দিনের শ্লেটঃ ২৪ জুন ২০০৭

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: রবি, ২৪/০৬/২০০৭ - ৭:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

সঙ্গীতের জন্য কি আমি একটানা তিনদিন সময় দিতে পারবো? জল-কাদার মাঝে তাঁবু গেড়ে থাকতে পারবো? এত ভালাবাসা আমার হয় না। এ নাকি পরিকল্পনা করতে হবে আবার বছরখানেক আগে। এতকিছু আমার হবে না। তবু গ্লাস্টনবারি ফেস্টিভ্যাল আজ যখন শেষ হয়ে যাচ্ছে তখন মনে হলো, নাহ্- এবারও যাওয়া হলো না। তবে গতবার যেমন মনে হয়েছিল আগামীবার যেতেই হবে, এবার আর তা মনে হলো না। নিজের পছন্দ-অপছন্দগুলোকে আরো ভালো চিনতে পারছি, তবে?

প্রবাস হলেও, যে জায়গায় আমরা দীর্ঘদিন থাকি, সেখানকার সবকিছু খুঁটিয়ে দেখা হয় না।যেমন করে পর্যটকরা দেখে। ইং, সুরভির চাইনিজ বন্ধু, ইউএসএ থেকে বেড়াতে এসেছিলো বলে লন্ডনের বিশেষ কিছু জায়গায় আবার ঘুরলাম। খেয়াল করলাম লন্ডন শহরটায় ঘুরতে একঘেঁয়ে লাগে না।বৈচিত্র এর অলি-গলি আর দালানে দালানে। তবে ওরা যখন থিয়েটার দেখতে ঢুকলো, আমি গেলাম না। মন হাতড়ে হাউন্ড অব দ্যা বাস্কারভিলস্ দেখার কোনো যুক্তি খুঁজে পেলাম না।

ঘন্টা দুই বরং আমি সমারসেট হাউসের পানির ধারার সামনে বসে কাটিয়ে দিলাম। হাতে একটা বই ছিলো। কিন্তু তিন চার পাতার বেশি পড়িনি।ডাচেস থিয়েটার থেকে সমারসেট হাউসে আসার পথে পড়ে ইন্ডিয়া হাউস। নেহরুর মূর্তি আছে ওখানে। তার পাশে অনেক আগে এক রাতে জিম মরিসনের নামে একটা ফলক দেখেছিলাম। আজকে আবার খুঁজতে গিয়ে ভুল ভাঙলো। সেই ফলক নেই, বরং সমাধির মতো করে এপিটাফ দাঁড় করানো। মেট্রোপলিটান পুলিশের ডি.সি. জিম মরিসনের জন্য। পপ শিল্পী জিম মরিসন ভেবেছিলাম আমি প্রথমবার। দেখাকেও আবার দেখতে হয়, প্রথম বারের দেখায় ভুল থাকতে পারে।

সমারসেট হাউসের সামনেটায় বিরাট জায়গা জুড়ে আঙ্গিনা ফুঁড়ে পানির ধারা বের হয়। বিশেষ ওয়াটার ফাউন্টেন, সময়ের সাথে পানির ধারাগুলো নাচানাচিও করে মাঝে মধ্যে।অনেকগুলো বাচ্চা পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি করছিলো। বই পড়া বাদ দিয়ে তাই দেখলাম অনেকক্ষণ। সব চেতনাকে সমূলে নাড়া দিতে পারে ক্ষুধা। কলা, সমাজবিজ্ঞানের উপরেই আমি রাখি জীববিজ্ঞানকে। সমারসেট হাউসের চায়ের দোকানের মাখনভাজা ফ্ল্যাপ-জ্যাক দিয়ে আপাত: চাপা দিলাম।কিন্তু তারপর আবিষ্কার করলাম একটা চমত্কার সিঁড়ি।কিংস কলেজের লাগোয়া সমারসেট হাউস। কতো এসেছি। কিন্তু কখনও দেখা হয়নি।আমাদের আশ-পাশের কতকিছু আমাদের দৃষ্টি কাড়তে পারে না। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ক্যামেরার চেয়েও দামি চোখটাকেও আমরা কত কম কাজে লাগাই।


মন্তব্য

??? এর ছবি

সব চেতনাকে সমূলে নাড়া দিতে পারে ক্ষুধা। কলা, সমাজবিজ্ঞানের উপরেই আমি রাখি জীববিজ্ঞানকে।

ক্ষুধা নিঃসন্দেহে জৈবিক বিষয়, কিন্তু তাই বৈলা সে একচ্ছত্রভাবে জীববিজ্ঞানের বিষয় এইটা ভাবার কারণ নাই। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষের যে ক্ষুধা, তার উন্মোচন, বিমোচন তথা বিশ্লেষণ সমাজবিজ্ঞানের বাইরে গিয়া হওনের উপায় নাই। এইভাবে মনে হয় কোনো জ্ঞানশাস্ত্রের তুলনামূলক বিচার করা মুশকিল।

কুইক রেফারেন্স: অমর্ত্য সেন এবং জাঁ ড্রেজ (সম্পাদিত), ১৯৯১, দ্য পলিটিক্যাল ইকনমি অব হাঙ্গার, নিউইয়র্ক: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

তীব্র আপত্তি সুমন রহমানের।
তবে এতে কি আর বিতর্ক থাকে না।
আগে জীব, পরে অন্য কিছু।
আর সমাজ বলেই তো কিছু নেই, সমাজ বিজ্ঞান দিয়ে কী হবে?

সমাজবিজ্ঞানীদের ছড়ি ঘুরানোর হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

??? এর ছবি

তীব্র আপত্তি নয়, জনাব চৌধুরী। জেন্টল রিমাইন্ডার কৈতে পারেন এইটারে। তবে যে বিতর্কের দিকে আপনে ইশারা দিলেন সেইটাতে নামতে হৈলে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উত্তেজনা লাগবে। এইরকম উত্তেজনা ধাতে সইবার বয়স নাই আমার, আপনারও না-থাকার কথা, ব্লগে লটকানো ছবি যদি ফিকশন না হয়।

"সমাজ বলেই তো কিছু নাই"!! বেশ বেশ! সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মত শোনাইল!

সমাজবিজ্ঞানীদের ছড়ি ঘুরানোর হাত থিকা পৃথিবীকে বাঁচান আপনে, আমার সমস্যা নাই। তবে জীব আর জীববিজ্ঞানকে সমার্থক মনে না করার কথা কৈছিলাম আমি। জীব জিনিসটা জীববিজ্ঞানের একার তাল্লুক না।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

যাক, সুমন রহমান। বিতর্কের ইশারা দেখছেন। উত্তেজনা কোথা থেকে জোগার করবেন , আপনার ধান্দা করতে হবে।
সমাজ বলে কিছু নাই, এটা আপনার কাছে বাবুর মন্ত্রীর মতো শোনাইল!

যাক হাসাইলেন। আমি ভাবছিলাম আপনি সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র।

আর বিজ্ঞান শব্দটা লাগাইয়া যেসব জ্ঞানকে চিহ্নিত করা হয়, তাতে জীববিজ্ঞান আর সমাজ বিজ্ঞানের অবস্থানগত ধাপ নিয়া আমার পরোক্ষ মন্তব্য নিয়া অর্মত্য সেনের বইয়ের যে একটা হুদা রেফারেন্স দিলেন, সেইটা দেইখাও সে হাসি লুকাইয়া রাখছিলাম, সেইটাও এখন ঠা-ঠা কইরা হাইসা দিলাম।

আমি আপনাকে দোষ দেই না। এসব বদহজম জনিত ঔদ্ধত্য।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অরূপ এর ছবি

আহ! সেই গুড ওল্ড শোমচৌ স্টাইল!
হতে থাক..
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

??? এর ছবি

জ্বি জনাব। আমি সমাজ বিজ্ঞানেরই ছাত্র। তবে জীববিজ্ঞানের প্রতিপক্ষ না। জীববিজ্ঞানের প্রতিপক্ষ হৈবার জন্য জীববিজ্ঞানের যতটুকু বিদ্যা দরকার, আমার তা নাই। আপনার যেমন সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে নাই। কিন্তু তারপরেও রেটিং কৈরা দিলেন, অবস্থানগত ধাপ দেখায়া দিলেন, আবার ঠা ঠা কৈরা হাইসাও দিলেন। যুক্তিতর্কের মধ্যে এই ধরনের এলিটিজমের জায়গা কোথায়?

বাবর না, ভোদাই আলতাফ মন্ত্রীর কথা কৈতেছিলাম। সমাজ বৈলা কিছু নাই, এইটা আলতাফের মুখে ভাল মানাইত। অবশ্য আপনের মুখেও বেশ মানাইছে! একটু ব্যাখ্যা কৈরা কৈবেন কি, সমাজ বৈলা কোনো কিছু নাই কেন? কিভাবে, কোন তরিকায় সমাজ "নাই" হৈয়া গেল?

আপনের "পরোক্ষ" মন্তব্য লৈয়া যে রেফারেন্স দিছি, সেইটা আপনেরে জ্ঞান দেওনের জন্য না। আমার বক্তব্যের ডিফেন্স করনের জন্য। অর্থাৎ এই অল্প পরিসরে আমার বক্তব্য পরিষ্কার না হৈলে পাঠক যাতে ঐ বহিখানা আমল করতে পারেন।

আর "বদহজমজনিত ঔদ্ধত্য" জাতীয় যেসব প্রলাপ বকলেন, সে বিষয়ে আমি কী আর বলব? আমি জীববিজ্ঞানের ছাত্র না, বদহজম কৈরা থাকলে সমাজবিজ্ঞান করছি হয়ত। কিন্তু সেইটা ধরায়া দিবার মুরোদ তো আপনের দেখি না। থাকলে সেই পথে আগান, নইলে এইসব নির্বোধের এলিটিজম না ছড়ায়া মেশিনের র‌্যাম বাড়ায়া লন!

উৎস এর ছবি

বিতর্ক হচ্ছে? সঞ্চালক দরকার হলে হেল্প করতে পারি। তবে টপিকটা ভালো, "সমাজ বলে কিছু নেই"। হয়তো একটা পোস্টানো যায়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক বির্তক চলুক।

====
মানুষ চেনা দায়!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সুমন রহমান, ঔদ্ধত্য শুধু বদহজমের কারণে হয় তাতো নয়, নানা কারণেই হয়। কি এক অদ্ভুত কারণে এই ঔদ্ধত্যের স্টাইলটা অনেকে আগে ধরে ফেলে বোধবুদ্ধি পরিপক্ক হওয়ার আগেই, সে প্রশ্নের উত্তর বোধহয় সবচেয়ে ভালো আহমদ ছফাই দিতে পারতেন। এর আংশিক উত্তর হয়তো ব্রাত্য রাইসুর কাছ থেকেও পাওয়া যেতে পারে।

না এখানে আপনাকে সমাজবিজ্ঞান সংক্রান্ত কোনো পাঠ দিতে আমি আসিনি সুমন রহমান। আর সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে আমার বিদ্যা নাই বলে আপনার যে অভিমত তা আপনার ঔদ্ধত্য আর তার সাথে যায় এমন বোধ-বুদ্ধির সাথে মানানসই বলেই মানতে হচ্ছে।

সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে আপনার বিদ্যা আছে শুনে প্রীত হলাম। তবে আমার বিদ্যা সম্পর্কে আপনার মন্তব্যে হলাম মর্মাহত। আপনার এই কঠিন রায়ের মধ্যে আমি কি করে জানাই সমাজ বিজ্ঞানে আমি একটা ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলাম। আর জীববিজ্ঞানে আমার যা বিদ্যা তা দিয়ে আমি পেয়েছিলাম মাস্টার্সের সনদ।

আপনার ভাষায় আপনাকে বুঝানোর ‘মুরোদ' আছে কিনা তা আমি প্রমাণ করতে যাবো না। আপনার প্রথম মন্তব্যে আপনার যে নির্বোধতা মাখা ঔদ্ধত্য ধরা পড়ে তা আমার প্রতি-মন্তব্যে উল্লেখ করে আপনাকে আমি বিব্রত করতে চাইনি। আমার একটি ব্যক্তিগত ব্লগ আপনি পাঠ করেছেন, পাঠক হিসেবে আপনার প্রতি আমার এই কৃতজ্ঞতার কারণে।

কিন্তু এখন আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়া অন্য অনেক পাঠকের কাছে আপনার সাথে আমার এসব মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যের অর্থ তুলে ধরাটা কঠিন বলে বলে নীচের বাক্য কয়েকটা যোগ করছি।

শুরুতে আপনার প্রথম মন্তব্যে আপনি আমার লেখা থেকে একটা উদ্ধৃতি দিয়েছেন, দিয়ে তার সাথে আপনার একটা বক্তব্য দিলেন এরকম: “ক্ষুধা নিঃসন্দেহে জৈবিক বিষয়, কিন্তু তাই বৈলা সে একচ্ছত্রভাবে জীববিজ্ঞানের বিষয় এইটা ভাবার কারণ নাই। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষের যে ক্ষুধা, তার উন্মোচন, বিমোচন তথা বিশ্লেষণ সমাজবিজ্ঞানের বাইরে গিয়া হওনের উপায় নাই। এইভাবে মনে হয় কোনো জ্ঞানশাস্ত্রের তুলনামূলক বিচার করা মুশকিল"।

ক্ষুধা একচ্ছত্রভাবে জীববিজ্ঞানের বিষয় এমন কথা আমি বলি নাই। আপনি অহেতুক একথা টেনে এনেছেন। এটা হচ্ছে আপনার পাঠের বিষয় ও তার ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে একধরণের চিন্তার উল্লম্ফন। আমি আশা করি এইরকম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ আপনি খ্যাতিমান কবি ব্রাত্য রাইসুর সাহচর্য থেকে শিক্ষা লাভ করেন নাই।

এই পোস্টটি নিতান্তই আমার দিনযাপন সংক্রান্ত। এবং একটি জায়গায় যখন ‌আমার ক্ষুধা পেয়েছে তার বর্ণনা দিতে গিয়ে আমি যা লিখেছি, তা আপনি আপনার মন্তব্যে উদ্ধৃতি হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু আমার যে বাক্যটি আপনি বুঝেন নি তা বুঝার জন্য এর ঠিক পরিবর্তী বাক্যেই সংকেত ছিল। তা লক্ষ্য করাই আপনার যথেষ্ট ছিল। আপনি তা না করেই, বাক্যের একটি শব্দ থেকেই বিষয়বস্তুকে নিয়ে গেছেন আমার বক্তব্য বিষয়ের বাইরে। আমার বর্ণিত বিষয় ছিল, আমার ক্ষুধা। এখন আপনার উদ্ধৃত দুটি বাক্য ও তার পরের বাক্যসহ তিনটি বাক্য পড়ুন, নীচে:

“সব চেতনাকে সমূলে নাড়া দিতে পারে ক্ষুধা। কলা, সমাজবিজ্ঞানের উপরেই আমি রাখি জীববিজ্ঞানকে। সমারসেট হাউসের চায়ের দোকানের মাখনভাজা ফ্ল্যাপ-জ্যাক দিয়ে আপাত: চাপা দিলাম।"

এই তিনটি বাক্য পড়লে এ থেকে মূল কি তথ্য পাওয়া যায়? যিনি বর্ণনা করছেন তার ক্ষুধা পেয়েছে। ক্ষুধা নিবারণের জন্য তিনি একটা ফ্ল্যাপজ্যাক খেয়েছেন। মাঝের যে বাক্যটি তার সাথে দু-পাশের দুটি বাক্যের স্পষ্ট কোনো যোগাযোগ নেই। সুতরাং এর অর্থ বুঝতে হলে লেখকের আগের বর্ণনাটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে, দেখতে হবে এর আগে তিনি কী কাজ করছিলেন, কী বিষয়ে কথা বলছিলেন। যে কাজের চেয়ে তিনি ক্ষুধা নিবারণকে এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন। এর উত্তর হচ্ছে, যদি আপনি আগের বাক্যগুলো পড়ে থাকেন, তবে জানবেন এর আগে আমি থিয়েটার কলা, সঙ্গীত কলা, সমারসেট হাউজের ঝর্ণার শিল্পকলা, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চিন্তা করছিলাম। এসব মহান কলা-চিন্তার চেয়ে ক্ষুধার দহন করার শক্তি বড়। সুতরাং আমি তা চাপা দিতে ফ্ল্যাপ-জ্যাক গিলি।

সুতরাং দ্বিতীয় বাক্য যা নিয়ে আপনি পাঠক হিসেবে ধন্দে পড়লেন তা বুঝার জন্য আপনার যাওয়া উচিত ছিলো তৃতীয় বাক্যের কাছে। তা না, আপনি গেলেন অমর্ত্য সেনের কাছে। এই ক্ষুধা পেটে আমার কাছে তা আপনার বদহজম বলেই মনে হলো। আপনি বরং সমাজবিজ্ঞানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে তার ঠিক আগে কমা সহযোগে কলা শব্দটার দিতে তাকাতে পারতেন। ক্ষুধা ধারণাটির পর এই শব্দ দেখলে আপনার হয়তো চম্পাকলা বা সাগরকলার কথা মনে পড়লেও পড়তে পারতো।

সুতরাং লেখার মূল বিষয়বস্তু থেকে একটা বাক্যকে আলাদা করে টেনে লেখার বিষয়বস্তুর বাইরে নিয়ে গিয়ে বিশ্লেষণ করতে যাওয়ার মানে একটা হতে পারে, পরীক্ষার খাতায় গরুকে নদীতে ফেলে দিয়ে নদীর রচনা লেখা। কারণ নদীর রচনাটাই ছাত্রের মুখস্থ, গরুর রচনা না।

আমার দিনের শ্লেটে ক্ষুধা শব্দটাকে পেয়ে আপনি যে অমর্ত সেন সহযোগে ক্ষুধা বিশ্লেষণে সমাজবিজ্ঞানের অতীব প্রয়োজনীয়তা জানাতে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তা দেখে ব্লগার হিসেবে আমি কৃতজ্ঞ। তবে যে দ্বিতীয় বাক্যটি ক্ষুধার সময়ের বাস্তবতা নিয়ে রস করতে আমি ব্যবহার করেছি তা বোধগম্য না হলে পাঠক প্রশ্ন করতেই পারেন। আপনি বিশ্লেষক, পাঠকের মত প্রশ্ন করা হয়তো আপনার মানায় না।

মাঝের এই বাক্যটির যে রস তা সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রদেরই বেশি বুঝার কথা। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে সমাজ বিজ্ঞানের নিয়ন্ত্রণে রাখাই মঙ্গল এবং বিজ্ঞানের রাজনীতি বলে যে ধারণা ও বিশ্লেষণ সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে জনপ্রিয়, আমিও সে ধারা ও ধারণার সমর্থক। দ্বিতীয় বাক্যটিতে সে ধারণার আপাত: বিরুদ্ধ একটা মত ক্ষুধার সময় আমি উচ্চারণ করি তার একটা দীর্ঘ প্রেক্ষাপট নিশ্চয়ই আছে। আর এই আপাত: বিরুদ্ধতার কারণের একটা ইঙ্গিতও আপনি পাবেন যখন লেখাটিতে আমি ডাচেস থিয়েটারে স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের “হাউন্ড অব বাস্কারভিলের" কথা বলি তার মধ্যে। নাটকটি আর্থার কোনান ডয়েলের লেখা নয়, বরং তার লেখার একটি স্পুফ। একইভাবে এই বাক্যটির মধ্যেও স্পুফের মতোই একটা এক্সাজারেশন রয়েছে।

পাঠক হিসেবে আপনাকে এতসব ইঙ্গিত খুঁজে ঐ মূহুর্তে লেখকের মনে কী কী চিন্তা কাজ করছিলো তার হদিস বের করে লেখা বুঝতে হবে তা নয়। কিন্তু বিশ্লেষণ করতে গেলে লেখককে আপনার জানতে হবে। আর লেখার মাঝে দেয়া ইঙ্গিত ও সংকেততো অবশ্যই লক্ষ্য করতে হবে। বিশেষ করে আপনি যখন নিজেকে বিশ্লেষক দাবী করে লেখাটিকে বাতিল করতে চাইছেন।

এই প্রয়োজনীয় কষ্টটুকু ছাড়া গরু প্রশ্নে নদীর রচনা বদহজম জনিত কারণে উগড়ে লাভ নেই সুমন রহমান। এর সাথে যখন ঔদ্ধত্য যোগ হয় তখন বদহজমের দুর্ভোগে ভোগা রোগীকে প্রয়োজনীয় ট্যাবলেটটা এগিয়ে দেয়ার সহানুভূতি দেখাতেও ইচ্ছা করে না।

(আপনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার মন্তব্য আর তার জবাবে আপনার প্রতিমন্তব্যে করা আপনার বাকী প্রশ্নের উত্তর আপনার জানার দরকার থাকলে আমার ব্লগের আগের লেখাগুলো পড়ার কষ্ট আপনি করতে পারেন। আপনাকে বদহজমের বটিকা বাড়িয়ে দেয়ার বাড়তি সহানুভূতি দেখাতে পারছি না। দু:খিত।)

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

হাসান মোরশেদ এর ছবি

খাইছে।
গুঢ় আলোচনায় আমি নাই!
--------------------------
আমি সত্য না হইলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

??? এর ছবি

সমাজবিজ্ঞানীদের ছড়ি ঘুরানোর হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে। (শোমচৌ, জীববিজ্ঞানে মাস্টার্স)

প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে সমাজ বিজ্ঞানের নিয়ন্ত্রণে রাখাই মঙ্গল এবং বিজ্ঞানের রাজনীতি বলে যে ধারণা ও বিশ্লেষণ সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে জনপ্রিয়, আমিও সে ধারা ও ধারণার সমর্থক। (শোমচৌ, সমাজবিজ্ঞানে ডক্টরেট)

......

দুঃখিত, প্রিয় চৌধুরী, আপনার সমাজবিজ্ঞান সংক্রান্ত ডক্টরেট ডিগ্রীর তথ্য পাওয়ার পরও আপনার সমাজবৈজ্ঞানিক বোধবুদ্ধি সম্পর্কে নতুন কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। তবে বোঝা যাইতেছে, অন্য অনেক ড. এর মত আপনেও এই সনদখানকে জ্ঞানের শেষধাপ ঠাহর কৈরা আস্ফালন আর ঔদ্ধত্যের লাইসেন্স পাইয়া গেছেন ভাবতেছেন। কিন্তু সমস্যা হৈতেছে, সনদ দেখায়া তর্কে জিতনের রাস্তা নাই এখানে। আপনের লাইন ধৈরাই আগাই চলেন:

“সব চেতনাকে সমূলে নাড়া দিতে পারে ক্ষুধা। কলা, সমাজবিজ্ঞানের উপরেই আমি রাখি জীববিজ্ঞানকে। সমারসেট হাউসের চায়ের দোকানের মাখনভাজা ফ্ল্যাপ-জ্যাক দিয়ে আপাত: চাপা দিলাম।"

এইটা ছিল আপনের কথা। আগের মন্তব্যে আপনেই বলতেছেন যে, মাঝের বাক্যের সাথে প্রথম ও শেষবাক্যের আপাত যোগাযোগ নাই। মাঝের বাক্য বুঝতে হৈলে নাকি আগে ও পরের কথাবার্তা খেয়াল করা লাগবে। আমার কিন্তু মনে হয় জনাব চৌধুরী, মাঝের বাক্যের সাথে আগে-পরের বাক্যের ভালই যোগাযোগ আছে। কিন্তু মাঝের বাক্যটির প্রকাশে কিছু ঝামেলা আছে, কিছু গুরুচণ্ডালি হৈয়া গেছে। সেইখানে আমি আমার বক্তব্য দিছিলাম। বলছিলাম:
১. ক্ষুধা একচ্ছত্রভাবে জীববিজ্ঞানের বিষয় না।
২. এইভাবে বিভিন্ন জ্ঞানশাস্ত্রের তুলনা করা মুশকিল।

এই বক্তব্য আপনার সনদাভিমানে লাগল! আপনে জীব আর জীববিজ্ঞান গুলায়া শরবত বানায়া ফেললেন! সমাজবিজ্ঞানের ডক্টরেট আপনেরে সমাজরেই "নাই" ডিক্ল্যার কৈরা দিবার এখতিয়ার দিয়া দিছে! এতই উত্তেজনা এই সনদের...যে যেকোন অমত-দ্বিমতকেই "বদহজমজনিত ঔদ্ধত্য" বৈলা মনে হয়!

পাঠককে খেয়াল করতে বলি চৌধুরীর পূর্বাপর দুইটা মন্তব্যের অংশ, যা দিয়া আমার মন্তব্য শুরু করছি। বিষ নামতেছে, বোঝা যায়।

আরো আরো যেসব আলপটকা মন্তব্য করছেন জনাব চৌধুরী, তার জবাবে এবার কিছু বলি। প্রথমত বলি, আপনার লেখাটি আমি পড়েছি, এবং তার প্রাপ্য মর্যাদাসহ। এইটা একটা দিনপঞ্জী টাইপের লেখা, ফলে এতে আমি আপনের পাণ্ডিত্যের বিচ্ছুরণ দেখতে চাই নাই। আপনেও দেখান নাই, শুধু ঐ বিশেষ বস্তুটা ছাড়া! একটা নির্বিরোধী বর্ণনার মধ্যে এইরকম পাণ্ডিত্যের হাহাকার দরকারি নয়! ছোট ছোট লেখার মধ্যে এমন আলাপ পাড়া উচিত নয়, যা আলগাইতে পারা অসম্ভব। এই কথা বলতেছি, যেহেতু আপনে এখনো "নাই" সমাজের ব্যাখ্যা দেন নাই। রেফারেন্স দিলে, সুনির্দিষ্টভাবে দেন। আমি পইড়া নিমু। হরেদরে আপনের সব লেখার রেফারেন্স দিলে আমার পক্ষে মুশকিল ভাই চৌধুরী। এত সময় নাই। নাইলে মনে করব, একটা স্টান্ট ডিফেন্স করতে আরেকটা স্টান্টের আমদানি করছেন আপনে! এইধরনের স্টান্টবাজি নিয়া ভিটগেনস্টাইনের একটা উক্তি আছে: "হোয়াট ক্যান বি সেইড, ক্যান বি সেইড ক্লিয়ারলি, হোয়াট উই ক্যান নট টক অ্যাবাউট, উই মাস্ট পাস ওভার ইন সাইলেন্স"।

আহমদ ছফা বা ব্রাত্য রাইসুর সাথে আমার সখ্যতা ছিল/আছে। ব্রাত্য রাইসুর খ্যাতির প্রতি আপনের মোহ থাকতে পারে, তবে আমি তাকে সমসাময়িক লেখক হিসাবে পছন্দ করি। আরো অনেককেই করি, দেশে বিদেশে। আমার শিকড় সন্ধানের আগে নিজের হাত আরেকটু লম্বা করা লাগবে ভাই চৌধুরী। ব্লগের লেখা আমি সময় থাকলেই পড়ি, লেখার কোয়ালিটি বাছবিচার না কৈরাই। ফলে আপনের লেখাও পড়ছি, এনগেজ করছি, কৃতজ্ঞ তো আপনের থাকারই কথা। আপনের ব্যাপারে আমার সেই কৃতজ্ঞতা তৈরি হয় নাই, কারণ আমার যৎসামান্য যেসব লেখা আছে এই আসরে, তাতে আপনার তেমন এনগেজমেন্ট দেখি নাই। খালি কোন লেখায় দেখছিলাম একটা আলপটকা আলাপ: "বাঘ নাই বনে শেয়াল রাজা"। কেন সেই মহান বাণী ছাড়ছিলেন তারো ব্যাখ্যা দেন নাই। এ ধরনের সুইপিং কমেন্ট আপনার বোধবুদ্ধির পক্ষে হয়ত মানায়, কিন্তু দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগের জন্য কাজে আসে না।

আমার বক্তব্যে উত্তাপ আছে, ফলে ক্ষমা চাইছি। সাথে এইটাও খেয়াল করতে বলি সবাইকে যে, উত্তাপের সঞ্চার আমি শুরু করি নাই। তবে শেষ করার সামর্থ যে রাখি, এই মন্তব্যে তারই কিছু ডিসপ্লে করে রাখলাম।

অরূপ এর ছবি

ওম শান্তি!
------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

??? এর ছবি

"অশান্তির ঐ দোলার ‌‌‌‌পরে
বসো বসো
তুমি বসো লীলার ভরে
দোলা দেব
এ মোর কামনা

তোমার কাছে শান্তি চাব না"

ভাস্কর এর ছবি

আমি অবশ্য যৌক্তিক তর্কে আরাম পাই। ছাগুর মতোন জিতা হারার তর্ক না। এইটারেই বাহাস কয়...দুই তার্কিকই করতাছে এক্কেরে ব্যক্তিগত বাহাস কিন্তু তাতেই আমরা জ্ঞানের বহুতরম তথ্য নিতে পারতেছি...


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এইরকম বির্তককে আমি ইয়েস বলি।

====
মানুষ চেনা দায়!

অরূপ এর ছবি

অফ যা
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

শেষ মন্তব্যে এসে বোঝা গেল কেন সুমন রহমান আমার মন্তব্য বা বক্তব্যকে এরকম ভেঙে চুরে নিজের মত করে সাজিয়ে তার একটা নিজস্ব বিকৃত ব্যাখ্যা দাঁড় করাচ্ছেন। সে জবাব তিনি নিজেই দিয়েছেন। তার কোনো একটা লেখায় আমি নাকি আলটপকা মন্তব্য করেছিলাম যে “বাঘ নাই বনে শেয়াল রাজা"।
হ্যা, সুমন রহমান আমার মনে আছে এই মন্তব্য আমি করেছিলাম। করেছিলাম আপনার ফরহাদ মজহার সংক্রান্ত একটা লেখায়। কিন্তু সে মন্তব্য বুঝা যাচ্ছে আপনি বুঝতে পারেন নি। মন্তব্যটা ছিল ফরহাদ মজহার সম্পর্কে, আপনার সম্পর্কে নয়। ফরহাদ মজহার সম্পর্কে আপনার লেখাটা পড়ার পর যে কথাটা তার সম্পর্কে আমার তাত্ক্ষণিকভাবে মনে হয় তাই আমি মন্তব্যে লিখেছি যা অনেকটা “আমি পড়েছি ও মন্তব্য করেছি" সিলমোহরের মতো।

আপনার শেষ মন্তব্যে আপনি বলেছেন, আপনি দিনপঞ্জি হিসেবেই লেখাটা পড়েছেন। ঠিক আছে। কোনো তাত্ত্বিক আলোচনা আপনি এখানে খুঁজেন নি সেও আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে আবার রেফারেন্স চাইছেন কেন? এবং কোনটা মুল লেখার বাক্য, কোনটা মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য এসব পরম্পরা ভেঙে আপনি যে গন্ডগোল পাকিয়ে বিতর্কে জেতার চেষ্টা করছেন তা খুব একটা কাজের না। পাঠক, যারা এখানে ব্লগাচ্ছে তারা অতোটা আকাট মূর্খ নয়।
বললেন যে আমার লেখায় আমি বলেছি সমাজ নাই। দয়া করে দেখাবেন লেখার কোথায় এই কথাটা আছে? লেখার মধ্যে কোথাও কথাটা নাই।
আপনি যখন সমাজবিজ্ঞানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মন্তব্য করলেন তখন সরস ভঙ্গিতে আমি এই কথাটা বলেছি। এর মাজেজাও আপনি বুঝলেন না। সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও সমাজ বলতে কিছু নাই, এই বিতর্কের কথা আপনি কখনও শোনেন নাই, এটা ভেবে আমার হাসি পেয়েছিল। পাওয়ারই কথা। যেকোনো জ্ঞান-ভাগের প্রাথমিক বইগুলোর প্রথম বা দ্বিতীয় চ্যাপ্টারেই সেই জ্ঞানের বিরোধী ও বিপক্ষ শিবিরের কথাগুলো থাকে। যে সমাজবিজ্ঞানই হোক আর পদার্থবিজ্ঞানই হোক। আপনি আপনার আন্ডারগ্র্যাড সমাজপাঠে র বইটা আবার পড়ে দেখুন। তারপরও যদি রসটা উদধার না করতে পারেন তবে আমি বলে দেব কোথায় তা পড়তে পাবেন।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

দু:খিত সুমন রহমান, বাকী কথাগুলো মন্তব্যে দিতে পারছি না। কারণ এই কি-বোর্ড ঠিক-ঠাক কাজ করছে না।
আপনার মন্তব্যের শেষে আপনি ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন দেখছি বিতর্কের উত্তাপ কমানোর জন্য। আপনার এই ক্ষমা প্রার্থনাকে সাধুবাদ জানাই। আমি নিজেও দু:খ প্রকাশ করছি। এই অহেতুক ভুল বুঝাবুঝি আর কথা কচলাকচলি একেবারে নিরর্থক হয়েছে তা বলবো না। তবে মাধ্যম হিসেবে লেখা খুব শক্তিশালী না, তা এখানেও স্পষ্ট হলো। কথা বলার সময় শুধু গলার কারুকাজ, শ্বাসাঘাত, ঠোঁটের হাসি দিয়ে আমরা উচ্চারিত শব্দের উদ্র্ধে যে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা অর্থ তৈরি করতে পারি লেখায় তা খুবই কঠিন।
নতুন পাঠকের পক্ষে একজন লেখকের এইসব সুক্ষ্ম কারুকাজগুলোর কোড ভাঙা খুবই কঠিন। যেহেতু আপনি খুব বেশি আমার লেখা পড়েননি, পড়ার কোনো কারণও নেই, সেহেতু আপনার অবাক হওয়ার ব্যাপার ঘটতেই পারে। (যেমন আমি মনে করি এখানকার অন্য অনেক পাঠক যারা আগে আমার লেখা পড়েছেন তারা এতটা অবাক হয়তো হবেন না অথবা যোগসূত্রগুলো ধরতে পারবেন। )

তবে অবাক হওয়া থেকে প্রশ্ন করায় পাঠকের একটা বিনীত আগ্রহের ভঙ্গি থাকলে যোগাযোগটা মসৃণ হয়। নাকচ করে দেয়ার ঔদ্ধত্যের ভঙ্গিমায় যোগাযোগ নয় বিতন্ডা সৃষ্টি হয়।
আশা করি, এইসব মন্তব্য চালাচালির কারণে পরবর্তীতে আমাদের লেখা পাঠ ও মন্তব্য করা থেকে আমরা বিরত থাকবো না।
শুভেচ্ছা।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

??? এর ছবি

একটা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, খুব দ্রুত আমার বক্তব্য বলবার চেষ্টা করব। এই ধরনের তর্কে যারা তর্ক করছেন তাদের ইগো সামলানোর চর্চা সবার থাকে না। কিন্তু থাকা দরকার। জনাব চৌধুরী বললেন পাঠকের বিনীত আগ্রহের ভঙ্গির কথা, লোকভেদে বিনয়ের প্রকাশ ভিন্ন। আমি যে ধরনে আপনার গুরু আহমদ ছফার সাথে কথা বলতাম, বা হালে আমার শিক্ষক স্বপন আদনান, বেদী হাদিজ, ব্রায়ান টার্নার বা এস আর ওসমানীর সাথে কথা বলি, জনাব চৌধুরীর সাথে একই গলায় কথা বলছি। দুর্বিনয় বা ঔদ্ধত্যের তকমা এবারই প্রথম পাওয়া গেল!পারস্পরিক তুলনা করতে গেলে জনাব চৌধুরী সম্পর্কে আরো অফেনসিভ কনক্লুশন ড্র করা লাগবে, সেই পথে না গিয়ে বরং এটাই বলি, বিনয়ের পারসেপশন ব্যক্তিভেদে ভিন্ন।

মুশকিল এইটা যে, জনাব চৌধুরী, আমি তর্কে প্রবৃত্ত হলে তর্কটাকেই দেখি, তার পেছনের মানুষটার ইগো বিচার করবার ট্রেনিং আমার নাই। থাকলে, আমার নিজের সম্পর্কেও আমি আপনার মত আটকাণ্ড ফিরিস্তি দিতে পারতাম। খেয়াল করলে দেখবেন, সে ধরনের কোনো তথ্য আমার তর্কে হাজির নাই। দরকারও নাই। আপনি যখন আমার "ঔদ্ধত্য" বিষয়ে মন্তব্যে চলে গেছেন, তখনো আমি তর্ক নিয়েই হাজির থেকেছি।

কারো মনে হতে পারে, এরকম থেকে কী লাভ হল? লাভ অনেক হল। চাইলে অদেখা-ওয়েবের সুযোগ নিয়ে যে কেউ যে কারো চৌদ্দ পুরুষ উদ্ধার করতে পারে। সামহোয়ার-এ এমনটা বহুৎ দেখা গেছে। তর্কের লাগাম হাত থেকে ছাড়ি নাই বলেই এই তর্কটা গালাগালিতেই শেষ হয় নাই। জনাব চৌধুরী শেষমেষ আকারে-প্রকারে এটাই বলেছেন যে, ঐ উক্তিটা (জীববিজ্ঞান- সমাজবিজ্ঞান)স্পুফ ছিল। এও বলেছেন যে সমাজের "নাই" হয়ে যাওয়ার উক্তিটা তার মূল লেখায় করেন নি, ঐটা রসালাপ ছিল। এটাই লাভ এই তর্কের। দুই দুইটা রসগোল্লা!

ভিটগেনস্টাইনের উদ্ধৃতি আগেই দিয়েছি, এখন বলি, আমি নিজে যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদী। যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে লেখার সীমাবদ্ধতা সন্ধানের আগে, জনাব চৌধুরী ভাল করতেন ভাষাগত প্রকাশের ব্যাপারে তিনি কতটুকু ইকুইপড সেইটা বিনয় আকারে প্রকাশ করলে, যেহেতু তিনি বিনয়বাদী, পাঠকের বিনয় চান। আর প্রত্যেকেরই নিজস্ব কোড আছে লেখার ক্ষেত্রে। জনাব চৌধুরী ব্লগরাজ্যে তার কোড ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছেন যার ফলে তার পাঠক তাকে বুঝতে পারে। আমি আমার ক্ষেত্রে এরকম কিছু করার আবশ্যকতা দেখি না, কারণ যোগাযোগমাধ্যম হিসাবে লেখার সামর্থের ওপর আস্থা আছে আমার, নিজের যোগাযোগদক্ষতার ওপরও সামান্য আছে। যার ফলে, জনাব চৌধুরী, আপনার লেখা পড়ে না-বোঝার সমস্যা (আপনার ভাষায়) আমার হয়েছে, আমার লেখা পড়ে আপনার কিন্তু একবারো হয় নাই!

তর্কের হারজিত নিয়ে আমি ভাইবেন না, ভুল যোগাযোগ স্থাপনের চেয়ে তর্কে হারা বরং ভাল। আর আপনাকে আকাট মুর্খ ভাবলে তো আপনার মতই থেকে-থেকে অধ্যাপকী হাসি হাসতাম। মুর্খের সাথে তর্ক হৈতে হলে মুর্খ হৈতে হয়, যেহেতু নিজেকে আমি মুর্খ ভাবি না, ফলে লজিক্যালি আপনাকেও ভাবতে পারি না। হা হা হা।

ভাল থাকবেন জনাব চৌধুরী। নাইস মিটিং ইউ হিয়ার।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

অর্ধ শিক্ষিতের মতো মন্তব্য দেই এট্টা। এতো শক্ত কথা তো বুঝি না। সবসময় চেষ্টা করি বেসিকে যাওয়ার। খুবই ভুল প্রবণতা।

যাই হউক। থিম হইলো ক্ষুধা। প্রথম কথা হইলো ক্ষুধা জৈবিক ঘটনাই। সেইটা সামাজিক ঘটনাও। কারণ ক্ষুন্নিবৃত্তিকারকের সামাজিক বন্টনের বিষয় আছে। তারপরও এইটা প্রথমত জৈবিক ঘটনাই। মানে সরল বুদ্ধি যা কয় আর কি। আর ক্যান জানি মনে হয় একটা সুনির্দিষ্ট প্রাণীর সমাজবদ্ধতা থিকা জৈবিক ফ্যাক্টারগুলা বাদ দেওয়া সম্ভবত সম্ভব না। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানরে সমাজ বিজ্ঞানের প্রতিপক্ষ বানানোটা মনে হয় খুব বিজ্ঞের কাজ না। তাতে "সামাজিক চাহিদা" বিষয়টার মধ্যে নানারকম প্রেত সম্ভাবনা থাইকা যায়।

এই আর কি। যা কইলাম না বুইঝাই কইলাম।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সুমন চৌধুরী, আপনার দীর্ঘ মন্তব্য পড়ে বুঝলাম, মূল লেখার পরে মন্তব্যগুলা নিয়ে আপনার মাথায় কিড়িমিড়ি লাগতেছিলো। তাই অলসতা ঝাইড়া মন্তব্য দিছেন। সে যাক:

জন মেজরের (প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, ইউকে) ব্যাক টু বেসিক শ্লোগান আমার খুব প্রিয়। বিভিন্ন জটিল জিনিসের ব্যাখ্যা দাঁড় করাইতে আমি এইটা ব্যাপক ব্যবহার করি।

না বুইঝা আপনি যা কইলেন সুমন চৌধুরী, ক্ষুধা বিষয়ে, সেইক্ষেত্রে আমার দ্বিমত নাই। থাকার কোনো কারণ নাই। বুইঝা কইলে হয়তো পার্থক্য পাইতাম।

‘প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে সমাজ বিজ্ঞানের প্রতিপক্ষ বানানোটা খুব বিজ্ঞের কাজ না' - এই কথাটা সম্পর্কে আরো কিছু যোগ করতে চাই। আপনি নিশ্চয়ই জানেন বিশ্ব চালানোর ক্ষেত্রে জ্ঞান-পরামর্শের ধারায় এরা প্রতিপক্ষ হয়েই আছে। সমাজবিজ্ঞানে পলিটিক্স অব সাইন্স নিয়া এত গবেষণার মুলে তো সেই সমস্যা।

যেমন ব্শ্বি বা রাষ্ট্রের একটা সমস্যায় সমাধান দেয়ার ক্ষেত্রে শেষ কথা কে বলবে? বিজ্ঞান না সমাজ বিজ্ঞান? এই বিতর্ক সমাজবিজ্ঞানীদের কাছে জরুরি। ক্লোনিং নিয়ে গবেষণা করতে দেয়ার দায়-দায়িত্ব বিজ্ঞানীদের হাতে ছাড়া ঠিক হবে কিনা, এ বিতর্ক সামাজিক বিজ্ঞানই তোলে।

প্রাকৃতিক বিজ্ঞানীরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনকে বিশ্বের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তাবত্ আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে এই বিজ্ঞান-অনুমানের ভিত্তিতে নতুন করে সাজাতে রাষ্ট্রনেতাদের ফুঁসলাতে শুরু করলেন, তখন সমাজবিজ্ঞানীরা বিশ্ব পরিচালনায় তাদের নিয়ন্ত্রণের পতন হচেছ ধারণা করে আঁতকে উঠেছিলেন। সে আতংক এখনও আছে। যদিও ইতোমধ্যে সমাজবিজ্ঞানীরা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের এই সমস্যাকেও নিজেদের চিন্তা-দর্শনের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা দিয়ে নিয়ন্ত্রণটা আবার নিজেদের দখলে নিয়ে যেতে পেরেছেন।

তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ফোরণেও এমন সমস্যা তৈরি হয়েছিলো। তথ্যপ্রযুক্তির ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবিরা ভাবতেই পারেন তারাই যখন সব কর্মকান্ডের কর্মী তখন নেতা হতে তাদের বাধা কোথায়?

শেষ করি। মহাকাশ বিজ্ঞানের যুগ, আইটির যুগ, পরিবেশ বিজ্ঞানের যুগ, ইত্যাদি নানা যুগ আমরা পত্রিকায় আর মিডিয়ায় সশব্দে উচ্চারিত হতে শুনেছি কিন্তু শেষ পর্যন্ত পৃথিবীটা অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণেই আছে, বৃহত্ অর্থে সামাজিক বিজ্ঞানের। প্রতিষ্ঠানে, রাষ্ট্রে, বিশ্ব ফোরামে অর্থনীতিই শেষ সিদ্ধান্ত নেয়। (সুতরাং প্রতিপক্ষ হিসেবে নাও যদি দেখেন, তবু একটা টেনশন আছে এই বিভিন্ন পক্ষে, থাকবে।)

******
(অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান আর পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক থেকে বিজ্ঞানমন্ত্রী মঈন খানের মধ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতার পার্থক্য তৈরি করে দেয় মন্ত্রী/নেতা হিসেবে তাদের যোগ্যতা নয়, বরং রাষ্ট্রে অর্থ আর বিজ্ঞানের মাতবরি করার মাত্রা।)

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনে যা কইলেন আদতে মনে হয় পুরাটাই সমাজবিজ্ঞানের কথা। সবই ঐ গোড়ার কথা। আমি প্রতিপক্ষ বলতে যা কইতে চাইছি সেইটা একেবারে শাস্ত্রের শুরুর দিককার কথা। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এক পর্যায়ে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে গেছেগা। সেই নিয়ন্ত্রণের কাহিনি পুরাটাই সমাজ বিজ্ঞানের আওতায় পড়ে। কেন এবং কিভাবে এই সমাজবদ্ধ জৈব যৌগ সমূহ বাইরা বাইরি করে সেই ক্ষেত্রে তার সুনির্দিষ্ট উপাদান নির্দেশ করা আর সংশ্লেষণ-বিশ্লেষণ ইত্যাদি একটা ডিসিপ্লিন। এখন এই ডিসিপ্লিন পরমাণুর গঠণ অনুধাবনের প্রভাবক না। সেইটা আলাদা আরেক্টা শাস্ত্র। বৃহত্তর অর্থে সেইটাই অবকাঠামো। আফলাটক্সিন খাওয়াইয়া মুরগী মোটা কইরা বেচলে কেজিতে ১০ টেকা বেশী লাভ অর্থশাস্ত্রের আওতায় পড়ে কিন্তু আফলাটক্সিনের প্রভাবে প্রাণীকোষের অনিয়ন্ত্রিত বিকাশের ব্যাপারটা পুরাই জীববিজ্ঞানের। এইক্ষেত্রে ততকালীন আওয়ামী লীগ সরকার যা কইছিল তার মানদন্ড ছিল ভোটের রাজনীতি। আফলাটক্সিন নিষিদ্ধ করলে মুরগীর ব্যাপারীরা টেকা দিবো না। মুরগী ওয়ালার হাতে অনেক ভোট ইত্যাদি। কিন্তু এতে কি প্রমাণ হয়? সমাজবিজ্ঞানী কি সিদ্ধান্ত নিবে? যেইটা ঐ সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক স্বার্থের পক্ষে সেইটা সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সঠিক নাকি জীববিজ্ঞানের গবেষণালব্ধ তথ্য কিভাবে রাষ্ট্র ম্যানিপুলেট করে সেইটা? ''র‌্যাশনালিটি'' কি কয়? সেইখানে মানদন্ড কোনটা?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আরেক্টা কথা অবস্থান ভিত্তিক যৌক্তিকতার বিষয়টা কি গণিত থিকা বিচ্ছিন্ন? কথাটা আইলো কৈথিকা? এগুলা এমনিই কইলাম। কারো পক্ষেও না বিপক্ষেও না।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

ভাল কথা বলছেন সুমন চৌধুরী। আরেকটা জিনিস বোধয় এখানে যোগ করা যায় ক্ষুধা প্রসঙ্গে। ক্ষুধা একটা মনস্তাত্ত্বিক ঘটনাও বটে। জনাব শো. চৌর মূল লেখাটা আরেকবার দেখলাম। তিনি ক্ষুধা ফিল করার আগে একটু বিষাদগ্রস্থও ছিলেন মনে হল। সঙ্গীত ফ্যাস্টিভালে না যাওয়া, এবং শেষে আবিষ্কার করা যে, আসলে তিনি আগামীবারও সেটা মিস করবেন, তারপর কোনান ডয়েলের নাটকে বন্ধুদের ছেড়ে এসে ফোয়ারায় শিশুদের দাপাদাপি দেখা... সব মিলিয়েই হয়ত এই ক্ষুধা, এই জৈবিক প্রণোদনার উদ্রেক। সব মিলিয়ে জিনিসটা খুব ইন্টারটুইনড।

তবে আপনি যেটা বলছেন, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের প্রতিপক্ষ না হওয়া... বিজ্ঞজনোচিত বটে। কিন্তু শোমচৌ ঠিকই বলছেন যে, এই বিজ্ঞানসমূহের নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে একটা ক্ষমতাসম্পর্ক আছে, এবং থাকবে। ক্লোনিং দৃষ্টান্ত দেখে মনে হল, এখানে বরং নীতিশাস্ত্র তার ভ্রুকুটি হাজির করতে চায় প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের উপরে। কাগজে কলমে, নীতিশাস্ত্রের এই খবরদারি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান মেনে নিয়েছে বলে মনে হয় (বায়ো-এথিকস ইত্যাদি)। তবু এই গোটা সম্পর্কটা দ্বান্দ্বিক।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তাইলে আর কি। চা বানাইতে গেলাম। চিনি কার কয় চামুচ?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

আগে তো চাইর চামচ খাইতাম। এখন এক চামচেই চলে!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সুমন চৌধুরী, কয় চামচ চিনি খাবো তা অন্তত: তিনটা বিষয়ের উপর নির্ভর করবে:

১. আপনার চায়ের কাপ কত বড়।
২.আপনার চামচটা কোন সাইজের।
৩.চা কতটা কড়া, দুধ দেবেন কিনা।

মানে জার্মানিতে এইসবের হিসাব কি রকম ঠিকমত জানি না। তবে সবকিছু যদি আমাদের চেনা-জানা কায়দায় হয় আর চায়ের আগে যদি ডাইলের কোনো ব্যবস্থা না থাকে তবে আপনি বিবেচনা করে যা দেন।
আরেকটা প্রশ্ন যথেষ্ট চিনি আছে তো?

তবে সাদা বিয়ারটার নাম কি জানি। ওইটা সেদিন খাওয়ার লোভ হইলো আমাদের জামাই-বউর। কিন্তু নামটা মনে করতে পারলাম না। ঐটা দুই গ্লাস হইলে খারাপ হয় না।

-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সুমন চৌধুরী এর ছবি

১ নং প্র:উ:

কফির মগ।

২ নং প্র:উ:

''স্বাভাবিক'' চা চামচ

৩ নং প্র:উ:

লিকার মোটামুটি কড়া। দুধ দিবো।
.................
দেড় কেজি চিনি আছে আপাতত। লাগলে দোকান বাসার পাশেই:)।

সাদা বীয়ারটার নাম ফ্রান্সিসকানার।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

যাক বিয়ার থাকতে চা কেন?
ঐটাই দেন।
(আপনি অবশ্য বলেন নাই বিয়ার আছে। কিন্তু আমি তো একটা চাপ তৈরি করতেই পারি, নিজের সুবিধার জন্য)।

-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তাইলে আর কি!
প্রোস্ট!!!
লগে ফ্রাইড সসেজ..

.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

শোমচৌ-এর সিগনেচার বিষয়ে যথাবিহিত বিনয়সহকারে তিনটা প্রশ্ন। ১. সাবান ঘষে গোসল করলে গাধার চামড়ার সত্যি সত্যি কোন ক্ষতি হয় কিনা, ২.সাবানটা যদি রিলিফের টিনের মত রিলিফের মাল হৈয়া থাকে, তাইলে সাবানের এইরকম অপচয়ের মাধ্যমে চৌদ্দশিকের ভিতর জীবনের অপচয় কিছু হৈলেও রোধ করা সম্ভব কিনা? ৩. প্রথম প্রশ্নের উত্তর "না" আর দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর "হ্যাঁ" হৈলে গাধার সাবান-গোসলের ফলাফল আগেই অনুমান করা সম্ভব কিনা?

উৎস এর ছবি

এইখানে একটা ভালো আলোচনা হয়েছিল। শেষে মনে হয় সবাই একটু টায়ার্ড হয়ে গেছে।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সুমন চৌধুরী, প্রোস্ত।
উৎস, আমরা টায়ার্ড হই নাই। প্রোস্ত করছি।
সুমন রহমান, গাধার শ্রম ব্যবহার করে এমন একটি জাতির মানুষদের অভিজ্ঞান থেকে সিগনেচারের মূল বক্তব্য নেয়া। আমি ঠিক গাধার গায়ে সাবান মাখিনি বা সাবান-গাধার সম্পর্ক নিয়ে গবেষণাও করিনি। সবই আর্কাইভাল তথ্য। সেই ভিত্তিতে অনুমান যথার্থই আছে। সত্যাসত্য নির্ধারণ করতে হলে মাঠ-গবেষণায় যেতে হবে।

-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।