‘জন্মলজ্জা’ কবিতা পাঠ : আমার ভেতর জেগে ওঠা সিম্ফনি

সৈয়দ আফসার এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ আফসার (তারিখ: বুধ, ২১/০৪/২০১০ - ৫:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এ বিধি লাগে না ভালো : জন্মলজ্জা ফেলে দিতে
কাঁদিবার কথা
এ বড় রহস্যকথা সান্দ্রকথা আমি তার বুঝি নাতো সার
আমার সঙ্গীরা বলো
কাহার গলায় ধরে বলি আজ জননী জননী
এত যে ঘুরেছি ভূমি তবু আমি জীবন চিনি না

অথচ সে যুবক নই
দিবসে দাঁড়ালে যে সূর্যকণা খেয়ে নিত রাতের দাঁতেরা
আমার নিয়তি ওহো
বারবার ভুলে যাই জন্মদাত্রী আমারই মায়ের মুখ, স্তন
অথচ গ্রহণপ্রশ্নে
যমজ বোনেরে ক্রমে ঠেলিয়াছি দূরে

আজ বিস্মরণের দিন আজ এংকা পথে ঘুরিতেছি
আনত দুহাত নিয়ে
জন্মলজ্জা ফেলে দিতে শূন্যে শূন্যে খুঁজিতেছি গলা

জন্মলজ্জা : মোস্তাক আহমাদ দীন/ কথা ও হাড়ের বেদনা কাব্যগ্রন্থ থেকে—

‘কবিতা কি চিন্তাকে আশ্রয় দেয়? নাকি চিন্তাকে নিয়ে বেড়ে ওঠে?’ চিন্তা বেড়ে ওঠা বা চিন্তাকে আশ্রয় দেয়া; আমরা যে ভাবেই ভাবি না কেনো; হয়ত দুটিই ঠিক। আবার কথা দুটির উলটো পিঠও হতে পারে। দুইয়ের ধন্ধকে আমরা যেভাবেই ভাবি না কোনো, অনুভব, উপলব্দি, ভাবনা, চিন্তার ভেতরই কবিতার প্রাণ খুঁজে পাই। আমি এ-ও জানি সকল কবিতা আমার পাঠক বোধের টনক নাড়াবে না। কিংবা সকল কবিতা বুঝার মতো পাঠবোধ আমার এখনো তৈরি হয়নি, বা জাগেনি। হতে পারে কবিতার বাহ্যিক রহস্য, নিত্যদিনের বিষয়াদি বা প্রতীকি প্রচলিত প্রশ্নের ভেতর অস্পর্শ-মেটাফর মিশ্রিত অংশই হতে পারে অতলস্পর্শী… পাঠ শেষে চোখের ভেতর আরেক চোখের খেলায় স্বপ্নজগত ও শুক্তির ভেতর হাঁটতে বাধ্য করে। এবং পঙ্ক্তির পলে-পলে জাগে কবিতার নান্দনিকতা…

কিন্তু বাস্তবতা আর অভিজ্ঞতা সাথে পাঠোদ্ধার বা রসবোধের যে ফারাক সৃষ্টি; দেহভস্ম-যাপন ব্যবস্থার অবতল খোলে তীব্র চাপে অর্ন্তঘাত তৈরি হলো কি-না; জানি না। হয়ত আমি এই অবাকমুহূর্তকে ধারণ করতে পারিনি। তবুও যতটুকু ধারণ করার ক্ষমতা কবিতা থেকে পাই; সেখান থেকে কবি ও কবিতাকে চিহ্নায়ন করি; ততটুকুর ভেতর পুলকিত হই…। আমি যখন একটি কবিতা পাঠ করি; কবিতার ভাষাকে চিহ্নায়নের চেষ্টা করি; প্রথমে আমি সে কবিতাটির ভেতরের স্বপ্রণোদিত ভাষার স্বাতন্ত্র্যটি খুঁজি। ভাবি— কেন ওই কবিতাটি বারবার পড়তে মন চায়; কেনো যে কবিতার ভেতরের কথাগুলো মনে দোলা দেবে। আমি কবিতা পাঠের ভেতর কবির ব্যবহৃত ভাষার বৈশিষ্ট খুঁজি। খুঁজি ভাষাবুনন, শব্দবুনন, বাক্যবুননের পদ্ধতিও। কারণ কবিতার ভাষানুভব জাদু-স্পর্শের মতো, অনুভূতি, উপলব্দি যেন রসায়নের মতো ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় মিশে খেলা করে। আর আমি এ-ও জানি কবিতার ভেতর যে নিজের জীবনটাকেই পাঠ করা। যখন কবিতাটি ভালো লাগে তখন কবিতার ভাষার সঙ্গে কবির যাপিতভাষা কতটুকু ফুটেছে তা-ও দেখার চেষ্টা করি। যেহেতু আমি কবিতার পাঠক। কবিতা ভালো লাগে, পড়ি। খারাপ লাগলেও কবিতা পড়ি।

কবিতা আমাকে একটি ঘোরের ভেতর আচ্ছন্ন করে রাখে। যেন নিজের ভেতর জাগাইয়া তুলে ঘোরের আরেক খেলা। চিন্তনধর্মী এক ধরণের অজানা অনুভব-অনুভূতি জাগিয়ে তুলে; কারণ কবিতার বিষয়-বৈভব আমাদের আবেশি ও জাগতিক চিন্তাসীমাকে জাগ্রত করে। কাব্যজগৎ আর যাপিতজগৎ যখন একসাথে হাঁটে বা সম্পর্কস্থাপন করে তখন নিজের ভেতরের চিন্তা, ভাবনা, অজানা, অদেখা মনোটানের অন্বেষায় অতিগোপন টানগুলোও এসেন্স ছড়ায়…। কবিতার ভাষা কবি তাঁর নিজস্ব উপলব্ধি থেকে প্রকাশ করেন। পাঠককেও সে বিষয় ও ভাষার প্রতি ভাবিত করে, আকৃষ্ট করে। কবিতার বিষয় ও ভাষা দিয়ে পাঠককে ধরে রাখার ভেতরই কবি শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। কবিতা লেখার আগে একটি থিম দ্বারা তাঁর অনুভূতি, উপলব্ধি জাগিয়ে রাখেন। এই জাগিয়ে তোলা ভাষাটাও হতে পারে গল্পের, গদ্যের, কিংবা ছড়ারও; কিন্তু একজন কবি সে গল্পের ভাষা, গদ্যের ভাষার ছড়ার ভাষার রূপটিকে বদল করে কবিতার ভাষায় প্রকাশ করে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেন। একজন পাঠক হিসাবে আমার মনে হয় যে অনূভূতি, উপলব্ধি আর চিন্তার গভীরতাই কবিতার ভাষা। যেমন একটি গল্প লিখতে হলে অনেক বিষয়আশয় সম্পর্কে বিস্তর জানাশোনা বা আলোচনা করতে হয়; গদ্য লিখতে হলে অনেক তত্ত্বের জোগান দিতে হয়; কিন্তু কবিতার বেলা এর বালাই নেই, একটি কবিতা লেখার পর সে বিষয়টি পাঠকের সামনে ব্যাখ্যা করার দায় থাকে না। কারণ কবি তার ভাষা দ্বারাই কবিতা লিখেন; তা হতে পারে দেখার ভাষা, অদেখার ভাষা, চিন্তার ভাষা, কল্পনার ভাষা, বুদ্ধির ভাষা, রূপক ভাষা, সহজ সরল সাবলীল ভাষাও হতে পারে; সব মিলেই একটি ভালো কবিতা জন্মে; যা পাঠককে বারবার টানে…।

এ বিধি লাগে না ভালো : জন্মলজ্জা ফেলে দিতে
কাঁদিবার কথা
এ বড় রহস্যকথা সান্দ্রকথা আমি তার বুঝি নাতো সার
আমার সঙ্গীরা বলো
কাহার গলায় ঘরে বলি আজ জননী জননী
এত যে ঘুরেছি ভূমি তবু আমি জীবন চিনি না

কবিতাটি যতবার পাঠ হয়; ততবারই আমি ছোটবেলার স্মৃতিতে সাঁতার কাটি। আমি তো কবিতার ভেতর আমার নিজের আত্নপরিচয় খুঁজে পাই। শুক্রবার ব্যতিত প্রতিভোরে ঘুমের সাথে যুদ্ধ করতে করতে ভোরে মক্তবে যেতে হতো; তখন এই নিয়মের দড়ি ছিঁড়ে ফেলার সাধ্য ছিল না আমার; শুক্রবার ফুরালেই আবার আঙুলের রেখায় গুনা শুরু করতাম… বৃহস্পতিবার এলেই শুক্রবারের আকাঙক্ষায় মন ফুরফুরে লাগত; অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেলাধুলা ফেলে স্কুলেও যেতে হত... এখন দীর্ঘশ্বাসের ভেতর শৈশব খুঁজি; কিন্তু খোঁজার ভেতর আনন্দ পাই না। কবিতাটি পাঠের পর চিরন্তন সব প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়; বেঁধে রাখে আপন মহিমায়… আলস্যে চোখের সামনে যে দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ঝলঝল করে ভাসছিল লিখতে এসে কলমের চলনভঙিটাও থেমে যাচ্ছে। একটি কবিতা পাঠের পর সে আনন্দ পাঠকের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়া খুবই কষ্টকর, বেশ ঝুঁকিও থাকে। কেননা কবিতার পাঠোদ্ধার পাঠক ভেদে ভিন্ন থেকে ভিন্নতর হয়। তবুও কবিতাটি পাঠ শেষে কিছু শব্দের অনুরণন আমার ভেতর দোলা দিচ্ছে; সে শব্দ ভেতর আমার ডুবে থাকা আকাঙক্ষাগুলো কখনো আমার সাথে কম্প্রোমাইজ করেনি, কম্প্রোমাইজ না-করা আকাঙ্ক্ষা গুলোই আপনাদের সাথে ভাগ করার চেষ্টা করবো।

কবিতাটি পাঠ শেষে নিজের একটি কবিতার লাইন মনে পড়ে গেল—কাছের মানুষ পাশে থাকতে নেই! যতদূরে থাকি সম্পর্কের গাঢ়ত্ব আরো বেশি ছুঁই…। লাইনটির পড়ে মনে মনে ভাবলাম— এই যে যাবো; যাবার আগে আঁকা না-হওয়াই ভালো মানুষের সহজসরল বেশ-বাশ। আমার যাওয়ার রেখায় যদি জলের কাটায় ফুটে থাকে; দেহের বাইনে-বাইনে ছায়াও গতিময় হয়; আমি কি লজ্জা খুলে নেব? জানি না। তাও জানি না, নামবো কি জলসঙ্গমে।তবে যাবো, যাওয়া যে অতধারিত । এই যে জগতে মানুষের যাওয়া-আসা-ভালোবাসা তা কি নয় মনের দ্বান্দ্বিকতা?...

কবি মোস্তাক আহমাদ দীন তাঁর জন্মলজ্জা কবিতাটির শুরুতেই যে শব্দটি ব্যবহার করেছেন, এ বিধি দীর্ঘক্ষণ এশব্দের ভেতর হেঁটেছি। খুঁজেছি বোহেমিয়ান জীবনজিজ্ঞাসা। জানি মানুষ একা থাকতে পারে না বলেই সঙ্গ চায়। মানুষ কখনোই তাঁর চারপাশকে ডিঙিয়ে যেতে পারে না। পাশ কাটানো যায় না পারিবারিক-সামাজিক-নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়; চলতে হয়— বাস্তবতা, নির্জনতা, বিচ্ছিন্নতা, মান-অভিমানও। যেহেতু কবিরাও এ সমাজ বা গোত্রের অংশ তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকেও এই সমাজ ব্যবস্থার অসঙ্গতি, নিয়মনীতি, মেনে চলতে হয়; কারণ কবিরা তো ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর সত্তার কাছে নিভৃতচারী। অন্তর্নিহিত বাস্তববোধই সময়কে জাগায়; পালানোর পথ বাতলে দেয়; আর এই সময়ই প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়ায়; দাঁড়ানোর প্ররোচনা জন্মায়। কবির তো কাছে অনুভব, অনুভূতি, উপলব্ধি, চিন্তা, ভাবনা প্রকাশ করতে চান অমীমাংসিত জিজ্ঞাসার ভেতর। ভাবনার স্বকীয়তাকে বাধাহীন করেন, সমুন্নত রাখেন; আবেগের বলয় ভেঙে তাঁর লেখার দ্বারা সমাজের নানান অমঙ্গতি তুলে ধরেন, প্রচলিত ধারাকে ভাঙতে চান; ভাঙতে চান জাতপাতের বৈষম্যও। কিন্তু সমাজের বৈষম্য দূর করা কি তাঁর একার পক্ষে সম্ভব? এসব ভাবনা তাড়িত করে, কষ্ট দেয়, হতাশ করে, মনের দাহ ও দহনে তাঁকে দগ্ধ করে। শুধু কি কবির হয়? আমাদেরও হয় কিন্তু আমাদের প্রকাশের মাত্রা নীরবে।

এ পঙতির আরো একটি শব্দ আছে, যা থেকে বেরুবার পথ খুঁজে পাইনি আমি। জন্মলজ্জা জন্ম আমি যদি একটি নিপুন শিল্প মনে করি। লজ্জা তাহলে কি জীবনের নমুনা? এশব্দতে আমার ভাবনা বলার চেয়ে ‘জন্মলজ্জা’ শব্দটি নিয়ে জ্যাকি ইসলাম কিছু কথা তুলে দিতে ইচ্ছে করছে— ‘জন্মলজ্জা কী? শুদ্ধ কোনো উত্তর কি দিতে পারবো? যদি বা ভেঙে ভেঙে… পরমাণু দিয়ে যেমন গঠিত হয় অণু। অণূকে ভাঙতে ভাঙতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণায় রূপান্তরিত করলে যেমন একাধিক পরমাণু পাওয়া যায়, তেমনি কবিতার সরল কিংবা যৌগিক বাক্যগুলো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রে বিভক্ত করলে হয়ত পাওয়াও যেতে পারে জন্মলজ্জা যদি-বা ভেঙে… এগুতে যদি থাকি ভেঙে ভেঙে তবে কি সমর্থ হবো ‘জন্মলজ্জা’ নামক যৌথ-শব্দটির যথার্থ সংজ্ঞা প্রদান করতে?’ এই প্রশ্নবোধক চিহ্নের মতো আমি এই যৌথ শব্দটির বুঁদ হয়ে আছি; কারণ, এ বড় রহস্যকথা সান্দ্রকথা আমি তার বুঝি নাতো সার। জনম্যাকি বলেন— বেঁচে থাকা একটা আর্ট, যার জন্য সাধনা প্র্রয়োজন। প্রথম হচ্ছে বেঁচে থাকা, বেঁচে থাকার জন্য প্রথমেই খাদ্য ও বাসস্থানের প্রয়োজন, তারপর সাধনা’র চিন্তা আসে; কারণ জীবন… জীবনকে সেচেছেনে বা চেনার একমাত্র উপলব্দিই হচ্ছে সাধনা। সব মানুষের ভেতর একধরণের কর্মস্পৃহা থাকে; কেউ ভাবে সে একজন নীতিবান হবে, সাধারণ ভাবে জীবন চালাতে, অনেকে ভাবে— ভালো বক্তা, রাজনৈতিক নেতা, সমাজসেবক,গায়ক, শিল্পী হতে, কিন্তু লেখক চান তার পড়া ও লেখার ভেতর যাপিতজীবন খুঁজতে। যেভাবে কবিও চান তার কবিতার ভেতর যাপিত জীবনকে জানতে।

অথচ সে যুবক নই
দিবসে দাঁড়ালে যে সূর্যকণা খেয়ে নিত রাতের দাঁতেরা
আমার নিয়তি ওহো
বারবার ভুলে যাই জন্মদাত্রী আমারই মায়ের মুখ, স্তন
অথচ গ্রহণপ্রশ্নে
যমজ বোনেরে ক্রমে ঠেলিয়াছি দূরে

মনের ভেতর অনেক ভাবনা, চিন্তার ঘ্রাণ যুবক বয়সেই আনন্দ দেয়। যুবক… বয়স কিন্তু কোনো সামাজিকতা মানে না। সে সময় কোনো বাঁধাকে বাঁধা মনে হয় না। ইচ্ছে হলে ঘুরে বেড়ানো যায়; দাবা খেলে, তাস খেলে, দু’তিন রাত না-ঘুমিয়েও কাটানো যায়। সিনেমা দেখে, গান শুনে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে কাটানো যায়। কিন্তু কবিরা কি সে যুবককাল পাড় করতে পারেন? এতো আনন্দের ভেতর। এতো মুগ্ধতার ভেতর। এত কোলাহলের ভেতর। কবিরা পারেন না। এই নিয়তি মেনেই তো কবিরা কবিতা লিখেন। আমার অভিজ্ঞতা যা বলে, কবিরা লিখেন নিজের আনন্দের জন্য, লিখেন নিজের আত্নার প্রশান্তির জন্য। লিখেন নিজেকে জানার জন্য।রিজের ভেতর নিজে জেগে থাকার জন্য। অথচ গ্রহণপ্রশ্নে… কবিরাও এসমাজের একজন তাই তাঁদেরও লোভ-লালসা থাকতে পারে; থাকতে পারে গ্রহণ বর্জনের স্বাধীনতাও। কারণ জন্মের পর একটি অবোধ শিশুটিও কতটুকু তার গ্রহণ অধিকার তাও বুঝে; আর বুঝে ভাগাভাগির কথা। দুধের শিশু যতক্ষণ মায়ের স্তনদুধ পান করে; ততক্ষণ সে একটি পান করে; অন্যটি সে হাত দিয়ে ঢেকে রাখে; সে তার গ্রহণের ভাগ কাউকে দেবে না। হয়ত হাত দিয়ে ঢেকে সবাইকে ঠেলে রাখতে চায়।

আজ বিস্মরণের দিন আজ এংকা পথে ঘুরিতেছি
আনত দুহাত নিয়ে
জন্মলজ্জা ফেলে দিতে শূন্যে শূন্যে খুঁজিতেছি গলা

মোস্তাক আহমাদ দীন তাঁর অনেক কবিতায় আঞ্চলিক শব্দের সুষমায় কবিতার শরীরে এমন ভাবে স্থাপন করেন যে, শব্দটি ব্যবহারের পর দেখা যায় যে এই একশব্দ ব্যবহারের ফলে পুরো পঙক্তি ভিন্ন ধরণের আবহ তৈরি করে; তাঁর কবিতায় শব্দবুনন ও নির্বাচন পাঠককে মুগ্ধ করে। কাছে টানে; কবিকে শক্তিশালী করে আজ ‘বিস্মরণের দিন আজ এংকা পথে ঘুরিতেছি’ কবিতাটি এই পঙক্তিতে কবি স্মৃতিলোপ পাবার দিনে একা পথ ঘুরছেন; এই একা শব্দটিকে নিজ শক্তিমত্তায় একমাত্রা যোগ করে কি চমৎকার আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করেছেন এংকা এই একমাত্রা যোগ করে কবিতার প্রাঞ্জলতা শুধু বাড়ানি; পাঠকের আকাঙক্ষাও রাড়িয়ে দিচ্ছেন।শব্দবুনন, শব্দনির্বচন, নিজস্ব মরমী সুরের ভেতর আঞ্চলিক আনকোরা শব্দের যথাযত ব্যবহার মাধ্যমে তাঁর প্রতিটি কবিতাই আলাদা ভুবন তৈরি করে। ইতিমধ্যে কাব্যপ্রেমীরা স্বীকার করতে শুরু করেছেন কবিতার কথা,সুর,স্বরসহ ব্যঞ্জনায়-সুষমায় নব্বইয়ের কবি মোস্তাক আহমাদ দীন তাঁর আলাদা নিজস্বতা খুঁজে পেয়েছেন।


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হুমম, কবি কিংবা কবিতা নয়; মনে হচ্ছে কবিতার পাঠক এবার ক্লান্ত।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।