পাঁচ প্যাঁচাল

মাশীদ এর ছবি
লিখেছেন মাশীদ (তারিখ: রবি, ১০/১২/২০০৬ - ৫:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


আমার দুই দোস্ত সাদিক আর সুমন (এস এম মা মু) এর অজানা পাঁচ (না ঠিক ওদেরটা অজানা ছিল না, মানে ওদের এই উদ্যোগটার কথা বলছি) আর সাথে আরো অনেকের লেখা পড়ে নিজেরও লিখতে ইচ্ছা করল। সবাই দেখি প্রায় সাদিকের টেমপ্লেট ব্যবহার করেছে। মানে, ও যে যে পয়েন্টে লিখেছে, সেগুলোর সাথে সামঞ্জস্য আছে। পড়ালেখা, খাওয়া, থ্রিল রাইডস। দেখা যাক আমার কি হয়। ঠিক সেরকম অর্থে 'অজানা' তথ্য হয়তো হবে না, শুধু নিজের সম্পর্কে কিছু।

1. আমি বন্ধুপ্রিয় মানুষ। বন্ধু ছাড়া জীবন অচল। আশে-পাশে বন্ধু-বান্ধব না থাকলে জগৎ অন্ধকার, আর কোন বন্ধু থাকলেই মন-মেজাজ ফুরফুরা। বন্ধুতার ক্ষেত্রে আমার কপাল বরাবরই ভাল। যেখানেই গেছি ভাল বন্ধু পেয়েছি - সে আমার পাড়াই হোক, স্কুল হোক, কলেজ হোক, বুয়েট হোক বা এই সিঙ্গাপুরই হোক। একবার দু'সপ্তাহের জন্য লন্ডনের এক সায়েনস ফোরামে গিয়েছিলাম। ওখানেও চমৎকার কিছু বন্ধু পেয়েছি যাদের অনেকের সাথে এখনো যোগাযোগ তো আছেই, একজন বাংলাদেশে আমাদের বাড়ি থেকেও গেছে 5 দিন।

2. আমি অতি আড্ডাবাজ। প্রথম পয়েন্ট থেকেই এটা আঁচ করা যায় হয়তো। আড্ডার কোন চানস বাদ দেই না পারতোপক্ষে। বন্ধুদের সাথে ক্যান্টিন, ল্যাব বা বাইরে কোথাও - কোনখানে আড্ডাতেই আপত্তি নেই। বন্ধুদের সাথে বাইরে খাওয়া দেশেও ছিল, এখানেও আছে। সব খাবারই ভাল লাগে। বর্তমানে বেশি পছন্দ থাই ফুড, বিশেষ করে টম ইয়াম! থ্রিল রাইডস একদম ভাল লাগেনা, তারপরেও বন্ধুরা যেতে চাইলে সাথে যেতে কোন আপত্তি নেই।

3, আমি দুই এক্সট্রিমে থাকি - হয় খুব ভাল, নয় খুব খারাপ। মেজাজ হুট করে গরম হয়, আবার হুট করে ঠান্ডা। কাউকে হয় খুব ভাল লাগে, নয়তো দেখতেই পারি না। আবার অনেককে হয়তো দেখতেই পারতাম না, কিন্তু এখন সেই হয়তো আমার জিগরি দোস্ত। মাঝামাঝি কিছু নেই।

4. ছোটকাল থেকে সিভিয়ার স্টেইজ ফ্রাইট ছিল। ছায়ানটে গান শিখেছি বহুদিন, কিন্তু কেউ গান গাইতে বললেই পা কাঁপত। বুয়েটের 2য় বর্ষে এসে লেভেল পুর্তির অনুষ্ঠানে রম্য সংবাদ পাঠ করতে গিয়ে স্টেইজ ফ্রাইট কেটে গেল। এরপর যন্ত্রকৌশল সংসদের হয়ে অনেক অনুষ্ঠান করেছি। এই করতে গিয়েই গান বাদ দিয়ে টুকটাক নাটকের শুরু। আমাদের ক্লাস, পড়ার চাপ - এসব নিয়ে পঁচিয়ে লেখা চরম মজার নাটক। আমাদের টিমটা খুব জোশ ছিল। সবার মধ্যে নাটক ঢুকে গেল। বুয়েটের শেষ সেমেস্টারে আমরা সম্পূর্ণ বুয়েটে নিমির্ত প্রথম সিনেমা বানিয়ে ফেললাম আর বুয়েটের কালচারাল শো এর দৃশ্য পুরোপুরি বদলে দিলাম। বুয়েট ছাড়ার পরেও ফেলে আসা জুনিয়ার বন্ধুগুলো নিয়মিত অনুষ্ঠানের সিডি আর নাটকের স্ক্রিপ্ট পাঠিয়ে দেয়। সেসব থেকে ইনস্পায়ার্ড হয়ে এই সিঙ্গাপুরেও আমরা টুকটাক চালিয়ে যাচ্ছি। Nothing serious, all fun. এমন কি আমার গায়ে হলুদেও অপুদের সবাইকে পঁচিয়ে একটা নাটক করা হয়েছিল। ছড়া লেখারও শুরু একে-ওকে পচিঁয়ে। বুয়েটের সব ডিপার্টমেন্টকে পঁচিয়ে আমরা (যন্ত্রকৌশল) যে সেরা - সেই নিয়ে লেখা 56/58 লাইনের একটা ছড়া আমাদের ডিপার্টমেন্টের থিম ছড়া হয়ে গেছে যা প্রতি নবীনবরণে আবৃতি করা হয়।

5. আমার আশে-পাশে যারা থাকে, আমার সম্পর্কে তাদের অজানা কিছুই থাকে না। আমি খুবই ট্রানসপারেন্ট একজন। পুরনো ঘটনা সব জানানোর পরে নতুন কিছু ঘটলেই - সে ভালই হোক আর খারাপ হোক - মুহূর্তের মধ্যেই আশেপাশের মানুষজন জেনে যায়। তাদের জানানো আমি কর্তব্য মনে করি। কোনকিছু লুকিয়ে রাখা একেবারেই স্বভাব না।

(ইয়ে...আমার আবার বেশি কথা বলার স্বভাব। পাঁচটায় শেষ করতে পারছি না.....এখনো আরো অনেক কিছু বাকি আছে মনে হচ্ছে.......(আম্মাআআ) .....ধ্যাত!)


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।