অ্যাসটেরিক্স

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: বুধ, ২০/০৭/২০১১ - ৭:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

টিনটিনের পরেই বোধহয় বিদেশী কমিক্সের মধ্যে অ্যাসটেরিক্স আমাদের কাছে সবচেয়ে সমাদৃত। প্রতিযোগিতায় অ্যাসটেরিক্সের পিছিয়ে থাকার একটা বড় কারণ অবশ্য এর অনুবাদের অভাব। ১৯৯৫ থেকে শুরু হয়ে ২০০২ সাল অবধি প্রথম দশটা বই বাংলায় বের হয়েই অনুবাদ বন্ধ হয়ে যায়। শুনছি এই বছর আবার নতুন করে অনুবাদ চালু হয়েছে, ‘ঢালের খোঁজে অ্যাসটেরিক্স’ দিয়ে।

অ্যাসটেরিক্সের চরিত্রদের চেনেন সবাই, তাই তাঁদের নিয়ে আর ভূমিকা করার কিছু নেই। সরাসরি কিছু ট্রিভিয়ালোচনা করি বরং। এইসব গল্প নেট ঘেঁটে বা পিটার কেসলার-এর ‘দা কমপ্লিট গাইড টু অ্যাসটেরিক্স’ পড়ে পাওয়া। মাইকেল ফার-এর টিনটিনের বইয়ের মত ওনার অ্যাসটেরিক্স নিয়ে আলোচনাটাও আকর্ষণীয়।

(১)

১৯৫৯ সালে পত্রিকায় কমিক স্ট্রিপ হিসাবে অ্যাসটেরিক্সের শুরু। ১৯৬১ সালে বই হিসাবে প্রকাশিত হয় প্রথমবার ‘গলযোদ্ধা অ্যাসটেরিক্স’। সেই থেকে এখনও অবধি ৩৪ খানা বই বেরিয়েছে। অ্যানিমেশন ছাড়াও, সিনেমাও হয়েছে গোটাচারেক, বিখ্যাত ফরাসী অভিনেতা জেরার্দ দেপার্দ্যু-কে ওবেলিক্স চরিত্রে নিয়ে। একটায় তো ক্লিওপেট্রার চরিত্রে মনিকা বেলুচ্চিও আছেন। চোখ টিপি

বইগুলোর লেখক রেনে গোসিনি প্রথম জীবনে ছিলেন স্ক্রিপ্ট-রাইটার। আর ছবি আঁকতে ভালোবাসলেও অ্যালবার ইউদেরজো ছোটবেলায় ছিলেন বর্ণান্ধ। তবে ক্রমে সেই অবস্থা কেটে যায় তাঁর, ভাগ্যিস! তিনি যুবক বয়সে নানা কার্টুন-গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। আর এক পত্রিকার অফিসে একদিন গোসিনি’র সঙ্গে দেখা হলে দুজনে মিলে কাজ করতে শুরু করেন, ক্রমে অ্যাসটেরিক্সের আইডিয়া আসে। ইউদেরজো অ্যাসটেরিক্স-কে এঁকেছিলেন সুপুরুষ বিশালদেহী যোদ্ধা হিসাবে, কিন্তু গোসিনি’র প্ল্যান ছিল তাঁদের কমিক্সের নায়ককে ছোট্টখাট্ট চেহারার অ্যান্টি-হিরো বানাতে।

১৯৭৭-এ গোসিনি মারা গেলে পাঠকদের চাপে ইউদেরজো-ই ছবি আঁকার পাশাপাশি নতুন গল্প সৃষ্টির কাজটা চালিয়ে যেতে থাকেন। ২৪তম বই ‘অ্যাসটেরিক্স ইন বেলজিয়াম’-এর আঁকার কাজ চলাকালীন গোসিনি মারা গেলে বাকি অংশের ছবির মুড তাঁর স্মরণে মেঘলা, উদাস করে দেওয়া হয়। (বিষণ্ণ ইউদেরজো এই বইটা শেষ করতেও চান নি। সম্পাদক আইনের ঠেলা দিয়ে ওঁকে দিয়ে আঁকা শেষ করান।) ‘অ্যাসটেরিক্স অ্যান্ড দি গ্রেট ডিভাইড’, যেটা রোমিও-জুলিয়েট আর বার্লিন ওয়াল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানানো, সেটা থেকে ইউদেরজো (সম্পাদক বদলিয়ে) নিজেই গল্পও লিখতে থাকেন। বন্ধুর স্মৃতিতে এর পরের গল্প, ‘অ্যাসটেরিক্স অ্যান্ড দি ব্ল্যাক গোল্ড’-এ অ্যাসটেরিক্সদের পথপ্রদর্শকের চরিত্রে গোসিনি’কে নিয়ে আসেন।

অনেকে বলে যে কল্পনার বিস্তার বেশ বাড়ালেও (উড়ন্ত কার্পেট, ড্রাগন ইত্যাদি) ইউদেরজো গল্প লেখা শুরু করলে সেই সময় থেকেই গল্পের মান পড়তে শুরু করে।

সাম্প্রতিক গল্পগুলোয় প্লটের মান অনেকটাই পড়ে গেছে বলে মনে হয়। ‘অ্যাসটেরিক্স অ্যান্ড দি ফলিং স্কাই’-তে কিছু হাস্যকর চেহারার ভিনগ্রহী প্রাণীদের নিয়ে আসা অনেকেই পছন্দ করেন নি। হার্জ কিন্তু সেই তুলনায় ‘ফ্লাইট ৭১৪’-তে ভিনগ্রহীদের বিষয়ে চমৎকার পরিমিত দেখিয়েছিলেন।

(২)

প্রথম তিনটে বই বাদ দিলে, অ্যাসটেরিক্সের গল্পের ছন্দ হচ্ছে, একটা করে বইতে বিদেশে সফর হবে আর অন্য বইটার ঘটনা হবে গলদেশেই। জোড় নম্বরের বইগুলো হয় বিদেশে। যেমন ২৮ নম্বর বইতে, ‘অ্যাসটেরিক্স অ্যান্ড দি ম্যাজিক কার্পেট’-এ ভারতেও পা পড়েছিল অ্যাসটেরিক্স’দের। উত্তরপ্রদেশে গঙ্গার ধারে এক রাজার খরাগ্রস্ত রাজধানীতে এক ভোলাভালা রাজা, সুন্দরী রাজকন্যে (তাকে দেখেও ওবেলিক্সের মনের মধ্যে হুতাশ) আর দুষ্টু মন্ত্রী যে কিনা রাজকন্যাকে বলি দিতে চায় খরা কাটানোর যজ্ঞ’র অছিলায়, তাদের নিয়ে গল্প। এখানেও হাতি আছে, জঙ্গল আছে, ফকির আর সাধু আছে, ইন্ডিয়ান রোপ ট্রিক আর স্নেক চার্মার আছে... টিনটিনের মতনই প্রাচ্য ফ্যান্টাসি আর কি!

(৩)

টিনটিনের লেখাটায় বলেছিলাম, যে নানারকম মজার এলিমেন্ট – পান, হিউমার, শব্দের খেলা, ক্যারিকেচার, প্যারডি, স্টিরিওটাইপ – এসবের ছড়াছড়ি অ্যাসটেরিক্সেই বেশি। এবং হকরিজ ও বেল বহু পরিশ্রমে সেগুলোকে ফরাসী ভাষা থেকে ইংরাজিতে ফুটিয়েছেনও চমৎকার। তবে অনুবাদের কথায় পরে আসব। এখন বলি, কথার হিউমার তো আছেই, কথা ধারণ করে যে সেই স্পিচ বাবল-এর স্টাইলেই কত মজা এনেছেন ওনারা!

গোসিনি-ইউদেরজো এত বিভিন্ন ধরনের এলিমেন্ট ব্যবহার করেছেন মজা তৈরির জন্য, যে তার কয়েকটা হয়ত একটু বেশি বয়সের পাঠকদের জন্যই। তবে গোটা কমিক্সে কোথাও ‘অ্যাডাল্ট মেটেরিয়াল’ নেই। রোমানদের যথেচ্ছাচার দেখাতে গিয়ে এমনকি অর্জি-র ঘটনাও এনেছেন, তবে সেখানে শুধু বিশৃঙ্খল-অসংবৃত অবস্থা আর খাদ্যের প্রাচুর্য-অপচয়ের মধ্যে দিয়েই ‘ডেকাডেন্স’ ফুটিয়ে তুলেছেন।

টিনটিন যেমন নিল আর্মস্ট্রং’য়ের ১৫ বছর আগেই চাঁদে পা রেখেছিল, তেমনই অ্যাসটেরিক্স-রাও কলম্বাসের বহু আগেই আবিষ্কার করে আমেরিকা। এইটা ওনাদের হিউমারের একটা বড় অংশ, যে প্রচলিত জিনিসকে প্রাচীন পরিবেশে ফেলে, অর্থাৎ অ্যানাক্রনিজম এনে, তার odd দিকগুলোকে হাইলাইট করে মজা সৃষ্টি করা। ইংল্যান্ড যখন শিলিং ছেড়ে পুরোপুরি পেন্স-এ চলে আসে, তখন যে হিসাবের গন্ডগোল হচ্ছিল লোকেদের, তা নিয়েও সেযুগের পরিস্থিতিতে ফেলে মজা করা হয়েছে। অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার কৃতিত্বও অ্যাসটেরিক্স’দের দেওয়া হয়েছে, যেমন স্ফিঙ্কসের ভাঙা নাক, ইউরোপে চায়ের প্রচলন।

(৪)

আঁকার দিক থেকেও টিনটিনের তুলনায় অনেক বেশি ডিটেল দিতেন ইউদেরজো। তবে সেটা একেবারে বাস্তবের নকল নয়, একটু পরিবর্তিত, একটা হালকা অ্যাঙ্গেল থেকে, মজা মিশিয়ে। মার্ভেল কমিক্সের তুলনায় অনেক নরমসরম। সেই ধারাগুলো প্যারডি করে ওনারা নিজেরাই অ্যাসটেরিক্সের ভার্শন এঁকেছিলেন –

অ্যাসটেরিক্স সেই প্রাচীন যুগে সাদাকালো দিয়ে শুরু হয় নি, আঁকার ধারা প্রথম কয়েকটা বইতেই কেবল একটুখানি উন্নত হয়ে স্থায়ী হয়ে গিয়েছে। আর মাঝের দিকে ইউদেরজো অন্য সব কাজ ছেড়ে দিয়ে পুরো সময়ই এই কমিক্স আঁকার কাজে মন দেন, তখন থেকে উনি আরেকটূ বেশি ডিটেল, চরিত্রের ভাবভঙ্গিতে আরেকটু সূক্ষ্মতা আনার দিকে মন দেন। তবে একদম আধুনিক বইগুলোয় উনি একটুখানি ত্রিমাত্রিক ভাব দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন, যেটা না হলেও চলত।

(৫)

অনুবাদের কথায় ফিরে আসি। ইউদেরজো পরের দিকে সব বইয়ের সবকটা চরিত্রের নাম, ব্যবহৃত জোকস বা কালচারাল রেফারেন্স ইত্যাদির তালিকা করে তাঁর সব অনুবাদককে পাঠাতেন, যাতে তাঁদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ও মূলানুগ হতে সুবিধা হয়। ওনারা নিজেরাও ছন্দের অভিধান, উদ্ধৃতির অভিধান ইত্যাদি ব্যবহার করেন নতুন নতুন মজা এনে সার্থকভাবে অনুবাদ করার জন্য। প্রয়োজনে নতুন ওয়ার্ডপ্লে নিজেরা সৃষ্টি করেছেন। কখনও কোনো শব্দচাতুরি একেবারেই অনুবাদ করা না গেলে, অন্য কোথাও সুযোগ পেলেই নিজেদের মত করে শব্দের খেলা বসিয়েছেন।

এই উদাহরণটা কেসলারের বই থেকে নেওয়া। এই দৃশ্যে ইউদেরজো বিখ্যাত ফরাসী শিল্পী জেরিকো’র ‘মেডুসার ভেলা’ (Raft of the Medusa) ছবিটির অনুকরণ করেছেন জলদস্যুদের ডুবন্ত জাহাজে। তা এখানে শব্দের খেলা আনলেন এভাবে – তাদের সর্দার বলছে ‘Je suis médusé’। (এই ফরাসি প্রবচনটির মানে ‘আমরা স্তম্ভিত’। মনে করে দেখুন, মেডুসার মুখের দিকে তাকালেই সবাই স্তম্ভিত বা প্রস্তরীভূত হয়ে যেত।) এর সমান্তরাল যেহেতু কোনো ইংরাজি প্রবচন নেই, তাই ওঁরা লিখলেন, ‘We've been framed, by Jericho!’, ফ্রেমড-এর এক অর্থ ঠকানো, যেটা জলদস্যুদের সাথে ঘটেছে, আবার আরেক অর্থ ছবি বানানো, এবং এর মধ্যে দিয়ে ওই ছবিটার প্রতি ইঙ্গিত করা হল। শুধু তাই নয়, ছবির নামের প্রতি না করা যাক, ওনারা চিত্রকরের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন! (ইয়ে, ট্রিভিয়া, এই ছবিটার প্রতি হার্জ’ও লোহিত সাগরের হাঙরে আঁকায় এবং লেখায় ইঙ্গিত করেছেন!)

সেই তুলনায় বাংলা অনুবাদগুলো, যা করেছেন আনন্দমেলা (ও উনিশ-কুড়ি পত্রিকার) সম্পাদিকা পৌলমী সেনগুপ্ত, অনেকটাই বিবর্ণ। (আনন্দমেলার সম্পাদিকা হিসাবে ওনার প্রতি আমাদের প্রচুর ক্ষোভ রয়েছে, কিন্তু সেই নিয়ে কথা বলতে গেলে বিষয়টাই পুরো ঘুরে যাবে। আনন্দ পাবলিশার্সের উপর একটা আলাদা পোস্ট দেবার ইচ্ছা রাখি, সেখানেই এই নিয়ে আলাপ হবে’খন।)

(৬)

চরিত্রের নামগুলো এই কমিক্সে অনেকটাই মজা ধারণ করে, আর সেগুলো যথাযথ ভাবে অনুবাদ করা জরুরি। উদাহরণ হিসাবে ধরুন ওবেলিক্সের কুকুরের নাম। মূল ফরাসীতে তার নাম Idéfix (মানে fixed idea – একগুঁয়ে)। চমৎকারভাবে রাখা হয়েছে এর ইংরাজি নামটা – Dogmatix – dogma শব্দটার মধ্যে দিয়ে ওই অর্থটাই যে ঠিকঠিক ফোটানো হয়েছে শুধু তাই নয়, dog অর্থাৎ কুকুর শব্দটাকেও কেমন চালাকি করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে বাংলা নামটা গোঁয়ার্তুমিক্স, যেটা মূলের কাছাকাছিই।

Cacofonix এর অনুবাদটা ভালো হয়েছে, কলরবিক্স। শুরুর দুয়েকটা বইতে অবশ্য অন্য ছিল, মিঠেগলিক্স। এটাসেটামিক্স, বিশালাকৃতিক্স নামগুলোও ভালো। ক্লিওপেট্রার বইতে যে মাইনর চরিত্রগুলো – অট্টালিস, অক্ষরিস, ভেজালোদিস, দুষ্টামিস, সে নামগুলোও মজাদার এবং উপযুক্ত।

(৭)

কিছু কিছু জিনিস আছে যা বাংলায় নিয়ে আসা প্রায় অসম্ভব। যেমন, নানা দেশের ভাষা বোঝাতে ওঁরা দারুণভাবে নানা হরফ ব্যবহার করেছেন, ইংরিজি ও ফরাসী বইতে, কারণ দুটোরই মূল হরফ প্রায় সমান, এবং বিদেশী-ঘেঁষা নকশাদার ফন্টের ছড়াছড়ি সেখানে। কিন্তু বাংলা সম্পূর্ণ আলাদা হরফ, আর এতে ফন্ট-এর বৈচিত্রও অত নেই।

তবে কিছু কিছু স্টাইল হয়ত আনাই যায়, যেমন কাঁপা কাঁপা হরফ দিয়ে রাস্তার ঝাঁকুনি বোঝানো। তবে এরকম কিছু বাংলায় করা হয়েছে বলে আমি দেখিনি।

তবে গলদেশের মধ্যেই নানা জায়গার তফাত বোঝাতে গোসিনি যেমন অ্যাকসেন্ট ব্যবহার করতে পেরেছিলেন, সেই সুযোগ না পাওয়ায় হকরিজ ও বেল ভাষাগত বা বাক্যগঠন-গত সামান্য তারতম্য করে সেই বৈচিত্র আনতেন। বা সম্ভব হলে ইংল্যান্ডের নানা জায়গার মজাদার অ্যাকসেন্টও ব্যবহার করতেন।

(৮)

মুসোলিনি, বিসমার্ক, চার্চিল এঁরা নিজেদের দেশের সেনাধ্যক্ষ হিসাবে ক্যামিও রোল পেয়েছিলেন বইগুলোতে। পপ কালচার থেকেও ওঁরা চরিত্র নিয়েছেন – বেন-হুর মনে আছে? ওটার সেই বিখ্যাত চ্যারিয়ট রেস? চার্লটন হেস্টন এক রথচালক হিসাবে রোল পেয়েছেন তাই। জেমস বন্ডের ধাঁচে এক নানাবিধ অত্যাধুনিক যন্ত্রবিশিষ্ট রথ নিয়ে শন কোনারি এসেছেন। সিগমুন্ড ফ্রয়েড এক মনস্তত্ত্ববিশারদ পুরোহিতের রোল পেয়েছেন। লরেল-হার্ডি দুজন অগোছালো রোমান সেনা’র চরিত্রে এসেছেন। (ওনারা চ্যাপলিন, বাস্টার কীটন, লরেল-হার্ডির স্ল্যাপস্টিক কমেডির ভক্ত ছিলেন। সেসব সিনেমার মুখে থালাভরা পাই ছুঁড়ে মারার মজাকে ওনারা কমিক্সে এনেছেন মুখে মাছ ছুঁড়ে মেরে মারপিট করার রূপ দিয়ে।) ব্রিটেনের জনপ্রিয় গায়কদল হিসাবে দেখানো হয়েছে বীটলস-দের।

লেখক-আঁকিয়ে নিজেরাও নিজেদের ফ্রেমে বসিয়েছেন, একবার তো মুখোমুখি ঝগড়া করতেও।

হার্জ যেমন টিনটিনে অ্যাসটেরিক্সকে উপস্থিত করেছিলেন একবার, এঁরাও তেমন বেলজিয়ামে (টিনটিনের জন্মভূমি) জনসন-রনসন মানিকজোড়কে এনেছিলেন। আর এক বেলজিয়ান সৈন্যকে দিয়েছিলেন টিনটিনের হেয়ারস্টাইল।

সেই তুলনায় খাঁটি ঐতিহাসিক চরিত্র কমই – সীজার (এবং ব্রুটাস ইত্যাদি), ক্লিওপেট্রা, আর বিখ্যাত ফরাসি উপজাতি-নেতা ভারসিনজেতোরিক্স। ওনার নাম থেকেই এই কমিক্সের ফরাসি চরিত্রদের নাম –ইক্স দেওয়ার আইডিয়া পান ওনারা।

(৯)

আর ইয়ে, এনাদেরও কি আঁকায় কিছু ভুলচুক ছিল না? ছিল বৈ কি। ঐতিহাসিক কাহিনী লিখতে গিয়ে কিছু ইতিহাস-সংক্রান্ত ভুল করে ফেলেছিলেন, যেমন যে আলু ব্রিটেনে স্যার ওয়াল্টার র‍্যালে নিয়ে এসেছিলেন দুই শতাব্দী আগে, তাকে সীজারের যুগে নিয়ে ফেলেছিলেন। মিশর অভিযানে লাক্সরের মন্দির আঁকার সময় স্ফিঙ্কসের জায়গায় ভেড়ার সারি এঁকে ফেলেছিলেন। আর সবচেয়ে মজার ভুল যেটা, ব্রিটেন ঢোকার মুখে অ্যাসটেরিক্স তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে অভিযোগ করছে তাদের দেশে রাস্তায় গাড়ি চলার উলটো নিয়ম নিয়ে, কিন্তু রাস্তার ডবল-ডেকার বাস আঁকার সময় সেটাকে ভুল করে ফরাসি কায়দায় রাস্তার ডানদিকে এঁকে ফেলেছেন।

(১০)

আগে বলেছিলাম, বাংলা অনুবাদটা তুলনায় বিস্বাদ হবার কথা। ওনার বানানো নামগুলো অবশ্য ভালো, সেটাও বলেছি। বা, ‘অ্যাসটেরিক্স ও ক্লিওপেট্রা’-র একটা দৃশ্যে ওবেলিক্স যখন অট্টালিসের মোড়ক খোলার সময় তাকে পুরো চরকিপাক দিয়ে ফেলল, সে বেরিয়ে এসে বলল ‘মাথা ঘুরছে’, যেখানে ইংরিজিটা তুলনায় সাদামাটা ‘feeling dizzy’ – এই অনুবাদক-সৃষ্ট শব্দের খেলাটা ভালো লেগেছে। কিন্তু অধিকাংশ শব্দের খেলাই উনি অনুবাদ করতে পারেন নি। হাতের কাছে বাংলা বই কেবল ক্লিওপেট্রা-টাই আছে, তাই ওটার থেকে কয়েকটা উদাহরণ দিই। ছোটখাট ত্রুটিগুলো ছেড়ে বড়গুলোই ধরছি।

শুরুতে ক্লিওপেট্রাকে দেখানোর সময় ম্যাডাম ভিনিগারে ভেজানো মুক্তো দিয়ে প্রাতরাশ সারছেন। খাদ্যপরীক্ষক দেখে বলছে, ‘ইশ, ওইটুকু ভিনিগারে চারটে মুক্তো!’ আর (মূল ইংরাজিতে) খেতে গিয়ে বলছে, ‘ভিনিগারে বেশি মুক্তো দিলে আমার মোটেও পছন্দ হয় না!’ অর্থাৎ সে নিজেও একজন গুর্‌মে – খাদ্যাখাদ্যের ব্যাপারে তার পছন্দ-অপছন্দও খুব বেশি। কিন্তু অনুবাদে তার ওই দিকটা দেখানোই হল না, পাতি বলছে, ‘বিচ্ছিরি খেতে’।

পৃষ্ঠা ২৭-এর শুরুতেই মাপের একক স্টেডিয়া আর তার বহুবচন স্টেডিয়াম নিয়ে একটা চমৎকার পান আছে। সেটা অনুবাদে পুরো বাদ হয়েছে। ওই পাতাতেই আরেকটা শব্দের মজা আছে, গলেদের থামাতে ভেজালোদিস নতুন জটিল কিছু আইডিয়ার কথা ভাবছে আর ভাবছে, এমন সময় একটা আইডিয়া মাথায় এল, আর সেটা যে খুব সহজ, সেটা একসাথে বোঝাচ্ছে এই ভাবে – “It’s a piece of cake!” এটা সেভাবে অনুবাদ করা যায় নি। আবার গলেরা কেক পাঠিয়েছে শুনে ক্লিওপেট্রা বলছে, “How sweet of them!” – এটার ভাবটা রেখে অনুবাদ করাই যেত কিন্তু করা হয় নি।

এটাকে আমি অনুবাদের দোষ হিসাবেই ধরব – ভুল না – ৪১ পৃষ্ঠায় যখন অক্ষরিস চিঠি লেখার জন্য ভাষার নিয়মগুলো একবার ঝালিয়ে নিচ্ছে, তখন ইংরিজিতে ফাঁকে ফাঁকে শব্দগুলো হায়ারোগ্লিফিক্স-ই রাখা হয়েছে। কিন্তু বাংলায় সেসব বদলে প্রত্যয় কারক এসব আনা হয়েছে, যেগুলো হয়ত বাঙালি ছাত্রদের কাছে বেশি পরিচিত কিন্তু মিশরীয় ভাষায় প্রযোজ্য নয়।

এরকমই ভুল করে হয়েছে ৪৫ পৃষ্ঠায়, যখন স্পিচ বাবলের লেখা আর ক্যাপশনের লেখা উলটেই গেছে।

***************************************************************

আজ আমাদের প্রিয় কার্টুনিস্ট সুজনদার জন্মদিন। (আজ মেন্ডেল নামের সেই ক্ষণজন্মা পাদ্রীটিরও জন্মদিন, যিনি জেনেটিক্সের জনক হিসাবে পৃথিবীবিখ্যাত।) কিন্তু ভাগ্যের এমনই নিষ্ঠুর পরিহাস যে কয়েকদিন আগেই পিতৃবিয়োগের জন্য তাঁকে ছুটে যেতে হয়েছে ঢাকায়। তবুও শুভেচ্ছা জানিয়ে এই পোস্টটা উৎসর্গ করা হল দেশিক আর সেবন্তীর বাবাকেই।


মন্তব্য

মর্ম এর ছবি

আগেই একখানা বিশাল ধন্যবাদ লেখার জন্য, বাকি কথাবার্তা পরে হবে হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনাকেও সমানুপাতিক ধন্যবাদ হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

প্রথমেই প্রিয় কার্টুনিস্ট সুজন্দাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা হাসি

এবং অবশ্যই পাদ্রী মেন্ডেলকেও জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

লেখককে: কার্টুন পোস্ট দিয়ে কি পাঠিকা ভোলানোর চেষ্টা? চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

বালিকা? বালিকা কোত্থেকে এল? সব জায়গাতে বালিকা কল্পনা করেন মশাই, আপনার অবস্থা তো দেখি সুবিধার না!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

নিজের মন্তব্যখানা মাইক্রোস্কোপের নিচে ফেলে খুঁজলাম, অ্যান্টিবডি স্টেইনিং করে দেখলাম, ১৬এস আরএসএ অ্যানালাইসিস করেও দেখলাম, কই বালিকা শব্দটি খুঁজে পেলাম না অ্যাঁ কার কল্পনায় কীসের/কাদের রাজত্ব সে বিষয়ে আর কথা না বাড়াই চোখ টিপি হো হো হো

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

ওইসব প্যাঁচঘোঁচ রাখেন, পাঠিকা বলতে কাদের খোঁজ করতেছিলেন তা তো আর জানতে বাকি নাই! এমন সরল সাদাসিধা পোস্টটারে কোনদিকে টাইনা নিয়া যাইতেছেন দেখেন!
(বাকি কথা রেস্ট্রিক্টে...)

কৌস্তুভ এর ছবি

তানিম এহসান এর ছবি

সুজন ভাই, শুভ জন্মদিন!

আমি এসটেরিক্স পড়ি অনেক পরে, অনেক পরে, ছোটভাই- বন্ধু “আক্রেটন ;-)” আমাকে দিয়েছিলো পড়তে। প্রথম পড়ি “এসটেরিক্স এন্ড সন” তারপর সবগুলো পড়ার জন্য ঘুম হারাম! কি অসাধারন উইট প্রতিটি বই জুড়ে, নামে, অঙ্কনে - কোথায় নেই। আর কোথায় যায়নি এরা?

নামগুলো একদমই অন্যরকম, চিফের নাম “ভাইটালষ্ট্যাটিস্টিকস”, মাছ বিক্রেতার নাম “আনহাইজেনিক্স”, একটা জলদস্যূদলের সাথে তাদের প্রায়ই দেখা হতো, সে দলপতির নামটাও খুব মজার ছিলো, ভুলে গেছি! আবার পড়তে হবে সব!

আপনার টিনটিনোলজিস্ট পড়ে মনে হয়েছিলো কেউ যদি এসটেরিক্স নিয়ে লিখতো!! আপনিই লিখলেন, আপনাকে ধন্যবাদ।

কৌস্তুভ এর ছবি

কী করুম দাদা, সুজনদা আর অন্যরা হুকুম করলেন, তাই লিখতেই হল!

পাইরেটদের পাবেন এখানে

তানিম এহসান এর ছবি

লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ! আশ্চর্য, আপনি কি সুন্দর না চাইতেই লিঙ্ক দিয়ে দিলেন ।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

শুভ জন্মদিন সুজন চৌধুরী।
অধিকারী সায়েবের পোষ্ট তো বুড়ো ভোলানও বটে।
রোবটিক 'প্লিজড টু মিট উ' দাগ কাটলো।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

guest_writer এর ছবি

দারুণ, ব্যপক তথ্যবহুল। চমৎকার লাগল। শুভেচ্ছা- অণু

কৌস্তুভ এর ছবি

ওই তো, দেখেন, আমার পোস্ট পড়ে আপনার ভালো লাগে, আর আপনার পোস্ট পড়ে আমার ঈর্ষা লাগে। এটা কেমন বিচার! খাইছে

মন মাঝি এর ছবি

দারুন !

****************************************

কৌস্তুভ এর ছবি

থেঙ্কু!

যুধিষ্ঠির এর ছবি

টিনটিনের পরেই...!!!

এইটা একটা তীব্র পক্ষপাতদুষ্ট শুরু। রাগ কৈরা আর বাকি লেখা এখন পড়লাম না। "পরেই" কাইটা "পাশাপাশি" না লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।

সুজন দা'কে শুভেচ্ছা।

কৌস্তুভ এর ছবি

টিনটিনের প্রায় ১৫-২০ বছর পরে অ্যাসটেরিক্সের অনুবাদ বেরিয়েছে, পরে-ই তো কমু!

অপছন্দনীয় এর ছবি

অ্যাসটেরিক্স আমার খুব একটা পছন্দের ছিলো না কোনকালেই, তবে লেখাটা ভালো লাগলো। (নামগুলো অবশ্য মজার লেগেছিলো, বিশালাকৃতিক্স, এটাসেটামিক্স...)

টেকনিক্যাল ডিটেল তো হলোই, এবার টিনটিন বা অ্যাসটেরিক্সের দু'একটা চরিত্রের বর্ণনা দিয়ে ফেলুন না - আপনার লেখার স্টাইলে দিব্যি হবে।

কৌস্তুভ এর ছবি

অত পারিনে বাপু!

অপছন্দনীয় এর ছবি

তাহলে তো যাযাদিকে বলতেই হচ্ছে তাঁর ধারণা ভুল। কেউ লিখতে বললেই কৌস্তুভ কীবোর্ড নিয়ে বসে পড়ে ব্যাপারটা মোটেই তা নয় - বরং ব্যাপারটা রীতিমত জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশনের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় শয়তানী হাসি

সজল এর ছবি

সুজন ভাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা!

কনফেস করি, অ্যাসটেরিক্স একটাও পড়ি নাই, বন্ধুর কাছ থেকে চেয়ে চিনতে এনে টিনটিনের একটা বই মনে হয় পড়েছিলাম। আহ, ছোটবেলায় সবকিছুর দাম কেন এত বেশি থাকে!

আপনার বিদগ্ধ আলোচনা বরাবরের মতই তোফা হয়েছে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

অ্যাসটেরিক্সের অনুবাদ অত সুবিধার লাগত না বলে আমিও চেয়েচিন্তেই বা দুখণ্ডে সমাপ্য-থেকে কেটে পড়তাম, বই আর কিনিনি!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কমিক্স পড়ার বয়সটাতে একটু প্রতিকূল অবস্থায় ছিলাম, তাই কমিক্সসম্পর্কিত ধারণা তেমন বেশি না। তবুও ভালো লাগে। উত্তম লেখা।

সুজন ভাইকেও জন্মদিনের শুভেচ্ছা। শশাংক সাদী পাভেলের কাছ থেকে সুজন ভাইদের পরিবার সম্পকে এতো শুনেছি যে মনে হয় তারা যেনো কতো দিনের চেনা।

আচ্ছা, নিচের তাসবীরখানা কার?

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে, ঐটাই তো সুজন্দা!

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

বাহ, আপনিও দেখছি আমার মত কমিকবুক গিক।

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি গীক না, ওই একটু আগ্রহী আর কি...

নৈষাদ এর ছবি

লেখাটা ভালো লাগলো। তবে আমার লিস্টে যদিও এক নম্বরে টিনটিন, অ্যাসটেরিক্স তার অনেক পরে হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দুর্দান্ত পোস্ট, যথারীতি...

কৌস্তুভ এর ছবি

লইজ্জা লাগে

অমিত এর ছবি

চমৎকার হাততালি
অ্যাসটেরিক্স-এর মত এমন উইটি নাম দিতে আমি আসলে আর কোথাও দেখি নি।

alea jacta est হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

সে কথা সত্যি... আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

tanjim এর ছবি

থ্যাঙ্কু কৌস্তভ দা......গণদাবির জোয়ারে ভালই পোস্ট লিখেছেন দেখি......তবে টিনটিনের মত অতটা দরদ যে নেই অ্যাস্টেরিক্সের জন্য তা কিছুটা হলেও আঁচ পেলুম...তবুও বিশাল প্রাপ্তি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠিক ধরেছেন দাদা!

তিথীডোর এর ছবি

ক) সুজন্দাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। হাততালি
খ) পোস্ট তোফা! চলুক
গ) 'পাঠিকা/বালিকা' সংক্রান্ত ইস্যুতে শুভকামনা। খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কৌস্তুভ এর ছবি

কিসের শুভকামনা? এনারও মাথাখারাপ হইসে!

অনিকেত এর ছবি

কৌস্তুভ'দা, আপ্নে তো বস মানুষ ভাই! একেবারে পাংখা হয়ে গেলাম বস---
শুভ জন্মদিন সুজনদা কে!
মেন্ডেল'দা কে একটা চওড়া স্যালুট!!

কৌস্তুভ এর ছবি

লইজ্জা লাগে কী যে কন!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

নাহ, অনেক আগেই পোস্টটা দেখেছিলাম- এবার তাড়িয়ে তাড়িয়ে পড়লাম।

ছোটখাটো অনেক জিনিস তুলে এনেছেন দেখি, মজা লাগলো পড়ে। এস্টেরিক্সকে কিন্তু আমার কাছে টিনিটিনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত 'ম্যাচুরড' কমিকস বলে মনে হয়। ভুল হতে পারে, তবে ওই যে টুকটাক ইতিহাস কি ভূগোলের তত্ত্ব মজার ছলে নিয়ে আসাটা খুব ইন্টারেস্টিং লাগে আমার। সবচে মজা লাগে ওই ব্যাটা জলদস্যুটাকে, আসতে যেতে ফি বার যে ওবেলিক্সের পিটুনি খেয়ে জাহাজ খোয়ায় হাসি

আর আপনি তো বেশ লেখেন, অনেকটা কলরবিক্সের গানের মতোই কিন্তু দেঁতো হাসি আপনার হবে, আপনার প্রতিভা আছে - বেশ বোঝা যায় দেঁতো হাসি

সুজনদার জন্যে রইলো জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

কৌস্তুভ এর ছবি

কলরবিক্সের গানের মতোই!!!!!!! মন খারাপ

ফাহিম হাসান এর ছবি

সত্যিকার অর্থেই একটা হৃষ্টপুষ্ট পোস্ট। তবে টিনটিন পড়তে চোখে আরাম লাগে বেশি, স্পেইসের ব্যবহার খুবই দক্ষতার সাথে করা হয়েছে। অ্যাস্টেরিক্সে ডিটেইল অনেক বেশি। আমার কাছে কিঞ্চিৎ হিজিবিজিগিবিজিবিহিজিবিজি লাগে।

কৌস্তুভ এর ছবি

পোস্টে হৃষ্ট হয়েছেন তাহলে? দেঁতো হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি

অবশ্যই দেঁতো হাসি

আয়নামতি1 এর ছবি

১। সুজনদা কে জন্মদিনের অনেককক শুভেচ্ছা!
২। তোফা পোষ্ট (হতেই হবে, তবে আমি আজকে পড়তে পারছিনা)
৩। পাঠিকা/বালিকা সংক্রান্ত ইস্যুতে শুভকামনা দেঁতো হাসি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

খুব তথ্যবহুল একটা পোষ্ট। শুরুতে ভাবছিলাম ছোতদের পোষ্ট হো হো হো

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

আশালতা এর ছবি

অ্যাস্টেরিক্স আমারও পড়া নেই মন খারাপ ঐ সময়টায় হাতের কাছে পাইনি আসলে। কিন্তু কৌতূহলটা আছে এখনও। এখানে পাওয়া যায় কিনা জানিনা। পাওয়া গেলে আরেকদিন যেদিন ভয়ানক মন খারাপ থাকবে সেদিন একসাথে সব কটা কিনে ফেলতে হবে। পোস্টে আমিও আশা করে এসেছিলাম যে চরিত্র গুলোর বর্ণনা বা পরিচয় পাওয়া যাবে, নেই দেখে একটু দমে গিয়েছি কিন্তু।
লিঙ্ক দেখে পড়তে গেলাম লাফ দিয়ে, কিন্তু শুধুই মলাটের ছবি আসে, বাংলায় ডাউনলোড না করে পড়তে পাওয়া যায়না কোথাও ?

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কৌস্তুভ এর ছবি

বাংলা অ্যাসটেরিক্স ইবুক অনলাইনে নেই বোধহয়... মন খারাপ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. শুভ জন্মদিন কালাতো দা'! দীর্ঘায়ু হোন, কর্মচঞ্চল থাকুন।

২. শুভ জন্মদিন মটরশুঁটি বাবা! আপনার পেশার লোকেরা কবে যে আপনার আবিষ্কৃত জ্ঞান উপলদ্ধি করবে!

৩. বাংলা অ্যাসটেরিক্স পড়া দূরে থাক, চোখেও দেখিনি। সবজান্তা'র কাছে শুনেছিলাম, কিন্তু আগ্রহ বোধ করিনি।

৪. উগ্র জাতীয়তাবাদ, ফরাসী উন্নাসিকতা, বর্ণবাদ প্রভৃতি দোষে দুষ্ট হলেও কমিকের ক্ষেত্রে আমার পছন্দের তালিকায় অ্যাস্টেরিক্সের ধারেকাছেও অন্য কোন কমিক নেই। এর এক একটা এপিসোড নিয়েই লম্বা পোস্ট দেয়া সম্ভব। ফেসবুকে কমিক নিয়ে এক আলোচনায় বলেছিলাম, অ্যাস্টেরিক্স মহান রচনা নয়, তবে দুরূহ রচনা। এর ছবি বাদ দিলেও শুধু গল্প, ভাষা, উপস্থাপনা'র প্রতিটি ক্ষেত্র এমন এক উচ্চতায় উঠেছে যেখানে পৌঁছানো কঠিন। অ্যাস্টেরিক্সের মুভি বানানোর অপচেষ্টা ভবিষ্যতে আর কেউ না করলে খুশি হবো।

৫. বেশ খাটাখাটুনিমূলক পোস্ট দিয়েছেন, কামনা করি প্রজাপতি শীঘ্রই আপনার কপালের গিট্টু ছুটিয়ে দেবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার পেশার লোকেরা কবে যে আপনার আবিষ্কৃত জ্ঞান উপলদ্ধি করবে!

চলুক

দিগন্ত মুদি এর ছবি

অ্যাসটেরিক্সে আমরা দু ভাই কেন জানি না , একটু বেশীই স্ফূর্তি পেতাম। টিনটিন তো ছিলোই, তবে অ্যাসটেরিক্সের ঐ দশটা অনুবাদ বই সবসময় মাথার কাছে থাকতো(এখনও আছে)। ''অ্যাসটেরিক্স ও গথদস্যু'র একটা লাইন তো এখনো আমরা দু ভাই মনে পড়লেই সুর করে হেঁকে উঠি :

প্রাণ আইঢাই, শরবত খাই!

ওবেলিক্সই মনে হয় বলেছিলো কথাটা, গথদস্যুদের সাথে ছদ্মবেশে প্যারেড করতে করতে দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠিক, ঠিক। হাসি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

কার্টুন পড়ি/দেখি না কতদিন!!!! ভাইয়া তোমার সুবাদে আবার কতকিছু জানা হয়ে যাচ্ছে.......... চলুক ........কার্টুন খুব পছন্দ বুঝি? দারুণ লেখো সবসময়.............আর আলোচনা............. চলুক

ইস্ সুজনদাকে শুভেচ্ছা জানাতে দেরি হয়ে গেল................জানো তো পরীক্ষা চলে...................ম্যান্ডেলা সাহেবকেও.............

অট: 'বৈচিত্র্য' লিখলে না যে? তুমি তো বানান-ব্যাকরণ খুব ভালো জানো, তাহলে কি 'বৈচিত্র'ই কোনভাবে সঠিক? আমি যতদূর বুঝি বিচিত্র+ষ্ণ্য = বৈচিত্র্য(বিশেষ্য) হয়। কোনভাবে কি 'বৈচিত্র' বিশেষ্য হয়? তুমিই ভালো বলতে পারবে!!!

কৌস্তুভ এর ছবি

ভাই, উত্তর বড় দেরি করে দেওয়া হয়ে গেল মন খারাপ

কার্টুন পছন্দই বটেক, তুমি ঠিকই ধরেছ! তুমারও তাই নাকি গো?

আমি হয়ত সচরাচর খেয়াল করে লিখলে বৈচিত্র্য-ই লিখব, তবে আমার জানামতে বৈচিত্র-ও সঙ্গত বানান। এইখানেও তাই বলছে। তাও আমার বানানের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য তোমাকে একটা বড় পুরষ্কার দেওয়া হল দেঁতো হাসি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

হাসি না না সমস্যা নেই তো ভাইয়া, উত্তর পেলেই খুশি!!! দেঁতো হাসি

হাসি হুমম, তবে এখন যে হয়ে উঠে না এই যান্ত্রিক জীবনে!!! মন খারাপ শৈশবে এরাইতো কত আপনার ছিল!!!

সে কী এটা কী করলে এই পেটুক ভাইটাকে এরকম উপহার দিলে!!! দেঁতো হাসি এখন যে জিহ্বাটা কেমন আনচান করে উঠছে!!! হো হো হো
আর বানান সে আমার কিছুই মনে নেই, জানো তো যে বিষয়ে পড়ি সেখানে বাংলার চর্চা নাই, বানান ভুলে গেছি সব!!! শুধু 'ষ্ণ্য' সহ আরো কিছু প্রত্যয়ান্ত শব্দ এখনও মনে আছে, সেগুলো যদি কেউ লিখতে গিয়ে অসতর্ক হয় তবে ধরতে পারি, এছাড়া আর বানানে মুরোদ নেই!!! আর অভিধানে যখন আছে তখন 'বৈচিত্র' ও বৈধ!! তাইতো বলি কৌস্তুভ ভাইয়ারতো ভুল হবার কথা নয়!!! হাসি

ওডিন এর ছবি

হপ্তাখানেক সচলে না ঢোকার পরিণাম- এইরকম অছাম একটা লেখা মিস করা মন খারাপ

অ্যাসটেরিক্স নিয়ে লেখার জন্য, লেখকের জন্য বিশাআআআআল একটা কোলাকুলি

অপছন্দনীয় এর ছবি

একটু সামলে, আপনার কাছ থেকে ফুল পাওয়ার কোলাকুলি পেলে বেচারা কৌস্তুভকে আপনার হাসপাতালেই ভর্তি হতে হবে শেষটা, একগাদা ভাঙা হাড়গোড় নিয়ে মন খারাপ

কৌস্তুভ এর ছবি

হো হো হো

কোলাকুলি ওডিন্দা

গৌতম এর ছবি

ক্ষমা চাইছি ভাই, বাংলা হরফে লিখতে পারি না, Google-এর মাধ্যমে লিখেতে অনেক ঝামেলা |

The Asterix series has been an all-time favourite, for the subtle humour, the names, the settings....not much lost in the English translation.

কৌস্তুভ, your analysis is delightful to read.

ষষ্ঠ পাণ্ডব blames "উগ্র জাতীয়তাবাদ, ফরাসী উন্নাসিকতা, বর্ণবাদ" | i'd like to think, that all of this + the anachronisms (including potatoes out of season হো হো হো long before Raleigh) are deliberate, and add to the charm. Incidentally, it was in the 16th century, and Sir Francis Drake should perhaps take the credit of introducing this tubular to the British Isles. In any case, the Spanish had already brought it into Europe.

stadia is actually the plural for stadium, and not the other way around.

OOPS! Just realised that বাংলা fonts are allowed here.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।