বদলে গেল সৌরজগত

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৭/০৮/২০০৬ - ৪:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


মানুষই ঠিক করে দেয় সংজ্ঞা, তার নিজের ও প্রতিপাশ্বর্ের। মানুষই নির্ধারণ করে কাকে সে বলবে সূর্য আর কাকে গ্রহ। সময়ের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে মানুষ, বদলাচ্ছে তার জ্ঞান ও তথ্যের ভান্ডার আর তার আলোকে সে বদলে ফেলছে পুরনো সংজ্ঞা, পুরনো ধারণা, পুরনো বিশ্ব। সেসব অদল-বদলে পালেট যায় অনেককিছুই। নতুন করে লিখতে হয় টেকস্টবই, বাতিল হয়ে যায় আগেকার যুগান্তকারী জ্ঞানগ্রন্থগুলো আর লুকিয়ে ফেলতে হয় অনেক ধর্মগ্রন্থের বাক্য নতুন ব্যাখ্যার আড়ালে।

তেমনি একটা ঘটনা ঘটে গেল আজ। বিজ্ঞানীরা গ্রহের সংজ্ঞা পালেট দেয়ায় পালেট গেল সৌরজগত। নয়টি গ্রহের বদলে এখন আমাদের সৌরজগতকে আঁকা হবে বারোটি গ্রহ দিয়ে।

নতুন সংজ্ঞা চূড়ানত্দ অনুমোদন হবে বৃহস্পতিবারে। আনুষ্ঠানিক অনুমোদন হলেই আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলোর সংখ্যা হয়ে যাবে এক ডজন। বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, সেরেস, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন, পস্নুটো, চ্যারন এবং 2003 ইউবি313 ( জেনা)। দুই বছর বিতর্কের পর আনত্দর্জাতিক এ্যাস্টোনর্মাস ইউনিয়নের বিজ্ঞানী-সদস্যরা আজ চূড়ানত্দ সিদ্ধানত্দে পৌঁছালেন। নতুন সংজ্ঞায় বাদ পড়ে যাওয়ার আশংকা ছিলো পস্নুটোর। পস্নুটোর গ্রহ-স্ট্যাটাস বজায় রাখার জন্য দেন-দরবার করেছেন অনেক বুদ্ধিজীবিরা। পস্নুটোর সাথে নাচানাচি করে যে আরেকটি গোলক, পস্নুটোর চাঁদ বলেই যার পরিচিতি ছিল সেই চ্যারনও এবার পেয়ে গেলো গ্রহ-স্ট্যাটাস। পস্নুটো ও চ্যারণ মিলে এখন জোড়াগ্রহ বা গ্রহ-দম্পতি। আর 'সেরেস'-কে ডাকা হবে বামুনগ্রহ, যার অবস্থান মঙ্গল আর বৃহস্পতির মধ্যে, 1801 এ আবিষ্কার হওয়ার পরও এতকাল জাতে উঠতে পারেনি সেরেস, সেও এই সুযোগে গ্রহের তালিকায়। আর দশম গ্রহ হিসেবে স্বীকৃত ছিলো যে 2003ইউবি313 নামের গ্রহটি (যার আদুরে নাম জেনা) সে তার আকারের বিরাটত্বের কারণেই ঢুকে গেছে তালিকায়।

সূর্যের চারদিকে ঘোরাঘুরি বস্তুপিন্ডগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। পস্ন্যানেট ও পস্নুটন। পস্ন্যানেটের সংজ্ঞাও হয়েছে জটিল। তাতে কি? আমরা আমাদের সৌরজগতকে আপাতত: বদলে ফেলেছি।

বারো রাশিচক্রের যেসব রাশির ভাগে গ্রহ পড়তো না তারাও এখন চাইলে তাদের রাশির দায়ভার দিতে পারবে কোনো একটি গ্রহকে।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।