উড়াল-২

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শনি, ১৫/০৪/২০০৬ - ৮:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


সিকোয়েন্স ঃ 4
স্থানঃ পত্রিকা অফিস
সময়ঃ দিন

বাংলাদেশ রক্ষা সমিতির সভা।
নারী ও শিশু পাচার বিষয়ক আলোচনা।
পেছনে একটা ব্যানার ঝুলছে।

সম্পাদক: আপনারা এ পর্যন্ত যা বলছেন তার সাথে আমি একমত। কিন্তু আমি এটাও বলবো শুধু পশ্চিমা দেশগুলোরে দোষ দিলেই হবে না। আমাদের দেশের দারিদ্র আছে, মানুষের লোভ আছে, আরো নানা কারণ আছে এসব নারী পাচারের পেছনে। পশ্চিমা বিশ্ব যা বলে তার পেছনে তাদের উদ্দেশ্য আছে। কিন্তু আপনারা কি বলতে পারবেন, এই যে ফোর্সড ম্যারেজের তারা বিরোধিতা করছে। এটা কি একেবারে অযৌক্তিক।
দর্শকের মাঝে ঝুমকা কথা বলে ওঠে

ঝুমকা: ওরা আমাদের কালচারকে ছোট করার জন্য যে ফোর্সড ম্যারেজ শব্দটা তৈরি করেছে। ম্যারেজ অব কনভিনিয়েন্স আর ফোর্সড ম্যারেজ কি এক হলো?
সম্পাদক ঝুমকার জবাব দেয়ার আগেই ছমরু মিয়া হলে ঢোকেন।
সা. বাবা: ও বেটা আহমদ। আচ্ছা বালা অইলো সবরে এক লগে পাই লাইলাম। তে সবরে কই লাই। (গলা খাঁকারি দিয়ে) আসসালামু আলাইকুম। আপনারার মিটিংয়র কিছুটা ডিসটার্ব দিলাম, কিন্তু ইটাও কম সুখবর নায়। এভরিডে সিলেটি ল্যাংগুয়েজোর উপরে একটা কোর্স চালু করছি। আগামি পরশু ইটার উদ্বোধন। অনো সবর কার্ড রাখি দিলাম। আশা করি আপনারা সবে আইবা। আর পত্র দ্বারা দাওয়াত মার্জনা করবায়।
আচ্ছা যাই। আপনারা বোধহয় কোন মিটিং করাত আছলায়। ইতা বালা। আমরার কমিউনিটির অবস্থাতো বাংলাদেশোর চাইতেও খারাপ। হুরু হুরু পুয়াইনতে গাঁজা, হেরোইন অতা খাইরা। দেখো মিটিং করিয়া অতার কুন্তা করতায় পারোনি।
ছমরু মিয়ার কথা শুনে সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে। মনিকা মুখ টিপে হাসতে থাকে।

হাসাহাসি করিও না। ই এলাকাত সমিতি আমরা কইতে গেলে আমিও পয়লা করছিলাম। মুসলমান বাঙালি অখলোর লাশ দাফনোর জায়গা আছিল না। পরে করলাম গোরস্তান কমিটি। এখনও ঔ গোরস্তানো দাফন চলের। তোমরা তো দেখি খালে মিটিং করো। কোন ফলাফলতো কিচ্ছু দেখি না।

সিকোয়েন্স ঃ 5
স্থানঃ সজিবের রেস্টুরেন্ট
সময়ঃ রাত

ক্যাশের বাটন প্রেস করলো সজিব আঙুল দিয়ে।
ঘটাং করে ক্যাশ বঙ্ খুললো। কয়েন আর নোট খোপে খোপে রাখা।
রাশেদ এসে সজিবের সামনে স্টুলে বসে।

রাশেদ কিছু বলে না। গম্ভীর হয়ে যায়।
সজিব টাকার হিসাব মিলিয়ে ক্যাশ বাঙ্ বন্ধ করে ।

সজিবঃ কি খবর ডালিমকুমার। রাজকন্যার দেখা মিললো।
রাশেদঃ মিলে নাই তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নাই।
রাশেদঃ বাহ্। কিন্তু তোর ভালবাসা কতটা খাঁটি এ বিষয়ে আমার সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
রাশেদঃ (আলতো হেসে ওঠে) তুই আমার ভালবাসাটা দেখছিস না। তিনবার আমি হিথরো এয়ারপোর্ট থেকে ফেরত গেছি। তারপর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাশিয়া, ফ্রান্স কত পথ ঘুরে ছয় মাসে এসে লন্ডন পেঁৗছেছি।
সজিবঃ কেমন গল্প গল্প নাটক নাটক শোনাচ্ছে না? আমার মনে হয় মেয়েটার বিয়ে শাদি হয়ে গেছে। এ জন্য তোর সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। এখন এসব পাগলামি ছেড়ে দে।
রাশেদঃ তোর কি ধারণা আমার মাথায় ছিট আছে?
সজিবঃ একেবারে নাকচ করে দেয়া যায় না। থাকতেও পারে।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।