ঈশ্বরের সপ্নভঙ্গ: ধর্মাবতারের দল ও এক টোকাই

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: শুক্র, ৩০/১১/২০০৭ - ২:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঈশ্বরের প্রধান ফটকের সামনে আজ উপচে পড়ছে মানুষ। সমস্ত ধর্মের রথী মহারথীরা এসে ভীড় জমিয়েছেন এখানে। সাথে তাদের প্রধান অনুসারী, পাতি অনুসারী ও পাতি অনুসারীদের পাতি অনুসারী ও তাদের পাতি পাতি অনুসারী চাটুকার। ঈশ্বর আজ সবাইকে দর্শন দেবেন বলে স্থির করেছেন। এটা একটা নতুন ডাইমেনশন। এর আগে তিনি বিভিন্ন ধর্মের প্রবক্তা ও তাদের পেয়ারের লোকদের দর্শন দিয়েছেন বলে দাবী করা হলেও, সবার সাথে একসাথে এই দর্শনের ঘটনা আজই প্রথম।

ঈশ্বরের প্রধানমন্ত্রী জিবরায়েল সাহেবও আজ মহাব্যাস্ত। যদিও পাহারাদার, গোয়েন্দা, আর সেনাবাহিনীর তৎপরতায় কোন ফাঁক রাখা হচ্ছেনা, তারপরও মহাপ্রভুর নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর উদ্দিগ্নতার শেষ নেই। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা রক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি গোয়েন্দাবাহিনীর সহায়তার দিকেও নজর রেখেছেন। সেই সাথে যান্ত্রিক যতো রকমের যুযোগসুবিধা রয়েছে, তার কোনটাই বাদ দেননি।

সকালের নাস্তা শেষে আজ সামান্যই বিশ্রাম নিয়েছেন ঈশ্বর। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ক্লান্ত হয়ে তিনি একসময় তার মহাসন ছেড়ে সবাইকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্যে প্রধান ফটকের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলেন। কিন্তু হঠাৎ পথ আগলে দাঁড়ালেন জিবরায়েল।

- না মহাপ্রভু, এক্ষুনি নয়, আরেকটু অপেক্ষা করুন দয়া করে।
- কেন, অপেক্ষা করতে হবে কেন? কি সমস্যা তাড়াতাড়ি বলো!
- আপনার নিরাপত্তার জন্যে বাইরে গোয়েন্দা পাঠিয়েছি প্রভু, ওরা ফিরে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
- গোয়েন্দা পাঠিয়েছ? তুমি জাননা, আমি গেয়েন্দা পছন্দ করিনা ? তোমার মনে নেই, বুশ সিআইএ পাঠিয়েছিল, তাদের সাথে দেখাও করিনি?
- তারপরও আপনার নিরাপত্তা নিয়ে আমি খুব ভীত প্রভু।
- আমি বিশ্বব্রন্মান্ডের মহাপ্রভু, আমার হাতেই ও আমার ঈশারাতেই সৃষ্টি সারা পকৃতি, পশুপাখী আর মানুষ। আমার নিরাপত্তা নিয়ে তোমার এতো ভয় কেন জিবরায়েল?
- পৃথিবীটা আপনি যেমন তৈরী করেছিলেন, সেরকম আর নেই প্রভু, অনেক পাল্টে গেছে।
- আমার তা জানা আছে।
- পুরো জানা নেই প্রভু।
- তোমরা কি সব জানাও নি আমাকে?
- না প্রভু। সাহস পাইনি।
- সাহস পাওনি? আমি কি তোমাদের কোনদিন কোন ক্ষতি করেছি।
- না প্রভু, আপনি আমাদের হর্তাকর্তা, আমাদের সব, আপনা আমাদের ক্ষতি করবেন কেন? আপনি খুব কষ্ট পাবেন, সেজন্যেই সব জানানো হয়নি আপনাকে প্রভু।
- এতো ভাল ভাল মানুষকে পাঠালাম ওখানে, আদম, ঈশা, ইব্রাহিম, মুহম্মদ সহ সবাইকে, যাতে পৃথিবীবাসীর মঙ্গল হয়। ওরা ওদের কাজ ঠিকমতো করেনি?
- করেছে প্রভু।
- তাহলে আমার কষ্ট পাবার কি আছে?
- আছে প্রভু!
- হেয়ালী করোনা জিবরায়েল। তোমার হেয়ালীর জন্যে একবার তোমার বিবিকে হারিয়েছ, এবার আমাকেও হারাবে। যা বলার স্পষ্ট বলো।
- মানুষগুলো সেরকম ভাল নয় প্রভু, আপনি যেমন ভেবেছিলেন। ওদের চরিত্রও ওদের শরীরের মতোই ভঙ্গুর।
- কেন, আমি তো ওদেরকে তেরী করার আগে সবচেয়ে সরস মাটি বেছে নেবার আদেশ দিইনি?
- দিয়েছিলেন প্রভু।
- তাহলে?
- কনট্রাকটর বদরায়েল ভেজাল দিয়েছিল। ইবলিশ একটু সস্তা ধরণের মাটির অফার দিয়েছিল। তাই লোভ সামলাতে পারে নি।
- তোমরা কেউ টের পাওনি, কি করছিলে? ঘাস খাচ্ছিলে?
- হজুর!
- ভনিতা করো না, যা বলার তাড়াতাড়ি বলো।
- বলবো?
- জলদী বলো।
- আমি টের পেয়েছিলাম, কিন্তু বলিনি হুজুর।
- কেন বলনি।
- বিবি ছেড়ে চলে যাওয়ায় মন খারাপ ছিল খুব। এখানকার কাজেও মন বসছিলনা...।
- তার সাথে বদরায়েলের ভেজালের কি সম্পর্ক?
- তার মেজো মেয়েটা খুব সুন্দরী হুজুর।
- তো!
- গত সাতশো তেত্রিশ বছর ধরে ও আমার বিবিজান হুজুর।

ঈশ্বর কড়া দৃষ্টিতে তাকালেন জিবরায়েলের দিকে। মনে হলো তেত্রিশকোটি নরকের আগুন জ্বলে উঠলো একসাথে। কিন্তু পরক্ষনেই সামলে নিলেন নিজেকে। এই মুহুর্তে জিবরায়েলকে ছাড়া চলবে না তাঁর। এই অজানা লোকজনের মাঝে কোথায় কোন বিপদ ওৎ পেতে আছে কে জানে। জিবরায়েল ছাড়া এসব কে দেখবে। তাই রাগে অগ্নিশর্মা হয়েও কোনভাবে সামলে নিলেন নিজেকে।

- বদরায়েল কোথায়? ডাক ওকে এক্ষুনি।
- ও নেই হজুর।
- কোথায় লুকিয়েছ হারামজাদাকে? জান, আমি ইচ্ছে করলে সবই জানতে পারি?
- জানি হজুর। কিন্তু লুকোই নি ওনাকে। ডিমোশনে পাঠিয়েছি এশিয়ার ছোট্ট জনবহুল এক দেশে। আপনিও তো আমাকে ক্ষমতা দিয়েছেন প্রমোশন-ডিমোশন দেওয়ার।
- এশিয়া আবার কোথায়? আমিতো একটাই পৃথিবী তৈরী করেছিলাম।
- এক মহাদেশ প্রভু। মানুষগুলো একসাথে থাকতে পারে নি, তাই মহাদেশও ভাগ করে নিয়েছে।
- ও সেখানে কি করছে?
- ধর্ম প্রচার করছে হুজুর।
- এই দুর্নীতিবাজ, শয়তানের সাথে ব্যাবসায়ী লোকটাকে ওখানে পাঠিয়েছ?
- এটা স্ট্রাটেজীর রাজনীতি হুজুর, শঠে শঠ্যাং, আপনি বুঝবেন না।
- এটা আবার কি?

জিবরায়েলে উত্তর দিতে দিতেই সিআইএসএস (কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স অফ সেভেন স্কাই) এর গোয়েন্দারা সব ফিরে এলো। জিবরায়েল গোপনে তাদের সাথে কথা বলতে চাইছিলেন। কিন্তু ঈশ্বর কড়া ধমক দিয়ে সবাইকে তাঁর কাছে আসার আদেশ দিলেন। সিআইএস এর ঝানু চার গোয়েন্দা ঈশ্বরের সামনে দাড়িয়ে কাঁপতে থাকলো ভয়ে। কিন্তু ঈশ্বরের ভয়ে নাকি বাইরের দর্শণার্থীদের ভয়ে, তা বোঝা গেল না।

- ভয়ে কাঁপছ কেন? যা বলার তাড়াতাড়ি বলো!
- ভয়ে বলবো, না নির্ভয়ে বলবো হুজুর?
- নির্ভয়েই বলো।
- বাইরে খুব গোলমাল হুজুর। মানুষগুলো খুব গোলমেলে হুজুর।

কাঁপতে কাপতে বললো এক গোয়েন্দা। আরেকজনের গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। পেছনের পকেটে চ্যাপ্টা বোতলে শরাবন বুইস্কী থাকলেও ঈশ্বরের সামনে চুমুক দেওয়ার সাহস পেল না।

- লাঠি সোটা আনেনি তো কেউ ? প্রশ্ন করলেন জিবরায়েল।
- এনেছিল জনাব, তবে লাঠি নয়, আরো ভয়ানক! অস্ত্রসস্ত্র আর গোলাবারুদ । কারো কারো হাতে তলোযার।
উত্তর দিল দ্বিতীয় গোয়েন্দা জিবে শুকনো ঠোঁট চাটতে চাটতে। তৃতীয় গোয়েন্দার দিকে সাহস পাবার জন্যে একবার তাকালো। কিন্তু তাতে কোন কাজ হলো বলে মনো হলোনা। তারপর মুখ খললো বললো তৃতীয় গোয়েন্দা।

- যীশু মন খারাপ করে বসে ছিলেন এক কোনায়। তার দলবল কামান, গোলা, এটম বোমা নিয়ে এসেছে। কেউ কেউ বলছে বোমারু বিমানও নাকি আসবে। জর্জ বুশ বলে একজন এসেছে যীশুর দলে। সে ব্যাটা তে নিজেকেই যীশু মনে করে। সামনে নাকি ইলেকশন, তার দেশে নাকি দাপট না থাকলে ভোটে জেতা যায়না। এরা আবার নিজেদের মাঝেও ঝগড়াঝাটি, মারামারি করে।

- অন্যদিকে মুহম্মদের মুখও ভীষন ব্যাজার। একদিকে শিয়া,সুন্নী আর বিভিন্ন দলের মারামারি, আরেকদিকে এগারোই সেপ্টেম্বরের খ্রীষ্টানদের সাথেও গোলমাল। কেউ বোমা নিয়ে এসেছে। কারো কারো শরীরে বাধা মানব বোমা। কাছে যেতেই সাহস হয়না। একদল আরেক দলকে মুসলিম হিসেবে মানতে চাইছে না। সে এক ভয়ংকর এলাহী কারবার হুজুর! বললো চতুর্থ গোয়েন্দা।

- ইহুদীরাও অনেক অস্ত্র নিয়ে এসেছে। একদিকে অস্ত্র নিয়ে উস্কানী দিচ্ছে অন্যদেরকে, আবার তলে তলে অন্যদের কাছে বিক্রি করারও পায়তারা কষছে। বললো প্রথম গোয়েন্দা।
- পৌত্তলিক ধর্মের কয়েকজনকে দাওয়াৎ দিয়েছিলাম। তাদের খবর কি? জানতে চাইলেন ঈশ্বর।
- তারাও এসেছে জনাব দলে দলে। ঢোল, কাড়া নাকাড়া বাজাতে বাজাতে। মাথায় লাল কাপড় বাধা। কোমরে ইলেক্ট্রনিক ছুরি। এদের যা চেহারা, দেখলেই ভয় হয় হুজুর। বললো দ্বিতীয় গোয়েন্দা।

ঈশ্বর বিরক্ত মুখে তার মহাসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। তার চেহারায় রাজ্যের হতাশা জিবরাইলকে বললেন,
- চলো, দেখি কি ঘটনা
- না হুজুর, এই বিপদের মঝে আপনাকে ছাড়তে পারি না। হা হা করে উঠলেন জিবরাইল।
ইশ্বর এবার বেশ কড়া চোখেই জিবরাইলএর দিকে তাকালেন। তাতে বেশ ভয় পেয়ে গেলেন জিবরাইল।
- আমার ক্ষমতা নিয়ে তোমার ভেতরে কোন সন্দেহ দেখা দিয়েছে?
- না হুজুর।
- তোমার কি মনে হয়, পৃথিবী এই মানুষগুলো যতো অস্ত্র বানাক না কেন, তারপরও আমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে।
- কখনোই না হুজুর।
- তাহলে ভয় পাচ্ছ কেন?
- সকালের পত্রিকায় রাশিফল পড়েছিলাম। বলেছে সাবধানে থাকতে।
- আমি সাথে আছি, তারপরও ভয় পাচ্ছ? এই ঝামেলাটা গেলেই তোমাকে বরখাস্ত করবো জিবরাইল।
- আমার চুক্তি আর তিনশো একাত্তুর বছর আছে হজুর। এর আগে বরখাস্ত করলে অনেক টাকা ক্ষতিপূরন দিতে হবে।
- সেটা নাহয় পরে দেখবো। এখন চল! বলে ধমকে উঠলেন ঈশ্বর।

ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে জিবরাইল চললেন ঈশ্বরের সাথে। সিআইএসএস এর গোয়েন্দারা সুযোগ পেয়ে কেমন করে যেন সটকে পড়লো। জিবরাইল এদিক সেদিক তাকিয়েও ওদের নিশানা খুজে পেলেন না। কিন্তু এ নিয়ে ঈশ্বরকে কিছু বলার সাহস হলোনা তার।

তার অফিসের দরজা দিয়ে বেরুনোর জন্য কম্পিউটার কার্ড ঢুকিয়ে দেখলেন খুলছে না দরজা। মহা ক্ষেপে গেলেন তিনি। আবার চেষ্টা করলেন। তারপরও খুললো না। কিন্তু তৃতীয়বার চেষ্টা করার সাহস পেলেন না। নাম্বারই বাতিল হয়ে যেতে পারে। তখন আবার কমিটি ডেকে নতুন নম্বর ঠিক করার বিড়ম্বনা।
- নম্বর তো ঠিকই দিলাম। চার, পাঁচ, তিন, তিন, সাত। তারপরও খুলছে না কেন দরজা?
- আরেকটা সিকিউরিটি নম্বর লাগবে। আপনার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আজ সকালেই ঠিক করা হয়েছে।
- আমাকে না বলেই তোমরা নতুন কোড ঠিক করলে?
- আপনি ঘুমুচ্ছিলেন হজুর, ডাকতে সাহস পাইনি।

ঈশ্বরের মনে পড়লো, গতকাল বলিউডের একটা ফিল্ম শেষ করতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। ওদের ফিল্মগুলো যে ওরা কেন এক লম্বা করে। তবে সারাদিনের কঠিন পরিশ্রমের পর নাচগান ভালই লাগে। আর এখানকার হুরপরীরা স্বর্গে ডিউটি দিয়েই এত ক্লান্ত থাকে। ওভারটাইম একেবারেই করতে চায়না। আর করলেও মুখ চ্যাপ্টা করে রাখে। শাররুখ খান ভাল নায়ক। এত রকমের চরিত্রে অভিনয় করতে জানে, মনে মনে ভাবলেন, জিবরাইলের চাকুরীটা এই শাররুখ খানকেই দেবেন।
- ওদেরকে বল দরজা খুলে দিতে। এক্ষুনি!
- ঠিক আছে হুজুর।

মোবাইল ফোনটা নিয়ে এদিক ওদিক কথা বললেন জিবরাইল। দু’একজনের সাথে বেশ তর্কাতর্কি ও জোর গলায় কথা বলতে হলো। প্রিয় মিনিট দশেক অধৈর্য অপেক্ষার পর খুললো দরজা। ঈশ্বর জিবরাইলকে সঙ্গী করে বেরিয়ে এলেন বাইরের খোলা বাতাসে। বুক ভরে নি:শ্বাস নিলেন। আগেই খবর পেয়েছিল সিকিউরিটির লোকজন। মূল দরজাটা খুলে দিল সাথে সাথেই।

ঈশ্বর বাইরের চত্তরে আসতেই আজান দিল মুসলিমরা। সাতশো মুসলিম মাইক মুখে একসাথে আজান দিয়ে উঠলো। কান ঝালপালা হয়ে যাবার জোগার। মুহম্মদ চার খলিফা নিয়েও ওদেরকে থামাতে পারছেন না। কথা ছিল আজানের জন্যে দু’জন মোয়াজ্জিন আসার। কিন্তু কার কথা কে শোনে!

একই অবস্থা খ্রীষ্টানদেরও। সাতশো গীর্জার ঘন্টা বেজে উঠলো একসাথে। সাথে আনার কথা ছিল একটা ঘন্টা। কিন্তু ভ্যাটিকান সহ পৃথিবীর বড় বড় চার্চের ঘন্টা খুলে আনা হয়েছে। সেই সাথে লাগানো হয়েছে বড় বড় এম্পলিফায়ার। যীশুও বসে আছের বেজার মুখে একটা ক্রুশে হেলান দিয়ে।

সব ধর্মের লোকদেনই একই অবস্থা। ঈশ্বর মহাত্যক্ত হয়ে তাদের কারো দিকেই তাকালেন না আর। হঠাৎ তার নজর পড়লো এসব গোলমাল থেকে বেশ দুরে দশ-বারো বছরের মলিন পোষাক পড়া একটি শিশু একা দাঁড়িয়ে। জিবরাইলকে ঈশারা করে সেদিকেই এগিয়ে গেলেন। শিশুটির চেহারা উজ্জল হয়ে উঠলো তাকে দেখে।
- তুমি কে?
- আমি পৃথিবীর শিশু, জনাব।
- তুমি কি ভাবে এসেছ?
- আমার বন্ধুরা টাকা জমিয়ে টিকিট কেটে দিয়েছে।
- তুমি কোন ধর্মের।
- জানি না হুজুর।
- তোমার বাবা মা কোথায় ?
- বাবা মা নেই।
- কি হয়েছে?
- ওরা মেরে ফেলেছে হুজুর। সমবেত জনতার দিকে আঙ্গুল দেখালো শিশুটি।
- তোমার তাহলে কি ভাবে চলে।

লজ্জায় লাল হয়ে গেল শিশুটি। কিন্তু ঈশ্বরের নরম চেহারা দেখে কিছুটা দুর হলো তার লজ্জা।
- আমি ওদের পকেট কাটি হুজুর।
খুব আনন্দের হাসি হাসলেন ঈশ্বর। তার চেহারায় প্রশান্তির ভাব তার হাসিকেও ছাড়িয়ে গেল। হাসির জোরে আজান, ঘন্টা, কাড়া-নাকাড়া, ঢোল সব স্তব্ধ হয়ে গেল। সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো ওদের দিকে। ঈশ্বর উবু হয়ে বসে আদর করলেন শিশুটিকে। তারপর কাউকেই কিছু না বলে শিশুটির হাত ধরে সবার মাঝে পথ করে ফিরে গেলেন ঈশ্বর তার আপন প্রাসাদে।


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

একটানে পড়ে গেলাম। আরামবোধ হইছে।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ব্লাস্ফেমী
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

জটিলসসসসসসসসসসসসসসসসসস!
মানুষের মাঝেই যে ঈশ্বর, তা ওই ধর্মের নামে অধর্মোন্মাদদেরকে যে কে বুঝাবে!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাদের!

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আরশাদ রহমান এর ছবি

পড়তে দারুণ লাগলো! খুব ভালো লেগেছে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সাধু সাধু



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।