বাংলার তরু-লতা-গুল্ম-৪৭ : দাঁতরাঙা

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল গাফফার রনি [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০৭/০৮/২০১৫ - ১২:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

DSC00457
ফুলটা, গাছটা ছোট বেলায় হঠাৎ হঠাৎ দেখেছি পতিত ঘেসো জমিতে। তবে খুব বেশি দেখিনি। যেখানে সেখানে এখন আর দেখা মেলে না। খুব ভালো করে দেখার সুযোগ পেলাম ২০১৪ সালে । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রজাপতি আর পাখির পেছনে ছুটতে ছুটতে পুকুর পাড়ে পেয়ে গেলাম তেজপাতার মতো দেখতে এই উদ্ভিদকে। পটাপট বেশকিছু ছবিও তুলে নিলাম।

DSC00460
তারপর আবার প্রজাপতি-ফড়িংয়ের পেছনে ছোটা। হঠাৎ দেখতে পেলাম ত্যাজপাতার মতো পাতাওয়ালা ওই ছোট ছোট গাছগুলোতে দারুণ সুন্দর একটা ফুল। এত সুন্দর ফুল বনে-জঙ্গলে বাসই দেখা যায়। সুতরাং আবারও ক্যামেরা তাক করতে হলো দাঁতরাঙ্গা নামের এই বুনোফুলের দিকে। দাঁতরাঙ্গা নামটা জানলাম বৃক্ষকথা গ্রুপে ফুলের একটা ছবি পোস্ট করে। পরে অবশ্য নওয়াজেশ আহমদ-এর ‘বাংলার বনফুল’ নামের বইটিতেও পেলাম ফুলটির বর্ণনা।
দাঁতরাঙ্গা গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। গাছটি একসময় সারাদেশেই দেখা যেত। কিন্তু এখন বাংলার বুনো মাঠে এর দেখা মেলে কালেভদ্রে। সাধারণত উঁচু জমিতে দাঁতরাঙা বিশেষ পছন্দ। তাই উইঢিবির ঝোপের ভেতরও এরা মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়।

DSC00463
সাধারণত দাঁতরাঙা গাছ ১ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। কাণ্ড নরম, খসখসে। কাণ্ডের রং লালচে সবুজ। পূর্ণাঙ্গ গাছ মূল কাণ্ড ১ থেকে ২ ইঞ্চি মোটা হয়।

DSC00462
দাঁতরাঙার পাতা সরল। বেশ পুরু। দেখতে প্রায় তেজপাতার মতো। তবে তেজপাতার চেয়ে পুরু। তেজপাতা মসৃণ, পাতার কিনারগুলোও বেশ শাণিত। কিন্তু দাঁতরাঙার পাতা খসখসে। কিণারগুলোও করাতের মতো ধারালো। পাতার রং সবুজ। তবে পাতার গায়ে অসংখ্য লাল ও বাদামি ফুটকি আছে। পাতার লম্বাটে বর্শফলাকৃতির পাতার দৈর্ঘ্য তিন ইঞ্চি। প্রস্থ দেড় ইঞ্চি।

DSC00458
ফুল গোলাকার। রং লালচে বেগুনি। ফুলের পাঁচটি পাপড়ি থাকে। পাপড়ি পাতলা। পাপড়ির হৃৎপিণ্ডাকৃতির। ফুলের ঠিক কেন্দ্রে আট দশটি হলুদ এবং আট দশটি বেগুনি কেশর থাকে। ফুলের ব্যাস তিন ইঞ্চি।
বাংলাদেশ ছাড়াও পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে এদের দেখা মেলে। মালয় ও ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলে এদের সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।


ফল এখনও দেখা হয়নি। তবে গুগল করে ছবি পেলাম। সেগুলো তুলে দিলাম এখানে। ছবির মূলসাইট এখানে।


বীজ ও দেখিনি। তবে ত্রিকোণোকার এই বীজের ছবিও ইন্টারনেট থেকে নিতে হলো। বীজের ছবির সাইট এটা।

স্থানীয় নাম : বন তেজপাতা, লুটকি কক্সবাজারের মহেশখালীর আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয়, পুইট্টি গাছ।
ইংরেজি নাম : Indian Rohododendron.
বৈজ্ঞানিক নাম : Melastoma malabathricum..

বাংলার তরু-লতা-গুল্ম-৪৬: চোরকাঁটা

ছবি: 
17/05/2012 - 12:40পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

মাসুদ সজীব এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।