ধর্ম ও মানবতার মিছিলে সবাইকে নেতা মানায় না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: সোম, ৩১/০৭/২০০৬ - ৯:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


লেবানন নিয়ে একদা খুনী, ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের আহাজারির ভন্ডামি দেখে আপনার যে কষ্ট হচ্ছে তা যেকোনো বিবেকবান বাঙালিই বুঝতে পারবে অরূপ। আলবদরের হাতে খুন হয়ে যাওয়া বুদ্ধিজীবির সন্তানই শুধু বুঝতে পারবে নিজামীর গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়তে দেখলে বুকের কোথায় লাগে। যারা লুঙ্গি খুলে লিঙ্গ দেখে ধর্মের পরীক্ষা নিয়ে থাকে তাদের মুখে ধর্ম ও মানবতার কথা শুনলে শরীর রি রি করে ওঠে, তাও ঠিক অরূপ।

ভন্ডদের মুখ থেকে উঠে আসা শুভ্রবাণীতে কে বিশ্বাস করে? পৃথিবীজুড়ে মনগড়া ধর্মের বিভেদ তৈরি করে সেই ধর্মের নামে একপক্ষ হত্যা করছে অন্যপক্ষকে। সন্ত্রাসী সংগঠন হোক, রাষ্ট্রহোক, স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হোক, সবার হত্যা পরিকল্পনায় ধর্মের রং চড়িয়ে বিশ্বব্যাপী জিইয়ে রাখা হয়েছে রক্তলোলুপ সব ধর্মের এক অসুস্থ সিস্টেম। তার ফায়দা তুলে কিছু লোক। আর সাধারণ নিযুত কোটি বিশ্বাসী লোক হয় তাদের পাশার গুঁটি। সুমন সেকথাগুলো সুন্দর করে বলেছেন।

ইসলামের পাকিস্তান অখন্ড রাখার নামে, ইসলাম জিন্দা রাখার নামে, হিন্দু-ভারত সব দখল করে নিল হুজুগ তোলে, পাকিস্তানী আর্মি এনে ধর্ষণ করে এদেশের হিন্দু রমণীদের গর্ভে মুসলমান সন্তান জন্ম দিয়ে দেশটিকে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম বানানোর পরিকল্পনা করে কিভাবে একটি দেশের ধর্মবিশ্বাসী নিরীহ মানুষদের উপর বর্বরতা চালানো হয়েছে তাতো আমরা জানি। মুসলিম বিশ্বের বড় নেতারা তখন সেইসব বর্বরদের পাশেই ছিল। কারণ তাদের প্রভু যুক্তরাষ্ট্রও ছিল যে।

সেই মুসলিম বিশ্বের নেতারা এইবারও নিন্দা প্রস্তাব আনতে পারেনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে। এই উম্মাহ যে কী স্বার্থের ধান্ধায় ঘুরে তা শুধু তারাই বুঝে না যাদের ঘিলু অন্য কোথাও বন্ধক।

এই ধৃষ্টতা, এই ভন্ডামি আপনার বিবেককে নাড়া দেবে তাই তো স্বাভাবিক অরূপ। আপনার এই বোধকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। এখনও যে বিবেকসম্পন্ন মানুষ ভন্ডদের কাতারে গিয়ে না দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করে তার উদাহরণ দেখিয়ে দেয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।

আপনি খুব সংবেদনশীল। সেকারণেই মেজাজ চড়ে গেছে বলে আস্তমেয়েকে আপনি যে কটুক্তি করেছেন তা আপনি পরে প্রত্যাহার করবেন বা তার কাছে এই ব্যক্তিগত আক্রমণের জন্য ক্ষমা চাইবেন এটা আমি অনুমান করি, আশাও করি।

কিন্তু আপনার এই উত্তেজনার সময়ে করা মন্তব্য নিয়ে কিছু ব্লগার নিশ্চয়ই জোর আপত্তি তুলবেন। তারা আপনার গায়ে কাঁদা মাখানোর চেষ্টা করবে, এও স্বাভাবিক। কারণ স্বাধীনতার পক্ষে ও ধর্ষক-খুনি-হত্যাকারীদের বিপক্ষে আপনি সোচ্চার। আপনার চরিত্রহানির চেষ্টা তারা করবেই। সুতরাং অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি আমি আপনাকে আরেকটু সাহসী ও দৃঢ় হতে বলবো আর অনুরোধ করবে সতীর্থ ব্লগারদের প্রতি আরেকটু ক্ষমাসুন্দর আচরণ করতে। অনেক শুভেচ্ছা।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।