ইলা মিত্র - দ্বিতীয় পর্ব

নীলম এর ছবি
লিখেছেন নীলম [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ১২/০৯/২০১২ - ৪:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচলে ধারাবাহিক লিখতে গিয়ে ছাদে তুলে মই কেড়ে নেয়ার গল্প অনেক পড়েছি। তবে আমার মত এতো বেশিদিন কেউ মই আটকে রেখেছেন কিনা সে খবর অবশ্য নেয়া হয়নি। চরম উদাসদা এতো করে শেখানোর পরেও উপুত হওয়াটা এখনো ঠিকমত রপ্ত করে উঠতে পারিনি তাই এই হাল। সে যাই হোক, ইলা মিত্রকে নিয়ে লেখাটা এতোদিন আটকে রাখার জন্য সত্যিই দুঃখ প্রকাশ করছি। চলুন তাহলে আবার শুরু করি এই বীর নারীর জীবনগাঁথা।

আগের পর্বে আমরা ১৯৫০ সালের ৭ জানুয়ারি ইলা মিত্রকে পুলিশের হাতে ধরা পড়তে দেখেছি। তিনি ইলা মিত্র হিসেবে সনাক্ত হওয়ার পর যে বর্বরতার শিকার হন তা শুনলে জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ মাত্রই শিহরিত হবেন। এই অত্যাচারের বিবরণ পরবর্তীতে তিনি আদালতে জবানবন্দী আকারে দিয়েছিলেন। সেটা পড়ার পরে আমি নিজে অসুস্থবোধ করেছি, কিভাবে উনি অত্যাচার সহ্য করে বেঁচে ছিলেন তা আমার বোধগম্য হয়নি। আমি নিজে সেই নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দেয়ার সাহস রাখছি না। এখান থেকে আপনারা সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। নাচোলের জেলে চারদিন কাটানোর পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় নবাবগঞ্জের জেলে। সেখানে তিনি সাতদিন ছিলেন। নবাবগঞ্জ নিয়ে আসার সাথে সাথে সেপাইরা তাঁকে জোরে ঘুষি মেরে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। এছাড়া এখানে তিনি তেমন কোন অত্যাচারের সম্মুখীন হননি। এখানকার থানার ওসি ছিলেন তাঁর পূর্বপরিচিত। তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন কোর্টে বিচারাধীন অবস্থায় ইলা মিত্রের গায়ে কেউ হাত তুলতে পারবেন না। শরীরের অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাঁকে নবাবগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা আরো সংকটজনক হতে থাকলে তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে ইলা মিত্রের ধরা পড়ার আগেই রমেন মিত্র সীমান্ত পেরিয়ে ভারত গিয়েছিলেন। তিনি এসবের কিছুই জানতে না। পত্রিকা পড়ে জানতে পারেন ইলা মিত্র সম্পর্কে লেখা হয়েছে ‘হতভাগিনী জীবন দিল, স্বামী নিরুদ্দেশ।’ পরে লোক পাঠিয়ে খবর পেলেন ইলা মিত্র ধরা পড়েছেন। তবে স্থানীয় আদিবাসীদের ধারণা রানীমাকে ধরে রাখতে পারবে না ওরা। আরও শুনলেন তাঁর দাদাকে রমেন মিত্র সন্দেহে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তাঁর মা পুলিশকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ দিয়ে দাদাকে ছাড়িয়ে এনেছেন। ছাড়া পেয়ে তাঁর দাদা কলকাতা চলে যান। তবে তাঁদের বাড়িতে পুলিশি হামলা চলতেই থাকে এবং এক পর্যায়ে পুলিশ বাড়িতে ক্যাম্প করে বসে। তখন রমেন মিত্রের মা কলকাতায় বড় ছেলের কাছে চলে যান।

এদিকে ইলা মিত্র তখন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। তখন রাজশাহীসহ দেশের অন্য জেলাগুলোর কারাগারও রাজবন্দী দ্বারা পূর্ণ। এটা ছিল মুসলিম লীগ সরকারের দমননীতির ফলাফল। ইলা মিত্রকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে এনে নতুন মাত্রায় অত্যাচার শুরু করা হয়। পাশবিকভাবে নির্যাতিত ইলা মিত্রকে রাখা হয় এক নির্জন অন্ধকার সেলে। সেটা ছিল তাঁর শোবার মত সামান্য লম্বা-চওড়া একটা ঘর। ঘরের একটা ফুটো দিয়ে পাশের সেলে রাখা অন্যান্য নারী রাজবন্দী এবং সাধারণ বন্দীদের দেখা যেত। দু-তিনদিন পর সেই ফুটোও বন্ধ করে দেয়া হল। প্রায় একবছর অসুস্থ অবস্থায় ইলা মিত্র ইলা মিত্র ঐ নির্জন সেলে আটক ছিলেন। তবে ঐসময় জেলে কর্মরত ডাক্তার ছিলেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির পাশের গ্রামের লোক। উনার ব্যক্তিগত সহানুভূতি দিয়েই যত্নের সাথে ইলা মিত্রের চিকিৎসা করেন।

১৯৫০ সালের নভেম্বর মাসে নাচোলের পুলিশ হত্যা সম্পর্কিত মামলাটি কোর্টে শুরু হয়। হাঁটাচলার মত অবস্থায় ফিরে এলে ১৯৫১ সালের জানুয়ারী মাসে ইলা মিত্রের বিচার শুরু হয়। প্রথমদিন কোর্ট থেকে জেলে ফিরে এসে ইলা মিত্র জোর করেই অন্যান্য নারী রাজবন্দী ও সাধারণ কয়েদীদের হলঘরে ঢুকে পড়েন। তারপর থেকে তিনি ওখানেই থাকেন। সেখানে বরিশালের মনোরমা বসু, পাবনার লিলি চক্রবর্তী, ঢাকার রানু চ্যাটার্জীসহ মোট ১৪ রাজবন্দী ছিলেন। নির্জন সেলে বন্দী অবস্থায় ইলা মিত্রের নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়ে যায়, জেলের সাথিরা প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকেন ইলা মিত্রকে সুস্থ স্বাভাবিক করে তোলার জন্য। মনোরমা বসু ইলা মিত্রকে বলেছিলেন যে কোর্টে উপস্থিত হয়ে তিনি যেন তাঁর উপর অত্যাচারের পূর্ণ বিবৃতি দেন। কিন্তু ইলা মিত্র স্বীকার করেন যে কম্যুনিস্ট মেয়ে হলেও হিন্দু মেয়ের সামাজিক সংস্কার থেকে মুক্ত হতে পারেননি। কাজেই তিনি বহু দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে ছিলেন। জেলের সাথীদের সহায়তায় ইলা মিত্র তাঁর মনোবল ফিরে পান এবং কোর্টে জবানবন্দি আকারে সেই বিবৃতি দেন। ইলা মিত্রের জবানবন্দী কোন পত্রিকায় প্রকাশ হয়নি। তবে ইশতেহার ছাপিয়ে সে জবানবন্দী সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। সারা দেশের মানুষ এর মাধ্যমেই জানতে পেরেছিল তাঁর উপরের এই নৃশংসতার কথা।

১৯৫১ সালের জানুয়ারি মাসে ইলা মিত্রসহ মামলার ২২জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। পরে এই মামলা হাইকোর্টে যায়। এদিকে মামলা চালানোর জন্য সকল চেষ্টা রমেন মিত্র করে যাচ্ছিলেন। তবে অর্থের সংকট দেখা দেয় এবং এই মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী পাওয়াও দুষ্কর হয়ে ওঠে। রমেন মিত্র সে সময় কুমিল্লার স্বনামধন্য প্রগতিশীল আইনজীবী কামিনী কুমার দত্তের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি মামলা করতে রাজি হন। যদিও তিনি বলেছিলেন তিনি প্রমাণ করতে পারবেন যে পুলিশ হত্যার সময় ইলা মিত্র সেখানে ছিলেন না। কিন্তু রমেন তাতে রাজি হননি। সেক্ষেত্রে ইলা ছাড়া পেলেও, অন্যদের সাজা হয়ে যাবে এই ভেবে। কামিনী দত্ত তাঁর আদর্শে স্থির থাকতে দেখে খুশি হয়েছিলেন। কলকাতার আইনজীবী ইউসুফ জামালও এই মামলায় সহযোগীতা করেছিলেন এবং তার বোন অর্থ সংগ্রহে সহযোগিতা করেছিলেন। অনেক গ্রামবাসীকে পুলিশ অত্যাচার করে রাজসাক্ষী বানাতে চেয়েছে। কিন্তু কিছুতেই তারা রাণীমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি। মার খেতে খেতে অনেকে মারা গেছে তবুও তারা মুখ খোলেনি। হাইকোর্টে বিচারের দিনগুলোয় ইলা মিত্র এদের কথা স্মরণ করে শক্তি-সাহস পেয়েছেন। সরকার সেসময় একজনও মুসলিম সাক্ষী জোগাড় করতে পারেনি। এবং যাদেরকে সাক্ষী বানিয়ে আনা হত তারাও মিথ্যা কথা বলতে গিয়ে বিভিন্নভাবে বিব্রত হত। এভাবেই মামলা চলতে থাকে এবং জেলে বন্দী অবস্থায় ইলা মিত্রের দিন কাটতে থাকে।

এর মধ্যে চলে আসে ’৫২র একুশে ফেব্রুয়ারি। ঢাকার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়। ইলা মিত্র তখনও বন্দী। সব বন্দীশালা তখন পূর্ণ হচ্ছে নতুন রাজবন্দীদের দিয়ে। ইলা মিত্র তাঁদের কাছে থেকে শুনতে পান বীর শহীদদের জয়গান। নুরুল আমিন সরকারের নৃশংসতার বিরুদ্ধে তখন চলছে সংগ্রাম। এই সংগ্রাম ও আন্দোলন জেলবন্দী ইলা মিত্রকে অনুপ্রাণিত করে। সেই আন্দোলনে সকল রাজবন্দী এবং সাথে সাথে ইলা মিত্রের মুক্তির দাবি ওঠে। এদিকে এপ্রিলে হাইকোর্টে ইলা মিত্রদের আপিলের রায় দেয়া হয়। হাইকোর্ট থেকে আসামীদের দন্ড অবিলম্বে কার্যকর না করতে এবং মামলা পুনর্বিবেচনা করতে নির্দেশ দেয়া হয়। রায়ের পর পুনর্বিবেচনার জন্য মামলা পরিচালনা করতে সরকার পক্ষ প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণ পায় না, পরে ইলা মিত্র ও তাঁর সাথিদের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদন্ডের সাজা দিতে বাধ্য হয়। রাজশাহী জেলে বন্দী থাকা অবস্থাতেই ইলা মিত্র এম.এ পরীক্ষা দেয়ার জন্য আবেদন করে অনুমতি পান। অসুস্থ অবস্থাতেই তিনি ১৯৫৩ সালে এম.এ পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন জেলে বসেই। কিন্তু পরীক্ষার সাত দিন আগে তাঁকে জানানো হয় যে ভাইভা দিতে বাইরে যেতে হবে এবং এর অনুমতি তাঁকে দেয়া হবে না। ফলে সেবার আর তাঁর এম.এ পরীক্ষা দেয়া হয়ে ওঠেনি।

দেশে তখন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম চলছে, চলছে ভাষার জন্য লড়াই। ইলা মিত্র বন্দী হয়ে আছেন রাজশাহীর জেলে। এরকম অবস্থায় তাঁর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তখন তাঁর অবস্থা ছিল সঙ্গীন। ভগ্নস্বাস্থ্য এবং চলৎশক্তিহীন এক মানুষ তখন তিনি। গ্যাস্ট্রিক-আলসার, পাকস্থলীতে ঘা এবং আরো জটিল উপসর্গে ভুগছিলেন ইলা মিত্র। কোটরে বসে গিয়েছিল বড় বড় চোখ। বিছানার সাথে মিলিয়ে গিয়েছিল শরীর। এদিকে নাচোলে আন্দোলনের নেত্রী, সাঁওতাল কৃষকদের রাণী মা ইলা মিত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে প্রতিদিন সংগ্রামী শহীদের মা থেকে শুরু করে ছাত্র, সাংবাদিক, রাজনীতিক সকলে আসতেন। অনেকে ভেবেছিলেন তিনি বুঝি ছাড়া পেয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালে পুলিশি পাহারা দেখলেই বোঝা যেত তিনি বন্দী। এতো এতো মানুষের সাথে কথা বলার শক্তি তাঁর ছিল না। শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতেন তাঁর প্রতি মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা। কেউ হয়ত এসে কবিতা পড়ে শোনাতেন তাঁর মনোবল বৃদ্ধির জন্য, কেউ কবিতা লিখতেন, কেউ গান শোনানোর ব্যবস্থা করতেন। কাছের মানুষদের সাথে কথা বলারও চেষ্টা করতেন। এর মধ্যে একদিন রমেন মিত্র এলেন তাঁকে দেখতে। রমেনের নামে তখন হুলিয়া জারি করা হয়েছে। এ অবস্থাতে বন্ধুদের সহযোগীতায় পুলিশি প্রহরায় থাকা ইলাকে দেখতে এলেন তিনি। ডাক্তাররা তখন ইলা মিত্রের শেষ অবস্থা বলে ধরে নিয়েছিলেন। তাই ছেলে মোহনকেও দেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। পাঁচ বছরের মোহন মাকে চিনতে পারেনি। মায়ের সাথে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছিল সেই ষোল দিন বয়সে।

এদিকে ইলা মিত্রের সরকারী চিকিৎসক কে.এস আলম তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ জনগণও ইলা মিত্রের মুক্তির ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন। মাওলানা ভাসানীও এক বিবৃতি দিয়ে ইলার মুক্তি চেয়েছিলেন। তবে চিকিৎসার জন্য ভারতে পাঠানোতে তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন আমাদের দেশের মেয়ের চিকিৎসা আমাদের দেশেই হবে। কিন্তু তা সম্ভব ছিল না। ইলা মিত্রকে মুক্তি দিয়ে দেশে রেখে দেয়ার সাহস তখন দেশের সরকারের ছিল না। তাছাড়া মৃতপ্রায় ইলার চিকিৎসাও এদেশে সম্ভব ছিল না। অবশেষে ১৯৫৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইলা মিত্র প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ভারতে চলে যান চিকিৎসার জন্য। এই যাওয়াই তাঁর এদেশ ছেড়ে চলে যাওয়া। এরপর এসেছেন কয়েকবার বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে কিন্তু সে শুধু দু’ একদিনের জন্য। বাংলাদেশের কথা মনে করে ইলা মিত্র সারাজীবনই সংগ্রামের প্রেরণা পেয়েছেন। কলকাতায় গিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর আরেক নতুন জীবন। সেই জীবনের কথা আমরা জানবো পরের পর্বে।


মন্তব্য

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

প্রথম পর্ব এখন পড়ব, দ্বিতীয় পর্ব আগে পড়ে ফেললাম।
তৃতীয় পর্বের জন্য আবার ছাদে তুলে রাখিয়েন না পাঠকদের।

নীলম এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

চেষ্টা করবো না তুলে রাখতে হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ইলা মিত্র অসম্ভব একটা চরিত্র। খুব ভয়ে ভয়ে তাঁর উপর অত্যাচারের বর্ণনা পড়লাম। এই যে এত কিছুর পরও উনি কিছুই বললেন না, এইটা একটা রক্ত মাংশের মানুষের পক্ষে কিভাবে সম্ভব তা মাথায় ঢুকলো না। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। হাসি
- ফুয়াদ

নীলম এর ছবি

আসলেই অসম্ভব চরিত্র।

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

প্রথম পর্ব পড়ে এলাম।
লিখা চলতে থাকুক। চলুক

শান্ত এর ছবি

চলুক, তবে তাড়াতাড়ি ........

__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।