পাকিস্তানে অমর একুশে উদযাপন

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ২৩/০২/২০১১ - ১১:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

Picture 042

ক্যাসেট প্লেয়ারে ভেসে আসছে জাতীয় সঙ্গীতের সুরমুচ্ছর্ণা, কুচকুচে কালো এক বিশালদেহী প্রৌঢ়ের হাতে ধরা দড়ি। তিনি আস্তে আস্তে দড়ি টেনে টেনে উপরে তুলছেন একটা পতাকা, সবুজের বুকে এক জ্বলজ্বলে লাল বৃত্ত। অনুভব করছিলাম পোষাকের নিচে প্রতিটা লোম ঠিক যেনো সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়েছে, যেনো কাপড় ভেদ করে বেরিয়ে পড়তে চাচ্ছে। অপলক দাড়িয়ে আছি আমরা কিছু মানুষ। ২১শে ফেব্রয়ারীর সকালে ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে। সুহরাব হোসেন নামের প্রৌঢ় যেনো অপলক চোখে, সদম্ভে গোটা পাকিস্তানকে দেখিয়ে দিচ্ছেন আমাদের মাথা উঁচু করে উঠে আসাকে। আমাদের আশেপাশে কিছু পাকিস্তানীও ফ্যালফ্যাল করে দেখছে আমাদের পতাকাকে উপরে উঠে যেতে। আমরা দুজন, আমার সাথে আমার এক নারী সহকর্মী ছিলেন।

Picture 040

গাজী সাহেবের বাড়ি বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে। দাড়িওয়ালা, পাঞ্জাবী পরা একজন মানুষ যাদেরকে আমরা সাধারনত ‘হুজুর’ বলে সম্বোধন করে থাকি। দূতাবাসের এমএলএসএস সেই গাজী সাহেব সুললিত কন্ঠে কোরান থেকে তেলাওয়াত করলেন এবং তারপর আমরা সবাই মহান শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করলাম। পাশে দাড়িয়ে থাকা হাইকমিশনের পাকিস্তানী কর্মচারীরাও এতে শামিল হলেন।

এবারই প্রথমবারের মতো অস্থায়ী একটা শহীদমিনার তৈরী করা হয়েছে। বাংলাদেশী-পাকিস্তানী কর্মচারীরা নিজেরাই হাতে হাতে এটা তৈরী করেছেন। চেষ্টা করেছেন যথাসাধ্য সুন্দর করার জন্যে। পাকিস্তানের মাটিতে এটাই ৫২'র ভাষাশহীদদের স্মরণে প্রথম কোনও শহীদ মিনার। হাইকমিশনার মহোদয় সর্বপ্রথম ফুল দিয়ে দূতাবাসের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন। তারপর বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলো। তারপর আমরাও বিচ্ছিন্নভাবে শ্রদ্ধা জানালাম। হাইকমিশনার ভাই যেই তার মালা নিয়ে এগোলেন, সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমার সহকর্মী গেয়ে উঠলেন আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি। সাথে সাথে উপস্থিত সবাই একসাথে গেয়ে উঠলাম, তার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। বুকের মধ্যে যে দেশের জন্যে এতো প্রেম জমা আছে, সম্ভবত আগে কোনওদিন টের পাইনি।

Picture 047

Picture 053

Picture 064

একটা সংক্ষিপ্ত ধুমপানের বিরতি নিয়ে ঢুকলাম আলোচনা সভায়। বেশি মানুষ ছিলাম না। দিনটা পড়েছে ওয়ার্কিং ডে তে। তা’ও মোটামুটি জনাত্রিশেক হবে। গতবছর পর্যন্ত দূতাবাস আয়োজিত ২১ ফেব্রুয়ারীর আলোচনা সভায় পাকিস্তানের বিশিষ্ঠ সাংবাদিক, সাহিত্যিক, মানবাধিকারকর্মীসহ অনেকেই উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু এবার বিশেষ কিছু নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের আমন্ত্রণ জানানো যায়নি যদিও তারা আসতে ব্যাপক উৎসাহী ছিলেন। কনস্যুলার ভাইয়ের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠান শুরু হলো। শুরুতেই মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করলেন প্রথম সচিব ভাই এবং সঞ্চালক নিজেই পাঠ করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বানী। এরপর বক্তব্য রাখলেন সার্কের এক কর্মকতা ভাই, নামটা মনে নেই। এরপর ব্র্র্যাকের সিইও ভাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কেউ কথা রাখেনি’ আবৃত্তি শুরু করেও ভুল বুঝতে পেরে থেমে গেলেন। এরপর তিনি কবিগুরুর একটা কবিতা আবৃত্তি করলেন। অত্যন্ত তথ্যবহুল এবং চিন্তাশীল বক্তব্য রাখলেন ডেপুটি হাইকমিশনার ভাই। তার বক্তব্যেই জানতে পারলাম যে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কবরের এপিটাফের অন্যতম ভাষা বাংলা। তিনি নিজেই করাচীতে গিয়ে দেখেছেন। মূল এপিটাফ বাংলা এবং উর্দুতে লেখা। আমার সহকর্মী নুরুলদীনের সারাজীবন নাটকের মুখবন্ধটা উপস্থাপন করলেন। হাইকমিশনার ভাই সংক্ষেপে তার সমাপনী বক্তব্য দিলেন।

Picture 080

এরপর তিনি জানালেন যে বিকেলে ইসলামাবাদ ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় এই দিনের উপর এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি সময় পেলে যাবেন এবং আমাদেরও দাওয়াত দিয়ে রাখলেন। যদিও কাজের অনেক ব্যাস্ততার কারণে যাওয়া আর হয়নি। প্রসঙ্গত বলে রাখি পাকিস্তানে সরকারী এবং বেসরকারীভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়। উর্দুভাষা নিয়ে পাকিস্তানের ট্র্যাজেডি আর ওদের একুশে উদযাপন নিয়ে পরে একদিন লিখবো।

গাজী সাহেব আমাকে দেখেই চিনতে পারলেন। সিডরের পরে তিনি আমাকে অনেকবার তাদের এলাকায় দেখেছেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজের সময়। তিনি সহৃদয়ভাবে আমাকে তার বাসায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন।

আগেরদিন, ২০ ফেব্রুয়ারীতে শিশুকিশোরদের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা হয়েছিলো। আজ পুরষ্কার বিতরণী হবে বিকেলে। সকালে স্কুল থাকায় শিশুরা আসতে পারেনি, তাই তারা শহীদ মিনারে তাদের পুষ্পাঞ্জলী দেবে বিকেলে।

আলোচনাসভা শেষে হাইকমিশনার ভাইয়ের খাস কামরায় আমরা কিছুক্ষণের জন্যে বসে, গল্পগুজব করে, তারপর চললাম অফিসের দিকে। জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটা দিনের সুখানুভূতি মনের মধ্যে গুনগুন করছে, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভূলিতে পারি।।

Picture 063


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ পিপিভাই। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কই দিলাম আর কই গেলো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভালো লাগলো
এই দিবস নিয়া পাকি পত্রপত্রিকাগুলা কিছু লেখে? বা সাধারণ পাকিরা এ সম্পর্কে কতটুকু জানে?

আরেকটা ব্যাপার, পতাকা উত্তোলনের ছবি আর বর্ণনা দেখে শুনে মনে হলো পতাকা দণ্ডভরেই তুলে দেওয়া হইছে, একুশে ফেব্রুয়ারিতে তো জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার কথা!

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই। পত্রপত্রিকাগুলো দিবসটার কাভারেজ দেয় আন্তর্জাতিক মাত্রভাষা দিবস হিসেবে, ইতিহাস নিয়ে তেমন আলোকপাত না করেই। তবে অনেক বক্তা আছেন যারা দিবসটার ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো তুলে ধরে এবং তাৎপর্য তুলে ধরে কথা বলে থাকেন। এবার শুনেছি প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ রাজা ইউসুফ গিলানি এদিনের উপর একটা বাণী দিয়েছেন কিন্তু বাণীটা খুজে পাইনি। চেষ্টায় আছি। তবে আমার বন্ধু জাকারিয়ার কাছে শুনেছি যে কিছু সাহিত্য-সাংস্কৃতিককর্মী ক্ষুদ্র পরিসরে দিবসটাকে বাংলা ভাষাশহীদ দিবস হিসেবে উদযাপন করে থাকেন। জাকারিয়া নিজেই সেই উদযাপনকারীদের একজন। তবে এবার তারা পারেননি মূলত আয়োজকদের অনুপস্থিতির কারণে। এরা প্রায় সবাই চাকরী করে অবসরে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা করে। আমার এক বাংলাদেশী বন্ধু ২০১০এ এদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সাধারণভাবে অনেকের সাথেই কথা বলেছি। প্রবীনেরা দিনটা সম্পর্কে জানেন তবে নতুন প্রজন্ম বিশেষ কিছু জানেনা।

পতাকা উত্তোলনের ছবি আর বর্ণনা দেখে শুনে মনে হলো পতাকা দণ্ডভরেই তুলে দেওয়া হইছে, একুশে ফেব্রুয়ারিতে তো জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার কথা!

আপনার দেখা ঠিক আছে। তবে পতাকা নিয়ম মেনে অর্ধনমিত করা হয়েছিলো। নিয়ম হচ্ছে প্রথমে পতাকা পুরোটা তুলতে হয়, তারপর অর্ধেকটা নামিয়ে এনে বেঁধে রাখতে হয়।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

চলুক

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপু। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখে ভাল লাগলো। -রু

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ রু। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

'রিজভী' এর ছবি

ভাল লাগলো। আশা করি তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অন্তত সঠিক ইতিহাস জানবে...

-------------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সময় এই দিবসের প্রকৃত ইতিহাসটাও পরবর্তী প্রজন্মকে জানানো প্রয়োজন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

পাকিস্থানের বর্তমান প্রজন্ম তাদের পুর্বপুরুষের কুকির্তির ইতিহাস কিছুই জানেনা। জানলে তাদেরও লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যাবে।
ভাল লাগল আপনাদের প্রচেষ্টা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল আপনাদের প্রচেষ্টা। পাকিস্থানের বর্তমান প্রজন্ম একদিন তাদের পুর্বপুরুষের কুকির্তিগুলো জানবে এবং ঘৃনায় তাদের প্রতি থুঃ থুঃ ছিটাবে।

-ডা; আতিকুল হক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে ডা. হক। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

কী দারুণ একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন দাদা!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহিম ভাই। আপনি ইদানিং বেশ চেপে আছেন, ঘটনা কি?

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

একটু ব্যস্ত আছি ভাই। লেখা হয় না তবে ঢুঁ মারা হয় প্রতিদিন।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

রাতঃস্বরণীয় ভাই,
যে কোন দেশেই বাংলাদেশ দুতাবাস কিম্বা হাইকমিশন মানেই এক টুকরো বাংলাদেশ। সেই অর্থে আপনি ঐ সময়টায় সশরীরে বাংলাদেশেই ছিলেন। সেখানে থেকে আপনাদের এই প্রাণের স্ত্রোতে যুক্ত হওয়ার প্রাঞ্জল বর্ণনা পড়ে ও সুক্রমবিন্যাসিত ছবি দেখে খুব ভালো লাগলো। ২০০২ এর শেষভাগে মাস তিনেকের জন্য পাকিস্তানে ছিলাম আমি। সেসময় ওদের আমজনতার সাথে মিশেছি। অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে জানতে চেষ্টা করেছি ওদের এই প্রজন্মের অনুভূতি। সেখানে ধনী ও বঞ্চিতের এর পার্থক্য আকাশচুম্বী। হয়ত আমাদের দেশের চাইতেও বেশী। যেহেতু গণতন্ত্র সেখানে এখনো তীরবেঁধা পাখির মতো ছটফটিয়ে বিপন্ন সময় পাড়ি দিচ্ছে তাই আমজনতার ঘৃণার থুথু শোষক শ্রেণীকে বিচলিত করে না। তবে সেদিন বেশী দূরে নয় যখন মানবতার কাঠগড়ায় নির্ঘাত দাঁড়াতে হবে ঘৃণ্য অপরাধীদের। আমি অনুমান করি, পাকিস্তানেই শুরু হবে সেইসব জানোয়ারদের অমানুষিক কুকীর্তির কঠিন হিসেব-নিকেশ নেবার পালা।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বস, আপনার অবজার্ভেশন নিয়ে কথা নেই। সমাজের একদম ভিতর থেকে হাহাকারগুলো তুলে এনেছেন। বাংলাদেশে বলিয়াদী বা এরকম অল্প কিছু স্বঘোষিত ফিউডাল লর্ডস থাকলেও পাকিস্তানে ফিউডালিসম সোস্যাল স্ট্রাকচারের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। চোদ্রী সাব, মীর সাব বা শেখ সাব, এরকম 'সাব'-এ সমাজ ভরা। ইসলামাবাদ বা করাচীতে বসে পাকিস্তানের সামগ্রিক অবস্থা বোঝা সম্ভব না। দাস প্রথা সেখানে নেই কিন্তু ধরেন একটা গোটা গ্রামের মানুষ এই একজন সাবের উপর নির্ভরশীল, দাস প্রথারই পরিমার্জিত সংষ্করণ।

সিন্ধু প্রদেশের শিকারপুর জেলার একটা গ্রামে গিয়েছিলাম। শিকারপুর আচারের জন্যে বিখ্যাত। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না যে কি অমানবিক অবস্থায় মানুষগুলো বেঁচে আছে। একটা খড়কুটো, গাছের ডালপালা, রিলিফের ত্রিপল দিয়ে তৈরী ঘরে মানুষ, মোষ, কুকুর আর মুরগি একসাথে বসবাস করে। নিচের ছবির বাচ্চা দুটোকে দেখেন, ওদের মা-বাবা জানেনা যে একটু পরে দুপুর বেলা বাচ্চাগুলো কি খাবে-

Picture 018

Picture 015

হায়রে দুনিয়া বস, এরাতো আপনার আমার বাচ্চাও হতে পারতো! মন খারাপ

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আহারে! খারাপ লাগলো খুব।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

রাতঃস্মরণীয় ভাই,
এসব দেখে বুক ফেটে যায়। পৃথিবীর সব শিশুই তো আমাদের সন্তানতুল্য। একজনের কষ্ট-বেদনার বীণ আমাদের সবার বুকেই তো সমান হয়ে বাজে। নিপীড়িত মানুষের জয় হোক! মানবতা মুক্তি পাক। ওদের কথা লিখুন না ভাই!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তিথীডোর এর ছবি

চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপু। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ভাল লাগল পাকিস্তানে একুশে উদযাপন হতে দেখে। বাংলাদেশ সম্পর্কে পাকিস্তানের সাধারন জনগণ, বিশেষত বর্তমান প্রজন্ম কি রকম ধারণা পোষণ করে বলুনতো?

খন্দকার আলমগীর হোসেন

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বাংলাদেশ সম্পর্কে সাধারন মানুষ এবং বর্তমান প্রজন্ম একদমই আলাদাভাবে মাথা ঘামায় না। ওদের চিন্তা চেতনা জুড়ে শুধু ইন্ডিয়া আর ইন্ডিয়া, কিভাবে ইন্ডিয়া ওদের পিছনে লেগে আছে আর ওরা কিভাবে ইন্ডিয়ার পিছনে লাগতে পারে। এরা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশিদের সম্পর্কে সাধারনভাবে ভালই ধারনা পোষন করে। নন-রাইভালারী।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আরেকটা ব্যাপার না বললেই না, আয়োজন যখন করলোই, দূতাবাস নিজে করলো, তাহলে শহীদ মিনারটা অন্তত একটু ভালো করে বানাতে পারতো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

দূতাবাসের বর্তমান বাড়িটা ভাড়া করা। ডিপ্লম্যাটিক এনক্লেভে ১৫ বিঘা জমি দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে দূতাবাস নির্মাণের জন্যে। হয়তো তখন স্থায়ী একটা শহীদ মিনার করা হবে। আর শহীদ মিনার এবারই প্রথম হল, আশাকরি সামনে আরও ভালোভাবে করতে পারবে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইয়া হাবিবি, পাকিদের নাকের ডগায় শহীদ মিনার বসায়া দেওন গেছে তাতেই আনন্দ
অভিনন্দন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এটা এখন থেকে প্রতিবারই হবে। হাততালি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

পাকিস্তানে ২১শে ফেব্রুয়ারী পালিত হয়েছে দেখে পৈশাচিক আনন্দ পেলাম।
অনেক ধন্যবাদ।

স্বাধীন মণন

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ স্বাধীন মণন।

পাকিস্তানে ২১শে ফেব্রুয়ারী পালিত হয়েছে দেখে পৈশাচিক আনন্দ পেলাম।

আপনার এই কথাটা ঠিক বুঝলাম না। পৈশাচিক আনন্দ তো মানুষ পায় আকাম-কুকাম করার পরে। আমার তো মনে হয়না একুশে পালন করে আমরা কোনও আকাম করে ফেলেছি যা আপনাকে পৈশাচিক আনন্দ দেবে। চিন্তিত

আমার মনে হয় আপনি এইটা মিন করতে চান নাই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

দ্রোহী এর ছবি

চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

থাঙ্কু! হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

guest writer rajkonya এর ছবি

পাকিস্তানেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে জেনে খুব ভাল লাগল।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আসলেই তা'ই। হাসি

আপনাকে ধন্যবাদ আপু।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

হাততালি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ মানিকদা। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এরপর তিনি জানালেন যে বিকেলে ইসলামাবাদ ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় এই দিনের উপর এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

এই অনুষ্ঠানের উপর পাকিস্তান অবজার্ভার একটা কভারেজ দিয়েছে কিন্তু 'বাংলা' শব্দটা একটা বারের জন্যেও কোথাও উল্লেখ নেই।

আবার তোরা মানুষ হ!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এইটা পইড়া মেজাজ খ্রাপ হইয়া গেল রেগে টং

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো পাইলাম... চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

পলাশ মুস্তাফিজ

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ রাজা ভাই। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।