So Lovely Slovenia

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শনি, ২৯/০৪/২০০৬ - ৯:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


স্লোভেনিয়া যাওয়ার বিষয়টি ঠিক হওয়ার আগে দেশটির নাম খুব বেশি শুনেছি বলে আমার মনে হয় না। ভূগোল সম্পর্কে নিজের জ্ঞানে আমার কোনো আস্থা নেই। কাগজপত্র ঘেঁটে যা আবিষ্কার করলাম তার মর্মকথা হলো শেষ আমি যখন ভূগোল পড়েছি তখন এই নামে কোনো দেশ ছিল না। ছিলো যুগোস্লাভিয়া। আর যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশনের বলা যায় একটি ফেডারেল স্টেট ছিলো স্লোভানিয়া। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আমাদের দেশ 1990-এ যখন উত্তপ্ত তখন কোন ফাঁকে এই দেশটির স্বাধীনতার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ঠিক খেয়াল করিনি। সার্বিয়া ও বসনিয়ার নাম গণহত্যার জন্য সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর আসলেও স্লোভেনিয়া নামটি আমার মনে কখনও দাগ কাটেনি। সুতরাং যারা স্লোভেনিয়া নাম দেখে ভিরমি খাচ্ছেন তাদের আশ্বস্ত করি এই বলে যে আপনাদের মত আমারও এ দেশ সম্পর্কে কোনো পূর্ব ধারণা ছিল না। একেবারে অপরিচিত একটি দেশে যাওয়ার আগ্রহ কখনই হয় না আমাদের। আমিও ঠিক নিজের ইচ্ছায় সেখানে গিয়েছি তা বলা যাবে না। যাওয়ার কারণ ছিল একটি কনফারেন্স।

তা অপরিচিত একটি দেশে যাচ্ছি সে আনন্দে কিছু তথ্য যোগাড় করলাম দেশটি সম্পর্কে। কিছু কিছু তথ্য খুবই মজার।

1. দেশটি অপরিচিত মনে হলেও ভূখন্ডটি ছিল অনেক আগে থেকেই। এমনকি বাংলা ভূখন্ড যখন পৃথিবীর মানচিত্রে ছিল না তখনও স্লোভেনিয়া ভূখন্ড ছিল। প্রত্নতাত্তি্বকরা 1995 সালে পৃথিবীর সবচে' পুরনো বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কার করেন এ দেশের একটি গুহায়। সেটি ছিল 35 হাজার বছর আগের একটি হাড়ের বাঁশি। (অনুমান করি আদমের পূর্বসূরিরা বাঁশি বাজাতে বাজাতে আল্পস পাহাড় দেখতে আরব থেকে এদিকে এসেছিলেন।)

2. খৃষ্টের জন্মের 100,000 এবং 60,000 বছর আগের হাড়ের অস্ত্রও পাওয়া গেছে এই দেশের গুহাগুলোতে। সুতরাং এই ভূখন্ডে মানুষের বসতি বহুআগের।

3. যুগোশস্নাভিয়ার নেতা জোসেফ টিটোর (1892-1980) কথা অনেকের মনে আছে নিশ্চয়ই। তার মা ছিলেন স্লোভেনিয়ান এবং বাবা ক্রোয়েশিয়ান।

4. 1991-তে যুগোশস্নাভিয়া হতে মুক্ত হওয়ার যে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল এই দেশে তা স্থায়ী হয়েছিল 10 দিন এবং তাতে প্রাণ হারান 66 জন নাগরিক।

5. স্লোভিন ভাষায় লেখালেখি করা মানে না খেয়ে মরার ব্যবস্থা করা। এদেশের 'বেস্টসেলার' বই বিক্রি হয় 500 কপি।

6. আয়তনের দিক দিয়ে স্লোভেনিয়া খুবই ছোটো একটি দেশ, যা ওয়েলসের সমান বা সুইজারল্যান্ডের অর্ধেক। 190টি দেশের মধ্যে আয়তনে স্লোভেনিয়া 150 তম। আর নাগরিকের সংখ্যা প্যারিসবাসীর চেয়েও কম। মাত্র 2 মিলিয়ন।

7. স্লেভেনিয়ার 53% হচ্ছে বনাঞ্চল। 1893 সালে স্লোভেনিয়াতে মাউন্টেন এ্যাসোসিয়েশন চালু হয়-যা পৃথিবীতে অন্যতম প্রথম।

8. স্লোভিনদের অত্যন্ত প্রিয় মাংস হচ্ছে ঘোড়ার মাংস। এমন কোনো রেস্টুরেন্ট নেই যেখানে কচি ঘোড়ার মাংস পাওয়া যায় না। আমি প্রথম যখন মেনু্যতে Foal শব্দটি দেখি তখন জানতামই না এর অর্থ হচ্ছে বাচ্চা ঘোড়া।

9. স্লোভেনিয়ানরা দাবী করেন স্কি করা বিষয়টি এই দেশেই আবিষ্কার হয়েছিল।

10. স্লোভেনিয়ার গুহাগুলোতে পাওয়া যায় 'হিউম্যান ফিশ' বলে পরিচিত বর্ণহীন অন্ধকার গুহার একটি বিশেষ মাছ।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।