দেশ উন্নয়ন ভাবনা – ০৩

স্বাধীন এর ছবি
লিখেছেন স্বাধীন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০১/১০/২০০৯ - ৪:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগের পর্বগুলোঃ ০১ , ০২

সংবিধান ও সরকার পদ্ধতি

সংবিধানের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা নির্দিষ্টকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগের জবাবদিহীতা ও ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিতকরণ। একটি গণতান্ত্রিক সরকার পদ্ধতির মূল ক্ষমতার উৎস তিনটিঃ নির্বাহী বিভাগ, আইন প্রণয়ন বিভাগ বা সংসদ ও বিচার বিভাগ। এই তিন বিভাগের স্বাধীনতা, পরষ্পরের মিথষ্ক্রি য়ায় তাদের মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্যের উপরই নির্ভর করে প্রকৃত গণতন্ত্রের ভবিষ্যত। অধুনা আরো কয়েকটি বিভাগের স্বাধীনতাও সুষ্ঠ গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় বলে ধরা হয়। এগুলো হলঃ দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন এবং প্রচার মাধ্যম।

সরকার পদ্ধতির মধ্যে বহুল প্রচলিত পদ্ধতিটি হচ্ছে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি যেখানে নির্বাহী বিভাগ ও সংসদের প্রধান হয়ে থাকেন একই ব্যক্তি, যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে থাকেন যারা সরকারের নির্বাহী কাজ পরিচালনা করে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীরা কেবল মাত্র সংসদের কাছে জবাবদিহী হয়ে থাকেন। সংসদ চাইলে যেকোন সময় অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে সরকার ভেঙ্গে দিতে পারেন। এই পদ্ধতির প্রধান সুবিধে হল একই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ নির্বাহী এবং সংসদের সদস্য হওয়ায় সরকার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইন সহজেই প্রণয়ন করতে পারেন, যা প্রকান্তরে প্রশাসনে গতিশীলতা আনে। কিন্তু একই ব্যক্তি আইন প্রণয়নকারী এবং প্রয়োগকারী হওয়ায় আইনের অপব্যবহার বা কাল-আইনের প্রণয়নের সম্ভাবনা থেকে যায়। এই সরকার পদ্ধতির দ্বিতীয় অসুবিধেটি হল,সরকারের অনিশ্চিত স্থায়ীত্ব বা মেয়াদকাল। যেহেতু যেকোন মুহুর্তে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে সরকারের পতন সম্ভব তাই সরকার প্রধানকে সব সময় নিজ দলের এবং বিরোধী দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সন্তুষ্ট রেখেই সরকার চালাতে হয়। সরকার প্রধানের নিজ দলের মতের বিরুদ্ধে যেয়ে নিজ চিন্তার প্রতিফলন অনেক সময় সম্ভব হয় না। যদিও এর মাধ্যমে সরকারের নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়, তারপরেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারের মাঝে দলীয় আনুগত্য প্রকাশ পেয়ে যায়। ঠিক সেরকম ভাবে দলীয়ভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও দলের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের চিন্তার প্রতফলন ঘটান না বেশিরভাগ সময়ই। এটি আরো খারাপ আকার ধারন করে যখন দলীয় পর্যায়েও গণতন্ত্রের অভাব থাকে তখন সরকার পরিচালনায় ব্যক্তিকেন্দ্রীকতা লক্ষ্য করা যায়। আমাদের দেশের প্রক্ষাপটে এই কথাটি বিশেষভাবে পরীক্ষিত।

দ্বিতীয় সরকার পদ্ধতিটি হল প্রেসিডেন্সিয়াল বা রাষ্ট্রপ্রধান সরকার পদ্ধতি, যেখানে সরকার প্রধান সরাসরি জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধে হলো রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ আইন প্রনয়ন বিভাগ বা সংসদ হতে পৃথক থাকে। নির্বাহী বিভাগ সরকার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের জন্য সংসদে পাঠান এবং সংসদ সেই আইন পর্যালোচনা করে তা আইন হিসেবে পাশ করেন। রাষ্ট্রপ্রধানেরও সংসদের পাশ করা কোন আইনের উপর ভেটো দেওয়ার অধিকার থাকে যা আবার সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে রহিত করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে গতিশীলতা কিছুটা বাধাগ্রস্থ হলেও গণতন্ত্রের জন্য তা ভাল। এর মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগ ও সংসদ এক অপরের উপর নির্ভরশীল এবং এর মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা যায়। আরো একটি সুবিধে পাওয়া যায় তা হল সরকারের নিশ্চিত স্থায়ীত্ব। যেহেতু রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের ভোটে নির্বাচিত তাই সরকার তার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারে। আবার নির্বাচিত হবার পর দলীয় আনুগত্য প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা না থাকায় রাষ্ট্রপ্রধান নিজের চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে পারেন। সরকারের মেয়াদ শেষে জনগণের কাছে ব্যক্তি হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধানের মূল্যায়ন হয় বিধায় জনগণের জন্য কাজ করার চেষ্টা থাকবে বেশি।

আগেই বলেছি যে সরকারের মাঝে যত বেশি জবাবদিহীতা ও ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে জনগণের অধিকারও তত বেশি নিশ্চিত হবে। সেই জন্যই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা গনতান্ত্রিক সরকারের কাঠামো তিনটির অন্যতম একটি অংশ। বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ ও সংসদের সমান্তরাল একটি স্বাধীন বিভাগ। একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ নিশ্চিত করে আইনের প্রয়োগ সবার জন্য সমান ভাবে হচ্ছে কিনা এবং সংবিধানের আলোকে আইন প্রণয়ন হচ্ছে কিনা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যদি দেখি তবে দেখতে পাই যে আমরা এখনো গণতন্ত্রের এই মৌলিক অংশটিই নিশ্চিত করতে পারিনি। যেখানে স্বাধীন বিচার বিভাগই নেই সেখানে গণতন্ত্রের কোন সুফল আশা করা বৃথা। স্বাধীন বিচার বিভাগের পর পরই আসবে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। বেশিরভাগ দেশেই এই পাঁচটি স্বাধীন বিভাগকে ধরা হয় গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামো হিসেবে। আরো উন্নত দেশে প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতার উপরও জোর দেওয়া হয় কারণ সেখানে জনগণের সরাসরি মতামত প্রতিফলিত হয়। আর আমাদের দেশের প্রক্ষাপটে আমি পুলিশ বিভাগকেও স্বাধীন হিসেবে প্রয়োজন বলে মনে করি। অন্তত স্বাধীন না হলেও নির্বাহী বিভাগ হতে পৃথক করে স্বাধীন বিচার বিভাগে দেওয়া যেতে পারে।

সরকারের বাড়তি কিছু জবাবদিহীতার জন্য সংসদকে দু’কক্ষ বিশিষ্ট করা যাতে পারে। এই ব্যপারে ইশতি লেখার সাথে আমি সহমত। নিম্ন কক্ষ বর্তমান সংসদের মতই থাকতে পারে। অর্থ সংশ্লিষ্ট যেকোন কিছুর ব্যাপারে নিম্ন কক্ষের স্বিদ্ধান্তই চুড়ান্ত হতে পারে। তবে উচ্চ কক্ষ মনে করলে সেটা রহিত করতে পারে। উচ্চকক্ষ আইন প্রণয়ন এবং সংবিধানের সংশোধন এর ব্যাপারে স্বিদ্ধান্ত নিবেন। উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের জন্য স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। নিম্ন কক্ষে জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারে। তবে উচ্চ কক্ষের প্রতিনিধি বাছাই এর ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা অবলম্বন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলা, বিভিন্ন গোত্র, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন পেশাজীবি, বিভিন্ন শ্রেনী ও লিঙ্গ ভেদে প্রতিনিধি বাছাই করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে সকল গোষ্ঠীর মতামত প্রতিফলিত হবে যা একটি প্রজাতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয়। সর্বশেষ কাঠামোটি হচ্ছে, সরকার ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ। রাষ্ট্রকে বিভিন্ন প্রদেশে বিভক্ত করে প্রতিটি প্রদেশে দু’কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং নির্বাচিত প্রদেশিক প্রধান এর মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগকে আলাদা করা হলে সরকারের মাঝে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে।

এই সমস্ত কিছু আমাদের দেশের প্রক্ষাপটে এক ধাপেই অর্জন করা সম্ভবপর নয়। তাই আমাদের দেশের জন্য সর্ব প্রথম প্রয়োজন বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী বিভাগ হতে মূক্ত করা। এর মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতার হ্রাস সম্ভবপর হবে এবং আইনের প্রয়োগ সমানভাবে সম্ভবপর হবে। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন পারে দলীয় পর্যায়ে গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে, যেন একই ব্যক্তি আজীবন দলীয় প্রধানের পদ অলংকৃত করে না রাখতে পারেন। সর্বোপরি প্রয়োজন একটি নুতন গণতান্ত্রিক দল, যারা জনগণের কাছে তুলে ধরবে সরকার পদ্ধতির পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সংবিধান পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, কিন্তু তার সেটা করবেন বলে আমার বিশ্বাস হয় না।

তথ্যসুত্র ও কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ ইংরেজী উইকিপিডিয়া


মন্তব্য

রাগিব এর ছবি

উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের জন্য স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।

এইটাতে একেবারেই একমত হতে পারলাম না। মওলানা ভাসানীর কথা ধরা যাক, তিনি কি বাদ যাবেন এই হিসাবে? টাকার অভাবে পড়তে পারেননি কলেজে কিন্তু রাজনীতি করেছেন বহুদিন, এমন নেতাদের বাদ দেয়ার যুক্তিটা কী?

আর জনপ্রতিনিধি হতে হলে ডিগ্রি থাকতে হবে, এটা সার্বজনীন মানবাধিকারের লঙ্ঘন। (পাকিস্তানে ব্যাটারা করেছে বিশেষ কিছু রাজনীতিবিদদের বাটে ফেলার জন্য ... অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এই রকম নিয়ম কি আছে?)

(বাংলাদেশের নিয়মটা কিন্তু যোগ্যতা কী তা প্রকাশ করার, ডিগ্রি থাকতে হবে এমন নিয়ম নাই)।
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

স্বাধীন এর ছবি

জনপ্রতিনিধি হবার জন্য শিক্ষার যোগ্যতার প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়ে দ্বিমত থাকতেই পারে। এটা একটি বিতর্কিত বিষয় কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কোন যোগ্যতা আরোপণ করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন হবে এটার সাথে একমত নই। আমার মনে হয় নুন্যতম বয়স এবং বাংলাদেশি নাগরিকত্বের নিয়ম আছে জনপ্রতিনিধি হবার জন্য। তেমনি কোন বিসিএস ক্যাডারে বা যে কোন চাকুরীর ক্ষেত্রে নুন্যতম শিক্ষার উল্লেখ থাকে। এগুলোর ক্ষেত্রে থাকে কারণ ধরা হয় যে উক্ত কাজের জন্য নুন্যতম সেই শিক্ষা বা সম্পর্কিত জ্ঞান জানার প্রয়োজন আছে। এ ধরণের নুন্যতম যোগ্যতা আরোপণ যদি মানবাধিকারের লঙ্ঘন না হয় তবে জনপ্রতিনিধি বাছাই এর ক্ষেত্রে সেটা আরোপন করলে কেন হবে?

তবে হ্যাঁ, জনপ্রতিনিধি হলে নুন্যতম শিক্ষার যোগ্যতার প্রয়োজন আছে কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আমার মতে প্রয়োজন আছে। আমার মতে যারা আইন এবং সংবিধান নিয়ে কাজ করবে, বিশেষ করে উচ্চ কক্ষে, সেখানে নুন্যতম শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। নিম্ন কক্ষে সেটার প্রয়োজন নেই। শুধু জনসমর্থন থাকলেই একজনের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনার মত বিষয়গুলো ভালভাবে সমাধা করতে পারবেন বলে আমার মনে হয় না। একারণেই উচ্চ কক্ষের ক্ষেত্রে নুন্যতম শিক্ষার প্রয়োজন বলে মনে করি।

রাগিব এর ছবি

আমার মনে হয় নুন্যতম বয়স এবং বাংলাদেশি নাগরিকত্বের নিয়ম আছে জনপ্রতিনিধি হবার জন্য।

এই দুইটাতে সমস্যা নাই, কারণ এগুলোর জন্য ধনী গরীবে কোনো পার্থক্য হয় না।

এগুলোর ক্ষেত্রে থাকে কারণ ধরা হয় যে উক্ত কাজের জন্য নুন্যতম সেই শিক্ষা বা সম্পর্কিত জ্ঞান জানার প্রয়োজন আছে।

রাজনীতি করার জন্য কী শিক্ষা বা কী ডিগ্রির প্রয়োজন আছে?

আর উচ্চ শিক্ষিত = ভালো নেতা, এটার পেছনে যুক্তি কী?

অন্যের দিকে না বলে নিজের উদাহরণ দেই, আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়ে কি আমি দাবী করতে পারি যে, ৩০ বছর ধরে রাজনীতি করে আসা কোনো ঝানু রাজনীতিবিদের চাইতে আমি সাংসদ হিসাবে ভালো হবো?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদের আমলে কী হতো, তা জানেন নিশ্চয়? কালোদের ভোটের অধিকার খর্ব করার জন্য নিয়ম করা হয়েছিলো, ভোট দেয়ার যোগ্য হতে হলে সাক্ষর হতে হবে এবং কর দেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। সেই কালাকানুন থেকে আবার সাদারা "দাদার সুবাদে" মুক্ত ছিলো (মানে ১৮৬৬ এর আগে কেউ ভোটাধিকার পেলে তার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে না, তাই সব সাদারা এই ক্ষেত্রে ভোটাধিকার পেতো, কিন্তু গরীব ও অশিক্ষিত কালোরা পেতো না)।

সংসদ সদস্য হতে হলে ডিগ্রি থাকতে হবে, এই যুক্তিটাও একই লাইনের, তাই না?

এ ধরণের নুন্যতম যোগ্যতা আরোপণ যদি মানবাধিকারের লঙ্ঘন না হয় তবে জনপ্রতিনিধি বাছাই এর ক্ষেত্রে সেটা আরোপন করলে কেন হবে?

কারণ আইন প্রণয়ন ও রাজনীতি করা আর সরকারী চাকুরি করা এক কাজ নয়। একজন সরকারের অধীনস্ত চাকুরে মাত্র, আর আরেকজন দেশের জনগণের প্রতিনিধি। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের প্রতিনিধিত্ব কে করতে পারবে আর কে করতে পারবে না, সেটা ডিগ্রি দিয়ে বেঁধে দেয়া চলে না।

পিএইচডি করা একজন লোকেও জঘন্য নেতা হতে পারে, আর নিরক্ষর আরেকজন লোকে হতে পারে আম জনতার প্রতিনিধি জননেতা। আপনার প্রস্তাব অনুসারে এই ডিগ্রিধারীরা থাকবে উপরে, আর অশিক্ষিত গোছের লোকজন থাকবে হায়ারার্কিতে নিচের দিকে। সেটা কি আর গণতন্ত্র থাকবে? এলিট/সুশীল তন্ত্রই হবে তার নাম।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রেনেসাঁ [অতিথি] এর ছবি

প্রচলিত কোন ব্যবস্থাই বাংলাদেশের কোন সুফল বয়ে আনতে পারবে না। আমাদের দেশের জন্য দরকার সরকার ও বিরোধী দলের সমান ক্ষমতার ভিত্তিতে এক বিশেষ সরকার ব্যবস্থা চালু করা।

স্বাধীন এর ছবি

আমাদের দেশের জন্য দরকার সরকার ও বিরোধী দলের সমান ক্ষমতার ভিত্তিতে এক বিশেষ সরকার ব্যবস্থা চালু করা।

এটা একটি ভুল ধারণা। এর ফলে এক ধরণের সিন্ডিকেট হবে। রাজনীতিবিদরা তখন ক্ষমতার আরো অপব্যবহার করবে। এখন পর্যন্ত যেটা হয় পাঁচ বছর এরা খায় তো পরের পাঁচ বছর ওরা খায়। বিশেষ সরকার হলে পাঁচ বছরেই তারা দেশকে শেষ করে দিবে। যেকোন ধরণের মনোপলি সমাজের জন্য কিংবা অর্থনীতির জন্য খারাপ। দেখেন না দেশে চিনির ব্যবাসায়ি, তেল ব্যবসায়ী, পরিবহন ব্যবসায়ী সবাই সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমত লুটপাট করছে। আর রাজনীতিবিদদের মধ্যে উপরে উপরে যতই কথাচালাচালি হোক, ব্যবসার ক্ষেত্রে ভিতরে ভিতরে সিন্ডিকেটের মতই কাজ করে। দু'দলই মুদ্রার এ পীঠ আর ও পীঠ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।