শনি, ১৪/০৩/২০২০ - ১:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে আমার ছোট আপা (পিঠাপিঠি বোন ) নাসিমা । ডাক্তার আমাকে একটা প্রেসক্রিপশন দিয়ে বললেন ,ইনজেকশন গুলি আনুন । আমি এক দৌঁড়ে ইনজেকশন নিয়ে এসে দেখি ছোট আপাকে ডাক্তার বুকে পাম্প করছে , তারপর সাদা চাঁদরে ঢেকে দিল তার নিথর শরীর । আমার পাশে অচেতন হয়ে মেঝেতে পড়ে গেলেন আম্মা ।ডাক্তার আমাকে বললেন, আপনি ভেঙ্গে পড়বেন না । হাসপাতালের অনেক ফর্মালিটি আপনাকে মেইনটেইন করতে হবে নতুবা বডি নিতে পারবেন না ।

আমি রোবট হয়ে গেলাম । ফর্মালিটি মেইনটেইন করে মাইক্রো দিয়ে বডি বাসায় আনলাম । তারপর গোসল করানোর ব্যবস্থা, মসজিদে জানাজার ব্যবস্থা, আত্মীয় স্বজনদের খবর দেয়া , গোরস্থানে নেয়ার জন্য ট্রাক ভাড়া করা , আজিমপুর গোরস্থানে দাফন পর্যন্ত সব দায়িত্বই পালন করেছি সুচারুভাবে ।

সত্যি বলছি ,আমি একটুও কাঁদিনি , কাঁদতে পারিনি ।

আজ আমার ছোট আপার ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী । মৃত্যুকালে বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর ।

২। আমার ডান পাশে শুয়ে ছিল আমার সবচেয়ে ছোট বোন জেবুননেছা জোনাকি (সীমা) । সকালে আবিস্কার করলাম তার নরম শরীর শক্ত হয়ে আছে , মেঝেতে মা আহাজারি করছে , আব্বা নিস্তব্ধ ।

আগামীকাল ওর ৪০ তম মৃত্যুবার্ষিকী । মৃত্যুকালে বয়স ছিল মাত্র এগার মাস ।


মন্তব্য

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যে যায়, শুধু সে-ই বোঝে এর প্রকৃত তীব্রতা। আপনার অভিজ্ঞতার কথা জেনে খারাপ লাগল, ভাই।

বহু বছর পর লিখলেন...

Aaynamoti এর ছবি

এমন লেখা পড়তে হবে ভাবিনি। শোকে নাকি শ্লোক আওড়াতে হয় নইলে চুপ.....

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

অসহনীয় যন্ত্রণাময় স্মৃতি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।