পূর্ণমুঠি পাঠ ও কয়েকটি কথা (আপডেটিতব্য পোষ্ট)

শ্যাজা এর ছবি
লিখেছেন শ্যাজা (তারিখ: রবি, ২৫/০১/২০০৯ - ১১:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকায় যাওয়ারর পরদিনই হাতে আসে পূর্ণমুঠি, টুটুলভাইয়ের শুদ্ধস্বর থেকে। যদিও বইটি প্রকাশের পরপরই তিনি দুটি পূর্ণমুঠি আমার এক ভাইয়ের ( তার কলকাতায় আসার কথা ছিল) কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন আমার অনুরোধে কিন্তু সে বই আমার হাতে তখনও পর্যন্ত পৌঁছয়নি। প্রবল এক আকাঙ্খা নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম বইটি হাতে পাওয়ার, প্রথম ছাপা গল্পটি দেখতে পাওয়ার আকাঙ্খা। সে যে কি প্রবল, এখানে অনেকেই তা জানেন। যেভাবে বইটি হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখছিলাম সেটা দেখে লীলেনজী জানতে চাইলেন, আপনি বুঝি আজকেই পেলেন 'পূর্ণমুঠি'? সেদিন সন্ধেবেলায় হঠাৎ বসা সচলাড্ডায় তুমুল আড্ডা দিয়ে ঘরে ফিরে বারে বারেই উল্টে-পাল্টে দেখছিলাম বইটি। প্রথম দর্শনেই ভাল লেগেছিল বইটি। প্রচ্ছদ, ছাপা, বাঁধাই এমনকি পাতাগুলোও। হাতে নিলেই কেমন যেন মন ভাল হয়ে যায় এমন একটি বই। সেকি আমার নিজের লেখাও আছে বলে? বোধ হয় নয়। বইটি আসলেই ভাল হয়েছে।

রাতে শুয়ে শুয়ে পাতা উল্টে উল্টে খুঁজে বের করি নিজের লেখাটি, ছোট্ট একটু ধাক্কা লাগে, আমার গল্পটির নাম ছিল, 'ধরা যাক মেয়েটির নাম লুৎফা', এখানে দেখি লেখা আছে, 'মেয়েটির নাম লুৎফা'! গল্পটির নামে বুঝি সম্পাদকের কাঁচি পড়েছে? কিন্তু এমনটি তো হওয়ার কথা নয়! মনে পড়ে, পূর্ণমুঠি প্রকাশের পর প্রকাশিত সূচীপত্রের কথা, তাতে কী এই নামটিই ছিল? মনে করতে পারি না।

পাতা ওল্টাতে গিয়ে চোখ আটকায় মুজিব মেহেদীর লেখাটিতে। লেখকের নাম, লেখাটির শিরোনামই চোখ আটকানোর কারণ। যেন এক নি:শ্বাসে পরে শেষ করি লেখাটা। বেশ কঠিন লাগছিল পড়তে, কোথাও কোথাও দু'বার করেও পড়েছি, পড়ে সুমেরুকে বলেছি, এই লেখাটা পড়। পড়ার পর একবার ফোন করে লেখকের সাথে কথা বলার ইচ্ছেটা বারে বারেই হয়েছে কিন্তু বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল..

সে রাতে আর অন্য কিছু পড়া হয়নি। এরপর বইগুলো হাতের কাছেই, সামনেই রাখা থাকলেও পড়ার সময় আর করে উঠতে পারিনি যদিও মাঝে মধ্যেই পাতা উল্টেছি। মাঝে সময় কেটে গেছে প্রায় একমাস। গোনা দিন ফুরিয়ে যায় চট করে। ছোটভাইয়ের সদ্য জন্মানো বাচ্চার মৃত্যুসংবাদ নিয়ে কলকাতায় ফিরি, জবুথবু হয়ে দিন কাটে। সামনেই রাখা ছিল পূর্ণমুঠি, আজ আবার নিয়ে বসি। এবার আর এলোমেলো পাতা ওল্টাই না। প্রথম থেকে পড়তে শুরু করি।

অভ্র'র লেখাটি আগেও ব্লগে পড়েছিলাম, ভাল লেগেছিল, বোধ হয় অভ্রকে বলেওছিলাম। অমিতের 'পালিশ' একেবারেই পলিশড। ঝকঝকে লেখা, অমিতের মতনই, বলা যায়, অমিতিয় লেখা। আচ্ছা আনিস হক'ই কি আনিস মাহমুদ-আমাদের আনিস ভাই? ইশ্বরের স্বপ্নভঙ্গ: ধর্মাবতারের দল ও এক টোকাই-এ মজার উপাদান ছিল, বিষয়টাও খুব মজার কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠিক জমল না। আনোয়ার সাদাত শিমুল। 'নীলুফার যখন মারা গেল' একটা অন্যতম ভাল লেখা পূর্ণমুঠির। সবুজ বাঘের নাম যে আবু মুস্তাফিজ সেটা জানতাম না, তাকে শাপলু নামেই চিনতাম। 'লুহার তালা' দেখেই মনে হল, অ! তুমি! লুহার তালা বিষয়ে আমি কিসু ন কই হাসি

আরিফ জেবতিকের মাধবের বইমেলা। লেখাটা পরপর দু'বার পড়লাম আর পড়ে খানিক চুপ করে বসে রইলাম। তারপর আর কিছু পড়তে ইচ্ছে হল না। অদ্ভুত এক মনখারাপ, এক বিষন্নতা যেন ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে... আজ থাক... অন্য লেখাগুলো পরে পড়ব...


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

'ধরা যাক মেয়েটির নাম লুৎফা', এখানে দেখি লেখা আছে, 'মেয়েটির নাম লুৎফা'!

ব্যাপারটা সন্দেহজনক। আপনার কি "লীলেনজী"র সাথে কোন ক্যাচাল ছিলো?

...........................
Every Picture Tells a Story

শ্যাজা এর ছবি

আমার জানামতে তো কুনো ক্যাচাল নাই তয় অজান্তে যদি থাইক্যা থাকে কইতে পারি না মন খারাপ

------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ঘোরতর অপবাদ

এই দেখেন আপনার মূল লেখার লিংক
মেয়েটির নাম লুৎফা ই ছিল। কোনো ধরাধরি নাই

আর এই যে সম্পাদকদের পাঠানো মূল পাণ্ডুলিপির স্ক্রিনশট

এইখানেও লুৎফাকে ধরাধরির কোনো কারবার নাই
সে নিজে নিজেই ধরা খেয়ে বসা

শ্যাজা এর ছবি

কেলো করিয়াছে!
এজন্যেই বলা হইয়া থাকে, পড়িতে হয় নইলে পিছাইয়া পড়িতে হয়। ইহা অন্যের লেখা পড়া তো দূরস্থান নিজের ব্লগ-পরিক্রমাও করিয়া উঠিতে পারি না। ধরা বেচারি লুৎফা নহে, আমিই খাইয়াছি মন খারাপ বোধ হইতেছে গজিনির হিরোর ন্যায় আমারও স্মৃতিভ্রংশের ব্যাধি হইয়াছে। স্মৃতিভ্রংশের কোন ঔষধি জানা থাকিলে জানাইয়া বাধিত করিবেন স্যারজী মন খারাপ ভুল করিয়াও ভুলিয়া যাওয়া উচিৎ কাজ হয় নাই যে সম্পাদক কম্পিউটারহস্ত!! বাপরেএএ--

------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

শ্যাজাদি, নিশ্চিত হলেন কীভাবে যে লীলেনদা ওয়ার্ড ফাইলে কোনো কারসাজি করেননি? "ধরা যাক" শব্দ দুটো ডিলিট করেও তো তিনি স্ক্রীনশট নিয়ে পাঠাতে পারেন আপনাকে চোখ টিপি

অমিত আহমেদ এর ছবি

গ্রন্থালোচনা পড়তে আমার দুর্দান্ত লাগে। তাও যদি সেটা হয় শ্যাজাদি'র লেখা - তাহলে তো কথাই নেই।
পুরো পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

শ্যাজা এর ছবি

গ্রন্থালোচনা ? আর আমি!! আন্নে আমারে ফ'ল ফাইসেন্নি!! ও‌ইসব ভারি ভারি ওজনদার শব্দে আমি নাই!
নেহাত সচলায়তনের ক্যাটাগরিতে শব্দটা ছিল তাই ক্লিক করে দিলাম তবে অমিত, তোমার গন্দম নিয়া লেখার ইচ্ছা আছে আমার হাসি

------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...

অমিত আহমেদ এর ছবি

হে হে হে।

(গন্দম নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে শুনে খুব এক্সাইটেড হয়ে গেলাম কিন্তু!)


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আচ্ছা আনিস হক'ই কি আনিস মাহমুদ-আমাদের আনিস ভাই?

আনিস হক হলেন তীরন্দাজ কিংবা তীরন্দাজ হলেন আনিস হক

রণদীপম বসু এর ছবি

কানাডা থেকে 'সুবর্ণ স্বদেশ' নামের প্রিন্টেড যে সাপ্তহিক পত্রিকাটা বেরোয় ওটাতে ধারাবাহিক প্রকাশিত 'জাহাজী জীবনের গল্প' এর লেখক নাম কিন্তু ছাপা হচ্ছে আনিসুল হক।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অমিত আহমেদ এর ছবি

বলেন কী?
লেখকের অনুমতি নিয়েছে তো!


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

কারুবাসনা এর ছবি

পড়লাম।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।