পতর্ুগীজ আমির খান ও হাসিমুখ সুইস জাতি

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শনি, ২১/১০/২০০৬ - ৩:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


সুইসদের একটা জাতি হিসেবে চিহ্নিত করাটা ঠিক হবে না। কিন্তু এই ভৌগলিক পরিচয়ে থাকতে থাকতে তারা কিছু কিছু জাতিগত বৈশিষ্ট্য অর্জন করছে নি:সন্দেহে। শানত্দির দেশ হিসেবেই তারা পরিচিত। সেই 1848-এ যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ করে দিয়ে তারা ভ্রাতৃত্বকে বড় করে তুলেছে। তবে তাঁদের এই সমপ্রীতির অর্জনকে একশ' এক বছর পরে এসে অরসন ওয়েলস্ একদম পঁচিয়ে দিলেন তার দ্য থার্ড ম্যান চলচ্চিত্রে। সুইজারল্যান্ড সম্বন্ধে মনত্দব্য করতে গিয়ে সেই ছবির এক চরিত্র হ্যারি লাইম বলছেন:"বুর্জোয়াদের অধীনে ত্রিশ বছর ইটালি ছিল যুদ্ধ, সন্ত্রাস, খুন, রক্তপাতের মধ্যে কিন্তু তারা জন্ম দিয়েছে মিকেলএ্যাঞ্জেলো, লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি এবং রেনেঁসার। সুইজারল্যান্ডে তারা ছিল ভ্রাতৃত্ববোধের ভালবাসায়, 500 বছর ধরে গণতন্ত্র ও শান্তির মধ্যে তারা ছিল। এবং তারা কি দিয়েছে বিশ্বকে? কুক্কু ঘড়ি।"একটা দেশকে এভাবে পঁচানোর উদাহরণ বোধহয় আর নেই কিসিঞ্জারের বাংলাদেশকে 'বটমলেস বাস্কেট' বলা ছাড়া। তবে সুইজারল্যান্ডের মানুষের সুখী সুখী ভাব আমাকে মুগ্ধ করেছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় তথ্য দিতে গিয়ে মেয়েগুলো যে শুধু মুখটা হাসি হাসি করে রাখে তা নয়, সর্বত্রই মানুষের মুখে লেগে আছে বেশ গভীর তৃপ্তির হাসি। বিমানবালাদের চর্চিত প্লাস্টিক হাসি নয় মোটেও। হাসি হাসি মুখের লোগো ছিল আমাদের ইন্টার লেকেনের হোটেলটার: হ্যাপি ইন লজ (ছবি: 1)। কোষ্ঠকাঠিন্য মুখ যে তারা ভালবাসে না তা বুঝার জন্য কমোডের ঢাকনাটা আপনাকে উল্টাতে হবে (ছবি:2)। হাসিমুখেই হোটেলে আমাদের অভ্যর্থনা জানালো মীরা, আমাদের আবিষ্কারে পতর্ুগিজ আমির খান (ছবি:3)। মুখের আদলে আর শারীরিক কাঠামোয় আমিরের সাথে মীরার অনেক মিল। মীরা ব্লগিং-ও করে। আর জানে ছয়টি ভাষা। না জেনে উপায় কি? জাতিগতভাবে সে পতর্ুগীজ। সুতরাং নিজ মাতৃভাষা সে জানেই। সুইজারল্যান্ড জুড়ে তিন ভাষার দাপট; ফ্রেঞ্জ, জার্মান ও ইটালিয়ান। এ তিনটিও তার জানা। ইংরেজি সে জানে আর জানে স্প্যানিস। (সুইজারল্যান্ডে এসেছে এক বছর। আরেকটা ভাষা শেখার তার সুযোগ আছে যদি সে দক্ষি[লিংক=হঁষষ][/লিংক]ণপূর্বে ইটালির কাছাকাছি পাহাড়ি অঞ্চলে গিয়ে কাছ করে। সেখানকার মানুষেরা কথা বলে রোমানস্ ভাষায় - যা ল্যাটিন ভাষার শেষ সরাসরি অপভ্রংশ।) মীরার প্রাণখোলা হাসির আতিথেয়তায় আমরা শেষ দু'দিন ইন্টারলেকেনেই থেকে গেলাম। লেক, পাহাড় আর আকাশের সম্মেলনে।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।