রাষ্ট্রপতির কাছে সোনার পাথরবাটির আকাঙ্খা

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: মঙ্গল, ৩১/১০/২০০৬ - ৯:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


নির্দলীয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্যই অপেক্ষাা করছিল জাতি। ক্ষমতাসীন দলগুলো নির্বাচনে অনৈতিক প্রভাব খাটায় বলেই সংবিধানে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণার অনত্দর্ভুক্তি। কিন্তু 14 দল যখন রাজপথে বিজয়ের গান গাচ্ছে তখন দলীয় রাষ্ট্রপতি একই সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানও হয়ে গেলেন। সংবিধানের ধারাগুলো সম্পর্কে দলগুলো ও তাদের আইনজীবিরা নিজস্ব ব্যাখ্যা দিলেন, দিচ্ছেন। তবু রাষ্ট্রপতির এই হঠাৎ অবস্থান বদলকে শুভ লক্ষণ মনে করছেন না অনেকে। তবে এরকমই নাকি হওয়ার কথা ছিল। দৈনিক আমাদের সময় গতকালই জানিয়েছে তারা আগেই এ তথ্য জাতিকে জানিয়েছিল। জনকণ্ঠ আজ লিখলো, তারা গত 7 জুলাই জানিয়েছিল যে রাষ্ট্রপতির অধীনে নির্বাচন হবে। ইয়াজউদ্দিনকে সরিয়ে জমিরউদ্দিনকে বসানোর চেষ্টাটা বিএনপি এ কারণেই করেছিল। সুতরাং বিএনপির ছকেই রাষ্ট্রপতির এই সরকার প্রধান হওয়া। বিশিষ্ট নাগরিকরা অভিমত দিয়েছেন যে রাষ্ট্রপতির এ পদক্ষেপ বিতর্কিত। তাদের মতামত হয়তো নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেয়া। বিএনপির কাছে হয়তো এটা রাজনৈতিক কৌশল। তবে রাষ্ট্রপতির এই পদক্ষেপের বিষয়ে সরস মনত্দব্যটি করেছেন চট্টগ্রাম শহরের জননেতা মেয়র মহিউদ্দিন। তিনি উপমা টেনেছেন ছেলে বিয়ে করাতে গিয়ে বাবার বিয়ে করে ফেলার গল্পের। তার ভাষায়, ইবা পুয়া বিয়া করাইত যাইয়েনে নিজে বিয়া গরি ফেলাইয়ে।কিন্তু আওয়ামী লীগ ও 14 দল কেন মেনে নিল এরকম সংবিধান বহির্ভূত কাজ? জনগণ তখনও রাসত্দায়। অনেকেই ভাবছেন এ হচ্ছে নেতৃত্বের অভাব। যুগানত্দরে সোহরাব হাসান মনত্দব্য করছেন এ হচ্ছে আন্দোলনে জয় কিন্তু কৌশলে হার। তবে 14 দল নেতারা বলছেন গৃহযুদ্ধ এড়াতে তারা রাষ্ট্রপতিকে একটি সুযোগ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা গ্রহণের বিরোধিতা শুরুকরলে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হতো, সেনাবাহিনী নামানো হতো এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ক্ষতিগ্রসত্দ হতো। গার্মেন্টস মালিক আনিসুল হক এনটিভিতে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে এ পদক্ষেপকে শেখ হাসিনার উদারতা বলে প্রশংসা করেছেন। জনকণ্ঠ বলছে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি ছিল গুজব। তবে ইনকিলাব পঞ্চকণ্ঠে প্রশংসা করেছে শেখ হাসিনার। তাদের মনত্দব্য প্রতিবেদনের শিরোনাম হলো, শেখ হাসিনার বিচক্ষণতায় কাটলো গণতন্ত্রের এক মহাবিপদ। প্রথম আলোতেও একই মত তুলে ধরা হয়েছে উপসম্পাদকীয়তে। তবে মতিউর রহমান কোনো মনত্দব্য প্রতিবেদন লেখেননি। যায় যায় দিন বন্ধ, সুতরাং শফিক রেহমানের কলমও সত্দব্ধ। তবে ডেইলি স্টার সম্পাদকমাহফুজ আনাম লিখেছেন। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, দলের পক্ষে না জাতির পক্ষে ভূমিকা রাখবেন ইয়াজউদ্দিন তাই এখন দেখার বিষয়। প্রশ্ন হচ্ছে ইয়াজউদ্দিন যদি দলের কারণে সংবিধানের সুবিধামত ব্যাখ্যা দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হতে পারেন তাহলে নির্বাচনে দলের পক্ষ নিতে তার অসুবিধা কোথায়?


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।