শাশ্বত কবিতা

পলাশ দত্ত এর ছবি
লিখেছেন পলাশ দত্ত (তারিখ: সোম, ২৪/১১/২০০৮ - ৩:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কবিতাগুলির ভাষান্তরিত পাণ্ডুলিপিটি নিজের সঙ্গে বেশ ক’দিন বয়ে বেড়িয়েছিলেন উইলিয়াম বাটলার ইয়েট্স্। ট্রেনে-বাসে-রেস্টুরেন্টে ব’সে পড়েছেন দিনের পর দিন। আর সামনে অপরিচিত কোনো মানুষ পড়লেই লুকিয়ে ফেলেছেন সযতনে। তিনি চাইছিলেন না যে কেউ টের পাক ওই কবিতাগুলি তাকে কী অসম্ভব নাড়া দিচ্ছে। কবিতাগুলি কেনো তাকে এতোটা আলোড়িত করছিলো তার একটা কারণও অবশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি : সারা জীবন ধ’রে যে-জগৎ রচনার স্বপ্ন স্বয়ং দেখে আসছিলেন ইয়েট্স তারই সন্ধান তিনি পেলেন ওই সব কবিতায়। কবিতাগুলি ছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। পাণ্ডলিপিটির নাম ‘গীতাঞ্জলি’। ১৯১৩ সালে ম্যাকমিলান থেকে প্রকাশিত ‘গীতাঞ্জলি’র ভূমিকায় নিজের এই রবীন্দ্রাবিহ্বল অবস্থার কথা অসংকোচে জানিয়েছিলেন ইয়েট্স্। প্রায় সব বাংলাভাষীই জানেন যে ওই কবিতাবইয়ের জন্য সেবছরই সাহিত্যের নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন রবীন্দ্রনাথ। কবিতার বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯১২ সালে। ‘গীতাঞ্জলি’ ছাড়াও আরো কযেকটি বই থেকে বাছাই ক’রে নিজেই নিজের কবিতাগুলির ইংরেজি ভাষান্তর করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ইয়েট্স্রে ভূমিকা নিয়ে বেরুনো ‘গীতাঞ্জলি’টিই অবশ্য ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’র প্রথম প্রকাশ নয়। এর আগের বছরই ‘‘গীতাঞ্জলি’’ নামের ওই বইটি একবার ছাপা হয়েছিলো ইন্ডিয়া সোসাইটি অব লন্ডনের টাকায়।

কিন্তু কোন্ ‘গীতাঞ্জলি’?- আপাতমূর্খের এই প্রশ্ন হেলায় উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। বিশ্বভারতী থেকে শুরু করে ফুটপাথের ১০ টাকার ‘গীতাঞ্জলি’র কোনোটাই রবীন্দ্রনাথের ওই নোবেল-পাওয়া-‘গীতাঞ্জলি’ নয়। বাংলা ভাষায় তিনি ওই নামে একটি কবিতার বই লিখেছিলেন বটে। কিন্তু ইংরেজিতে ভাষান্তরিত হওয়ার পথে ‘গীতাঞ্জলি’ও আর সেই ‘গীতাঞ্জলি’ থাকেনি যদিও নামটা থেকে গেলো একই। ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’তে শুধু বাংলা ‘গীতাঞ্জলি’র কবিতাই ঠাঁই পায়নি, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরো কয়েকটি বইয়ের কবিতা। মোট একশ’ তিনটি কবিতার সংকলন ‘গীতাঞ্জলি’ নিয়ে নাড়িয়ে দিলো ইংরেজিভাষী কবিতাপাঠকদের। যে-দোলা গিয়ে লাগে স্পেনের প্রবল কবি হুয়ান রামন হিমেনেথের মনে; যিনি নিজেও সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাবেন ১৯৫৮ সালে। অদ্ভুত এক প্রক্রিয়ায় তিনিও শুরু করেন রবীন্দ্রনাথের কবিতার ভাষান্তর। হিমেনেথের ইংরেজিতে দখল তেমন ভালো ছিলো না। কিন্তু তার স্ত্রী সেনোবিয়া দে কামপ্রুবি ছিলেন ইংরেজিভাষী। রবীন্দ্রনাথের কবিতার আরিক ইংরেজি ভাষান্তর করেন সোনোবিয়া, তারপর সেই ভাষান্তরকে প্রায় নিজের মতো ক’রে গ’ড়ে নিয়ে স্পেনীয় ভাষার কবিতা ক’রে তোলেন হিমেনেথ। এইভাবে যৌথ প্রক্রিয়ায় কবি আর কবিপতœী রবীন্দ্রনাথকে পৌঁছে দেন স্পেনীয় পাঠকদের কাছে। হিমেনেথ দম্পতির রবীন্দ্রনাথ ইংরেজি রবীন্দ্রানাথের চেয়েও শক্তিশালী। কোনো অজ্ঞাত কারণে ধীরে ধীরে রবীন্দ্রনাথের প্রতি পশ্চিমের আগ্রহ এখন প্রায় শূন্যে নেমে এলেও স্পেনীয় অঞ্চলে রবীন্দ্রনাথের প্রতি আগ্রহে ওই রকম বিপুল ভাটা এখনো পড়েনি।

২.
বাংলাদেশের মানুষও কি খুব পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা? তরুণ কবিতাপ্রয়াসীরা কি আজকাল ছুঁয়েও দেখে তাকে? দেখে না খুব একটা। কেনো দেখে না? দেখে না কারণ রবীন্দ্রনাথ অনেক পুরনো হয়ে গেছেন। তার ভাষা অনেক প্রাচীন। তার ভাষা বড়ো বেশি পেলব মসৃণ। ভাষায় ঝংকার নেই, আঘাত নেই। সূচখোঁচার তীব্রতা নেই। তার কবিতার বিষয়বস্তু আজ অনাধুনিক (যদিও কবিতার বিষয়বস্তু থাকে কি না সে আর এক তর্কের বিষয়)। তাঁর কবিতা তো এইরকম :
আমারে তুমি অশেষ করেছ
এমনি লীলা তব।
ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ
জীবন নব নব।
কত যে গিরি কত যে নদীতীরে
বেড়ালে বহি ছোটো এ বাঁশিটিরে,
কত যে তান বাজালে ফিরে ফিরে
কাহারে তাহা কব।

তোমারি ওই অমৃতপরশে
আমার হিয়াখানি
হারালো সীমা বিপুল হরষে
উথলি’ ওঠে বাণী।
আমার শুধু একটি মুঠি ভরি
দিতেছ দান দিবসবিভাবরী,
হল না সারা কত-না যুগ ধরি,
কেবলই আমি লব।
[২৩ সংখ্যক কবিতা :: গীতিমাল্য / এক সংখ্যক কবিতা :: ‘গীতাঞ্জলি’]

কোমল শব্দ ব্যবহারের এই ধরন রবীন্দ্রনাথের কবিতার দোষ হয়ে উঠছে আজ। শব্দপুঞ্জের এই স্রোতশীলতার কারণে তাঁর কবিতাকে দূরের ব’লে সরিয়ে রাখে তরুণ কবিতাপ্রয়াসীরা। এই সব কবিতা সুপ্রভ শব্দের ঐশ্বর্য। এই সব শব্দ তাদের কানে-মনে আজ প্রাচীনতার নিদর্শন মাত্র। কিন্তু এদের কি দায় নেই এই ধরনের কবিতার স্বাদ নেয়ার মানসিকতা অর্জনের? কবিতাপ্রয়াসী হিসেবে এদের কি দায় নেই রবীন্দ্রানথ ঠাকুরের কবিতার সুন্দরকে উপভোগ করতে শেখার? তবে শুধু আজ নয়। রবীন্দ্রনাথকে বুঝতে না পারার ব্যর্থতা এবং সেই ব্যর্থতারই ফল হিসেবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা না পড়া প্রবণতাটা যুগে যুগেই চলে আসছে। ১৯৬২ সালে ভারতের মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তখনকার তরুণদের উদ্দেশ্যে কয়েকটি কথা বলেছিলেন বুদ্ধদেব বসু যা আজকের কালের তরুণদেরও শোনা উচিত : “আজকের দিনের সেই সব তরুণ, যাঁরা বহু বিভিন্ন কাব্যরীতির সঙ্গে পরিচিত, এবং রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে উৎসাহী নন, বিশেষত তাঁদের উদ্দেশে দু-একটি কথা বলতে চাই। এমন কোনো কবি নেই যিনি আমাদের সব আকাক্সা মেটাতে পারেন, এবং যে- কোনো একজন কবির কাছে আমরা শুধু তা-ই দাবি করতে পারি, যা তাঁর অধিকারভুক্ত। রবীন্দ্রনাথে কী নেই, কোন প্রত্যাশা তাঁর পে অবান্তর, সেইটে প্রথমে বুঝে না নিলে আমরা তাঁর প্রতি সুবিচার করতে পারবো না। তাঁর কবিতায় তীব্রতা নেই, নেই কোনো বিসংবাদী সুর, তাঁর কোনো পঙ্ক্তি হাতুড়ির মতো আঘাত করে না। ...। নিষ্করুণ বা কঠিন হওয়া তাঁর স্বভাবে নেই ; যখন তিনি গভীরতম বেদনার কথা বলেন তখনও তাঁর স্পর্শ মখমলের মতো কোমল। ... তিনি নিরন্তর কাব্যোচিত শব্দ ব্যবহার করেন, এমন শব্দ, যা কখনো পরস্পরের প্রতিবাদ করে না, সৌন্দর্যের সঙ্গে আবহমানভাবে সম্পৃক্ত শব্দ দিয়েই রচনা করেন সৌন্দর্য। কোনো রুগ্ন গোলাপ, মৃত মানুষের চু দ্বারা গঠিত কোনো মুক্তো, কোনো মকরদীর্ণ সমুদ্র বা কবরের মতো বাসরশয্যা- এই সমস্তই তাঁর জগতের বহিভূর্ত ;...। রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে এই কথাটি প্রথমে মেনে নেয়া দরকার।”

ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’ পড়তে গিয়ে অবশ্য এই কথা মেনে নেয়ার দরকার হয় না। সেখানে কবিতাগুলো টানা গদ্যে ভাষান্তরিত। সেখানে ভাষা ইংরেজি বলে স্বাভাবিক ভাবেই কবিতাগুলো বাংলার মতো তানপ্রবণ নয়। ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’ পড়তে গেলে শব্দের অর্থের আগে শব্দের সুরের প্রলেপ পড়ে না মনে। যদিও রবীন্দ্রনাথের নিজের করা ভাষান্তরের মান নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ চালু আছে বিদ্যোসাহী মহলে। তবু আমাদের মতো সাধারণ পাঠকের কাছে তাঁর অশক্ত ইংরেজিকেই সরল-আকর্ষক এবং সহজাত বলে মনে হয়। ভাষান্তরের সময় উদ্দীপিত হয়ে থাকা রবীন্দ্রনাথের প্রাণের একটা প্রবাহপ্রাচুর্যই যেনো টের পাওয়া যায় তাঁর নিজের ‘গীতাঞ্জলি’তে।

বাংলা ‘গীতাঞ্জলি’ থেকে তবে কি প্রাপ্তির সম্ভাবনা কম! পড়বার সময় যদি ওইসব কবিতার গীত সুর মনে ঘুরে ঘুরে আসে তবে কমলে কমতেও পারে। তাই একটু সতর্ক থেকে সুরকে দূরে সরিয়ে রেখে কবিতাকে কবিতা হিসেবে পড়বার চেষ্টা চালানোটাই শ্রেয়। যেমনটা বলেছিলেন বুদ্ধদেব : “সুর যেমন স্নায়ুতন্ত্রীকে আনন্দ দেয়, তেমনি তা চিত্তবিপেও ঘটাতে পারে, আর ‘গীতাঞ্জলি’র মতো স্বয়ংসম্পূর্ণ রচনা পেলে আমরা তাতে আরো কিছু যোগ করতে চাই না, প্রার্থনা করি তার সৌন্দর্যের নিঃশব্দ ও অব্যবধান অভিঘাত।”


মন্তব্য

নির্বাক এর ছবি

খুবই ভালো লাগলো আপনার এই লেখাটি। বিশেষ করে গীতাঞ্জলি বিষয়ক আসল তথ্যটির জন্য ধন্যবাদ।

_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমিও অনেক অজানা বিষয় জানতে পাড়লাম।
ধন্যবাদ পলাশ দা।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নজমুল আলবাব এর ছবি

তোমার কাজ তাইলে আগাচ্ছে। শুভকামনা থাকলো। আমি জানি তুমি সফল হবে।

আচ্ছা এই যে সচলে যেসব রচনা দিচ্ছ তুমি, এগুলো কি খসড়া? পড়তে মাঝে মাঝে খটকা লাগে। কই লাগে, কেমনে লাগে জিগাইওনা। উত্তর দিতে পারবো না।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

পলাশ দত্ত এর ছবি

না হে, এটা আমার ওই কাজের অংশ না।

না, এটা কোনো লেখার খসড়াও না। হাসি

খটকা লাগা ভালো। নাইলে তো পড়ার আগ্রহ হারায়া ফেলবা। খটকা ধরতে পারবা- এই আশায় তো অন্তত মাঝেমাঝে আমার লেখা পড়বা তুমি চোখ টিপি

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

তারেক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো লেখাটা। বুদ্ধদেব বসুর কথাগুলো দারুন এবং মাথা পেতে গ্রহণ করার মত সত্য কথা।

আমার কাছে গীতাঞ্জলির একটা ইংরেজি অনুবাদ আছে, সফটকপি। হার্ডকপি নাই। কোত্থেকে নামাইসিলাম ভুলে গেছি।থাকলে লিংক দেওয়া যেত
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

নির্বাক এর ছবি

সেই সফটকপিটা কি আপনার কাছ থেকে পাওয়ার কোন উপায় আছে? উপকৃত হইতাম।

_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

পলাশ দত্ত এর ছবি

নির্বাক,
আপনি এই লিঙ্কে যান : http://www.archive.org/details/gitanjalisongof00yeatgoog

পুরো বইই পাবেন।

পুনশ্চ : একটা মন্তব্য জবাব হিসেবে দিয়েছিলাম। ওটা জবাব হিসেবে প্রদর্শিত হচ্ছিলো না। জবাব হিসেবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে গিয়ে আপনার একটা মন্তব্য মুছে গেছে। ক্ষমাপ্রার্থী।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

রণদীপম বসু এর ছবি

লেখা ভালো হয়েছে।

আপনার ওয়ার্ড ফাইল খুব সম্ভবত মুর্শেদের বাংলা ওয়েব টুলস দিয়ে ইউনিকোড কনভার্ট করা। আমার পিসিতেও ওই টুলস দিয়ে কনভার্ট করলে 'ক্ষ' অক্ষরটি বাদ পড়ে যায়। এডিট করে 'ক্ষ' অক্ষরটিকে বসিয়ে দিতে হয়।
ব্যস্ততার ফাঁকে অবসর পেলে কিঞ্চিৎ এডিট করে ক্ষতটা সারিয়ে নিলে লেখাটা পুরোপুরি অক্ষত হয়ে উঠবে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

দময়ন্তী এর ছবি

আপনার লেখাটা ভাল লাগল ৷

ইয়ে, আমার রবীন্দ্রনাথের করা অনুবাদগুলো অতি বাজে লেগেছে ৷
আর নিট পিকিঙের জন্য লজ্জিত, কিন্তু বানানটা "শাশ্বত' ৷ উচ্চারণেও খেয়াল করে দেখুন পরের তালব্য "শ' টার উপরে জোর পড়ে ৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

পলাশ দত্ত এর ছবি

বানানের এইরকম ভুল অমার্জনীয়। কী করে যে ভুলটা করলাম মন খারাপ

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

রবীন্দ্রনাথের এই কোমল ব্যাপারটাই তো ভালো লাগে বেশি...
জালিনওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পরে মাথা ইংরেজদের মাথা ফাটায়া কবিতা লেখার চেয়ে 'তুমি কি তাদের করিয়াছ ক্ষমা, তুমি কি বেসেছো ভালো' বেশি স্পর্শ করে।

রবীন্দ্রনাথের একটা প্যাকেজ প্রচলিত হয়ে গেছে... ইশকুলের বইতে প্রকাশিত আর কিছু শিক্ষামূলক আর কিছু প্রেমের কবিতা, গোটা ত্রিশেক গানে রবীঠাকুর আটকে গেছেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতো বিশাল সুন্দর ভাণ্ডারটি জাতি শুনলোই না... আফসোস... কত সুন্দর সুন্দর গান যে আছে... কবিতা যে আছে... এই দেশে প্রচলিতই হইলো না... কষ্ট লাগে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রফাইল এর ছবি

বেশ অনেক্ষানি সময় চলে গেছে। রবীন্দ্র-রচনাবলী পড়ে আছে, পুরনো হয়ে আছে। শত বছরে কত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে মৌলিক চিন্তাজগতে আর জীবনবোধে। ঐসব রচনা আজ তাই আর আকর্ষণ করে না। চিন্তার খোরাক জোগায় না। শুধু আর সেরকম অতবেশি প্রভাবশালী আসেন্নি বলে আনুষ্ঠানিকতা প্রলম্বিত হয় মাত্র।

২৭খণ্ড অতিবয়েসী মৃতের জন্য আর শোক নয়।

পলাশ দত্ত এর ছবি

মৌলিক চিন্তাজগত আর জীবনবোধে ব্যাপক পরিবর্তনের কথা ভাবলে পৃথিবীর অনেকানেক কবি-সাহিত্যিককেই এতোদিনে অতিবয়েসী মৃত বলে চিনে নেওয়ার কথা ছিল এই পৃথিবীর আজকের বাসিন্দাদের।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

এই লেখাগুলোর বিশেষ প্রয়োজন আছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত ভালো একটা লেখা দেবার জন্য।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

পলাশ দত্ত এর ছবি

হাসি

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

s-s এর ছবি

রবীন্দ্রনাথ সার্বজনীন, শাশ্বতভাবেই আধুনিক। যে অর্বাচীনরা তাঁর থেকে " কিছুই " শিখতে পারেনা, তারা জানেনা, তারা কি হারায়। অতিবয়েসী তো নিকোলাস কোপারনিকাসও, গ্যালিলিও ও, হযরত ও সক্রেটিস ও। কখনই কি "পৃথিবী এগিয়ে গেছে" বলে তাঁদের প্রভাব অপসৃয়মান তা বলা যায়?
ধন্যবাদ আপনাকে, সশঙ্ক কৃতজ্ঞতা !

জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা

পলাশ দত্ত এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পড়ছি । মন্তব্য অত্যাবশ্যক নয় ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

পলাশ দত্ত এর ছবি

চলুক

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

মিল্টন এর ছবি

পলাশ
অনেকদিন পর তোর কোন লেখা পড়লাম।

পলাশ দত্ত এর ছবি

খুব ভালো করিছোস চোখ টিপি

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

বনি এর ছবি

লেখাটা ভাল লাগল ৷ চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।