একদিন টিনটিন

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: সোম, ০৬/০৫/২০১৩ - ৬:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যদিও পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে “এতদিন কোথায় ছিলেন?” প্রশ্ন করার মত কোনো অনুরক্ত পাঠিকা আমার জন্যে বসে নেই, তবুও কৈফিয়ত দিয়ে রাখা ভাল যে কিছুদিন আমি নেদারল্যান্ডস-বেলজিয়াম ভ্রমণে লাপাত্তা ছিলাম। মানে যেধরনের ভ্রমণে চিত্তের স্ফুর্তি ও উদরের স্ফীতি হয়ে থাকে এক্কেবারে সেরকম ভ্রমণ। বলাবাহুল্য কনফারেন্সের ছুতোয়।

তো আমস্টারডামের লোহিতপ্রদীপপল্লী দেখলাম কিনা, ডাচ চীজ আর বেলজিয়ান ওয়াফল চাখলাম কিনা, সেসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পোস্ট এটা না – এটা অনেকদিনের স্বপ্ন টিনটিন মিউজিয়াম দেখে এসে গর্বিত-গোরিলা-সম বুক চাপড়ানোর পোস্ট।


(ব্রাসেলসের অ্যাটমিয়াম)

আমস্টারডামের কনফারেন্সের কাগজপত্র পাকা হয়ে যাওয়া মাত্রই ঠিক করলাম, ব্রাসেলসে একটা ডে’ট্রিপ করতে হবে। কারো অজানা থাকলে বলে নেওয়া ভাল, হার্জ বেলজিয়ামের লোক বলে টিনটিনও আসলে বেলজিয়ান, যেটা সোভিয়েতে টিনটিনের শেষে এবং কঙ্গোয় টিনটিনে ভালমতনই বলে দেওয়া রয়েছে। ক্যাপ্টেনের বাড়ি মানে মার্লিনস্পাইক হল জায়গাটাও বেলজিয়ামেই। কিন্তু বাংলাতে টিনটিন যেহেতু ইংরিজি সিরিজটা থেকে অনুবাদ করা হয়েছে, তাই সেখানে একটা গড়বড় রয়েছে – মার্লিনস্পাইক হলকে সেখানে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছোটবেলায় তাই কৃষ্ণদ্বীপ পড়তে গিয়ে কনফিউশন হত, কারণ ইংল্যান্ড থেকে ডোভার যেতে তো ইংলিশ চ্যানেল পার হবার কথা নয়!

ব্রাসেলস শহরে Belgian Comic Strip Center নামে একটা মিউজিয়াম আছে, কিন্তু সেটা নাকি ঢপের, এক দাদা ঘুরে এসে বললে। আমি আবার বড়দের কথা খুব মান্যি করে চলি, তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবার চেষ্টাও না করে সটান গরুর খোঁজেই যাব বলে ঠিক করলাম – টিনটিন মিউজিয়ামটা আবার শহর থেকে খানিক দূরে লুভ্যাঁ-লা-ন্যুভ বলে একটা ছোট্ট টাউনে।


(কমিক স্ট্রিপ মিউজিয়ামের সামনের মূর্তি)

তা প্ল্যান করলাম, যে আমস্টারডাম থেকে ভোরভোর বাস ধরে (ঘন্টাতিনেকের) সকালে ব্রাসেলস পৌঁছে যাব, আর প্রথমে টিনটিন মিউজিয়ামটা দেখে নেব; তারপর শহরে ফিরে শহরটা মোটামুটি ঘুরে দেখা যাবে। সেখানে আমার কোনো মিউজিয়াম ইত্যাদি দেখার প্ল্যান নেই, তাই শহরের দ্রষ্টব্যগুলো হেঁটে ঘুরে দেখার মত যথেষ্ট সময় থাকবে – ইউরোপে সামারে নটার আগে সুয্যি ডোবে না। এমনিতে ব্রাসেলস শহরেও রাস্তাঘাটে অনেক কমিক্স-বিষয়ক ম্যুরাল দেখতে পাওয়া যায়, টিনটিন নিয়েও অনেকগুলো। এই যেমন পুরোনো শহরের মূল চত্ত্বর গ্রেট মার্কেট (Grote Markt) থেকে হিসু-রত-শিশু (Manneken Pis) এর দিকে যেতে গেলেই চোখে পড়ে ক্যালকুলাসের কাণ্ড’র ৫০ পৃষ্ঠা থেকে আঁকা এই ছবিটা:

ব্রাসেলস পৌঁছে আগে আগে ঘাসবাজার মোড়ে (Grasmarkt) গেলাম, সেখানে Brussels City Tours বলে একটা এজেন্সির অফিস থাকার কথা, তাদের মঙ্গল-বিষ্যুত-শনি ট্যুর থাকে, বাসে করে টিনটিন মিউজিয়াম নিয়ে যায় আবার নির্দিষ্ট সময় পর ফেরত নিয়ে আসে। মিউজিয়ামটা বেশ খানিকটা দূরে কিনা, যেতেই আধা ঘন্টার উপরে লাগে। কিন্তু ওই আমড়াতলার মোড়ে গিয়ে অনেক খুঁজেটুজেও কিচ্ছু পেলাম না। তখন বুভুক্ষু হয়ে পড়ে একটা ভাল দেখতে ওয়াফল’এর দোকানে ঢুকলাম। সেখানে গরম ডার্ক’চকলেটমাখা ওয়াফল খেয়েটেয়ে ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম, এটা তো আশপাশেই কোথাও থাকার কথা, জানেন নাকি? সে মাথাটাথা চুলকে, কলকাতা-ডায়মণ্ডহারবার-রানাঘাট-তিব্বত সোজা রাস্তা দেখিয়ে দিলে। আমি সেখানে গিয়ে দেখি ওইটা থমাস কুকের ট্র্যাভেল এজেন্সির অফিস, আসল বস্তু নাই। ওদিকে গুগল ম্যাপসও ঠিকমত দেখাতে পারছে না, ‘লোকেশন অ্যাপ্রক্সিমেট’ বলছে। যাহোক, খুঁজেপেতে একটা বাড়ির বাঁকে দোকানটাকে পেলাম।

কিন্তু তারাও কাঁচকলা দেখালে। আমি নাকি সারাদিনে তাদের প্রথম কাস্টমার, কোনো যাত্রী না পেয়ে তারা দুপুর বারোটাতেই ট্রিপ ক্যানসেল করে দিয়েছে। তখন জেনে নিলাম ট্রেনে করে কীভাবে যেতে হয়। স্টেশনে গিয়ে রিটার্ন টিকিট কেটে নিলাম; দেখলাম দুভাবে যাওয়া যায় – দ্রুতগামী ইন্টারসিটি ট্রেনে করে Ottignies‎ বলে একটা স্টেশনে গিয়ে ট্রেন বদলে ওখানে যাওয়া যায়, নয়ত সোজা Louvain-la-Neuve-Université‎-র ট্রেনও আছে; আমাকে টিকিটমাস্টার সেইটা ধরতে বলে দিল, আমিও নতুন শহরে বেশি ফ্যাচাং না করে তাই করলাম। ওব্বাবা, চেপে দেখি সেইটা একটা লোকাল তস্য লোকাল ট্রেন, যেসব গণ্ডগ্রামের স্টেশনে শঙ্কর আফ্রিকায় লাইন পাতার তদারকি করত সেইরকমের প্রতিটা স্টেশনেও থামতে থামতে যায়। ঘন্টা পার করে দিল পৌঁছতে। গিয়ে দেখি ছোট্ট একটা ইউনিভার্সিটি-টাউনের ছোট্ট একটা স্টেশন, স্টেশন থেকেই মিউজিয়ামের পথনির্দেশ দেওয়া।

স্টেশনের বাইরেই টাউন সেন্টার, সেখানে দুপুরের বাজার বসেছে, সুরন্ধিত escargot মানে শামুক খেয়ে পেটটাকে চাঙ্গা করে নিলাম। তারপর পার্কে ঢুকতেই দেখি উল্টোদিকে স্পেসশিপের মত অদ্ভুত ডিজাইনের মিউজিয়ামটা। আর পাক খেয়ে সামনে এসেই পেলাম বহু ছবিতে যা কেবল দেখতুম আর হুতাশ করতুম সেই মূল এনট্রান্স’টা।


ওইরকম জোশ নিয়ে ঢুকে পড়লাম মিউজিয়ামে। ঢুকতেই এই ছবিটা, টিনটিন (আশ্চর্য উল্কা’য়) যেমন খোঁজখবর নিচ্ছে তেমনই আমিও খবর নিলাম কাউন্টারে।


টিকিট কেটে তিনতলায় উঠে যাও, তারপর দেখতে দেখতে নামো। লকারে ব্যাগপত্র রেখে দিতে পারো। কোন ভাষা চাই জেনে নিয়ে একটা অডিও গাইডও ধরিয়ে দিল। আরো বললে, এখন একটা অস্থায়ী এক্সিবিশন হচ্ছে তিব্বতের উপর, ওইটাও টিকিটে ইনক্লুডেড, মিউজিয়াম দেখা শেষ হলে নেমে এসে ওইটাও দেখে নিও।

কিন্তু যাচ্চলে, শুনি মিউজিয়ামে ছবি তোলা নিষেধ! লবি’টার ছবি নেওয়া যাবে, কিন্তু ভেতরে কোনো প্রদর্শনীর ছবি নেওয়া যাবে না। আমি আবার ভালো ছেলে, আইন অমান্য করিনে। তা গেলুম তিনতলায়, শুরু হয় হার্জের জীবনের গল্পসল্প ছবিটবি দেখিয়ে। আফটার অল, জিনিসটা হল হার্জ মিউজিয়াম, স্রেফ টিনটিন মিউজিয়াম না তো। হার্জ নাকি ছোটবেলায় বেশ বিচ্ছু ছেলে ছিলেন, কিন্তু তাঁর বাবা দেখেন যে ছেলেকে কাগজ-পেন্সিল দিয়ে ছবি আঁকতে বসিয়ে দিলেই সে চুপচাপ কাউকে জ্বালাতন না করে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে পারে। সেই সময়ের আঁকা কিছু পেন্সিল স্কেচও আছে ওখানে, নিজেদের বাড়িঘর, আত্মীয়স্বজন, পোষা বেড়াল ইত্যাদির। হার্জের বরাবরই বেড়াল বেশ পছন্দের প্রাণী ছিল, পুষতেনও। তা বেড়ালের বদলে একটা কুকুরকে কেন টিনটিনের সঙ্গী করে দিলেন, জিজ্ঞেস করায় হার্জ বলেন, ভেবেই দেখুন না, ওইসব কাজকর্ম কি একটা বেড়াল করলে মানাত?

হার্জ স্কুলজীবনে ছিলেন বয়স্কাউটের সদস্য, ছটফটে স্বভাবের জন্য ‘ছোট্ট শেয়াল’ নাম ছিল তাঁর। প্রথম যে কমিক স্ট্রিপটা হার্জ আঁকতে শুরু করেন, Totor, সেই ছোকরাও ছিল এক বয়স্কাউট। এবং তার চেহারা আর স্বভাবচরিত্র প্রায় পুরোটাই হার্জ নিয়ে আসেন প্রথম টিনটিনের বই সোভিয়েতেও। পরে অবশ্য টিনটিনের স্বভাবে অনেক পরিবর্তন হয়। প্রথমদিকে হার্জের মূল পেশা ছিল ইলাস্ট্রেশন, অনেকটা আমাদের সত্যজিতের মতই। তো ওনার সেই সময়ে করা নানারকম বিজ্ঞাপন বা বইয়ের ইলাস্ট্রেশন, তোতোর ইত্যাদি প্রাথমিক কমিকস, এসব সাজানো রয়েছে আরেকটা ঘরে। আর গোটা মিউজিয়ামেই নানা জায়গায় টিনটিনের পাশাপাশি হার্জের অন্য সিরিজ, জো-জেট-জোকোর অ্যাডভেঞ্চারের সম্বন্ধেও অনেক কিছু আছে। হার্জ যেসব ফরাসী আর্টিস্টের আঁকার ধরন থেকে ছোটোবেলায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন সেসব কিছু নমুনাও আছে, ‘ক্লিন লাইন ড্রয়িং’ না কী যেন নাম সেই ঘরানার।

একটা ঝাড়লণ্ঠনের নিচের ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসতে হয় নিচের তলায়, যেটার গায়ে দুশো আঠাশখানা সাদা-কালো ছবি সাঁটা রয়েছে – টিনটিনের সবকটা বই মিলিয়ে মোট চরিত্রের। সেই ফ্লোরে প্রথম ঘরটায় যেসব দেশে বা সভ্যতায় টিনটিন অভিযান করেছে, সে বিষয়ে হার্জের সংগৃহীত জিনিসপত্র রাখা। যেমন চীনের আলমারিতে চীনা স্ক্রোল, আবার তাও ধর্মের উদ্ধৃতি, চীনা ছবি, ইত্যাদি। এরকমই ভারতীয়, ইনকা, পূর্ব ইউরোপীয় একেকটা আলমারি। আলমারিগুলোতে আবার টিনটিনের গল্প থেকে একটা করে জিনিসও রাখা, যেমন ইনকাদের আলমারিতে একটা কানভাঙা মূর্তি, পূর্ব ইউরোপের আলমারিতে ওটোকারের রাজদণ্ড। ওই বহুশ্রুত গল্পটা, যে চ্যাং-এর সঙ্গে পরিচয়ের পরেই হার্জের কাজে অনেক রিয়ালিজম আসে, এবং নীলকমল’এ সাংহাইয়ের রাস্তাঘাটে ঝুলন্ত ব্যানারের হরফটরফ সব চ্যাংয়েরই আঁকা, এটাও বলা আছে; হার্জের সঙ্গে চ্যাংএর ছবিও আছে; এবং যেসব ছবি থেকে হার্জ চীনের পথঘাট প্রায় নিখুঁত কপি মেরেছিলেন তাঁর আঁকায়, সেসব ছবিগুলোও দেওয়া। হার্জ দেশবিদেশের ছবির বিশাল কালেকশন রাখতেন; তেমনই এক কালেকশন থেকে টুকতে গিয়েই যে কলার কাঁদি উল্টো করে এঁকে ফেলেছিলেন সেটা তো আগেই বলেছি
একটা যন্তর বেশ ইন্টারেস্টিং লাগল, বেশ কিছু প্রাচীন আমলের সাদা-কালো থ্রিডি ছবি আছে দিল্লি, তিব্বত, চীনের উপর, মানে পাশাপাশি একটু দূর থেকে তোলা দুটো ছবি, দুচোখো অণুবীক্ষণের মত একটা যন্ত্রে চোখ লাগিয়ে একসাথে দেখলে থ্রিডি বলে মনে হয়।


(এই ঘরটা টিনটিনের সব গল্পের দেশিবিদেশি ভাষার বইদিয়ে সাজানো, আফসোস বাংলা চোখে পড়ল না)

আরেকটা ঘরে টিনটিনের বিবর্তনের গল্প, প্রথমে যে সাদা-কালো ভার্শনে ছাপা হত কমিক্সগুলো সেসবের কিছু পাতা, তারপর প্রথম যে বইটা রঙিনে ছাপা হল তার মলাট, এরপর পুরোনো বইগুলো যে আবার রঙিন করে আঁকা এবং ছাপা হলে লাগল সেসবের পাতাটাতা। ফারাওয়ের চুরুট যেমন দুটো রঙিন ভার্শন হয়েছিল। এবং ততদিনে হার্জ নিজের স্টুডিও খুলে বসেছেন, তাতে বেশ কিছু প্রতিভাবান আর্টিস্ট যোগ দিয়েছেন, যেমন এডগার পি জ্যাকবস; এই যেমন সূর্যদেবের বন্দির মলাটে শুধু টিনটিন-ক্যাপ্টেনের চেহারাগুলোই হার্জের আঁকা, ওই মন্দিরের গ্র্যান্ড পরিবেশটা জ্যাকবস এঁকেছিলেন। পাশের একটা ঘরে স্টুডিও হার্জ’এর কিছু বড় বড় ছবি, সাজানো টেবিল-ডেস্ক দিয়ে পরিবেশটা রিক্রিয়েট করার চেষ্টা করেছে, সাথে অন্য শিল্পীদের গল্প।

তার নিচের তলায় একটা ঘরে বড় বড় অনেকগুলো কাচের টেবিল, আর একেকটায় টিনটিনের একেকটা প্রধান চরিত্র, ক্যাপ্টেন থেকে জয়লন ওয়াগ, এদের নিয়ে লেখা+ছবি। কুট্টুসের টেবিলে একটা মস্ত হাড়, ক্যাপ্টেনের টেবিলে নাবিকের টুপি, ক্যাপ্টেনের চরিত্রটা যে ফরাসী কমিক সিরিজের খ্যাপাটে রিটায়ার্ড নাবিকের থেকে প্রভাবিত তার উল্লেখ (এই কমিক্সের ছোট্ট একটা অ্যানিমেশন এ সময় অডিও গাইডের স্ক্রিনে দেখা যায়), ক্যালকুলাসের চরিত্রটা যে পাগলা বৈজ্ঞানিক থেকে অনুপ্রাণিত সেটার বিষয়ে লেখাটেখা, কাস্তাফিওর চরিত্রের মূল যে ইতালীয় অপেরা-গায়িকা, এসব অনেক কিছুই দেখায়। যেটা দেখে মজা লাগল, জনসন-রনসন চরিত্রদুটো নাকি হার্জ নিয়েছেন তাঁর নিজের বাবা-কাকা দুই ভাই থেকে! ‘টু বি প্রিসাইজ’ এই বিখ্যাত কথাটাও নাকি তাঁর কাকা প্রায়ই বলতেন। তাঁদের ছবিটবি, এবং সেই সময়কার প্রচলিত সাজপোশাক যেমন বোলার হ্যাট ইত্যাদি দেখা যায়। আরো একটা ইন্টারেস্টিং ট্রিভিয়া দেওয়া, জনসন-রনসনকে আলাদা করে চিনবার জন্য, কিন্তু আফসোস, সেটা বাঙালি পাঠকদের কোনো কাজে লাগবে না। এদের ফরাসী নাম Dupond আর Dupont, এবং যার গোঁফটা গোলপানা D-এর মত সেই Dupond, অন্যদিকে যার গোঁফখানার শেষটা বাইরের দিকে খোঁচামারা, সে Dupont উইথ আ T, সোজা হিসেব।

আর একটা ঘরে টিনটিন সিরিজের প্রধান কয়েকটা বই সম্পর্কে নানা ট্রিভিয়া দেওয়া। একটা আলমারিতে যেমন সাদা-কালো সিনেমা যুগের একটা দৃশ্য চলছে, যেখানে জাহাজে এক নায়ক বিশাল ফাইট করছে – ওই সিনেমাটা নাকি লাল বোম্বেটের গুপ্তধনে স্যার ফ্রান্সিস হ্যাডকের মারামারির ঘটনাটাকে ইনস্পায়ার করেছিল। আরেকটা আলমারিতে প্রথম কিংকং সিনেমাটার দৃশ্য চলছে – ওটাই নাকি কৃষ্ণদ্বীপের রহস্য গল্পে র‍্যাঙ্কো চরিত্রটার অনুপ্রেরণা। এই ঘরটা আসলে হার্জ কেমন সিনেমা-প্রেমিক ছিলেন তা সম্পর্কে। সিনেমায় কিছু দেখে মনে ধরলেই নাকি তা দ্রুত কমিক্সে ঢুকিয়ে ফেলতেন। আমেরিকান স্ল্যাপস্টিক কমেডি, যেমন মুখে পাই ছুঁড়ে মারা, ইত্যাদিও সুযোগমত ব্যবহার করতেন। হার্জ চ্যাপলিন থেকে বাস্টার কীটন ইত্যাদিদের বড়সড় ফ্যানও ছিলেন।

মিউজিয়ামে আরো যেটা ভাল লাগল, অনেক জায়গাতেই বই থেকে নানারকম জিনিস রিক্রিয়েট করা। কিছু তো আগেই বলেছি, এক জায়গায় দেখলাম প্রফেসর ক্যালকুলাসের আস্ত সেই হাঙর-সাবমেরিনটাই রাখা!

ওটা ঘোরা শেষ হলে গেলাম তিব্বতের উপর প্রদর্শনীটায়। তিব্বতের পরিবেশ, কঠিন জীবনযাত্রা, বৌদ্ধধর্ম (ঢোকার পথটাই প্রেয়ার হুইল আর প্রেয়ার ফ্ল্যাগ দিয়ে সাজানো), ওই লম্বা ভেঁপুটেপুঁ মায় টাকাপয়সাও রাখা। আর তিব্বতের স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়েও অকপটে লেখা। এটাও একটা ভাল লাগার মত ব্যাপার, বস্তুত টিনটিনের কাছে তো এমনটাই আশা করা যায়। মিউজিয়ামের অন্যত্রও প্রথমদিকে রেসিজম সম্পর্কে হার্জের স্পষ্ট ধারণা না থাকা (কঙ্গোয় টিনটিনে যেমন (প্রথম ভার্শনে আরো বেশি প্রকট) কলোনিয়ালিজমকে গ্লোরিফাই করে দেখানোর জন্য হার্জের কাছে অনুরোধ এসেছিল এবং তা রাখার জন্য পরে হার্জের অনুশোচনা), নাতসিদের দখলে থাকার সময় সেন্সরশিপ এড়াতে হার্জের দূরদেশে কাল্পনিক ব্যাপারস্যাপার নিয়ে বই করা, ইত্যাদি বিষয়ও চেপে যায়নি।

ফেরার আগে আমার ইচ্ছা ছিল স্যুভেনির হিসেবে এক-আধটা কানভাঙা মুর্তি কিনব (ভেবেছিলাম গল্পে যেমন ছিল তেমন এদের স্টোরেও ওই মূর্তি সারে সারে সাজানো থাকবে), নাহক একটা ওটোকারের রাজদণ্ড। কিন্তু দেখলাম, ওগুলো মূল মিউজিয়ামে বানানো থাকলেও স্টোরে বিক্রির জন্য নেই, সেখানে কেবল টিনটিন-হ্যাডক ইত্যাদিদের মূর্তিটুর্তি, বাচ্চাদের জন্য কুট্টুসের প্লাশ পুতুল, আর চাবির রিং হ্যানত্যান। বইয়ের জিনিসপত্রের মধ্যে কেবল একটা মস্তবড় রকেট, কাঁচের বাক্সের মধ্যে রাখা, নিচে লেখা ‘কেউ কিনতে চাইলে বিশেষ ব্যবস্থা করা যাইতে পারে।” এমনকি দোকানেও দুয়েকটা ছবি তুললে যেতেই বিক্রেতা খুকিটি হাঁ-হাঁ করে তেড়ে এল।

যাক, মিউজিয়াম (ঘুরতে প্রায় ঘন্টাতিনেক লাগল) দেখে যথেষ্ট পরিতুষ্ট হলাম, মন একেবারে উড়ুউড়ু টাইপের খুশি যাকে বলে। যাবার সুযোগ হলে কেউ মিস করবেন না যেন!


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

যদিও পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে “এতদিন কোথায় ছিলেন?” প্রশ্ন করার মত কোনো অনুরক্ত পাঠিকা আমার জন্যে বসে নেই, তবুও ------ ইহা একটি সিট খালি বিজ্ঞাপন। গড়াগড়ি দিয়া হাসি

লেখা লেখা -গুড়- হয়েছে

কৌস্তুভ এর ছবি

খামোশ!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সিট খালি, ছি ছি কী অশ্লীল চোখ টিপি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অন্যকেউ এর ছবি

ও ইয়া! দেঁতো হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

তিথীডোর এর ছবি

পুলার যে বিয়ার বয়স হৈসে, ছোঁড়া সে কথা কতবার কতভাবে কচ্চে.. তা সে কেউ গায়েই মাখলে না গো! ইয়ে, মানে... খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

হিংসিত পাঁচ তারা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ধুসর জলছবি এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

চরম উদাস এর ছবি

কৌস্তভ আর তারেক অণুর একই রোগ হয়েছে। "আমিও ব্যাচেলর থাকতে চাই তবে " সিন্ড্রোম। আপনাদের জন্য সানি লিওন এর মত স্বচ্ছ, পুনম পাণ্ডের মত নিরপেক্ষ ও মেগান ফক্সের মত আন্তর্জাতিক পাত্রী প্রয়োজন।

স্যাম এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি দেঁতো হাসি হো হো হো

তারেক অণু এর ছবি

কৌস্তভ ব্যাচেলর থাকতে চায় না শয়তানী হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

গুল্লি হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি দেঁতো হাসি শয়তানী হাসি

---------------------
আমার ফ্লিকার

অরফিয়াস এর ছবি

খুড়োর বড্ড ইয়ে ব্যারাম হয়েছে, খালি বিয়ে বিয়ে করছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

কিছু কমুনা, খুড়ো আর ঘনুদা আমার আজন্ম শত্রু! রেগে টং

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

কৌ লাইনে আসতে আচ্ছে! এটা বুঝতে হপে আইসা পড়ো বেইবে...

---------------------
আমার ফ্লিকার

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

ঘ্যাচাং

---------------------
আমার ফ্লিকার

তুলিরেখা এর ছবি

দারুণ কান্ড! লেখা, ছবি সব নিয়ে যাকে বলে ফাটাফাটি। হাসি
একেবারে শুরুতে ঐ কুট্টুস, টিনটিন আর ক্যাপটেনের ঐ চমকানোর দৃশ্য কোন গল্পে ছিল? চেনা মনে হচ্ছে অথচ কোন গল্পে মনে পড়ছে না। চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

ওমা, ছবিটার ঠিক উপরেই তো লিখে দিয়েছি।

তুলিরেখা এর ছবি

কই, ছবিটার উপরে তো কিছু পাই না!!!!! তাহলে আমার স্ক্রীনে আসছে না। মন খারাপ

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

"এই যেমন পুরোনো শহরের মূল চত্ত্বর গ্রেট মার্কেট (Grote Markt) থেকে হিসু-রত-শিশু (Manneken Pis) এর দিকে যেতে গেলেই চোখে পড়ে ক্যালকুলাসের কাণ্ড’র ৫০ পৃষ্ঠা থেকে আঁকা এই ছবিটা:"

এই লেখাটা আসছে না?

তুলিরেখা এর ছবি

হ্যাঁ, এইটা তো আসছে। তার নিচে ছবি তো ঝুলন্ত সিঁড়ির, সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে ওরা নামছে।
কিন্তু আমার জিজ্ঞাসা ছিলো একদম উপরের ছবিটা নিয়ে, ক্যাপটেন আর হ্যাডক হাত ধরাধরি করে চমকে গেছে সামনে কিছু দেখে, পাশে কুট্টুসও চমকে গেছে- সেইটা।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

ওহ ওহ, আসলে ওইটাকে ছবি বলায় বুঝিনি, মূর্তি বললে চট করে বুঝতাম মন খারাপ

এইটাও ক্যালকুলাসের কাণ্ড, পৃষ্ঠা ১১, জনসন-রনসনের হঠাৎ-আবির্ভাবে এরা চমকে গিয়েছে।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

পরে পড়ছি। আগে জিজ্ঞাসা করে নেই, এতদিন কোথায় ছিলেন?

টিনটিন, ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও প্রফেসর ক্যালকুলাস আমার খুবই পছন্দের মানুষ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

কৌস্তুভ এর ছবি

লইজ্জা লাগে

মইনুল রাজু এর ছবি

"লোহিতপ্রদীপপল্লী" -এর থেকে ভালো বাংলা অনুবাদ কল্পনাও করতে পারছি না :D। অন্য কেউ কি এই বাংলা আগে কোথাও ব্যবহার করেছে, না-কি আপনি নিজেই অনুবাদ করে এই লেখাতে ব্যবহার করলেন?
লেখা ভালো লেগেছে। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

কৌস্তুভ এর ছবি

নাহ, লিখতে লিখতে মনে হল একটু ঢাকাচাপা দিয়ে ভদ্র করে লেখা দরকার তাই ওরকম অনুবাদ করে দিলাম। দেঁতো হাসি

শুভায়ন এর ছবি

এক কথায় অসাধারণ - বাংলায় অসম চলে আসার মত । Louvain-la-neuve - এ যে এরকম একটা কিছু রয়েছে - সেটা আমার বন্ধু আমাকে বলেই নি - অথচ - দু-বছর সেখানে ঘাস কেটেছে - তবে সবার অবসেশন তো আর টিনটিন হয় না। চোখ টিপি আমার হয়েছে জ্বালা - কম্ম ফ্যালায়ে আমি এখন যেমন আপ্নের আগের লেখাটি পড়ুম । ২০০৬ সাল থেকেই সাক্ষর হওয়া উচিত ছিল আমার | চলুক

আমস্টার্ডাম এর কিছু ছবি দিয়েন - ইয়ে মানে - সংগ্রহালয় তো ওখানে অনেক গুলো - দু একটা লোহিত কণিকা-র ছবি দিলেও জনগণে - নিশ্চই কল্লা ফেলে দেবে না। চিন্তিত

Ottignies - এর উল্লেখে একটা পুরনো কথা মনে পড়ল - ওই স্টেশন এ ট্রেন ধরার জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছি - ট্রেন ৩ নম্বর প্লাটফর্ম এ আসবে - প্লাটফর্ম গুলো নিচু নিচু - অনেকটা আমাদের দেশের - ঘাস পাতা বাহার প্লাটফর্ম এর মতন - তবে পাকা এই যা - রেল লাইন এর মাঝে কাঠের পাটাতন বসিয়ে লেভেল করা রয়েছে। আমি ঐটা দিয়ে রেল লাইন পার করে অন্য প্লাটফর্ম এ গেছি - আর যেই না যাওয়া - দুটো লোক (ফ্লুরোসেন্ট কমলা আর সবুজ জামা পরা) আরো দুরের প্লাটফর্ম থেকে হুইসল বাজাতে বাজতে ছুটে এলো (তারাও প্লাটফর্ম ক্রস করেই এলো) - আমি তখন মনে মনে প্রমাদ গুনছি - বিদেশে এসে জেল জরিমানা হলে তো গেলুম। বিপদ কালে বিপরীত-বুদ্ধি, আমি আবার উল্টো মুখ করে ১ নম্বর প্লাটফর্ম এ ফিরে যাবার চেষ্টা করলুম - যে পথে এসেছিলুম সেই পথেই - এবার আরো জোরে হুইসল বেজে উঠলো - আমি স্থানু-র মতো দাঁড়িয়ে গেলুম। এসব ক্ষেত্রে আমার একমাত্র প্রতিরক্ষা হলো - আমি (চন্দ্রিল কাকুর মত করে) ফরাসী ভাষাটা বলতে পারি না - লোকগুলো পুরো ঝাঁঝিয়ে উঠলো - বলল যা বলছি - সেটা হাত নেড়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি। ওই দেখো ওপরে ফুট ওভারব্রিজ - আর নিচে সাবওয়ে রয়েছে - ট্রেন লাইন পারাপার করতে হলে ওই গুলো দিয়ে করবে। পরে একটু ভেবে বলল - আমরা যথাক্রমে লাল/সবুজ পার্টি-র লোক আমাদের লাফিয়ে রেল লাইন পার করার অনুমতি আছে - পরে আরেকটু ভয় দেখালো - এখান দিয়ে ঘন্টায় ৩২০ কিলোমিটার বেগে চলা দ্রুতগামী ট্রেন ও চলে - তাই সাধু সাবধান। গুল্লি

ছোটবেলা থেকে দুম-দাম স্টেশন এ দুমদাম করে পার হয়ে পিছনে যে ল্যাজ টা গজিয়েছিল - সেটা কেটে গেল - বুঝলুম - সহনাগরিক এর প্রতি এই মমত্ব বোধ এদের কে এত এগিয়ে নিয়ে গেছে - অথচ আমি তো ওদের কেউ-ই না। গুরু গুরু

কৌস্তুভ এর ছবি

আহা, ২০০৬ সালের ঘটনা হলে কী করে জানবেন - মিউজিয়ামটা তো খুলেছেই ২০০৯ সালে হাসি

Louvain-la-neuve থেকে ট্রেন ছাড়ার সময় কোটি কোটি খোকাখুকু তাদের বাক্সপ্যাঁটরা বইখাতা নিয়ে উঠে পড়ল ট্রেনে, বুঝলাম এরা সব স্টুডেন্ট। এরাই যখন দলবেঁধে Ottignies-এ নেমে পড়ল তখন আমিও সাহস করে নেমে পড়লাম ট্রেন বদলে ফিরব বলে। ফলে যেতে লেগেছিল ঘন্টাখানেক কিন্তু ফিরতে লাগল আধ ঘন্টা।

শুভায়ন এর ছবি

২০০৬ বলতে আমি - আগেই সচল এর পাঠক হওয়ার কথা বুঝিয়েছি - Louvain-la-neuve হাওয়া খাওয়া আর Ottignies তে ধাওয়া খাওয়া, দুটি-ই ২০১০ এর ঘটনা। মন খারাপ সুখের কথা - সার্থকনামা এই ব্লগে ভূ-পর্যটকের কোনো অভাব নেই। চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

হাহাহা দেঁতো হাসি

নীরা এর ছবি

হাততালি

নীরা

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

কয়েক মাস আগে প্রায় মাসব্যপি থাকতে হয়েছিল ব্রাসেলসে - ব্যবসার কাজে। প্রতিদিনই ভাবা হত, 'যাব'; শেষতক যাওয়া হল আজকে। আপনের সাথে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আহা, তাহলে আপনি কতগুলো বেলজিয়ান চকলেট আর ওয়াফল খেতে পেরেছেন ভেবেই আপনাকে ঈর্ষা হচ্ছে!

শাব্দিক এর ছবি

১। এতদিন কোথায় ছিলেন?
২। মারাত্মক পোস্ট গুল্লি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

কৌস্তুভ এর ছবি

১। কইলাম তো
২। হেঁ হেঁ
খাইছে

পিনাক পাণি এর ছবি

মন ভালো করে দিলেন হাসি মিউজিয়ামটা পছন্দ হয়েছে (আর্কিটেকচারালি) আরো বিশদ জানতে মন চায় মিউজিয়াম এর ব্যপারে। লেখা অতিব চমৎকার হয়েছে। লেখা -গুড়- হয়েছে

কৌস্তুভ এর ছবি

ওদের সাইটের লিঙ্ক তো দিয়েছি, ওখানে গিয়ে দেখুন, আরো কিছু হয়ত লেখা থাকবে। আর্কিটেক্টের সম্বন্ধে বেশ কিছু লেখা আছে দেখলাম।

ঈয়াসীন এর ছবি

বাহ

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

চৈত্রী এর ছবি

"যদিও পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে “এতদিন কোথায় ছিলেন?” প্রশ্ন করার মত কোনো অনুরক্ত পাঠিকা আমার জন্যে বসে নেই, তবুও ------ ইহা একটি সিট খালি বিজ্ঞাপন" গড়াগড়ি দিয়া হাসি
বাই দ্য ওয়ে, আমিও যাইতে চাই মন খারাপ

কৌস্তুভ এর ছবি

এতো ফুর্তির কী আছে, অ্যাঁ? রেগে টং

ধুসর জলছবি এর ছবি

দারুণ।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

দময়ন্তী এর ছবি

কিন্তু আমি যে ২০০২তে ব্রাসেলসেই একটা টিনটিন মিউজিয়াম দেখেছিলাম! সেইটা এখন আর নেই নাকি? এদিকে একদিন কি কারণে যেন ম্যানিকিনরে পেন্টু পরিয়েছিল আর আমি সেইদিনই ছবি তুলতে গেছিলাম|

ব্রাসেলসের কোকো মিউজিয়ামটাও বেশ মানে যাকে বলে ব্রেশ আর কি|

লেখা ও ছবির যুগলবন্দী অতি মচৎকার হইসে|

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

কৌস্তুভ এর ছবি

হতেও পারে, হয়ত এটা খোলার আগে ব্রাসেলসেই কিছু ছিল! কী দেখেছিলেন সেটার নাম বলুন না, গুগল করে দেখি...

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

অনেকদিনের স্বপ্ন টিনটিন মিউজিয়াম দেখে এসে গর্বিত-গোরিলা-সম বুক চাপড়ানোর পোস্ট।

কৌস্তুভ একটা অমানবিক প্রাণী।

কৌস্তুভ এর ছবি

ওমা স্নেহশীল দিদিদের মুখে এসব কী কথা!

guest_writer এর ছবি

'শয়তানের ভৃত্য! তোর প্রভুর কাছে ফিরে যা!'
নীরেন্দ্রনাথের এই অসাধারণ অনুবাদ, - আমার মতো পাঁড় টিনটিনখোরের কাছে যে কত বড় আশীর্বাদ!!! আমি যদি চিত্রগুপ্ত হতাম, স্বর্গে ওনাকে অ্যার্জের বাড়ির পাশের প্লটটা পাইয়ে দিতাম -

সম্রাট দাশুগুপ্ত

কৌস্তুভ এর ছবি

একদম। পরের দিকে অনুবাদক বদলের পর মান একটু ঝুলে গেছে বলে আমার মনে হয়েছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আচ্ছা অ্যাসটেরিক্স-ও কি ওনারই অনুবাদ? সেও তো আরেক নেশাবস্তু... মাথার কোনো ঠিক থাকে না এগুলোর মুড চাপলে।

সম্রাট দাশুগুপ্ত

কৌস্তুভ এর ছবি

না, অ্যাসটেরিক্স অনুবাদ করেছেন পৌলমী সেনগুপ্ত, এখানে লিখেছিলাম হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনাকে একটা তথ্য দেই, আমি জীবনে কখনো কমিক পড়িনি। একটা দুটো কয়েক পাতার কমিক পড়েছি ঈদসংখ্যার পত্রিকার ফাঁকে। সেটা ধর্তব্য নয় বলেই ধরে নিচ্ছি হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

আহা আপনার আর কতই বা বয়স, বড় হলে পড়ে নেবেন চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

বর্ননা-ছবি সব মিলিয়ে অসাধারন । মুগ্ধ হয়ে গেলাম ।

আরাফ করিম

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তমসা এর ছবি

আমি বলব, আমি বলব -------------- এতোদিন কোথায় ছিলেন?(আইলাইনার, কাজল,মাশকারা,নীল আইশ্যাডো কিছুই বাদ রাখিনি চোখদুটোকে পাখির নীড়ের মত করে তোলার জন্য হো হো হো )

অরফিয়াস এর ছবি

হাততালি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কৌস্তুভ এর ছবি

তোমার ভুবনে মাগো এতো পাপ!

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

বড় হয়ে একদিন আমিও যাবো!
লেখায় (গুড়)

---------------------
আমার ফ্লিকার

কৌস্তুভ এর ছবি

লিচ্চয়, লিচ্চয়!

ইমা  এর ছবি

আপনার লেখা শুধু পাঠিকারাই পড়ে নাকি?
লেখা এবং ছবিতে গুরু গুরু

ইমা

কৌস্তুভ এর ছবি

পাঠকেরা অতি দুষ্ট (প্রথম মন্তব্যই প্রমাণ), তাই তাদের পুছি না চোখ টিপি

ইমা  এর ছবি

হাহাহা। গড়াগড়ি দিয়া হাসি

মন মাঝি এর ছবি

টিনটিনের মজাটা বুঝলাম না আজও মন খারাপ

****************************************

কৌস্তুভ এর ছবি

ছোটবেলায় আলাপ হলেই মূল মজা পেতেন। বড়বেলায় যেমন স্পঞ্জবব দেখতে মজা পাবেন না। তবে টিনটিন কমিক্স বিষয়ে বেশ কিছু ধারার পথিকৃৎ। আর এটার মধ্যে যে পলিটিকাল ব্যাপারস্যাপার নিয়ে স্যাটায়ার আছে সেটা তো বড়দের উদ্দেশ্যেই।

ফারাবী এর ছবি

অসাধারণ লেখা ও ছবি। ছবিগুলো ত সব কপি-পেস্ট করে রেখে দিতে মন চাচ্ছে! পাশাপাশি হার্জ ও টিনটিনের সম্পর্কে কত কিছু জানা হল (সোভিয়েতে টিনটিন নামে যে বই আছে তাই-ই জানা ছিল না, হেহে। জেনেই নামিয়ে নিলুম, এখনই পড়ব দেঁতো হাসি )।

ভাল থাকবেন, ওয়াফল আর বেলজিয়ান চকোলেট খেয়ে ও শুনিয়ে পেটে পিলে বাঁধিয়ে হলেও সবসময় এরকম অছাম পোস্ট দিতে থাকবেন, এই কামনা করি। হাসি

------------
ফারাবী

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, আমার টিনটিনোলজিস্ট পোস্টটাও দেখেছেন আশা করি?

দুর্দান্ত এর ছবি

(মে মাস পর্যন্ত) আমার বাসা থেকে লুভান্লানোভ (ছিল) মাত্র দেড় ঘন্টার ড্রাইভ। এপ্রিলে অফিসের কাজে মনে' সেন্টারেও গেছিলাম। ধুরমশায়, একটু আওয়াজ দেবেন না?

***
হার্জ কে মশায়? ভদ্রলোকের লেখনি নাম/ছ্দ্মনাম তো "এরযে"। ওঁর আসল নাম George Remy। পুরো নামের অদ্য়াক্ষর RG কে একটু খাটনি করে লেখা।

***

ভাল করেছে বাংলা টিনটিনের বই সাজায়নি, নইলে দেখতে পেতেন তাবত দুনিয়ার নানা ভাষায় স্ট্য়ান্ডার্ড ছাপা, আকার বাধাইয়ের পাশে ঝাপসা ছাপা আর কাগজ বাঁচানো আকারের বাংলা টিনটিনকে।

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

টিন্টিন আমিও পর্সি; কিন্তুক- হুইস্কি খাইয়া পাখি- এইটা যেন কোন বইয়ের? লোহিতপ্রদীপপল্লী অনুবাদ ডিকশনারিতে দেউয়ার মতন হইসে।

-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।