প্রজ্জ্বলিত নয়ন

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল গাফফার রনি [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৮/০৫/২০১২ - ১:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঝিম ধরে হয়ে বসে আছে এক সময়ের মুক্তিযোদ্ধা খালেক। নির্মম পৃথিবীর রূঢ় বাস্তবতা তার পিঠে 'এক সময়ের মুক্তিযোদ্ধা' খেতাবটা সেঁটে দিয়েছে।
বসে আছে, কারণ তার কাজ নেই। কাজ নেই কারণ, কাজ করতে ইচ্ছে করে না। শরীর দুর্বল। শরীর দুর্বল কারণ, ভাত পায় না নিয়মিত। গাঁজার নেশাও আছে। ভাত পায় না তো গাঁজা পায় কোথায়? সেটাই তো কথা। সেটাই আমরা জানতে চাই।
বসে আছে জীর্ণ ঘরের ঘুনে ধরা বাঁশের খুঁটিতে ঠেস দিয়ে। চোখ দুটো জ্বলজ্বলে লাল। ইটের ভাটার মতো। রাতজাগা কুকুরের মতো। আখড়ায় যাবে। পকেটে পয়সা নেই। দুদিন তবু পোয়া কলকে করে মোট আধা কলকে ফ্রি দিয়েছে কুদ্দুস ফকির। মানবতা দেখিয়ে (হায় মানবতা)! তিনদিনের টাকা বাকি। পাঁচ টাকা করে পনেরো টাকা। আজ টাকা সঙ্গে না নিলেই নয়। তাই বিকেল থেকে বউয়ের পথচেয়ে বসে আছে।
ছোট ছেলেটা এসে কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে, 'বা জান খাতা নেই, ট্যাকা লাগব।'
'তর খাতার নিকুচি করি!' খেঁকিয়ে ওঠে খালেক। 'আগুন লাগাইয়া পুরাইয়ে ফেল বই খাতা।'
বাবার ধমকে ছেলেটা ভয় পায় না, রাগেও না। ধীর পায়ে বাপের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, 'কী হইছে বাবজান, চ্যাতো ক্যা?'
'দুর হ চোক্ষের সামনে থেইক্যা।'
ছেলেটা বাপের সামনে থেকে সরে পড়ে। হা-ডু-ডু'র কোটের মতো ছোট্ট উঠোনের এক কোণে লাগানো বুনো পেয়ারার চারার গোড়ায় নারকেলের মালায় ভরা পানি ঢালতে শুরু করে।
'তর মা কুনহানে?' কণ্ঠের ঝাঁঝটা কমে না খালেকের।
'জাইন্নে তো-' ছেলের নির্লিপ্ত জবাব। বাবার প্রশ্নের চেয়ে পেয়ারা গাছের পরিচর্যাটাই এই মুহূর্তে ওর বেশি জরুরি।
'তা জাইনবি কীয়ের লাইগ্যা? থাল থাল ভাত গিলবার গুণডাই আছে খালি।'
অকারণেই যখন তখন এভাবেই রেগে যায় খালেক। অগ্নিগিরির মতো হঠাৎ হঠাৎ ফুঁসে ওঠা এই রাগটাকে আছিরন বলে- 'চেয়ারম্যানের সাঁন'। চেয়ারম্যানের শাঁন মানে চেয়ারম্যানের পুকুরঘাটের সাঁন বাঁধানো সিঁড়ি। চৈত্রের দাবদাহে আগুন গরম! খালেক অবশ্য বউয়ের সাথে একমত হতে পারে না কখনো।
দুটো চকমকি পাথরের ঘর্ষণে ছিটকে পড়া আগুনে শুষ্ক দাহ্য পদার্থের মতোই ধপ করে জ্বলে ওঠে ওর মেজাজ। সেই চকমকি পাথরের একটা সে কিনেছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নামের রঙ্গমঞ্চে, মা-বাবা, ভাইয়ের রক্তে স্নান করে; বোনের সতিত্বের বিনিময়ে। আরেকটা কুড়িয়েছে অভাব আর গাঁজার দাসত্বে টাল হয়ে কুদ্দুস ফকিরের আখড়ায়।
'বাজান ও বাজান! পেয়ারা চারায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে ছেলেটা। আমার ট্যাকা দিবা কিনা কইলা না-তো?'
'ট্যাকা গাছে ধরে, না!' আবার দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে খালেকের মেজাজ। ইচ্ছে হয় এক আছাড়ে হারমজাদাকে মেরে ফেলতে। খালেকের কাছে যে টাকা থাকে না সে কথা কী ওর আজো অজানা? রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে, 'দু'ট্যাকা আয় কইরা দ্যাখ না কুত্তার বইচ্চা! আমার লগে ফ্যাও ফ্যাও করস কিয়ের লাইগ্যা?'
ঠিক তখনই বাড়ি ফেরে আছিরন। স্বামীর উত্তেজিত স্বর শুনে জানতে চায়, 'কী হইছে, অত চ্যাতছ ক্যান?'
জবাব দেয় না খালেক। যেভাবে বসে ছিল সেভাবেই বসে থাকে। চোখ তুলে বউয়ের দিকে তাকায়ও না। আসলে তাকাতে ইচ্ছে করে না। বউয়ের সারা গা আঁচিলে ভরা। বড় বড় ফোড়ার মতো, ছোট ছোট তিলের মত। শত শত... হাজার হাজার! ভুলক্রমে তাকালে গা গুলিয়ে আসে। রাতে পাশে শুতেও ঘেন্না হয়। তারপরও আছিরন বছর বছর সন্তান বিকোয়। তবে শুধু কাম বাসনার সঙ্গী হিসাবেই আছিরনকে আজও সঙ্গে রাখেনি খালেক, দিন তিন বেলা না হলেও একবেলা খেতে পারছে, দেরিতে হলেও কুদ্দুস ফকিরের গাঁজার দামটা যে শোধ করতে পারছে তা ওই অছিরনের ভিক্ষার ঝুলির কুদরতেই। সেই অন্নদাতা ভিক্ষার ঝুলিকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর মত বোকা অন্তত খালেক নয়।
আছিরনই বা খালেককে ছেড়ে যায় না কোন মোহে? আঁচিল ভরা ভাঙ্গাচোরা শরীরটা অন্য পুরুষের কাছে সমর্পন করতে পারবে না বলে? এ ব্যাপারটা কিছুটা সত্য হয়তো, তবে বাঙ্গালি নারী সত্তার ভেতরে মাতৃত্ব ও সংসারের যে টান সেটার ভূমিকাই মূখ্য কিনা বলা মুশকিল।

খোলা আকাশের ছাদের নিচে উঠোন থেকে একটু উঁচু করে মাটি দিয়ে তৈরি কল্পিত রান্নাঘরের মেটে চুলোটার পাশে ভিক্ষার ঝুলিটা রাখে আছিরন। কোলের মেয়েটাকে ঘরের দাওয়ায় বসায়। ঝাঁপ দিয়ে বাপের কোলে উঠতে চায় মেয়েটা। খালেক এক ধমক দিয়ে বলে, 'কোলে নিবার পারমু না অহন, যাহ্ ভাগ!'
অবুঝ মেয়েটা তবুও বাবার বুকে আছড়ে পড়ে। খালেক তখন জোর করে মেয়েটাকে ছাড়িয়ে নিয়ে ঠাস করে গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়। ছেলেকে ধমকাতে দেখেও এতক্ষণ মুখ খোলেনি আছিরন। কিন্তু এবার রাগ ধরে যায় ওর দেহে। তবুও বাক্যবাণে সেটাকে প্রকাশ না করে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে কান্দাভাঙা মাটির কলসটা নিয়ে পাশের বাড়িতে যায় পানি আনতে।
মিনিটের ব্যবধানে ফিরেও আসে। ছেলেটা এবার মাকে নিয়ে পড়ে, 'মা আমার খাতা শ্যাষ, ট্যাক্যা লাগব। কাইল খাতা না পাইলে সার কিন্তু কইলাম বেদম পিডানি দিব-'
'রাখ তোর পিডানি, 'আবার খেঁকিয়ে ওঠে খালেক। তারপর ঠোঁট উল্টিয়ে ব্যাঙ্গসুরে বলে, 'লিখাপড়া শিইখ্যা জজ ব্যারিস্টার হইব! বড় দুখানরে তো দ্যাখলাম।' তারপর হঠাৎ স্বরটা নামিয়ে বউয়ের ভিক্ষুক সত্তাটাকে নিজের ভেতরে ঢুকিয়ে বলে, 'আছিরন বিবি, আমারে কুড়িডা ট্যাকা দ্যাও না-'
'কুড়ি ট্যাকা! কই পামু?' চোখ কপালে উঠে যায় আছিরনের। 'কী করবা তুমি কুড়ি ট্যাকা দিয়া?'
'কুদ্দুস পনেরো ট্যাকা পায়, সাতে আইজকার জন্যি পাঁচ।'
'আবার তুমি অই কুদ্দুইস্যার লগে পিরিত করছ! শরম করে না তুমার! পোলায় খাতা কেনবাইর ট্যাকা পায় না, আর তুমি আমার ভিক্ষার ট্যাক্যায় গ্যাঁজা খাইবা! আজ কেউ ট্যাহা দেয় নাই কইলাম।' ঝাঁঝ মেশানো কণ্ঠে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো শেষ করে আছিরন।
আছিরনের মতো মূর্খ ছিন্নমূল ভিক্ষুক লেখাপড়ার মর্মটা কীভাবে বোঝে? ওসব মর্ম টর্ম কিছু নয়। উচ্চবিত্তের কথা আলাদা, মধ্যবিত্ত বাবা মায়েদের স্বপ্ন থাকে ছেলে জজ ব্যারিস্টার, নয়তো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র হয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করবে, তাদেরে বার্ধক্যকে মুড়িয়ে দেবে বিলাসীতার চাদরে। এ স্বপ্ন যে আছিরন দেখে না বা দেখার দুঃসাহস তার নেই, হয়তোবা এ স্বপ্ন কীভাবে দেখতে হয় কিংবা আদৌ দেখা যায় কিনা সেটুকু বুঝার ক্ষমতা যে আছিরনের নেই- সেকথা নিশ্চই এই অর্বাচীনকে ব্যাখা করে বুঝাতে হবে না। ব্যাপারটা হয়েছে কি আছিরনের ছোট ছেলে আমাদের বিশ্বায়নী শিক্ষাব্যবস্থার প্রাইমারি লেভেলের ছাত্র। আর এই ব্যবস্থায় ছেলেমেয়েকে পড়ানোর বিনিময়ে তিনমাসে ছয়মাসে কিছু নগদ টাকা কিংবা গম পাওয়া যায় এবং তার বদলে যদি কয়েকটা খাতা কিংবা কলমের বিনিময় মূল্য গুণতেই হয় তবে তাতে খালেকের আপত্তি থাকলেও আছিরনের নেই- এটুকু বৈষয়িক বুদ্ধি অন্তন্ত তার মগজে আছে।
টাকার কথায় নিরাশ খালেকের চোখ যায় ভিক্ষার ঝুলির দিকে, 'তাইলে আধসের চাইল দ্যাও...'
'চাইল! আধসের!' আগুন ধরে যায় আছিরনের শরীরে। মুখের লাগাম ছেড়ে দেয় 'অকম্মা মিনসে! সারাডা দিন হাত পা কোলে কইরে বসে থাকো। আমার ভিক্ষের ট্যাকায় রোজ হাঁড়ি হাঁড়ি গেলো, কলকে টানো। আইজ ছেলেটার এট্টা খাতা কিনবার ল্যাইগ্যা আধসের চাইল দিমু সেইডাও কাইড়া গাঁজার আড্ডায় ছাই কইরাবার চাও! কই কী, গাঁজা না খাইয়া হাজির বাঁশবাগানে গিয়া গু খাইয়া আসো গা, যাও।'
খালেকের রাগ এবার সপ্তম, অষ্টম টপকে নবমে চড়ে যায়। তড়াক বারে একটা লাফ দিয়ে আছিরনের চুল চেপে ধরে। হ্যাচকা একটা টান দিয়া মাটিতে ফেলে দেয়। দুমদাম চার পাঁচটা কিল বসিয়ে দিয়ে বলে, 'মাগী! গু আমি খামু! আইজ তরে গু খাওয়াইতাছি খারা...'
আছিরন গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠে 'ওরে মা-রে, হারামী মিনসে আমারে মাইরা ফ্যাললে-রে... আমার কামাই খায় আবার আমারেই কিলাইরে... আমি কই যামুরে...' আছিরন আরো যেসব বাক্য প্রয়োগ করে সেগুলো গ্রাম বাংলায় মানুষ শুনতে বলতে অভ্যস্ত হলেও ছাপার অক্ষরে সেসব অপ্রকাশিতব্যই জানে সবাই।
খালেক সত্যি সত্যি উঠোনে চলে যায় গু খুঁজতে। সদ্য তাওয়া ছেড়ে উঠে আসা কুঁচে মুরগির গু পাটাকঠির মাথায় লাগিয়ে সোজা ছুটে আসে আছিরনের দিকে। আরো জোরে চিৎকার দিয়ে ওঠে আছিরন। শুনেছুটে আসে পাড়াপ্রতিবেশীরা। কিন্তু ছুটে এসে নিবৃত করার আগেই খালেককে ভিক্ষার ঝুলিটা হাতে নিয়ে হনহন করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখে তারা। আছিরনের দিকে চোখ পড়ে কার যেন। চিৎকার করে সে জানায়, 'ডাকাইত মিনসেটার কারবার দেখছ! আছিরন বুবুরে গু খাওয়াইয়া দিছে!'
আছিরনের মুখের দিকে তাকায় সবাই।

দুই
স্বাদীনতা দিবস।
কুদ্দুস ফকিরের আখড়ায় আসর জমেছে। তবে ফকিরের আখড়া শুনে লালনের ছেউড়িয়ার কথা ভাবলে কথা ভাবলে চরম ভুল হবে। বাউল তত্ত্বের আদর্শ যে কী কুদ্দুস ফকিরের আখড়ার লোকেরা তার বিন্দু বিসর্গও বোঝে না। তবে লালনকে গুরু বলে মানে।
কুদ্দুস ফকির দু'হাতের মুঠোয় গাঁজার কলকে টেনে রহিমের হাতে চালান করতে করতে বলে, খালেক ভাই আইজ নাকি ডিসি সায়েব আসবে? তোমাদের গলায় ফুলের মালা দেবে, ট্যাকা দেবে?'
'হঁ কুদ্দুস, 'দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে খালেক । 'সরকার আমগো এতদিন খোঁজ লয় নাই। সেই যুদ্দুর পর থেইক্যা কী খাচ্ছি, কী পরছি তা জাইনবার দরকার মনে করে নাই। হুনছি অনেকেরে সারটোফিকেট দ্যাছে, চাইল দ্যাছে, ট্যাকা দ্যাছে; আমরা তার কিছুই পাইলাম না!'
'তুমি ঠিক কইছ খালেক ভাই, 'পশ্চিম পাড়ার আকবর নাক দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলে। ‘তালশারের নকু মিয়া তো যুদ্ধর পর থেকেই ট্যাকা পায়। এখন নাকি পাঁচ হাজার হইচে। তুমার কেন যে দিইনি বুঝলাম না।'
'ভাইরে হগলই পুরা কপাল! একেবারে যুদ্ধের থেইকা আমার কপাল পুরবার লাগছে।' আবার একটা গভীর নিঃশ্বাস ছেড়ে ভাবনার রথে চেপে চলে যায় ফেলে আসা কৈশরে।
খালেকের বাবা পূর্ববঙ্গের মানুষ। মেঘনা পারে ছিল ওদের গরীবানা ছোট্ট সংসার। হঠাৎ মেঘনার সর্বাগ্রাসী ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে শত শত মানুষের সাথে গ্রাম ছেড়ে চলে আসে তৎকালীন যশোরের এই সীমান্তবর্তী গ্রামে। নদীয়া আর যশোরকে বিভক্তকারী ছোট্ট শান্ত ইছামতীর তীর ঘেঁষে পতিত খাস জমিতে গড়ে ওঠে ঢাকালে কলোনি। ভাষার আঞ্চলিক টান আলাদা। তাই স্থানীয়রা ঢাকালেদের কথা বুঝতে পারে না। তবু তাদের ভেতর একটা সম্প্রীতির ভাব গড়ে ওঠে। কেউ কেউ নিজের ভাষা-সংস্কৃতিকে ভুলে পুরোপুরি মিশে যেতে চায় স্থানীয়দের সাথে। কেউ সফল হয়। কিন্ত খালেকের বাবা ব্যর্থ। এতটকু জমিতে বউ, দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে ঘর বাঁধে ওর বাবা-মা। কিন্তু যে সুখপাখির আশায় শত শত মানুষ এখানে চলে আসে সে সুখপাখির নাগাল তারা পায়নি। পাকিস্তানের রাজারা ভারত সীমান্তে পাহারাদারীর ব্যারপারটিতে কড়া নজর রাখলেও সীমান্তবাসীরা দুবেলা দু’মুঠো খাচ্ছে কিনা সে দিকে নজর দেয়নি কখনো। এরপর তাদের ওপর খাড়ার ঘা হয়ে নামে আইয়ুব-ইয়াহিয়া-ভুট্টো নামের জল্লাদদের দুঃশাসন। নিপীড়িত, নিষ্পেষিত জনতা ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পরে ৭০-এর নির্বাচনে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয় পাক দানবদের। তারপরেও তাদের দমন পীড়ন থামেনি। বাঙ্গালিদের হাতে ছাড়েনি পাওনা ক্ষমতা। বরং নরখাদক পিশাচের হিংস্রতায় রাতের অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙ্গালিদের ওপর। কোণঠাসা বাঙ্গলিরা আহত বাঘের মতো পাল্টা আঘাত হানে। খালেক তখন ষোল বছরের কিশোর। দেশ মাতৃকার টানে ঘরে থাকতে পারেনি। রাতের আঁধারে বাবা মাকে না জানিয়ে যুদ্ধে যায়। মুক্তির যুদ্ধ।

তিন
'কী ব্যাপার খালেক ভাই, কী ভাবছ?' রহিম খালেকের গায়ে একটা টোকা দিয়ে বলে। পাঁচজনের হাত ঘুরে অবশেষে কলকেটা আসতে চায় খালেকের হাতে। স্মৃতি তাড়নায় বিভোর খালেকের সেদিকে খেয়াল নেই। ওকে সজাগ করতেই রহিমের এই টোকা।
খালেক চমকে ওঠে। নিজেকে সামলে নিয়ে কলকেটার দিকে হাত বাড়াতে বাড়াতে বলে, 'কিচু না, যুদ্দুর কতা মনে পইরা গেল তো-' হতাশা, দীর্ঘশ্বাস আর গঁঞ্জিকার ধোঁয়া মিলেমিশে এক হয়ে যায়। মুখ দিয়ে টানা ধোঁয়া নাক দিয়ে ছাড়ার সময় খালেক ভাবে এই বুঝি তার সমস্ত কষ্ট, রাগের আস্তর ধোঁয়ার সাথে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাবে এক হয় আর এক। কলকের ধোঁয়া মেজাজের আগুনে বরং ঘৃতাহুতি দেয়।
'ডিসি সায়েবেকে চেনো নাকি?' বিকেলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে রহিমের কৌতুহলের শেষ নেই।
'প্যাটের চিন্তায় বাঁচি না, তারে চিইনা কী করুম?'
'মুই চিনি, বদরুল আমিন। একেবারে পাঞ্জাবি আর্মি যেন।' সগর্বে বলে ওঠে কুদ্দুস।
'বদরুল আমিন' আর 'পাঞ্জাবি আর্মি' শব্দ দুটো কম্পাঙ্ক-তরঙ্গদৈর্ঘের বৈজ্ঞানিক ঐক্যতানে এক হয়ে হতাশা আর বিষাদের আগুনে জ্বলে পুড়ে মুহূর্তে ছারখার করে দেয় খালেকের মন-মস্তিস্ককে। ন্যানো সেকেন্ডের ব্যবধানে সেই অনল দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে ওর সমস্ত শিরায়-শিরায়, প্রতিটা দেহকোষে, রোমকূপের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। বারুদের ছোঁয়া পেয়ে জীবন্ত কামানের গোলায় রূপান্তরিত হয় খালেকের বিস্ফোরিত দুটি চোখ।
ভয় পেয়ে যায় আখড়ার সভ্যরা। খালেকের এইরূপ দেখেনি ওরা কখোনো। শুধু ওরা কেন গাঁয়ের কেউই দেখেনি। এমনকী দেখেনি যে আছিরন ওর মেজাজটাকে চেয়ারম্যানের সাঁনের সাথে তুলনা করে সেই আছিরনও। দেখেছে একাত্তরে হানাদার আর ঘাতক দালালেরা। যারা দেখেছে তার আর প্রাণ নিয়ে পালাতে পারেনি- সেই অঙ্গারে জ্বলে পুড়ে নরকের ঝলসানো কীটে পরিণত হয়েছ। পোড়েনি একজন। বদরুল আমিন।
ভয় খেয়ে যাওয়া সভসদেরা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। 'তোমার না কতবর বলিছি খালেক ভাই’র সামনে পাঞ্জাবি আর্মিদের কীর্ত্তন গা’বা না। বুড়ো হতি চললে, আক্কেল দাঁত আবার কবে ওঠবে তুমার কুদ্দুস ভাই?' কুদ্দুসকে ভর্ৎসনার বাণে বিদ্ধ করে রহিম।
'শান্ত হও খালেক ভাই, কুদ্দুস ভুল করছে। জানোই তো, যখন তখন পাঞ্জাবি আর্মিদের কথা তুলা ওর বদ অভ্যাস। ওর তুমি মাপ কইরে দ্যাও। এরাম কখা আর বলবে না কোনেদিন। কি বলো কুদ্দুস?' বলে আকবর কুদ্দুসের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি হানে।
কুদ্দুস দুহাত তুলে নিজের দুকান ধরে বলে, 'এই আমি কান ধরলাম খালেক ভাই, আর কোনোদির যদি ওই শালার বাইচ্চাদের নাম মুখি নিইছি তো আমি নূর উদ্দিনির ছেলেই নাই!'
খালেক শান্ত হয়। কিন্তু 'বদরুল আমিন' শব্দটা মন থেকে সরাতে পারে না। কী এক ঘোরলাগা ভাব এসে আচ্ছন্ন করে তাকে। গাঁজার প্রকোপে কিনা জানে না- দূরের বহুদূরের কোনো এক দেব মন্দিরের যজ্ঞধ্বনি তার কানে আসে। ঢাকের ড্যাডাং ড্যাডাং, ঘন্টার ঢং ঢং, শাঁখের পুঁউ-উ-উ... ললনাদের উলুধ্বনি ডপলার এফেক্টে ভর করে ক্রমেই এগিয়ে আসছে তার দিকে। এগিয়ে আসছে একাত্তরের যজ্ঞমঞ্চ।

চার
সে এক নিদারুণ ট্রাজেডির মঞ্চায়ন। একদিকে তরুণ বদরুল আমিনের লালসায় দিশেহারা সাধারণ জনতা, অন্যদিকে তরুণ খালেকের দৃষ্টির আগুনে পুড়ছে রাজাকার আলবদর আর পাক জানোয়ারের দল। পুরো যশোর জেলা তাদের বিচরণ ক্ষেত্র, কিন্তু কেউ কারো নাগালে নয়। খালেক অবশ্য তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে কিন্তু বদরুল আমিন চেষ্টা করছে খালেকের নজর এড়িয়ে কীভাবে পেছন থেকে মুক্তি বাহিনি ও আম জনতার রক্তে হাত রঞ্জিত করা যায় সে সুযোগ। যুদ্ধে শেষ হাসি খালেক হাসলেও ইঁদুর-বিড়াল দৌড়ে বদরুল আমিনেরই জয় হয়। যুদ্ধজয়ী খালেক ঘরে ফেরে একবুক আশা আর একটুকরো স্বপ্ন নিয়ে- মায়ের হাতে তুলে দেবে স্বাধীন দেশের পতাকা আর বোনের হাতে পরাবে মুক্তির রাখি বন্ধন। কিন্তু হায়! কোথায় মা-বাবা, কোথায় আদরের ভাইবোন?
পড়শিরা জানায়, সীমান্তে পাক আর্মিদের বড় যাতয়াত ছিল না, তাই দেশ ছেড়ে শরনার্থী হওয়ার কথা ভাবেনি কেউ। কিন্তু একরাতে পাল্টে যায় সব হিসাব নিকাশ। খুনি বদরুল আমিন নাকি পাক আর্মি সাথে নিয়ে গভীর রাতে হানা দিয়েছিল গ্রামে। অন্য কারো দিকে তাকায়নি শুধু খালেকেদর বাড়িতে ঢুকে ওর বাবা-মা ভাইকে মেরে বোনকে ধর্ষণ করে সেই রাতেই সটকে পড়ে। সকালে পড়শিরা বোনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঘরের মটকা থেকে।
এক দৌড়ে খালেক ঘরে ঢোকে। বোনের ওড়নাটা তখনো মটকার বাঁশে ঝুলেছে। সাদা ওড়নাটায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। বাবা-মায়ের রক্ত! ভাইয়ের রক্ত!

খালেকের মনের ছায়ামঞ্চে এবার ফুটে ওঠে একটা কাঠের ফ্রেমের পুরোনো রেডিওর ছবি। তাতে গান বাজছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান- মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি/মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি...
'বন্ধ করো, বন্ধ করো এই গান!' চিৎকার করে বলে খালেক।
'কী হইছে খালেক ভাই?'
'এরাম করো কেন?'
'এই খোকা, রেডিওটা বন্ধ কর।'
আকবর, রহিম, কুদ্দুস তিনজনেই তটস্থ হয়ে ওঠে। খালেকের ঘোরলাগা ভাব কেটে যায়। ছায়ামঞ্চটা মিলিয়ে যায় কোথায় যেন। খালেক বুঝতে পারে গানটা অন্তত ওই ছায়ামঞ্চের নয়।

পাঁচ
বিকেলে বউয়ের ঠ্যালাঠেলিতে কুদ্দুসের কাছ থেকে একটা পরিষ্কার পাঞ্জাবি ধার করে সেটা গায়ে চাপিয়ে সবংর্বনা অনুষ্ঠানে যায়। বাংলাদেশের আর দশটা রাজনৈতিক মঞ্চের চেয়ে এর বাহুল্য কম ছিল না। এমপি-মন্ত্রীদের মতো বড় বড় নেতারা হয়তো ছিলেন না, তবে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তো ছিলেন! ছিলেন জেলা প্রশাসকের মতো বড় আমলাও। জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে স্রোতার চিত্ত হরণ করার পারদর্শিতা তাদেরও কম নয়। যাই হোক বক্তব্য পর্ব শেষে একে একে ডাক পড়ল এলাকার জীবিত সব মুক্তিযোদ্ধার। নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা, একটা সম্মাননা পদক আর একটা করে সনদপত্র দেয়া হচ্ছে সবাইকে। পুরস্কার নিজ হাতে তুলে দিচ্ছেন স্বয়ং বীর মুক্তিযোদ্ধা পদবিধারী ডিসি বদরুল আমিন সাহেব।
খালেক 'বদরুল আমিন' নামটা নিয়ে সংশয়ে ছিল। পুরস্কার নেয়ার সময় ডিসির চোখে পানে কিছুক্ষণের জন্য দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই চোখ ভুলবার নয়। বদরুল আমিনকে খালেক সরাসরি দেখেনি কখনো। তবে তার একটা ছবি থাকত সবসময় ওর পকেটে। ডিসি সাহেবের চোখজোড়া যেন অবিকল সেই ছবি থেকে তুলে আনা। পুরস্কারে হাত না দিয়ে খালেক বিড়বিড় করে বলে, 'তুমি রাজাকার বদরুল আমিন না?'
ভিমরি খেয়ে যান ডিসি সাহেব। মুহূর্তে সামলে নিয়ে উল্টোপাল্টা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু খালেকের সেই একাত্তরের ভয়ঙ্কর চোখ যা নাকি আছিরনেরও অদেখা- সেই চোখের সামনে দাঁড়িয়ে কোনো যুক্তিই তিনি খুঁজে পেলেন না। ক্রেস্ট, চেক আর সনদপত্র কোনোরকমে খালেকের হাতে ছেড়ে দিয়ে চ্যোরম্যানকে ডেকে শুধু বললেন, 'আমি একটু টয়লেটে যাব।'
খালেক মাথা নিচু করে সনদপত্রটার দিকে দৃষ্টি বুলায়। সনদপত্র কোথায়, এ যে তার বোনের ফাঁসের ওড়না! ছোপ ছোপ রক্তের দাগ লেগে আছে তাতে। মা-বাবা-ভাইয়ের রক্ত। খালেকের বিস্ফোরিত চোখজোড়া পুড়িয়ে ছাই করতে চাই সে ওড়নারূপি সনদটাকে। পারে না। তবে হাত তো আছে! খেরোখাতার মতো কয়েক টানে সেটাকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে সামনে বসা জনতার মাঝে ছিটিয়ে দেয়।

----------------------
আব্দুল গাফফার রনি


মন্তব্য

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

প্রথম লাইন পড়ে বুঝছি শেষ লাইন কী হবে। মাঝখানে পড়ি নাই। শেষে গিয়া দেখলাম ঠিকাছে, পুরাতন ক্লিশে। ক্লিশে গল্প লেখাটা দোষের না, যখন সমাজ ভর্তি বিস্তর ক্লিশের জন্ম হয়। কেউ যদি সবিস্তার লিখতে ক্লিশের জন্ম কীভাবে হয়, তাহলে হয়ত বেশি কাজের হইত।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ক্লিশের জন্ম কীভাবে হয় তা সবিস্তারে লিখে শেষ করা যাবে না। নিয়ামক, অনুঘটক, নায়ক, খলনায়ক এ'সব অগণিত। তাছাড়া বিষয়টি কে কোন অবস্থান থেকে, কী উদ্দেশ্যে, কোন দর্শনের উপর ভিত্তি করে বর্ণনা করছে বা ব্যাখ্যা করছেন সেসব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আপনার সাথে ভিন্নমত নাই। কিন্তু দ্বিমত যুক্ত করি।

১। কর্ণ কদাচ ষষ্ঠ পাণ্ডব না। অথচ সে পঞ্চপাণ্ডবের ভ্রাতা, নাকি? কে কোনদিক থেকে দেখে এইটা গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নাই। কিন্তু অকাট্য ইতিহাস বইলা কিছু একটা আছে, এইটায় আমি ঈমান আনছি। (ঈমান কোনো কাজের বস্তু না, অনেকেই বলে)।

২। ইতিহাস কি এপিক? মিথের রূপ নেয় কিছুটা। লোকের মুখে মুখে, ইদানিং স্ট্যাটাসে স্ট্যাটাসে ভ্রমণশীল। কিন্তু ফ্যাক্ট হইল ফ্যাক্ট এইটা আমি আজও, এই আকালেও, এই ভার্চুয়াল দূষণের কালও, বিশ্বাস করি। মহাভারতে কী লিখা আছে কতজন জানে। কিন্তু লোকে জানে কর্ণ, তারে এপিক যেমন ট্রিটমেন্টই দিক, সে নায়ক। উত্তর-৭১ এপিক লেখকরা তাই ফ্যাক্টের কাছে পরাজয় মানবে, এই আশা রাখি।

৩। আরেকটা কথা, উত্তরাধুনিকেরা বলে গ্র্যান্ড ন্যারেটিভের উপর আস্থা না রাখতে। তাদের এই কথা প্রতিক্রিয়াশীলরা নিজের আখেরে নিয়োগ করছে। সচেতন, প্রোগ্রামাটিক মিথ্যাচারের নাম দিছে কাউন্টার ন্যারেটিভ। অথচ একখান উত্তরাধুনিক সমাধানও তো আছে - টু ক্রিয়েট মাইক্রোন্যারেটিভস। বড় বড় মহাভারত 'সবিস্তারে' লিখার প্রয়োজন নাই, বরং ছোটো ছোট সত্যগুলারে সম্মুখে আনতে হবে। এতে প্রকৃত সত্যের বা ইতিহাসের ক্ষতিবৃদ্ধি হবে না, কিন্তু মানুষে পক্ষে স্বাস্থ্যকর হবে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

অনিন্দ্য ভায়া, আমি 'শেষের কবিতা', 'দিবারাত্রির কাব্য', 'হাঁসুলি বাঁকের উপকথা' বা 'প্রাগৈতিহাসিক'- যা নাকি নিজস্ব প্যাটার্নে অনন্য- এমন সতন্ত্র কিছু লিখতে যাইনি; এমন কিছু করার যোগ্যতা ও জ্ঞান কোনোটাই আমার নেই। তাই বলে আপনার মন্তব্যের সাথে (প্রথম মন্তব্য) একমত হতে পারছি না। একটা লেখা যত নিম্নমানের কিংবা উচ্চমানেরই হোক তার শুধু প্রথম আর শেষ লাইন পড়েই নিন্দা বা প্রশংসা করা নিশ্চয়ই দায়িত্বশীলতার পরিচয় নয়? লেখককে খনিকটা অপমান করাও কি নয়? কেউ ভালো লিখতে জানে না, সেটা তার অযোগ্যতা। অপরাধ নয় নিশ্চয়? একজন মুচি বা মেথরকে তার বস্তুগত অপরাধের জন্য সাজা দিতে পারেন, কিন্তু শুধু 'মুচি' বা 'মেথর' হও‍য়ার অপরাধে তাকে সজা দেয় নিশ্চয় যুক্তিযুক্ত নয়? সে অধিকারও কারো নেই। অনন্য কিছু করার জন্য এই গল্প আমি লিখিনি, বা শেষ 'হইয়াও হইল না শেষ' জাতীয় আদর্শ ছোট গল্পও এটা নয়, আবার পাঠক চরম রুদ্ধশ্বাসে এরপর কী ঘটবে তার জন্য টান টান উত্তেজনায় একনিঃশ্বাসে পড়ে ফেলবে- সে অভিপ্রায়ও এই গল্পের নয়। বাস্তবে দেখা এক চরিত্রকে গল্পের কাঠমোবদ্ধ করার এক ব্যর্থ প্রয়াশ বলতে পারেন। আমি মানছি, এই গল্পের পটভূমি অতি ক্লিশে, বর্তমান সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে দুর্বল। এই অভিযোগকে আমি স্যালুট করতাম যদি আপনি মাত্র দু'লাইন পড়ে মন্তব্য না করতেন।
মন্তব্যটি পড়ার পর আপনার ব্লগে ঢুঁ মেরে প্রায় সব লেখা কালরাতে পড়েছি। আপনার ক্ষুরধার মস্তিস্ক, মাইক্রোস্কোপের ভেতর দিয়ে দেখার মত চুলচেরা বিশ্লেষণ শক্তি দেখে মুগ্ধ যেমন হয়েছি তেমনি অবাক হয়েছি মাত্র দু'লাইন পড়েই এই অনিন্দ্য রহমান আমার লেখার ওপর মন্তব্য করেছেন!

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

কোনো লেখা যদি পাঠকের পুরাটা পড়তে ইচ্ছা না হয়, তাহলে 'পুরাটা পড়ার ইচ্ছা হইলো না' এমন মন্তব্য করার অধিকার তার আছে। এবং পুরা লেখা পড়ার পরিশ্রম স্বীকার না করার অধিকারও তার আছে। অবশ্যই সেইরকম মন্তব্যের ওজন খুব একটা বেশি হবে না। সেইটাকে পাত্তা দেয়ারও হয়ত কিছু নাই।

নিন্দা বা প্রশংসা কোনোটাই করি নাই। আপনার গল্পে একটা পুরাতন বিষয় উঠে আসছে। আপনি পুরান বিষয় নিয়া লিখবেন, নাকি নতুন বিষয় নিয়া লিখবেন এইটার নসিহত দেয়ার আমি কেউ না। আপনি এইরকম কিছু ভাবলে মার্জনা করবেন। আমি বলছি ঐ পুরান বিষয়টা সমাজে কেন অস্তিত্বমান, এর অর্থনীতি-রাজনীতিটা কী এইগুলা নিয়া পড়ার ইচ্ছা হয়। কেউ লিখে না ...

রনি, সাহিত্য চুলায় গেলেও আমার মাথাব্যথা নাই যদি সত্য বজায় থাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের ঠান্ডা মাথায় হত্যা এবং নিগৃহিত করছে যারা, রাজাকার ও রাজাকারের বাচ্চাদের পুনর্বাসিত এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিষ্ঠা করছে যারা, এবং যেই কৃতঘ্ন মধ্যবিত্ত এই মুক্তিযুদ্ধবিরোধিদের সহ্য করে গেছে, তাদের কথাও সাহিত্যে আসুক। সম্ভব হইলে নাম ধরে ধরে। লেখক হিসাবে আপনাকে করুণার নন্দনতত্ত্ব ছাপায়া ঘটনার এইসব কার্যকারণ, রাজনীতি বিষয়ে সবাক করতে চাইছিলাম।

আপনাকে 'অবাক' করতে চাই নাই, শিওর।

----

আপনার কুকুর চুরি গল্পের প্রথমবার হওয়া পোস্টে মন্তব্য করছিলাম।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ

আমিও ব্যখ্যা দিই একটু ক্লিশে লেখার কারণ-
একালের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে সাহিত্যের শক্ত গাঁথুনির চেয়ে চাটুকারিতার ভাবটাই দৃশ্যমান হয় বেশি। মনে হয় অন্তর থেকে লেখা নয়, ক্ষমতাধারী মহলের সন্তুষ্টি অর্জনই মুল লক্ষ্য। তা ক্ষমতায় বিএনপিই থাক আর আওয়ামী লীগই। এসব সাহিত্যে চরিত্র নির্মাণেও নিরপেক্ষতার বড্ড অভাব। মনে হয়, যুদ্ধের পরে মুক্তিযোদ্ধারা সব ভদ্র ও মহান হয়ে উঠেছে অলৌকিকভাবে। সত্যিকার অর্থে দোষ-গুণের মীশেলেই তো বাস্তব মানুষ। অভাবের তাড়নায়, কোন মুক্তিযোদ্ধা যদি পরের ক্ষেতের মুলোটা, বেগুনটা চুরি করেন, কেঊ যদি বঊ পেটান, নেশাশক্ত হয়ে পড়েন- তিনি তো মুক্তিযদ্ধাই। আবার রাজাকার রাতারাতি যদি সমাজ সেবক হয়ে যায় তবু সে রাজাকার। আমাদের আনেক সাহিত্যক রাজাকারদের সমাজসেবক বানিয়ে পরে তাদের মুখোশ খুলতে সাচ্ছন্দবোধ করেন। এটা ভাল প্রয়াশ সন্দেহ নেই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাকে সবসময় সামাজিক প্রেক্ষাপটে আদর্শ মহামানব হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে কেন? তারা কী বাস্তবতার উর্ধে? মানুষের বাস্তব জীবন কি মহামানবতুল্য? দোষে গুণেই বাস্তব মানুষ, তবে কেন খালেকরা বউকে গু খাওয়াতে পারবেন না, কেন বউয়ের ভিক্ষার ঝুলি কেড়ে নিয়ে গাঁজার দাম মেটাতে পারবেন না? মানিকের কুবেরর অনেক ত্রুটি ছিল, তারাশঙ্করের বনোয়ারী-করালী চরিত্রদ্বয়ের সামজিক অপরাধও কম নয়; তাই বলে এদের শক্তিমত্তা কি কম? আমার তো মনে হয়, এদের বাস্তবিক শক্তিমত্তা বিভুতিভূষণের অপুর (আমার অত্যান্ত প্রিয় চরিত্র) চেয়ে কম নয়, বরং বহুলাংশে বেশি। অন্তত একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এরকম একটা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখে বাস্তবতার কাছাকাছি আনতে চেয়েছিলাম। বুঝতে পারছি সেটা বুমেরাং হয়ে গেছে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মুক্তিযোদ্ধাকে সবসময় সামাজিক প্রেক্ষাপটে আদর্শ মহামানব হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে কেন?

এইরকম কোনো আশা আমি প্রকাশ করি নাই। বরং বলছি সামাজিক প্রেক্ষাপটটাই লিখেন। সমাজ আর রাষ্ট্রের বাইরে ব্যক্তি অবস্থান করে না।

যুদ্ধের পরে মুক্তিযোদ্ধারা সব ভদ্র ও মহান হয়ে উঠেছে অলৌকিকভাবে?

নাহ! কেউ খুঁজে খুঁজে অভদ্র ও নীচ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়া 'নিরপেক্ষ' গল্প লিখতে পারেন। তারে থামানোর কিছু নাই।

"আম্লীগবিম্পি একই মুদ্রার এপিঠওপিঠ" জাতীয় গা বাঁচানো সুশীল দুয়ো না দিয়া সিরিয়াস অনুসন্ধানকে পোক্ত করা প্রয়োজন। "বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের ঠান্ডা মাথায় হত্যা এবং নিগৃহিত করছে যারা, রাজাকার ও রাজাকারের বাচ্চাদের পুনর্বাসিত এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিষ্ঠা করছে যারা, এবং যেই কৃতঘ্ন মধ্যবিত্ত এই মুক্তিযুদ্ধবিরোধিদের সহ্য করে গেছে", তাদের কথাও লিখার জন্য নিশ্চয়ই কিছু খারাপ মানের সাহিত্যিক খুঁজে পাওয়া যাবে।

আপনাকে সহজ কথাটা বুঝাইতে পারলাম না। ব্যর্থতা আমার। অতঃপর, বারংবার আপনার আলোচ্য রচনার সাথে বাংলা সাহিত্যের অপরাপর মহান সাহিত্যকৃতির চমৎকার যৌক্তিক প্রতিতুলনায় ঘায়েল হয়া প্রস্থান করলাম।

----

"একজন রাজাকার সবসময়ই রাজাকার কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা চিরজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয়।"


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

অনিদ্য ভায়া, আমার প্রশ্নগুলো কিন্তু আপনার উদ্দেশ্য করা নয়। বরং বহু আগে নিজের বিবেকের কাছেই করা নিজেরই প্রশ্ন। প্রশ্নগুলোর উদ্ভব ব্যাক্তি খালেকের জীবন চর্মচোক্ষে প্রত্যক্ষ করে।

"একজন রাজাকার সবসময়ই রাজাকার কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা চিরজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয়।"

আপনার এই বক্তব্যটা আমি একটু অন্যভাবে লিখি-
''"একজন রাজাকার সবসময়ই রাজাকার তা সে অন্য ক্ষেত্রে যত কীর্তিমানই হোক; তেমনি একজন মুক্তিযোদ্ধা চিরজীবন মুক্তিযোদ্ধাই তা সে পরবর্তী কালে চোর ডাকাত নেশাখোর যাই হোক।"

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার বক্তব্যে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়নি বলে আশঙ্কা করছি। ক্লিশের জন্মতিহাস রচনার বিপক্ষে আমার অবস্থান নয়। বরং এটা রচনাকালে কোন কোন বিষয়ে লক্ষ রাখা দরকার সেটা উল্লেখ করেছি মাত্র।

দ্বিমতে যা প্রকাশিত হল তাতে সহমত।

১। ঘটনা যা ঘটে গেছে সেটা অপরিবর্তনীয়। সেটা অকাট্য ইতিহাস বটে। তবে ইতিহাস তো কেবল অন্যের মুখ থেকে বা লেখা থেকে শুনতে হয় তাই ইবনে খালদুনের বলা পূর্বশর্তগুলো বিবেচনা করা ছাড়া সেই বর্ণনা থেকে ছানাকথাটা বা অকাট্য ইতিহাসটা বের করে আনা সম্ভব না। ঈমান আনা ছাড়া তো বিকল্প কোন পথ দেখতে পাচ্ছি না। অন্তত নিজের উপর ঈমান না আনলে চলবে কী করে!

২। মিথের সাপেক্ষে ফ্যাক্টের শ্রেষ্ঠত্ব হচ্ছে ফ্যাক্ট অপরিবর্তনীয়। সক্রেটিস মারা গেছেন - এটা হচ্ছে ফ্যাক্ট। সক্রেটিস স্বেচ্ছায় হেমলক পান করেছিলেন নাকি তাঁকে জোর করে পান করানো হয়েছে সেটা নিয়ে দুই হাজার চারশ' বছরে দুই লক্ষ চল্লিশ হাজারটা এপিক লেখা সম্ভব। তবে তাতে সক্রেটিসের মৃত্যু সংক্রান্ত ফ্যাক্টটি পালটে যাবার কোন উপায় নেই।

৩। গ্রান্ড ন্যারেটিভ কীভাবে তৈরি হয়? এটা কি হঠাৎ করে তৈরি হয় নাকি, দীর্ঘদিন ধরে একটু একটু করে এর পুরো কাঠামোটা তৈরি হয়? অথবা একজন মহান রচনাকার কি এটি নির্মাণ করে দেন? জাতিগত এপিক কি অসংখ্য মাইক্রোন্যারেটিভের সমন্বয়ে গঠিত হয় না? এবং সেখানকার গ্রান্ড ন্যারেটিভটি কি ঐ মাইক্রোন্যারেটিভগুলো দ্বারা পুষ্ট হয় না? তর্ক জারী রাখার উদ্দেশ্যে যে কাউন্টার ন্যারেটিভ তৈরি করা হয় সেটা নিঃসন্দেহে প্রতিক্রিয়াশীল। সেখানে উত্তরাধুনিকতার দোহাই দিয়ে প্রতিক্রিয়াশীলতার ল্যাজ ঢাকা যায় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

গ্রান্ড ন্যারেটিভটি কি ঐ মাইক্রোন্যারেটিভগুলো দ্বারা পুষ্ট হয় না? অবশ্যই হয়। এবং জরুরি পয়েন্ট।

আর ল্যাঞ্জা ... অনেকে জানেই না তার গজাইতেছে। অনেকে গোটাটাই ল্যাঞ্জা। অনেকে ল্যাঞ্জাটাকে তলোয়ার মনে কইরা বাতাসে ঘুরায় ‌... বিবিধ রতন।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনাদের দুজনের সাথেই আমি এক মত শয়তানী হাসি

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সাফি এর ছবি

প্লটটা পরিচিত, নতুন নয়। তবে বর্ণনার ঢং একটু নাটুকে লেগেছে।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আমাদের চারপাশে পুরোনো প্যাটার্নের ছড়াছড়ি। আবার নবীন লেখকরা যে নতুন প্যাটার্ন তৈরি করার চেষ্টা করেন না তা নয়, কিন্তু সেই চেষ্টার ফলাফলে দেখা যাই সেই পুরোনো আবর্তেই ঘুরপাক খেয়েছ লেখাটা। তবে যেদিন তার চেষ্টা বাস্তবে পর্যবেসিত হয় সেদিন থেকেই সে অনন্য হয়ে ওঠে।
ধন্যবাদ, সাফি ভাই, লেখাটা পড়ার এবং মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

বুনোফুল এর ছবি

ভালো লেগেছে।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আশরাফুল কবীর এর ছবি

সুন্দর লিখেছেন উত্তম জাঝা!

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, সাথে সচলত্বের অভিনন্দন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

বন্দনা এর ছবি

আপনার গল্প লেখার হাত বেশ ভালো, ছোটখাট খুঁটিনাটি অনেক জিনিস আপনার গল্পে চলে আসে এটা আমার বেশ ভালো লাগে।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
বৃহৎ দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজকে দেখার আভিজ্ঞতা বা সুযোগ কোনোতাই এখনো লাভ করতে পারিনি বলে খুঁটিনাটি বিষ্যগুলির প্রতি চোখ যায় বেশি।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

লাফাং ঘ্যাচাৎ


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

অ্যাঁ

লাফাং ঘ্যাচাৎ

কাকে ?
রাজাকারকে না আমার লেখাকে?
রাজাকার হলে, আসুন আমরা এক ছাতার তলে আসি।
আর আমার লেখাকে হলে ইয়ে, মানে... মডুদের সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন। তবে তারা ঘুষ টুষ খান না শুনেছি। হাসি

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

এই কথার অর্থ হচ্ছে এক জায়গার কমেন্ট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অন্য জায়গায় চলে গেছে বা লাফ দিছে। একবার করা কমেন্ট মুছা যায় না। ঐটা ঘ্যাচাৎ করতে হয়। এইটা আমাদের নিজস্ব পরিভাষা ভাই।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

খাইছে

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

মাঝে মাঝে এমন সুস্থ্য বিতর্ক জমলে মন্দ হয় না।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লিখে যান। পড়ছি।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ভাল থাকবেন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

উপরে দেখছি অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। সমালোচনা বোধহয় একটু বেশি হয়ে গেছে। সচলে আসার পেছনে অনেকের উদ্দেশ্য হল, এখানে পারসনাল অ্যাটাক করা হয় না, যুক্তির চর্চা হয়, তথ্য সমৃদ্ধ প্রাসঙ্গিক কথা হয়। কিন্তু এখানে এই পোষ্টে বুঝি সে কিছুতা কমই হল। দুঃখিত, আমারও প্রাসঙ্গিকতার বাইরে গিয়ে কথা বলতে হল।

লিখা ভালো হয়েছে।

Jawad

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

গল্পটা পড়ে মন্ত্যব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।