বইমিশালি

নীলম এর ছবি
লিখেছেন নীলম [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৮/২০১২ - ৩:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটবেলা থেকে বই পড়ার ক্ষেত্রে একটা বিচ্ছিরি অভ্যাস গড়ে উঠেছে আমার। বই পড়ছিতো পড়ছি, সেদিন আর অন্যকিছু করা হচ্ছে না। বই পড়া শুরু করে তার ভেতরে ঢুকে গেলামতো হলো, ওটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাকি সব কাজ বন্ধ। আগে এতে খুব একটা সমস্যা হত না। তেমন কাজকর্মতো ছিল না, অঢেল সময়। ইচ্ছেমত বই পড়ে যাচ্ছি। ইদানীংকালে এতে বেশ সমস্যা হয়। এই অভ্যাসের কারণে বই পড়াই বেশ কমে গিয়েছে আজকাল। কাজ-অকাজ-কুকাজের ভীড়ে বই পড়া খুব একটা পাত্তা পাচ্ছে না। না পড়ে পড়ে বেশকিছু বই জমিয়ে ফেলেছিলাম। গত মাস থেকে অনাকাংক্ষিত ছুটি কাটাচ্ছি। এর মাঝে তাই জমে থাকা বইগুলোসহ বেশকিছু বই পড়ে ফেললাম। নির্দিষ্ট কোন ক্যাটেগরি নেই, সুকুমার রায়ের ছড়া থেকে শুরু করে স্যাম হ্যারিস, যখন যা ভালো লাগছে মিলিয়ে-মিশিয়ে সবই পড়ছি। চারদিকে যে অস্থিরতা আর বিশৃংখলা তাতে বইয়ের মধ্যে ঢুকে গিয়ে একপ্রকার পালিয়ে বাঁচছি।

শুরু করেছিলাম কাফকার দ্য মেটামরফোসিস দিয়ে। আমার পছন্দের বইয়ের তালিকায় উঠে যেতে এই বই খুব বেশি সময় নেয়নি। ছোটবেলায় মাঝে মাঝেই উত্তেজনা সহ্য করতে না পেরে পড়ার মাঝেই একসময় বইয়ের শেষ লাইনটা পড়ে ফেলতাম। এখন অবশ্য আর সেটা করি না। মেটামরফোসিস ভালো লাগার এটা একটা কারণ হতে পারে যে বইটা শুরুই হয়েছে ক্লাইম্যাক্স দিয়ে। বইয়ের প্রথম লাইনেই প্রধান চরিত্র গ্রেগর সামসা নিজেকে রুপান্তরিত অবস্থায় আবিষ্কার করে। এতে অবশ্য বইটার প্রতি আগ্রহ বিন্দুমাত্র কমেনি বরং আরো বেড়ে গিয়েছে। ছোট বই বেশ সহজেই আগ্রহ নিয়ে পড়ে শেষ করে ফেলেছি।

এর মাঝে হুমায়ূন আহমেদ চলে গেলেন। অনেকদিন বাদে তার কিছু বইও পড়লাম। কেজিতে পড়ার সময় হুমায়ূনের পিপলী বেগম পড়ার মধ্যে দিয়ে আমার পাঠক জীবন শুরু হয়েছিল। স্কুলে পড়া অবস্থায় অনেক পড়েছি তার বই। মাঝে কিছুদিন একদমই সহ্য হত না তার লেখা। এবার বেশকিছু পুরনো লেখা পড়লাম। ছোটবেলার মত আকর্ষণ করতে পারলো না বইগুলো, সেটা হয়ত আর সম্ভবও না। অনেক বইই বেশ কিছুদূর পড়ে মনে হলো আগেও পড়েছি। এবার পড়া বইগুলোর মধ্যে সাজঘর অবশ্য ভালো লেগেছে। সুনীলের প্রথম আলোও পড়লাম এর মাঝে। সেই সময়, পূর্ব-পশ্চিম এগুলো আগেই পড়া হয়েছিল, প্রথম আলোই কেন যেন আগে পড়া হয়ে ওঠেনি। এই বইগুলো পড়তে আমার ভালোই লাগে। বাবার কারণে উপমহাদেশীয় ইতিহাস নিয়ে বেশ আগ্রহ গড়ে উঠেছিল, বেশ কিছু ইতিহাসের বইও পড়েছি তখন। সুনীলেরগুলো যদিও ইতিহাস না তারপরেও ঐ সময়গুলোর গন্ধ পাওয়া যায় বলেই হয়ত বেশ আগ্রহ নিয়েই এগুলো পড়ি আমি।

কৃষণ চন্দরের গাদ্দার পড়লাম এবার, আনোয়ারা বেগমের অনুবাদে। অনেকদিন থেকেই পড়বো পড়বো করেও পড়া হচ্ছিলো না। কিছুদিন আগেও আমি ভাবতাম দেশভাগে তখনকার বাঙ্গালীদের বুকই বুঝি সবচেয়ে বেশি চিড়েছে। গাদ্দার পড়ে সেই ভুল ভেঙ্গেছে। সেই সময়ের বীভৎসতা আর প্রধান চরিত্র বৈজনাথের মনস্তাত্ত্বিক বিবরণ একইসাথে ভয়ংকর এবং মর্মস্পর্শী। বই পড়ে ধর্ম এবং রাজনীতিকে আবারো কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছি এবং আবারো সেই একই উত্তর পেয়েছি। যদিও অনুবাদ মূল লেখকের লেখার পুরো স্বাদটা পাইনি তারপরেও এটা শেষ করে কৃষণ চন্দরের নির্বাচিত গল্পই হাতে তুলে নিয়েছি। ননী শূরের অনুবাদে। ওনার অনুবাদ আমার বেশ ভালো লেগেছে। আর কৃষণ চন্দরও আরো প্রিয় হয়ে উঠেছেন। ছোটগল্প অবশ্য আমাকে সেভাবে টানেনি কখনোই। উপন্যাসের চরিত্রের সাথে যেমন একটা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, ছোটগল্পে সেই সুযোগটা থাকেনা বলেই হয়তো। তবে কৃষণ চন্দরের ছোট গল্প ভালোই টানতে পেরেছে আমাকে, যেমন পেরেছিল বনফুলের গল্প। ছোটগল্পের সাথে সম্পর্কের যেহেতু একটু উন্নতি ঘটলো তাই বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রের ছোট গল্পের সংকলন বিশ্বসাহিত্যের সেরা ছোট গল্প পড়তে শুরু করলাম। পুশকিন, জ্যাক লন্ডন, এলান পো, ম্যাক্সিম গোর্কি আর ও’ হেনরি’র কয়েকটা গল্প ছিল। লেখকের নাম দেখে খুশি হয়ে গিয়েছিলাম। তবে গল্পগুলো পড়ে অতটা ভালো লাগেনি।

এরপরে শুরু করেছিলাম সিওরলি ইউ আর জোকিং, মিস্টার ফাইনম্যান! অসাধারণ বই। অসম্ভব কৌতূহলী আর পরিশ্রমী ফাইনম্যানকে দেখলাম এখানে। সাথে সাথে যিনি আবার কিনা ছিলেন সুতীক্ষ্ম রসবোধসম্পন্ন একজন মানুষ। কি করেননি তিনি এই জীবনে? পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ী একজন মানুষ যাকে কিনা আবার ব্রাজিলের সাম্বা অর্কেস্ট্রায় বাজাতেও দেখা যায়! একবার এক খাবারের দোকানে একজন চিত্রশিল্পীর সাথে দেখা হয় তাঁর। রঙ নিয়ে গল্পের একপর্যায়ে শিল্পী তাঁকে জানান লাল রঙ এর সাথে সাদা রঙ মেশালে হলুদ রঙ পাওয়া যায়। ফাইনম্যান জানতে চাইলেন উনি নিশ্চিত কিনা যে উনি হলুদ রঙই পাবেন, গোলাপী পাবেন না? শিল্পী নিশ্চিত যে হলুদই পাওয়া যাবে। ফাইনম্যান মানতে নারাজ। তাঁর মতে আমার রঙ সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই তবে আমি আলো নিয়ে কাজ করি আর আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না কিভাবে লাল আর সাদা মিলে হলুদ হবে। উনি এটা হাতে করে দেখে বুঝতে চাইলেন। দোকান থেকে রঙ কিনে এনে চিত্রশিল্পীকে হলুদ রঙ করে দেখাতে বললেন। শিল্পী বেশকিছুক্ষণ মিশিয়ে গোলাপী ছাড়া আর কোন রঙ বের করতে পারলেন না তখন জানালেন আমি সম্ভবত একটা ছোট হলুদ রঙের টিউব ব্যবহার করেছিলাম শার্পনেস আনার জন্য। এই ছিলেন ফাইনম্যান, সবকিছুই উনি নিজে বুঝে করতে চাইতেন। এদিকে আমরা, চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই একদিনে হাজারটা শোনা কথা বিশ্বাস করে বসে থাকি। যারা বইটি পড়বেন তাদের পড়ার মজাটা যেন নষ্ট না হয় তাই এখানে বেশি কিছু লিখছি না। তবে আমার সবকিছু নিয়েই লিখতে ইচ্ছে করছে।

এরপরে পড়লাম কাম্যুর দি আউটসাইডার। এটা ক’বছর আগেই একবার শুরু করে কয়েক পাতা পড়ে কোন কারণে রেখে দিতে হয়েছিল। আর পড়া হয়ে ওঠেনি। আগেই বলেছি আমার বদভ্যাসের কথা। একটানে পড়তে না পারার ফলে বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরে আবার শুরু করতে হল। প্রথম পর্বটা পড়ে বুঝতেই পারিনি দ্বিতীয় পর্ব এতো ভালো লাগবে। প্রথম পর্বে প্রধান চরিত্রের মনস্তত্ত্ব আমি ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একজন মানুষ এতো নির্বিকার! দ্বিতীয় পর্বে গিয়ে তার চিন্তা-ভাবনার সাথে পরিচিত হয়ে, তার অনুভূতির সাথে পরিচিত হয়ে এই চরিত্রটিকে আপন করে নিতে বেশি সময় লাগেনি, তার চিন্তার সাথে আমার অনেক কিছু মিলে গিয়েছে বলেই হয়ত। মারসল্টের সাথে সাথে আমি অনেক কিছুই আবার ভেবেও দেখেছি।
তারপরে হাতে উঠেছে খালিদ হোসেইনির দ্য কাইট রানার। সাধারণত বন্ধু-বান্ধবকে জন্মদিনে বইই উপহার দিই এবং সেটা কিনে নিজে পড়া শেষ করে তারপরেই তার হাতে পৌঁছে দিই। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটলো। না পড়েই বান্ধবীকে দিয়ে ভাবলাম ওর কাছ থেকে নিয়েই না হয় আবার পড়ে ফেলবো। সেটা নিয়ে পড়ে ফেলতে মাত্র দেড় বছর দেরী হল আরকি! সে যাই হোক, কাইট রানার প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে। সহজ-সুন্দর বয়ানে খালেদ হোসেইনির ‘আমির-হাসান, কাবুলের সুলতান’ এর গল্প আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। অনেকের কাছেই হয়তো খালেদ তেমন উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারেননি, কিন্তু আমি স্বভাবসুলভভাবে বেশ কিছু জায়গায় প্রচন্ড উত্তেজনা অনুভব করেছি। কষ্ট পেয়েছি, খুশি হয়েছি। সব মিলিয়ে এটা বেশ সুখপাঠ্য ছিল। আর আফগানিস্তান সম্পর্কে তেমন কিছু জানতামও না। বই পড়ে অনেক আগ্রহী হয়ে উঠেছি।

এবার ফিকশন ছেড়ে একটু নন-ফিকশনের দিকে চোখ দিলাম। পড়ে ফেললাম ফ্রিকনোমিক্স। বেশ ইন্টারেস্টিং। ছোট বই, পড়ে ফেলতে সমস্যা হয়নি। অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা করেছেন লেখক অর্থনীতিবিদ স্টিভেন লেভিট এবং সাংবাদিক স্টিফেন ডাবনার। প্রত্যেকটা অধ্যায় শুরু হয় কিছু প্রশ্ন দিয়ে এবং সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কখনো মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, কখনো কনভেনশনাল উইজডম, আবার কখনো বিহেভেরিয়াল ইকোনমিক্স ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করতে করতে লেখকদ্বয় আমাদের টেনে নিয়ে গিয়েছেন আকর্ষণীয় কিছু উপসংহারে। যেমন নব্বইয়ের দশকে আমেরিকায় হঠাৎ করে ক্রাইম কমে যাওয়ার পেছনে কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন নির্ণায়ক বিবেচনা করতে গিয়ে দেখা যায় শক্তিশালী হয়ে ওঠা অর্থনীতি, পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি, পুলিশের অভিনব কৌশল, মাদক দমন ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে অ্যাবরশনের বৈধকরণ। এই বৈধকরণের ফলে সত্তর-আশির দশকের অপরাধপ্রবণ মানুষগুলোর জন্মই হচ্ছে না। তারা বিভিন্নভাবে এটা ব্যাখ্যা করেছেন এবং তাদের ব্যাখ্যায় আমি সন্তুষ্ট হতে পেরেছি। যদিও অন্য কয়েকটা জায়গায় আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমার মনে হয়েছে এটা প্রমাণ করলেই যে যেটা প্রমাণ করতে চাইছি সেটা প্রমাণ হয় গেল তাতো না। এটা আমার অর্থনীতি সম্পর্কে কম জ্ঞানের কারণে বা আমার নিজের পড়াশোনার ক্ষেত্র ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাটখোট্টা সব প্রমাণ পড়ার কারণেও হতে পারে। আমি সব বিষয়ে আরেকটু বিশদ আলোচনা আশা করছিলাম। মনে হচ্ছিলো আরেকটু জানতে পারলে ভালো হত।

এরপর পড়লাম স্যাম হ্যারিসের লায়িং। ওনার ওয়েবসাইট থেকে কিছুদিন আগে এটা ফ্রি ডাউনলোড করা যাচ্ছিলো, তখনই নামিয়ে নিয়ে পড়া। স্যাম হ্যারিস নিউরোসায়েন্টিস্ট হলেও যেভাবে সহজ-সাবলীল ভাষায় সবকিছু বর্ণনা করে গেছেন তার জন্যে আমার মত পাঠকেরা সত্যি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে। উনি বলেছেন লায়িং ইজ দ্য রয়্যাল রোড টু ক্যাওস। এবং বেশ ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় মিথ্যা, হোয়াইট লাই বা আমরা যেটাকে হয়তো নিরীহ মিথ্যা বলতে পারি যেটাতে আমাদের কারোই কোন ক্ষতি হয় না সেসবও কিভাবে ক্ষতিকর। অনেক উদাহরণ দিয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ফেলে বুঝিয়েছেন ব্যাপারগুলো। তবে এখানেও সেই সমস্যা। বেশ ছোট লেগেছে আমার, বইটা মাত্র পয়তাল্লিশ পৃষ্ঠার মত। মনে হলো আরেকটু কঠিন পরিস্থিতিতে নিয়ে গেলে বুঝি ভালো লাগতো।

এসব ছাড়াও মাঝে মাঝে সুকুমারের রায়ের ছড়া আবার পড়েছি। সেই ধারায় আবার শিবরাম পড়েছি, প্রফেসর শঙ্কু পড়েছি, সেরিওজা পড়েছি, পল্লীকবি জসীমউদ্দিনের সোজন বাদিয়ার ঘাট পড়েছি। এবং অবাক হয়ে লক্ষ করেছি এগুলো পড়তে কখনোই খারাপ লাগে না। সেই মন্ত্রমুগদ্ধতা হয়তো কেটে গিয়েছে কিন্তু ভালো লাগাটা থেকেই গিয়েছে। এখন রিডিং লিস্টে আছে ডগলাস অ্যাডামসের হিচহাইকারস গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি, স্যাম হ্যারিসের দ্য মোরাল ল্যান্ডস্কেপ, কার্ট ভোনেগাটের ক্যাটস ক্রেডল। এগুলো শেষ করে বাকি লিস্ট ঠিক করবো। কতকিছু পড়তে হবে। সব বাকিই থেকে যাচ্ছে অথচ দিনগুলো কেমন অবলীলায় কেটে যাচ্ছে।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমি এখন পড়ছি অ্যানসেস্টরস টেইল, নাজ্ব (Nudge) আর ডেইজি মিলার।

নীলম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। হাসি
ডকিন্সের অ্যানসেস্টরস টেইল? এটা আমারও পড়ার ইচ্ছা আছে। বাকি দু'টো সম্পর্কে অবশ্য ধারণা নেই।

তারেক অণু এর ছবি

চলুক

এর চেয়ে ভাল অভ্যাস আর কিছুই হতে পারে না।

পড়ে যান, আমাদের জানিয়েন কি পড়লেন, কেমন লাগল।

নীলম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া। হাসি

আপনার আরজ আলী মাতুব্বরকে নিয়ে লেখাটা পড়ে পড়তে আরো উৎসাহিত হয়েছি। জানি সবই, কিন্তু কেউ এভাবে আবারো মনে করিয়ে দিলে সেটা বেশ কাজে আসে।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
এরকম কিছুদিন পরপর আপডেট দিয়েন , আমার মত অনেকের জন্য ভাল কাজে দেবে কি পড়ব, কেন পড়ব-র উত্তর পাওয়া যাবে। খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন।

নিরন্তর

নীলম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। হাসি

আপনারাও জানাবেন কি পড়ছেন, সবারই কাজে আসবে।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ইন্টারেস্টিং। সাধারণতঃ এতো পাঁচমিশালি বই একত্রে পড়তে দেখি না কাউকে হাসি

মনে করিয়ে দিলেন, হাতে প্রচুর বই- একসাথে অনেকগুলো পড়া শুরু করে এখন কোনটাই শেষ করা হচ্ছে না আর। আপনার অঢেল সময়কে ঈর্ষা করতেই হচ্ছে। হাসি

নীলম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ভাইয়া। হাসি

ঈর্ষা করার মতোই অবস্থা, বই পড়ার জন্য আদর্শ সময় পাওয়া গেছে। তবে খুব করে চাইছি এই সময় শেষ হয়ে যাক।

শাফায়েত এর ছবি

একটানে পড়ে ফেললাম লেখাটা। আমি আর্থার সি ক্লার্কের স্পেস ওডিসি পড়ছি এখন,২পর্ব পড়া শেষ,আরো ২টা বাকি।

নীলম এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

কেমন লাগলো জানাবেন।

কৌস্তুভ এর ছবি

কলেজ স্ট্রিটে একটা বইয়ের স্টলের গায়ে বাকি সব নেশা খারাপ, আর বইয়ের নেশা ভাল, এই নিয়ে একটা দুলাইনের কবিতা লেখা থাকত, ভারি মজার। ফের কখনও গেলে ছবি তুলে নিয়ে আসব, যদি থাকে।

আপনি যখন বিজ্ঞানের বই পড়তে এমন ভালবাসেন দেখা যাচ্ছে, তখন Your Brain on Food: How Chemicals Control Your Thoughts and Feelings বইটা পড়ে দেখুন। ডেনেটের Breaking the spell বইটাও পড়তে বলব।

নীলম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে হাসি

এই লেখাটা লেখার একটা প্রধান উদ্দেশ্য ছিল এমন কিছু রিকমেন্ডেশন পাওয়া। উদ্দেশ্য সফল হো হো হো

কড়িকাঠুরে এর ছবি

দারুণ... পড়ুন আর জানান কী কী পড়লেন...

আধ খাওয়া করে বেশ কিছু বই পড়ে রেখেছি- শেষ করতে পারছি না... মন খারাপ

নীলম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে হাসি

আবার শুরু করুন, শেষ হয়েই যাবে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নীলম এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

সৌরভ এর ছবি

পড়ার প্রায় ভুলতে বসা অভ্যাসটা জাগিয়ে দিলেন হাসি

নীলম এর ছবি

বাহ্! এতো বড় কাজ করে ফেলেছি নাকি? হাসি

কি পড়ছেন জানাবেন। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

শাব্দিক এর ছবি

খুব ভাল লাগল লেখাটা।
অনেকগুলো বইয়ের ছোট ছোট রিভিউ মনে হচ্ছে। আর পাশাপাশি আবিস্কার করলাম আমার মত অনেকেরই আধ খাওয়া বই রেখে দেয়ার অভ্যাস আছে, যা করলে কেমন জানি একটা অপরাধবোধে ভুগতে থাকি।
স্যাম হ্যারিসের লায়িং বইটার লিঙ্ক দেয়া যাবে কি?

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

নীলম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পড়ে মন্তব্য করার জন্য। হাসি

তবে দুঃখিত স্যাম হ্যারিসের বইটার ফ্রি ডাউনলোডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ওটা ওখান থেকে আর নামানো যাচ্ছে না, এবার কিনতে হবে। আমি এখান থেকে পেয়েছিলাম বইটা।

ধুসর জলছবি এর ছবি

আমারও কিছুদিন আগ পর্যন্তও বই পড়ার অভ্যাসটা ছিল আপনার মতই। পড়ে শেষ করা না পর্যন্ত শান্তি পেতাম না। অন্য কাজে মন বসত না। তবে ইদানীং নিজেকে ঠিক করছি । প্রতিদিন কিছুটা হলেও পড়ি, অন্য কাজ শেষে। তারপর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করি পরের দিনের জন্য। হাসি অনাকাংক্ষিত ছুটি লম্বা হোক এই কামনা রইল। হাসি

নীলম এর ছবি

হ্যাঁ, এবার আমাকেও চেষ্টা করতে হবে এই অভ্যাস বদলাতে। সারাজীবন এমন ছুটির আশায় কাটিয়ে দিলেতো আর চলবে না। এবার আমি নিজেই চাইছি ছুটিটা শেষ হোক, ক্যাম্পাসে ফিরতে মন ছটফট করছে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পড়ে মন্তব্য করবার জন্য। হাসি

Kajolvomora এর ছবি

ভাল লাগলো। আরো লিখুন।

আমি 'সোফি'স ওয়ার্ল্ড' সমাপ্ত করলাম। তারপর পড়ছি 'রিজারকশন', (টলস্টয়) ও ঈদসংখ্যাগুলো।

নীলম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে হাসি

আরো পড়ুন, আমাদেরকেও জানান।

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ ভালো ই সময় কাটালি বই গুলো পড়ে। আমিও কিছু পড়াড় চেষ্টা করছি, দেখি কতদুর হয়।

ভালো লাগলো পড়ে।

নীলম এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি
আমরা কি পরিচিত?

লাবীব এর ছবি

জী পরিচিত।

হাসি

সাবকাত এর ছবি

আপু, বাসায় আসতেছি। হলে আসার পর আগের মত বই পড়া হয় না। কিছু বই ধার ( শয়তানী হাসি ) ধার দিয়েন।

নীলম এর ছবি

এখনতো ই-বুকের যুগ! চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার পড়ার পরিধি বিস্মিত করেছে গুরু গুরু । এতো ভিন্ন ধারার লেখা পড়া সহজ নয়। আমি ইংরেজিতে অনেক ভালোতো তাই ইংরেজি কোন বই পড়ে এখনো শেষ করতে পারিনি হো হো হো । দুই একটা পড়েছি ভীষন খাটুনি খেটে। ভারত বর্ষ ভাগ নিয়ে হাসান আজিজুল হকের একটা উপন্যাস আছে “আগুন পাখি”। আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। পড়ে দেখতে পারেন, দেশ ভাগের বেদনা অনেকটাই উপলব্ধি করা যায় বইটা পড়ে। সর্বশেষ পড়া শাহীন আক্তারের “তালাশ” টা ও খুব ভালোলেগেছে। মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে লেখা একজন নারীর কাহিনী। মুক্তিযুদ্ধকে তো আসলে একটা বইয়ে কখনো লিপিবদ্ধ করা যাবে না, ছোট-বড় সব কাহিনীকে নিয়ে অসংখ্য লেখা নিয়ে হবে মুক্তিযুদ্ধ ও তার ইতিহাস। কৃষণ চন্দরের গাদ্দার বইটি সংগ্রহ করবো আশা রাখছি। পড়তে থাকুন আর আমাদেরকে জানান ভালোলাগা-মন্দলাগাগুলো। তাহলেই আরো বেশি বেশি পড়তে পারবো, পড়ার আগ্রহটা আরো বাড়বে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

নীলম এর ছবি

এত পুরনো লেখা পড়ে মন্তব্য করবার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ হাসি

আগুনপাখি পড়েছি। লেখার ভাষাটা তেমন পছন্দ হয়নি বলেই হয়তো বইটাও অতটা ভালো লাগেনি আমার। তালাশ কিছুদিন আগেই আমার বোনের কালেকশনে দেখলাম। পড়বো ঠিক করে রেখেছি। আর ইংরেজি বই প্রথম দু'একটা শেষ করতে একটু সময় লাগে। তারপরে বেশ একটা ফ্লো চলে আসে। নিজের অভিজ্ঞতা এমনই বলে। অনুবাদ পড়ে মজা পাইনা বলে ইংরেজী পড়তেই এখন বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আপনিও আরেকবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনার সবগুলো লিখাই পড়লাম, একটা মানুষের সবগুলো লেখা পড়লে মানুষটা সম্পর্কে ধারণা স্বচ্ছ হয় আর নিজের জানাশুনা টাও বাড়ে। আগুন পাখির ভাষাটাই আমাকে দারুন আকর্ষন করেছে, যাইহোক ভালোলাগার ক্ষেত্রগুলো ব্যাক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে।

হুম পড়তে হবে, বই পড়ার সময় কম পাই এখন তাই কষ্ট করতে মন চায়না হো হো হো । তাও ঘন্টাখানিক করে পড়ার চেষ্টা করি। এখন পড়ছি বন্যা আহম্মেদ এর বিবর্তনের পথ ধরে বই টি। বিবর্তন আমার খুব প্রিয় বিষয়, টুকিটাকি অনেক কিছুই নতুন করে জানছি তাই পড়ে বেশ আরাম পাচ্ছি। পড়ে না থাকলে পড়তে পারেন। ভালোথাকবেন কাছে দূরে সবখানে।

মাসুদ সজীব

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।