প্রথম খসড়া থেকে চূড়ান্ত রূপ: গবেষণার একাকীত্ব-৪

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/০৫/২০০৬ - ৬:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


ভূমিকাতো ভূমিকাই। যদিও লেখা আছে, তবু শেষে গিয়েই এই অংশ লিখতে হবে। যাতে উপসংহারের সাথে অমিল না থাকে। একই দৃষ্টিকোণ থেকে লেখাগুলোকে সাজাতে হবে। সে যাক। এখন পড়ে আছি দুই নম্বর চ্যাপ্টার নিয়েই। গি্লনের পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে 3 নং চ্যাপ্টারটাকে 2নং বানাবো বলে ঠিক করেছি। সুতরাং 'থিওরিটিক্যাল ফ্রেইমওয়ার্ক' দিয়ে ব্যাটিং শুরু হবে। আর এটাই সব ঝামেলা পাকিয়ে দিচ্ছে।

মূলত: বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম আমি। অনার্সও মাস্টার্স পর্যায়ে যে গবেষণা ও থিসিসগুলো করেছি সেখানে 'থিওরিটিক্যাল ফ্রেইমওয়ার্ক' বলে কিছ ুলাগতো না। 'লিটারেটার রিভিউ' দিয়ে শুরু করে পরে একটা 'মেথডোলজি চ্যাপ্টার' দিতে হতো। 'মেথডোলজি'র সাথে মেথডের যে পার্থক্য ব্যাপক তা এই স্যোশাল সায়েনস পড়তে এসে জানা। বিজ্ঞানে এসব ঝালেমা নেই।

কিন্তু 'থিওরিটিক্যাল ফ্রেইমওয়ার্ক' দিয়েই তো থিসিস শুরু করা যায় না। পড়তে কেমন বই বই মনে হবে। থিওরির বই। এর আগে যদি বাংলাদেশ ও পানিসম্পদ নীতি প্রণয়ন সম্পর্কে কিছু বলা থাকতো তবে না থিওরি কপচানোর সাথে সাথে সেসব প্রসঙ্গ টেনে দেখাতে পারতাম যে কিভাবে আমি থিওরিগুলো প্রয়োগ করবো বাস্তবে। কিন্তু আগে তো কোনো চ্যাপ্টারই নেই তো প্রসঙ্গ টানবো কি করে।

শুধু শুধু থিওরি কপচানো তো যাবে না। গি্লন সাবধান করে দিয়েছে এতে বুঝা যাবে না যে থিওরিগুলো আমি বুঝেছি। মহাসমস্যায় পরা গেলো। কি এর সমাধান। সমাধানের কথা ভাবার জন্য খসড়া ঠিক করাটাকে আর কতদিন ঝুলিয়ে রাখবো। সুপারভাইজারগুলোকে তো পাওয়াও যাবে না এই পরামর্শ দেয়ার জন্য। শুধু পরে গাঁইগুঁই করবে। নিজেই নিজের সমস্যার সমাধান বের করতে হবে।

2 নং চ্যাপ্টারের নতুন একটা শিরোনাম তৈরি করেছিলাম:
Public Policy As a Discursive Construct and Flood/Water Policy Process of Bangladesh

এখন দেখছি বাংলাদেশ অংশটুকু আগে এনে থিওরি অংশটুকু পরে জোড়া দিয়ে দেবো। নাকি বাংলাদেশ অংশটুকু প্রথমে একটু ধরিয়ে পরে মাঝে মাঝে ছড়িয়ে দেবো?

আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের পলিসি প্রসেস সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্যই আমার কাছে নেই। বড় জোর হাজার পাঁচেক শব্দ। দেখি এটুকুকেই কুমীরের বাচ্চার মত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখাতে হবে। উপায় কি? মে' মাসের মধ্যে শেষ করা চাই।

সিদ্ধান্ত একটা নিয়ে ফেলি। আর ঝুলে থাকা না। বাংলাদেশের পলিসি প্রসেস দিয়ে শুরু করে থিওরি কপচানো শুরু করবো। থিওরির মাঝে মাঝে প্রশ্ন তুলবো যে, বাস্তবে এটি প্রয়োগ করা কেন কঠিন হবে। কেন বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। ইত্যাদি ইত্যাদি। কখনও বলা যাবে একই থিওরির এত ডাল-পালা যে কোনটা বেশি প্রযোজ্য হবে তার সন্ধান করাটাই কঠিন। এ কথা বলে আরো কিছু থিওরির শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দিতে হবে। শেষে বাংলাদেশের বন্যা বা পানিসম্পদ নীতি প্রণয়নের যে পদ্ধতি তার ক্ষেত্রে কেন 'ডিসকোর্স এ্যানালাইসিস' আলাদা মাত্রা যোগ করবে তার যুক্তি উপস্থাপন করে পরবর্তী চ্যাপ্টারে চলে যাবো।

হুম। খারাপ শোনাচ্ছে না। এখন দেখি এই ধারণাকে কতটা কাজে লাগানো যায়। Wish me luck!


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।