ডাক

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি
লিখেছেন সুলতানা সাদিয়া [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১০/০৫/২০১৫ - ৪:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক বছর পর বাড়িতে এলাম। বাড়ি মানে আমাদের পৈতৃক ভিটা। বাবা মারা গেছেন তিন বছর হলো। মা তার আগের বছরই মারা গেছেন। মা বেঁচে থাকতে বাবা-মায়ের সাথে কুরবানির ঈদ করবার জন্য দাদাভাই বলেছিল কিন্তু আনন্দীর বাবা নিজের বাবা-মা ছেড়ে কিছুতেই কুরবানির ঈদ শ্বশুরবাড়িতে করতে রাজী না হওয়ায় আমার আসা হয়নি। আমি আসিনি দেখে রঞ্জাও আসেনি। আসলে বাবা মারা যাওয়ার পর ভাই বোনদের একসাথে এভাবে কখনো আসা হয়নি। সংসার আর চাকরি সামলাতেই সবাই ব্যস্ত। আর আমাদের দুই বোনের দুই ঈদও রুটিনমাফিক নিজের সংসার বা শ্বশুরবাড়ি করা হয়। তবু এইবার আমরা তিন ভাই বোন একত্র হয়েছি। খুব কষ্টে হিসেব নিকেশ করে যার যার অফিস থেকে ছুটি নেয়া হয়েছে। তাও আনন্দীর পুলিশ বাবা আসতে পারেনি। সে ছাড়া সবাই এসেছে তবে কোনো ঈদ বা মৃত্যুবার্ষিকী র জন্য এই গেট টুগেদার নয়। আমাদের একমাত্র বড় ভাই রকিব দাদাভাইয়ের ডাকেই আসা।

দাদা ভাই অবশ্য বেশ লম্বা ছুটিতে এসেছেন। দাদাভাইয়ের পোস্টিং যশোর। পুরো ডিসেম্বর মাস দাদা ভাইয়ের সিভিল কোর্ট ভ্যাকেশনে কোর্ট বন্ধ থাকে। এবার নাকি দাদাভাই ছুটিটা এখানেই কাটাবেন। দাদাভাই এমনিতেই খুব শান্ত মানুষ, জজিয়তি করতে করতে ভাই আরো ধীরস্থির হয়ে গেছে। রোমেলা ভাবী অবশ্য উল্টো, ছটফটে। ঘোর সংসারীও। ছেলেমেয়ে দুটিকেই দুই ক্যাডেট কলেজে ঢুকিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘরবাড়ি সাজিয়ে বেড়ান। এইখানে এসেও সারাক্ষণ বাড়িময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গতকাল থেকে আজকের মধ্যে দুইবার শপিং এ যাওয়া হয়ে গেছে। গাদিগাদি শপিং করেছেন। পাপোস, স্যান্ডেল থেকে থালাবাটি পর্যন্ত। বাড়িতে নাকি কিচ্ছুই নেই। যা আছে ব্যবহার যোগ্য নয়। তবে এবার বাড়িটাকে বেশ গোছানো মনে হচ্ছে। রোমেলা ভাবী কেনাকাটার সাথে টানাটানিও ভালই করেছেন। নিজেদের বাসার পুরোনো পর্দা, পুরনো খাট, ওয়ার্ডরোবসহ বেশ কিছু আসবাব আমরা আসার আগেই পাঠিয়ে দিয়েছেন। পাঁচটি রুমের তিনটিতেই এবার খাট দেখতে পাচ্ছি। বাবা মার শোবার ঘরের খাট বাদে বাকি দুটি খাট ভাবীরই আনা। দু’দিন ধরে সাফসুতরো করে ভাবী বাড়িটাকে সুন্দর করে ফেলেছেন।

আমাদের বাড়িটা অবশ্য এমনিতেই অনেক সুন্দর। বাবার প্রায় পনের শতাংশ জায়গার মধ্যে পাঁচ শতাংশে এক ইউনিটের ব্রিক ফাউন্ডেশনের বাড়ি। বাড়িটা পশ্চিম কোণে। বাকি অংশে গাছ আর গাছ। ফলজ গাছ থেকে শুরু করে সেগুন, মেহগনি, নারকেল গাছও আছে। নাহ্ জায়গা সম্পত্তি নিয়ে দাদাভাই বা আমাদের বোনদের কোনো মাথাব্যথা তো নেই। টু ইসটু ওয়ান হারে তিন ভাইবোনের জন্য বাবা উইল করেই রেখে গেছেন। তবে দাদাভাই কেন ডাকলো? এবার দাদাভাইকে জিজ্ঞাসা করবো। ফোনে যখন জানতে চেয়েছি, শুধু বলেছে, আসতে বলেছি, আয়।

দাদাভাই বারান্দায় চেয়ার পেতে বসে আছে। বসার ভঙ্গিটা কেমন বাবার মতো লাগছে না? আমার বুকের ভেতরটা কেমন করে ওঠে। ভাবীর পায়ের আওয়াজ পাচ্ছি। একবাটি মুড়ি মাখানো এনে ভাবী আমার সামনে ধরেন।
-নাও খাও।
-দাদাভাইকে আলাদা বাটিতে দাও ভাবী, মা আলাদা বাটিতেই দিতো।
-ওরে বাবা, বেশ তো দিচ্ছি। তা কি কথা হচ্ছে ভাইবোন দুটিতে? আরেক বোন কই? পাড়া বেড়াতে বের হলো নাকি?
-রঞ্জা তো ইসমাইল কাকার বাড়ি গেল মনে হয়। ইসমাইল কাকার মেয়ে সোমা রঞ্জার সাথে পড়তো। অনেক বছর পর দেখা, মনে হয় আড্ডা মারছে।
-মুড়ি মাখানোটা কিন্তু বেশ হয়েছে। কি বল ছোট?

ঝালে ভাবীর ফর্সা মুখ লাল হয়ে ওঠে। আমি কিছু বলি না। মুঠোতে করে মুড়ি নিয়ে মুখে পুড়তেই আমার মার কথা মনে হয়। মা মুড়ি মাখানোতে আচারের তেল দিতো। একবাটি মুড়ি নিয়ে আমার আর রঞ্জার মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত। আর দাদাভাই বরাবরের মতো আলাদা বাটিতে মুড়ি বরাদ্দ পেয়ে হাসতো আর বলতো, মা ওদের কেও আলাদা বাটিতে দিলে পারো। মা অপরূপ একটা হাসি দিয়ে বলতো, এভাবেই দুটিকে বেশ লাগে।

আমার মাথাটা ঝিমঝিম করে। আমি যেন মায়ের হাসি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি। মায়ের হাসিতে তো শব্দ হতো না। তবে কেন এমন ঝমঝম আওয়াজ হচ্ছে কানের কাছে! আমার শরীরের মুহূর্তের জন্য কি একটা তরঙ্গ বয়ে যায়। রঞ্জা এসেছে। রঞ্জাই হাসছে। রঞ্জার মুখে মায়ের মুখ কেটে বসানো। শুধু ওর পরনে শাড়ির বদলে কামিজ। রঞ্জা খুব হাসতে পারে। ওর হাজবেন্ড নোমান রাজশাহী ইউনিভার্সিটির ল’এর টিচার। দুজনেই খুব হাসিখুশি থাকে। নোমান বাজারে গেছে। যমুনার বাঘা আইড় খাওয়াবে সবাইকে। আমি রঞ্জার দিকে তাকাই।
-এ্যাই মাছ পেল নোমান? আরেকটু সকালে যাওয়া লাগতো বোধহয়।
-রাখ তোর মাছ। মজার কথা শোন। ছোট তোর বুড়িটা সোমাকে বলে কি জানিস?
আনন্দী খালামণির মুখ চেপে ধরে,
-খালামণি বলবে না, বলবে না। তোমার সাথে তবে আড়ি। ধ্যাত তোমরা বড়রা খালি সব গোপন কথা বলে দাও!

এবার গাল ফুলিয়ে আনন্দী বারান্দা থেকে চলে যায়। আনন্দীর পেছন পেছন রোমেলা ভাবী দৌড়ে যায়। রঞ্জার হাসি থামছেই না। হাসতে হাসতেই রঞ্জা বলে,
-শোন ছোট তোর বুড়িটা সোমার পেটে হাত দিয়ে বলে, আন্টি আন্টি তোমার পেটে কি বেবি আছে? এত বড় যে? শুনে সোমা এই পালায় তো সেই পালায়। ওর ও কি আক্কেল শোন। আমাদের গার্লস স্কুলের ক্লাস টেন অবধি ফার্স্ট হওয়া সোমা, ক্লাস ফাইভ আর এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া সোমা এখন চতুর্থবারের মতো মা হচ্ছে। গন্ডায় গন্ডায় পয়দা করছে। স্কুলের চাকরিটা পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছে। আর আমাকে বলে কি না, তুই কত্ত সুন্দর হয়েছিসরে, বাচ্চা নিস না কেন?
এবার রঞ্জার হাসিমুখটা ম্লান হয়ে যায়। আমি চুপচাপ দেখি। রঞ্জার মুখের দিকে তাকিয়ে ওকে কি বলবো খুঁজতে থাকি।

-বাচ্চা কি ইচ্ছে হলেই নেয়া যায়? যত সব মূর্খের দল। এদের বাড়ি যাবার দরকার কি? আর যাবি না।
দাদাভাইয়ের গলার আওয়াজ শুনে আমরা দুজন চমকে তাকাই। একেবারে বাবার মতো ভরাট গলা! যেন বাবাই কথা বলছেন। আমার মনে পড়ে, একদিন রঞ্জা স্কুল থেকে ফিরে কাঁদছিল। ও খাটো বলে এসেম্বলীতে নাকি মেয়েরা জোর করে ওকে সামনে দাঁড় করায়। অপমানে লাল হয়ে রঞ্জা কাঁদছিল। রঞ্জার কান্না দেখে বাবা ধমকে উঠেছিল, কাঁদিস কেন? সবাই তো সামনেই যেতে চায়। তুই কাল থেকে নিজেই লাইনের সামনে দাঁড়াবি।

দাদাভাইয়ের কথায় রঞ্জার মুখের রঙ পাল্টে যায়। আমি বুঝতে পারি ওর ও কিছু মনে পড়ছে। একটু চুপ করে থেকে তবু রঞ্জা ছোটবেলার বন্ধুর প্রতি পক্ষপাতিত্বের স্বরে বলে,
-আরে দুর, আমি কিছু মনে করিনি। সোমার জগতটাতো কাঁথাকাপড় আর ফিডারেই বন্দি। ওর উপর কি রাগ করা সাজে দাদাভাই। পৃথিবীটা ও স্বামীর চোখ দিয়ে দেখে। তাছাড়া ও কি আর জানে যে আমার তিনটা মিসক্যারেজ হয়েছে।
রঞ্জার গলাটা খুব স্বাভাবিক শোনায়। আমার ভেতরটা ছটফট করে।
-বাদ দে তো। এ্যাই দাদাভাই তোমার সাইকেলের কথা মনে আছে? বাবা তোমার স্কলারশিপের টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছিল! তুমি আমাদের ধরতেই দিতে না। কি যে আদর ছিল সেই সাইকেলের! রাতে তোমার বিছানার পাশে দাঁড় করিয়ে রেখে তবে ঘুমোতে। মা সাইকেলটার একটা জামাও সেলাই করে দিয়েছিল। রঞ্জা সাইকেল চালাবার জন্য তোমার পিছু লেগে থাকতো। তুমি এক একবার নানা শর্ত জুড়ে তবেই ওকে চালাতে দিতে। সেই যে তোমাকে না বলে রঞ্জা একদিন সাইকেল নিয়ে বের হলো, তারপর পা কেটে কি বিচ্ছিরি অবস্থা!
রঞ্জা হাসে।
-এখনো বাম পায়ের গোড়ালিতে দাগ আছে।
দাদাভাইও হাসে।
-রঞ্জা তো বরাবরই ক্ষ্যাপা। বাবা ডাকতো, ফুলন দেবী।
আমাদের গল্প জমে ওঠে। কত কথা যে জমে আছে। দাদাভাইও তার রাশভারি মেজাজের খোলস ছেড়ে ক্রমশ বের হয়ে আসে। স্মৃতির বাকসো উপুড় করে আমরা কথা বলতে থাকি। ভাবী এসে তাড়া দেয়,
-খালি গল্প করলে চলবে। এ্যাই নাও এবার পাকোড়া।
-ওহ ভাবী, তুমি যে কত্ত কষ্ট করতে পারো! এবার একটু বাইরে যাই দাদাভাই। চল তো রঞ্জা, বাগানের দিকে যাই। বাটিটা নিয়েই চল।
রঞ্জা আবার হাসে। এবার মায়ের মতো নিঃশব্দে।
-যাহ্ ভুলে গেছিস! মা না বলতো খোলা বাতাসে খাবার নিয়ে যাবি না। সাথে শয়তান যাবে!

দাদাভাইকে বলে আমি আর রঞ্জা হাত ধরাধরি করে বাইরে বের হই। আমাদের বাড়ির চারদিকের বাউন্ডারি ওয়ালের মাথার দিকে উল্টোমুখো করে পেরেক গাঁথা। চোর কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত লোকের প্রবেশাধিকার ঠেকাবার জন্য বাড়ি করবার সময় বাবা এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু মায়ের নিজ হাতে লাগানো শখের পেয়ারা, বরই, আতা, কামরাঙা গাছের টক মিষ্টি ফল চোরদের দাওয়াত করে নিয়ে আসতো। দুপুরে ভাত খাওয়ার পর বিছানায় শরীর ছাড়তেই শুকনো পাতায় ছোট ছোট পায়ের আওয়াজ পাওয়া যেতো। মা মাঝে মাঝে লাঠি হাতে বের হতেন। আর বিচ্ছুর দল হা হি করতে করতে পালাতো। মা রাগে গজগজ করতে করতে ওদের বকা দিতেন। বাবা হাসতো, আরে ওরা খাবেই তো দু’একটা।

-গাছগুলো কেমন জঙ্গুলে হয়ে গেছে নারে? আতা গাছটা মরে গেছে নাকি? দেখেছিস বরই গাছের ডাল ভেঙে বরই এসেছে! মনে আছে ছোট? তুই আর আমি বরই কুড়াতাম, মা সেই বরই শুকিয়ে তেঁতুলের সাথে মিলিয়ে আচার বানাতো?
-হুম, মনে আছে, তুই এমন ভাবে বললি না! খেতে ইচ্ছে হচ্ছেরে!
-চল চল ছোট, বরই পাড়ি।
রঞ্জা আমার হাত ছেড়ে বের হয়ে যায়। গাছের নিচে যেয়ে লাফ দিয়ে ডাল ধরবার চেষ্টা করে।
রঞ্জা ধরতে পারছে না। একটু লাজুক হেসে রঞ্জা বলে,
-এ আমার কাজ নারে ছোট, দাঁড়া দাদাভাইকে ডেকে আনি।

দশ বছরের বালিকার মতো রঞ্জা ছুট লাগায়। রঞ্জার ছেলেমানুষি দেখে আমার দুইচোখ ভরে জল আসে। আমি ঝাপসা চোখেই দেখতে পাচ্ছি রঞ্জা আর দাদাভাই এদিকেই আসছে। দৃশ্যটা দেখতে কি যে ভাল লাগছে! আমার চোখ বেয়ে জল পড়ছে। আমি সেই জল লুকোবার চেষ্টা করি না।

আমি এবার বুঝতে পারি দাদাভাই আমাদের কেন ডেকেছে।

(খসড়া ৯-৫-১৫ খ্রিঃ)


মন্তব্য

এক লহমা এর ছবি

"ও খাটো বলে এসেম্বলীতে নাকি মেয়েরা জোর করে ওকে সামনে দাঁড় করায়। অপমানে লাল হয়ে রঞ্জা কাঁদছিল।" - একটা ছেলের জন্য সেই কাঁদবার রীতিও বরাদ্দ থাকে না। পুরুষতন্ত্রের যাঁতাকল যখন পুরুষকে পেষে সে পেষণ ঐ পুরুষকে সইতে হয় একদম একা! কিন্তু সে অন্য কথা। এখন শুধু বলি, এত সুন্দর লেখা কি করে যে লেখেন আপনি সাদিয়া-দিদি! সাবলীল, গভীর অথচ কোথাও কোন ভার আছে বলে মনে হয় না! চলুক

ও হ্যাঁ, খসড়ার গপ-টা কি? আর একটা পরবর্ধিত, মার্জিত সংস্করণ আসছে নাকি? হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

থেঙ্কু হাসি
খসড়া লিখেছি, কারণ স্মৃতিরা যদি ঘুরে ফিরে আসে, লেখাতে আরো ঢুকবে পরে। আসলে খুব জলদি পোস্ট দিলাম তো। কারেকশনও করা হয়নি ঠিকভাবে।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

দিলেনতো বাবার কথা মনে করিয়ে। সেই ১৯৪৩ সালে বিচার বিভাগে যোগ ছিয়েছিলেন। দেখেছি, সে কালের জজিয়তি জীবন। ১৯৮০ সালে বিচারপতি হিসাবে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। সেই কবে ১৯৮৯ সালে মারা গিয়েছেন। মা মারা গেলেন এই ২৬ এপ্রিল আমার জন্মদিনে। যাহ্, এসব কী লিখছি!
আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে আমারও এমন অনেক স্মৃতিই মনে পড়ছিলো। লেখা আমাকে স্মৃতুমেদুরতায় আক্রান্ত করেছে। চলুক

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

স্যারের জন্য দোয়া রইল। লিখুন না, বেশ তো কত্ত কথা ছেলেবেলার!
মা-বাবার স্মৃতি বেশি মনে পড়ে যখন কাঁধে একটা হাতের অভাব খুব অনুভব করি। কাল ছুটির দিনটা খুব কষ্টে কেটেছে, স্মৃতির গন্ধে কেটেছে। তাই লিখে ফেললাম।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

আয়নামতি এর ছবি

খেলবো না। এরকম করে গল্পটা শেষ হয়ে গেলো!
আমি তো ছাই বুঝলাম না কেনো দাদাভাই বোনদের ডাকলেন ইয়ে, মানে...
কেনো রঞ্জার ছেলেমানুষিতে বোনের চোখে পানি আসলো ইয়ে, মানে... ইয়ে, মানে...

ক্ষ্যাপা ভানামটা এরাম না রে?

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

হুম বানান ত্রুটি সারবার সময় না নিয়েই পোস্ট দিয়েছিলুম। ঠিক করে দিলাম।
বলবো না। কেন ডাকলো, কেন পানি আসলো। বলবোই না।
শুধু এটুকুই বলি কাল শৈশবে ফেরার জন্য দুপুরের সোনা রোদ ডেকেছিল আমায়।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দারুণ একটা লেখা। অনেক মায়া।
আমার পরিবারের লোকজন দুনিয়ার দিগ্বিদিকে ছড়িয়ে আছে। এক করতে হলে কনফারেন্স ডাকতে হবে।
আপনারা সবাই কি আইনের মানুষ নাকি?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আসলে লেখাটা পরেই দিতাম। অন্য একটা লেখা রেডি করেছিলাম। কিন্তু সকালে আপনার পুরনো লেখা, ‘আব্বুকে মনে পড়ে’ পড়ার পর মনে হল গতকালের খারাপ লাগাটা বেশি আঁকড়ে ধরলো। লেখাটা দ্রুত সারাই করবার পিছনে আপনারও হাত আছে কিন্তু।
না, না। সবাই না, কেউ কেউ। খাইছে

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আয়নামতি এর ছবি

তাও ঠিক, মূর্খ পাঠকরে বোঝানোর দায় লেখকের থাকবার কথা না।
করো যাহা মনে তোমার লয়!

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

ওরে মূর্খ পাঠক! আমি তবে কি রে?

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

রানা মেহের এর ছবি

গল্পটা অনেক মিষ্টি লাগলো হাসি

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

কৃতজ্ঞতা জানবেন।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

তাপস শর্মা এর ছবি

আমি হয়তো বুঝেছি কেন গল্প কথকের চোখে পানি চলে এলো, তবে আমিও বলবো না...

ভাল্লাগছে...

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

ধন্যবাদ। একদম বলবেন না কিন্তু আয়নামতিকে! হিসসসসসসস

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

আয়নামতি এর ছবি

শোনো, সেদিন একটা সিনেমা দেখলেম হুট করে।
সিনেমার নাম কী? 'বেলাশেষে'। সেখানে সৌমিত্রের মুখে চমকদার একটা ডায়লগ আছে।
তিনি তার সঙ্গিনীকে বলছেন, লেখক আর প্রকাশকের সম্পর্ক হলো খানিকটা স্বামী-স্ত্রীর মতো।
লেখক ভেতরটা সামাল দেন, প্রকাশক বাইরেরটা।
যেভাবে একজন স্ত্রী দেন বাড়ির ভেতরটায় আর স্বামী বাইরেরটা আর কী।
তুমি হইতেছো সেই লেখক, সচল তার প্রকাশক। এক্ষেত্রে পাঠক সর্বশ্রেণিরই হতে পারেন।
আমার মত মূর্খসহ জ্ঞানীগুণি সবাই। হাতে থাকলো পেন্সিল দেঁতো হাসি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আমার হাতে হিমু ভাইয়ের রফাট।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার বাড়ির বিবরণী পড়ে খুব যেতে ইচছা করছে। বাঘা আইড় কি মাছ?

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

বিশাল আকৃতির আইড়। আমার বাবা আমাকে এক মন ওজনের আইড়ের ভাগ খাইয়েছিলেন, মাংসের মতো ভুনা রান্না করলে ভাল লাগে। যমুনায় আছে।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

আগেও বলছি বেশি তাড়াতাড়ি লেখাটা শেষ হইয়া গেছে। আমার কাছে অসমাপ্ত লাগছে। কারেকশন আনো, এড করো সেটুকু যা পড়লে মনে হবে " এইবার ঠিকাছে" ।

এইবার আসলে বাঘা আইড় রাইন্ধা খাওয়াবা, অকে ? দেঁতো হাসি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আফনে কি অপর্ণা আফা? না চিনলে ক্যামনে খাওয়াই?

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

এখনও আমরা বোনেরা একসাথে এলে পুরো শৈশবটাই ফিরে আসে আলপথ, তালফুল, পুকুরপাড় ধরে। আস্ত একটা জীবন ফিরে আসে যেন। গল্পটায় এত মায়া! দাদাভাই, আনন্দীর মা, রঞ্জা সবার জন্য ভালোবাসা...

দেবদ্যুতি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

কৃতজ্ঞতা। আপনার শৈশবের তালগাছের গল্প বোধহয় পড়েছি একটা লেখায়। আরো লিখুন। আপনার লেখায় বড় মায়া। উত্তর দিতে দেরি হওয়ায় দুঃখিত দেবদ্যুতি।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।