মনে পড়ে বাকের ভাই..মিথিলার মৃতু্য নাই

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: বুধ, ১৭/০১/২০০৭ - ৪:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কোন সালের ঘটনা তা বলতে পারছি না। তবে সবটা পড়লে আপনারা নিজেরাই মনে করতে পারবেন সাল ও সময়। তখন রাত আটটা বাজে মাত্র। এ সময় ঢাকার রাস্তা জনশূন্য হওয়ার কথা না। সুতরাং সুন সান খালি রাস্তা দেখে আমিঅবাক। মাঝে কয়েক মাস দেশে ছিলাম না। এর মাঝে এত কিছু বদলে গেলো দেশের। আমার প্রশ্নের তোপে পড়ে বন্ধু জানালো টিভি নাটক দেখার জন্য সবাই রাস্তা-ঘাট থেকে হাওয়া হয়ে গেছে। ওর কথা শুনে ধীরে ধীরে রহস্য খোলাসা হলো।

কেউ কোথাও নেই নামে বিটিভিতে হুমায়ুন আহমেদের লেখা একটি নাটক প্রচারিত হচ্ছে। তার আজ শেষ পর্ব। সেই নাটকের চরিত্র বাকের ভাই'র ফাঁিস হওয়ার কথা নাটকে। সেটি দেখার জন্য লোকজন রাস্তাঘাট থেকে সটকে পড়েছে। এর মধ্যে নাকি রাস্তায় রাস্তায় দেশজুড়ে দর্শকরা বাকের ভাই'র ফাঁসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। বাকের ভাইয়ের কিছু হলে হুমায়ূন আহমেদের চামড়া থাকবে না এমন স্লোগানও দিয়েছে। হুমায়ুন আহমেদ তখন হাতিরপুল বাজারের কাছে একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। সরকার লেখকের জান বাঁচাতে তার ফ্ল্যাটের সামনে পুলিশ মওজুদ করেছেন। তারপরও লেখক তার ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে লুকিয়ে আছেন। ক'জন পুলিশ কি আর বাকের ভাইয়ের সমর্থকদের ঠেকাতে পারবে? তারা ঠিকই লেখকের ফ্ল্যাটে ঢুকে যাবে লাঠি-সোটা নিয়ে।

এ সবকিছুই লেখকের কল্পিত চরিত্র বাকের ভাইকে বাঁচানোর জন্য। সবাই জানে এ চরিত্র নাটকের। তবু তারা তাকে মরতে দেবে না। বিটিভি নাকি নাটকটির দুরকম শেষদৃশ্য তৈরি করেছিলো। বাকের ভাইকে বাঁচিয়ে ও হত্যা করে। লেখক হত্যারই পক্ষে ছিলেন। দর্শকেরা বিপক্ষে ছিলো। তারা বাকের ভাইকে অসম্ভব ভালোবেসেছিলো। লেখক যে চরিত্র তৈরি করেছিলেন সেই চরিত্রের কর্মকান্ডকে তারা পছন্দ করেছিলো।তাকে বাস্তবের রক্ত-মাংসের মানুষের মত কেউ একজন বলে বিশ্বাস করেছিলো।

বাকের ভাইর একটি ছোট্ট ব্লগীয় সংস্করণ হয়ে রইলো এই ব্লগের মিথিলা। সবার মন বিশ্বাসী নয়। মিথিলার ব্লগে গিয়ে দেখলাম অনেক পরিচিত বুদ্ধিমান ব্লগারদের মন্তব্য নেই। অথবা যারা মন্তব্য করেছেন তারা মিথিলার নারী পরিচয় বা তার নানা তথ্য সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেই মন্তব্য করেছেন। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেছেন ভাচর্ুয়াল মিথিলার সত্য সত্য একটি বাস্তব রূপ আছে। তারা এখন ভিন্ন বাস্তবতা আবিষ্কার করে ভাবছেন তারা প্রতারিত হয়েছেন। এ নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্কও হয়েছে ব্লগে। সেদিকে যাবো না। আগের একটি পোস্টের শেষ বাক্যের প্রতিধ্বনি তুলি:

মেনে নেয়ার আগে প্রশ্ন করো...
বিশ্বাস করার আগে, ভাবো.....

কাদম্বরী মরিয়া প্রমাণ করিয়াছিল যে সে মরে নাই।
আর মিথিলার মৃতু্য সংবাদ মিথ্যা হইয়া প্রমাণিত করিল যে সে জন্মলাভ করে নাই।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।