বেড়ে ওঠার গল্প
প্রচুর গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে তাকে। বিদেশি মুরগীর শরীর থেকে একটা রান আলাদা করতে গিয়ে যখন তিন-তিনটা কোপ দিতে হয়, তখন নিজের পক্ষে বলার মত তার কিছু থাকেও না তেমন। ব্যবহারে সব কিছুরই ধার বাড়ে। প্রথম প্রথম নাস্তিক আর ব্লগার কোপাতে কয়েকটা কোপ আর মিনিট দশেক সময় লেগে যেতো। তারপর ব্যবহারে শৃঙ্খলা আসে, সময় নেমে আসে মিনিট দুয়েকে। নাস্তিক কোপানোর কাজ সহজ হয়ে আসলে তার ধার পরীক্ষা হয় শিল্পী-অধ্যাপক কোপাতে। সেক্যুলার বিশ্বে তার আধিপত্য নিয়ে প্রশ্নের অবসান হলে এবার সে নামে মালাউন কোপাতে। কাজটার সহজতা দেখে সে নিজেই চমকে উঠে। এক ফাঁকে তার পরবর্তী কাজের লিস্টটা সে দেখে নেয়, সমকামী, কাদিয়ানী, আহমেদীয়া, সুন্নী মহিলা...
উদ্বোধন
মালাউন আর পাহাড়ি কমজাতেরা চলে গেলে সমতল আর পাহাড়ে প্রচুর খালি জায়গা চলে আসে সরকারের হাতে। বিদেশী রিজার্ভে উপচে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকার গোদাম। কিছু লুটপাট আর নাইজেরিয়ান প্রিন্সের খাঁজনা দিয়েও টাকার কোন গতি করে উঠতে পারে না প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয় প্রতি নালা-নর্দমায় ব্রীজ, প্রতি ফাঁকা ভিটেতে উপাসনালয় আর প্রতি পাহাড়ে রিসোর্ট বানানোর। এই বিশাল পরিকল্পনার প্রথম ধাপ উদ্বোধন করতে সভাসদদের নিয়ে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। হাল ফ্যাশনের বোরখা পরে চোশত তরুণী তার দিকে এগিয়ে আসে ভেলভেটে ঢাকা প্লেট নিয়ে। সেখান থেকে চাপাতিটা সন্তর্পনে তুলে এক কোপে লাল ফিতা কাটেন প্রধানমন্ত্রী। সভাসদদের হাততালিতে ঢাকা পড়ে যায় হাত থেকে ছুটে যাওয়া চাপাতির ঝনঝন শব্দ।
শ্রেষ্ঠ বইয়ের কথা
একটা বই লিখা হবে। ঠিক লিখা হবে কথাটা সত্যি না। সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে মানুষকে অনেক ক্ষমতা দিয়ে পাঠানো হলেও লেখালেখির ক্ষমতা দিয়ে পাঠানো হয়নি। পুরো ব্যাপারটাকে গ্রন্থনা বললে পুরোপুরি ঠিক বলা হয়। আকাশ থেকে ভেসে আসে ঐশী বাণী, সেটা কেউ কেউ শুনতে পায়। সেই ঐশী বাণী লিখে রাখা হবে একটা বইয়ে, যা পুরোপুরি লিখা হয়ে গেলে আর মানুষের জ্ঞানার্জনের অপচেষ্টার দরকার পড়বে না। সেরা বই লিখতে দরকার সেরা কালির। রাষ্ট্রীয় তত্ত্ববধানে তাই বাজারের সেরা চাপাতি জোগার করা হয়, বেছে বেছে মুরতাদ আর কাফিরদের কুপিয়ে সংগ্রহ করা হয় প্রচুর রক্ত। সেই রক্ত ঘিরে কিছুটা নর্তন-কুর্দনের পরে তা জমাট বেঁধে তৈরী হয় দরকারী বিশুদ্ধ কালি।
ময়নাতদন্ত
কালচে লাল তরলের মাঝে পড়ে থাকা লোকটার হাত আর পকেট তন্নতন্ন করে খোঁজা হয় তার সমস্ত লেখার নিদর্শন। সমস্ত কাগজপত্র জড়ো করে একটা উচ্চপদস্থ কমিটি বসে লেখাগুলো খতিয়ে দেখতে। প্রথম কাগজটা মেলে ধরে দেখা যায় সেটা বাজারের ফর্দ, হতাশ হয়ে ছুড়ে ফেলে দিতে গেলে একজনের চোখে পড়ে ইহুদী-নাছাড়াদের দেশ থেকে আমদানী করা কোন বিস্কিটের নাম। একে একে প্রেসক্রিপশন, কারো ফোন নাম্বার লিখা চিরকুট, ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার বাস টিকেট ইত্যাদি ঘেঁটে অল্প অফেন্সিভ কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু সব কিছু মিলিয়ে এই চাপাতির কোপটা জাস্টিফাই করার মত যথেষ্ট উপাদান পাওয়া যায় না। শেষ ভরসা হিসাবে শরীরের পাশে পড়ে থাকা মগজটা পরীক্ষা করে সেটা ব্যবহারের কিছু আলামত পাওয়া যায়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচা কমিটি তখন খুনোত্তর অনুমোদনের ফর্ম পূরণ করতে ব্যস্ত হয়।
বার্থ অফ অ্যা নেশন
বঙ্গোপসাগরের ফানেলের মত জায়গাটাতে জড়ো করা হয় নৌবাহিনীর সব জাহাজ আর কমিশন পাওয়া সব ফ্লিট। সেখানে বসানো হয় ভারী ভারী সব মেশিন। টেনে ধরা হয় চামড়া, আর দ্রুত নেমে আসা চাপাতির কোপে খতনা হয় পিপলস রিপাবলিক অফ বাংলাদেশের।
একটা নতুন পতাকা আঁকা হয়। শান্তির সাদা রঙ এর ব্যাকগ্রাউন্ডে আড়াআড়ি দুইটা চাপাতি, চাপাতির মুখ থেকে ঝরে পড়া লালচে রক্ত। জন্ম হয় নতুন একটা জাতির।
মন্তব্য
এর শেষ কোথায়
ছায়াবৃত্ত
শেষতো নাই, অ্যাক্সেপ্টেন্স!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বাস্তবতা যখন স্যাটায়রের চেয়েও জোরে ছুটছে অর্থহীনতার দিকে তখন তা নিয়ে লেখাও কঠিনতম একটি কাজ। তবু কিছু কলম চলছে দেখে আশা হারাইনা।
সোহেল ইমাম
কলমে কোন ফায়দা নেই
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
গভীরভাবে খতিয়ে দেখার মতন একটা লেখা।
[খতিয়ে দেখনেওয়ালারা বুঝবে কিনা, কে জানে]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমলনামা যা লেখার লেখা হয়ে গেছে
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বাস্তবতা মেনে নেয়াই ভালো
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ওদের আছে চাপাতি আর তোমার আছে লেখনী। ওদের কাজ ধ্বংস করা আর তোমার কাজ সৃষ্টি করা। ওরা পূজা করে অসুন্দরকে আর তুমি ভালোবাসো সুন্দরকে।ওরা মৃত তাই আঁকড়ে ধরে জীর্ণ পুরানোকে।আর তুমি নবীন তাই ধরে আছো সবুজ পাতাকে। অশুভ শক্তির আঘাতে জানি তুমি হবে রক্তাক্ত তবুও আলোর মশালখানি উঁচু করে তোমাকেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
হে হে, এক কোপে মশাল ধরা হাত নেমে যাবে
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
মাথা ঘুরতেছে। লেখা
অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার সময় আসছে
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নতুন মন্তব্য করুন