চশমা কাহিনী

মেঘা এর ছবি
লিখেছেন মেঘা [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২০/১১/২০১২ - ১০:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হঠাৎ করে আম্মুর মনে হল যে সে তার অতি দুরন্ত দুই মেয়ের পেছনে ছুটোছুটি আর চিৎকার চেঁচামেচি করতে করতে চোখে কম দেখতে শুরু করেছে, আর সেই সাথে ভীষণ মাথা ব্যথা! আমরা দুষ্টু ছিলাম দেখেই সব কিছুর দায় আমাদের মাথার উপর পরত। আমাদের একা রেখে তো আর কোথাও যাবার উপায় তখন আব্বু আম্মুর ছিল না! তাই আমাদের নিয়েই গেছে চোখের ডাক্তারের কাছে। আম্মুর চোখ পরীক্ষা করে ডাক্তার বলল “চোখে কোন সমস্যা নেই। চোখ ভাল আছে। মাথা ব্যথার ওষুধ নিলেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।” আমার আপু তখন স্কুলে পড়ে। মানে সে সবে মাত্র শিক্ষিত হতে শুরু করেছে! ‘যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই’ নীতি অবলম্বন করে সে যেখানে লেখা দেখে সেটাই পড়তে শুরু করে দেয়। আম্মুর চোখ দেখাতে যেয়ে সে তার এই জ্ঞানের বহর ডাক্তারকে দেখাতে যেয়ে ধরা পড়লো যে দূরের জিনিস তেমন ভাল আপু দেখতে পায় না। তখন ডাক্তার আম্মুকে বলে “আপনার চোখে তো কোন সমস্যা নাই কিন্তু আপনার এই পিচ্চির চোখে তো বেশ সমস্যা। ওর তো চশমা লাগবে!” আমার অতি পণ্ডিত বোন সাথে সাথে লাফিয়ে উঠেছে খুশীতে! ডাক্তার ওকে জিজ্ঞেস করেছে, “মা তুমি চশমা চোখে রাখতে পারবে তো?” আপু সাথে সাথে ডাক্তারকে দ্বিগুণ উৎসাহের সাথে জানিয়েছে, চোখে রাখবে না মানে?! অবশ্যই চশমা চোখে রাখবে আপুজির মতো! শুধু তাই না এখন থেকে সে পান ও খাবে! এই কথা শুনে ডাক্তার চরম আশ্চর্য হয়ে বলেছে, “আপুজি কে? আর পান কেন খেতে হবে?” তো আমার বোনের ব্যাখ্যা হল যেহেতু আমার নানীমা চশমা পরে আর পান খায় সেহেতু চশমা নিলে ওকেও পান খেতে হবে!

কিছুদিন পর আব্বু ছোট্ট একটা চশমা নিয়ে এলো বাসায়। সেই চশমার সাথে আবার গলায় ঝুলিয়ে রাখার মত ফিতে লাগানো। ছোট মানুষ চোখ থেকে চশমা খুলে যেন ভাঙতে না পারে তার জন্য। আপুকে বেশ আদর যত্ন করে সেই চশমা পরিয়ে দেয়া হল! কিন্তু আমার চশমা নেই। আমি সেই দুঃখে কান্নাকাটি করে শেষ! আপুর চশমা আছে মানে আমাকেও দিতে হবে। আমাকে যতই বুঝায় এটা অসুখ, এটা পচা, এটা ভাল না। আমি ততই কান্না করি এটা বলে যে ওইটা খেলনা, আপুকে একাই দিলো কিন্তু আমাকে দিলো না! আমার বোন আমার কান্নাকাটি দেখতে পারে না। সে আমাকে প্রমিজ করল আম্মু না থাকলে আমাকে চশমা পরতে দেবে। কিন্তু আমি কিছুদিনের মধ্যেই বুঝে গিয়েছিলাম চশমা বড়ই এক যন্ত্রণার নাম! আম্মু আমাদের বিকালে সাজিয়ে-গুছিয়ে খেলতে পাঠাত বাসার সামনের মাঠে। আপু আমার হাত ধরে তার চশমা গলায় ঝুলিয়ে নিচে যেতে না যেতেই কেউ না কেউ ওর চশমা নিয়ে চোখে দিয়ে ঘুরে বেড়াত। বলতে গেলে আপুর চশমা ছিল পুরো পাড়ার সবার চশমা। প্রথম প্রথম আপুর চশমার উপর ভারী মায়া মহব্বত ছিল। তখন কেউ চশমা নিয়ে নিলে তার পিছে পিছে দৌড়ে উদ্ধারের চেষ্টা করতো। কিন্তু আমার মতো আপুও কিছুদিনের মধ্যেই বুঝে গিয়েছিল চশমা অতি বাজে একটা জিনিস! চশমার একমাত্র ব্যবহার হল কোন কিছু নিয়ে রাগ হলে বাবা-মার সামনে আছাড় মারা। তখন তো আর এখনকার মত প্ল্যাস্টিকের গ্লাস ছিল না যে কিছুই হবে না! আছাড় দিলেই ভেঙে যেত!

বড় হতে হতে আপু কীভাবে করে যেন চশমার পিছ ছাড়িয়ে ফেলেছিল। তবে সেই খেলনা চশমাটা এখনো বাসায় আছে। দেখলেই হাসি পায়! এতো ছোট চশমা পরে থাকত কী করে! আপুর চশমা পরার ঘটনা আমার তেমন মনে না থাকলেও একটা বিরক্তি ছোটবেলা থেকেই ছিল চশমা নিয়ে। যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন একদিন বিজ্ঞান ক্লাসে ব্ল্যাক বোর্ডে কিছু লিখে দিয়েছে যেটা খাতায় তুলে নিতে হবে। আমি আমার পাশের বান্ধবীর খাতা দেখে তুলচ্ছিলাম দেখে আমাদের বিজ্ঞানের ফরিদা মিস আমাকে ডেকে বলে, মেঘা ফার্স্ট বেঞ্চে বসে তুমি অন্যের খাতা দেখে লিখছ কেন? তুমি দেখতে পাও না? আমি বললাম তখন আমি পরিষ্কার বুঝতে পারি না কী লেখা! মিস আমার ডায়েরীতে লিখে দিলো চোখের ডাক্তার দেখাবেন! সাথে আমাকে এটাও বলে দিলো তোমার বাসায় এটা দেখাবে আর ডাক্তার কী বলে সেটা আমাকে জানাবে! কিছুটা বাধ্য হয়েই ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল। যাবার সাথে সাথে ব্যাটা চোখ দেখে -২.৭৫ পাওয়ার লিখে কাগজ হাতে ধরিয়ে দিলো! আম্মু ভীষণ অবাক হয়ে বলে, ছোটটার চোখে সমস্যা এটা তো বুঝতেই পারি নি। বলেও না কিছু কোনদিন যে দেখতে পাচ্ছে না। তাই শুনে ডাক্তার বলল চশমা না পরলে অনেক বেশি ক্ষতি হবে চশমা দিয়ে দেন।

প্রথমদিন চশমা পরে স্কুলে গেলাম! অসম্ভব রকম মেজাজ খারাপ নিয়ে। রাস্তার মানুষজন যারা আমাকে চেনে টিজ করতে শুরু করে দিলো চশমা দেখে। ক্লাসে যাবার পর এই চশমার হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করল রেশমা! আমার চশমা রেশমার চোখে। টিচাররা যখন দেখত তখন মানা করত এভাবে এতো পাওয়ারের চশমা না পরার জন্য। কিন্তু কে শোনে কার কথা! নাইনে উঠতে উঠতে পাকাপাকি ভাবে একই পাওয়ারের চশমা চোখে উঠে গেল রেশমার। ওর চোখে আমার মতই সমস্যা ছিল। তবে আমার মত চশমা বিদ্বেষী ছিল না ও। বরং অতিরিক্ত ভালবাসা ছিল। যে ভালবাসা এখনো অটুট আছে!

স্কুল পাশ করেই আমার মনে হল আমি অনেক বড় হয়ে গেছি। এখন কলেজে পড়ি। যেভাবে করে ইচ্ছে তেমন করে থাকব, সাজগোজ করবো! চোখ ভরে কাজল দিবো! চশমা পরলে আমার চোখ দেখা যাবে না এই বাহানায় আমি অস্পষ্ট ভাবে দেখেই জীবন পার করে দিবো ভেবে ফেললাম। চশমা আমার সাথেই থাকে সব সময়। হয় ব্যাগে নয়ত হাতে! চোখে আর উঠেই না। এইচ.এস.সি পরীক্ষার মাত্র দুইমাস আগে আমার হল পক্স! মানুষের এমন পক্স বের হয় কিনা আমার জানা নেই। আমার একেবারে ঝুমঝুমা হয়ে পক্স বের হল! প্রচণ্ড জ্বর সেই সাথে। পুরো শরীরে বের হয়েছে, চুলের মধ্যে হয়েছে, ভাল কথা! আমার দুই চোখে পর্যন্ত পক্স বের হয়েছে!! এটা কোন কথা?! চোখ বন্ধ করতে পারতাম না পর্যন্ত মনে হতো সুঁচ ফুটছে! কিছুদিনের মধ্যেই পক্স সেরে গেলো। কিন্তু ভোগান্তি শুরু হল হঠাৎ করে আমার পরীক্ষার আগে আগে। মনে হয় তখন সাতদিনও সময় হাতে নেই আর। আমি চোখে কিছুই দেখছি না! ডাক্তারের কাছে গেলাম। চোখ দেখানো হল। চোখের পাওয়ার -৭.০০!! আমার পুরো মাথায় বাড়ি! চোখে ভয়াবহ ব্যথা আর সেই সাথে প্রচণ্ড মাথা ব্যথা। মেডিনোভাতে চোখের টেস্ট করানো হল। জানা গেলো চোখে বের হওয়া পক্সের ইনফেকশন তখন পর্যন্ত ভাল না হবার কারণে আমার এই বিরাট বড় ক্ষতিটা হয়েছে। তবে এটা সাময়িক। যারা আমাকে তখন দেখেছে -৭.০০ চশমা পরতে ওরা আমাকে কিছুদিন আগে দেখলেও জিজ্ঞেস করেছে আমার সেই বিশাল মোটা লেন্সের চশমা কই?

চশমা পরতে হবেই আমাকে এটা বুঝতে পেরে আমি তো কান্না! ডাক্তার তখন বলল আমি যদি প্রচুর সবজি আর ফলমূল খাই তাহলে ইনফেকশন ভাল হয়ে চোখের পাওয়ার আগের মত হয়ে যেতে পারে। যারা আমাকে দেখেনি তখন তারা বিশ্বাস করবে না হয়ত যে এটা আসলেই সম্ভব। আমি সারাদিন গাজর খেতাম! এতো সবজি আর ফল খেয়েছি যে প্রায় এক দেড় বছরের মধ্যে আমি চশমা ছাড়াই দেখতে পেতাম। ইনফেকশন কমে যাবার পর চশমার পাওয়ার যখন আবার -২.৭৫ এ এসেছে তখন আমার কাছে এমন মনে হল যে আমার চোখে আসলে কোন অসুবিধাই নেই। আমি দিব্যি দেখতে পাচ্ছি। ভার্সিটিতে পড়ি তখন। অনেক কিছুর সাথে যুক্ত হতে শুরু করেছি। আজকে গানের প্রোগ্রাম আছে শাড়ি পরতে হবে পরবো না চশমা। আজকে উপস্থাপনা চশমা বাদ। এমন করতে করতে চশমা অনেক অনেকদিন ধরে আসলেই আমার জীবন থেকে দূরে ছিল।

কিন্তু হায়! পুরাতন সখার মত সে আবার আমার জীবনে ফিরে এসেছে কিছুদিন হল। একমাসের জন্য আমার অতিরিক্ত বেশি বোঝা বোন ঢাকায় এসেছে ট্রেনিং এ। এসেই খেয়াল করেছে আমি কোন কিছু দেখতে গেলে চোখ কুঁচকে দেখি আর নাহলে একেবারে সামনে চলে যাই দেখার জন্য। কম্পিউটারের মধ্যে ঢুকে যেয়ে সারারাত ফেসবুকিং, ব্লগিং করি! চোখ লাল হয়ে থাকে। সাথে আছে দশ বছরের পুরনো সঙ্গী মাইগ্রেন! আমাকে আদর করে লক্ষ্মী, সোনা বলে নিয়ে গেল ডাক্তারের কাছে। কম্পিউটারে পাওয়ার কত এসেছে তখনও জানি না। ডাক্তার অন্য এক রোগীর সাথে কথা বলার ফাঁকে আমি মুখস্থ করে ফেলার চেষ্টা করলাম অক্ষরগুলো। ডাক্তার পাওয়ার দেখে বলে চশমা আগে ছিল নাকি? সাথে সাথে আব্বু আর আপু অতীতের সব ইতিহাস জানিয়ে বলল এই অতি ঢঙ্গী স্বেচ্ছাচারী পাজি মেয়ে চশমা হাতে নিয়ে ঘুরে এতদিন পার করেছে। ডাক্তার খুব একচোট হেসে আমাকে বলে, এতো সুন্দর চোখ দুটো কিছু দেখতে না পেলে বেশি খারাপ লাগবে নাকি চশমা পরে অনেক অনেকদিন দেখতে পেলে বেশি ভাল লাগবে? আমি বললাম আমি দেখতে পাই তো! তারপর দিলো পড়তে! এতো চেষ্টা করলাম ব্যাটা কে ধোঁকা দিতে কিন্তু কিসের কী! পাওয়ার বেশি না বলে চশমার জন্য পাওয়ার লেখা কাগজ আব্বুর হাতে ধরিয়ে দিলো! ডান চোখে -৪.৭৫ আর বাম চোখে -৪.৫০!

জীবন বাঁশময় হয়ে গেলো আবার! চোখ থেকে চশমা খুলতে গেলেই যে দেখে সে একবার করে বকা দেয়। পুরো বাসার মানুষের দায়িত্ব হয়েছে আমাকে চশমা পরিয়ে রাখা। মুক্তি কিছুতেই পেলাম না এই যন্ত্রণা থেকে! যদিও সব অনেক পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি তারপরও নাকের উপর কিছু ঝুলিয়ে রাখতে ইচ্ছা করে না। একটা বছর কষ্ট করে আমি যদি এই একই পাওয়ার রাখতে পারি তাহলেই ল্যাসিক করিয়ে দেবে এই দাবী আদায়ের পর থেকে প্রচণ্ড কষ্ট নিয়ে চশমা পরে আমি বাইরে যাচ্ছি এখন।


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

লেখা -গুড়- হয়েছে
গাজর কি খেতেই হবে তাহলে?

চশমার ঝামেলা থেকে মুক্তি দরকার, ল্যাসিক করিয়েই ফেলব হয়ত!

মেঘা এর ছবি

হায় রে আমার গাজর খাওয়া! গাজর খেলে দুটো উপকার হয় চোখের জন্য ভাল আর স্কিন খুব সুন্দর হয়ে যায় দেঁতো হাসি । তুমি খেয়ে দেখতে পারো। উপকার পাবে মনে হয়। আমিও ল্যাসিক করে ফেলবো এই যন্ত্রণা জীবন ভর টানতে পারবো না মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনেরে চশমা ছাড়া দেখতে ক্যামন লাগবে চিন্তা করতেই হাসি আইসা গেল
--বেচারাথেরিয়াম

মেঘা এর ছবি

এটাও একটা কথা অবশ্য! ভবিষ্যতে যদি তারেকাণু ইমো তৈরী হয় সেও চশমা পরেই জন্ম নেবে বলে আমার ধারণা দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

স্বপ্নহারা এর ছবি

হায় চশমা!!! বড়ই এক কষ্টের জিনিস।

ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পরীক্ষার কোচিং এ ধরা পড়ে -১.৭৫ এরপর বাড়তে বাড়তে -৬.৫। এখন -৬, মাঝে মাঝে সিলিন্ড্রিকাল এসেছে-গিয়েছে। ডাক্তার বললো সানগ্লাস সিরিয়াসলি ব্যবহার করতে- এতে নাকি ছানি পড়তে দেরি হয়। চশমার মত পেইন আর কিছুতেই নাই, আমার ঢাউস সাইজের চোখগুলান এখন ছুডু ছুডু। মন খারাপ

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মেঘা এর ছবি

আমার দুঃখ আপনি বুঝলেন ভাইয়া। আমি যাকেই বলি সেই বলে চশমা তো ভাল! কেউ আমার অবস্থা বুঝলো না যে চশমা একটা অসহ্যকর জিনিস! আমারও বড় বড় চোখগুলো ছুডু ছুডু লাগে দেখতে মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমাদের সময়ে খুব বেশি ছেলে-মেয়ে চশমা পড়তো না, তাই নাম হয়ে গিয়েছিলো, "চারচোখ"! মন খারাপ
মোটা গ্লাসের চশমার কারণে যে একটু সানগ্লাস পড়ে টাংকিবাজি করবো, কৈশোরে সেই সুযোগটাও ছিল না- সবসময় নার্ডি ভাব মন খারাপ
ল্যাসিকে ভরসা পাই না কারণ যারা ল্যাসিক করেছে তারা সবাই নতুন, ল্যাসিক করার ২০ বছর পর কী হবে, সেটা এখনো জানা নেই কারো। আর চোখের ডাক্তার সবাইকে চশমা পড়তে দেখি!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মেঘা এর ছবি

এটাও ঠিক কথা আমি কোন চোখের ডাক্তারকেই চশমা ছাড়া দেখি নি! আমি তো ল্যাসিক করাবো এই ভরসায় চশমা চোখে দিয়ে বসে আছি অ্যাঁ কাজ না করলে কীভাবে হবে! মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

আয় হায়!
কেউ চশমা এত অপছন্দ করে কেম্পে?!

আমার পিচ্চিবেলার সবচাইতে বিশাল স্বপ্ন ছিল,
বড় হয়ে চশমা পড়ব!

কিন্তু ভাগ্য খারাপ,
চোখ আর খারাপ হয়না!

ইন্টার পরীক্ষার সময় মাথাব্যথার জন্য ডাক্তার দেখাতে গেলাম।ব্যাটা বলে চোখ নাকি খুব ভাল, তবে রিফ্লেক্সের কি সমস্যা নাকি আছে তাই মাথাব্যাথা হয়! পয়েন্ট টু ফাইভ এর চশমা দিয়ে বলল ৬ মাস টানা পড়লেই নাকি ভাল হয়ে যাবে। আমাকে আর পায় কে, চশমা নিয়ে নিলাম। জমিয়ে জমিয়ে পড়ি, টানা পড়ে আর পড়তে না পারলে তো সমস্যা!

এভাবেই বছর পাচ কাটিয়ে দিলাম। কয়েক ফ্রেম আর গ্লাস বদলে এখন একটা ফটোসানের মোটা ফ্রেমের নেভি ব্লু গ্লাস চলছে। রোদে গেলেই আপনাতেই রোদ চশমা হয়ে যায়। কি চমত্‍কারই না লাগে তখন!আম্মুরও ঠিক এমন একটা চশমা ছিল আমার পিচ্চিবেলায়।

আসলেই চশমিশ থাকার মজাই আলাদা!

- বর্ণ

মেঘা এর ছবি

এইটা কি কইলেন ভাই? মানুষ চশমার মত একটা জিনিসের স্বপ্ন ক্যাম্নে দেখে? এই ধরণের আজব স্বপ্ন আমি কোনদিন দেখি নাই মন খারাপ তবে আমার সানগ্লাস ভীষণ রকম পছন্দ দেঁতো হাসি আমি চশমা বানাতে যেয়ে চশমা পরবো এই কথায় রাজি হয়েছিলাম আমার বোনের কাছ থেকে ১১০০ টাকা দিয়ে একটা সানগ্লাস ঘুষ হিসাবে নিয়ে দেঁতো হাসি বড় বোন থাকার মজাই আলাদা দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

তাপস শর্মা এর ছবি

লেখা -গুড়- হয়েছে হাসি

শৈশব নিয়ে লেখা থামিয়ে দিলেন কেন? সেই সিরিজও আসুক

মেঘা এর ছবি

না লেখা থামিয়ে দেই নি। একঘেয়েমি হয়ে যাবে ভেবে দিচ্ছিলাম না অনেকদিন। দেখি দিবো আবার।

ধন্যবাদ দাদা

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

চরম উদাস এর ছবি

মেঘা এর ছবি

চ্রম একটা বদ লোক রেগে টং

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

guest_writer  এর ছবি

ছোটবেলায় আমার বেশ চশমাপ্রীতি ছিল, এখনো আছে । আগে বন্ধু-বান্ধবের চশমা পড়ে বসে থাকতাম, আর এখন হাতের সামনে চশমা পেলেই তা পরে একটা ভাবওয়ালা পোজ দিয়ে পিকচার তুলি দেঁতো হাসি
তবে পারমানেন্টলি পড়ার সুযোগ এখনো আসেনি মন খারাপ
এখানে যারা চশমার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করছেন, তার প্রতিবাদ স্বরূপ তাদেরকে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ঃ@ গুল্লি
“নিন্দুক’’

মেঘা এর ছবি

আপনি তো দেখি আমার বান্ধবী রেশমার মত। ওর কাজ ছিল আমার চশমা পরে আমাকে উদ্ধার করা। আপনার এতো চশমা প্রীতির কারণ হচ্ছে এই যন্ত্রণাটা পারমানেন্টলি আপনার নাকে চেপে বসে নি তাই। ছোটবেলা থেকে যদি পরে থাকা লাগত তাহলে বুঝতেন কেন আমরা দেখতে পারি না মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

ইস আমার তো চশমা খুব পছন্দ। কেন যে আপনাদের সবার এত খারাপ লাগে চিন্তিত

ছোটতে অবশ্য চশমা ভালো লাগতো না। কলেজে উঠে বুঝেছিলাম, চশমা পড়লে আমাকে গিয়ানি গিয়ানি দেখা যায়, এমনিতে তো কিছু জানিনা, তাই চশমা পড়েই বিশিষ্ট গিয়ানি একটা ভাব ধরে ঘুরে বেড়াই। বছর চারেক হল দুই চোখেই -৫.৫।
শেষবার ডাক্তার ল্যাসিক করাতে বলেছে, এত আদরের চশমা হারানোর ভয়ে রাজি হয়নি।

এত পাওয়ার নিয়েও আমার কখনও এক্সট্রা চশমা থাকতো না। এমনকি দেশের বাইরে আছি তাও কোন বিকল্প নাই, যেইটা চোখে সেইটা ভাঙলে খবর আছে। ভার্সিটিতে পড়ার সময় প্রতিবছর যে কোন একটি বিশেষ পরীক্ষার আগের সন্ধ্যায় চশমাটা কিভাবে জানি ভেঙে যেত। আর প্রতি বছরই পরীক্ষার আগের সন্ধ্যায় পড়া বাদ দিয়ে কোনমতে একজন সঙ্গী যোগাড় করে নিউ মার্কেটে যেতাম চশমার উদ্দেশে। ৪বছরই একই ঘটনা ঘটেছে। ভৌতিক ব্যাপার স্যাপার!

হাততালি চশমা কাহিনী মজার হয়েছে মেঘা আপু। আপনার গল্প গুলো শুনলে আমি আমার ছোটো বেলায় ফিরে যায়।
এত দেরী করে লেখা আসে কেন?
এখন থেকে ঘন ঘন যেন লেখা পাই, কেমন?

মেঘা এর ছবি

চশমা নিয়েই একটা জুনিয়র মেয়েকে ছবি তুলে ফেসবুকে দেখিয়ে বললাম "তানিয়ে বল আমাকে কেমন দেখা যাচ্ছে?" ছবি দেখে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে বলে "মেঘাপু তোমাকে বিয়াফক গিয়ানি লাগতেছে চশমা পরে!" সাথে সাথে আমার চশমার উপর আরো মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। আমি গিয়ানি হতে ইচ্ছা করে না মন খারাপ

আমি জীবনে একবার চরম ধরা খেয়েছিলাম এই চোখের জন্য সেটা এইচ.এস.সি দেবার সময়। সাময়িক অন্ধ হয়ে পুরাই আমার নাজেহাল অবস্থা। আমিও এক্সট্রা চশমা রাখি না আর আমার চশমার কিছু হয়ও না। কারণ আমি তো পরি না চশমা হো হো হো

একটু ঝামেলায় ছিলাম আপু তাই লেখাগুলো দেরী দেরী করে আসছিল। দেখি এই সপ্তাহেই আরেকটা লেখা দিবো।

ধন্যবাদ এই আজাইরা দুঃখগাথা পড়ার জন্য দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

গিয়ানি হতে আমারও ভালো লাগেনা, কিন্তু গিয়ানি গিয়ানি লুক ভালো লাগে। প্রথম দেখায় সবাই ভাবে আমি খুব শান্ত শিষ্ট লেজ অবশিষ্ট প্রাণী, কয়দিন পরেই টের পায় আমি কি জিনিষ। শয়তানী হাসি

চশমার কল্যাণেই আমার এমন শান্ত শিষ্ট ইমেজ কিনা, তাই পছন্দ লইজ্জা লাগে

এই আজাইরা দুঃখগাথা ব্যপক হয়েছে। পরের দুঃখগাথা অথবা সুখগাথার অপেক্ষায় রইলাম। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

অতিথি লেখক এর ছবি

আর বইলেন না, এ এক বিরাট যন্ত্রনা। চশমা না পড়লে মনে হয় দেখতে পাইতেছি না পরলে মনে হয় দেখতে কষ্ট হইতেছে।।।। কি মুসিবত

-- বেচারাথেরিয়াম

মেঘা এর ছবি

আজকে অতিরিক্ত ঝকঝকে দেখে আমার একেবারে চোখেই পানি চলে এসেছিল! এতো পরিষ্কার দেখে অভ্যেস নাই তো! কেমন জানি অদ্ভুত লাগে। বিকট সমস্যা!

ধন্যবাদ বেচারাথেরিয়াম ভাই।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

রিয়েল ডেমোন এর ছবি

ঐ চশমা পড়ছ? চাল্লু

মেঘা এর ছবি

রেগে টং

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

রিয়েল ডেমোন এর ছবি

আমি ক্লাস এইট থেকে চশমার সাথে পরিচিত, এমন একটা অবস্থা এখন মাঝে মাঝে চশমা পরেই ঘুমাই, অনেক সময় সকালে ব্রাশ করার পরে মুখে পানি দিয়ে দেখি চশমা ভিজায় ফেলছি, আবার মাঝে মাঝে চশমা মনে করে চোখ থেকে অদৃশ্য কিছু একটা খোলার চেষ্টা করি, ইদানিং মনে হচ্ছে আমি অন্ধ হতে চলেছি ওঁয়া ওঁয়া

মেঘা এর ছবি

তোরা তো কোন না কোন ভাবে অভ্যেস করে ফেলেছিস চশমা পরার তাই তোদের শরীরের অংশ হয়ে গেছে চশমা। আমি তো কিছুতেই রাজী হতেই পারলাম না। তাই এতো অসহ্য লাগছে মন খারাপ আমার আব্বুও চশমা পরে ঘুমায়! খুলে নিতে গেলে আবার চমকে ঘুম থেকে উঠে বলে চশমা নাও কেন? দেখতে পাবো না তো কিছু! ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

শান্ত শান এর ছবি

আমার আব্বুও চশমা পরে ঘুমায়! খুলে নিতে গেলে আবার চমকে ঘুম থেকে উঠে বলে চশমা নাও কেন? দেখতে পাবো না তো কিছু! ইয়ে, মানে...

হহহাহহাহাহহাহাহাহ

মেঘা এর ছবি

দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

রংতুলি এর ছবি

অবশেষে লিখলে তাহলে। সরল-সুন্দর লেখাটা ভালো লাগলো অনেক! চলুক

এদিকে চশমা কাহিনী চলছে আমার ছেলেকে নিয়ে। ডাক্তার চশমা দেয়ার পরও অনেক দিন সে স্কুলে তা পরে যেতে চাইতো না লজ্জায়, অন্য বাচ্চারা যদি হাসাহাসি করে। তার আবার আত্মসম্মান বোধ চরম। ক্লাশে যেহেতু ও-ই প্রথম চশমা পরছে, তাই আসলেই সবার নজর ছিলো ওখানেই। স্কুলে চশমা পরে গেলেই দেখা যেতো সবাই সেটা নিয়ে টানা-টানি শুরু করে দেয়, আর দুই-একদিন পরপর ভাঙ্গে। শেষে আমি গিয়ে সবগুলাকে ডেকে বললাম - রামিন (আমার ছেলের নাম) কে চশমায় অনেক স্মার্ট লাগে, তাই না? সবাই আর কি বলবে, হাঙ্কি-পাঙ্কি ছেড়ে অতিশয় ভেজা বেড়ালের ভং ধরে বলল - 'হ্যাঁ, ওকে অনেক স্মার্ট লাগে'। তারপর আমি বেছে বেছে সবচেয়ে বিচ্ছু কয়টার উপর গুরুদায়িত্ব দিয়ে আসলাম এই বলে - দেখো তো ওর চশমা নিয়ে যাতে কেউ হাসা-হাসি, টানা-টানি না করে। ট্রিটমেন্ট জায়গা মতই পড়ছিলো। এরপর স্কুলে আর কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু সমস্যা বাধলো বাংলাদেশ থেকে আনা মিকিমাউস ফ্রেমে, ওইটা তার এতই পছন্দ যে রোজ ওই একটাই পরবে, বেচারা ফ্রেমও এতো ধকল সহ্য করতে না পেরে, কয়দিন পরই গেলো ভেঙ্গে! ছেলেও আর অন্য ফ্রেম পরবে না, তার সেই মিকিমাউসই চাই! শেষে বাধ্য হয়ে দেশে ফোন দিয়ে অতিসত্বর মিকিমাউস ফ্রেম পাঠানোর হুকুম ও সাথে নানা বুঝ দিয়ে আপাতত শর্তসাপেক্ষে অন্য ফ্রেম পরানো গেছে। মন খারাপ

মেঘা এর ছবি

এটা অনেক বড় একটা সমস্যা আসলে। হুট করে চশমা নিয়ে সবার সামনে যেতে যেন কেমন লাগে ইয়ে, মানে... দেখেছি তোমার ছেলেকে। আমার আপুর মত পিচ্চি বয়েসেই চশমা জীবনের সঙ্গী হয়ে গেলো। বড়ই দুঃখজনক ব্যাপার। মিকিমাউস ফ্রেমের সানগ্লাস পাওয়া গেলে আমাকে খোঁজ দিও তো চাল্লু

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

পুতুল এর ছবি

চশমা পরা লোক-পুলাপন দেখলে খুব হিন্সে হত। চশমা পড়ত আমাদের পাঠশালার পণ্ডিত মশাই। কী যে ক্ষমতা এবং জ্ঞন-গরিমা লোকটার ছিল! মনে মনে ভাবতাম বড় হয়ে টাকা আয় করলে চশমা কিনে নাকে বসিয়ে আমিও একদিন জ্ঞানী-গুনী-ধনি-মানি হব।

খোশ মেজাজে কাজে গেলাম টাকা আয় করার জন্য। একটা ছাপা (আমার করা) রিপোর্ট চোখের সামনে ধরে বস বললেন; দেখুন তো এই রোপোর্টে কোন অসুগতি আছে নাকী? আমি বললাম; বস দেখতে পাচ্ছেন না, নীচে আমার নাম লেখা আছে, তার মানে হচ্ছে এটা নির্ভূল।
বস বললেন; সেটা ভেবে রিপোর্ট আমিও ডেলেভারি করেছিলাম, কিন্তু রোগীর ডাক্তার রোপোর্ট পূর্ণবিবেচনার জন্য পাঠিয়েছেন। মানে হচ্ছে, মনিটরে ৫ এর পরের কমা-টা আপনি দেখতে পান নি। কাল সকালে চোখের ডাক্তারের কাছে যাবেন। সেই থেকে বাংলা টাইপেও ভুল একটু কমেছে। অবশ্য বাসায় আমার চশমা আমার মেয়েই বেশী পড়ে থাকে। সেও এখন আমার বাল্যকালের মতো ভাবে; চশমা হচ্ছে; জ্ঞানী-গুনী-ধনি-মানির প্রতীক।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মেঘা এর ছবি

কাছের জিনিস দেখতে না পাওয়া আসলেই একটা ঝামেলা। আমি তো কাছের সব বেশ ঝকঝকে দেখতে পাই দেখেই দূরের কিছু দেখার প্রয়োজন মনে করতাম না। রাস্তা পার হতে একটু অসুবিধা হয় অবশ্য। তবে বাংলাদেশের মানুষ এখনো বেশ ভাল। কাউকে বললেই হয় দেখতে পাচ্ছি না তাহলেই রাস্তা পার করে দেয় দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

শিশিরকণা এর ছবি

ক্লাস টেনে থাকতে অঙ্কের ক্লাস টেস্ট পরীক্ষায় বোর্ডে লেখা প্রশ্নে প্লাস মাইনাস আলাদা করতে না পেরে ধরা খাওয়ার পর টের পেলাম যে আমি আসলে চোখে দেখি না। ডাক্তার দিলো মোটা চশমা ধরায়। ফাঁকিবাজ আমি পড়ার বইয়ে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলাম, ঘুম থেকে উঠে দেখি চশমা দু'ভাঁজ হয়ে স্যান্ডুইচ হয়ে গেছে, দুই দিকের ডাঁটি ফাটি ঝরে পড়ে গেছে। অনেকদিন এইভাবে চললো, বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠে ফুটানি মারাতে বাগড়া আর সহ্য হচ্ছিল না, কাজেই দিলাম লেজারের নিচে চোখ পেতে। -৪,০০ পাওয়ারের চশমা পরা বাদ দিয়ে কেবল কাজল পরি এখন। হাসি ৭ বচ্ছর হয়ে গেল। দিব্যি আছি। তবে একটু সাবধান থাকতে হয় যেন মনিটরে একটানা বেশিক্ষণ নাক লাগিয়ে না থাকি। তাহলে চোখ আবার বিবর্তনের নিয়ম ফলো করে এক হাত দূরের ফোকাসে এডজাস্ট করে ফেলতে পারে। বয়স ৪০ এর উপরে গেলে আবার চালশে দৃষ্টির গেঞ্জাম শুরু হবে,সে অনেক দেরি আছে, মাঝের অন্তত ২০টা বছর যে চশমা ছাড়া কাটাতে পারছি আমি এতেই খুশি। যত দেরিতে ল্যাসিক করাবে, সুফল উপভোগ করার টাইম পাবে তত কম।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

মেঘা এর ছবি

তাই নাকি? তাহলে তো আমার আরো আগেই ল্যাসিক করার চিন্তা করার দরকার ছিল মন খারাপ আমিও এতোকাল শুধুই চোখে কাজল পরেই কাটিয়ে দিয়েছি আপু। এখন তিনদিন হলো বজ্জাদ চশমা আমার চোখে উঠেছে মন খারাপ

বইয়ের উপর মুখ রেখে ঘুমের জন্য চশমা ভাঙার ঘটনাটা খুব হাস্যকর ছিল দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মাধুকরী এর ছবি

মেঘা, তোমার লেখা পড়ে আমার দুই মেয়ের কথা মনে পড়ে গেল । ওরা জমজ । দুজনেরই চোখে চশমা । -১'৭৫ দুজনেরই । অথচ আমার এখনও তেমন কোন পাওয়ার লাগে না । চশমা আছে একটা মাথা ব্যথার জন্য । কখনও পরি কখনও পরি না । অথচ চশমা না পড়লে আমার মেয়েরা চোখে ভালো দেখে না । খুব কষ্ট হয় ওদের জন্য । মাত্র সেভেন এ পড়ে ওরা । গোটা জীবনটাই তো পড়ে আছে । তোমার লেখার হাত খুব ভালো । খুব ভালো লেগেছে । অনেক ধন্যবাদ ।

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মাধুকরী। আমার খালাত দুই যমজ ভাই আছে। দেখে কেউ আলাদা করতে পারে নি ক্লাস নাইন পর্যন্ত কোনটা কে! তবে ইদানীং গালিবের চোখে চশমা উঠেছে। তবে এটা নিয়ে খালিদের মধ্যে একটু দেখলাম মন খারাপ করা ব্যাপার হয়েছে। চশমা নিয়েছো জিজ্ঞেস করতেই খালিদ বলে আমরা সাধারণ আমাদের তো আর চশমা নাই! যমজগুলো খুব অদ্ভুত হয়! চশমার মত বাজের জিনিসের জন্যেও নাকি মানুষের মন খারাপ হয়!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মাধুকরী এর ছবি

তুমি ঠিকই ধরেছ মেঘা । আমার এক মেয়ের যখন চশমা নিতে হল তখন এ নিয়ে অন্য মেয়ে যেন কান্নাকাটি না করে সেজন্য তার জন্যও একটা শুন্য পাওয়ারের চশমা নিয়েছিলাম । সব বিষয় নিয়েই ওদের মারামারি, কান্নাকাটি লেগেই আছে । মায়ের আদর নিয়ে তো আছেই । আমি সব সময়ই ভয়ে ভয়ে থাকি কাউকে ভুলে বেশী ভালবেসে ফেললাম নাতো !

অতিথি লেখক এর ছবি

চশমার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী মনে হয় আমি। আমার একচোখে -১৩ আর অন্যটাতে সাড়ে ১২।
বন্ধুবান্ধব গত কয়েক বছরে কানা ছাড়া অন্য নামে ডেকেছে কিনা, মনে নেই।

---
মিলন

মেঘা এর ছবি

মিলন ভাই আপনার তো আসলেই ভয়ঙ্কর দশা! সাবধানে থাকেন আর চোখের যত্ন করেন। এর চেয়ে বেশি পাওয়ার লাগলে তো পরে চশমাতেও কাজ হবে না! গাজর খান বেশি করে। গাজর খুব কাজে লাগে। আমি নিজেও দুইদিন ধরে জীবন বাজী রেখে কেজি কেজি গাজর খেয়ে যাচ্ছি!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

চশমা ঠাকলে হয়তো ভালোই হতো - একটা ব্লগ লিখে ফেলা যেত চশমা নিয়ে - হি হি।

-অয়ন

মেঘা এর ছবি

চশমা যে এখনো নাই এর জন্য আপনার খুশী হওয়া উচিৎ!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

আজ থেকে ১৯ বছর আগে মাইগ্রেনের ব্যাথার কারণে ডাক্তার চশমা নিতে বলেছিলেন। পাওয়ার টাওয়ার মনে নেই, তবে খুব উৎসাহ নিয়ে চোখের উপর এই যন্ত্রণা ঝুলিয়েছিলাম। মিথ্যে বলবোনা, একটা লোভও ছিলো নিজেকে গানাবাসী প্রমান করার (যেহেতু জ্ঞ্বানী ব্যাক্তিগন গানাতেই জন্মগ্রহন করে।) কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই মোহমুক্তি ঘটলো। নাকের উপর একটা আজব জিনিস বসে আমার কান ধরে রাখবে এই অপমান সহ্য হলোনা। আম্মু'র সাথে রীতিমত আন্দোলন করে চশমা আর মোহ দুইটা থেকেই মুক্তি পেয়েছি এবং এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে দেখতে পারছি। দেঁতো হাসি

আপনাদের দুইবোনের দুষ্টামি সিরিজটা অনেকদিন পড়া হচ্ছেনা। চশমা খুলেই নাহয় লিখে ফেলুন।

ও আচ্ছা, আপনার লেখাটা খুবই মজারু হয়েছে।

ফারাসাত

মেঘা এর ছবি

আমি সেই কুটিকালেই বুঝেছিলাম যে কাঁচের ভেতর দিয়ে দুনিয়া দেখায় কোন মজা নেই। আমি ভুলেও চশমা চোখে দিতাম না বোধ হয় আমার একদিন এই দুরাবস্থায় পরা লাগবে জেনেই!

হুম আমাদের কিছু ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ড নিয়ে এবারের পর্ব লিখবো ভেবেছি। এই লেখা দ্বিতীয় পাতায় চলে গেলেই দিয়ে দিবো।

ধন্যবাদ এবং শুভকামনা চশমা মুক্ত থাকার জন্য।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

দুরন্ত এর ছবি

আর যাই করুন দয়া করে ল্যাসিক করবেন না প্লিজ। এটা চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আপনার চোখের কর্ণিয়া রেজার ব্লেড দিয়ে কেটে আজীবনের জন্য দুই ভাগ করে দিবে। কর্ণিয়া প্রায় ৪০ ভাগ দূর্বল হয়ে যায় ল্যাসিক করলে। ল্যাসিকের সবচেয়ে ভয়াবহ সাইড এফেক্ট হচ্ছে ল্যাসিক পরবর্তী ক্যারাটোকোনাস বা পোস্ট ল্যাসিক এক্টাশিয়া। এখনতো তাও চশমা দিয়ে দেখতে পাচ্ছেন। ক্যারাটোকোনাস হলে সেটাও পারবেন না। এখন যারা ল্যাসিক করে খুশি আল্লাহই জানে কয়েক বছর পরে তাদের কি অবস্থা হয়। ক্যারাটোকোনাস এমন এক রোগ যেটা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ল্যাসিককে ব্যান ক রার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। ল্যাসিক ব্যান করতে অনলাইন পিটিশন খোলা হয়েছে। এতে শত শত মানুষ সাইন করেছে এবং নিয়মিত করে যাচ্ছে। http://www.thepetitionsite.com/1/support-petition-to-withdraw-lasik-approval/

ল্যাসিকের সাইড এফেক্ট জানতে ভিজিট করুনঃ
http://www.lasikcomplications.com/

আমিও চশমা পড়ি। চশমা ছাড়া সামান্য দূরের জিনিসও স্পষ্ট দেখি না। আমাদের ভাগ্য খারাপ। আল্লাহ আমাদের চোখের অপটিক্যাল সিস্টেমে গন্ডগোল দিয়েছে তাই চোখের রেটিনায় ছবি ফোকাস হয় না। কব রে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চোখের এই সমস্যা থাকবে। কিছুই করার নেই আপু। ভাগ্য খারাপ আমাদের তাই এমনটা হয়েছে।

সামান্য পাওয়ারের চশমা যাদের দরকার তাদের কাছে চশমা খুব একটা সমস্যা না কিন্তু চশমা ছাড়া যারা কোনো কিছুই স্পষ্ট দেখে না (-১.৫০ এর উপরে) তারা বুঝে এটা কি যন্ত্রনার কিন্তু যদি নিরাপদ থাকতে চান তবে চশমা ছাড়া উপায় নেই। আপনি হাজারটা গাজর খান আপনার অপটিক্যাল সিস্টেম কখনো ঠিক হবে না।

চশমা থেকে মুক্তির নিরাপদ কোনো উপায় নেই আপু। আমরা হলাম ক্ষীন দৃষ্টিধারী। আমাদের চক্ষুগোলক অস্বাভাবিক বড় হওয়ায় আমরা আর কোনোদিন খালি চোখে স্পষ্ট দেখতে পারবো না। এটা শুনতে খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক। আমারও লাগে। খুব খারাপ লাগে কিন্তু করার কিছুই নেই আপু।

আমিও আমার চোখের সমস্যা নিয়ে ডিপ্রেশনে আছি। যাদের মায়োপিয়া ডিসঅর্ডার তাদের অনেকেই ভিতরে ভিতরে ডিপ্রেশনে ভুগে চোখের সমস্যার কারনে। বাইরে যতই বলুক কই আমি তো দিব্যি আছি চশমা নিয়ে কিন্তু তারাও জানে এই ডিপ্রেশন নিয়েই বাঁচতে হবে আজীবন। চশমা থেকে মুক্তির নিরাপদ উপায় যে নেই।

মেঘা এর ছবি

এইটা কি বললেন ভাইয়া?!!! তার মানে কি জীবন ভর আমাকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে?! ওঁয়া ওঁয়া

ল্যাসিকের এই ব্যাপারটা একেবারেই জানা ছিল না। বাংলাদেশে তো দেখি সবাই ধুমছে ল্যাসিক করিয়ে যাচ্ছে। আর ডাক্তারাও তো বলে না যে চোখের পারমানেন্টলি এতো বড় ক্ষতি হয়ে যায় ল্যাসিকের কারণে। লিংকের জন্য ধন্যবাদ।

আপনি ঠিক বলেছেন আমাদের কপাল খারাপ যে আমাদের দৃষ্টি শক্তি কম। মন খারাপ মনটাই খারাপ হয়ে গেল মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

দুরন্ত  এর ছবি

ল্যাসিক সার্জনেরা তাদের ব্যাবসায়িক স্বার্থের কারনে কখনোই বলে না ল্যাসিকের পরিনতি কি হতে পারে। আমি আমার আব্বুকে নিয়ে তিন চার মাস আগে মিরপুরের এক ডাক্তারের চেম্বারে গিয়েছিলাম। আমিও ল্যাসিক করতে ইচ্ছুক ছিলাম এবং প্রি-ল্যাসিক টেস্টও করিয়েছিলাম একবার এক ল্যাসিক সেন্টার থেকে। ঐসব টেস্টের কাগজ নিয়ে যখন গেলাম ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার আমাকে বলে এইসব কাগজ ছুড়ে ফেলে দিতে আর আব্বুকে বলে 'দেখছেন ভাই আমরা ডাক্তাররা কত কর্মাশিয়াল হয়ে গেছি আজকাল।' আমাকে উনি স্বান্তনা দিলেন। বললেন তোমার অন্য সব কিছুই তো ঠিক আছে। দ্যাখো, কি সুন্দর চেহারা দিয়েছে আল্লাহ তোমাকে। শুধু চোখের সমস্যাটা দিয়েছে। সব কিছু পারফেক্ট হতে হবে এমন কি কোনো কথা আছে। সব মানুষ কি পারফেক্ট। কেউ পারফেক্ট না। উনি বললেন উনার চোখে চশমা লেগেছে উনি যখন ১৮ বছর বয়সী ছিলেন তখন। উনার এক ছেলের চোখে -২.০০ ও এক মেয়ের চোখে -৪.০০ অপটিক্যাল ডিফেক্ট। চোখ নিয়ে ডিপ্রেশনে থাকতে মানা করেছেন উনি কিন্তু যেই অঙ্গ দিয়ে সারা দুনিয়া দেখবো সেই অঙ্গেই যদি ডিফেক্ট থাকে তাহলে মন কি কারো ভালো থাকে? মাঝে মাঝে চোখে পানি চলে আসে এই ভেবে যে খালি চোখের স্পষ্ট দৃষ্টিশক্তি আর কখনোই ফিরে পাবো না। চশমা ছাড়া আর কখনোই স্পষ্ট কিছুই দেখতে পারবো না।

আর যারা বলে ইশ যদি চোখটা খারাপ হতো। তাহলে চশমা পড়লে আমাকেও জ্ঞানী জ্ঞানী লাগতো। তাদের জন্য বলে রাখি আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া করেন যে আপনাদের চোখ ভালো আছে। আমাদের মতো খারাপ কপাল নিয়ে জন্মান নি। আমরা যারা মায়োপিক তারা অন্ধ হয়তো না কিন্তু অন্ধত্ব কি জিনিস কিছুটা হলেও বুঝি যখন চশমাটা খুলি।

শিশিরকণা এর ছবি

প্রথম কথা, ল্যাসিকে রেজর ব্লেড দিয়ে কর্ণিয়া কাটে না। ল্যাসিকের পুরো অর্থ হচ্ছে লেজার এসিস্টেড ইন সিটু কেরাটোমেলিউসিস। কাটাকুটির পুরো ব্যাপারটাই করা হয় লেজার দিয়ে। এবং তার আগে আপনার রেটিনা স্ক্যান করে একটা ম্যাপিং তৈরি করা হয় ঠিক কোথায় কোথায় কতটুকু কারেকশান করতে হবে। আর কোন সার্জারিই ফুলপ্রুফ না। সব অপারেশনেরই সাফল্যের হার কম বেশি আছে। আপনি কোনদিক দেখবেন সেটা আপনার বিবেচনা। জীবনে কিছু রিস্ক নিতেই হয়, তবে চোখ বুজে না নিয়ে বুঝে শুনে ঝাপ দেয়াই ভালো।
কিন্তু ভাগ্যের দোষ দেয়ার কথাটা শুনে মেজাজ খারাপ হলো। হার্টে ফুটো নিয়ে যে বাচ্চা জন্মায়, সেটা নিশ্চয়ই ভাগ্যের দোষ, সেটা ওপেন হার্ট সার্জারি করে ঠিক করতে গেলেও কিন্তু মৃত্যুর বিরাট সম্ভাবনা থাকে, তাই বলে কি সব ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থণাতেই সব প্রচেষ্টা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে? প্রার্থনা নিশ্চয়ই কম করেননি। সাফল্যের হার কেমন?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

দুরন্ত  এর ছবি

আপনি ল্যাসিক ক রিয়েছেন আর আপনি নিজেই জানেন না যে আপনার কর্ণিয়া ধারালো মাইক্রোকেরাটোম (এক ধ রনের খুব ধারালো ব্লেড) দিয়ে দুই ভাগ ক রা হয়। এক ভাগ উ ল্টে রাখা হয়। নিচের ভাগে লেজার দিয়ে কর্নিয়ার টিস্যু সরিয়ে দিয়ে পাতলা ক রে দেয়া হয়। । বাংলাদেশে যদি ল্যাসিক ক রে থাকেন তবে নিশ্চিত থাকেন ব্লেড দিয়ে আপনার ক র্ণিয়া কেটেছে। বাইরে যদি ক রে থাকেন তবে দুই অপশন আছে একটা হচ্ছে ফেমোসেকেন্ড লেজার যেটা দিয়ে প্রথমে কর্ণিয়া কাটা হয়। আরেকটা অপশন হচ্ছে মাইক্রোকেরাটোম বা ধারালো মেটাল ব্লেড। ল্যাসিক করতে হলে কর্নিয়া কাটতেই হবে।

মেঘা এর ছবি

কিছুই বুঝতে পারছি না তাই বোঝার আশা ত্যাগ দিলাম। দেখি একটা বছর পার করি তারপর কিছু একটা করে ফেলব! ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নীলম এর ছবি

আমিও সেই ক্লাস সিক্স থেকে চশমা পরি। এক যুগ হয়ে গেল। এখন পাওয়ার -৪.৭৫।
আমার আবার ভীষণ চশমা প্রীতি। সবাই চশমা খুলে ছবি-টবি ওঠে। আমি কক্ষনো না, এমনকি ভার্সিটির প্রোগ্রামে ফ্যাশন শো করেছি চশমা পরে! দেঁতো হাসি

এখন এমন অবস্থা চশমা না পড়লে আমিও কাউকে চিনিনা, অন্যরাও আমাকে চেনে না! খাইছে

মেঘা এর ছবি

যারা সব সময় চশমা পরে তাদের চশমা ছাড়া এতো আজব লাগে। একটা আপু আছে আমি যাকে ছোটবেলা থেকে চশমার সাথেই দেখি। মনে হয় জন্মই হয়েছিল চশমা নিয়ে। সেই আপু আমার সামনে দিয়ে একদিন চশমা ছাড়া লেন্স পরে যাচ্ছিল। আমাকে ডেকে যখন কথা বলছে আমি তখন পর্যন্ত চিনতেই পারি নি এটা দীপু আপু!! চশমা ছাড়া ওকে দেখে মনে হচ্ছিল কী যেন নাই!

চশমা নিয়ে ফ্যাশন শো!!! হাততালি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

তানিম এহসান এর ছবি

আমার বাসায় বাবা-মা আর বোনের চশমা ছিলো, আমার-ই ছিলোনা, সেই নিয়ে ছেলেবেলায় কত দুঃখ দেঁতো হাসি প্রথম যেদিন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন বাবা সেদিন আমার ভেতরে বিশাল উত্তেজনা, চশমা নিতে হবে। বেশ কয়েকজন ডাক্তার দেখানো হলো, তারা সবাই চশমা সাজেস্ট করলেন কিন্তু আমার বাবা একদম রাজি না, তার প্রথম কথা চশমা ছাড়া কোন উপায় আছে কিনা সেটা বলুন, আমি চাইনা আমার ছেলে চশমা পড়ে সারাজীবন ঘুরবে। ব্যাপক মন খারাপ, পরে বাবা’র এক কলিগের ভাইয়ের কাছে গেলাম, তিনি পরামর্শ দিলেন ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য। আমি সারাদিন ঘরে থাকতাম, বই পড়তাম, সেই প্রথম আমার ঘর ছেড়ে বাইরে সারাদিন কাটানো শুরু, পুরাই বাউন্ডুলে হয়ে গেলাম দেঁতো হাসি

আমার বাসায় সবাই কিভাবে কিভাবে যেন এখন চশমা-মুক্ত কিন্তু আমাকে চশমা নিতে হয়েছে, চশমা খুবই খারাপ জিনিস। লেখাটা পড়ে নস্টালজিক হয়ে গেলাম, আপনার লিখা ঝরঝরে। লিখতে থাকুন, শুভকামনা।

মেঘা এর ছবি

আমি যখন কলেজে পড়ি তখন আমাদের বাসার চারজন মানুষের সবার চশমা আছে। এক সাথে বাইরে গেলে ভীষণ খারাপ দেখা যেত। আমি বলতাম এটা কোন কথা যে বাসার সবাই চশমিশ? তাই আমি চশমা পরব না খাইছে আমার চশমা হাতে করে, ব্যাগে রেখেই এতোকাল চলে এসেছি দিব্যি দেঁতো হাসি

অনেক ধন্যবাদ তানিম ভাই। মাত্রই আপনার জাবির শিবির নিয়ে লেখার দ্বিতীয় পর্ব পড়ছিলাম! ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছেন আপনারা!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

শাব্দিক এর ছবি

কন্টাক্ট লেন্সের ঝামেলায় যাওয়া হয়নি বোধ হয় আপনার। আমি তো কাজল দেয়ার লোভে লেন্স নিয়ে চরম ধরা খাওয়া পাব্লিক। একবার লেন্স পড়েই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম, একবার হল চোখের মধ্যেই ফোল্ড হয়ে লেন্সটা হারায় গেল, আরেকবার ধূলা ঢুকে চোখ টোখ ফুলে একাকার। শেষ পর্যন্ত ডাক্তার বললেন, কোনটা ভাল হয় মা ভেবে দেখ, সুন্দর দেখানোর জন্য ইনফেকশান হয়ে আন্ধা হয়ে যাওয়া, নাকি বাকি জীবনটা সব কিছু দেখতে দেখতে কাটানো।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

মেঘা এর ছবি

কি যেন একটা মুভি দেখেছিলাম ছোটবেলায় যেখানে কন্টাক্ট লেন্সের জন্য অনেক ঝামেলা হয় দেখিয়েছিল। তখন লেন্স নতুন ছিল। যাদের চোখ ভাল তারাও দেখতাম নীল, হলুদ লেন্স পরে ঘুরত। আমার সব সময় মনে হতো চোখের মণি কেটে যাবে নাহলে কিছু একটা হবে লেন্সে পরলে তাই আর সাহস করতে পারি নি খাইছে

সব ডাক্তারা এইরকম কথা বলে নাকি? ইমোশনাল কথা বলে আর হাতে চশমা ধরিয়ে দেয় রেগে টং

ধন্যবাদ শাব্দিক আপু।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চশমা না হয় পরা গেল কিন্তু নাকের গোড়ায় যে গভীর দাগ হয়ে যাচ্ছে, সেটার কি হবে ? চলুক

মেঘা এর ছবি

এই জন্যেই তো আরো বেশি ইচ্ছা করে না চশমা পরতে আংকেল! খুব বাজে লাগে। মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার একটি লেখা। আমার তিন কন্যাই চশমা নিল একই দিনে। রাতে শুয়ে শুয়ে প্যাসেজের আলোতে গল্পের বই পড়তো তারা।
চশমার দোকান থেকে আমার স্বামি তার পুত্রধনকে খেলনার দোকানে নিয়ে কয়েকটা খেলনা চশমা আর সানগ্লাস কিনে দিয়ে বললো বাবা চশমা কিন্ত ঝামেলার জিনিস, পড়ে দ্যাখো। ছেলে খুব আনন্দের সাথে কয়েকদিন পড়ে দেখে আসলেই ঝামেলার। তবে সে কখোনো শুয়ে শুয়ে বই পড়েনি। তার চশমাও পড়তে হয় নি অনেক দিন।

আসমা খান

মেঘা এর ছবি

আমিও তো শুয়ে শুয়ে বই পড়ি! মাঝে মাঝে খুব অল্প আলোতে বই পড়ি! এই জন্যেই মনে হয় আমার এই দুরাবস্থা মন খারাপ

ধন্যবাদ পড়ার জন্য হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

guest_writter এর ছবি

মেঘা, আপনার লেখাটা ভারী মজার। এটা পড়ে গতকালের এক ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। অফিস যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হব ঠিক ঐসময়ে চশমা খুঁজে পাচ্ছি না। পড়ে অবশ্য আম্মু খাটের তলা থেকে উদ্ধার করে। ২.৭৫ পাওয়ার নিয়ে আপনি চশমা ছাড়া কিভাবে ছিলেন আমি সেটাই বুঝতে পারছি না......কারন ২.৫০ নিয়ে আমার অস্থির অবস্থা। চশমা না দিলে মনে হয় ব্রেইন কাজ করছে না। আমার অবস্থা দেখে আমার হবু বর মাঝে মাঝে বলে--------“অন্ধজনে দেহ আলো”। হাসি

দীপাবলি।

মেঘা এর ছবি

দীপা আপু নির্ভরশীল আমি কিছুতেই হতে চাই নি দেঁতো হাসি জানি না আমি কেন যেন খুব পরিষ্কার করে দূরের কিছু দেখার প্রয়োজন অনুভব করতাম না। এখনো করি না। আমার পাশে যে থাকে আমি বরং তাকে জিজ্ঞেস করি খাইছে

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

দুরন্ত  এর ছবি

লিঙ্কগুলো শেয়ার করলাম।

Lasik eye surgery pioneer to stop performing procedure, citing 'medical ethics'

http://shanghaiist.com/2012/02/16/lasik_eye_surgery_pioneer_to_stop_p.php

Public Health Advisory on CNN Released about Dangers of LASIK

http://www.krounerlaw.com/public-health-advisory-on-cnn-released-about-dangers-of-lasik/

মেঘা এর ছবি

লিংকের জন্য ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

মেঘা, চশমা পরা খারাপ কী সে? ব্রাড পিট থেকে শুরু করে হ্যারী পটার অনেকেইতো চশমা পরে ।

ল্যাসিক সম্পর্কে আমার চোখের ডাক্তারও কিন্তু খুব ভাল কিছু বলে নি । নতুন জিনিষ, একটু খোঁজ খবর নেবেন ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

মেঘা এর ছবি

জানি না আপু! আমার কেমন জানি ভাল লাগে না। আমি বোধ হয় আমার কাজল দেয়া চোখ দেখতে খুব বেশি ভালবাসি ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

আয়নামতি এর ছবি

লক্ষি লক্ষি ছেলে-মেয়েরা কিন্তু চশমা পরে হাসি খুব প্রাণবন্ত লেখা আপনার!

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ আয়নামতি। আমিও তো লক্ষ্মী চাল্লু

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সত্যপীর এর ছবি

আমি প্রথমবার চোখ দেখাতে গেলে পরে চৈনিক ডাক্তার আমারে বলে, কি কারণে আগমন? আমি কৈলাম ইয়ে, প্রফেসর সাব বোর্ডে কি লেখে কিসুই বুজিনা! সব ঝাপসা লাগে।

ডাক্তার তখন আমাকে বলে, ও তো কেউই বুজেনা ঐটার জন্য চশমা লাগব কে বলছে?

খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হো হো হো

মেঘা এর ছবি

হো হো হো মজার! আমাকে এইভাবে কেউ বললে আমি ব্যাপক খুশি হতাম দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

দুরন্ত  এর ছবি

মেঘা আপু, আপনি যদি সত্যি চশমাকে আর সহ্য করতে না পারেন তবে ল্যাসিক না করে ফটোরিফ্রেক্টিভ কেরাটেক্টোমি অপারেশন করে ফেলতে পারেন। এটাকে পিআরকে লেজার সার্জারী বলে। ল্যাসিকের মতোই লেজার দিয়ে কর্নিয়ার টিস্যু সরানো হয় কিন্তু এই অপারেশনে ল্যাসিকের মতো মেটাল ব্লেড দিয়ে কর্নিয়া কাটতে হয় না। মানে কাটাকাটি মুক্ত অপারেশন তবে যেহেতু এই অপারেশনে লেজার সরাসরি কর্নিয়ার উপরে দেয়া হয় তাই এতে অপারেশনের পরের দুই তিন দিন খুব অস্বস্থি বোধ হয় চোখে। দুই তিন দিন চোখ ব্যাথাও করতে পারে। দৃষ্টি পুরোপুরি ক্লিয়ার হতে কয়েক সপ্তাহ কিংবা দুই তিন মাস লেগে যায় যেটা ল্যাসিকে লাগে মাত্র একদিন তবে এটা ল্যাসিকের চেয়ে নিরাপদ কারন এতে কর্নিয়া কাটতে হয় না কিন্তু রিকোভারী টাইম ল্যাসিকের চেয়ে বেশি ও অপারেশনের দুই তিন দিন অস্বস্থিবোধ লাগে বলে এটা জনপ্রিয় না কিন্তু আমেরিকাতে প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ল্যাসিকের চেয়ে পিআরকে সার্জারী প্রেফার করে। দুইটাই কর্নিয়া দূর্বল করে তবে ল্যাসিকে কর্নিয়া কেটে যতটা দূর্বল করে দেয় পিআরকেতে কর্ণিয়া অতটা দূর্বল হয় না যেহেতু এখানে কোনো কাটাকাটি হচ্ছে না। ক্যারাটোকোনাস হওয়ার ঝুঁকিও ল্যাসিকের চেয়ে কম কারন কর্নিয়া কম পাতলা করা হচ্ছে এই অপারেশনে।

যাই করুন দুই তিনজন ডাক্তারদের সাথে আলাপ করে করুন। চোখের ব্যাপার। একবার যদি এক্টাশিয়া / ক্যারাটোকোনাস হয় তবে আপনার লাইফ শেষ। আমি তো এই ক্যারাটোকোনাস হওয়ার ভয়ে সার্জারী করাচ্ছি না। তা না হলে কবেই সার্জারী করে ফেলতাম। চশমা খুব বাজে জিনিস। নাকে দাগ পড়ে যায়, কানের পিছনে ব্যাথা হয়ে যায়, চশমার একটা ভার সারাক্ষন বইতে হয়, চশমা দিয়েও স্বাভাবিক মানুষদের মতো দেখা যায় না, সবকিছু স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট দেখা যায়, খেলাধুলা করা যায় না ঠিক ভাবে, মেয়েরা সাজুগুজু করতে পারে না চোখে, ারো ক ন্স আছে কারন কিন্তু **** মেডিক্যাল সাইন্স আজ অবধি পুরোপুরি নিরাপদ কোনো ট্রিটমেন্ট বের করতে পারলো না মায়োপিকদের জন্য। লেন্স ইউজ করলে ইনফেকশনের ভয় আর ল্যাসিক কিংবা লেজার সার্জারী করলে তো ইনফেকশন, ক্যারাটোকোনাস সহ আরো অনেক ঝুঁকি।

ধুর... গ্লাসেস সাক্স ! ল্যাসিক সাক্স !! লাইফ সাক্স !!! রেগে টং

সুদীপ  এর ছবি

আমার খাড়া নাকটা নুইয়ে পড়লো এই চশমার কারনে। চশমা সাক্স।

মেঘা এর ছবি

কিছুদিনের অভ্যেসে আমার নাকে দাগ পরে গেছে!!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।