একদিন পিকনিকে

মেঘা এর ছবি
লিখেছেন মেঘা [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ০৬/০৮/২০১৩ - ১২:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এককালে আমরা সামার ভ্যাকেশনে আম্মুর সাথে ঈশ্বরদী যেতাম। আব্বু আমাদের রাখতে না গেলেও আনতে ঠিক যেত। আমরা ম্যালা দিন আব্বুকে ছাড়া ঈশ্বরদী থাকার প্রস্তুতি নিয়ে নাচতে নাচতে চলে যেতাম। আর আব্বু সাত দিন পার হতে না হতেই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আমাদের নেবার জন্য ঈশ্বরদী চলে যেত। সে এক ভারী বিরক্তিকর অবস্থা ছিল। আব্বুকে দেখলে তখন খুব রাগ হতো! কী দরকার ছিল আসার?! তো যে সময়ের কথা বলছি, সে সময় আমি ডাবল প্রমোশন পেয়ে ক্লাস টু না পড়ে থ্রি’তে উঠে গেছি। বয়স ছয় বছর হলেও দিব্বি আম্মুর কোলে উঠে ঘুরে বেড়াই তখনও। মানে বড় হলেও স্বভাব অনুযায়ী অতি আহ্লাদী জন্মের থেকেই ছিলাম। যেদিন স্কুল ছুটি হতো তার পরের দিন আমরা তিনজন ব্যাগে কাপড়চোপড় ভরে ঈশ্বরদীর বাসে উঠে আব্বুকে টাটা দিয়ে ঈশ্বরদী চলে যেতাম।

আম্মু তো খুব খুশি বাড়ি গেলেই। মাঝে মাঝেই আম্মুকে খুঁজে পেতাম না ঈশ্বরদী গিয়ে। এবাড়ি-ওবাড়ি, এই বান্ধবী-সেই বান্ধবী, আত্মীয়, মামা, খালা, সব মিলিয়ে আম্মু চরম ব্যস্ত। আমি আর আপু তখন পুরো স্বাধীন! আম্মু এই, সেই করে নিজে এতো ব্যস্ত থেকে আমাদের দিকে খেয়াল দিতে পারে না, পিট্টাও লাগাচ্ছে না! আহ! কী শান্তি! আমরা আবার আমাদের স্বাধীনতা বলতে বুঝতাম, যা ইচ্ছা করা যাবে কিন্তু আম্মু পিট্টা দিবে না। বিরাট বড় অন্যায় হলেও আম্মু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করবে কিন্তু কিছুই করতে পারবে না। যেমন ঈদের দিন অথবা আমাদের জন্মদিন! যা ইচ্ছা করার স্বাধীনতা আমরা বছরে দুই/তিনবার পেতাম বলে আমাদের কাছে স্বাধীনতার ম্যালা দাম ছিল তখন। সেই স্বাধীনতা উপভোগের নামে আমরা বড় বড় সব অন্যায় করে চোখের কোণা দিয়ে আম্মুর মেজাজ পরখ করতাম। আম্মু কতখানি বিরক্ত হচ্ছে তার উপর আমাদের স্বাধীনতা ভোগের মাত্রা নির্ভর করত। বেশি অন্যায় হয়ে গেলে আপু আবার আম্মুকে জিজ্ঞেস করতো, “এখন কি মারবা?” আম্মু দাঁতে দাঁত চেপে ভয় দেখাত কিন্তু মুখে বলত “না, মারবো না!” এই রকম সুযোগ কেন প্রতিদিন আসে না?!

তো ঈশ্বরদী যেয়ে আমাদের ঈদের মত, জন্মদিনের মত আনন্দ হয়! যেহেতু সামার টাইম মানে গ্রীষ্ম আর কী! কাঁচা আম দিয়ে তখন আমাদের বাড়ির সামনে পেছনের বাগান ভরা। গাছের মালিক আমরা হবার কারণে আমাদের সেই রকম ভাব। পাড়ার ছেলেপেলে সব আমাদের পিছে পিছে ঘুরে বেড়ায় আম নেবার জন্য। ঢাকায় থাকলেও আমরা হলাম ফার্মের মুরগী! বুদ্ধিশুদ্ধি অতি নিম্নমানের! তাই কেউ যখন বলে “তোমাদের তো গাছ ভরা আম। আমাদের একটা দাও।” আমরা আর বুঝতে পারি না এই কথার মধ্যে কী চালাকি থাকতে পারে। আমরা দরাজ দিল হয়ে বলি “একটা আম? এ আর এমন কী! আচ্ছা তুমি দুইটাই নাও।” একটা আমের কথা বলে ওরা যখন ব্যাগ ব্যাগ আম পেড়ে নিয়ে চলে যায় তখন অবশ্যই আমরা বেশ অসহায় বোধ করতাম কিন্তু বুঝে উঠতে পারতাম না গাছ থেকে নামাব কী করে! আপুজী যখন এই বিরাট বড় দিল দরিয়া কাজের খবর পেতো তখন আম্মুর সাথে চিল্লাতো, “তনু তোর এই দুটা কি মানুষ?!” (এটা খুব কমন ডায়ালগ ছিল আমাদের জন্য!) আব্বুর যেমন ধারণা ছিল ভুল করে আমরা আব্বু আম্মুর কাছে চলে এসেছি, আসলে থাকার কথা ছিল বনে-বাদাড়ে।

যা বলতে লিখতে বসলাম তা না বলে বেলাইনে চলে যাচ্ছি! যা হোক, লাইনে আসি। ঈশ্বরদী থেকে যেদিন আমাদের ঢাকা আবার ফিরে আসার কথা তার আগের দিন ওই পাড়ার আমাদের কাছাকাছি বয়েসের পিচ্চি ব্যাটেলিয়ন আমাদের ওনারে একটা পিকনিকের আয়োজন করতে চাইলো সেবার। আম্মু তখন নিজের ছোটবেলার পিকনিকের অভিজ্ঞতা বলে আমাদের উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দিলো। সেই সাথে আম্মুর বেশ কয়েকটা বান্ধবীও ছিল যাঁদের ছেলেপেলে আবার আমাদের বন্ধু-বান্ধব। তো পিকনিক আমাদের হবে ঠিক কিন্তু মজা নেবার জন্য সব বড় মানুষ পরের দিন আমাদের বাড়িতে আসার জন্য রেডি। বিরাট বড় বাড়ি, বিরাট বড় ছাদ, সামনে মাঠ, বাড়ির ভেতরে বড় উঠান, গেট ছাড়িয়ে উঠানে পা দিলেই তিন দিকে তিনটা বিল্ডিং, বাড়ির পেছনে আমের বাগান। এই হলো সংক্ষেপে আমার নানা বাড়ি। এক কথায় অসাধারণ পরিবেশ। আম্মু যখন ছোট ছিল তখন আম্মু পুরো বাড়ি দাপিয়ে বেড়াত বান্ধবীদের নিয়ে। খেলা, পিকনিক সব আমাদের বাড়িতেই হত। আমরা যাবার পর যখন আবার এইসব করতে শুরু করেছি তখন আপুজী আর আম্মু দুজনের কাছে আম্মুর ছোটবেলাই ফিরে এসেছিল নিঃসন্দেহে। পরের দিন সকালে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে সবাই হাজির পিকনিক করার জন্য। তো আমরা নিজেদের স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য চলে গেলাম ছাদে। ছাদ আবার দুটো। একটা নিচের ছাদ, আরেকটা ছাদের উপর দোতলা ছাদ! মানে হচ্ছে একটা চিলেকোঠা ছিলো, সেই চিলেকোঠার ছাদে ওঠা যেত। (১৯৪০ সালে করা বাড়ি কিন্তু ভীষণ সুন্দর) চিলেকোঠার ছাদ আমাদের খুব পছন্দ ছিল। আর আম্মুর পছন্দ ছিল এক ছাদ থেকে আরেক ছাদে ওঠার যে সিঁড়ি, সেই সিঁড়ি। আম্মু প্রায় দিন বিকেলে পুরানো কোনো বই হাতে নিয়ে ওই সিঁড়িতে একা একা বসে থাকত। কিছু জিজ্ঞেস করলেও কথা বলতো না তখন। এত যে কী ভাবত কে জানে!

যা বলছিলাম সেখানে ফিরে যাই, সকালে সবাই নাস্তা করেই আমাদের বাড়ি এসেছে। রান্না কি কি হবে তাই নিয়ে আলোচনা। রান্নার মেন্যু মেয়েরা ঠিক করে দিলে ছেলেরা বাজার করতে যাবে সেটাই ছিল পরিকল্পনা। আমরা মেন্যুতে পোলাও, মাংস, রোষ্ট, রেজালা, কাবাব সব রেখেছিলাম। কিন্তু বাজার করতে দেবার সময় দেখা গেল যে ছেলে মাত্র একটা ব্যাটেলয়নের মধ্যে। তাঁর বয়স ৮ বছর। আম্মুর বান্ধবী মিনা খালামনির ছেলে তারিফ! তারিফ ভাইয়াকে বাজারে যেতে বলা হলে যে জানালো যে সে বাজারে একা একা কোনোদিন যায় নাই। আমরা তো সবাই অবাক! এটা কোনো কথা হলো? এখন রান্না হবে কি?

আমি আগে থেকেই বুঝে গিয়েছিলাম পিকনিক মানেই ভেজাল। মানে মুরগীর ডিম কথা নাই বার্তা নাই হুট করে হাঁসের ডিম হয়ে যায় পিকনিকে। হুহ! আমি কি আর জীবনে এর আগে পিকনিক করি নি? ঢাকায় আমরা মোহাম্মদপুরের যেখানে থাকতাম তার কাছেই ছিলো সরকারী কোয়ার্টার। আমাদের সব বন্ধু-বান্ধব ওখানেই থাকত। হরহামেশাই আমরা কোয়ার্টারে যেতাম। স্কুলের ফাইনাল হয়ে যাবার পর সবাই মিলে ঠিক করেছিল একটা পিকনিক করবে। বাচ্চা-কাচ্চা সব মিলিয়ে প্রায় জনা কুড়ি। পিকনিকে কী হবে, না হবে সে সবের কিছুই আমরা জানি না। মনে হয় কোনো এক বন্ধুর মা সব দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আমাদের শুধু বলেছে সকালে একটা করে ডিম আর রান্না করার জন্য চাঁদা দুই টাকা নিয়ে কোয়ার্টারে যাওয়ার জন্য। আমি আর আপু খুব সাবধানে হাতে ডিম নিয়ে (একটু বেশি সাবধান আমি ছিলাম কারণ হাতে ধরে ডিম ভেঙে ফেলার ইতিহাস আমার অনেক পুরানো) আর দুই টাকা নিয়ে গেলাম পিকনিকে। পিকনিকে যে রান্না নিজেদের করতে হয় সেটা ঈশ্বরদীর পিকনিক হবার আগে আর জানা ছিল না আমার। দুপুরে আমাদের খেতে দিলো। প্রথমে পোলাও আর সেদ্ধ ডিম তেলে একটু ভাজা। আমি ডিম নিয়েই খুশি। ডিম আমার পছন্দ। একটু করে মুখে দিয়েই দেখি এই ডিম তো আমার না! ডিম দিয়ে বিকট গন্ধ! আমি নিজের হাতে, অতি সাবধানে ডিম না ভেঙে নিয়ে গেলাম মুরগীর ডিম। আর সেই ডিম নাকি সেদ্ধ হবার পর হয়ে গেছে হাঁসের ডিম! আমি হাঁসের ডিম খাই না! আমার পুরা কেঁদের ফেলার অবস্থা। খাচ্ছি না দেখে পাশের জন জিজ্ঞেস করে, ঘটনা কি? আমি বললাম, “মুরগীর ডিম ছিল সেদ্ধ হবার পর এখন দেখি হাঁসের ডিম হয়ে গেছে।” সেই মেয়ে চিৎকার দিয়ে বলল, সে নিজের জন্য নিয়ে এসেছিল হাঁসের ডিম কিন্তু পেয়েছি পিচ্চি এক মুরগীর ডিম! আমি ওর ডিম নিয়েছি বলে আমার পাত থেকে হাঁসের ডিম নিয়ে কপকপ করে খেয়ে ফেলল। যখন আমি আমার ডিম চাইলাম তখন বলে ওর হাঁসের ডিম ভুলে মুরগীর ডিম হয়ে গেছে মনে করে ও সেই মুরগীর ডিমও খেয়ে ফেলেছে! আমি শুধু পোলাও খেলাম আর মানুষজন দুটা করে ডিম খেলো! বেঈমানি আর কাকে বলে!

লাইনে থাকতে বেশ ঝামেলাই হচ্ছে! অনেকদিন পর লিখতে বসলে আসলেই এই হয়। বারবার একথা, সেকথা মনে পড়তেই থাকে! ঝামেলা! যা হোক, আবার ঈশ্বরদীর পিকনিকে ফিরে যাই। তারিফ ভাইয়া বাজার করতে পারবে না। এখন আমাদের কী হবে! আবার মেন্যু পরিবর্তন করতে বলা হলো! এবার বুদ্ধি করা হলো আমরা বাড়িতে যা যা আছে তাই দিয়ে রান্না করবো। সবাই একটু একটু চাল আনবে, ডাল আনবে, আরও যা যা চোখে পড়বে নিয়ে আসবে। তারপর সেই সব সংগ্রহ করা জিনিসপত্র দেখে মেন্যু ঠিক করা হবে। সবাই যাঁর যাঁর বাড়ি ছুটলাম। আমরা আপুজীকে একটু বেশিই জ্বালাতাম সব সময়। আমাদের তো আর চাল, ডাল দিলে হবে না। সেই সাথে তেল, মরিচ, নুন, হাঁড়িপাতিল, চুলা, সব দেয়া লাগবে। আমার আপুজীও আমাদের মতই ছেলেমানুষ ছিল। সে প্রবল উৎসাহে আমাদের সব ছাদের উপর গুছিয়ে দিয়ে আসলো।

যে বারের কথা বলছি সেবার ছিল অনেক বেশি গরম। ঈশ্বরদীতে সাপ ভাজা গরম পড়ে। বৃষ্টির দেখা নেই। তবু আমাদের আনন্দ কমে না। চিৎকার, চেঁচামেচি করে একে, তাঁকে কাজের অর্ডার করা হচ্ছে। এক নিমিষে আমরা সবাই রাজা হয়ে গেলাম! ধারকর্য করে যা পাওয়া গেলো তা মোটামুটি ভালোই বলা চলে। রান্নার জন্য হাতে পেলাম, মোটা-চিকন মিলিয়ে বিভিন্ন রকমের চাল, ডাল, আলু, শুকনো বরই, কাঁচা আম, আমাদের ঢেঁকি ঘরের উপরের লাউয়ের মাচা থেকে কচি লাউ পাতা, বাকি সব আপুজীর রান্না ঘরের জিনিস। বিশাল ব্যাপার-স্যাপার। আমরা নিজেদের সাফল্যে খুবই খুশি। এখন রান্নার মেন্যু শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ালো, বরই, কাঁচা আম আর আলু দিয়ে মাখা মাখা করে খিচুড়ি সেই সাথে লাউ শাক ভাজি। খিচুড়ির সাথে যে শাঁক ভাজি খাওয়া যাবে না এটা আমাদের মাথায় আসে নি।

শুরু হলো কোটা বাছার কাজ। আমি আর আপু ফার্মের মুরগী হবার কারণে কিছুই পারি না কিন্তু সেখানে মফস্বলে থাকার কারণে আমাদের কাছাকাছি বয়েসের মহুয়া, স্নিগ্ধা, মেরী, (আরও কারা কারা যেন ছিল, নাম ভুলে গেছি) সব কিছু পারে করতে। কুটে ধুয়ে সব গুছিয়ে নিয়ে রান্না করতে বসেই একটা বিপদ হলো আমাদের! লাউ শাক কী করে রাঁধে আমাদের জানা নেই। আমি মাথায় বেশি বুদ্ধি রাখি। আমি বললাম, “লাউ শাক তেল দিয়ে ভাজি করতে হয় আর লবণ দিতে হয়।” কয়েক চামচ লবণ আর তেল শাকের মধ্যে দিয়ে চুলার উপর বসিয়ে অপেক্ষা করছি। প্রায় দশ মিনিট পর দেখি যেমন শাক তেমন হয়ে বসে আছে! তখন কে যেন হঠাৎ আবিষ্কার করলো যে রান্না হচ্ছে না কারণ চুলায় আগুন নাই। কী ভয়াবহ অবস্থা! চুলা না জ্বালিয়েই রান্নাবান্না করে যাচ্ছি এতক্ষণ ধরে আমরা!

আপুজী আমাদের জন্য একটা মাটির চুলা বানিয়ে দিয়েছিল। একেবারে নতুন চুলা। সেই চুলা জ্বালাতে হয় খড়ি দিয়ে। কিন্তু কেউ জানে না কিভাবে করে চুলা জ্বালাতে হয়। আর আমার আর আপুর তো প্রশ্নই ওঠে না জানার! আবার দোতলায় গেলাম আপুজীর কাছে। যেয়ে বললাম চুলা জ্বালায় দাও। আপুজী হাসতে হাসতে কুটিপাটি হয়ে আমাদের চুলা জ্বালিয়ে দিয়ে গেলো। থাকতে চেয়েছিল ছাদেই আমাদের সাথে কিন্তু আপুজীর হাসি দেখে আমাদের মান-সম্মানে খুব লেগে যাওয়ায় দিলাম ভাগিয়ে।

রান্না চলছে! শাঁক ভাজি অর্ধেক হবার পর মনে হলো এর মধ্যে মনে হয় কাঁচা মরিচ দিতে হয়। দিলাম কয়েকটা। তারপর মনে হলো পানি তো দেই নাই সেদ্ধ হবে কি করে? দিলাম পানি। প্রচণ্ড গরমে অস্থির সবাই তখন। তার মধ্যে মাঝে মাঝে আসে কেমন যেন উড়া-ধুরা বাতাস। খড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। যেই বাতাস হয় আর ছাই উড়ে শাকের মধ্যে পড়ে। বার কয়েক চেষ্টা করা হলো ছাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করার। কিন্তু কিছুই হয় না। শেষে কেঁদে কেটে শাক খাওয়ার চিন্তা বাতিল।

এখন খিচুড়ি রান্না করা লাগবে। এক গাদা চাল, ডাল, তেল, লবণ, আর আলু, বরই, কাঁচা আম দিয়ে চুলায় দিয়ে পাতিলে ঢাকনা লাগিয়ে রাখা হলো! একটু কিছুক্ষণ পর দেখি সেই পাতিল উপচে সব খিচুড়ি বাইরে চলে আসছে আর আমাদের তখন ক্ষিধায়, ক্লান্তি আর গরমে, অস্থির অবস্থা। পাতিল থেকে খিচুড়ি পড়ে যাচ্ছে এই নিয়ে হাউকাউ শুনে আপুজী উঠে এসেছে। অবস্থা দেখে একচোট হেসে বলল, “এই তো রান্না হয়ে গেছে! তোরা যা সব গোসল কর আমি খাবার প্লেটে দিচ্ছি।” আমরা রান্না করে ফেলতে পেরেছি মনে করে মহানন্দে সব গেলাম কল পাড়ে। একে তাঁকে পানি ছিটিয়ে, কাদার মধ্যে গড়াগড়ি করে খেলে ঘণ্টা-খানেক পর যখন আবার ছাদে গেলাম তখন দেখি সুন্দর করে সবার জন্য খিচুড়ি রেডি। গাপুসগুপুস করে খেয়ে দেখি জীবনের প্রথম যৌথ প্রযোজনার রান্না হিসেবে আমাদের রান্না একেবারে টপ-ক্লাস হয়েছে। আমরা নিজেরা শুধু খাই নি কিন্তু আম্মুদের জন্যও নিয়ে গিয়েছিলাম। সেই খিচুড়ি যাঁরাই খেয়েছে এক বাক্যে বলেছে, বাচ্চা হলেও আমাদের হাতের রান্না খুব ভাল। একেবারে আপুজীর মত (আপুজীর মত এত ভাল রান্না আর কেউ করতে পারে কিনা আমার জানা নেই!)।

সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে শেষ বেলায় আমাদের একেবারে যা তা রকমের ক্লান্তি চেপে বসল। মা’দের হাতে কোনো রকমে খাবার দিয়েই বিছানায় উঠে ঘুম। আমাদের এত ব্যাপক আয়োজনে পিকনিক করা দেখে আব্বুর মনে হয়েছিল তাঁর মেয়েরা আর কোনোদিন এমন মজা করতে পারবে না। ছবি তুলে রাখা দরকার। আব্বু হয়ত ভুলে গিয়েছিল তাড়াতাড়ি স্টুডিওতে যাবার কথা। যখন ক্যামেরা নিয়ে এসেছে তখন আমরা সব ঘুম! এখনও গল্প উঠলে আব্বু বলে, “ছবি তুলে রাখা দরকার ছিল এইসব কিছুর।” ছবি দেখে মনে করার মত তেমন ছবি নেই তাই আমি চিন্তা করেছি এইসব ছেলেবেলা লিখে রাখি। থেকে যাক স্মৃতির পাতায় আমার ছোট্ট ছোট্ট সব গল্প।

বিশেষ ধন্যবাদ মর্ম ভাইয়াকে। এই লেখা হতো না যদি মর্ম ভাইয়া ‘মেঘা কিছু একটা লিখো কিছু একটা লিখো’ করে তাড়া না লাগাতো তো! অনুপ্রেরণা খুব দরকার যে কোনো কিছু করার জন্যেই। ভাইয়া এই লেখাটা তোমার জন্য!


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এই ডিম তো আমার না! ডিম দিয়ে বিকট গন্ধ! আমি নিজের হাতে, অতি সাবধানে ডিম না ভেঙে নিয়ে গেলাম মুরগীর ডিম। আর সেই ডিম নাকি সেদ্ধ হবার পর হয়ে গেছে হাঁসের ডিম! আমি হাঁসের ডিম খাই না! আমার পুরা কেঁদের ফেলার অবস্থা। খাচ্ছি না দেখে পাশের জন জিজ্ঞেস করে, ঘটনা কি? আমি বললাম, “মুরগীর ডিম ছিল সেদ্ধ হবার পর এখন দেখি হাঁসের ডিম হয়ে গেছে।” সেই মেয়ে চিৎকার দিয়ে বলল, সে নিজের জন্য নিয়ে এসেছিল হাঁসের ডিম কিন্তু পেয়েছি পিচ্চি এক মুরগীর ডিম! আমি ওর ডিম নিয়েছি বলে আমার পাত থেকে হাঁসের ডিম নিয়ে কপকপ করে খেয়ে ফেলল। যখন আমি আমার ডিম চাইলাম তখন বলে ওর হাঁসের ডিম ভুলে মুরগীর ডিম হয়ে গেছে মনে করে ও সেই মুরগীর ডিমও খেয়ে ফেলেছে! আমি শুধু পোলাও খেলাম আর মানুষজন দুটা করে ডিম খেলো! বেঈমানি আর কাকে বলে!

হো হো হো এই না হলে পিকনিক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মেঘা এর ছবি

খাইছে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পড়তে মজাই লাগছিলো, কিন্তু লেখার ঘনত্ব বেশি। কিছুদূর পড়ে টায়ার্ড হয়ে গেলাম। একটু প্যারা করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে দিলে পড়তে আরাম হতো। মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মেঘা এর ছবি

আচ্ছা ভাইয়া ঠিক করে দিচ্ছি। ধন্যবাদ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

ঈয়াসীন এর ছবি

বেশ

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

মেঘা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

আয়নামতি এর ছবি

বেশ লেখা রে মেঘা! হাততালি নরজুল ভাইয়ের কথামত ছোট ছোট প্যারা করে দিলে পড়ে আরাম পাওয়া যাবে।
অনেক স্মৃতি জমা আছে আপনার ঝাঁপিতে। লেখুন না আস্তে ধীরে ওগুলো।

'পরোখ' বানানে ওকার হয় না রে।

মেঘা এর ছবি

থেংকু আয়নামতি দেঁতো হাসি

ঠিক করে দিয়েছি সব কিছু আবার। হাসি এখন মনে হয় পড়তে আগের মত অতো খারাপ লাগবে না। বানানও ঠিক করেছি।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

আয়নামতি এর ছবি

মেকওভারের পর লুকটা 'খুল্' হয়েছে মেঘা দেঁতো হাসি

মেঘা এর ছবি

হু সুন্দর হবার জন্যেই তো মেকওভার চোখ টিপি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এবার ভালো হয়েছে। পড়ে ফেললাম।
এগুলোর একটা সুন্দর বাংলা নাম আছে 'চড়ুইভাতি'। আমার বেশ ভালো লাগে। পিকনিক শুনলে মনে হয় এই বুঝি ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটবে। নাহয় বড়দের প্রফেশনাল বনভোজনকে তবু পিকনিক বলা গেলো, কিন্তু ছোটদের এই ব্যাপারগুলো পিকনিক হলে আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়।

বানান ঠিক করতে গিয়ে চন্দ্রবিন্দু একটু বেশি পড়ে গেছে মনে হয়। অন্তত এক গাঁদা চাল পড়ে বেশ সুবাস পেলুম চোখ টিপি

যাহোক, ভালো লেগেছে। লিখুন এসব আনন্দ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মেঘা এর ছবি

আমি মনে হয় একটু বেশি বেখেয়াল হয়ে গেছি মন খারাপ আবার ঠিক করে দিচ্ছি।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মেঘা এর ছবি

চড়ুইভাতি লেখা যেত তবে সত্যি কথা সেই বয়েসে চড়ুই পাখি ছাড়া এ বিষয়ে আর কিস্যুর নাম আমার জানা ছিলো না তাই আর লিখলাম না। আমি যা করতাম, যেমন করে ভাবি ছোটবেলার কথা লেখার সময় সেটাই লিখি। ছোটবেলা অনেক মজার ছিল আমার। বারবার সেসব চলে আসে লেখায়। হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সম্ভবত সবার ছোটবেলাই মজার।
আপনার ছোটবেলার কথাও মজারু হয়েছে।

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ প্রৌঢ় ভাবনা। এই ছোটবেলাটাই তো আছে মনে করার জন্য এখন!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লেগেছে। বেশ মজা পেয়েছি। নজরুল-ভাই এবং বায়নামতি-দিদির আব্দার মেটানোয় আমার পক্ষে পড়া সহজ হল। আরো লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকোলাম। (একখান কথা আছিল - শাঁক না শাক?)
- একলহমা

মেঘা এর ছবি

থ্যাংকুশ থ্যাংকুশ দেঁতো হাসি আমার ঝোলা ভরা খালি গপ্প আর গপ্প। শুনতে চাইলে বলতেই থাকব বলতেই থাকব। তখন কিন্তু আবার বলা যাবে না যে এই পিচ্চি খালি বুড়ির মত গপ্প করে।

শাঁক হবে না শাক হবে আমি কনফিউজড ইয়ে, মানে... ঠিকটা কেউ বললে ঠিক করে দিতাম। একলহমা দিদিভাই না দাদাভাই বুঝতেছি না তাই কিছুই বললাম না ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

আয়নামতি এর ছবি

বোঝার উপর শাকের আঁটির মত দুটো বিভ্রান্তি নিয়ে মেঘার দেখি অবস্হা কাহিল।
একলহমাকে আমি তো দিব্যি দিদিটি ডেকে যাচ্ছি দেঁতো হাসি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ইয়ে, মানে, দাদা নন উনি? দিদি?--- আমি তো আবার দাদা ধরে নিয়েছি!!

____________________________

মেঘা এর ছবি

আমি দাদা ধরব না দিদি ধরব চিন্তা করে না পেয়ে কিছুই না ধরে কথা বলে যাই সব সময় ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

সেই যে ছড়াটা -
"চড়ুইভাতির পাশেই নদীর কুল ছিল
আনন্দে তাই সবার গলাই খুলছিল---" - ঐটার মতোই মজারু হয়েছে।

যা বলতে লিখতে বসলাম তা না বলে বেলাইনে চলে যাচ্ছি! যা হোক, লাইনে আসি

আপনার বেলাইনে যাওয়াই এই লেখার একটা বড় আকর্ষন। তবে অনেকদিন পরে লেখাই যদি এর একমাত্র কারণ হয়, তবে এরকম বেলাইন চাই না। কারণ আপনার এই লেখা পড়ে পড়ার চাহিদা বেড়ে গেছে - ঘন ঘন লেখা চাই।

____________________________

মেঘা এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর সাহেব হাসি লিখব আরও অনেক গল্প আমার ছোটবেলার। আমি আবার লিখতে গেলে মাঝে মাঝেই এদিক ওদিক চলে যাই আর কী! অভ্যেস কী আর করবো!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মেঘা এর ছবি

বুঝে গেছি দিদি দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব মজা লাগল দেঁতো হাসি ,আর মজার মজার লেখা চাই পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম
ইসরাত

মেঘা এর ছবি

থ্যাংকুশ ইশরাত আপু। অবশ্যই লিখব। তবে বেশি বাচ্চা মানুষের মত লিখি মনে হয় সব সময় তাই এবার ভাবছি একটা বড়দের গপ্প লিখবো দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

তানিম এহসান এর ছবি

আহা! ছেলেবেলার পিকনিক! লেখা চলুক। চলুক

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তানিম ভাই। আমি সেই কুটি বয়েসেই দুটো পিকনিক পেয়েছিলাম। তারপর কেন যেন আর কোনো পিকনিক পাই নি। আর হলেও সেটা হয়েছে স্কুল থেকে, কলেজ থেকে, ভার্সিটির ফিস্ট। কিন্তু সেই নিজেরা রান্না করে খাওয়া, ভুল করা, হাত পুড়ানো, নিজেদের গুণে নিজেরাই মুগ্ধ হয়ে যাওয়া, সেই সব আর হয় নি। এটার মজাই আসলে অন্য রকম ছিল। অনেক মজার ছিলো।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মর্ম এর ছবি

আমার ভাল লাগল এই জায়গাটা

আমরা আবার আমাদের স্বাধীনতা বলতে বুঝতাম, যা ইচ্ছা করা যাবে কিন্তু আম্মু পিট্টা দিবে না। বিরাট বড় অন্যায় হলেও আম্মু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করবে কিন্তু কিছুই করতে পারবে না। যেমন ঈদের দিন অথবা আমাদের জন্মদিন! যা ইচ্ছা করার স্বাধীনতা আমরা বছরে দুই/তিনবার পেতাম বলে আমাদের কাছে স্বাধীনতার ম্যালা দাম ছিল তখন। সেই স্বাধীনতা উপভোগের নামে আমরা বড় বড় সব অন্যায় করে চোখের কোণা দিয়ে আম্মুর মেজাজ পরখ করতাম। আম্মু কতখানি বিরক্ত হচ্ছে তার উপর আমাদের স্বাধীনতা ভোগের মাত্রা নির্ভর করত। বেশি অন্যায় হয়ে গেলে আপু আবার আম্মুকে জিজ্ঞেস করতো, “এখন কি মারবা?” আম্মু দাঁতে দাঁত চেপে ভয় দেখাত কিন্তু মুখে বলত “না, মারবো না!”

তা, পরের লেখাটা কবে? শয়তানী হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মেঘা এর ছবি

মর্ম ভাইয়া থ্যাংকুশ। পরের লেখা রাস্তায়। মানে আসিতেছে----আসিতেছে দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

তারেক অণু এর ছবি
মেঘা এর ছবি

থ্যাংকুশ ভাইয়া হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সুবোধ অবোধ  এর ছবি

এহহে! ছুডু বেলা মনে করায় দিলেন গো আপু। আমরাও অনেক 'টুলামালাই' (এখনো নামকরণের সার্থকতা জানি না, তবে চড়ুইভাতি কে এই নামে ডাকতাম ) করতাম। হেব্বি মজা। লেখা চলুক

মেঘা এর ছবি

টুলামালাই পুরোই নতুন নাম আমার কাছে। কোনোদিন শুনি নি। নামটা চড়ুইভাতির মতোই সুন্দর। ধন্যবাদ পড়ার জন্য ভাইয়া।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

স্যাম এর ছবি

'আজাইরা গপসপ' চলুক...

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সাদিয়া এর ছবি

ছবছর বয়সে ক্লাস থ্রি!! অ্যাঁ

মেঘা এর ছবি

হু হিসাবটা জটিল কিছু না তো। পাঁচ বছর বয়েসে ভর্তি হয়েছি সোজা ওয়ানে। ক্লাস টু পড়ি নি। উঠেছি ক্লাস থ্রি'তে। এখন কি জটিল মনে হচ্ছে?

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

লেজ কাটা শেয়াল এর ছবি

আসলে সবার জীবনেই এমন মজারু থাকে| তবে সবাই তার বর্ননা দিতে পারেনা| ভালো লাগলো|

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

কতদিন চড়ুইভাতি করি না!
আপনার লেখা পড়ে কেমন যেনো আনমনা হয়ে গেলাম!
লেখা চালিয়ে যান।

-নিয়াজ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।