নীতিহীন রাজ্যে, দুর্নীতি তাড়াতে, খাটছে কতজন, না জানে কত ভাড়াতে! আপন পকেটে সাঁটাতে!

মেঘ এর ছবি
লিখেছেন মেঘ (তারিখ: বুধ, ২২/০৮/২০০৭ - ১২:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শিক্ষক বলেছিলেন আমাদের দেশে দুর্নীতির মধ্যে যে নীতি থাকে সেটাও নেই। আমরা সবাই ছাত্রসুলভ বিস্ময়ে সে জিনিসটা জানতে চেয়েছিলাম। উত্তর ছিলো -দুর্নীতির একটা অংশ মনে করো ঘুষ খাওয়া। অর্থাত টাকার বিনিময়ে একজন তোমার কাজা করে দেবে। এখন পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে ব্যাপারটা এমন যে তোমার কাছ থেকে ঘুষও খাবে আবার কাজটাও করে দেবে না।
সেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা একধরনের ইউটোপিয়া ছাড়া আর কিছু নয়। তাহলে কি আমরা ভালোর পথে হাঁটার চেষ্টা একেবারেই বাদ দিয়ে দেব? হাঁটা বাদ দেব না কিন্তু প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হতে হবে হাঁটার। একদিকে মুখে ফেনা আইন সবার জন্যে সমান আরেকদিকে আইনকে কেটে ছিঁড়ে এমন একটা রূপ নিজের সুবিধামতো দিলাম যে আইনের নিজের অবস্থাই বানরের পিঠা ভাগের মতো তাহলে তো সব সেলফ কন্ট্রাডিকটরি হতে বাধ্য।

আমার বিল্লি আমারে কয় মিঁয়াও...

আমি ট্যাক্স দেই, ভ্যাট দেই, আমার কাছ থেকে রাজস্ব আয় সরকারের। সেই টাকায় ’জলপাই’ বাগান এর গাছদের খাওয়া পোশাক সব। সেই জলপাই আমার খেয়ে আমার সন্তানকে বিষ প্রয়োগে হত্যার ব্যবস্থা করবে তা আমরা ’জরুরী’ অবস্থার দোহাই দিয়ে সয়ে যাব। যদি বলি সবকিছুর পেছনে মার্শাল চিপস সেটের সূক্ষ্ম খেলা চলছে? বেশি চাপাচাপিতে ব্রেইন অন নি এর হার্ডডিস্ক ক্র্যাশ করতে পারে, তখন আলু ও যাবে চিপস ও আর তৈরী হবে না। পূর্ববর্তী কোন সাফারি কোটের মতো গান পাউডারে পুড়ে যাবার সম্ভাবনা থেকেই যাবে। নিজের সীমানায় গিয়ে মিঁয়াও করো আমার বাচ্চার গায়ে নোংরা হাত দিও না ভুলেও।

ব্যাংকারদের সাথে থিংক ট্যাঙ্কার

’উ’ সাহেব বলেছেন ব্যাংকাররা ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছেন। আহা, উহ্ উহ্ কি জ্ঞান! ব্যাংকাররা নিজের পায়ে আটমণি কুড়াল মারার জন্যে মুখিয়ে আছে। সহজ হিসাব দেই একটা - জীবনে আমি কিছু ধরেন আমদানী করিনি। এখন ’উ’ এর উতসাহে চাল আমদানী করব। লাইসেন্সও করলাম। এলসি খুলবো ধরেন একলাখ ডলারের। এখানে ব্যাংকে আমাকে কিছু মার্জিন দিতে হবে। এই সর্বনিম্ন দশ পার্সেন্ট। তাহলে দশ হাজার ডলার। মার্জিন দিলাম। আমার টাকার উতস কি? খুলবেন এলসি, আনবেন চাল, হবেন ব্যবসায়ী? কোন মধ্যম মানের ব্যবসায়ী নিজের তহবিল থেকে একবারে দশহাজার ডলার সাদা দেবার ক্ষমতা রাখে? ব্যাংকার এক্ষেত্রে কিভাবে আমাকে সাহায্য করবে? বলবেন পথ! জানার আগ্রহ রইলো।
কোনক্ষেমতা বলে এবং কোন প্রশাসনিক পদাধিকার বলে ’উ’ব্যাংকারদের সাথে বৈঠক করেন সেটা এই অধমের জানার বড় খায়েস। যেহেতু ’উ’ একটি স্বরবর্ণ এবং এই ’উ’ নিজের ঘোষণামতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অধিগ্রহণ করেনি, সেই খায়েশও না কি নেই। তাহলে কেন তার মত বিনিময়? ফখরু কি কোথাও মুরগি শিকারে গিয়েছে যে ’উ’ তার প্রক্সি সার্ভার হিসেবে কাজ করবে?
কোন অধ্যাদেশের অধীনে একটি স্বাধীন দেশের ’জলপাই’ প্রধান ‌'ক্রীড়া পরিষদের' প্রধান হন! এখানে কোন আইন কোন সংবিধান কাজ করে? আমি জানি না। অজ্ঞতার আঁধার দূর করবার আহ্বান থাকলো কেউ এ সম্পর্কে জেনে থাকলে।
’অলিভ’ বলেছেন খাদ্যদ্রব্যের আমদানীর ক্ষেত্রে সুদের হার হ্রাস করে দিলে সেই দ্রব্যের মূল্য হ্রাস পাবে, মানুষ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। হাহ্, হাহ্ - ব্যবসায়ীদের মুনাফার হার বাড়বে, এর ভিন্ন কিছু হবে না। বাজি ধরেন এই নাদানের সাথে।

বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা...

বিচারপতি আব্দুর রউফ মধুর এক বাণী দিয়েছেন -৭২এর সংবিধান করার সময় ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবের কানে কানে ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপারটি বলেন এবং সংবিধানে যুক্ত করান। ধন্য শেখ মুজিবের কান। আমরা ধন্য রউফের প্রকৃত পরিচয় জানতে পেরে। বিচারপতি লতিফুর রহমান পালিয়ে গেছেন নিজের বিচারের ভয়ে, রউফ কি এ বয়সে দাঁড়ি হারাতে চান মনে করেন ধর্মনিরপক্ষেতার সমর্থক, বাংলাদেশপ্রেমী কোন বাংলাদেশী বাঙ্গালীর কাছে? বিচারপতিদের বিচার হয় ভুলে গেলে মস্ত ভুল করা হবে।

ধ্বংসের এ মাতম...

কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক দুর্নীতি করেছেন সেজন্য কি সেই প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিতে হবে? পারটেক্স গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, হামীম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ ইত্যাদি ইত্যাদি বুঝলাম মালিকরা অবধৈ ওয়েতে বাণিজ্য করেছে। তাদের ধরেছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটাকে কি বাঁচানো যায় না? প্রতিষ্ঠানের ভেতরেই ,অনেক দক্ষ চালক আছে তাদের কে দিয়ে দেন, মনিটরিং করেন, দরকার হলে সরকার থেকে এক বা দুজনকে সেই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এসাইন করে দিন। একটা প্রতিষ্ঠানে ১৪০০০ লোক কাজ করা মানে, ১৪০০ ফ্যামিলি, এক ফ্যামিলিতে ৫জন সদস্য থাকলে ৭০,০০০ লোকের জীবন জীবিকা, যাদের ,’অলিভ’ উর্দি দেখে পেটের ক্ষুধা নিবৃত হবে না।

ধুঁকছে প্রাণ...

গতবছর ব্যাংকিং খাতে প্রবৃব্ধির হার ছিলো ১৮%, এবছর প্রথম ছ’মাসে প্রবৃদ্ধির হার ২.৫%। গত আটমাসে একটাকার নতুন ঋণ দিতে পারেনি এমন ব্যাংকের শাখা আছে। মানুষ ফিক্সড সঞ্চয় ভেঙ্গে ফেলছে। ৩৩০ এমপি মিনিস্টারের ব্যাংক একাউন্টের হিসাব দিতে দিতে ব্যাংকারদের দৈনন্দিন কাজ শিকেয় উঠেছে আর ’উ’ বলছেন ব্যাংকার রা হয়রানি করছে। তাদের তারেক আব্বারা কি করেছে তারা জানে না? ব্যাংকারদের সাথে চোটপাট এ তথ্য রাখা হয়নি কেন, সেটা করা হয়নি কেন...তারা যে কারণে তারেকদের দুর্নীতির লাগাম টানতে পারেনি সে কারণে ব্যাংকাররা ঐ এমপি মিনিস্টারদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি।
গার্মেন্টস সেক্টরে অনেক কারখানায় সেপ্টেম্বরে কোন অর্ডার নেই। এমন ও কারখানা আছে যারা অর্ডার যেহেতু নেই ইউটিলিটি খরচ কমাতে সপ্তাহে ৪-৫দিন কারখানা বন্ধ রাখছে। দেশের সামগ্রিক অবস্থা এই। সেখানে কাকে গ্রেফতার কিসের কি তাতে আমাদের এই ক্ষীণপ্রাণদের আসলে কিছুই যায় আসে না। আমি জানি কালকে আমাকে ৯০টাকার উপরে লিটার দরে সয়াবিন কিনতে হবে। ৩৫টাকা কেজি দরে আমি যে চাল খাই তা সামর্থ্য থাকলে কিনতে হবে। এবং আমি জানি যদি টাকা থাকেও আমি বাজারে কোন তরকারী নাও পেতে পারি। কারণ বন্যায় সব তলিয়ে গেছে। সেভাবে সাপ্লাই নেই।

সুদিনের স্বপ্ন দেখার শক্তি নেই। পেটে ভাতে বাঁচবো সেই দুয়ারও খোলা নেই। যে অবস্থা তাতে ’জলপাই’ এর মাংসও মানুষ খেয়ে ফেলতে পারে। ছোট্ট একটা নমুনা দেখিয়েছে ঢাকা ভার্সিটির অপুষ্টিতে ভোগা ছেলেমেয়েগুলো। আমরা আমজনতা ভাতে টান পড়লে ’জলপাই’ খেতে লবণ নিয়ে ঢাকা ভার্সিটিতে যোগদানও করতে পারি। সেই সম্ভাবনার দ্বার কি নিজেদের শাসনতান্ত্রিক ব্যর্থতায় কেউ খুলে দিতে চান?


মন্তব্য

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সুদিনের স্বপ্ন দেখার শক্তি নেই। পেটে ভাতে বাঁচবো সেই দুয়ারও খোলা নেই। যে অবস্থা তাতে 'জলপাই' এর মাংসও মানুষ খেয়ে ফেলতে পারে। ছোট্ট একটা নমুনা দেখিয়েছে ঢাকা ভার্সিটির অপুষ্টিতে ভোগা ছেলেমেয়েগুলো। আমরা আমজনতা ভাতে টান পড়লে 'জলপাই' খেতে লবণ নিয়ে ঢাকা ভার্সিটিতে যোগদানও করতে পারি।

মেঘ,

ভাল বলেছেন। পড়ে ভাল লাগলো।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মেঘ এর ছবি

মেঘ
ধন্যবাদ বিপ্লবদা।

মেঘ

অয়ন এর ছবি

বাংলাদেশে 'দূর্নীতি' দূর্নীতিগ্রস্ত এই কথার সাথে একমত।
তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির sustainable level কোনটা সেটা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্থ। অর্থনীতি এভাবে চলতে থাকলে পুরাপুরি ধ্বসে যাওয়ার কথা, তবে বাংলাদেশের ব্যাপারে কিছু বলা যায় না। হয়ত সব আবার ঠিক হয়ে যাবে। আশাবাদী হতে তো দোষ নেই।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

অসাধারণ একটা লেখা মেঘ।
লেখাটা আরো বেশি পাঠকের কাছে পৌঁছা উচিত।
ফখরু কি কোথাও মুরগি শিকারে গিয়েছে যে ’উ’ তার প্রক্সি সার্ভার হিসেবে কাজ করবে?

উপরের এই উদ্ধৃতিটি নিয়ে আমি প্রায়ই ভাবি যখন মিডিয়ায় সেনাপ্রধান ইরশাদ করেন সরকারের পরিকল্পনা। আমার অবাক লাগে একজন সাংবাদিকও জানতে চায় না যে সেনাপ্রধান কি বর্তমান সরকারের অংশ বা মুখপাত্র?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই জলপাই আমাদের পয়সায় বড় হয়ে এখন আমাদের উপর দন্ড ঘোরাচ্ছে। এর সুযোগ কি আমরাই করে দেইনি? ক্রীড়া পরিষদে যখন নীতিহীন দূর্ণীতির মচ্ছব চলে তখন আমরা তার পুরোটাও তো জানতে পারিনা। পিনো আর কোকো ধরা পড়লেই না আমাদের পত্রিকাওয়ালারা হরহর করে কার আগে সেসব খবর প্রকাশ করবে তার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। আর সেই সুযোগেই অলিভ ঢুকে পড়ে ক্রীড়াঙ্গন সহ সর্বত্র। ফলাফল, সাময়িক স্বস্তি। আর সুদূর ভবিষ্যতে কী হবে তা তো বাজারের অবস্থা, আর "ছালা থেকে বেড় হয়ে" "আসল রূপ" প্রকাশের নমুনা দেখেই টের পাওয়া যায়।

উ কে জিজ্ঞেস করে চাকরি হারাবে কোন ছার? সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকার হর্তা-কর্তাদের অন্তরাল হয়ত ঠিকঠাক নাই। থাকলে এধার-ওধার করতে হতনা।

কঠিন-কঠোরে মিলিয়ে উত্তম লেখা। ভাল লেগেছে।

কেমিকেল আলী এর ছবি

মেঘ,
অসাধারন একটা লেখা, আপনার কাছ থেকে আরও বেশি লেখা আশা করছি।

আর সাথে কিন্তু বিপ্লব!!

মেঘ এর ছবি

মেঘ
ধন্যবাদ। আপনাদের মন্তব্য নেগেটিভ পজেটিভ যাই হোক প্রেরণা যোগায়। মানুষ তো আসলে রেকগনিশন চায়, লেখতরা আরো বেশি:)

মেঘ

মেঘ এর ছবি

মেঘ
লেখকরা হবে শব্দটি।

মেঘ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।