টুকরো টুকরো লেখা ১৪

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: বুধ, ০২/০৯/২০০৯ - ১০:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আবার আঙ্গুলগুলা কাইণ্ঠামি করতাছে। সচলে আইসা আইসা ঘুইরা যাই মাগার হাত চলে না। মাথাও না। একরকম সর্বগ্রাসী স্থবিরতায় পাইয়া বইছে। এইটার কোন সমাধান পাইতাছি না। লেবুর পানি আর দুধচিনি ছাড়া সস্তা ফিল্টার কফি বহুত খাইলাম। তাতে ডিপ্রেশন আরো বাড়ছে। কারণ? এই দুনিয়ায় মন খারাপ করার মতো কারণের অভাব আছে?

১.

জার্মান টাইম সকাল থিকা মনমেজাজ আরো খারাপ। আনু মুহাম্মদের উপরে এই হামলা নতুন কিছু না। গতবার আওয়ামী লীগের আমলে একবার পার্টি অফিসের সামনে ককটেল মারা হইছিল। জোটসরকারের আমলে চাক্কু মারা হৈছে। বাকি ছিল পুলিশী হামলা। এইবার সেইটাও হইলো। স্যার যা করতে বা যা কইতে গেছিল তাতে সরকারের পোঁড়ায় ঠিক কোন পয়েন্টে? মাইর দিয়া কি সেই পোঁড়ানি উপশম হইবো বইলা সরকার মনে করে? ফুলবাড়ি কি একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল?

একটু আগে ফেইসবুকে শামীমা বিনতে রহমানের স্ট্যাটাস থিকা জানলাম স্যারের দুই পায়েই ফ্র্যাকচার হইছে। এইটারে টার্গেটেড স্টেট টেরোরিজম ছাড়া কী কমু? স্যার সুস্থ হইয়া উঠেন। এই পাঁচশো লোকের মিছিল একদিন হাজার ছাড়াইয়া লাখে উঠবো।

২.

গত সম্পাহান্তে জশনেজুলুছে বিশাল সমাবেশ। অনেকদিন পরে এইরকম একটা সমাবেশ দমবন্ধ অবস্থা থিকা বাইর হইয়া এক খাবলা তাজা বাতাসের মতো। সচলের জন্মের পর থিকা জার্মানীতে এইটাই বৃহত্তম সচলাড্ডা।

প্রথম দিনের গ্রীল পার্টি, দ্বিতীয় দিনে হেরকুলেস ভ্রমণ আর আমার বাসায় সমাপনী সমাবেশ দীর্ঘদিনের জন্য একটা খাউজানোর মতো স্মৃতি হিসাবে থাইকা যাইবো। জীবনে সুখস্মৃতির আকাল তো আর কাটতাছে না সহজে ........

৩.

এই মাসের শেষে জার্মানীতে জাতীয় নির্বাচন। কয়েকমাস ধইরা সব মিডিয়া গুলি ক্রিশচিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন আর ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কোয়ালিশনের সম্ভাবনার কথা কইতে কইতে যখন মুখে ছেবড়ি তুইলা ফালাইতাছে সেই অবস্থায় গত রোববার দিন যারলান্ড, থুইরিঙেন আর যাক্সেনের প্রাদেশিক নির্বাচনের ফলাফল মিডিয়ার শেঠগো মুখে একরকম স্ট্যাপলার মাইরা দিছে। তিন প্রদেশেই বামপন্থীরা গড়ে ২০% এর উপর ভোট পাইয়া সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিরে কাচকি দিয়া ধরছে। যাক্সেনে সিডিইউ কোন মতে এফডিপির সাথে কোয়ালিশন কইরা সরকারে গেলেও থুইরিঙেন আর যারল্যান্ডের এসপিডিরে বামপন্থীদের সাথে কোয়ালিশনের ব্যাপারে একরকম গলায় পাড়া দিয়া ধরছে। হইতে পারে এইটা নিতান্তই রিসেশনের প্রভাবে একরকম লেফট ব্লো। পকেটে আবার ভালোমন্দ আইলে এই বামজ্বর সাইরা যাইবোগা। কিন্তু জ্বর থাকতে থাকতে অন্তত যদি ন্যুনতম মজুরির আইন আর এ্যাঙলো-স্যাক্সন মডেলে উচ্চশিক্ষার বিপনন কিছুটা বিলম্বিতও করতে পারে তাইলেই বা কম কিসে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতন অতিসভ্য বামমুক্ত দেশে থাকিনা এইটা ভাইবাও যদি এই বাজারে মন একটু ভালো লাগে .......

৪.

জুবায়ের ভাইকে নিয়ে মেহবুবা জুবায়ের এর পোস্ট পড়ে থম ধরে ছিলাম। কীভাবে একটা বছর চলে গেল। কিছু শোকের প্রকাশ বাক্যে করা মুশকিল। হয়তো এটা ভাষারই সীমাবদ্ধতা কিংবা আমার। জুবায়ের ভাইয়ের চলে যাওয়ার ভোঁতা কষ্টটা শ্বাসনালীতে সেইভাবেই চেপে আছে। থাকবেও। অন্তত যতদিন তাঁর প্রকাশ্য এবং ব্লগীয় সান্যিধ্যে আসা সামান্য মানুষেরা বেঁচে আছি ....


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

পোস্টের পরতে পরতে মন খারাপ ভাব...

সৈয়দ আফসার [অতিথি] এর ছবি

ভাল লাগল।

ভাল থাকুন।

হিমু এর ছবি

প্রথম আলোতে এই খবরটা পড়ে বুঝলাম, যেমন ভেবেছিলাম তেমনই হবে। ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরাট ইনভেস্টমেন্ট আছে গ্যাসভিত্তিক ব্যবস্থার ওপর। তাদের খুশি রাখতে যে কোনো সরকার প্রয়োজনে জনগণকে পাদিয়ে গ্যাসের যোগান দেবে। দুই চারটা আনু মুহাম্মদ কোনো ব্যাপার?

গ্যাসের এই হঠাৎ অনুভূত ডিমান্ডের জন্যে দায়ী জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের আমলা-মন্ত্রী এবং পরবর্তীতে খাম্বাচোর হাওয়া-সরকার। বিদ্যুৎ খাতে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে দেশটাকে, যে এখন প্ল্যান্টের পয়সা জুটলেও জ্বালানি মিলবে না। দুইদিন পর ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ইফতার মেহফিলে আর পাবলিক রাস্তায় নেমে যখন গ্যাসের জন্য চিল্লাবে, তখন সরকার বলবে, এই দ্যাখো, জনতার দাবী। তারপর দরকষাকষির সময় বিচিকাটা বলদের মতো ধলাদের সব যুক্তি চুক্তিতে মেনে নিয়ে সই করে দিবে চৌফিক-গং। হোগামারা খাবে পাবলিক, ভর্তুকির পয়সা গুণতে গুণতে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ফিরোজ জামান চৌধুরী এর ছবি

পুলিশ লেলিয়ে পিটুনি দিয়ে আনু মুহম্মদকে থামানো যাবে না।

আনু মুহাম্মদ স্যারের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।

ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।

মাহবুবুল হক এর ছবি

আমাদের জাতীয় স্বার্থ এখন গোষ্ঠীস্বার্থের গহ্বরে হারিয়ে গেছে। ফুলবাড়ি কাটসাট বা যাত্রাবাড়ির আন্দোলন যারা করে যে-জন্য করে সেসব পড়ে থাকে চিরকালের তাচ্ছিল্যে আর অবহেলায়। তাদের কাঁধে ভর দিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে ওঠে আর ক্ষমতায় আসে পুরোনো শকুন, মৃতপ্রায় দেশটাকে ঠুকরে ঠুকরে শেষ করে দিতে। এ সরকার এর ব্যতিক্রম হতে পারে নি। সকালের সূর্যই বলে দেয় দিনটা কেমন যাবে। বারবার মুখোশ উন্মোচিত হওয়ার পরও একজন তৌফিক-ই-ইলাহী যে কিনা দেশের গ্যাস-বন্দর সংক্রান্ত সবচেয়ে বিতর্কিত চুক্তিগুলোর হোতা এবং সুস্পষ্টভাবে পশ্চিমা লুটেরাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মিশন নিয়ে বহুকাল ধরে কাজ করে যাচ্ছে তাকে একই ক্ষেত্রে উপদেষ্ষ্টা হিসেবে সাদরে গ্রহণ করেছেন ( বা করতে বাধ্য হয়েছেন) প্রধানমন্ত্রী । কিংবা সালমান এফ রহমানের কথাই ধরুন, ঋণখেলাপী সংস্কৃতির হোতা এবং দেশের সবচেয়ে বড় ঋণ খেলাপী এই ঘৃণ্য লোকটি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা !! হা ঈশ্বর, এ দেশের অগ্রগতির রূপকার হবে এসব মানুষ ? মন্ত্রীদের এ.পি.এস সাধারণ রাজনৈতিক নিয়োগ হয়ে থাকে কিন্তু এ.পি.এস নিয়োগের ধরণ দেখে বোঝা যায় কোন মন্ত্রী কোন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করবে। তাতে মোটামুটি সব মন্ত্রীই ফেল করেছে। ডাহা ফেল করেছে শিক্ষামন্ত্রী। ভালমানুষ ইমেজ নিয়ে শুরু করলেও সবচেয়ে অকর্মা আর দুর্নীতির আখড়া হয়েছে তার দপ্তর। তার হুশিযারি এখন পরিহাসের মত শোনায়। তার জন্য একটুখানি করুণা আগে থেকেই জমিয়ে রাখলাম সময় হলে দিয়ে দেব।

[/i]দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা
আমি তো বেকার পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা
[i]

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

তীরন্দাজ এর ছবি

চারপেশেই নৈরাশ্যের রাজত্ব, একমাত্র সচলাড্ডাটুকু ছাড়া।

এইবার সিডিও, সিএসউ আর এফডিপি সরকার গঠন করবে, তাতে কোন সন্দেহ নাই। এসপিডি আর গ্রীনকে সমর্থন করি, বামের দিকেও টান আছে। তবে এসপিডি নিজেদের সীমানার অতি ডানে সরে ভরাডুবির পথ চুড়ান্ত করেছে।

আনু মুহম্মদের উপর হামলার নিন্দা জানাই।

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এতো বেশী হতাশ করছে যে, বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেই ইচ্ছে করেনা আর!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সবুজ বাঘ এর ছবি

হুম।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

আর সইতে পারলাম না। দিলাম পোষ্ট। দেখেন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

এনআরভে— এর গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো যেমন বন, কোলন-এ মেয়রের পদটা এসপিডি পেলেও সিডিইউ বাকি পদগুলোর বেশিরভাগ সহ লোকাল সংসদে বেশ ভালো অবস্থানেই আছে।

লা ফন্টেইন- এর সাথে বিবাদের ফল এসপিডিকে আরও অনেক দিন ভোগাবে। স্টাইনমায়ার আর এসপিডির বড় মামুর মধ্যকার ব্যক্তিগত 'কাইজ্যা' ঠিকঠাক না হওয়া পর্যন্ত এসপিডি অভ্যন্তরীন ভাবে দুর্বল হয়েই থাকবে। তাছাড়া ভোট ব্যাংক নিয়ে কিচ্ছা তো আছেই। সিডিইউ যেখানে কেবল এসপিডির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এসপিডিকে সেখানে সিডিইউ তো বটেই তার সাথে লিংক আর গ্রীনের সাথেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। লিংক আর এসপিডি স্থানীয় সরকারে বুকে বুক মেলে চললেও কেন্দ্রীয় সরকারে যেহেতু কোয়ালিশনে যেতে রাজী না সুতরাং ভাগ্যের শিঁকে সিডিইউ-সিএসইউ আর এফডিপি'র জন্যই তোলা থাকবে এবারেও।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।