বিষয়: না নন্দীগ্রাম না তসলিমা নাসরীন; বেহাল কলকাতা

শ্যাজা এর ছবি
লিখেছেন শ্যাজা (তারিখ: বুধ, ২১/১১/২০০৭ - ৩:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকালে হঠাত্ করে খবর পাওয়া গেল শহরে খুব গোলমাল, কি হচ্ছে না হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না কিছুই। বেশির ভাগ রাস্তা বন্ধ, রাস্তায় শুধু পুলিশ। টিভি অন করে জানা গেল অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি কমিউনিটি আজ কলকাতার চাক্কা জ্যাম করার জন্যে জায়গায় জায়গায় অবরোধ করেছে। সকালবেলা কেউ কিছু না জেনেই কাজে-স্কুলে-কলেজে বেরিয়েছেন আর পড়েছেন প্রচন্ড হয়রানিতে। তসলিমা নাসরীন কে পশ্চিম বঙ্গ থেকে থেকে বহিস্কার করার দাবীতে এই অবরোধ।

খানিকক্ষণের মধ্যেই অশান্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙচুর, হট্টগোল চলছেই। পুড়ছে গাড়ি। ফাঁকতালে শুরু হয়ে যায় নন্দীগ্রামের শ্লোগান। কাওকেই থামানো যাচ্ছে না। সমানে চলছে কাঁদানে গ্যাস, লাঠি। সাধারন মানুষ ভয় পাচ্ছেন, পরিস্থিতি কী রায়টের দিকে গড়াচ্ছে? মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সমস্ত দোকান-পাট বন্ধ। রাস্তায় শুধু পুলিশ আর বিক্ষোভকারী জনতা। সেনা নেমেছে শহরে।

আসল কারণ কী এখনও পরিস্কার নয়। তসলিমা? নন্দীগ্রাম? নাকি শুধুই হিংসা??


মন্তব্য

বিপ্লব রহমান এর ছবি

নন্দী গ্রাম, লাল সেলাম!


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

গেলো....



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

মধুশ্রী এর ছবি

শ্যাজুদি,
পড়লুম, ভাটিয়া৯তেও পোস্ট্‌ পড়েছি। আশা করছি, অবস্থা তাড়াতাড়ি শান্ত হয়ে আসবে।

মধুশ্রী

তীরন্দাজ এর ছবি

নীরেট হিংসা না হলেও হিংসাত্বক তো বটেই!
**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

শ্যাজা এর ছবি

ভয়ই লাগছে রে মধু...

আশা করছি শিগ্গিরি শান্ত হয়ে যাব সব।। ভালয় ভালয় সব ঘরে ফিরে আসবে...

সেনা মার্চ করছে অস্ত্র নিয়ে তারই সাথে শ্লোগান দিতে দিতে চলছে বিক্ষোভও। ভয়াবহ।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

বিপ্লব রহমান এর ছবি

দিদি,
কিছুদিন বিবিসি রেডিওতে আর ইটিভি বাংলায় নন্দীগ্রামের খবর জেনেছি। এখন আবার সব চুপচাপ। আপডেটসহ নন্দীগ্রামের ওপর একটি আলাদা পোস্ট দেওয়া যায়?
আনন্দবাজার ভারতের সময় বেলা দেড়টায় অনলাইনে কলকাতার যে খবর দিয়েছে, তাতেও তেমন কিছু নতুন খবর নেই।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ঘটনা কি? নন্দীগ্রাম ইস্যুতে থেকে চোখ ফেরানো ?
'৯০ এর শেষের দিকে এরশাদ এই কাজ করেছিলো এখানে ।

সতর্ক থাকা খুব জরুরী । পশ্চিম বাংলার রাজনীতি ও সংস্কৃতি সচেতন মানুষ ফাঁদে পা দিলে,কেমনে কি?
-----------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শ্যাজা এর ছবি

বোধ হয় তাই। রিজওয়ানুর কান্ড থেকে চোখ ফেরানোর জন্যে নন্দীগ্রাম ইস্যু চাঙ্গা করা হয়েছে যাতে করে এক ধাক্কায় সব রকম মিডিয়া থেকে রিজওয়ানুর হাওয়া। আর এখন আজকের এই বিক্ষোভ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা। কোথাও কিছু নেই নেই হঠাত্ করে গোটা শহর উত্তাল। খোলা তরবারি, বোতলভর্তি অ্যাসিড নিয়ে মানুষের ছোটাছুটি। চলছে চাপান-উতোর, চলবে। সেনা ফ্ল্যাগ মার্চ করছে কিন্তু এখনো অশান্ত শহর। মনে করিয়ে দেয় বাবরি মসজিদ ভাঙার পরবর্তী দাঙ্গার কথা।

তসলিমা বিতাড়ন হঠাত্ করে এত বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে ভাবাই শক্ত।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এবার বেশ করে একটা রায়ট টায়ট হোক ।
তাহলেই নন্দীগ্রামকে ভুলিয়ে দেয়া যাবে ।

বজলুর রহমান এর ছবি

রিজওয়ানের শ্বশুরপক্ষ শুনেছি দারুণ বড়লোক। সুকান্তের অতি সাধারণ জীবনযাত্রী এবং সেকিউলার ভাইপো বা তার বাম দল কি তাদের পাশে দাঁড়াবে?
আমার জন্ম কোলকাতায়। যাওয়া-আসা তেমন নেই, তবু নাড়ির টান আছে বোধ হয়। তাই সেখানকার দুঃসংবাদ পীড়া দেয়।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

শ্যাজা পুর্বাপর একটু বিস্তারিত জানানতো ।
পত্রিকায় যা পেলাম-অল ইন্ডিয়া মাইনোরিটি ফোরাম বন্ধ ঘোষনা করে নন্দীগ্রামে নির্যাতন ও তসলিমার ভিসা বাতিলের দাবীতে ।
দুটো সম্পুর্ন ভিন্ন ইস্যুতে একক কর্মসুচী কি করে নেয় এরা?

এর আগে গুজরাট গনহত্যায় তো পশ্চিমবংগ সরকারের ভুমিকা অনেক প্রশংসিত হয়েছিল । গুজরাটের ক্ষতিগ্রস্ত মুসলমানদের ঘটা করে পশ্চিমবংগে নিয়ে আসা হয়েছিলো ।

এবার কি বুদ্ধবাবু মুসলমানদের কাছ থেকে তার পাওনা আদায় করছেন? এই অল ইন্ডিয়া মাইনোরিটি ফোরাম আসলে কাদের হয়ে কাজ করছে? কোন বিবেচনায় নন্দীগ্রামের সাথে এরা তসলিমাকে মিশালো?
--------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দিগন্ত এর ছবি

কালকে তসলিমার থাকাটাই আমার মনে হচ্ছে কালকে মূল ইস্যু ছিল - দুটো দল ছিল অর্গানাইজার - জামায়েত উলেমা ই হিন্দ আর অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি ফোরাম। তসলিমার থাকা নিয়ে এত সমস্যা কিকরে আমি জানিনা। এর আগেও কোলকাতার বেশ কিছু সংগঠন এই দাবী জানিয়ে আসছিল। কিছু এত বড় মাত্রায় এর আগে কিছু ঘটেনি।

"এবার কি বুদ্ধবাবু মুসলমানদের কাছ থেকে তার পাওনা আদায় করছেন?" - নন্দীগ্রাম ধর্মীয় ইস্যু নয়, মানবাধিকারের ইস্যু।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

আমি কালকে একটা ভাল টিভি শো দেখলাম এর ওপর। আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। এটা ভিডিও দেখতে পারেন ডানদিকে লিঙ্কে ক্লিক করে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শ্যাজা এর ছবি

হাসান মোরশেদ,
অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি ফোরাম আর অন্য যে দল চাক্কা জ্যামের প্রোগ্রাম বানিয়েছিল তাদের বোধ হয় এত ক্ষমতা নেই এভাবে একসাথে গোটা শহর জুড়ে এত বড় এক হাঙ্গামা শুরু করার। ফুরফুরা শরীফের নামও জড়িয়েছিল এই হাঙ্গামার সাথে কিন্তু পীরের ছেলে বিবৃতি দিয়ে অস্বীকার করেন সেটা আর এই ঘটনার নিন্দাও করেন। কালকে যা হয়েছে সেটা নিছক গুন্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। কোন আন্দোলন নয় এটা, আন্দোলন এরকম হয় না।

তসলিমাকে নিয়ে একটা টেনশন তো আছেই। কলকাতার এক নামী মসজিদের ইমাম তসলিমার মুন্ডু চেয়ে পুরস্কারও ঘোষণা করে রেখেছেন তারপর থেকে বেড়েছে তসলিমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা। ছোটখাটো মিছিল-সভা নাকি কয়েকদিন ধরেই চলছিল, তসলিমার ভিসা খারিজ করার দাবীতে। নন্দীগ্রাম নিয়ে হাওয়া গরম থাকায় খবরে আসেনি সেভাবে। কালকের এই অবরোধও নাকি আগে থেকেই ঘোষিত ছিল কিন্তু আমরা জানতাম না। মিছিলে গুন্ডামির দায় অস্বীকার করেছেন বিক্ষোভ আয়োজনকারী দুই দলই। তাদের বক্তব্য, ঝামেলা কে বা কারা করেছে তাঁরা জানেন না। হঠাত্ করেই শোনা যায় নন্দীগ্রামের ঘটনাবলীরও নাকি প্রতিবাদ এটা।

বুদ্ধবাবুর ভাবমুর্তি যথেষ্টরও বেশি খারাপ হয়েছে নন্দীগ্রাম,সিঙ্গুর নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা নেই বলে বরাবরই গর্ব করা হয়। গুজরাতের নিন্দায় সরব হন সকলে, জাতি ধর্মের উর্ধে উঠে গিয়ে।

বুদ্ধবাবু নিজে এই নন্দীগ্রাম নিয়ে উল্টোপাল্টা মন্ত্যব্য করে নিজের ভাবমুর্তি ধুলোয় মিশিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীর সাথে একসাথে উচ্চারিত হচ্ছে বুদ্ধবাবুর নাম।

গতকালকের ঘটনায় কিভাবে তসলিমা আর নন্দীগ্রাম এক হয়ে গেল সে এক রহস্যই বটে!


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

বিপ্লব রহমান এর ছবি

গতকালকের ঘটনায় কিভাবে তসলিমা আর নন্দীগ্রাম এক হয়ে গেল সে এক রহস্যই বটে!

সেই প্রশ্ন আমারো। আর এখানে ঢাকার প্রায় সব জাতীয় দৈনিক তসলিমার বিষয়টিকেই ফোকাস করে করে সংবাদটি ছেপেছে। ওইসব খবরে নন্দীগ্রামের ইস্যুটি তেমন গুরুত্বই পায়নি!

আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

??? এর ছবি

কিন্তু রিজোয়ানুর নিশ্চয়ই অন্যতম একটা ইস্যু! যদিও তারা সেকুলার পন্থায় বিবাহিত ছিলেন বলে শুনেছি, কিন্তু এখন নাকি মাইনরিটি ফোরাম এই ইস্যুকে হাতে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে!

রিজোয়ানুরকে মারল কে? পুলিশ?
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

শ্যাজা এর ছবি

সুমন,
রিজওয়ানুর কান্ড অবশ্যই একটা বড় আকারের ইস্যু। কিন্তু সেটাকে তো মনে হয় ধামাচাপা দেয়ার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এখন মিডিয়া থেকেই হাওয়া রিজওয়ানুর। ভেতরের পাতায় ছোট এক খবর দেখলাম কালকে বোধ হয়, রিজওয়ানুর নাকি আত্মহত্যাই করেছিল! টদন্টের ফল নাকি সেদিকেই যাচ্ছে। ও হ্যাঁ, রিজওয়ানুরের মৃত্যুর সাথে ওর পরিবারকেও জড়ানো হচ্ছে এবার।

রিজওয়ানুর আত্মহত্যা করেছিল এটা কেউই বিশ্বাস করে না, আমিও করি না। অশোক টোডি যেন তেন প্রকারেণ প্রিয়াঙ্কাকে ফেরত নিতে চেয়েছিল, নিয়ে গেছে। একেবারে কলকাতার থেকেই বেরিয়ে চলে গিয়েছিল গোটা পরিবার সহ। সেই ফাঁকে রিজওয়ানুরের মৃত্যু হয়। এত বেশি কাঁটা-ছেঁড়া হইসে, এই তদন্ত থেকে ঐ তদন্ত। বিচার বিভাগ থেকে সি আই ডি, সি আই ডি থেকে সি বি আই। তদন্ত চলছেই।

ওরা স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিয়ে করেছিল, যাতে করে কাওকেই ধর্মান্তরিত হতে হয় না।

মাইনরিটি ফোরাম বা অন্যান্য ইসলামিক সংগঠন গুলি তসলিমাকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত। তবে রিজওয়ানুরকে নিয়ে ক্ষোভ তো আছেই। যতই মুখে সেকুলারিজমের বুলি আমরা কপচাই, আসলে কী সাম্প্রদায়িকতার উপরে উঠতে পেরেছি? কিছু কিছু জায়গায় মানুষ ভীষণ স্পর্শকাতর। ধর্ম সেগুলির মধ্যে সবচাইতে বড়। যাই হোক না কেন সেটাকে ধর্মের মোড়ক পরাইয়া লাইগা গেলেই হইল।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

দিগন্ত এর ছবি

সত্যি, এই রিজয়ানুরের ব্যাপারটা কেমন যেন ধামাচাপা পড়ে গেল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শ্যাজা এর ছবি

পয়সা শুধু বলেই না চুপও করিয়ে দেয়...

এখানে সময় শুধু একটু বেশি লেগেছে আর কী...


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

মুজিব মেহদী এর ছবি

সত্য বেজায় নাস্তানাবুদ মিথ্যারামের চাপে

সর্বত্র।

...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।