নিউ ইয়র্ক টাইমসে রবীন্দ্রনাথ :: নোবেল থেকে মরণ (আপাতত শেষ)

পলাশ দত্ত এর ছবি
লিখেছেন পলাশ দত্ত (তারিখ: সোম, ২১/০৯/২০০৯ - ১০:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিউ ইয়র্ক টাইমসে রবীন্দ্রনাথ :: নোবেল থেকে মরণ (প্রথম অংশ)
নিউ ইয়র্ক টাইমসে রবীন্দ্রনাথ :: নোবেল থেকে মরণ (দ্বিতীয় অংশ)
================================

১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথের সাক্ষাৎকার/সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদন ছাপায় ব্যস্ত ছিলো নিউ ইয়র্ক টাইমস। তবে কোনো সাক্ষাৎকারই কবিতাকে ঘিরে বা ভিত্তি করে নয়। ২৭ জুন ছাপ হওয়া খবরে রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ইওরোপের দুর্দিনে আমেরিকার কাছ থেকে নেওয়ার মতো কিছুই নেই। আমরা প্রশাসনিকভাবে অন্যের অধীনে থাকলেও আমেরিকানদের তুলনায় আত্মিক দিক দিয়ে অনেক অনেক বেশি স্বাধীন।

১৭ অক্টোবর ছাপা হচ্ছে লন্ডনে নেয়া সাক্ষাৎকার। সেখানে কবি ধুয়েমুছে দিচ্ছেন আমেরিকাকে। মিস্টিক বানিয়ে ছেড়ে দেয়া রবীন্দ্রনাথকে, যার সঙ্গে খ্রিস্টীয় মিস্টিসিজমের মিল খুজে পেতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি আমেরিকানদের, জিজ্ঞ্যেস করা হচ্ছে খ্রিস্টীয় সভ্যতা সম্পর্কে তিনি কী মনে করেন? কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বলছেন, ‘পুরো এশিয়ায় ইওরোপ বিস্মরকরভাবে তার সম্মান হারিয়েছে। এশিয়া মনে করে আত্মিকতার দিক দিয়ে ইওরোপের এশিয়াকে কিছুই দেয়ার নেই। এশিয়া মনে করে ইওরোপ এখন সত্যি বলে না।’ সাক্ষাৎকারটিতে রবীন্দ্রনাথ এমনও বলছেন যে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে গিয়ে স্বয়ং যিশুও যদি এখন গরিবের পক্ষে কথা বলেন তবে তাকে জেলে পাঠানো হবে। সাক্ষাৎকারটি যখন নেয়া হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ তখন লন্ডনে।

এরপর সাক্ষাৎকারভিত্তিক খবর ছাপা হলো ২২ নভেম্বর। তাতে রবীন্দ্রনাথ বলছেন, আমেরিকার মানুষজন শুধু ব্যবসার পেছনে ছুটছে, ওদের তো বাঁচারই সময় নেই। ওরা পূর্ব ভারতীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি ওদের ব্যবহার খুব খারাপ। আমেরিকা মারাত্মক রকমের আগ্রাসী স্বার্থপর। এই খবর ছাপা হচ্ছে ‘আমেরিকার সমালোচনায় ট্যাগোর’ শিরোনামে।


১৯৪১ সালের ৮ অগাস্ট রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর নোবেলজয়ী এই কবির নামযশ ইংরেজিভাষী পশ্চিমে হারিয়ে কারণ উল্লেখ করে সম্পাদকীয় ছেপেছিল নিউ ইয়র্ক টাইমস। সেখানে নানা সম্ভাব্য কারণের কথা উল্লেখ করলেও এক্ষেত্রে পত্রিকাটির ভূমিকা কী ছিলো তার কোনো উল্লেখ নেই সেখানে। রবীন্দ্রনাথের নানা বইয়ের আলোচনা, তার সাক্ষাৎকার যে-কৌশলে যে-দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যে-ধরনের শিরোনাম দিয়ে পত্রিকাটি ছেপেছিলো তার কি কোনো ভূমিকা ছিলো না মানুষের মনে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে একটা ধারণা গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে? যদি থাকে, আর তা থাকাই স্বাভাবিক, তাহলে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ হওয়া লেখাগুলি কী বলে তা পাঠকমাত্রই বোঝার কথা; যদি তিনি হন রবীন্দ্রনাথের পাঠক, আর যদি সেই পাঠকের মন হয় কবিতার মতো সংবেদনশীল।

স্বত্ব :: পলাশ দত্ত


মন্তব্য

রণদীপম বসু এর ছবি

পলাশ দা, লেখাটা কি সত্যিই শেষ ? জোর করে ছেটে দিলেন না তো ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

পলাশ দত্ত এর ছবি

হ্যা লেখাটা ছেটে দিয়ে শেষ করা। মন খারাপ তবে ইচ্ছা আছে পূর্ণাঙ্গভাবে একদিন শেষ করার।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

আপনার লেখার প্রথম পর্ব অফলাইনে পড়েছিলিম। চমৎকার হচ্ছে।
----------------------------------------
বাসে অনেক ঘুম জমে
ভিতরে ভুলে যাই শস্যের চমক
----------------------------------------
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক প্রিয় পোস্টের তালিকায় যুক্ত করলাম ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।