নিঃশব্দ যাপন

মেঘা এর ছবি
লিখেছেন মেঘা [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৩/০৯/২০১১ - ১২:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"এই সকাল বেলা কোথায় যাও তুমি?" দরজা দিয়ে বের হয়ে যাবার সময় পিছন থেকে জিজ্ঞেস করে রুহান। ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আছে দরজার দিকে। তন্বি একবার ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে কোন কথা না বলে বের হয়ে যায়। কাল রাতের কথা মনে পরে কেমন যেন লাগতে থাকে রুহানের। "তন্বির চোখটা কি ফোলা ফোলা ছিলো?" কথাটা মাথায় আসার সাথে সাথে বিছানা থেকে নেমে দরজার দিকে যেয়ে খুঁজতে থাকে তন্বিকে। কারো পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। দৌড়ে ওপরে উঠে দেখে তন্বি উদভ্রান্তের মতো সিঁড়ি দিয়ে ছাদের দিকে চলে যাচ্ছে। রুহান পিছনে পিছনে যেতে যেতে জিজ্ঞেস করে,
"তোমার কি হয়েছে? বৃষ্টি হচ্ছে না? এই বৃষ্টির মধ্যে ছাদে যাচ্ছো কেন?" তন্বি হাত দিয়ে চোখ মুছে বলে, "এমনি।"
"তন্বি তুমি এখন ছাদে যাবে না। আমি মানা করছি। এখনি নীচে চলো আমার সাথে।" তন্বি এবারও একবার রুহানের দিকে তাকিয়ে কোন কথা না বলে ছাদের দিকে যেতে থাকে। ৮ তলা যাবার পর ছাদের দরজা খুলে ভেতরে চলে যায় তন্বি। আর রুহান কিছু একটা খারাপ ঘটতে যাচ্ছে মনে করে দৌড়াতে দৌড়াতে ছাদে এসে পিছন থেকে তন্বির হাত ধরে ফেলে বলে, "তন্বি আমি কিন্তু ভীষণ রাগ হচ্ছি। তুমি এখনি ছাদ থেকে নামবে। আর আমার সাথে যাবে।" রুহানের হাত থেকে টান দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করতে থাকে তন্বি আর বলতে থাকে,
"না আমি তোমার সাথে নীচে যাবো না। আমি কারো সাথে কোথাও যাবো না। আমি মরে যাবো।"
"কেন? মরে যেতে হবে কেন? মরে যাওয়া মানে হেরে যাওয়া তুমি জানো না? আমি হেরে যাওয়া মানুষ ঘৃণা করি তন্বি তুমি জানো না?" খুব জোরে তন্বিকে ঝাঁকি দিয়ে বলতে থাকে রুহান। তন্বি কিছুক্ষন অপলক তাকিয়ে থেকে বলে,
"কারণ তুমি আমাকে বেঁচে থাকতে দিচ্ছো না।"
"আমি তো তোমাকে বেঁচে থাকতেই বলছি। কাল রাতে আমি তোমাকে সেটাই বলেছি। বেঁচে থাকো, ভালো থাকো। কষ্টহীন একটা জীবন তুমি পাও এটাই আমি চাই।"
"না। তুমি আমাকে বর্ণহীন, রঙহীন একটা জীবন দিচ্ছো। যেই জীবনটাতে আমার কোন সুখ থাকবে না। কোন কষ্ট থাকবে না। কোন স্বপ্ন থাকবে না। এই জীবনটা কি আমার জীবন হবে? এমন জীবন কি আমি চেয়েছি?" বলতে বলতে কাঁদতে থাকে তন্বি।
"আমার কথা বিশ্বাস করো অন্য কারো সাথে তুমি থাকলে সে তোমাকে আমার চেয়ে অনেক বেশী ভালোবাসবে। আমার মত করে কষ্ট দিবে না। আমার মত করে নিজের ইচ্ছা তোমার উপর চাপিয়ে দিবেনা। তোমার কথা শুনবে। তোমার ভালো লাগা খারাপ লাগা গুলো তার কাছে আমার মত গুরুত্বহীন হবে না।"
"না আমার এমন কাউকে লাগবে না। আমি এমন কাউকে ভালোবাসি না। আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমার জন্য কষ্ট করতে পারি। আমি তোমার জন্য মরতেও পারি। কিন্তু অন্য কারো জন্য কিছু করতে পারবো না। আমার কাছে আর কারো জন্য কিছু অবশিষ্ট নাই।" ছাদের উপর বসে মুখ ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলতে থাকে তন্বি। বৃষ্টি আর চোখের পানিতে ভেসে যাচ্ছে সব কিছু। কথা গুলো যেন আর্তনাদ। শুনলেই টের পাওয়া যায় বুক ভেঙ্গে যাচ্ছে কষ্টে।
"তুমি এমন করে কাঁদছো কেন? প্লীজ এমন করে কান্না করো না। আমার খারাপ লাগছে।"
"রুহান আমার কান্না দেখতে খারাপ লাগে তোমার তাহলে আমাকে কিভাবে করে তুমি অন্য কারো কাছে চলে যেতে বলছো? তুমি জানো না আমি কেমন? তুমি জানো না আমি খুব বেশী ভালোবাসি তোমাকে?"
"প্লীজ নীচে চলো। এভাবে বৃষ্টিতে ভিজলে তোমার জ্বর আসবে আবার। তুমি এমনিতেই অসুস্থ।" কথা না বলে কাঁদতে কাঁদতে ছাদের উপর বসে পরে তন্বি। ওর কাছে বসে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রুহান বলে,
"খুব বেশী মন খারাপ হয়েছে? আমার কিছুই বলার নাই তোমাকে। আমি এমনি। আমার নিজের মত থাকতে ভালো লাগে। তোমাকে ভালোবাসি না এমন না। যে কারো চেয়ে অনেক বেশী ভালোবাসি। কিন্তু আমি আর সবার মত করে ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি না। আমার কারো সাথে বাঁধা থাকতে ইচ্ছা করছে না। তোমার সাথেও না অন্য কারো সাথেও না।" কথাগুলো যখন বলছে রুহান তখন তন্বি দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরে ক্রমাগত বলতে থাকে,
"না না না আমি শুনবো না। আমি এইসব আর শুনতে চাই না। প্লীজ প্লীজ তুমি চুপ করো।" পাগলের মত কান্না করতে করতে চিৎকার করে তন্বি বার বার এক কথা বলতে থাকে।

কাউকে বোঝার জন্য ভালোবাসার জন্য সময়টা হয়ত খুব কম। অন্য কেউ শুনলে বলবে এই সময়ে তো একটা মানুষকে চিনতে জানতেই লেগে যায়। তাহলে এর মধ্যে এতো তাড়াতাড়ি ভালোবাসা কেমন করে হয়? তাও আবার এমন ভালোবাসা? সত্যি রুহান নিজেও বুঝে পায় না কিভাবে করে হঠাৎ করে এমন হয়ে গেলো। তন্বি যখন থেকে বড় হয়েছে শুধু দেখেছে মানুষ ওর সুন্দর শরীরের জন্য ওর সাথে মিশতে চেয়েছে। কাছে পেতে চেয়েছে। কেউ কেন যেন ভালোবাসার কথা বলে না। কেউ ভালোবাসে না। মানুষের এমন নোংরা মনের পরিচয় পাবার পর থেকে আর কারো উপর বিশ্বাস করতে পারতো না তন্বি। রুহান তন্বির এই অবস্থা দেখে ওকে আবার মানুষের উপর বিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে ভেবে তন্বির সাথে কথা বলা শুরু করে। তন্বি তখন এমন এক অবস্থায় ছিলো কাউকে বিশ্বাস করতে পারতো না। কিন্তু রুহানকে কেন যেন বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে তাই রুহানের সাথে প্রথম দিন থেকে ভালো ভাবে কথা বলা শুরু করে। একটা মানুষের বুকের মধ্যে যে কত কথা জমা হয়ে থাকে সেটা তন্বির নিজেরও জানা ছিলো না। কথা বলাটাই বলা যায় একটা নতুন সম্পর্কের শুরু। রুহান নিজের জীবনের হতাশার না পাওয়ার কথা বলে তন্বিকে আশার কথা শুনিয়েছিলো। মানুষ মনে করে কথা বলেছিলো। বাঁচতে বলেছিলো। আর তন্বি সেই কথাগুলোকে, রুহানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছে। ভালো একটা বন্ধু হতে চেয়েছিলো রুহান। সব সময় বলতো,
"আমি তোমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হবো তন্বি। এমন বন্ধুত্ব তোমাকে আগে কেউ কখনো দেয় নি।"
রুহান ওর কথা রেখেছে। এমন এক ভালোবাসা তৈরী করে দিয়েছে তন্বির মধ্যে যে এখন আর অন্য কারো ভাবনা মনে আনতে পারে না তন্বি। কি অদ্ভুত অসহায় অবস্থায় যে পড়েছে তন্বি সেটা কাউকে বোঝানোর মত না। এমন কি রুহানকেও বোঝানোর মত না। রুহান যখন মাঝে মাঝে ওকে ছেড়ে চলে যেতে বলে তখন তন্বি কেমন কষ্ট পায় যেটা একমাত্র তন্বি জানে।
প্রায় ডুবে যাওয়া একজন মানুষকে যে পানি থেকে টেনে তোলে তার উপর সারাজীবনের কৃতজ্ঞতা থাকে। কারো কারো কৃতজ্ঞতা হয়ে যায় ভালোবাসা। আর কারো কৃতজ্ঞতা সারাজীবন কাছে থাকার প্রতিজ্ঞা। রুহান আর তন্বির অবস্থা অনেকটা এমন। রুহান বাঁচতে শিখিয়েছে তাই তন্বির রুহানের জন্য হয়েছে অপরিসীম ভালোবাসা। আর রুহান অন্য কারো কাছে কৃতজ্ঞ যেই কৃতজ্ঞতা রক্ষা করা রুহানের কাছে কারো ভালোবাসা উপেক্ষা করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবার চেয়েও অনেক বেশী জরুরী। ভালোই তো চলছিলো সব শুরুর দিকে তাহলে হঠাৎ কি হলো?

শুরুটা ছিলো ঝড়ের মত। হঠাৎ করে দুইজনার পরিচয়। খুব তাড়াতাড়ি কাছে চলে আসা, ভালো লাগা। মনে মনে ভাবলেই তখনি ফোন চলে আসা। সব কিছু ভীষণ ভাবে মুগ্ধ করতো তন্বিকে। রুহান নিজের ভালো লাগাটা গোপন করে রাখতে পারার মত ছেলে না। যখন যা করতে ভালো লাগে সেটাই করে। যখন তন্বিকে অনেক বেশী ভালো লেগেছে তখন তন্বির অনেক বেশী কাছে চলে এসেছে। হাত ধরা অথবা চুমু খাওয়া এই ব্যাপারগুলো ছিলো রুহানের জন্য "তোমাকে ভালো লাগে আমার" এই কথা জানানোর মত শুধুমাত্র। আর তন্বির কাছে অজানা ভুবন। প্রথম ছোঁয়া ! কিছু বুঝে উঠার আগেই কোথেকে প্রবল বেগে আসা আবেগ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সব কিছু। কি অদ্ভুত তখনকার অনুভূতি! কথা না বললে ভালো লাগে না। দেখা না হলে মনের মধ্যে স্বস্তি নেই। একটু দূরের যাত্রার কথা শুনলেই চোখ ভেঙ্গে কান্না। রুহান অবাক হয়ে একদিন তন্বি কে জিজ্ঞেস করে,
"তুমি কি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো নাকি?"
কেমন অবাক করা একটা প্রশ্ন! তন্বি কি বলবে ভেবে পায় না। এই কথার কি উত্তর হতে পারে? ভালোবাসা কি সত্যি হয়েছে? অনেক ভাবনা অনেক চিন্তা তারপর অবাক হয়ে নিজেই আবিস্কার করা। হ্যা ভালোবাসা নামের কিছু একটা মনের মধ্যে বাসা বানিয়ে ফেলেছে।
"কি হলো চুপ করে আছো কেন? বলো তুমি কি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো?"
"আমি জানি না। আমি শুধু জানি তুমি আমার পাশে থাকলে আমি ভালো থাকি। তুমি আমার কাছে থাকলে আমার নিজেকে জীবন্ত মনে হয়। তোমার জন্য আমার বাঁচতে ইচ্ছা করে। এটা যদি ভালোবাসা হয় তাহলে আমি তোমাকে ভালোবাসি।"
"ওহ নো ! বলো কি? কি বিপদ ! তুমি আমাকে ভালো কেন বাসলে?"
"আমি জানি না কেন। আমি জানি না কিভাবে !"
ভালোবাসার কথাটা এমন করেই বলেছিলো তন্বি। তবে তখন জানা ছিলো না এই নিষ্পাপ ভালোবাসা হয়ে যাবে বেদনায় নীল। তন্বি ভালোবেসে ফেলেছে আর তন্বির সেই পাগলের মত ভালোবাসা উপেক্ষা করা রুহানের কাছে অসম্ভব মনে হয়েছে এক সময়। স্বপ্নময় সময় খুব তাড়াতাড়ি পার হয়ে যায়। যতক্ষন বাহিরে দেখা হয় সেটাকেও মনে হয় যথেষ্ট না। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে রুহান একদিন দুষ্টামী করে বলেছিলো তন্বিকে,
"তন্বি চলো আমরা দুইজন একটা বাসা নি। দুইজন একসাথে থাকবো। আমি একা পারবো না নিতে তোমার আমাকে হেল্প করতে হবে। তাহলে পারবো। কি রাজি?" তন্বি কোন ভাবনা চিন্তা না করেই এক কথায় রাজি।
"হ্যা রাজি। চলো বাসা নেই।"
তারপর রুহান নিজেই একসময় ভুলে গেছে। সেই কথার প্রায় এক মাস হয়ে গেছে। হঠাৎ একদিন তন্বির ফোন,
"রুহান আমি ধানমন্ডি ৬ এর এ তে আছি। তুমি তাড়াতাড়ি আসো আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে।"
"কোথায় যেতে হবে?"
"সেটা গেলেই দেখবে তুমি তাড়াতাড়ি আসো।" রুহান আসতে আসতে শপিং মলে ঘুরে ঘুরে কিছু টুকিটাকি জিনিস কিনে সময় পার করলো তন্বি। তারপর রুহান আসলে ওর হাত ধরে বললো,
"চলো রিক্সা নি।"
"আমরা যাচ্ছি কোথায়?"
"এই তো শংকরে"
"কেন?"
"উফ তুমি এতো প্রশ্ন করো কেন? গেলেই দেখবে।"
রিক্সা নিয়ে জাফরাবাদে একটা নতুন কন্সট্রাকশন শেষ হওয়া বাসার সামনে যায় ওরা। তিন তলাতে যেয়ে কলিংবেল দিয়ে রুহানের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
"কেমন মনে হচ্ছে?"
"কি মনে হবে? কার বাসা এটা?" দরজা খুলে একটা বয়স্ক মহিলা বের হয়ে আসে। আর তন্বি সাথে সাথে সালাম দিয়ে বলে,
"আমার কথা মনে আছে আন্টি? সেদিন বাসা দেখে গিয়েছিলাম। আপনি আমার হাসবেন্ড কে দেখা করতে বলেছিলেন। তাই আজ ওকে সাথে করে নিয়ে এসেছি।" যাকে কথাগুলো বলা হলো তার কি অনুভূতি হয়েছে না হয়েছে রুহান জানে না তবে রুহানের মাথায় যে আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে সেটা নিশ্চিত।
অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তন্বির দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবলো এখানে কিছু না বলাই ভালো। পরে জিজ্ঞেস করতে হবে এই পাগলামীর মানে কি!

ভাড়া দিয়ে যখন বাসার চাবি নিয়ে তন্বি নিচে নেমে এলো তখন ওকে দেখে মনে হচ্ছে একটা যুদ্ধ জয় করে এসেছে। ওর খুশী দেখে রুহানের মেজাজ ভালো হয়ে যেতে থাকে তারপরও মনে হয় তন্বি কে জিজ্ঞেস করা উচিৎ এই সবের মানেটা কি?! রিক্সায় উঠে রুহান জিজ্ঞেস করে,
"তন্বি কি হচ্ছে এগুলো তুমি কি আমাকে বলবে?"
"কেন তুমি দেখতে পারছো না?"
"পারছি কিন্তু বুঝছি না। তুমি আমার সাথে বাসা নিলে মানে কি? তুমি এখন থেকে আমার সাথে থাকবে?"
"হুম।"
"আর বাসায় কি বলবে?"
"উম বলেছি আমি একা একা বিয়ে করে ফেলেছি। মামনি আর বাবা খুব রাগ করেছে। তারপর আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। আমি এই চার দিন ধরে টুম্পার বাসায় আছি। মামনি বলেছে আমি নাকি তার মেয়েই না! আমি এখন কি করবো বলো? বাসা না নিয়ে কোন উপায় ছিলো?" ভালো মানুষের মত মুখ করে তাকিয়ে আছে রুহানের দিকে তন্বি। মেয়েটা এমন করে তাকালে আদর করে দিতে ইচ্ছা করে। তাই খুব রাগ হয়ে থাকলেও কেন যেন কিছুই বলতে পারে না রুহান। সব রাগ কেমন পানি হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে ভাবে "এই মেয়েটা এতো পাজি কেন? রাগও করতে পারি না!" কিন্তু উপর দিয়ে কিছু বুঝতে না দিয়ে জিজ্ঞেস করে,
"তোমার সাথে এতো কিছু হলো তুমি আমাকে বলো নি কেন? আর একা একা বিয়ে করেছো মানে কি? তোমার কি ধারনা এইসব কথা তুমি বলে বেড়ালে আমি তোমাকে বিয়ে করবো?"
"আমি জানি তুমি করবে না। কিন্তু তোমার সাথে আমার কি, কেন আমি তোমার সাথে এতো ঘুরি, এই নিয়ে অনেক কথা জিজ্ঞেস করছিলো তারপর আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আর আমি হঠাৎ করে বলে ফেলেছি বিয়ের কথা। পরে তো আর স্বীকার করতে পারি না মিথ্যা বলেছি তাই বানিয়ে বানিয়ে অনেক কিছু বলেছি। আর মামনি সেটাই বিশ্বাস করেছে। আমাকে বকেছে মেরেছে। তারপর বাসা থেকে চলে যেতে বলেছে।" ঠোঁট উল্টিয়ে বলতে থাকে তন্বি।

রুহান জানে ব্যাপারটা ঠিক হয় নি। তারপরও কেন জানি তন্বির এই পাগলামীর অংশ হয়ে যায় ও। বাসা নেবার পর সে কি উৎসাহ তন্বির। অফিস থেকে বাসায় আসার সময় প্রত্যেকদিন কিছু না কিছু কিনে নিয়ে আসছে ঘরের প্রয়োজনীয়। রুহানকে এটা ওটা বলতেই থাকে তন্বি। বাড়িওয়ালী এসে মাঝে মাঝে দেখে যায় ওদেরকে। একটু একটু করে বাসা সাজানো গুছানো হচ্ছে দেখে নিজেও অনেক পরামর্শ দিয়ে যায়। তন্বিকে সেদিন রুহান হঠাৎ বলতে শোনে,
"আন্টি আমাদের তো টোনাটুনির সংসার। করবো সব আস্তে আস্তে। আপনি শুধু দোয়া করবেন।"
কথাটা কেমন যেন মাথার মধ্যে ঢুকে যায় রুহানের। টোনাটুনির সংসার! বলার মধ্যে কি মায়া ছিলো! "কেন করছে মেয়েটা এইসব?" মনে মনে ভাবতে ভাবতেই নিচে চলে যায় রুহান সিগারেট খাবার জন্য। আগে বাসায় বসে সিগারেট খেতে পারতো কিন্তু তন্বির সাধে বাসায় সিগারেটের ধোঁয়া সে সহ্য করবে না বলে দিয়েছে তাই বাধ্য হয়ে প্রত্যেকবার নিচে যেতে হয়। এটা একটু বিরক্তিকর লাগে রুহানের। তন্বি কে ভালো লাগে না তা না। কিন্তু.......ভাবনায় ছেদ পরে ফোন বেজে ওঠাতে,
"শোন জানু তুমি দোকান থেকে আইসক্রিম নিয়ে এসো তো। আমার আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা করছে।"
"তোমার ঠান্ডা লেগেছে তার মধ্যে আইসক্রিম খেতে হবে কেন?"
"আমার ইচ্ছা করছে তো এই জন্য।"
"না ইচ্ছা করতে হবে না। আমি বলেছি তুমি খাবে না ব্যস খাবে না।"
"উহু হু হু হু" খুন খুন করে কাঁদতে কাঁদতে ফোন রেখে দিয়েছে তন্বি। এই মেয়েটা এমন বাচ্চা মানুষের মত কেন?! আইসক্রিম নিয়ে বাসায় যেয়ে দেখে ঠোঁট ফুলিয়ে বসে আছে। রুহানকে দেখার সাথে সাথে ওর দিকে পিঠ দিয়ে শুয়ে পড়ে তন্বি তাই দেখে রুহান বলে,
"ঠিক আছে রে বাবা ভুল হয়ে গেছে বকা দিয়েছি। আইসক্রিম এনেছি তো এখনো রাগ করে থাকবে?"
"হুম"
"দেখো এমন করে আমার সামনে ঠোঁট উল্টাবে না বলে দিলাম। আমি কিন্তু তাহলে কামড় দিবো।"
বলতে বলতেই তন্বির কাছে চলে যায় রুহান। রুহান খুব ভালো করে তন্বিকে চেনে। জানেই ও কাছে যাওয়া মানে তন্বির মনের মধ্যে থাকা সব প্রতিরোধ রাগ এক নিমিষে ঝুর ঝুর করে ভেঙ্গে পড়া। রুহান যেয়ে বিছানায় বসে এক হাত দিয়ে ওকে টেনে তুলে জড়িয়ে ধরে। তন্বি বুকে মুখ রেখে বলে,
"এমন করে বকা দিলে কেন? তুমি কি আমার উপর রাগ?"
"তোমাকে দেখলে আর রাগ করতে পারি না।" গলায় ঠোঁট বুলিয়ে বলে রুহান। এইসব এমন ঘটনাগুলো ছিলো প্রত্যেকদিনের। রুহানের কাছে মনে হতো তন্বির মত বাচ্চা মানুষের সাথে থাকতে থাকতে ওর মধ্যেও ছেলেমানুষী ব্যাপারগুলো ঢুকে যাচ্ছে।

ভালোই যাচ্ছিলো সব কিছু। সাজানো গুছানো সুন্দর একটা সংসার। পাগলের মত ভালোবাসার একজন মানুষ। এতোদিন বাড়ী থেকে দূরে হলে, মেসে থাকা একটা মানুষের জন্য অনেক বেশী ভালো লাগার মত একটা ব্যাপার। রুহানের অফিসের সবাই একবাক্যে বলতো, "বউ হলে তন্বি ভাবির মত হওয়া উচিৎ। এতো ভালোবাসে আপনাকে! ছবির মত সাজিয়েছে সব।" কথাগুলো শুনলে গর্ব লাগে নিজের অজান্তেই। রুহান তন্বিকে নিয়ে সুখে ছিলো। ভুলে গিয়েছিলো তন্বি ওর বিয়ে করা বউ না। মনে করার আসলে দরকার হয়নি কখনো। এই মেয়েটা এমন ভালোবাসা দিয়েছে যে রুহান আর সব কিছুর কথা, সবার কথা বলতে গেলে ভুলেই গিয়েছিলো । কিন্তু নিয়তি বলে একটা কিছু বোধ হয় সত্যি আছে। নাহলে এমন হবে কেন?
প্রত্যেকদিনের মত সেদিনও রুহান তন্বিকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলো। এমন সময় একটা ফোন আসে। রুহান ফোন কে করেছে দেখেই তন্বিকে ছেড়ে উঠে বারান্দায় চলে যায়। তন্বি ঘড়ি দেখে সকাল ৬টা বাজে। এতো সকালে কে ফোন করেছে ভেবে একটু অবাক হচ্ছিলো। রুহান কথা শেষ করে যখন রুমে আসে তখন প্রায় এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে।
"কে ফোন করেছে? বাসা থেকে কেউ? কিছু কি হয়েছে জান?" জিজ্ঞেস করে তন্বি।
"না কেউ না। আমাকে একটু বাহিরে যেতে হবে। রাতে বাসায় ফিরবো কিনা জানি না এখনো। তুমি ভয় পেও না। আর আমি কল না করলে প্লীজ তুমি করো না।" কথাগুলো বলেই তাড়াহুড়া করে বের হয়ে যায় বাসা থেকে। সেদিন সারা রাত রুহানের কোন খোঁজ নেই। ফোন করতে মানা করেছে রুহান তারপরও টেনশনে ফোন করে বসে তন্বি। কিন্তু ফোন বন্ধ ! সারা রাত ছটফট ছটফট করেই কেটেছে তন্বির। দুইদিন কোন খোঁজ পায় না রুহানের। এই দুইদিন তন্বি বলতে গেলে পাগলের মত হয়ে গেছে। তিনদিনের দিন রুহান বাসায় আসে। এসে তন্বিকে জিজ্ঞেস করে,
"তুমি কিছু খেয়েছো তো?" কেমন করে যেন জিজ্ঞেস করে রুহান তন্বিকে। শুনে মনে হয় অনেকদিনের অভ্যেসের বশে জিজ্ঞেস করা।
"তুমি কোথায় ছিলে? কি হয়েছে?" রুহানের কথার উত্তর না দিয়ে ভয় ভয় গলায় জিজ্ঞেস করে তন্বি।
"এই সব প্রশ্ন করবে না। আমার তোমার প্রশ্নের উত্তর দেবার কোন ইচ্ছা নাই। আমি যা জিজ্ঞেস করেছি তাই বলো।" চিৎকার দিয়ে বলে রুহান।
"তুমি এমন করছো কেন?" কান্না চেপে জিজ্ঞেস করে তন্বি।
"জানি না কেন করছি। আমি শুধু জানি আমার ভালো লাগছে না কিছু ভালো লাগছে না।" বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে বাথরুমে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তন্বি খুব নরম টাইপের মেয়ে। ওর রুহানের এই ব্যবহার দেখে খুব কষ্ট হতে থাকে। অনেকক্ষন পর রুহান শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে আসে। তাই দেখে কান্না চেপে তাড়াতাড়ি তন্বি রুহানের জন্য নাস্তা বানাতে থাকে। তখন রুহান এসে বলে,
"আমি একা খাবো না তোমাকেও খেতে হবে। যাই বানাবে দুইটা বানাও।" গলার সুর এখন অনেকটাই নমনীয়। তাই শুনে একটু স্বস্তি পায় তন্বি। নাস্তা করা শেষ হবার পর তন্বি রুহানকে বলে,
"জান শরীরটা বেশী ভালো না আমার। শুধু ডাল ভাত করি?"
"করো। শরীর ভালো না কেন? কি হয়েছে?" গায়ে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে রুহান তারপর নিজেই বলে
"তোমার গায়ে তো অনেক জ্বর। ডাক্তার দেখাওনি?" রুহানের এই এতো টুকু কথা শুনেই চোখে পানি চলে আসে তন্বির।
"তুমি ছিলে না। আমি তোমার জন্য অনেক বেশী চিন্তায় ছিলাম। তাই আর নিজের দিকে খেয়াল দিতে পারি নি।"
"তন্বি এমন করে আমার কাছ থেকে তুমি কিছু পাবে না। তুমি এই সব করে কি প্রমান করতে চাও তুমি আমাকে বেশী ভালোবাসো?" খুব বিরক্ত হয়ে বলে রুহান।
"তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন? আমি কি বলেছি আমি কিছু প্রমান করতে চাইছি? একটা মানুষ বাসা থেকে বের হয়ে কোথায় গেলো তার জন্য আমার চিন্তা হবে না?" কাদঁতে কাঁদতে বলতে থাকে তন্বি।
"প্লীজ কান্নাকাটি বন্ধ করো। আমার এইসব পেইন ভালো লাগে না। তুমি আমার সামনে থেকে যাও।" বলে মুখ ঘুরিয়ে নেয় রুহান। তন্বি অনেকদিন রুহানের সাথে থাকার জন্য ভালো করেই ওকে বুঝতে পারে। যেহেতু এখন বলতে চাইছে না এখন হাজার জিজ্ঞেস করলেও বলবে না রুহান কি হয়েছে। তারচেয়ে ওর মুড ভালো হবার জন্য অপেক্ষা করাই ভালো। তন্বি চুপচাপ নিজের কাজ করতে থাকে। রাতে খাবার পর ১২টার দিকে রুহান বিছানায় এসে তন্বি কে বলে,
"আমার কাছে এসো। তোমাকে কিছু কথা বলবো।"
"বলো"
"তোমার আগে আমার জীবনে একটা মেয়ে ছিলো। মেয়েটা আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে। আমি যখন প্রায় ডুবে যাওয়া একজন মানুষ ছিলাম তখন এই মেয়েটা বলতে গেলে আমাকে বাঁচিয়েছে। আমি ওর উপর অনেক কৃতজ্ঞ। আমি ওকে কথা দিয়েছিলাম ও আমার কাছে যা চাইবে যেভাবে চাইবে আমি ওর জন্য তাই করবো। আমি ওর ভালোর জন্য সুখের জন্য সব করতে পারি। তুমি বুঝতে পারছো আমার কাছে ও কত বেশী ইম্পর্টেন্ট?"
"হুম বুঝতে পারছি।" কথাটা বলতে যেয়ে তন্বি খেয়াল করে দেখে ওর বুকের মধ্যে কেমন ব্যথা করছে আর মনে হচ্ছে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে এতোটাই কষ্ট হচ্ছে।
"ও আমার কাছে আবার ফিরে এসেছে। ওর ধারনা আমার সাথে বিয়ে হলে ও ভালো থাকবে।" কোন কথা না বলে অপলক রুহানের দিকে তাকিয়ে আছে তন্বি। তাই দেখে রুহান আবার বলে,
"তোমাকে কত ছেলে পছন্দ করে, ভালোবাসে। তোমার জন্য ছেলের অভাব হবে না। দরকার হলে আমি তোমার জন্য ছেলে দেখবো। তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলো।" তন্বির চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তে থাকে এই কথা শুনে।
"তন্বি আমি জানি আমি তোমাকে খুব বেশী কষ্ট দিচ্ছি। কিন্তু বিশ্বাস করো আমার কিছু করার নাই। আমি পারবো না ওকে ফেরাতে। আমি ওর জন্য বেঁচে আমি। আমাকে তুমি যেমন দেখো বলতে পারো অনেকটাই আমি ওর জন্য এমন। আমি এখন কি করবো বলো?"
"আমি কি নিয়ে বাঁচবো? আমি কি করে থাকবো? আমি আর কাউকে ভালোবাসি না। আমি আর কারো জন্য বাঁচি না। আমি কি করবো তুমি শুধু আমাকে তাই বলে দাও।" চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে তন্বি।
"তুমি আমাকে ভুলে যাও।" এমন একটা কথা রুহান বলতে পারলো? মনে হয় এই কথাটা চিন্তা করেই তন্বির কান্না বল্ধ হয়ে যায়। কোন কথা না বলে তন্বি বারান্দায় চলে যায়। সারা রাত বারান্দায় বসে শুধু পাগলের মত কেঁদেছে আর ভেবেছে কি করবে এখন। আর অন্য দিকে রুহান তন্বিকে কষ্ট দেবার জন্য নিজেকে ভীষণ অপরাধী ভাবতে থাকে। তন্বির কান্নার শব্দ সারাটা রাত শুনেছে কিন্তু একটা বারও কাছে যেয়ে বলেনি কিছু। এমন কষ্টের সময় কিছু বলা যায় না কাউকেই। দুইজন দুই জায়গায় সম্পূর্ণ বিপরীত কষ্টে রাত পার করেছে। একটা সময় নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়েছে রুহান। আর তন্বি খুঁজে পেয়েছে সমধান। ভোর রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভোর ৬টার সময় তন্বির মনে হলো এখন সময় হয়েছে-------

ছাদের উপর রুহানের হাতের উপর অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে তন্বি আর রুহান চিৎকার করে সাহায্যের জন্য ডাকছে কাউকে। রুহান যখন হাসপাতালে নিয়ে আসে তন্বিকে তখন পর্যন্ত জ্ঞান ফেরেনি তন্বির। ডাক্তার সব পরীক্ষা করে বললো ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করেনি এই অবস্থায় তাই বেশী দূর্বল হয়ে গেছে আর জ্বর বেশী ছিলো তার মধ্যে বৃষ্টিতে ভেজা সব মিলিয়ে শরীরটা আর নিতে পারে নি। রুহান কিছুক্ষন চুপ করে থেকে চিন্তা করে ধরতে পেরেছে ডাক্তার কোন একটা বিশেষ অবস্থার কথা বলেছে।
"এই অবস্থা মানে?"
"আপনার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট।" কোন কথা না বলে ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ে রুহান। এই অবস্থায় কি করা যেতে পারে? কাউকে কিভাবে করে কি বা বলা যায়? রুহান নিজেই জানে রুহানের পরিস্থিতিটা। তন্বির সামনে প্রত্যেকদিন এসে বসে থাকে রুহান তন্বি কোন কথা বলে না আর রুহান নিজের থেকে কিছু বলতে পারে না। একদিন অফিস থেকে হাসপাতালে যেয়ে অনেক খুঁজেও রুহান তন্বিকে খুঁজে পায় না। পাগলের মত ফোন করেছে একটার পর একটা। বলতে গেলে সবাইকে ফোন করা হয়ে গেছে কেউ জানে না তন্বি কোথায়। অনেক রাতে শূণ্য বাসায় ফিরে রুহান দেখে ফ্রিজের ডোরে চাপা দেয়া একটা কাগজ। দেখেই মনে পড়ে যায় তন্বি জরুরী কিছু বলার থাকলে এভাবে লিখে রেখে যেতো। কাগজটা নিয়ে দেখে তন্বি লিখেছে,
"চলে গেলাম। তোমার ছোট একটা অংশ চুরি করে নিজের সাথে নিয়ে যাচ্ছি। আমি তোমাকে বাঁচাতে পারি নি হয়ত কিন্তু মেরে ফেলতেও পারব না। ভালোবাসা তুমি জেনে রেখো আমি শুধু তোমারই ছিলাম। থাকবো। তুমি শুধু ভালো থেকো।"
কারো জন্য কখনো কষ্ট হয় না রুহানের। কান্না পায় না কারো জন্যেই। কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে কি যেন একটা নেই বুকের ভেতরে। একটু আগেও ছিলো এখন বুকটা খালি। ভাবনাটা আসতেই কেমন যেন ভেতর থেকে ডুকরে উঠে আসে কান্না।

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
একটা ছোট বাচ্চা ছেলে শপিং মলে দৌড়া দৌড়ি করে বেড়েচ্ছে। তাই দেখে সুহানা বলে
"দেখো বেবীটা কি সুইট।" কথাটা শুনেই বাচ্চাটাকে দেখার জন্য ঘুরে তাকায় রুহান। বাচ্চাটা আসলেই অনেক সুন্দর। একটা মেয়ে এসে বাচ্চাটার হাত ধরে বলে,
"রিশান প্লীজ বাবা এমন করে না।" খুব পরিচিত কষ্ঠস্বর। রুহান সুহানাকে কিছু না বলে কেন যেন হাঁটতে হাঁটতে মেয়েটার সামনে চলে যায়। নিজের অজান্তেই বলে,

"তন্বি !"

মেঘা


মন্তব্য

রিয়েল ডেমোন এর ছবি

ওয়াও ! ভালো লেগেছে আপু হাসি

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ রিয়েল। আমার লেখার প্রথম কমেন্ট এখানেও তোমার কাছ থেকে পেলাম। দেখে ভালো লাগছে।

মুকিত তুষার এর ছবি

দারুন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হুম... ভালো লাগলো...
সচলায়তনে স্বাগতম

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া।

গেরিলা এর ছবি

জোস...একেবারে আমার মত........

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ গেরিলা ভাইয়া।

শ্রীকৃষ্ণ এর ছবি

চলুক

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ।

পাঠক এর ছবি

দারুন.........ছুয়েঁ গেল.............

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ পাঠক। লেখাটাতে আবেগ আনতে চেষ্টা করেছিলাম। কতটা পেরেছি জানি না। আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

ত্রিনিত্রি এর ছবি

সরি একটু দেরী হয়ে গেলো আসতে। লইজ্জা লাগে
অনেক ভালো লেগেছে। হাসি অবশ্য লেখা বরাবরই তো অসাধারন।

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ ত্রিনিত্রি আপু।

maisha এর ছবি

হুমম অনেক কমপ্লেক্স হয়ে গেলো না আপু ! তন্বির জন্য ভাল লাগা। প্লাস হাসি

মেঘা এর ছবি

হুম তা হয়ত একটু হয়ে গেলো মাইশা। তবে জীবন তো নিয়ম মেনে চলে না তাই না? কিছু পাগলামী থাকে বলেই হয়ত এই পৃথিবীটা এখনো তার রঙ হারায়নি।

ধন্যবাদ আপু।

রংধনুর সাতরং  এর ছবি

এককথায় অসাধারন ...............

বার বার পড়বো তাই সেভ করে রাখলাম হাসি

ভালো থেকো আপু

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ।

guest_writer এর ছবি

একটু ফ্যান্টাসী আছে তবু ও বলবো খুব ভালো লেগেছে।অ-সা-ধা-র-ণ।

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ।

এক্সাইল এর ছবি

অসাধারণ আপু...... খুব ভাল লাগলো

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। এতোদিন পর এই লেখাতে কারো মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগছে।

toruni এর ছবি

অসাধারণ

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপু।

শ্রাবনী এর ছবি

খুবই ভাল লাগল। তবে বর্ণ্না লেখার ক্ষেত্রে আরো যত্নশীল হতে হবে। অনেক্ক শুভ কামনা রইল।

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ আপু। আমি এর পর থেকে ব্যাপারটা খেয়াল রাখবো। সুন্দর পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।

মেঘা এর ছবি

এই লেখাটা কি অন্য ব্লগে এখন দেয়া যাবে?

মুকিত তুষার এর ছবি

দারুন গল্প

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তুষার হাসি

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
লিখে যান বেশী বেশী করে, আপনার গল্পের হাত দারুণ।

মেঘা এর ছবি

উদাস ভাইয়া আমার লেখা প্রথম পড়লেন হাসি অনেক ভালো লাগছে ভাইয়া।

একটু মন খারাপ করেই লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। লিখবো আবার ভাইয়া। উৎসাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ হাসি

শাব্দিক এর ছবি

অনেক দেরী করে পড়লাম লেখাটা।
ভাল লাগল।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ আপু।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।