কাদীর‌্যা পাগলা, এক ক্ষ্যাপাটে বিজ্ঞানদানবের উত্থান ও পতনের গল্প

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৬/০৭/২০১১ - ৪:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মূল কাহিনীর শুরু ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর থেকে-

রমনার সবুজ রেসকোর্সের ময়দানে চলছে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পনের অনুষ্ঠান। লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পনের দলিলে সই করে অস্ত্র তুলে দিলেন তার মিত্রবাহিনীর কাউন্টারপার্ট ইনডিয়ার জেনারেল অরোরার হাতে। তারপর অবনত মস্তকে প্রাঙ্গন ত্যাগ করলেন জীপে চড়ে। আর এমনই সময় ৩,৫০০ মাইল দূরে বেলজিয়ামে বসে প্রায় পিএইচডিসম্পন্নকারী এক পাকিস্তানী ছাত্র ভীতিকর এবং অবিশ্বাসমাখা দৃষ্টিতে টেলিভিশনে তার দেশের অবমাননার সম্প্রচার দেখছে। এই দুঃসহ ঘটনা তাকে কয়েকদিন কাজ করতে দিলো না। তার রাগ রুপান্তরিত হলো এক সংকল্পে যে এমন বিপর্যয় আর কখোনোই ঘটতে দেওয়া যাবেনা এবং সে এই ধরণের বিপর্যয় রোধে সে তার কাজ করে যাবে।

লেখক গর্ডন কোরিরা এভাবেই তার বইয়ে দেখিয়েছেন একজন পাকিস্তানী বিজ্ঞানের ছাত্র আবদুল কাদীর খানের ক্ষ্যাপাটে বিজ্ঞানদানবে রূপান্তরের গল্প। যে দেশপ্রেম তাকে একদা ধ্বংসাত্মক আবিষ্কারে উদ্বুদ্ধ করেছিলো, সেই দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার চুড়ান্ত করতেও একপর্যায়ে এসে তার বাধেনি। এ এমনই এক লোভী যার দেশপ্রেম পরাজিত হয়েছে অর্থলিপ্সার কাছে। একদা যে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভূট্টোর অন্যতম কাছের মানুষ বলে গণ্য হতো, সেই তাকেই আত্মস্বীকৃত রাষ্ট্রদ্রোহীতার দায়ে জেনারেল মোশাররফের আমলে এসে গ্রেফতারও হতে হয়। এখনও চলছে তার গৃহবন্দীদশা।

গর্ডন কোরিরার লেখা শপিং ফর বম্বস, নিউক্লিয়ার প্রোলিফারেশন, গ্লোবাল ইনসিকিউরিটি, এন্ড দ্য রাইজ এন্ড ফল অব দ্য এ.কিউ. খান নেটওয়ার্ক বইতে শুরু থেকে আপাতত শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারের আবদুল কাদীর খানের সমস্ত কর্মকাণ্ডের বর্ননা দিয়েছেন এবং অত্যন্ত যৌক্তিক বিশ্লেষণ করেছেন। নিজস্ব জাজমেন্ট দেওয়া থেকে বিরত থেকে বরং সিকোয়েনশিয়াল এবং কনসিকোয়েনশিয়াল রিভিউর উপরেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ২৮৮ পৃষ্ঠার এই বইটা দুটো পর্বে বিভক্ত, পর্ব ১ হচ্ছে উত্থান এবং পর্ব ২ হচ্ছে পতন। দুটো পর্বতেই আবার কয়েকটা করে অধ্যায় আছে। আমি অধ্যায়গুলোর শিরোনামই এখানে উল্লেখ করলাম-

পর্ব ১- উত্থান
অধ্যায় ১-রূটস
অধ্যায় ২- দ্য বম্বস
অধ্যায় ৩- ইরান-ফ্রম ইমপোর্ট টু এক্সপোর্ট
অধ্যায় ৪- নর্থ কোরিয়া-পিয়ংইয়াং এন্ড ব্যাক
অধ্যায় ৫- দ্য নেটওয়ার্ক এক্সপাণ্ডস-দ্য লিবিয়া ডিল

পর্ব ২-পতন
অধ্যায় ৬- পিক আপ দ্য ট্রেইল
অধ্যায় ৭- ওয়াচিং
অধ্যায় ৮- ডিলিং উইথ গাদ্দাফি
অধ্যায় ৯- কনফ্রনটিং মুশাররফ-ডিলিং উইথ খান
অধ্যায় ১০- আনরিভিলিং দ্য নেটওয়ার্ক

বইটা থেকেই জানলাম যে কাদীর‌্যার জন্ম ১৯৩৬ সালে বৃটিশ ইনডিয়ার ভূপালে। ১৯৪৭ সালে বৃটিশ ইনডিয়া ভেঙে ইনডিয়া ও পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও কাদীর‌্যা কিন্তু ইনডিয়াতেই থেকে যায়। কিন্তু কাদীর‌্যা ইনডিয়াতে তার কোনও ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছিলো না। অবশেষে ১৯৫২ সালে ষোড়শবর্ষীয় ছাত্র কাদীর‌্যা ইনডিয়া থেকে পাকিস্তানে চলে যায়।

গোটা বইটা পড়ার পরে বিষ্মিত হতে হয়েছে কাদীর‌্যার বিচিত্র বহুমাত্রিক কৌশলগুলো দেখে। বিশেষ করে তার প্রকিউরমেন্টের কৌশল। জার্মানী, সুইজারল্যান্ড, ইংল্যান্ড থেকে সে কিভাবে নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করে তার কেনাকাটাগুলো সম্পন্ন করতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যেসব সাপ্লাইজের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকতো সেগুলোকে ভেঙে-চুরে, ভিন্ন ভিন্ন পারপাস দেখিয়ে সে পাকিস্তানে আমদানী করতো। পরবর্তীতে দেশগুলো এইসব রপ্তানীতে জাড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গেলেও সুবিধা করে উঠতে পারেনি। এছাড়া তার কনসাইন্টমেন্টগুলো বিভিন্ন দেশে রপ্তানীর কৌশলগুলোও বিষ্ময়কর।

পাকিস্তান সরকারের পাশাপাশি কাদীর‌্যা সবসময়েই অকুন্ঠ সমর্থন এবং নিঃশর্ত সহযোগিতা পেয়ে এসেছে চিন থেকে। চিন কাদীর‌্যার নেটওয়ার্কের জন্যে কাগজে কলমে পাকিস্তান সরকারের জন্যে অস্ত্রশস্ত্রের ডিক্লারেশন দিয়ে তলে তলে প্লেন বোঝাই করে ব্যাপক পরিমান পারমানবিক চুল্লির সরঞ্জাম এবং কাঁচামাল সরবরাহ করেছে। কাদীর‌্যার কাছে থেকে পারমানবিক সিক্রেট বাণিজ্যে চিনই প্রথম খরিদ্দার। আর উত্তর কোরিয়া এবং লিবিয়ার সাথে (প্রথমটা) কাদীর‌্যার ডিলগুলো সরকারী সহযোগিতার খোলসেই সম্পন্ন হয়েছে।

বইতে আরও এসেছে যে কাদীর‌্যা কিভাবে ইরানের সাথে তার বিশাল ডিলগুলো করেছে। আশ্চর্য হতে হয় যে কাদীর‌্যা ইরানের কাছে প্রথম কয়েকটা চালানে তার পাকিস্তান প্রোগ্রামের বর্জ্য এবং পরিত্যাক্ত সরঞ্জাম এবং কাঁচামালগুলো বিক্রি করেছে। এই ডিলে দুবাইভিত্তিক একটা পরিবার তার সাথে সম্পৃক্ত ছিলো যারা কম্পিউটার যন্ত্রাংশের আড়ালে এইসব সরঞ্জাম এবং কাঁচামাল ইরানে সরবরাহ করতো। পরবর্তীতে এই পরিবারের যুবক তাহির কাদীর‌্যার প্রধান এজেন্ট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আশ্চর্যের এখানেই শেষ না। গর্ডন কোরিরা এখানে দেখিয়েছেন কিভাবে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় কাদীর‌্যা ইরাকের কাছেও একই পারমানবিক ফর্মুলা বিক্রি করেছিলো সাদ্দামজামাতা হুসেইন কামালের মাধ্যমে।

দুবাইতে ওয়্যারহাউজ রাখার পাশাপাশি কাদীর‌্যা তার নেটওয়ার্কের বাণিজ্য ঝামেলামুক্ত রাখতে মালয়েশিয়ায় হেভী ইন্ডাস্ট্রির ছদ্মাবরণে বিশাল প্লান্ট স্থাপন করেছিলো তাহের ও তাহেরের মালয়েশিয়ান স্ত্রীর সহযোগিতায়। ব্যবসার সম্প্রসারণে কাদীর‌্যা ছুটে বেড়িয়েছে গোটা দুনিয়া, সেই পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট শহর পর্যন্ত।

তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হচ্ছে, যা নিয়ে কাদীর‌্যা পাগলার এতো নামডাক, সেই পারমানবিক সেন্ট্রিফিউজ এবং রিয়্যাক্টরের মূল ফর্মুলার গোটাটাই কিন্তু ইউরেনকো থেকে চুরি করা। পরবর্তীতে কাদীর‌্যা এবং তার সহযোগি বিজ্ঞানীরা এর অনেক পরিমার্জন, পরিবর্ধণ করেছেন।

বইটাতে লেখা আছে কিভাবে কাদীর‌্যাকে ক্যারিয়ারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছে পাকিস্তান এ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের (প্যাক) সাথে। প্যাক যখন প্রথম পারমানবিক বোমার ট্রায়াল বিষ্ফোরণ ঘটায়, তারা কাদীর‌্যাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো, “একটা পারমানবিক বোমা দেখতে কেমন”-এটা দেখার জন্যে। যদিও কাদীর‌্যার ভাষ্যমতে প্যাকের গোটা রিসার্চটাই তার ল্যাব থেকে চুরি করা। বিভিন্ন সময়ের সরকারগুলো কিভাবে তার সাথে ডিল করেছ, তারও সবিস্তার ব্যাখ্যা এখান পাবেন। একদিন প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খানের কাছে কাদীর‌্যার অপকর্ম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়ে আইএসআই প্রেসিডেন্টের সহযোগিতা প্রার্থনা করে কাদীর‌্যাকে থামানোর বা ধরার ব্যাপারে। এরপর প্রেসিডেন্ট যা করলেন তা হলো তিনি কাদীর‌্যাকে ডেকে সাবধান করে দিলেন যে আইএসআই তোমার পিছনে লেগেছে এবং তুমি একটু সাবধানে কাজকাম কোরো।

আমি বলবো, বইটার পাতায় পাতায় রহস্য। লিখে বোঝানো মতো না। আফ্রো-এশিয়ার পারমানবিক সেক্টরে কাদীর‌্যা কিভাবে নিজেকে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ পাবেন বইটাতে। প্রতিটা অধ্যায় পড়ার সময়ে আপনি নিজের অজান্তেই কাদীর‌্যার কৌশলের জন্যে তাকে বাহবা দেবেন, বেণিয়াবৃত্তির জন্যে তার সমালোচনা করবেন, আর রাষ্ট্রের চোখ ফাঁকি দিয়ে পারমানবিক বাণিজ্যের মাধ্যমে মিলিওন মিলিওন ডলার কামানো বহর দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে বলে ফেলবেন, কাদীর‌্যা শালা একটা আস্ত শুয়োরের বাচ্চা।

একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে আমি বলবো বইটা নিদারূণ উপভোগ্য। আপনাকে আটকে রাখবে এর পাতায়। এবং অধ্যায় শেষ না করে উঠতে পারবেন না। সবথেকে বড় কথা বইয়ের তথ্যগুলো বস্তনিষ্ঠ এবং প্রচুর রেফারেন্সে সমর্থিত। এবং এই রেফারেন্সদাতার বিশিষ্ঠজন এবং যার যার ক্ষেত্রে অত্যন্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ছিলেন। বইটায় বেশ কিছু ঐতিহাসিক ছবি সংযোজিত হয়েছে। যার মধ্যে একটা ছবি দেখুন নিচে, কাদীর‌্যা প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সাথে দেখা করে তার পারমানবিক টেকনোলজি পাচারজনিত রাস্ট্রদ্রোহীতামূলক অপকর্মের স্বীকারোক্তি দিয়ে প্রেসিডেনশিয়াল ক্লেইমেন্সি ভিক্ষা করছে-

গর্ডন কোরিরা একজন বৃটিশ সাংবাদিক, ২০০৪ সাল থেকে বিবিসির নিরাপত্তা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। এই দায়িত্বে বিবিসি টেলিভিশন, রেডিও এবং ওয়েবসাইটের জন্যে তিনি সন্ত্রাসবিরোধী, পারমানবিক অস্ত্রের বিস্তার বিরোধি, এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ইস্যুগুলো কভার করে থাকেন। একইসাথে তিনি বিবিসির ওয়াশিংটন স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রতিনিধি এবং ইউএস এ্যাফেয়ার্স বিশ্লেষক।

বইটার প্রকাশকঃ হার্স্ট এন্ড কোম্পানী, লন্ডন
আইএসবিএনঃ ১-৮৫০৬৫-৮২৬-৯
দামঃ অনুমোদিত ইনডিয়ান প্রিন্টের দাম পড়বে বাংলাদেশী টাকায় আনুমানিক ২,৫০০.০০।
বাংলাদেশে প্রাপ্তিস্থানঃ ধারণা নেই তবে আজিজে খোঁজ করা যেতে পারে।
অনলাইনে ফ্রি প্রাপ্তিস্থানঃ এখানে ক্লিক করেন (লিংক দিয়েছেন বন্ধু তারাপ কোয়াস, অনেক ধন্যবাদ)।

ছবিসূত্রঃ বইয়ের প্রচ্ছদ, গর্ডন কোরিরা, কাদীর‌্যা এবং জেনারেল মোশাররফ


মন্তব্য

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

অনবদ্য বুক রিভিউ!
পাগলকে সাঁকো নড়াতে বলার কথা মনে করিয়ে দিল!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ বস! কিন্তু পাগলকে সাকো নাড়াবার কথাটা একটু ................... ইয়ে মানে যদি একটু ঝেড়ে কাশতেন। এ্যান্টেনায় ঠিকমতো ক্যাচ করলো না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ওই দেশটার এখন যা হতচ্ছাড়া অবস্থা, আশেপাশে যাকে পায় তাকেই আবার মরণ কামড় দিয়ে না বসে! হাজার হলেও পরমাণু দাঁত আর সিঙ্গাড়া-গরম মস্তিস্ক আছে তো!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

রাজা ইউসুফ গিলানী কিন্তু প্রকাশ্যেই ঘোষনা দিয়েছে যে তারা আরও বেশ কিছু সংখ্যক পারমানবিক চুল্লি স্থাপনের পথে এগোচ্ছে। কারণ হিসেবে অবশ্য বলছে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা এবং ঘাটতির কথা। কিন্তু তলে তলে যে ওদের মনে কি আছে কে তা জানে?

খাইবারপাখতুনখ্বোয়া ইদানিং বেশ ঠাণ্ডা, বালুচিস্থান বরাবরের মতোই বিক্ষুব্ধ, সিন্ধের গোলযোগ কিন্তু হঠাৎ করেই শুরু হওয়া কিছু একটা না। আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করে থাকবেন যে,

১। পাকিস্তান তার ভূখণ্ডে ন্যাটো কর্তৃক যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্যমতে পাকিস্তান নিজেই এটা করতে সক্ষম।

২। সম্প্রতি চালকবিহীন বিমান পরিচালনার জন্যে কোয়েটা বিমানঘাটি ব্যবহার করার আমেরিকান অনুরোধ কিন্তু গিলানী একবাক্যেই খারিজ করে দিয়েছে।

৩। গত মধ্য ডিসেম্বরে যখন চিনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও পাকিস্তান সফরে আসেন; তিনি প্রথমেই ব্যাক্ত করেন যে তিনি পাঁচ বছর পর তার দ্বিতীয়বারের পাকিস্তান সফরে এসে তিনি পাকিস্তানের জনগনের প্রগাঢ় এবং ভাতৃত্বপূর্ণ অনুভূতিতে মুগ্ধ হলেন।

৪। মি, জিয়াবাওয়ের নিচের মন্তব্যটা খেয়াল করে পড়েন, বোল্ড করা শব্দটা পড়বেন, হুবহু মেরে দিলাম,

China and Pakistan are facing new opportunities and challenges to develop their ties and the two countries will enhance their strategic coordination, scale up the cooperation of mutual benefit, better safeguard their shared interests and realize common development.

৫। এবার এটা পড়েন,

Wen called for enhanced military exchanges and cooperation between China and Pakistan so as to cement the bilateral strategic partnership of cooperation when he met with senior Pakistani military leaders.

তিনি আরও বলেছেন,

The Pakistani military is a steadfast supporter and vindicator of the China-Pakistan friendship, and has played an important role in consolidating and developing their strategic partnership of cooperation.

৬। সুদানিজ প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশীরের চিন সফর প্রসঙ্গে এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মম্তব্য করেছিলো যে,

চিন যদি বশিরকে গ্রেপ্তার না করে তবে চিন গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত অপরাধীদের নিরাপদ স্বর্গে পরিনত হবে।

কিন্তু তা স্বত্বেও চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মূখপাত্র মি. হং লি বলেছেন,

তার সরকারের যাবতীয় অধিকার আছে বশীরকে তাদের দেশে আমন্ত্রণ জানানোর কারণ চিন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি'র ট্রিটিতে সিগনেটরি না। তাছাড়া চিন বশীরের গ্রেপ্তারী পরোয়ানার ব্যাপারে আইসিসিকে তাদের মতামত আগেই জানিয়ে রেখেছে।

৭। চাইনিজ প্রেসিডেন্ট হু জিয়ান্তোর বক্তব্য সরাসরি ইংরেজিতেই কপি-পেস্ট করে দেই নিচে,

China has been a major partner in both the political and economic sectors in Sudan, which has been under Western sanctions for several years.

সরি বস্‌, ধান ভানতে গিয়ে যে শীবের গাজন জুড়ে দিলাম তা যেনো আর থামতেই চাইছে না। চিনের সাম্প্রতিক কাণ্ডকারখানায় এমনই আলামত দিচ্ছে যে পাকিস্তান অচীরেই বেশ কিছু বড়সড় পাগলামী করে বসতে পারে। আমার কাছে ব্যাক্তিগতভাবে মনে হচ্ছে যে চিন আমেরিকার সাথে একটা নার্ভাস গেইম শুরু করতে যাচ্ছে বা অলরেডি করে দিয়েছে। বন্ধুদের মারফত জেনেছি যে চিনা কোম্পানিগুলো আমেরিকায় তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করে, আমেরিকান সরকারকে খাজনাপাতি দিয়ে, আমেরিকান বেকারদের জন্যে কর্মসংস্থার সৃষ্টি করে, তারপর তাদের প্রোডাক্টে মেইড-ইন-চায়না ট্যাগ লাগিয়ে বিপণন করছে। বিষয়গুলো আসলেই ভাবনায় ফেলে। চিন্তিত

আপাতত এটুকুতেই থামি। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

M. Asghar Khan এর 'We've Learnt Nothing from History' বইটি পড়ে দেখো। ওদের জান্তা যে যুগপৎ কতটা শক্তিশালী ও কতটা অবুদ্ধিশালী তা জানলে আঁতকে উঠতে হয়।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বস্‌, বইটা পড়বো যতো তাড়াতাড়ি পারি, ধন্যবাদ। দেখি কোথাও না পাওয়া গেলে কাউকে পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসতে বলবো।

চিনেরও কিন্তু কতগুলো মজবুত ঘাড় প্রয়োজন যার উপর সে বন্দুক রেখে গুলি করে যেতে পারে। আর সে ঘাড়ের মালিক যদি শক্তিশালী কিন্তু বুদ্ধিহীন হয়।

গত ২৬ মার্চ রাতে বাংলাদেশে হাইকমিশনের আয়োজিত স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত ডিপ্লোম্যাটিক পার্টিতে পরিচয় হলো জেনারেল নিয়াজ খট্টকের সাথে। বয়স তার কমপক্ষে ৬০, চাকরীর মেয়াদ শেষ করে চুক্তিভিত্তিক একটা পদে আছে। আর বিশ্বাস করেন তার সাথে তার বউটা, এখনও স্তনযুগল বিকষিত হয়নি, বড়জোর ১৫ হবে। এটাই প্রমান করে যে ওরা কেমন শক্তিশালী কিন্তু বুদ্ধিহীন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ইউপিএল প্রকাশিত। আমার টেবিলের উপরেই আছে। লাগলে জানান দিও।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

একটু ফ্রি টাইম বের করে জানান দেবো বস।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ওরা জন্মগত শয়তান-চোর-লোভী!!!! দানব নিকৃষ্ট দানব!!!!! রেগে টং

বইটার উপর অনেক আকর্ষণ তৈরি করে দিলেন তাজ ভাই, এখনই ডাউনলোড করে ফেললাম, পরীক্ষা শেষে সময় করে পড়তে হবে ওর কুকীর্তিমালা!!!!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ওরা জন্মগত শয়তান-চোর-লোভী!!!! দানব নিকৃষ্ট দানব!!!!!

একদম একমত তোমার সাথে।

আমি ভয়ে থাকলাম পাছে কাদীর‌্যার কীর্ত্তিকলাপ পড়ে আবার তার ফ্যান বনে না যাও। দেঁতো হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

হেগো ফ্যান হওয়া কোনো সত্যিকারের বাঙ্গালির পক্ষে সম্ভব কনতো বড় ভাই?? এই সেদিন কী হল বলি, একটা নন-ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষা ছিল, গবর্নমেন্ট, একটা অংশে ইতিহাসও ছিল, প্রশ্নে আসল ৭০ এর নির্বাচন, এখন আমি যতবার *কিস্তান লেখার দরকার পড়ছে ততবার ফাকিস্তান লিখে ফেলতে গেছি, বহুত কষ্টে পরীক্ষার খাতা দেখে সংযত থাকছি............ঐ নাম মুখে নিলেই মুখ অপবিত্র হইয়া যায়!!!!

বই পড়ার আকর্ষণ তৈরী করছেন তো আপনি!!! ক্যাম্নে চোরটা চুরি করল, ক্যাম্নে সবজোগাড় করল, নিষিদ্ধ পদ্ধতিটা জানোনের খায়েশ হইছে তাই পড়ুম। ভাবতেছি আম্গো ছাদের উপর একটা 'নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট' বসামু, জ্যানারেটরে কুলায় না!!! তাই কোন দেশের সাথে লবিং করতে হবে, ক্যাম্নে সূত্র মারতে হবে জানোনের বড় দরকার!!!! হো হো হো

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বাড়ির ছাদে নিউক্লিয়ার প্লান্ট বসাইতে চাও বসাও, অসুবিধা নাই। দেইখো আমাগোর দ্যাশে তো আবার বিদ্যুৎ সংকট, কিছু বিদ্যুৎ দিতে পারো কি না। পারলে আমারে একটা কানেকশন দিও।

আর তোমার প্ল্যান্টে যদি গ্যাস সাপ্লাই লাগে, অসুবিধা নাই; পাইপের এক মাথা আমার হোগায় সেট কইরা দিয়া যাইও। ফ্রি গ্যাস দিমুনে। চোখ টিপি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি ডরাইছি এইবার...................

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

গ্যাসের কথা শুইনাই ডরাইলা, দ্যাখলে না জানি কি করতা!

যাক পোলাপান মানুষ, দিলে এট্টু ভয়ডর থাকা ভালো। শয়তানী হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

দিলে ভয়ডর বেশি নাই তয় আন্নেরে ডরামু............. দেঁতো হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আবার কথা কয়!

ওই ছ্যাড়া, গেলি না ল্যাংটা পুলিশ ডাকুম।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

গেলি না ল্যাংটা পুলিশ ডাকুম।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি আইচ্চা আর আমু না.........দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রস্থান কর্লাম............ ওঁয়া ওঁয়া

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কই যাস্‌ ভাই আমার? আয় দুইজনে মিলা গলা জড়াইয়া ধইরা কান্দি। ওঁয়া ওঁয়া

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

আহ্ এখনতো দিলডা জুড়ায় গেল.........বর্দ্দার লগে কোলাকুলি করি, কান্লাম কই!!! দেঁতো হাসি

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

দিলেন তো ভাই মাসের খরচ বাড়ায়া। অনবদ্য রিভিউ। চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ মানিকদা। যদি বইটা ঢাকায় পান তবে কিনে নিয়েন। ভালো একটা কালেকশন হবে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তানিম এহসান এর ছবি

আমি রোমেল ভাইয়ের সাথেই খুব পষ্টভাবে বলতে চাই - অনবদ্য বুক রিভিউ!

হে রাতঃসরনীয় রাতের সওদাগর, নিন্দুকের ভাষা কি উল্টো বলে!!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ হে তানিম এহসান।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

শ্রীকৃষ্ণ এর ছবি

ভালো রিভিউ... চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ স্বামীজী।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

guest_writer এর ছবি

ভাল লাগল। জানা গেল অনেক তথ্য, ধন্যবাদ।--- অণু

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে অণু।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

guest_writer এর ছবি

পাকি গুলো জাতিগত ভাবেই কূটিল (আরও অনেক বিশেষন মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, বললাম না)। এদের মাথায় কখনো সৃজনশীল কোন বুদ্ধি আসে না। মানবজাতির ধ্বংস দেখাই এদের মূল লক্ষ্য।

========
আমি জানি না

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ অতিথি। অন্য বিশেষণগুলো মনের গহীনে না রেখে ঝেড়ে কাশলেই পারতেন, আখেরে আমরাও সেগুলো জানতে পারতাম।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সুমন_তুরহান এর ছবি

প্রশ্ন হচ্ছে এই দানবটি কিভাবে তৈরি হলো? এর জন্ম হয়েছে – একাত্তরে ‘হিন্দু’ ভারত ও ‘প্রায়-হিন্দু’ মুক্তিফৌজ এর কাছে ইসলামের ঝান্ডাধারী ‘সুশৃঙ্খল’ পাকবাহিনীর শোচনীয় পরাজয় + ধর্ম + জেহাদ + পাকিস্তানের মানসিক অসুস্থ-বিকৃত-ধর্ষকামী-আত্মরতিগ্রস্থ সেনাপতিদের যৌথসঙ্গমে।

পাকিস্তানীদের নেই গর্ব করার মতো কিছু, তাদের প্রায় প্রতিটি অঙ্গনই দূষিত ও কালিমালিপ্ত এবং তারা সারা বিশ্বের চোখে সন্দেহের বস্তু। এই নিয়ে তারা ভোগে হীনমন্যতায়, আবার একই সাথে নিজেদের জাতি হিসেবে ভাবে অন্যদের চেয়ে ‘শ্রেষ্ঠ’। ভারতের দিকে যখন তারা তাকায়, ঈর্ষার সাথে দেখতে পায় স্বাধীনতার পর ভারত এগিয়ে গেছে প্রতিটি এলাকায়; আর তারা নিজেরা দশকের পর দশক ধরে একটি সংবিধানও তৈরি করতে পারে নি, নিয়ত পিষ্ট হয়ে চলেছে তাদের ইসলাম-পছন্দ, চাঁদতারাখচিত মিলিটারি জান্তার বুটতলে। এই হতাশার মধ্যে আশার কান্ডারী হয়ে হাজির হয় আব্দুল কাদের খান, পাকিস্তানীরা দেখে তাদের মুক্তি ‘হিন্দু’দের মতো উদারনৈতিক গণতন্ত্রে নয় বরং ইসলামি জেহাদ আর পারমানবিক উন্মাদনার সংমিশ্রণে। কিন্তু পাকিস্তানের মুক্তি আসেনি কাদেরিয়া ফর্মুলায়, নিজেদের আরো কলঙ্কিত করেছে তারা এবং করে চলবে আরো বহুদিন।

‘পাকিস্তান’ যদি রাষ্ট্র না হয়ে হতো একজন ব্যক্তি, তাহলে নিঃসন্দেহে পেতো অচিকিৎস্য পাগলের খেতাব। এই পাগল রাষ্ট্র আর তার উন্মাদ সেনাপতিদের মনোবৈকল্য উঠে এসেছে সালমান রুশদীর ‘শেম’ উপন্যাসে। ভবিষ্যতের রাষ্ট্র/মনোবিজ্ঞানীদের কাছেও এই কিম্ভুত দেশটি আকর্ষণীয় গবেষণার বিষয় বলে বিবেচিত হতে পারে।

অনেক ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়, আপনার চমৎকার আলোচনা বইটি পড়ার আগ্রহ জাগিয়েছে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ সুমন তুরহান। বইটা পড়ার পরে দেখবেন বিষ্মিত হওয়ার মতো আরও অনেক কিছুই বাকি ছিলো।

বাইদ্যওয়ে, কাদীর‌্যার জন্ম কিন্তু ভূপালে এবং সে ১৯৫২ সালে দেশবিভাগের ৫ বছর পর ষোল বছর বয়সে ইনডিয়া ত্যাগ করে পাকিস্তান চলে যায়। চোখ টিপি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

অসম্ভব ভালো একটা বুক রিভিউ। পাঁচতারা দিয়েও মন ভরল না।

লোকটার কাজকর্ম সম্বন্ধে আগে পড়েছিলাম, আপনার লেখাতেও সে দিকগুলো উঠে এসেছে। কিন্তু একটা মানুষ হিসাবে একে আলোচনা করা, এটা আগে দেখিনি।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভ ভাই। পড়ে দেখেন বইটা, আশাকরি ইন্টারেস্টিং লাগবে।

বাইদ্যওয়ে, কাদীর‌্যা কিন্তু আদিতে আপনার দেশী লোক। চোখ টিপি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

শোয়েব মাহমুদ (সোহাগ) এর ছবি

জটিল বুক রিভিউ। কিন্তু যদি মনে কিছু না নেন, বইটার নামের বানানটা দয়া করে ঠিক করেন। "ইসসিকউরিটি"-টা চোখে লাগছে!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কিন্তু যদি মনে কিছু না নেন,

এইটা বলেই তো মনে কিছু নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। চোখ টিপি আপনাকে ধন্যবাদ শোয়েব মাহমুদ (সোহাগ), বানানটা সংশোধন করে দিয়েছি আর সেটা করতে গিয়ে আরও দু'একটা টাইপো চোখে পড়ায় সেগুলোকেও ঠিক করে দিয়েছি।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

দময়ন্তী এর ছবি

চমৎকার রিভিউ| পড়ার আগ্রহ জাগল|

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ দয়াদি। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চমৎকার রিভিউ। চলুক

এই বই কিনে পড়া নিকট ভবিষ্যতে সম্ভব নয়, ধার করে বা ইবুক হিসেবে যদি চোখ বুলাতে পারি আর কি...

... যা কিছু ঘটুক, কাদির‍্যা ব্যাটাই চোর।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ সুহান ভাই। ইবুকে পেলে একটু লিংটা দিয়েন। অনেকেই পড়তে আগ্রহী কিন্তু সহজে পাওয়া না ও যেতে পারে। আর আমি ভাবছি বইটা ভাড়া দেয়ার ব্যবসা ধরবো। খাইছে

কাদীর‌্যা টু-ওয়ে চোর। পেয়েছেও চুরি করে আবার দিয়েছেও চুরি করে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নৈষাদ এর ছবি

আপনার এই রিভিউটা পড়ে মনে হল বইটা পড়তেই হবে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ নৈষাদ। বইটা পড়লে আফ্রো-এশিয়ান পাওয়ার ডাইনামিক্সের অনেক গুরুত্বপূর্ণ আসপেক্টস ধরতে পারবেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সজল এর ছবি

অনুবাদ করে ফেলেন, তারপর পড়ি।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ওরেব্বাবা, ভয় পেলাম! নারে ভাই, এ আমার কম্মো না। এটা করতে যে দক্ষতা আর সময়ের প্রয়োজন তার কোনওটাই আমার নেই। আপনাকে ধন্যবাদ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারাপ কোয়াস এর ছবি

রিভিউ পড়ে বইটা পড়ার আগ্রহ জাগলো। একটা সফট কপি ডাউনলোড কর্লাম। ধন্যবাদ তাজ ভাই চমৎকার রিভিউর জন্য।


love the life you live. live the life you love.

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পল ভাই। লেখাটা সম্পাদনা করে লিঙ্কুটাকে ঢুকিয়ে দেই। যারা আগ্রহী হবেন তারা ডাউনলোড করতে পারবেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রণদীপম বসু এর ছবি

বইটার অনূদিত সংস্করণের অপেক্ষায় থাকলাম !
চমৎকার রিভিউ ! এ ধরনের আরো চাই !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ রণদা। কেউ যদি বইটার বাংলায় অনুবাদ করেন তবে খুবই ভালো হয়। আমাদের আশপাশে কি ঘটছে তা জানা আমাদের খুবই প্রয়োজন। নজরুল এবং রোমেল ভাই এই প্রস্তাব আমাকে আগেই দিয়েছিলো। কিন্তু ব্যাপক স্কিল আর সময় দরকার যা ব্যাক্তিগতভাবে আমার নেই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সুমন_তুরহান এর ছবি

বইটি শেষ করলাম, রাতঃস্মরনীয়! সেই ছোট বেলায় গোয়েন্দা উপন্যাস/মাসুদ রানা এসব পড়েছি, সেই স্বাদটাই আবার পেলাম যেনো! ধন্যবাদ রেকমেন্ড করার জন্যে।

পুরো বইটা পড়ার সময় এ.কিউ.খানের মোটিভ/মনস্তত্ত্ব বোঝার চেষ্টা করেছি। নেদারল্যান্ডে যখন খান নতুন চাকরি পেয়ে সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তি চুরি করার কাজে ব্যস্ত, তখন কি মোটিভ ছিলো তার? পাকিস্তানপ্রেম? ইসলামপ্রেম? ভারত-হিন্দু-ইহুদি-খ্রিস্টান-পাশ্চাত্যবিদ্বেষ? নাকি শুধুই অর্থের লোভ? দেখলাম, ১৯৬৮ সালের আন্তর্জাতিক পারমানবিক অস্ত্রবিস্তার-নিয়ন্ত্রণ চুক্তিকে ঘৃণা করতো খান। তার কাছে এই চুক্তি ছিলো মুসলিম দেশগুলোকে পারমানবিক অস্ত্র থেকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে পাশ্চাত্যপ্রণীত ষড়যন্ত্র।

আমেরিকা তো দেখি খানের ওপর অনেক আগে থেকেই নজরদারি করে আসছিলো। এখানে দু’টো ঘটনায় খুব মজা পেয়েছি। প্রথমটি হলো, বেনজীর ভুট্টো আমেরিকা সফরে গিয়েছে, সেই উপলক্ষে সি.আই.এ’র তৎকালীন ডিরেক্টর উইলিয়াম ওয়েবস্টার একটি ‘প্রেজেন্টেশন’ দেবে। প্রেজেন্টেশনের ভ্যেনু হচ্ছে হোয়াইট হাউসের বিপরীতে অবস্থিত ‘ব্লেয়ার হাউস’ অতিথিশালার একটি কক্ষ। প্রেজেন্টেশনের বিষয় হচ্ছে পাকিস্তানের গোপন পারমাণবিক বোমা তৈরির অগ্রগতি। সেখানে পাকিস্তানের তৈরি পারমাণবিক বোমার একটি ছায়া-মডেলও দেখানো হলো বেনজীরকে। কী অদ্ভুত দেখুন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে পাকিস্তানের ভেতরে গোপনে কী হচ্ছে সে বিষয়ে ব্রিফিং করছেন সি.আই.এ’র ডিরেক্টর! (পৃষ্ঠা ৫১)

দ্বিতীয় ঘটনাটি হলো, সি.আই.এ’র তৎকালীন ডিরেক্টর জর্জ টেনেটের সাথে পারভেজ মোশাররফের একটি কৌতুহলউদ্দীপক বৈঠকের বর্ণনা । বৈঠকটি কোনো রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় হয়নি, হয়েছিলো নিউ ইয়র্কের একটি হোটেল স্যুইটে। বিস্তারিত আলোচনায় টেনেট খানের কুকীর্তির ব্যাপারে বিশদ জানালেন ‘হতবাক’ মোশাররফকে। মোশাররফ দেখলো সি.আই.এ এবং এম-১৬ ‘খান নেটওয়ার্ক’ সম্পর্কে কতো কী জানে! মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনে মোশাররফকে দেখানো হলো খানের নেটওয়ার্ক, ইরান-উত্তর কোরিয়া-লিবিয়ায় পারমাণবিক প্রযুক্তি চালানের ব্যবসা, দুবাই-মালয়েশিয়া থেকে ব্যবসা চালানো, গুদামঘর ভাড়া-জাহাজ চালান, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ব্যবহার করা বিমানে প্রযুক্তি পাচার, ইত্যাদি অকাট্য প্রমাণ। মোশাররফ যাতে বলতে না পারে যে যথেষ্ট প্রমাণ নেই সেজন্যে সি.আই.এ সব প্রমাণই হাজির রেখেছিলো। কোনঠাসা মোশাররফ পরে বলেছিলো এটি ছিলো তার জীবনের সবচেয়ে লজ্জাজনক মুহূর্ত। (পৃষ্ঠা ২০১)

বইতে লেখক দেখালেন, ‘খান নেটওয়ার্ক’-এ এ কিউ খান নিজে ছিলো মধ্যসত্ত্বভোগী। তার একদিকে ছিলো বৈধ-অবৈধ কাঁচামাল সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা অন্যদিকে পাকিস্তান, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়ার মতো নষ্ট রাষ্ট্রগুলো। মধ্যসত্ত্বভোগী হলেও খানকে কেন্দ্র করেই সকল কার্যকলাপ পরিচালিত হতো দেখছি। খান অসংখ্যবার এই নষ্ট দেশগুলো ভ্রমণও করেছে, সেগুলো যে প্রমোদবিহার ছিলোনা তা বোঝা গেলো!

আর দুবাই-মালয়েশিয়া তো দেখছি ছিলো তার চ্যালা-চামুন্ডাদের হাতের মুঠোয়। যেটি বোঝা গেলো না সেটি হচ্ছে পাকিস্তান সরকার কাদের খানের কার্যকলাপ সম্পর্কে কতোটুকু জানতো। লেখক মনে করেন না যে পুরো পাকিস্তান সরকার জড়িত ছিলো । সরকারের ভেতরে কেউ কেউ জানতো এটাই বললেন। তাহলে কি ধরে নেবো শেষের দিকে অর্থাৎ পতনের পূর্বে মোশাররফ কিছুই জানতো না? তাই যদি হবে তাহলে মোশাররফ কেনো খানকে পশ্চিমের মিডিয়ার মুখোমুখি হতে দিলোনা? কি লুকাতে চাইছিলো সে? সে নিজে সেনাপতি ছিলো একসময়, তার অজানা থাকাটা খুবই বিস্ময়কর। আর হামিদ গুল, এক সময়ের আই.এস.আই প্রধান, যাকে এখন প্রায়ই বিভিন্ন তথ্যচিত্রে ক্লান্তিহীন গুল মারতে দেখি, ‘খান নেটওয়ার্ক’ সম্পর্কে সেই বা কতোটা জানতো?

খানের নেটওয়ার্ক তৈরি করা ও চালানোর যোগ্যতা ছিলো, ভাষা জানতো অনেকগুলো, লোকজনকে মনে রাখতো আর চিঠিও লিখতো নিয়মিত। এই নেটওয়ার্কিংয়ের গুণেই সে দশকের পর দশক ধরে পারমাণবিক প্রযুক্তি পাচার করে যেতে পেরেছে। ‘বিবিসি চায়না’ নামের একটি জাহাজ, যেটি পাচার করছিলো খানের চোরাই মালামালের বিশাল বহর, সেটিকে আটকে ফেলে সিআইএ। এই আটকে ফেলার ঘটনার মাধ্যমেই ঘটলো খানের তিন দশকব্যাপী পারমানবিক চোরাকারবারির অবসান।

বইটি পড়ার পর এখন বুঝলাম নষ্ট গাদ্দাফি হঠাৎ করে সাধু হয়ে গিয়েছিলো কেনো। লিবিয়া যদিও এখন বাদ দিয়েছে পারমাণবিক বোমার ধান্ধা এবং ব্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের ভেতরের বিদ্রোহীদের সামলাতে। কিন্তু ইরান এই বিষয়ে এগিয়ে গেছে অনেক। আরো কতো একনায়কতান্ত্রিক-ধর্মতান্ত্রিক উন্মত্ত রাষ্ট্র/ গোষ্ঠী এই প্রযুক্তির ধান্ধা করছে কিংবা এগিয়ে গেছে কাদের খানদের কল্যানে তাই বা কে জানে! (জর্জ টেনেট তো অন্যত্র এটাও বলেছিলেন যে খান অন্তত লাদেনের সমান বিপজ্জনক।)

ভুট্টো প্রথম পণ করেছিলো ‘ইসলামি বোমা’ বানানোর, তার সেই স্বপ্ন সফল করেছিলো খান। লেখক অবশ্য এক জায়গায় মন্তব্য করেছেন যে ভুট্টোর ‘ইসলামিক বোমা’ কথাটি ছিলো ‘শ্লোগানমাত্র’, সে চেয়েছিলো পাকিস্তানের জন্যে বোমা, অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর জন্যে নয়। আমার ঠিক তা মনে হয় না। ভুট্টো যদি বেঁচে থাকতো, আর থাকতো ক্ষমতার কাছাকাছি, তাহলে হয়তো আমাদের ‘ইসলামি বোমা’র মজা দেখাতো। আর ওই জেনারেল জিয়া, যাকে দেখলে কেনো যেনো ‘দোজখের প্রহরী’ অভিধাটি মনে পড়ে, সেও যে অনেক কিছু জানতো সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

একটা প্রশ্ন জাগে মনে; খান নিজেও পারভেজ মোশাররফের মতোই ‘মোহাজির’ – ভারত প্র্ত্যাগত। ভারত প্র্ত্যাগতরাই কি সবচেয়ে বেশী ভারত-বিদ্বেষী? ক্ষুব্ধ খানের ভারত ছাড়ার প্রেক্ষাপটের বর্ণনায় দেখি যে তার মানসে মৌলবাদী হিন্দুদের হাতে মুসলমান হত্যার দৃশ্য। কিন্তু একই সময়ে একই ভাবে মৌলবাদী মুসলমানদের হাতে হিন্দুনিধনের ঘটনাও ঘটেছে, কিন্তু সেটি তার মনে দাগ কাটেনি। সাম্প্রদায়িকতা সবসময় এমন একচোখাই হয়।

অধিকাংশ পাকিস্তানিরা মনে করে কাদের খান তাদের দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে বোমা বানিয়ে; এই বোমা বানানোর আগে তাদের গর্ব করার মতো কিছু ছিলোনা, এখন আছে – এখন তারা ভারতকে এক হাত দেখিয়ে দিতে পারে । কিন্তু ইসলামি বোমার জনক আব্দুল কাদের খান আজ শুধু পাকিস্তানিদের কাছেই নয়, পারমানবিক জেহাদি জোশে উন্মত্ত আরো অনেক মৌলবাদীদের কাছেই ‘মহৎ’ হিসেবে গণ্য। আর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ খবর।

এই বইটির সম্ভবত সবচেয়ে বড়ো সীমাবদ্ধতা হলো যে লেখক গর্ডন কোরিরা এখানে কাদের খানের মনোবিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন খুবই কম। লেখক যেটা করেছেন সেটা হলো তদন্তকারী সাংবাদিকের মতো ঘটনার বর্ণনা; তবে সে বর্ণনাও কিন্তু রোমাঞ্চকর।

আবারো ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়কে এই রোমাঞ্চকর বইটির আলোচনার জন্যে। লইজ্জা লাগে চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ সুমন তুরহান, বইটা যে যথেষ্ঠ মনোসংযোগ নিয়ে পড়েছেন তা বোঝা গেলো। আমি অবশ্য ঝাড়াকাটা পড়া দেই। বেশিক্ষণ একনাগাড়ে কনসেন্ট্রেশান দিতে পারিনা। আপনার মন্তব্য খুবই ভালো লাগলো এবং মন্তব্যটা আমার রিভিউয়ের সাথে বড়োসড়ো একটা সাপ্লিমেন্ট। তাই প্রতিমন্তব্য দীর্ঘায়িত করবো না। তবে,

এই বইটির সম্ভবত সবচেয়ে বড়ো সীমাবদ্ধতা হলো যে লেখক গর্ডন কোরিরা এখানে কাদীর খানের মনোবিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন খুবই কম।

আমি মনে করি এটা সীমাবদ্ধতা না। এটা লেখক করলে বইটার বস্তুনিষ্ঠতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারতো। মনোবিশ্লেষণ করতে গেলে তা বিশ্লেষণকারীর অনুভূতি দ্বারা কিছুটা হলেও প্রভাবিত হতো। তাই হয়তো লেখক সযত্নে বিষয়টা এড়িয়ে গিয়ে বর্ণনাতেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

বাঙ্গাল এর ছবি

ইন্টারেস্টিং রিভিউ করসেন। আচ্ছা ভাইয়া দুনিয়ায় এত এত ভাল বই থাকতে আপনি এই পাকিরে নিয়া লিখা বইটার রিভিউ করলেন ক্যান?

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বাঙ্গালদা, এই পাকির কাজের ইমপ্যাক্ট যদি শুধুমাত্র পাকিস্তানে সীমাবদ্ধ থাকতো তবে হয়তো তাকে নিয়ে কোনও বই-ই লেখা হতো না। হলেও তা সম্ভবত উর্দূতে হতো। কিন্তু দেখেন, এর কাজের ইমপ্যাক্ট কিন্তু গোটা দুনিয়ায় পড়েছে। এজন্যেই বইটা ইন্টারেস্টিং এবং সূযোগ থাকলে সকলের পড়া উচিৎ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কল্যাণF এর ছবি

ডাউনলোড করলাম, এই উইকেন্ডে পড়ার চেষ্টা নিমু। রাতদাদারে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনাকেও আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রিশাদ_ময়ূখ এর ছবি

চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

guest_writer এর ছবি

বেশ কয়েক বছর আগে কাদীর খান খুব আলোচিত সমালোচিত হয়েছিলেন। ভুলেই গিয়েছিলাম, আপনার রিভিউ পড়ে আবার মনে পড়ে গেল। বইটির কথা জানাবার জন্য ধন্যবাদ। চেষ্টা করব বইটি সংগ্রহ করতে।

প্রৌঢ়ভাবনা

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বইটা সংগ্রহ করতে না পারলেও এই ব্লগটায় মুফতে নিম্নবোঝাইয়ের লিংক পাবেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।