আজ তুমি মেঘে মেঘে যেমন ইচ্ছে তেমন

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি
লিখেছেন পান্থ রহমান রেজা (তারিখ: রবি, ০৩/০১/২০১০ - ৫:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ কয়দিন হয় কিছু লিখি না। প্রতিদিন ভাবি, কিছু লিখবো। কলম-খাতা খুলে বসি। কখনো কম্পুর উইন্ডো। কিন্তু কিছু লেখা হয় না। সাদা পড়ে থাকে পৃষ্ঠা। কাফনের কাপড়ের মতো।

বন্ধুর বিয়ে খেতে মাসখানেক আগে বাড়ি যাই। বইয়ের তাকের ধুলো ঝেড়ে আবিষ্কার করি, একটা পুরোনো ডায়েরি। ছড়ানো কবিতা, প্রতি পাতায়। সন-তারিখসহ। তারিখ দেখে মনে পড়ে সদ্য সেকেন্ডারি স্কুল পেরুনো বালক আমি!
বালক প্রতিদিনই লিখে যেতো আবজাব কবিতা!

অতঃপর কলেজ পাড়ি দিই একদিন। পা রাখি ইউনিতে। লেখালিখি তখনই পালায়। কবিতা তো আরো আগে। একবার টিউশনি গেলে আর পাই না। কিছুদিন অর্থকষ্ট যায়। টাকা জোটাতে পত্রিকায় প্রদায়কগিরি করি। ফরমায়েশি লেখালিখির শুরু সেই থেকে।

তারপর একদিন অন্তর্জালের দেখা পাওয়া। আবার মনের আনন্দে লেখা। কিন্তু কবিতা কন্যার দেখা আর মেলে না। তবে একদিন আসে সে। মাঝরাতে। ভীষণ চুপিচুপি। একটা ঘটনার পিছু পিছু। কবিতাগুলো ফেসবুকে দিলে কেউ কেউ সচলে দিতে বলেন। কিন্তু সাহসে কুলায় না।

আজকে কিছু একটা লিখতে ইচ্ছে করছে। যেমন ইচ্ছে তেমন টাইপ। ইচ্ছের পালে হাওয়া লাগিয়ে সেই কবিতাই না হয় দিলাম আজ!

______ ______ ______

দীর্ঘশ্বাস থেকে জন্ম নেয় যে কথামালা, তার একটি

মেয়েটার রাত জাগার অভ্যাস।

ভেবেছিল নির্ঘুম রাতে
কেউ একজন সঙ্গ দিক
আবৃত্তি করে শোনাক
প্রিয় পঙক্তিমালা।

ভেবেছিল পরীক্ষার কেঁজো নোট
কেউ একজন লিখে দিক
কিংবা ফটোকপি করে দিক
লেকচার থিয়েটারের ভিড়-বাট্টা এড়িয়ে।

এও ভেবেছিল মধ্যদুপুরে করিডোরে
কেউ একজন দাঁড়িয়ে থাকুক
ক্লাশ শেষের অপেক্ষায়।

তবে মেয়েটি কখনো চায়নি কারো প্রেমিকা হতে
চায়নি অন্য কোনো বাহুল্য পরিচয়!

আর ছেলেটা প্রেমিকা ভেবে তাকে
আগুনে ঝাঁপ দিয়েছিল
পুড়ে খাক হয়ে শিখেছিল
‘যাতনা কাহারে বলে’।

______ ______ ______

তোমার নীরবতায় ফেরা

ধরো ফোনের ওপাশে তুমি
কথা বলছো না
আর আমি তোমার নীরবতার ভাষা খুঁজতে গিয়ে
আরো কিছুটা বয়স বাড়ালাম!

তখন তো মাঝরাত
আকাশে পরীদের আনাগোনা
কত যে ডাকলো তারা!

সব উপেক্ষা করে
তোমার নীরবতায় আবার ফিরলাম।

উপেক্ষা আছে জানি
আছে তীব্র চোখের ভ্রুকুটি
সাবেকি রাজার মতো রক্তচক্ষু আছে জেনেও
তোমাকেই গন্তব্য করেছি স্থির।

______ ______ ______

[বোনাস কবিতা, কলেজে পড়ার সময়ে লেখা]

দীপান্বিতা, তোমাকে বলার ছিল

বলি বলি করে না বলার শোক
পুষি দিনরাত
হে মেয়ে দীপান্বিতা
অনেক কথা
তোমাকে বলার ছিল।

আজো এই মধ্যবয়সে এসে
তাই ভাবি
ভুলটা কি আমারই ছিল
হয়তোবা তাই;
ভেবে ভেবে রাত্রি পোহাই।

জনকের মুখ পানে চেয়ে
তোমাকেই মনে পড়ে
কেননা জনক শুধু গৃহচারী হতে বলেন;
আর আমার গৃহ বলতে তো
তোমাকেই বুঝি।

যৌবন পোড়াও এখন হে মেয়ে দীপান্বিতা
পবিত্র গ্রন্থের শপথে
আমি পোড়াই একা একা।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগল পান্থ।
মধুবন্তী

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ধন্যবাদ মধুবন্তীদি!
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

তিথীডোর এর ছবি

প্রথম কবিতাটা আগেই পড়েছি ফেসবুকে...
কবিতা এবং বাস্তব কন্যাদের নিয়মিত দেখা মিলুক নিয়মিত
সুম্মা আমিন!

--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

কবিতা আমার না, এটা আমি বুঝে গেছি! তাই আর কারো অপেক্ষায় নাই! দেঁতো হাসি
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

তিথীডোর এর ছবি

থুক্কু ,"নিয়মিতের" ডাবল ডোজ পড়ে গেছে!

--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নুরুজ্জামান লাবু এর ছবি

কবিতা ভালো লাগল...

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আরে লাবু, আপনি কই থাইক্যা। সচলে এই প্রথম দেখলাম মনে হয়!
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

বালক এর ছবি

কেননা জনক শুধু গৃহচারী হতে বলেন;
আর আমার গৃহ বলতে তো
তোমাকেই বুঝি।

এই লাইনগুলো ভালো লাগলো...

*************************************************************************
"জীবন কিছুটা যাতনা শেখায়__ক্ষুধা ও খরার এই অবেলায়__অতোটা ফুলের প্রয়োজন নেই।"

____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

বালক, আপনার কথা এইখানে একটু কমু নাকি! দেঁতো হাসি
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

বালক এর ছবি

কি কৈবি বেটা?
আমার মুখ নাই? খাইছে
*************************************************************************
"জীবন কিছুটা যাতনা শেখায়__ক্ষুধা ও খরার এই অবেলায়__অতোটা ফুলের প্রয়োজন নেই।"

____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"

ফারুক হাসান এর ছবি

খুব খুব খুব ভালো কবিতা লেখেন আপনি। চলুক

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

লইজ্জা লাগে
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

কল্পনা আক্তার এর ছবি

জনকের মুখ পানে চেয়ে
তোমাকেই মনে পড়ে
কেননা জনক শুধু গৃহচারী হতে বলেন;
আর আমার গৃহ বলতে তো
তোমাকেই বুঝি

এই লাইনগুলো বেশী ভালো লেগেছে। আর তুমি কিন্তু বেশ কয়দিন না বেশ অনেক দিন ধরেই লিখনা।
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা


........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

সেজন্যই তো আবজাব লিখলাম! হাসি
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

নাশতারান এর ছবি

প্রথম দু'টো বেশি ভালো লাগলো। প্রথমটা বেশি চেনা চেনা।
নিয়মিত লিখুন। হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হ! নিয়মিত তো লিখবার চাই। কিন্তু হয়ে ওঠে না!
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এতো প্রেমের কবিতা লিখেও, প্রেম তো জোটাইতে পারলি না একটাও... বেহুদা... আর লেখিস না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

দেইখেন, একদিন আমিও প্রেমিকা নিয়া আপনার সামনে দিয়া ডাট মাইরা চলে যাবো! হাসি
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

কবিতাগুলো ভালো লাগলো চলুক

-------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ধন্যবাদ!
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

নিবিড় এর ছবি

পান্থদা আপনার কবিতা ভাল পাইছি হাসি

অটঃ প্রথম কবিতাটা পড়ে একটা প্রশ্ন মনে আসল, ক্যাম্পাসে কত ফাউ ফাউ ফটোকপি করছেন খাইছে


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

এইরে নিবিড়ের তো প্রশ্নব্যাংক খুলে গ্যালো! এখন একটার পর একটা প্রশ্ন আসতেই থাকবে। আপাতত, চুপ থাকাই উত্তম! চোখ টিপি
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

ভালো লাগল।
----------------------------------------
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
----------------------------------------
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ধন্যবাদ আশরাফ ভাই!
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আপনি আসলেই বস্‌! চলুক

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

খাইছে
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

তানবীরা এর ছবি

তাওতো বহুদিন পর আমাদের পান্থ কিছু লিখলো।

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

গপ্পের মালমশলা দিলাম, সেটার কী করলেন তাতাপু।
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

প্রথম কবিতাটা বেশি ভাল লাগল

অতিথি লেখক এর ছবি

কবিতা লিখতে মুঞ্চায়

আমার নিক : সাধারণ

অতিথি লেখক এর ছবি

তিনটেই সুন্দর তবে প্রথম দু'টো অসামান্য।

লিখেছেন:

তবে মেয়েটি কখনো চায়নি কারো প্রেমিকা হতে
চায়নি অন্য কোনো বাহুল্য পরিচয়!

আর ছেলেটা প্রেমিকা ভেবে তাকে
আগুনে ঝাঁপ দিয়েছিল
পুড়ে খাক হয়ে শিখেছিল
‘যাতনা কাহারে বলে’।

লিখেছেন:

weight:bold">তোমার নীরবতায় ফেরা

ধরো ফোনের ওপাশে তুমি
কথা বলছো না
আর আমি তোমার নীরবতার ভাষা খুঁজতে গিয়ে
আরো কিছুটা বয়স বাড়ালাম!

লিখেছেন:

উপেক্ষা আছে জানি
আছে তীব্র চোখের ভ্রুকুটি
সাবেকি রাজার মতো রক্তচক্ষু আছে জেনেও
তোমাকেই গন্তব্য করেছি স্থির।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।