দা ডার্ক সাইড

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: শনি, ১৫/১০/২০১১ - ১১:২৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

টিং...।

ভোর চারটের জনশূন্য লবি। ডাবলিনের বুকে এক নামী হোটেল। এলিভেটরের শীতল ধাতব দরজাটা খুলে যায় অপেক্ষমান তরুণীর জন্য।

বাক্সে ঢুকে ফিরে দাঁড়িয়ে তিনি লক্ষ্য করেন, বারের সেই লোকটা দ্রুত এগিয়ে আসছে এলিভেটরটা ধরার জন্য।

কাউন্টারের পাশে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ যে এক দঙ্গল লোকজনের সঙ্গে তাঁর টুকটাক কথাবার্তা চলছিল, তার মধ্যে এই লোকটাও ছিল। তবে সে নিজে ছিল চুপচাপ, কেবল তাঁর কথা শুনে গেছে।

একটু আগেই “অনেক রাত হয়েছে বন্ধুরা, ক্লান্ত লাগছে; এবার আমি শুতে যাই” বলে তিনি জমায়েত ছেড়ে চলে এসেছেন। এখন মনে হচ্ছে লোকটাও বেরিয়ে এসেছে সাথে সাথেই।

দুজনকে গর্ভে নিয়ে ধাতব দরজাটা ফের বন্ধ হয়ে যায়।

এবার লোকটা মুখ খোলে।

“ইয়ে, ব্যাপারটা অন্য ভাবে নেবেন না... বলছিলাম কি, আপনাকে আমার বেশ ইন্টারেস্টিং লাগে... আমার ঘরে একটিবার আসবেন নাকি, কফি খেতে খেতে কিছু কথাবার্তা হবে?”

তরুণী বিরক্ত হন। আজকে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানেই তাঁর একটা বক্তৃতা ছিল।

এই গোষ্ঠীতে মহিলাদের সংখ্যা যে বেশ কম, এবং তার জন্য তাঁদের যে ব্যবহারের মুখে পড়তে হয়, তা নিয়ে। যে কোনো জমায়েতেই অনেক পুরুষ যে তাঁদের উপর হামলে পড়তে চায়, মোটাদাগের ইঙ্গিত রাখে, তা বলেছেন। অনেক মহিলাই তাঁকে জানিয়েছেন, পুরুষ-প্রধান সমাবেশগুলোয় সর্বক্ষণ পুরুষ-পরিবেষ্টিত হয়ে তাদের নজরের বস্তু হয়ে থাকতে ভালো লাগে না। তিনি নিজেও শুনিয়েছেন, ব্লণ্ড যুবতী হিসাবে কতবার ভিড়ের সুযোগে এইসব সমাবেশেই নানা সময় নানা লোক তাঁকে নানা ভাবে ছুঁয়ে গেছে।

সেসব কথা এই লোক নিশ্চয় শুনেছে। তারপর এতক্ষণ বারে থাকতে তার কথা বলার কিংবা কফি খাওয়ার কোনো সাধ আসেনি। তবে পরিশ্রান্ত জানিয়ে বেরিয়ে আসার পর এইবার এলিভেটরের নির্জনতায় সহজবোধ্য প্রস্তাব দেওয়া।

বক্তৃতার এই প্রকৃষ্ট উদাহরণের সাথে এই কুঠুরিতে আবদ্ধ থাকতে তাঁর ভারি অস্বস্তি হয়।

সংক্ষেপে প্রত্যাখ্যান জানিয়ে এলিভেটর থামতেই দ্রুত বেরিয়ে আসেন।

*******

তবে তিনি অতটাও অসহায় নন।

আমেরিকায় ফিরেই ওই তরুণী নিজের বহুপঠিত ব্লগে এই ঘটনার উল্লেখ করে একটা ভিডিও তুলে দেন।

সেখানে তিনি ওই গোষ্ঠীর শিক্ষিত, বুদ্ধিমান পুরুষদের অনুরোধ করেন, এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে। একজন ক্লান্ত মহিলার স্পষ্ট বক্তব্যে মন না দিয়ে তাকে সর্বদা এক যৌনসুখের বস্তু হিসাবে ভেবে না রাখতে।

************** শাখা – ১ **************

ওই ঘটনা ছিল ডাবলিনের সাম্প্রতিক নাস্তিক সম্মেলনের।

আন্তর্জালে তা ‘এলিভেটর-গেট’ নাম নিয়ে এক বিরাট বিতর্কের সৃষ্টি করে। ইগোর লড়াইতে পর্যবসিত হয়ে তা এই নব্যনাস্তিক সমাজের মধ্যে একটা ডার্ক সাইডকে সামনে নিয়ে আসে।

সংক্ষেপে তার ব্যবচ্ছেদ করলে দেখা যায়, ওই ভিডিওর পর ঘটনা প্রবাহিত হয়েছে দুটো ধারায়। পরবর্তী, দ্বিতীয় ধারাটা এক নামী ব্যক্তির উপস্থিতির ফলে সম্ভবত পাঠকের কাছে বেশি আগ্রহজনক হবে। কিন্তু তার আগে প্রথম শাখাটা দেখে নেওয়া প্রয়োজন।

*******

‘স্কেপচিক’ নামের জনপ্রিয় ব্লগের লেখিকা রেবেকা ওয়াটসন ওই ভিডিও-বক্তব্য পোস্ট করার পর, স্টেফ ম্যাকগ্র নামের একজন কলেজছাত্রী, যিনি নাস্তিক-ছাত্রসমিতির আয়োজক, এবং ব্লগার, একটা প্রতিবাদ-পোস্ট লেখেন।

সেখানে তাঁর মূল বক্তব্য ছিল, ফেমিনিজমের নামে রেবেকা বাড়াবাড়ি করছেন। যৌন আগ্রহ দেখানো খারাপ কেন? এক লিঙ্গের লোক অন্য লিঙ্গের লোকের প্রতি যৌন আগ্রহ দেখাবে, এ আর আশ্চর্য কী? ওই লোকের আগ্রহ দেখানোর অধিকার আছে, যেমন রেবেকার আছে তাকে প্রত্যাখ্যান করার, যা তিনি সরাসরি করেছিলেন – ব্যাস, চুকে গেল, আর এত কথা কিসের?

এনাদের দৃষ্টিতে ব্যাপারটা এরকম – একজন লেখক প্রচুর অটোগ্রাফ দিয়ে ‘আমি ক্লান্ত’ জানিয়ে শুতে চললেন। কিন্তু একজন ফ্যান তাঁকে ধাওয়া করে লিফটের মধ্যে চাপাচাপি করল আরেকটা অটোগ্রাফের জন্য। সেটায় লেখক বিরক্ত হতেই পারেন, কিন্তু তা নিয়ে এত শোরগোল ফেলার কী আছে?

ওই লোক রেবেকাকে চেপেও ধরেনি, গায়ে হাতও বোলায়নি, ধর্ষণও করেনি, স্রেফ সঙ্গ চেয়েছে – তাতেই এত?

*******

আমার, এবং অনেক ব্লগারের মতে, স্টেফ মহিলা হয়েও রেবেকার মূল পয়েন্টটা মিস করছেন। তাঁর আপত্তি মহিলাদের ‘সেক্সুয়াল অবজেক্ট’ বানানো নিয়ে। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মহিলাদের মতামত, অনুভূতিকে উপেক্ষা করে কেবল তাঁদের যৌন পরিতৃপ্তি প্রাপ্তির বস্তু হিসাবে দেখার ঝোঁক আছে অনেক পুরুষের।

এখানেও, রেবেকা তাঁর বক্তৃতায় আপত্তি জানাবার পর, এবং ‘আমি ক্লান্ত, ঘুমোতে চাই’ বলার পরও, সেসব কথা উপেক্ষা করে ওই লোক তাঁকে ধাওয়া করে সঙ্গদানের আহ্বান জানিয়েছে, যার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত শারীরিক। এটাই রেবেকার আপত্তি, তাঁর ভিডিওয় নাস্তিক সমাজের পুরুষদের এমন অবিবেচক না হতে অনুরোধ করেছেন। নাহলে, তাঁর মতে, এই ‘প্রধানত শ্বেতাঙ্গ শিক্ষিত সচ্ছল পুরুষদের গোষ্ঠী’র অবস্থায় যে নব্য-নাস্তিক সমাজ রয়েছে, মহিলারা তার বাইরেই থাকতে চাইবেন, নীরব নাস্তিক অবস্থাতেই; অ্যাক্টিভিস্ট, সক্রিয় নাস্তিক হিসাবে তাঁদের ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে না।

স্টেফের বক্তব্য, এটা স্রেফ মানবিক ইস্যু। রেবেকার বক্তব্য, এটা ফেমিনিজমের ইস্যু।

*******

নানা জনের মতামতে তর্ক বেশ জমে উঠতে লাগল।


পলা কির্বি বললেন, তিনি বহু বছর বিজনেস মিটিং অর্গানাইজ করছেন, তাতে পুরুষদের তরফ থেকে কোনো কু-ব্যবহার বা কু-ইঙ্গিত না থাকলেও, পুরুষ শ্রোতারা আগ্রহী হলেও, মহিলারা সহজে বক্তা হতে চান না। অতএব মহিলাদের সরব হওয়ার ব্যাপারটা কেবল রেবেকা যা বলছেন তাই নয়। সমাজে যেভাবে শেখানো হয়ে আসছে, যে সঙ্কোচ করা, মৃদুভাষী থাকা, 'ভালো মেয়ে'র লক্ষণ, সেগুলোই মহিলারা অবচেতন মনে পালন করে আসছেন। তাই সে জড়তা ভেঙে বেরিয়ে আসতে হবে তাঁদেরই।

কেউ বললেন, জঙ্গী নারীবাদী তো আগেও দেখেছি, একসময় তারাই বলত, নারীবাদ নিয়ে চর্চা করা কেবল নারীদেরই পক্ষে সম্ভব। এখানেও তারা ঘামে ফোঁটায় কুমীর দেখছে – কী প্রমাণ যে ওই লোকটা যৌনসঙ্গই চেয়েছিল? কেউ বললেন, হতেই তো পারে, লোকটা রেবেকার বক্তৃতা মিস করেছিল, বা বারের গানবাজনার আওয়াজে রেবেকার ‘আমি ক্লান্ত’ কথাটা শুনতে পায় নি?

*******

এই বিতর্কটা ব্লগজগতে চললে একটা স্বাস্থ্যকর, তুল্যমূল্য বিতর্ক দেখা যেত।

কিন্তু রেবেকা একধাপ এগিয়ে গেলেন

কিছুদিন পরের এক নাস্তিক ছাত্র-সম্মেলনে তিনি আমন্ত্রিত বক্তা ছিলেন। বক্তব্য, মহিলাদের উপরে ধর্মের আক্রমণ। তার আগে, তিনি কিছু অংশ যোগ করলেন, কীভাবে কিছু কিছু স্বঘোষিত নাস্তিক-স্কেপটিকও তাঁকে নানারকম হুমকি-ধমকি দিয়েছে, এমনকি ‘কারেক্টিভ রেপ’-এরও, তা নিয়ে। এবং নাস্তিক সমাজের অন্য অনেকে যে তাঁর পাশে দাঁড়াতে ইচ্ছুক নন, তা বলে, উদাহরণ হিসাবে সেখানে স্টেফের বক্তব্যের একটা অংশ তুলে দিয়ে বললেন, স্টেফ ‘ফেমিনিজম ১০১’ শিক্ষাটুকুও পান নি, তিনি প্রচলিত নারীবিদ্বেষী বুলিই শিখে আওড়াচ্ছেন।

এতে আমার, অনেকের, এবং স্টেফের নিজেরও, আপত্তি যে, অনুষ্ঠানের সকলের সামনে রেবেকা সেখানে উপস্থিত স্টেফকে সমালোচনা করলেন, যখন তিনি জানেন যে বক্তা নন বলে স্টেফ তার প্রত্যুত্তর দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। এবং স্টেফ ফেমিনিজম অনুধাবনে অজ্ঞ হতে পারেন, কিন্তু তিনি নারী হয়েও নারীবিদ্বেষী নন। আর অন্যের শেখানো বুলিও তিনি আওড়াচ্ছেন না।

*******


এই নিয়ে বিতর্ক অনেকদূর চলতে লাগল। বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী ও নাস্তিক ব্লগার পি জেড মায়ার্স তাঁর জনপ্রিয় ফ্যারিঙ্গুলা ব্লগে রেবেকাকে সমর্থন করে একটা লেখা দিলেন। অন্য অনেক ব্লগার নিজদের মতামত জানালেন। রেবেকা টুইটারে উত্তেজিত হয়ে বললেন, ‘যারা মহিলাদের অবজ্ঞা করে, তাদের চটিয়ে থাকলে আমি বেশ করেছি।’

************** শাখা – ২ **************


এই পরিস্থিতিতে নাস্তিক-মহাগুরু রিচার্ড ডকিন্স একটা অবাঞ্ছিত মন্তব্য করে বসলেন।

পি জেড মায়ার্সের লেখায় তিনি যা বললেন, তার সার কথা, ‘ধুর বাবা, ঘ্যানঘ্যান বন্ধ কর দিকি! নিজের বিরক্তিকে নারীবাদের মোড়ক পরিয়ে ভাও বাড়াসনে।’

তাঁর কথায়, ‘আফ্রিকায়, আরবদেশে, নারীরা খৎনা ইত্যাদি এত দুর্দশার মধ্যে রয়েছে, কিন্তু এই ‘চিক’ এমন ভাব করছে যেন কেবল তার নারীবাদী কষ্টেরই আর অন্ত নেই, যেখানে একজন পুরুষ তাকে ছোঁয়ওনি, স্রেফ একসাথে কফি খেতে চেয়েছে। নাস্তিকদের চামড়া মোটা হওয়া প্রয়োজন।’

অন্য ব্লগারদের সঙ্গে আমি একমত, যে এখানে ডকিন্স নিজে যে ধারণাকে সমালোচিত করতেন, সে ধারণারই ইঙ্গিত দিচ্ছেন – আফ্রিকার মহিলাদের বেশি সমস্যাগুলো দেখতে গিয়ে কি আধুনিক মহিলাদের অল্প সমস্যাগুলো ছেড়ে দিতে হবে? তিনি নিজেই বলেছিলেন – আফ্রিকার শিশুরা অনাহারে থাকে বলে কি আমেরিকার শিশুদের সৃষ্টিতত্ত্ব পড়ানো হচ্ছে, এই সমস্যা থেকে চোখ সরিয়ে নিতে হবে?

*******

তিনি ফিরতি এক মন্তব্যে বললেন, তাঁর বক্তব্য সেটা ছিল না, তিনি বলেছেন ‘প্রিভিলেজ’-এর কথা।
ওই লোকটা দুটো কথা বলেছে, একটা প্রস্তাব দিয়েছে, ব্যাস। সেটায় রেবেকা বিরক্ত হয়েছেন, হতেই পারেন, যেমন মায়ার্স খ্রীষ্টধর্মের সমালোচনা করলে পাদ্রীরা বিরক্ত হন। সবারই সেই সুযোগ বা ‘প্রিভিলেজ’ আছে।

কিন্তু লোকটা স্পর্শ বা ধর্ষণ এমন ‘কাজ’ কিছুই করেনি। যে কাজ – অত্যাচার – আফ্রিকার নারীদের প্রতি হয়ে থাকে, যা ধর্মগুলো মহিলাদের উপর করতে মদত দিয়ে থাকে। তাঁর তুলনা এটাই ছিল।

উদাহরণ দিলেন, তাঁর ‘প্রিভিলেজ’ আছে, তাঁর সাথে লিফটে কেউ চকাম চকাম করে চিকলেট চিবোতে চিবোতে উঠলে তাঁর বিরক্ত হওয়ার। কিন্তু সেই আচরণে তিনি যেমন প্রকাশ্যে শোরগোল তুলবেন না, যদি না লোকটা তাঁকে মারধোর করে, তেমনই এখানে রেবেকার শোরগোল তোলাও নিষ্প্রয়োজন।

*******

মায়ার্স পরের একটা পোস্টে ডকিন্সকে উদাহরণ দিলেন বহু ‘এলিভেটর রেপ’এর, এবং বললেন, অমন একটা বদ্ধ জায়গায় রেবেকা ওই আশঙ্কা বা ‘থ্রেট’ অনুভব করে থাকতেই পারেন।

ডকিন্স ফিরতি বললেন, ওই লোকের আচরণে যে এমন থ্রেটের ইঙ্গিত ছিল তা তো রেবেকা বলেন নি, স্রেফ কফির প্রস্তাব দিয়েছিল, বাকিটা উর্বর ফেমিনিস্ট মস্তিষ্কের কল্পনা। একটা নিরীহ ‘কথা’কে অতদূর টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না।

আর এলিভেটর, বন্ধ জায়গা, অস্বস্তিকর আবদ্ধ পরিবেশ? যেকোনো একটা তলায় লিফট থামিয়ে বেরিয়ে যেতে কয় সেকেন্ড লাগে? এটা তো একটা তালাবন্ধ ঘর নয়।

*******

এখানে যেটা বোঝা যাচ্ছে, যে আধুনিক পুরুষতান্ত্রিক সমাজেও যে মহিলাদের প্রতি অনেক আপত্তিকর আচরণ চলে, সেটা নিয়ে রেবেকার সাধারণ অনুরোধ, এই ব্যাপারটা ডকিন্স মিস করছেন। আরেকটু বিচক্ষণতা যেখানে তাঁর মত লোকের থেকে প্রত্যাশিত।

তাঁর যুক্তিটা ‘ডিডাকটিভ রিজনিং’এর, যে ওই লোক তো বলপ্রয়োগ দ্বারা খারাপ কাজের ইঙ্গিত কিছু দেয় নি, তাহলে কেন এত তাকে সমালোচনা?

আর রেবেকার বক্তব্য ‘ইনডাকটিভ রিজনিং’এর, যে আমরা বহুবার দেখেছি পুরুষদের আপত্তিকর যৌনপ্রস্তাব দিতে, অতএব ওই পরিপ্রেক্ষিতে কফির ইঙ্গিত থেকেও সেটা অনুমান করা যায়। যদি সে এমন নাও ভেবে থাকত, তাহলেও এই আচরণ বিরক্তিকর। এই লোককে যেমন বারণ করেছি, তেমন সাধারণভাবে নাস্তিক পুরুষদেরও অনুরোধ করছি, এই অভ্যাস কমাতে।

ডকিন্সের এই বক্তব্যগুলোর সমালোচনাই এখন অনেকের মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে উঠল। তাঁর নিন্দা করে, তাঁকে সমর্থন করে প্রচুর পোস্ট আসতে লাগল, রেবেকা-স্টেফ থেকে ঘুরে গেল লক্ষ্যটা। তাঁর সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের জন্যই।

*******

কিন্তু আবারও, রেবেকা এক ঘর এগিয়ে গেলেন।

তাঁর ব্লগে লিখলেন, ডাবলিনের বক্তৃতাতেই যখন তিনি তাঁর প্রতি আসা রেপ-থ্রেটের কথা তুলেছিলেন, তখন ডকিন্স তাঁর সাথেই প্যানেলে বসা ছিলেন। কিন্তু সেসব শোনার পরেও ডকিন্স এটা গলার জোরে মানতে অস্বীকার করছেন, যে ওই বিশেষ লোকটা রেপ-থ্রেট না হলেও এটা একটা সম্ভাব্য পরিস্থিতি। ডকিন্স তাঁর ‘ধনী শ্বেতাঙ্গ পুরুষ’, নাস্তিক-মহাগুরু-সেলিব্রিটি, এই ‘প্রিভিলেজড’ অবস্থান থেকে তাঁর মতো নারীবাদীদের দমিয়ে রাখতে চাইছেন। অতএব এই ইনসেন্সিটিভ জার্ক-কে তিনি বয়কট করছেন, ডকিন্সের বই কেনা বা বক্তৃতা শোনা এখন থেকে বন্ধ, এবং অনেকেই নাকি এমন করবার কথা ভাবছেন বলে তাঁকে জানিয়েছেন।

বাড়াবাড়ি, আমার ও অনেকের মতে। ডকিন্স তাঁর সেলিব্রিটি অবস্থান থেকে এই ইস্যুতে কথা বলার সময় আরেকটু সংবেদনশীল হতে পারতেন, মহিলাদের সাধারণ অস্বস্তিটা আরেকটু অনুধাবন করার চেষ্টা করতে পারতেন। বুড়ো বয়সে খুড়ো অতকিছু না ভেবে দুম করে বলে দিয়েছেন। কিন্তু তিনি এমন দুর্ব্যবহারও করেন নি যে তাঁকে বয়কট করা প্রয়োজন।

************** উপসংহার **************

খুড়োর জিন-মিম ইত্যাদি তত্ত্ব বা নাস্তিক্যবাদ নিয়েই মূলত আলোচনা হয়, তাঁর বিতর্কিত এই দিকটা তেমন কাউকে তুলে ধরতে দেখিনি। তাই কৌশিকদা'র থেকে সংবাদ পেয়ে মনে হল এই তর্কাতর্কি নিয়ে কিছু লেখা উচিত।

অনেকের মতে, ব্যাপারটা বিতর্ক থেকে বেরিয়ে ইগোর লড়াইতে পর্যবসিত হয়। নারী-সমস্যা-অনভিজ্ঞ থেকে জঙ্গী নারীবাদী, সব দলই সূচাগ্র্য মেদিনী না দিয়ে ঝগড়া, নিন্দা চালিয়ে যেতে থাকে। ইগো-সেন্ট্রিক, ক্যাচালপ্রিয় লোকেরা আরো ধোঁয়া দিতে থাকে।

তা এই পুরো হট্টগোল থেকে আমরা কী দেখলাম?

১. নাস্তিক মানেই তো কেউ ঋষিতুল্য নয়। লুলপুরুষ থেকে কাণ্ডজ্ঞানহীন, সবরকমই আছে। (তবে ‘নাস্তিকতার কারণে’ বা ‘নাস্তিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে’ অপকর্ম করতে তেমন কাউকে দেখা যায় না।)

২. ডকিন্সখুড়োর মত নাস্তিক-মহাগুরুও আসলে গুরু রূপে পূজিত হন না ওই সমাজে। তিনিও সাধারণ মানুষের মতনই বিতর্কে অংশ নেন, ব্লগ লেখেন, বেভুল কথা বলেন – এবং মূল কথা, অন্ধভাবে অনুসৃত হন না – সমালোচিত হন, নিন্দিত হন বহু লোকের দ্বারা। সচেতন নাস্তিকেরা কারো অন্ধ ভক্ত বা ভেড়ার পাল নন।

৩. নীরব নাস্তিক থেকে আরো মহিলাদের সক্রিয় নাস্তিকে পরিণত হয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। যেহেতু মহিলাদের সচেতন করতে তাঁরাই ভাল পারবেন, ‘এলিট হোয়াইট ম্যান’দের চেয়ে।

****************************

তা খুড়োপ্রেমী সরব-নাস্তিক সুর’বালিকার জন্মদিনে শুভেচ্ছা রইল। হাসি


মন্তব্য

সুরঞ্জনা এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভ ভাই, জন্মদিনের দিন ডকিন্স আর ফেমিনিজম দুই এরই ধুলো উড়িয়ে দিলেন দেখছি। হাসি

ফেমিনিজম নিয়ে আমার খুব পড়াশোনা নেই। এ ব্যাপারে আগ্রহ পাই নি বেশি। সিমোন দ্য বভোয়ার লেখা পড়েছি একটু, সে নিজে একজন রিমার্কেবল মানুষ বলে।

আমাদের দেশে এবং সারা পৃথিবীতেই মহিলারা সেকেন্ড ক্যাটাগরীর মানুষ হিসেবে বিবেচিত। কয়জন লোক আমাদের মাহবুব মুর্শেদের মতো মন নিয়ে চলাফেরা করে সেটা প্রায় হাতে গোনা যাবে সারা দেশের পুরুষের সংখ্যার তুলনায়। এখানে স্বাভাবিক কিছু করাই যুদ্ধের সামিল। সুতরাং এই সব ফেমিনিজম জাতীয় ব্যাপার আমার কাছে হাস্যকর ঠেকে।

সবাই শিক্ষিত হোক, মন উন্নত হোক, তখন না হয় ভেবে দেখব, পুরুষেরা কেন আমাদের প্রতি 'ভদ্রভাবে' কৌতুহল প্রকাশ করবেন, সেটা নিয়ে অভিমান করা যায় কি না। হাসি
তদ্দিন পর্যন্ত আমাদের পুরুষেরা এই 'ভদ্রভাবে কৌতুহল প্রকাশ' করাটাও যদি শিখতে পারে, তাহলে বর্তে যাবো। তাদের কৌতুহল প্রকাশের ঠেলায় মেয়েগুলা মরে বাঁচে এই দেশে। এখানে এইসব লাক্সারি শুনে বুঝতে পারি না।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

কৌস্তুভ এর ছবি

চলুক

'সবাই শিক্ষিত হোক' বলে আমাদের বসে থাকলে তো চলবে না, তাহলে সৃষ্টিতত্ত্ব জোকার্নায়েকতত্ত্ব এসব শিক্ষাও গেঁড়ে বসবে। আর মহিলাদের সচেতন করতে মহিলাদের প্রয়োজন, তারা নাকি তাদের সঙ্গেই বেশি সহজ বোধ করে। সক্রিয় লোকজন আরো বেশি বেশি দরকার।

দুর্দান্ত এর ছবি

ভেনচিত্রটা সুন্দার হয়াছে।

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

আমার্নাকিন্তু!

কালো কাক এর ছবি

ঘটনার সাথে নাস্তিকতার সম্পর্কটা ধরতে পারলাম না !

কৌস্তুভ এর ছবি

পুরো ঘটনাটাই তো ঘটেছে নাস্তিক কমিউনিটির মধ্যে।

নিটোল. এর ছবি

হুম... চিন্তিত

কৌস্তুভ এর ছবি

ওঁ মণিপদ্মে হুম... হুমকি...

কল্যাণF এর ছবি

কৌস্তভদা' আপনি লোক সুবিধার না, লেখা পড়ানোর লোভ দিয়া পোস্টে টাইনা আইনা মধ্যে মধ্যে কাইদা করে লিঙ্ক মিঙ্ক দিয়ে দিছেন যে সব পড়তে পড়তে হালুয়া টাইট। পোস্টে পেলাচ আর এই যে খাটায়া মারলেন তার জন্যে পেতিবাদ। জন্মদিনের শুভেচ্ছা লন উইথ (গুড়) চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে মিয়া, জন্মদিন কি আমার নাকি!

কল্যাণF এর ছবি

ইসসি... ইয়ে, মানে... রঙ সাইড হয়ে গেছে, সুরঞ্জনা হক কে শুভেচ্ছা...

রু (অতিথি) এর ছবি

সুরঞ্জনা হককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই।

কৌস্তুভ, লেখা নিয়ে পরে লিখছি।

অরফিয়াস এর ছবি

পুরো ঘটনাটাই তো ঘটেছে নাস্তিক কমিউনিটির মধ্যে।

নাস্তিক হলেই তাকে নারী বিষয়ক চিন্তা-চেতনায় সঠিক হতে হবে এটা কি চিন্তা করা উচিত?? ঈশ্বরে বিশ্বাস না করার সাথে নারীবাদের সরাসরি তো কোনো সম্পর্ক নেই, এটা বলা যায় যে, যদি যথেষ্ট মুক্তচিন্তা, ধ্যান-ধারণার ব্যক্তি নাস্তিক হয় তাহলে তার কাছ থেকে নারীদের সম্পর্কে সমান শ্রদ্ধা আশা করা যায় বৈকি| কিন্তু কথা হচ্ছে এমনও কিছু নাস্তিক থাকে যারা শুধু মাত্র নাস্তিকতাকে একটা ফ্যাশন হিসেবে গ্রহণ করে|

যখন ওই ব্যাক্তি রেবেকা কে তার রুমে যাওয়ার প্রস্তাব দিলো, সেই প্রস্তাবের দুই রকম অর্থ হতে পারে ঠিকই| হয়তো লোকটি শুধুমাত্র যৌন লালসা চরিতার্থ করার জন্যই ভালো কথার মোড়কে প্রস্তাবটা দিয়েছে| ভেবেছে রুমে নিয়ে কথা বলতে বলতে সহজ হয়ে আসল কথায় আসবে| কিন্তু তার উল্টোটা হতেও কিন্তু পারে, হয়তো শুধু মাত্র রেবেকাকে ভালো লাগে দেখেই কিছুক্ষণ তার সান্নিধ্যে থাকতে চেয়েছে, যেমন যদি ধরি ডকিন্স ভক্ত কোনো নারী যদি ডকিন্সকে তার রুমে যাওয়ার প্রস্তাব দেন, তাহলে সেটা শুধু সান্নিধ্য বলেই কি মনে হবেনা?? সেলিব্রেটি ভ্যালুর জন্যই হয়তো সেই ভক্ত সময় কাটাতে চাইছেন|

প্রচ্ছন্ন কোনো ইঙ্গিত না থাকলে লিফট এর কয়েক মুহুর্তের ওই ঘটনা দিয়ে কারো মুখ্য উদ্দেশ্য যাচাই করা ঠিক নয়, একই ভাবে যখন কোনো নারী-পুরুষই যৌন তাড়না থেকে মুক্ত নন, তাহলে একজন নাস্তিক বলেই তাকে বেশি সমালোচনা সহ্য করতে হবে কেন??

নারীবাদ নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই, নারীদের সমান অধিকার ও সম্মান করি সর্বত্র, এটা মানুষ হিসেবে তাদের জন্মগত অধিকার| সেটা দেওয়া না দেওয়ার কিছু নেই| কিন্তু কখনো কখনো নারীবাদের নামে কিছু কিছু ঘটনা কি সীমা অতিক্রম করেনা?? তখন কি মনে হয়না যে, নারীবাদের কথার আড়ালে বক্তা আসলে পুরুষ সমাজের প্রতি তার জন্মগত ক্ষোভ তুলে ধরছেন?? এখানে রেবেকা অজস্র বার আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু যেই ব্যাক্তিকে নিয়ে এত কিছু তার কোনো বক্তব্য যখন পাওয়া যাচ্ছেনা, তখন একপেশে হয়ে যায় ব্যাপারটা|

নারীদের প্রতি অন্যায় অবিচার প্রতিনিয়ত হচ্ছে, তাই হয়তো সাধারণ কথার মধ্যেও সন্দেহ খুঁজে পাই আমরা| কিন্তু সেটা যদি সঠিক না হয়, তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা শুধুই ব্যাক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়ে যাচ্ছে|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কৌস্তুভ এর ছবি

লম্বা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। একে একে আমার মতগুলো বলি:

১. না, "নাস্তিক হলেই তাকে নারী বিষয়ক চিন্তা-চেতনায় সঠিক হতে হবে" এমন কোনো কথা নেই। যা বললেন, "যদি যথেষ্ট মুক্তচিন্তা, ধ্যান-ধারণার ব্যক্তি নাস্তিক হয় তাহলে তার কাছ থেকে নারীদের সম্পর্কে সমান শ্রদ্ধা আশা করা যায় বৈকি", সেটাই কথা।

২. "এমনও কিছু নাস্তিক থাকে যারা শুধু মাত্র নাস্তিকতাকে একটা ফ্যাশন হিসেবে গ্রহণ করে|" হ্যাঁ, অবশ্যই। তবে এরকম সম্মেলনে এসেছেন, অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করছেন, এরকম ক্ষেত্রে কোনো লোক সচেতন নাস্তিক হওয়ার সম্ভাবনাই তো বেশি।

৩. "একজন নাস্তিক বলেই তাকে বেশি সমালোচনা সহ্য করতে হবে কেন??" এখানে ওই লোকটিকে আলাদা করে খুব বেশি সমালোচনা করা হয়েছে বলে মনে হয় না। তার যে ওই উদ্দেশ্য ১০০% ছিলই, সে দাবিও মূল পয়েন্ট না। তাকে একটা উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র, রেবেকা একটা সাধারণ অনুরোধ করেছেন।

৪. ওই লোকটি নাস্তিক বলে, বা নাস্তিক কমিউনিটির মধ্যে এই ঘটনাটা হয়েছে বলে, বেশি কথা হওয়ার কারণ, নাস্তিক কমিউনিটির এই শ্বেতাঙ্গ-পুরুষ-প্রধান অবস্থা থেকে বেরিয়ে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে অনেকে উৎসুক, এবং পথ খুঁজছেন। সেখানে এটা একটা উদাহরণ, যে এইরকম ব্যবহার হলে মহিলারা আসতে চাইবেন না এরকম সমাবেশে, তাঁরা নীরব নাস্তিক হিসাবেই রয়ে যাবেন।

৫. "কখনো কখনো নারীবাদের নামে কিছু কিছু ঘটনা কি সীমা অতিক্রম করেনা?? তখন কি মনে হয়না যে, নারীবাদের কথার আড়ালে বক্তা আসলে পুরুষ সমাজের প্রতি তার জন্মগত ক্ষোভ তুলে ধরছেন??" হ্যাঁ, এমন ঘটনাও হয়েছে তো বটেই। 'জঙ্গী নারীবাদ'এর উল্লেখ তো পোস্টে এসেইছে।

৬. রেবেকার কিছু সুদৃঢ় সমর্থক আছেন বটে, কিন্তু শেষমেষ তাঁর বাড়াবাড়ি ব্যবহারকে অনেকে তো আপনার মতই সমালোচনা করছেন। এই লেখারও তেমনই বক্তব্য।

৭. ব্যাপারটা কিছুটা ব্যক্তিগত ইগোর বহিঃপ্রকাশ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সে বিষয়েও লেখা আপনার সাথে সহমত।

৮. রেবেকা-সহমর্মীদের মূল দাবিটা এইরকম ছিল যে, যেখানে (সচেতন) নাস্তিকেরা সুচিন্তিত, ধীরস্থির বলে গণ্য হন, এবং যখন তাঁরা তাঁদের কমিউনিটিতে মহিলাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়াতে আগ্রহী, তখন তাঁদের বুঝতে হবে, মহিলাদের কাছে কেমন 'সেক্সিস্ট' ব্যবহার সংবেদনশীল, এবং তা থেকে বিশেষভাবে সাবধান থাকতে হবে।

তাপস শর্মা এর ছবি

কৌস্তভ যথারীতি একটি ভাববার মতো লেখা।

নাস্তিক মানেই তো যার নিজের উপর আস্থা নাই ??

কৌস্তুভ এর ছবি

নাস্তিক মানেই তো যার নিজের উপর আস্থা নাই ??

আঁয়? সত্যি জিগাইতেছ নাকি রসিকতা কর?

তাপস শর্মা এর ছবি

হ। তোমারে কইছে, রসিকতা রেগে টং রেগে টং হায় হায় একবার এক চ্রম ধর্ম পাগুল এক বন্ধুবরকে এই কথা জিজ্ঞাইতাম গিয়া কি ওঁয়া ওঁয়া যে নাকানি চুবানি খাইলাম হেইডার কতা মনে পইড়া গেচে রে ভাই ওঁয়া ওঁয়া

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

নাস্তিক [ nāstika ] বি. বিণ. 1 ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকারকারী, ঈশ্বরের অস্তিত্বে যে বিশ্বাস করে না, নিরীশ্বরবাদী; 2 বেদ বা শাস্ত্রে অবিশ্বাসী। [সং. নাস্তি + ক]।

 তাপস শর্মা (অফ লাইন)  এর ছবি

উঁহু। এটা নয়। আমার প্রশ্নের অবতারণা ছিল, আস্থা হীনতাকে ঘিরে, অর্থাৎ নাস্তিক, ন + আস্থা , অর্থাৎ, ন - মানে নিজস্ব অভিব্যক্তি, আর আস্থার কথা তো বললামই।

সজল এর ছবি

নাস্তিক = ন+অস্তি+ইক।
ন = নাই
অস্তি = অস্তিত্ব

এখানে দেখতে পারেন।

আর নাস্তিকের প্রচলিত অর্থ হলো যারা ঈশ্বর/দেবতা মানে না (a (no) + theist)। দুইটার কোনটাতেই কিন্তু আস্থার অভাব দেখলাম না। অস্তি আর আস্থাতে গুলিয়ে ফেলেছেন মনে হচ্ছে হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

 তাপস শর্মা (অফ লাইন)  এর ছবি

সজল বাবু এটা তো বুঝতেই পেরেছি। আমি অস্তি আর আস্থাকে গুলিয়ে ফেলিনি। সচেতন ভাবেই এই প্রশ্ন করা।
ছেলেবেলা থেকেই তো শুনে এসেছি যারা ঈশ্বর/দেবতা মানে না তারাই হল নাস্তিক।
আসলে এই ভাবনাটা বহুদিন ধরেই মাথায় ঘুরঘুরি দেয়- অস্তিত্বহীনতা এবং আস্থাহীনতায় খুববেশী তফাত আছে কি?
অস্তিত্ব কার- ঈশ্বরজাতীয় কোন সত্তার। আর তাই যদি হয় নাস্তিকতার ভেদবাচ্যটা কি? ভগবান গোত্রের কোন কিছুতে অস্বীকার করা। তার মর্ম কি হয় অস্তিত্বের সংকট অথবা আস্থাহীনতা।

আসলে নাস্তিক শব্দটাতেই আমার অভিযোগ আছে। এটা আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত যুক্তি এবং ধারণা। প্লিজ অন্যভাবে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ রইলো।
----------------------------------------------------------------------
চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির

পাঠক এর ছবি

যে যাই বলুক না কেন, রাত তিনটের সময় একজন মহিলাকে একাকী লিফটে পেয়ে বলা, আপনাকে আমার বেশ লাগে, চলুন হোটেলে আমার রুমে গিয়ে কফি পান করি আর যৌন প্রস্তাব দেবার ভেতর পার্থক্য কোথায়? এবং ঐ সময়ে একা লিফটে তা বারণ করাটাও ঝুঁকিপূর্ণ।

কৌস্তুভ এর ছবি

তফাত এইটাই, যে ওই লোক স্পষ্ট করে যৌনপ্রস্তাব বলে নাই। অতএব সবাই পরিপ্রেক্ষিত এবং তাদের নিজেদের প্রায়র অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান থেকে ওটা প্রচ্ছন্ন যৌনপ্রস্তাব হওয়ার প্রোবাবিলিটি ক্যালকুলেট করছে, নিজের নিজের মত। রেবেকার হিসাবে সেই প্রোবাবিলিটিটা খুব বেশি, স্টেফের হিসাবে কম।

হ্যাঁ, প্রত্যাখ্যান করলে ফিরতি অ্যাসল্টের সম্ভাবনা শূন্য নয়। তবে বড় এক হোটেলে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে যেখানে এলিভেটর থামিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়, সেখানে বড় কিছু ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম, এটাই ডকিন্সের বক্ত্যব্য।

তারেক অণু এর ছবি
কৌস্তুভ এর ছবি

কী ভাবেন, মিয়া? তখন কেন ডাবলিনে বেড়াতে যাননি, তাই ভাবছেন? খাইছে

কর্ণজয় এর ছবি

পড়লাম... জানলাম... ভাবলাম... চিন্তা করছি...

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

তাসকিনুর এর ছবি

একজন নাস্তিক, যদি সে সত্যিই নাস্তিক হয়, -এর কাছে কোন ঈশ্বর, দেবতা নেই । সবাই মানুষ । সবার মধ্যেই খারাপ কিছু থাকতে পারে । সেটা ডকিন্সের জন্যেও প্রযোজ্য । ডকিন্স, বা অন্য কেউ, বলেছেন বা করেছেন - তাই অবশ্যই ইহা ঠিক এই কথা মনে করলে তার সাথে ঈশ্বর, দেবতা ভক্তির বিশেষ কোন পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না ।

কৌস্তুভ এর ছবি

বিলকুল হাসি

দ্রোহী এর ছবি

১.
"রাগীমন সিন্ড্রোম" নামে একটা রোগ আছে। বোঝাই যাচ্ছে উল্লিখিত নাস্তিক কমিউনিটির লোকজন এই সিন্ড্রোমের কথা এখনো জানে না!

২.
পোস্টের স্ট্রাকচার সুন্দর হয়েছে। লিংকে ক্লিক না করেও পুরো ঘটনাটা বুঝতে পারবে যে কেউ।

৩.
রেবেকা - ডকিন্স সম্পর্কে অনেক দুষ্টু দুষ্টু জিনিস দেখেছি রেডিটে।

৪.
সুরঞ্জনাকে আবারো জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

কৌস্তুভ এর ছবি

আম্মো জানি না, ব্যাখ্যা করেন।

থ্যাঙ্কু হাসি

সেসব চুপিচুপি এদিকে লিঙ্ক পাঠান... চোখ টিপি

ফাহিম হাসান এর ছবি

পোস্টের স্ট্রাকচার সুন্দর হয়েছে। লিংকে ক্লিক না করেও পুরো ঘটনাটা বুঝতে পারবে যে কেউ।

হ। পোলাটা যত্ন করে পোস্ট সাজায়। চোখ বুলালেই পড়া হয়ে যায়।

বন্দনা কবীর এর ছবি

লোক্টা তবুও মার্জিত ভাষায় ঐরকম প্রস্তাব দিয়েছে। এদেশে এভাবেও যদি কেউ বলতে শিখতো তো কিছুটা হলেও সম্মান হত এ দেশীয় নারীদের।

নাস্তিকতা বা নারীবাদ এর সঠিক অর্থ কিছুতেই বুঝে উঠতে পারিনা তাই এ নিয়ে কিছুই বলার নেই।

সুরঞ্জনা'দিকে অভিন্দন আরো একটু অভিজ্ঞ হওয়ার জন্য...হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

হুম...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পোস্টটা খুঁটিয়ে পড়লাম। যতই নাস্তিক কমিউনিটির মাঝে ঘটুক, আমার কাছে এই বিতর্ক কিন্তু মানুষের অন্যান্য গোষ্ঠীগত আচরণের মতই লাগলো। ...

আর সুরা'পাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, আবারও। [কী প্লাম জীবনে, এখনো আমায় শুভেচ্ছা জানিয়ে কোন সহসচলা পোস্ট মার্লেন না... (দীর্ঘশ্বাস)]

কৌস্তুভ এর ছবি

অবশ্যই। শুরুটা তো ওভাবে ওইজন্যই লেখা, এটা দেখাতে যে ওই ঘটনাটা কোনো নাস্তিক সম্মেলনের, অথবা ওই দুজন যে নাস্তিক, এসব তথ্য এক হিসাবে বাড়তি, সেটা ছাড়াও ঘটনাটা অভাবনীয় নয়।

কেন, আপনার বান্ধবীকে সচলে লিখতে উশকে দেন, তাহলেই... চোখ টিপি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখাটা ভাল্লাগছে। খানিকটা সংবাদ পড়ে শোনানোর মত দেঁতো হাসি তয় কেবল নিজের মন্তব্যও জুড়ে দিয়েছন সঙ্গে।

সুরঞ্জনার কথা আর কী বলব, এই ছেমড়ি ডকিন্সের একনিষ্ঠ প্রেমিকা হওয়ায় বুড়ো মরার আগে আমি একটু জুতমতো লুলও ফেলতে পারতেছিনা! বুড়ো মরার আগে ব্যপারটা পুরোই উলুবনে লুল ছড়ানোর মতো হবে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

সে যদি ডকিন্স এখন শত্রুমুখে ছাই দিয়ে অনেকদিন বেঁচে থাকেন, আপনি রুখাশুখা থাকবেন কেন? আগে তো শোনা যায় রেবেকা ব্ল্যাক-কে লুল দিতেন, এখন নাহয় রেবেকা ওয়াটসনকেই দেন... খাইছে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই বিতর্কের কোন মীমাংসা নেই। ১০০১টা যুক্তি আছে দুই দিকেই। সেদিকে না গিয়ে সুরঞ্জনাদিকে কেক কুক সহকারে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলাম হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কৌস্তুভ এর ছবি

হেহে দেঁতো হাসি

মীমাংসা হচ্ছে (এস্পেশালি ফর অ.স.দা) কোনো একজন বালিকাকে পছন্দ করে নিয়ে তার পক্ষে ঝুঁকে পড়া খাইছে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মানুষ হিসেবে একজন নাস্তিক বা আস্তিকের মধ্যে যে অনেক বেশী পার্থক্য থাকবে তা আমি মনে করি না। আমাদের সমাজ, বাবা-মা পরিপার্শ্ব আমাদের আস্তিক বানায়। আবার একইভাবে আরওকিছু পরিপার্শ্ব, কিছু চিন্তা-ভাবনা, কিছু আলোচনা আমাদের নাস্তিক বানায়। নাস্তিক তো কোন সমাজ বিচ্ছিন্ন মানুষ নয়, ঠিক যেমন আস্তিকও নয়। আমাদের আচরণে নারীদের প্রতি যে সেক্সিস্ট আচরণ সেটা আমাদের অনেকটাই সমাজ থেকে পাওয়া। নাস্তিকের মধ্যেও তা যেমন থাকবে আস্তিকের মধ্যেও থাকবে, মানে থাকতে পারে।

এই আলোচনা থেকে কিছু মানুষের স্টেরিওটাইপিং এর ফ্লেভার কি পাওয়া যায়?
১। অতি আস্তিকের কাছে যেমন নাস্তিক মানেই পাপে ভর্তি, নৈতিকতাহীন কোন একজন, আর বিশ্বাসী মাত্রই অবিশ্বাসী অপেক্ষা শ্রেয়
২। তেমনি নাস্তিকরাও এরকম স্টেরিওটাইপে চলে যাচ্ছে কি? যে একজন নাস্তিক পুরুষের এতটুকু নৈতিকতা থাকা উচিৎ যেন সে হুটহাট করে যে কাউকে কুপ্রস্তাব দেওয়াটা অস্বাভাবিক? রেবেকা বলছে 'ওই গোষ্ঠীর' লোকেরা যেন এমন না করে - এধরণের স্টেরিওটাইপিং কি এরকম বোঝায় যে, একজন আস্তিক এরকম আচরণ করলে সে খুব অবাক হত না?

আমার পয়েন্টটা হল, 'তার এই অভিযোগটা সে সমস্ত পুরুষজাতিকেই করতে পারত তা না করে সে শুধু একটা গোষ্ঠীর পুরুষকে উদ্দেশ্য করে কেন করল?' এটা যদি রেবেকার পার্সোনাল মতামত হয় তাহলে কোন কথা থাকেনা, কিন্তু আমার জানার ইচ্ছা নাস্তিকরা কি এরকম স্টেরিওটাইপ করেন কিনা যে, আস্তিক মানেই মানুষ হিসাবে খুব একটা জাতের না।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোনটাই না, মাঝামাঝি ঝুলে আছি চিন্তিত

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কৌস্তুভ এর ছবি

রেবেকা কিন্তু 'শোনো হে নাস্তিক পুরুষগণ, তোমরা এমন কোরোনা' টাইপের কিছু বলেনি, দেখবেন। সে বলেছে, 'শোনো সচেতন পুরুষেরা, ...'। তবে তার ভিডিও বা বক্তৃতা দুটোরই শ্রোতৃবৃন্দ মূলত নাস্তিকেরা হয়ে থাকে যেহেতু, তাই তার ওই কথাটাও মূলত ওই কমিউনিটির উদ্দেশ্যেই।

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

এলিভেটরের শীতল ধাতব দরজাটা খুলে যায় অপেক্ষমান তরুণীর জন্য।"""" দাদা এই লাইন টুকুন পড়েই ছোট বেলার মাসুদরানা কিংবা সেবার গোয়েন্দা বই গুলোর কথা মনে এসে গেলো।
যদিও এগুতে এগুতে সেই বইয়ের কথা পালিয়ে এই তর্কার তর্কির মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম।

বেশ! বেশ! বেশ.......

কৌস্তুভ এর ছবি

এমন প্রশংসা পেয়ে ভারি ভাল লাগল, ধন্যবাদ আপনাকে দেঁতো হাসি

আমার অবশ্য মাসুদরানা পড়া হয়নি... হাসি

শাব্দিক এর ছবি

চিন্তিত নাস্তিকতার সাথে নারীবাদের সমতা বা বৈষম্য কোনওটা স্পষ্ট কি?
আমার তো মনে হয় দুটি একেবারে ভিন্ন ব্যাপার, আর অন্য কোন ধর্মের মত নাস্তিকতা কি কোন সুস্পষ্ট নিয়ম মেনে চলে যে ধর্ম ছাড়া অন্য সামাজিক বিষয় গুলো কি মনোভাব পোষণ করতে হবে?

সুরঞ্জনা কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা (কেক বা ফুলের তোড়ার কনো ইমো পেলাম না মন খারাপ )

কৌস্তুভ এর ছবি

না, নাস্তিকতা আর নারীবাদ পরষ্পর সম্পর্কিত নয়। এই বিশেষ ক্ষেত্রে সম্পর্কটা এই যে, এই নারীবাদী বিতর্কটা নাস্তিক কমিউনিটির মধ্যে উঠেছে। আর মনোভাবের বিষয়ে অরফিয়াসের ব্যাখাটা ভালো, "যদি যথেষ্ট মুক্তচিন্তা, ধ্যান-ধারণার ব্যক্তি নাস্তিক হয় তাহলে তার কাছ থেকে নারীদের সম্পর্কে সমান শ্রদ্ধা আশা করা যায় বৈকি"।

কাজি মামুন এর ছবি

কৌস্তভ-দা,
অসাধারণ। নারীবাদ (যা নারীদের পণ্য মনে করার পুরুষীয় ধ্যান-ধারনার বিরোধী) আর পুরুষের নিরীহ(স্বাভাবিক) যৌনাকাঙ্ক্ষার এই বিতর্ক খুব উপভোগ করেছি। তবে সবশেষে, আমি কোন পক্ষকেই বিজয়ী করতে পারিনি। মনে হয়েছে, এটা একটা চিরন্তন বিতর্ক। তবে প্রথমদিকে আপনার অনুবাদ কিছুটা খটমটে ছিল। তারপরও আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ আর সঙ্গে (F) ।

কৌস্তুভ এর ছবি

অনুবাদ কোথায় ভাই?

সজল এর ছবি

নাস্তিকেরা যে লোক খারাপ, সেতো সবারই জানা

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

হ্যাঁ, এই যেমন আপনি। তবে তারা মাঝে মাঝে দলের অন্যদের রোজমেরিসুবাসিতবীফ খাইয়ে থাকে...

সজল এর ছবি

এইভাবে পাবলিকলি আমারে নাস্তিক বললে আমার আর বিয়ে হবে? আমি এমনিতেই ভালো হওয়ার চেষ্টায় আছি!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে ডরান কাঁহে মিয়া? এই পোস্ট যাদের মারপিট নিয়ে তারা নাস্তিকা, যার জন্মদিন সে নাস্তিকা... নাস্তিকা তো কতই আছে দুনিয়ায়!

শাব্দিক এর ছবি

হো হো হো

guesr_writer rajkonya এর ছবি

আমি রেবেকার পক্ষে।

কৌস্তুভ এর ছবি

হুম, সেটা অকল্পনীয় না। তবে 'পক্ষে' কথাটা এখানে অষ্পষ্ট হতে পারে, কারণ আমি সহ অনেকে রেবেকার প্রাথমিক বক্তব্যের পক্ষে হলেও পরবর্তী কাজের বিপক্ষে। তা আপনার যুক্তিটা একটু খুলে বললে ভালো হত।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

আমি রেবেকার সব কথার সাথেই একমত। স্টেফ, পলা এবং আরো যাদের কথা এখানে তুলে ধরেছেন, তাদের সাথে একমত নই।

উচ্ছলা এর ছবি

অনেক কিছু জানলাম আপনার লেখাটি পড়ে।
ধন্যবাদ লেখায় প্রয়োজনীয় লিঙ্কগুলো দেবার জন্য হাসি চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

কেউ এত লিঙ্ক দিলে ধমক দেয়, কেউ ধন্যবাদ দেয়... আমি কোথায় যাই? চিন্তিত খাইছে

ফাহিম হাসান এর ছবি

পোস্টটা সাজাইয়ছেন সুন্দর। বেশ ধাপে ধাপে পড়া হল, জানা হল ঘটনাটা। তবে শিরোনামটা বাংলা হলে ভাল লাগত।

মানুষের চরিত্র তার ধর্ম বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে না। কিন্তু বাই ডিফল্ট ধার্মিক মানুষকে সচ্চরিত্রবান (!) এবং নাস্তিককে অসৎ ভাবা হয় - এরকম সরলীকরণ ভুল, বি-রা-ট ভুল।

আর ডকিন্সের যুক্তি/প্রতিক্রিয়া শুনে কিছুটা হতাশ। তার মত তার্কিক বিষয়টাকে প্রায়োরেটাইজ করতে গিয়ে ফালতু একটা যুক্তি দিল। যেহেতু আমি মহিলা নই, তাই সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারি না - কিন্তু অনুমান করতে পারি যে মহিলারা ক্রমাগত এ ধরনের প্রস্তাব পেতে পেতে বিরক্ত হতেই পারেন। সেই বিরক্তি প্রকাশের অধিকার আলবত আছে।

----

শুভ জন্মদিন হে সরব নাস্তিক!

কৌস্তুভ এর ছবি

দুশো ভাগ সহমত, কিন্তু ভালো বাংলা মাথায় এলো না যে। (এত ক্রোনোলজিতে জ্যাম হয়ে গিয়েছিল মনে হয়) মন খারাপ
উপরে একজন মাসুদরানার কথা তোলায় এখন মনে হচ্ছে, অগ্নিপুরুষের আদলে উল্কাস্বরূপা কেমন হয়? খাইছে
(এইটা একেবারেই সম্পর্কবিহীন তথ্য বলে লেখায় দিইনি, কিন্তু ওই নারীসচেতনতাকর্মী স্কেপচিকের নামে একখানা ধূমকেতুর নাম আছে। যেমন আছে পি জেড মায়ার্সের নামেও।)।

স্পর্শ এর ছবি

ভাগ্যিস কোনোদিন কোনো বালিকাকে কফি খাওয়ার দাওয়াত দেইনি!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

সাফি এর ছবি

নাস্তিকরাও মানুষ।

শুভ জন্মদিন সুরঞ্জনা।

কৌস্তুভ এর ছবি

যারা ভাবনাচিন্তা করতে পারেনা, যেমন গাছপালা অ্যামিবা পাথর, তাদের মনেও তো ঈশ্বরচিন্তা আসতে পারবেনা, তাহলে তারাও কি নাস্তিক? খাইছে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাজার হাজার লিঙ্ক দেখে ডরে এই লেখা এতদিন পড়ি নাই... এখন পড়লাম... ভালো লাগলো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কৌস্তুভ এর ছবি

হেঁহেঁ থ্যাঙ্কু হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।