আমেরিকার নির্বাচন ও ওবামার সম্ভাবনা

সাইফ শহীদ এর ছবি
লিখেছেন সাইফ শহীদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ৩০/০৮/২০১২ - ১১:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'লস লুনাস' একটি গ্রাম। আমাদের শহরের কাছেই তার অবস্থান। দূরত্ব মাইল ত্রিশেক, আমেরিকার হিসাবে এমন কিছু দূরে না। এটাকে এই শহরের শহরতলী বললে ভুল হবে না, কারন অনেক মানুষ একটু বেশী ফাকা জায়গা পছন্দ করে এই গ্রামে থাকে এবং রোজ কাজ করতে এই শহরে আসে। 'রিও গ্রান্ড' নদী 'লস লুনাসের' মাঝ থেকে বয়ে গেছে। নদী অবশ্য নামেই নদী, শুখনার সময় অনেক জায়গাতে হেঁটে পাড় হওয়া যায় এই নদী। এই গ্রামের সাথে আমার পরিচয় অনেক দিনের। দাওয়াত পেলাম সেখানে 'হ্যাম রেডিও'-র এক গ্রুপ মিটিং-এ যোগ দেবার জন্যে। মাসে একবার করে স্থানীয় কয়েকজন একত্রিত হয় এক রেস্তোরাতে এবং এক পিস 'পাই' এবং কফির সাথে চলে আলোচনা। অনেক দিন তাদের সাথে দেখা হয়নি, শুধু মাঝে মাঝে রেডিওতে কথা হয়েছে, তাই ঠিক করলাম যাবার জন্যে।

প্রায় ৮/১০ জন ছিলাম সেদিন। আমাকে সবাই অনেক দিন থেকে চেনে, তাই আমার ভিন্ন গায়ের রং, ভিন্ন ধরনের নাম, কথাতে ভিন্ন উচ্চারন সত্বেও সবাই এখন আমাকে তাদের এক জন মনে করে সব বিষয়ে খোলাখুলি আলাপ আলোচনা করে। এদের সবার বয়েস পঞ্চাশ-উর্ধ, কেউ কেউ ৭০-এর ঘরে। সবাই স্থানীয় এবং সাদা - কয়েক পুরুষের আমেরিকান। আমাকে দেখে সবাই খুশী হলো এবং কুশলাদী জিজ্ঞাসা করলো।

জর্জকে দেখলাম অনেক রোগা হয়ে গেছে। বেশ কিছু দিন হাসপাতালে ছিল সে এবং মনে হলো এখনো বেশ দুর্বল। সে জানালো বিভিন্ন ডাক্তার এবং হাসপাতালেই আজকাল সময় কাটছে তার। জর্জকে সব সময় খুব সক্রিয় দেখে এসেছি - একটু খারাপ লাগলো তার এই অবস্থা দেখে। এক সময় সে রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ার ছিল। বর্তমানে অবসর জীবন আর হ্যাম রেডিও নিয়ে সময় কাটায়। তার স্ত্রীর সাথে আমার ভালই কথা-বার্তা এবং ঠাট্টা হয়।

- এত লোক থাকতে জর্জকে বিয়ে করলে কেন? - একদিন ঠাট্টা করে তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তার স্ত্রীকে।
- সকালে উঠে যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখি, তখন আমিও ঠিক এই কথা ভাবি। - এই কথা বলে জর্জের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে সে।

পিটার এক 'আরভি' যানের মালিক। আরভি হচ্ছে এক বড় বাসের মত গাড়ী এতে বসার ঘর, শোবার ঘর থেকে শুরু করে রান্না-ঘর, বাথরুম - সবই থাকতে পারে। এতে নিজস্ব জেনারেটর থাকে যাতে গাড়ী দাঁড়ান অবস্থাতেও নিজস্ব বিদুৎ-এর সাহায্যে গাড়ীতে এসি এবং অন্যান্য যন্ত্রাদি চালানো যায়। সারা আমেরিকা ঘুরে দেখে বেড়াবার জন্যে অনেকেই এ ধরনের গাড়ী ব্যবহার করে থাকে। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই আজকাল আর 'আরভি' ব্যবহার করতে চাইছে না।

- কত মাইল যায় এক গ্যালন গ্যাসে তোমার 'আরভি'? - জানতে চাইলাম আমি।
- এক গ্যালনে মাইল আটেক যায় হয়তো। আমি এটা বিক্রি করতে চাইছি। তুমি যদি চাও তাহলে বললে তোমার কাছে পৌঁছে দেবো, ইন্সটলমেন্টে দাম দিলেই হবে।

হাসলাম আমি। সেই সূযোগ আর সৌভাগ্য কি আর এখন আছে আমার।

পল যথারীতি তার কাউবয় হ্যাট মাথায় দিয়ে এসেছে। সাধারণত স্ত্রীকে সাথে আনে, আজ একাই এসেছে। আমাকে দেখে খুশী হয়েছে মনে হল।

চার্লি আগে ট্যাক্সি চালাতো, আপাততঃ ফেসবুকে বেশী সময় ব্যয় করে। কি ভাবে চলে জিজ্ঞাসা করিনি। তবে খারাপ আছে বলে মনে হয় না।

জনের একটা ঘোড়ার খামার আছে। বেশ কিছু ঘোড়া আছে সেখানে। আমার দেখতে যাবার ইচ্ছা আছে, তবে এখনো সময় করে উঠতে পারিনি। তার সাথে রিচার্ড বল্ডউইনের সাম্প্রতিক মৃত্যুর ব্যাপারে আলাপ হল। রিচার্ড বহুদিন 'আন্তর্জাতিক এমেচার রেডিও ইউনিয়ন'-এর সভাপতি ছিল - তার ফলে নামে তাকে অনেকেই চেনে। ঢাকাতে সে যখন এসেছিল তখন আমার বাড়ীতে এসেছিল। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমার বাড়ীতে তোলা তার আর আমার একটা পুরানো ছবি ফেসবুকে দিয়েছিলাম। অনেকের মত জনও দেখেছে সেটা।

এডওয়ার্ড নিজে ভিয়েতনামে যুদ্ধ করেছে। তার একমাত্র ছেলে, স্টিভ যখন আর্মিতে যোগ দিয়েছে তখন খুশীই হয়েছে। স্টিভ তার স্কুলের সুইট-হার্ট শেরীকে বিয়ে করে ভালই ছিল। এর মধ্যে তার ডাক এলো প্রথমে ইরাকে এবং পরে আফগানিস্তানে। বিগত ছ'বছর ধরে সে যুদ্ধক্ষেত্রে। মধ্যে কয়েক দিনের ছুটিতে অবশ্য কয়েকবার বাড়ীতে এসেছে। কিন্তু একটানা একাকী থাকতে থাকতে শেরীর অস্থিরতা খুব বেড়েছে - মানষিক রোগের মত হয়ে গেছে। এ বছরের প্রথম দিকে তাদের এক সন্তান হয়েছে। আপাততঃ সেই সন্তানকে নিয়ে ব্যস্ত শেরী। স্টিভ এখনো তার বাচ্চাকে দেখার সূযোগ পায়নি। এ ধরনের কাহিনী এখন আমেরিকার অনেক বাড়ীতে।

আমার সামনের বাড়ীর ইউসুফের কাহিনী আরও বিচিত্র। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুন্দর সুখের সংসার তাদের। প্রায় বিশ বছর আগে সে আমেরিকাতে এসেছিল আফগানিস্তান থেকে। এখানে তার গাড়ী কেনা-বেচার ব্যবসা। আগে ভালই ছিল সব, তবে আমেরিকার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর তার ব্যবসা খারাপ হতে শুরু করে। এর মধ্যে তার ডাক এসেছে আফগানিস্তানে যেয়ে মার্কিন সেনাদের 'ইন্টারপ্রেটর' হিসাবে কাজ করার জন্যে। যখন ভিন্ন দেশ থেকে এসে কেউ আমেরিকার নাগরিক হয় তখন তাকে অঙ্গিকার করতে হয় যে দেশের বিশেষ প্রয়োজনে, যেমন যুদ্ধের সময়, ডাক পরলে তাকে সেই কাজে যেতে হবে। বেশ কয়েক মাস হল ইউসুফ এখন আফগানিস্তানে। ফলে তার বউকে এখন একাই গাড়ী চালিয়ে ছেলে মেয়েদের স্কুলে নেওয়া থেকে শুরু করে বাকী সব কাজ করতে হচ্ছে। তার ব্যবসা সম্ভবত এখন বন্ধ হয়ে গেছে।

এলেনের এখন চাকরি নেই। ছয় মাসের বেশী বাড়ীতে বসে। অবশ্য তার স্ত্রী একটা অপেক্ষামূলক ভাল চাকরি করে। কথা বলে মনে হল মোটামুটি ভালই আছে। টিভি বিজ্ঞাপন অনুসারে আমেরিকাতে এখন প্রতি ৬ জনের মধ্যে ১ জনের চাকরি নেই। সরকারি হিসাবে এই সংখ্যাটা শতকরা ৮ দশমিক ৩ - সম্ভবত যারা 'আন-এমপ্লয়েড ভাতা' গ্রহন করে তাদের সংখ্যা এটি।

ডেভিড তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে এসেছিল। ডেভিড খুব আলাপী কিন্তু তার স্ত্রীকে কখনো তেমন কথা বলতে দেখি না। কে জানে কোন মানষিক রোগে আক্রান্ত কিনা এই ভদ্রমহিলা। উঠে দাঁড়িয়ে অবশ্য আমার সাথে হাত মেলালেন, কিন্তু শুধু ঐ টুকুই।

আমি একটি 'পিকান পাই'-এর অর্ডার দিয়েছিলাম। অনেকদিন পরে খাচ্ছি। খুব সুন্দর, কিন্তু খুউব মিষ্টি। বুঝলাম আমার জন্যে এত মিষ্টি খাওয়া ঠিক হচ্ছে না। 'ব্লাড সুগার' অনেক বেড়ে যাবে এতে। ঠিক করলাম সামান্য খেয়ে বাকীটা সাথে করে বাড়ীতে নিয়ে যাবো। কিন্তু এক চামচ এক চামচ করে খেতে খেতে দেখলাম বাড়ীতে নেবার মত অবশিষ্ট কিছু নেই। শুনেছি মানুষ বুড়া হলে লোভী হয়ে যায় - আমিও এখন সেই দলে যোগ দিতে যাচ্ছি।

অন্য এক প্রসঙ্গের আলাপ তুললাম আমি। জিজ্ঞাসা করলাম আসছে নির্বাচনে ওমাবাকে কারা কারা ভোট দিচ্ছে।

- আমি না - জন বললো।
- আমিও না - বললো পিটার।
- অসম্ভব। ওবামাকে ভোট দেওয়া মানে আগামী ২০০ বছরে আর আমেরিকা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।
- বরং ফিরে যাক সে কেনিয়াতে, যেখানে জন্মেছে।
- কিছুতেই না।
- মোটেই না।

এক এক করে সবাই সজোরে জানালো ওবামাকে কেউ ভোট দিচ্ছে না। শুধু ভোট দেওয়া না, মনে হল যেন যতেষ্ট আক্রোশ রয়ে গেছে সবার ওবামার প্রতি। এদের মধ্যে অন্তত একজনও ওবামার সাপোর্টার না দেখে একটু অবাক হলাম। এদেরকে অবশ্য সারা দেশের আনুপাতিক প্রতিফলন বলতে পারিনা, কারন এরা সবাই সাদা - যদিও এরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এছাড়া এদের মধ্যে যুবা সমাজের প্রতিফলন নেই। নেই কালো, হিস্পানিক বা এশিয়ানদের প্রতিনিধিত্ব। তবে আমি কিছু তরুন এবং যুবকের সাথে কথা বলে দেখেছি - চার বছর আগের সেই উদ্দিপনা কারো মধ্যে নেই। অনেকেই ভোট দিতে যাবে না বলে ঠিক করেছে। তাদের ধারনা নতুন প্রেসিডেন্ট যেই নির্বাচিত হোক না কেন - তাতে তেমন কিছু পরিবর্তন হবে না। কথাটা মিথ্যা না। বিগত চার বছরে ওবামা তেমন কিছু পরিবর্তন দেখাতে পারেনি। বুশের সময় যেমন ছিল, তেমনি যেন চলছে এদেশ।

তবু এদের মধ্যে একজনও ওবামাকে ভোট দেবেনা শুনে একটু অবাক হলাম। এই যদি অবস্থা হয় তা হলে তো মনে হয় এবার আর জিততে পারবে না ওবামা। হঠাৎ জানতে ইচ্ছা হল এদের মধ্যে কেউ চার বছর আগে ওবামাকে ভোট দিয়েছিল কিনা। জিজ্ঞাসা করলাম আমার প্রশ্ন। এবারও কেউ সম্মতিসূচক হ্যাঁ বললো না। একটু আস্বস্ত হলাম। এদের ভোট ছাড়াই যখন গতবার ওবামা জিতেছিল, তবে এবারো হয়তো জিততে পারে।

গাড়ীতে করে বাড়ীতে ফেরার পথে তবু সন্দেহটা গেল না। এমনতো হতে পারে এদের মধ্যে কেউ কেউ আগের বার ওবামাকে ভোট দিয়েছিল, কিন্তু এখন অনুশোচনাতে সেটা স্বীকার করতে চাইছে না?


মন্তব্য

টিমটিম  এর ছবি

ভাল লাগে আপনার লেখা। হাসি

সাইফ শহীদ এর ছবি

টিমটিম,

লেখা ভাল লাগার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

সাইফ শহীদ

তাসনীম এর ছবি

গতবার নিউ মেক্সিকোতে ওবামা জিতেছিল, আশা রাখা যায় এই বারও হাসি

তবে জিতলে কি হবে এই প্রশ্ন থেকেই যায়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সাইফ শহীদ এর ছবি

তাসনীম,

ঠিকই বলেছো কথাটা। ওবামা নিজে নির্বাচনে জিতলেও যদি এখনকার মত কংগ্রেস রিপাবলিকানদের দখলে থাকে তবে শুধু নির্বাহী আদেশ দিয়ে বেশী দূর আগাতে পারবেন বলে মনে হয় না। এছাড়া বর্তমান রিপাবলিকান দলের মনে হচ্ছে একটাই লক্ষ্য - যে করে হোক ওবামাকে দূর করতে হবে।

ওবামার গতবারের অনেক সমার্থক খুবই আশাহত কারন তার দেওয়া পরিবর্তনের আশ্বাসের তেমন কিছুই তিনি দেখাতে পারেননি। জানি এবং বুঝি তার অনেক কারন ছিল এবং সত্যি তিনি আমেরিকা এবং বিশ্বকে এক বিরাট অর্থনৈতিক দূর্যোগ থেকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু সেটা কত জন লোক জানে বা বোঝে?

সাইফ শহীদ

Sohel এর ছবি

" সত্যি তিনি আমেরিকা এবং বিশ্বকে এক বিরাট অর্থনৈতিক দূর্যোগ থেকে বাঁচিয়েছেন।" - এটার কি কোনো আলোচনা করা যায়? ৪ গুণ ডলার ছাপিয়ে আর corporate দের মাথাদের বেল আউট করে "দূর্যোগ থেকে বাঁচিয়েছেন" অভিধা পাওয়া যাবে? Middle East ড্লার বাদে ভিন্ন কারেন্সিতে ডিল করতে চাইলে আমেরিকা ( বা ওবামা) কি করবে মনে করেন? অনেকে মনে করে ওদের ইকনমি তাহলে ফেল করবে, আর ওরা যুদ্ধ লাগিয়ে সেটা আট্কাবে।

সাইফ শহীদ এর ছবি

সোহেল,

চার গুন বেশী নোট ছাপালে মুদ্রাস্ফিতি হয়ে যেতো। সেটা হয়নি এখানে। সরকারের 'গ্যারান্টি' বা 'আন্ডারটেকিং'-এর কারনে অনেক ব্যাংক, ইন্সুরেন্স এবং গাড়ী প্রস্তুতকারক জিএম বেঁচে গেছে।

এখানে একে অপরের সাথে নানা ভাবে যুক্ত। একটা সহজ করে উদাহরন দিই। আমার মাইনের কিছু অংশ প্রতি মাসে কেটে রাখে কোম্পানী এবং তার সাথে তারা আরও কিছু যোগ দিয়ে আমার নামে এক ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে জমা দেয়। ঐ ইন্সুরেন্স কোম্পানী তাদের কাছে জমানো টাকা বিভিন্ন কোম্পানীর শেয়ারে বিনিয়োগ করে। প্রতি বছর শেষে আমাকে জানানো হয় আমার টাকা কতটা বাড়লো। এর বদলে যদি টাকাটা ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিটে রাখতাম তাহলে বছরে খুবই কম সুদ পেতাম (বর্তমানে আমার ব্যাংকে শূন্য দশমিক ২ পারসেন্ট সুদের হার)। ফলে অধিকাংশ মানুষ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর মাধ্যমে শেয়ার বাজারে টাকাটা রাখে।

ওবামা যদি ঐ সব বড় কোম্পানীগুলিকে না বাঁচাতো তবে তাদের সাথে সাথে সাধারন মানুষের গচ্ছিত টাকাও ঢাকার শেয়ার বাজারের মত উধাও হয়ে যেত।

ডলারে সব কিছু কেনা বেচাতে আমেরিকার সরাসরি কিছু লাভ হয় কিনা জানিনা। তবে সবাই ডলার পছন্দ করে কারন অন্য কারেন্সির চাইতে এখনো ডলারের উপর তুলনামূলক ভাবে বেশী আস্থা করা যায়।

সাইফ শহীদ

দুর্দান্ত এর ছবি

মাঝে মাঝে একটা কথা শুনি। শুনি আমেরিকার অর্থনীতির চাকা একটা বড় আকারের যুদ্ধ ছাড়া ঘোরানো মুশকিল। ওবামা যদি যুতমত একটা যুদ্ধ না লাগাতে পারে, তাহলে আরেকবার নির্বাচিত নাও হতে পারে।

সাইফ শহীদ এর ছবি

দুর্দান্ত,

কথাটা ইতিহাসের দিক দিয়ে দেখলে অস্বীকার করা যায় না। আইজেনহাওয়ার এটাকে বলেছিল 'মিলিটারি-ইন্ডাষ্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স'। এখনতো আমেরিকানদের পক্ষে গার্মেন্ট শিল্পে যেয়ে বাংলাদেশের সাথে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব হবে না, বা চীনাদের মত পুতুল বা বাজীও বানাতে পারবে না - শ্রমিক খরচে পোষাবে না বলে। প্রায় লাখ খানেক আমেরিকান সৈন্য যারা এখন আফগানিস্তান বা ইরাকে আছে - তারা দেশে ফিরলে বেকারের সংখ্যা আরও বাড়বে। এখনি ২৪ মিলিয়নের মত আমেরিকান চাকরিহীন বা কম টাকার চাকরিতে নিযুক্ত। ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার ধারের টাকা।

এত সব সত্বেও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে যাদের অতরিক্ত টাকা আছে তারা তাদের টাকা আমেরিকাতে পাঠাচ্ছে, জমি কিনছে, বাড়ী কিনছে। এদের মধ্যে সবার আগে চীন, তারপর আছে ভারত এমন কি বাংলাদেশের ধনী (আধিকাংশ টাকা অবশ্য অসৎ উপায়ে উপার্জন করা)। এর কারন হচ্ছে অন্য দেশের তুলনায় আমেরিকার অবস্থা সব সময় ভাল এবং অদূর ভবিষ্যতেও ভাল থাকবে। যাকে বলে 'মরা হাতি লাখ টাকা'।

সাইফ শহীদ

দিগন্ত এর ছবি

আপনার লেখায় যারা ওবামাকে ভোট দেবে না বলছে তারা কিন্তু বলছে তাকে কেনিয়াতে ফিরে যেতে, সুতরাং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি
মূলত রেসিস্ট, যা আমার কাছে কারণ হিসাবে দাঁড়ায় না। ওবামার সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা থাকলে আরো ভাল লাগত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সাইফ শহীদ এর ছবি

দিগন্ত,

হ্যাঁ, এটি খুবই আপত্তিকর 'রেসিষ্ট' দৃষ্টিভঙ্গি। এখনো প্রায় ৩০% আমেরিকান বিশ্বাস করে ওবামা একজন মুসলমান। অনেকেই বিশ্বাস করে কেনিয়াতে জন্ম হয়েছে তার।

এদের সাথে তর্ক করে লাভ নেই। যেমনি লাভ নেই বিএনপি-র কাউকে খালেদার ছেলেদের দুর্নিতীর কথা, বা হাসিনাকে আবুল আর সুরঞ্জিতের কথা বলা।

সাইফ শহীদ

অচল এর ছবি

উত্তম জাঝা!

সাইফ শহীদ এর ছবি

ভাই অচল,

আপনার ভাষা বুঝলাম না। যদি কিছু প্রশ্ন থাকে স্পষ্ট করে জানান, সম্ভব হলে উত্তর দিয়ে বিষয়টা পরিস্কার করার চেষ্টা করবো।

সচালয়তনে আমরা চেষ্টা করি সবার সম্মান রেখে বার্তা আদান-প্রদান করতে এবং কারও কোন বিষয়ে জানার থাকলে সেটা জানাতে।

ভাল থাকুন।

সাইফ শহীদ

সজল এর ছবি

ওবামার নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্লেষণমূলক লেখা আশা করেছিলাম শিরোনাম দেখে। সেই দিক দিয়ে হতাশ হলাম। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার কথন হিসেবে ভালো লাগল।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সাইফ শহীদ এর ছবি

সজল,

আমি আমেরিকার এক ক্ষুদ্র স্টেটে থাকি। লোক সংখ্যা এখানে মাত্র ২০ লাখ। আমি আশা করবো ভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অন্যরা শেয়ার করবে তাদের অভিজ্ঞতা। এখনো দু'মাস বাকি - এর মধ্যে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে।

সাইফ শহীদ

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা মনে হল অসম্পূর্ণ। তবে যতটুকু বুঝা গেল যে আপনি ওবামার নির্বাচন জেতার ব্যপারে আশাবাদী এবং আপনার বন্ধুদের কারোরই সেই ব্যপারে আগ্রহ নেই (এবং এ জন্য আপনি সম্ভবত একটু চিন্তিত) -- ওবামা জিতলে আসলে কি সুবিধা? কাদের লাভ? শুধু আপনিই নন, আমার ধারণা মের্কিন মুল্লুকে মোটামোটি সব অভিবাসীই ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থক, কেন? এইসব ব্যপার নিয়ে আরেকটা বিস্তারিত লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

-- রামগরুড়

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

সাউথের দিকে ওবামার সমর্থন তেমন একটা নেই। মনে হয় নর্থেও না। তবে সব অভিবাসীই ডেমোক্র্যাটদের সমর্থক, এটা এক্কেবারেই ঠিক না। আমি রিপাবলিকান স্টেটে থাকি। এখানে অভিবাসীদের সংখ্যা স্কেলের অনেক উপরে। কিন্তু ডেমোক্র্যাট খুব কম। শুনতে খারাপ লাগলেও আসল সত্যি হলো, আমেরিকাতে মুলসমান ছাড়া মুসলমানদের তেমন কেউ একটা পছন্দ করেনা। গত চার বছর ওবামা অনেক চেষ্টা করেও তার মুসলমান হবার সম্ভবনাটা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। মাঝখান থেকে সে মুসলমানদের সমর্থনও খুইয়েছে অনেক।
ওবামা যদি এবার নির্বাচিত হয়, সেটা হবে মিট রোমনের ধর্ম বিশ্ব্যাস, ট্যাক্স কেলেঙ্কারি, ও মিথ্যা ভাষণের জন্য। নতুন ইমিগ্রেশন আইন স্পেনিস ভোটারদের ভোট দিতে আগ্রহী করতে পারে। ওবামার গুন একটাই সে বলে ভালো। কিন্তু চার বছর পর সেটা আর লোক টানতে পারছে না। মিশেলকে মাঠে নামতে হয়েছে।
অন্য দিকে মিট রোমনের ভাইস প্রেসিডেন্ট পল রায়েনের কারিশমা চার বছর আগের ওবামার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই সংগে ও সাদা, দেখতে ভালো, বয়স কম। মেয়ে ভোটার ও যুব-সমাজে ও দ্রুত জনপ্রিয়তা পাবে বলে মনে হয়।

--------------------------------------------------------------------------------

অতিথি লেখক এর ছবি

একটা ব্যপার আমি বুঝিনা, বিশেষ করে মুসলমানরা (অনেক প্রবাসী দেশী হুজুরকেও দেখি), ওবামা বলতে প্রায় পাগল, যদিও ডেমোক্র্যাট দলের সাথে অধিকাংশ মুসলমানদের আদর্শগত মিল থাকার কথা না -- কিন্তু অন্য দিকে রিপাব্লিকান দলের পলিসির সাথে মুসলমানদের আদর্শগত মিল বেশী (বিশেষত গর্ভপাত আইন/এলজিবিটি অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে) -- সরল যুক্তিতে আমি যা বুঝি, প্রবাসী মুসলমানদের জন্য রিপাব্লিকান দলকেই সমর্থন করা যুক্তিযুক্ত। প্রবাসী মুসলমানদের এইরকম আদর্শগত দ্বৈততার কারণ কি??

আরেকটা ব্যপার, একজন প্রবাসী/অভিবাসী মুসলমান, সে যতই লিবারেল হোক না কেন -- এলজিবিটি ইস্যুর ব্যপারে তার অস্বস্তি থাকবেই, আমি এখন পর্যন্ত এরকম কোন লিবারেল মুসলমান দেখি নাই যে (অন্য সব ব্যপারে খোলামেলা হলেও) এই ব্যপারে গা চুলকানি নেই -- "সমলীংগ বিবাহর" মত ব্যপার কে সহজে মেনে নেওয়ার মত লিবারেল হইতে মুসলমানদের এখনো ঢের দেরী আছে।

আর আমার ধারণা যুদ্ধের ব্যপারে দুই দলেরই অবস্থানের ভিতর খুব বেশী পার্থক্য নেই, কারণ মের্কিন মুল্লুকের বর্তমান প্রেক্ষাপটে "শয়তানের অক্ষশক্তি" (ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল রাষ্ট্র) কে প্রতিহত করার ব্যপারটা এখন তাদের "পুঁজিবাদী সার্বভৌমত্বকে রক্ষা"র প্রশ্নের সাথে জড়িত। রিপাব্লিকান বা ডেমোক্র্যাট উভয় দলের জন্যই এই ইস্যু সমান গুরুত্বপূর্ণ -- সেই হিসাবে অভিবাসী মুসলমানদের জন্য রিপাব্লিকান দলকে সমর্থন করাই বেশী যুক্তিযুক্ত, তাই নয় কি?

আমার মের্কিন মুল্লুকের রাজনীতি এবং প্রবাসীদের এই ব্যপারে স্ট্যন্ডিং এর ব্যপারে পূর্ণ ধারণা নাই, তাই জিগাইলাম আরকি।

-- রামগরুড়

সাফি এর ছবি

ভাই আমি নিজেরে লিবারেল মুসলমান বলি, এলজিবিটি ইসু্যতে আমার কোন চুলকানি নাই। বরং আমার বন্ধুদের মাঝেই আছেন তারা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই গো, ফ্রেন্ডগো মাঝে এলজিবিটি থাকলে হয়ত গায়ে তেমন একটা লাগে না, কিন্তু যখন দেখবেন আপনার পরিবারের লোকজনের মধ্যে এলজিবিটি আইস্যা পড়ছে -- তখন মনে হয় গা না চুল্কায়ে থাকতে পারবেন না, হে হে ।

-- রামগরুড়

সাফি এর ছবি

আপনার প্রথম মন্তব্যে তো পরিবার কথাটা ছিলনা। যাই হোক, নিজেকে যতটুকু জানি তাতে আমার ধারণা পরিবারে এলেও আমার গা চুলকানি আসবেনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই, "পরিবার" কথাটা অন্যভাবে না নেওয়ার অনুরোধ জানাই, আমার খুব কাছের আত্মীয় এক "লিবারেল" পরিবার থাকেন মের্কিন মুল্লুকে, তারা অনেক আগেই নাগরিক হয়েছেন, রিপাব্লিকানের যারে কয় "গু-ভক্ত" আরকি, বছর বছর ভোট দেয়।

সমস্যা হইল তাদের বড় মেয়েটা ইদানিং ঐ লাইনে গেছে বলে তাদের ফ্যামিলি তে চরম অশান্তি। অনেকে নিজেকে লিবারেল বলে দাবী করলেও, লিবারেল হওয়ার সমস্ত রিস্ক নিতে চায় না -- এই প্রসঙ্গে "পরিবার" কথাটা পাড়লাম। তবে আপনার কথা শুনে ভাল লাগল।

-- রামগরুড়

অতিথি লেখক এর ছবি

এলজিবিটি (লেসবিয়ান-গে-বাইসেক্সুয়াল-ট্রান্সসেক্সুয়াল) ইস্যুটা গুরুত্বপূর্ণ বটে, তবে এখনো এইটা ইউএস প্রেসিডেন্ট ইলেকশনে প্রথম সারির কোনো ইস্যু না। অভিবাসীরা (ধর্ম নির্বিশেষে) ডেমোক্রাটদের পছন্দ করে মূলত দলটার "কিছুটা উদার" ইমিগ্রেশন পলিসি আর "কিছুটা" মধ্যবিত্ত-ফ্রেন্ডলি ট্যাক্স পলিসি ইত্যাদির জন্য (আমেরিকায় মুসলিমদের সিংহভাগই নয়া-অভিবাসী আমেরিকান)। আর মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ওবামাকে বুশ-চেনি এদের থেকে কম ইসরায়েলপন্থী মনে করাহয়, এটাও একটা কারণ। গত ২/৩ টা রমজানের শুরুতে ওবামা আমেরিকা ও বিশ্বের মুসলিমদের অভিনন্দন জানিয়ে অফিশিয়াল বক্তব্য রাখেন, সেগুলোও দেখেন কেউ কেউ।

--দিফিও

সাফি এর ছবি

পল রায়ান তো বেশ কয়েকটা মিথ্যে বলে ইতিমধ্যে ধরা খেয়েছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

গতবারও সারাহ প্যালিনকে নিয়ে অনেকেই তরুণদের ভোট টানার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন, সেটা পরে ব্যাকফায়ার করে।পল রায়ান অন্তত সারাহ প্যালিনের থেকে অনেকখানি আগানো।

এইবার অবশ্য কী হয়, বলা মুশকিল। খুব সংক্ষেপে, আমার মনে হয়, যদি ডিসেম্বরের মধ্যে ইকোনমি উন্নতি না করে (আনএমপ্লয়মেন্ট কমে অন্তত ৮.০ বা এর কম না হয়), আর রমনি/পল যদি বড় কোনো কেলেংকারী থেকে মুক্ত থাকে, তাহলে ওবামার এইবার জেতা মুশকিল।

---দিফিও

ক্লোন৯৯ এর ছবি

মন্তব্যে পুরা একমত!! আমার কালকে রমনিচাচার বকতিমা দেখে তাই মনে হইছে!! তবে রায়ান যদি প্যালিনের মত কথা বলা শুরু করে তাইলে আবার পাশার দান উল্টায়েও যাইতে পারে হেহ হেহ!!

তবে সব কথার শেষ কথা, পপুলার ভোট যাই হোক না কেন ইলেকটারল ভোট কেনার জন্য রিপাবলিকানরা যা যা করা দরকার তাই করবে। এখন দেখা যাক ওবামাচাচা কি করে বিশেষ করে বসে আছি ক্লিন্ট ইস্টউডরে কেমন রিবাটল দেয় সেইটা শোনার জন্য।

সাইফ শহীদ এর ছবি

মেহবুবা ভাবী,

আপনার চোখে যা দেখেছেন এবং যা বুঝেছেন - সবই ঠিক। গতবারে কিন্তু সামান্য ভোটের ব্যবধানে ওবামা জিতেছিলেন - এর মধ্যে কিছু নোংরা রাজনীতিও ছিল। নির্বাচনের কিছু দিন আগে প্রচার করা হয়েছিল এক কালো মহিলার সাথে জন ম্যাকেইনের সম্পর্কের মিথ্যা কাহিনী এবং তার সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত করা হয়েছিল বাংলাদেশে জন্ম ম্যাকেইনের পালিত কন্যাকে। অবশ্য এগুলিতো ইতিহাস। এবারেও অনেক কিছু দেখবো বলে মনে করি।

সাইফ শহীদ

তানভীর এর ছবি

কালো মহিলার সাথে সম্পর্কের কথা রিপাবলিকানদের তরফ থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছিলো ম্যাককেইন এর আগের বারে যখন বুশের বিরুদ্ধে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছিলো তখন।

সাইফ শহীদ এর ছবি

[restrict:সচল][/restrict]

সাইফ শহীদ

সাইফ শহীদ এর ছবি

মেহবুবা ভাবী,

আপনার চোখে যা দেখেছেন এবং যা বুঝেছেন - সবই ঠিক। গতবারে কিন্তু সামান্য ভোটের ব্যবধানে ওবামা জিতেছিলেন - এর মধ্যে কিছু নোংরা রাজনীতিও ছিল। নির্বাচনের কিছু দিন আগে প্রচার করা হয়েছিল এক কালো মহিলার সাথে জন ম্যাকেইনের সম্পর্কের মিথ্যা কাহিনী এবং তার সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত করা হয়েছিল বাংলাদেশে জন্ম ম্যাকেইনের পালিত কন্যাকে। অবশ্য এগুলিতো ইতিহাস। এবারেও অনেক কিছু দেখবো বলে মনে করি।

সাইফ শহীদ

সাইফ শহীদ

সাইফ শহীদ এর ছবি

রামগরুড়,

আমিতো শুধু কয়েক জন সাধারন আমেরিকানের সাথে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ধারনার কথা লিখেছি। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের 'শেষ হইয়াও হইল না শেষ' খুঁজতে যাওয়া কি ঠিক হবে? বর্তমানে টিভি এবং অন্যান্য মিডিয়াতে সকাল বিকেল বিশেষ বিশেষ বিশেষজ্ঞরা অনেক রকম বিশ্লেষন করে চলেছে আগামী নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে সে ব্যাপারে। গুগল সার্চ করেও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে এবং অচিরেই কেউ হয়তো এই সব বিষয়ে লিখবে। আমার আগ্রহ শুধু সাধারন মানুষের চিন্তা জানা এবং বোঝা।

সম্পূর্ন ব্যক্তিগত দৃষ্টিতে আমি আমেরিকার বর্তমান দুইটি দলের মধ্যে খুব একটা তফাৎ দেখি না। ফলে ওবামা জিতলে কি লাভ হতে পারে সেটা নির্ভর করবে একই সাথে কগ্রেসে কাদের সংখ্যাধিক্য তার উপর। মানুষ হিসাবে আমি ওবামাকে ভাল মানুষ হিসাবে মনে করি। কথাতে এবং বুদ্ধিতে সে অপরজনের চাইতে উপরে। তাই আরও একটা টার্ম ওবামা জিতুত তাই চাই।

এইসব ব্যপার নিয়ে আরেকটা বিস্তারিত লেখার অপেক্ষায় থাকলাম

- অনুরোধটা মনে রাখবো। চার বছর আগে নির্বাচনের জয়লাভের পর আমি লিখেছিলাম - Obama wins - পড়ে দেখতে পারেন। এটি ইংরেজীতে, তবে যেহেতু আপনার বিস্তারিত জানার আগ্রহ - হয়তো মজা পাবেন।

'এলজিবিটি ইস্যু' নিয়ে আপনি এবং সফি বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। আমি মনে করি খোদার সৃষ্টি মনে করে সবাইকে সহানুভূতির সাথে দেখা এবং ভালবাসা সম্ভব।

শুভেচ্ছা রইল।

সাইফ শহীদ

বুড়া মকবুল এর ছবি

চলুক
আমার কাছে বর্ণনা অসাধারণ লেগেছে ।
প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বলার মতো জানাশোনা নেই ।

সাইফ শহীদ এর ছবি

বুড়া মকবুল ভাই,

ভাল লাগার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। সকাল-বিকাল আমেরিকা এবং পৃথিবীর দেশের মিডিয়াতে নানা ধরনের আলোচনা ও বিশ্লেষন চলছে আমেরিকার আগামী নির্বাচন নিয়ে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কে হবে এবং কি নীতি তিনি নেবেন - সেটা অল্প-বিস্তার আমাদের সবার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

৯‍/‍১১-এর আগে ওকলাহোমা শহরে এক 'টেরোরিস্ট' বোমা দিয়ে এক বিল্ডিং উড়িয়ে দিয়েছিল, তখন কিন্তু কেউ বলেনি সেই টেরোরিস্ট-এর সহ-ধর্মিয়দের উপর নজর রাখতে। কিন্তু এক বুশের কারনে আমরা সাধারন মানুষেরা ৯‍/‍১১-এর খেসারত এখনো দিয়ে যাচ্ছি। অনেকটা সেই কারনে আমেরিকাতে কি হচ্ছে সেটা কিছুটা জানা ভাল।

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য অবশ্য শুধু তুলে ধরা কিছু সাধারন মানুষের মনভাব।

সাইফ শহীদ

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা বেশ ভালো লেগেছে। যদিও এসব বড়লোকি ব্যাপারে আমার মত ছোটলোকের নাক গলিয়ে লাভ নেই! আচ্ছা আমেরিকাতে দারিদ্র্যের সংজ্ঞা কী? আমেরিকায় রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ বলতে কী বোঝায়? আমেরিকায় কি আজো আমার দুঃখিনী বাংলাদেশের মতো না খেয়ে মানুষ মরে? এখানে মরে, প্রতিদিন - আমি নিজে দেখেছি, প্রতিনিয়ত তাদের চিকিৎসা করছি।

অলয়

সাইফ শহীদ এর ছবি

অলয়,

আপনার উপরের সামান্য কয়েকটা লাইন থেকে বোঝা গেল আপনি বর্তমান বাংলাদেশে দুর্লভ একজন সৎ এবং ভাল মানুষ।

আমেরিকাতে দারিদ্র্যের সংজ্ঞা সরকার কতৃক প্রতি বছর নির্ধারিত হয় এবং বিভিন্ন স্টেটে বিভিন্ন হতে পারে। 'সেনসাস ব্যুরো' তাদের উপাত্ত থেকে নির্দিষ্ট ফরমুলাতে এটা নির্ধারন করে। মোটামুটি ভাবে বলতে গেলে চার জনের পরিবারের (বাবা, মা ও দুই সন্তান) মাসিক নগদ আয় (অর্থাৎ ইনকাম-ট্যাক্স দেবার আগে) যদি দুই হাজার ডলারের কম হয় তবে তাদেরকে গরীব ধরা হয় (বাংলাদেশী টাকায় ১,৬০,০০০)। বাংলাদেশী হিসাবে সংখ্যাটা বেশ বড় মনে হতে পারে - তবে এখানে মোটামুটি সব কিছুর দাম বেশী।

সাধারনত না খেয়ে কেঊ মরে না। গরীবদের জন্যে সরকার থেকে 'ফুড ষ্ট্যাম্প'-এর ব্যবস্থা আছে। এটি একটি কুপনে মত - এর বিনিময়ে দোকান থেকে খাবার কেনা যায়। এছাড়া অনেক সাহায্য সংস্থা আছে যারা অস্থায়ী আবাস এবং খাবারের ব্যবস্থা করে।

যদিও এখানে হাসপাতাল এবং চিকিৎসা ব্যাবস্থা অধীকাংশ বেসরকারী হাতে, তবে ১৯৮৬ সালের পাশ করা 'COBRA' আইনের ফলে যে কেউ (এমন কি আমেরিকার নাগিরিকত্ব না থাকলেও) যদি কোন হাসপাতালে ইমারজেন্সী চিকিৎসার জন্যে হাজির হয় তবে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে বাধ্য সেই হাসপাতাল। এর ফলে আমেরিকাতে না খেয়ে এবং বিনা চিকিৎসায় মরা একটু কঠিন। 'আমেরিকার গরীব'-এর উপর আমি বেশ কিছু আগে এই লেখাটা লিখেছিলাম - পড়ে দেখতে পারেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে ২২,০০০ কোটিপতি আছে শুনে মনে মনে খুশী হচ্ছিলাম। আপনার কথায় আবার মনটা খারাপ হয়ে গেল। আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা শুনতে আগ্রহী। দরকারে আমাকে নীচের ঠিকানায় ই-মেইল করতে পারেনঃ

সাইফ শহীদ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।