জিন পরিবর্তিত খাদ্য অনুমোদন কি খাল কেটে কুমীর আনা নয়?

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: শুক্র, ০৭/০৩/২০১৪ - ২:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কেন জিএম-খাবারকে (genetically modified food) না বলতে চাই, তার কারণ দেখিয়ে ছিল আমার আগের লেখা। বিপক্ষে মতামতই বেশী পড়েছে। আমাদের দেশের মতো গরীব একটি দেশে যদি খাদ্য-সংকট সমাধানের ধুয়ো তুলে জিএম প্রযুক্তির মুলো ঝুলিয়ে দেয়া হয়, তাতে মতামত বিপক্ষেই থাকা স্বাভাবিক। এতে মনসানটো বা এই জাতীয় বিশাল বাণিজ্য সংস্থার বীজবানিজ্যিক নয়া-উপনিবেশিক রাক্ষসের ছোবলের সামনে ভারতের দুই লক্ষ গরীব তুলাচাষী কেন আত্মহত্যা করল, এসব নিয়ে ভাববার অবকাশ আমাদের থাকে না। আমরা তাই আবেগ বিবর্জিত মস্তিষ্কে কারো কথা, এমন কি আমাদের উত্তরসূরিদের কথাও ভুলে গিয়ে রাক্ষসের ক্রীতদাস হয়ে যতদিন যে ভাবে বাঁচি, নিজদের উদরপূর্তি করে যাব। যে গরীব চাষিদের মঙ্গলের ফানুসে যুক্তির পাহাড় গড়ি, তাদেরই সর্বনাশ দেখার পরও একটি শব্দও উচ্চারণ না করে বিজ্ঞানের ধুয়ো তুলে সে রাক্ষসের সাফাই গেয়ে যাব।

জিএম খাবারের সুফল-কুফল নিয়ে এবার আর কিছু বলতে চাইছি না। এবারের চেষ্টা কিছু পরিসংখ্যান দেখিয়ে সচেতনতার ডাক দেয়া। এ অবধি এই খাদ্য-প্রযুক্তির স্বপক্ষে যাদের অবস্থান, অন্য অবস্থানে যারা, তাদের কোনো কথা শুনতেই নারাজ। এই খাদ্যশস্যের ফলন বেশী, এর ভেতরে পোকা থাকবে না, খেতে সুস্বাদু, দেখতে সুন্দর। তারপরও দেশে বিদেশে অনেক সচেতন মানুষেরই এর বিপক্ষে অবস্থান। এই অবস্থানের পেছনে কী কারণ, মার্কিন-মনসানটো প্রেমে মগ্ন বিজ্ঞানীদের সে দিকে নজর না পড়লেও আমারই মতো সাধারণ মানুষদের প্রতি স্বচেষ্টায় এর পেছনের কারণগুলো খতিয়ে দেখার অনুরোধ রইল। কারণ, আমরা শুধুমাত্র নিজেদের জন্যে বাঁচি না, আমাদের পাশের মানুষটি, আমাদের উত্তরসূরিদের জন্যেও বাঁচি। এই বাক্যটি বলার পর এবারও হয়তো আমি আবেগপ্রবণতার দোষে দুষ্ট, কিন্তু পাশের মানুষ, উত্তরসূরি তো আবেগেরই অংশ।

২০১০ সালে ইউরোপিয়ান কমিশন বিভিন্ন প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। তাতে জিএম খাবারের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়েও একটি একটি অধ্যায় থাকে। সেটি তুলে ধরার সাথে আমি পুরো পরিসংখ্যানের লিংকটিও দিয়ে দিলাম।
http://ec.europa.eu/public_opinion/archives/ebs/ebs_341_winds_en.pdf

১) নতুন কোনো প্রযুক্তির প্রতি ইউরোপিয়ানদের বিশ্বাস অবিশ্বাসের একটি চিত্র প্রথমেই তুলে ধরছি। জিএম খাদ্যদ্রব্যের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান, তাদেরকে প্রযুক্তির শত্রু হিসেবে দাঁড় করানো হোতাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সত্যিই কি ইউরোপিয়ানরাও প্রযুক্তির প্রতি শত্রুভাবাপন্ন?

২) এখানে আটটি প্রযুক্তির প্রতি ইউরোপিয়ানদের বিশ্বাস-অবিশ্বাসের চিত্র তুলে ধরা হয়। তাতে প্রযুক্তিগত প্রশ্নে তাদের ভাবনা জানা যায়।

৩) জিএম খাদ্যদ্রব্য সম্পর্কে ইউরোপের অধিবাসীদের পরিচিতির একটি চিত্র তুলে ধরা হল এখানে।

৪) জিএম খাবারের প্রতি কতোটা সমর্থন আছে জনসাধারণের? এমনি এক প্রযুক্তি, যা প্রতি আমাদের দেশের প্রযুক্তিবিদ-রাজনৈতিক দের এতো প্রবল সমর্থন, সেখানে বাইরের এই পৃথিবীর জনগণের এতোটা অনীহার কারণ কী। প্রতিদিনের খাবারের মতো এমনি এক নাজুক বিষয়ে আমাদের তলিয়ে দেখা কি জরুরী নয়?

৫) এখানে জিএম খাবারের চারটি দিক পর্যালোচনা করে মতামত নেয়া হয়েছে।

৬) জিএম খাবারের প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সমর্থন যে কমে আসছে, তার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এটি যে মাকাল ফল, সে সচেতনতা বেড়েই চলেছে। আমরা এই চিত্র থেকে কোনো শিক্ষা নিতে পারি না?

এবার পুরো চিত্রটি একসাথে একবার তুলে ধরছি। একটি সচেতন উন্নত সমাজে, যেখানে শিক্ষিতের হার আমাদের দেশের চাইতে অনেক বেশি, জীবন- সমাজ-স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রশ্নে যে সমাজ যথেষ্ট সচেতন, যেখানকার মানুষ নতুন প্রযুক্তি আমাদের আমাদের দেশের চাইতে অনেক দ্রুত চিনে নিতে ও গ্রহণ করে অভ্যস্ত ও গ্রহণযোগ্যতায় কাপর্ন্যহীন, এমন একটি সমাজে এই জিন পরিবর্তিত খাবারের প্রতি তাদের এতো অবিশ্বাস কেন? বিশ্বাস শুরু থেকে যতটা ছিল, সেটি কেনই বা আরও কমে আসছে? তাই আমার বক্তব্য, নিজেদের থালায় জায়গা দেবার আগে এই চিত্রের শিক্ষায় আমাদের আরও অনেক ভেবে দেখা দরকার। নইলে একসময় দেখব, আমাদের চাষিরা বীজের দুর্মূল্যের কারণে সোনালী ধানের চাষ বন্ধ করে হোতাদের ইচ্ছায় ভুট্টার চাষ করছে ক্ষেতে আর সেই ভুট্টা থেকে আহরিত Bio-ডিজেলে গাড়ি চলছে ইউরোপ আর আমেরিকায়। আর আমাদের উত্তরসূরিরা? তাদের কথা ভাববেন না একবার?


মন্তব্য

সজীব ওসমান এর ছবি

১- প্রশ্ন হল জিন পরিবর্তিত খাদ্য কি আপনি খাচ্ছেন না? উত্তর হল অনেকদিন থেকে খেয়ে আসছেন। উদাহরণ দেই।
আধুনিক যুগে যেই ভূট্টা আপনি খাচ্ছেন সেটা হাজার বছর ধরে সিলেকটিভ ব্রিডিং এর ফসল। মেক্সিকোর মানুষ হাজার বছর ধরে পছন্দমত জাতটিকে তৈরি করেছেন শুধু নিজেদের ইচ্ছায় ব্রিডিং করে। অর্থাৎ জিন ম্যানিপুলেশান করে। প্রাকৃতিকভাবে এই জাত পাওয়ার কোন উপায় ছিলনা। সেভাবে হয়েছে টমেটোর ব্রিডিং। এরাও 'জিন পরিবর্তন' করে তৈরি হয়েছে। আপনি কি এদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াবেন? কৃষকের করা যেকোন ব্রিডিং প্রক্রিয়াই জিন ম্যানিপুলেশান। এখন যেই 'জিন পরিবর্তন' করে তৈরি করা জিএম খাবারের কথা বলছেন সেটা হয়েছে মূলতঃ আরও সূক্ষভাবে এবং অনেক পরীক্ষার মাপকাঠি পাশ করে। পৃথিবীর বহু ঔষধ, টিকা একইভাবে জিএম দিয়ে বা এই টেক ব্যবহার করে তৈরি।

এবার সায়েন্টিফিক আমেরিকান এর তৈরি করা এই ভিডিওটিও দেখে নিন।

২- যদি দেশে সরকারি বিজ্ঞান বা কৃষি প্রতিষ্ঠান জিএম শস্য তৈরি করে কৃষককে বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে প্রদান করে তবেও কি আপনার অবস্থান একই থাকবে? সোনালী ধান কিন্তু গরীব কৃষকদের মধ্যে নামমাত্র মূল্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইরি।

৩- ইউরোপের দেশগুলি জিএম এর বিপক্ষে। কিন্তু আমেরিকার বেশিরভাগ প্রদেশ জিএম কে অনুমতি দিয়েছে। সেখানেই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জিএম উৎপাদিত হয়। আপনার যুক্তি অনুযায়ী জিজ্ঞেস করা যায়, সেখানে কি শিক্ষিত মানুষ নাই?

৪- আবার, মানুষের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগানো খুব সহজ। রাজনীতিবিদেরা সেটা করেও থাকেন খুব সহজে। আর খাদ্যের মত সংবেদনশীল বিষয়ে ভীতি জাগিয়ে দেয়াটাও খুব সহজ। যেমন সহজ ধর্ম নিয়ে ভীতি বা সহিংসতা জাগিয়ে দেয়া, কারন সংবেদনশীল বিষয়। এখানে কোন দেশ কত শিক্ষিত সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার কাছে কি তথ্য পৌঁছাচ্ছেন, সেটা। যেমন, একজন ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার হয়তো জিন ইঞ্জিনিয়ারিং কিভাবে ঘটে সেটাই জানেন না, কিন্তু আপনার আগের পর্বের ভুল প্রমাণের কথা বিশ্বাস করে বসে থাকবেন। সেরালিনি'র ভুয়া পরীক্ষা নিয়ে তাই হয়েছে। যেখানে ফ্রান্সের (যে দেশে পরীক্ষা হয়েছে) সরকারী জীববিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান পর্যন্ত বলেছেন (নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত) যে, জিএম নিয়ে পরীক্ষাটা ভুল, কিন্তু লোকে কি তার কথা শুনছে? ইউরোপে জিএম এর হাল দেখে তো সেটা মনে হয়না। টিকা বিরোধী আন্দোলনগুলিও একইরকম। এই আন্দোলনের জন্য আশংকা করা হচ্ছে পৃথিবীজুড়ে পোলিও এবং হুপিং কফ আবার ছড়িয়ে পড়বে। 'জ্ঞান বিজ্ঞান দিয়ে শিক্ষিত দেশে'ই এরকম আন্দোলন হচ্ছে।

৫- সুবিখ্যাত দুইটি বিজ্ঞান পত্রিকার সম্পাদকীয়তে জিএম খাবার নিয়ে কি বলছে সেটা আমি আগের দুইটা পর্বে উল্লেখ করেছি। আবার করছি আপনার জ্ঞাতার্থে।
নেচার
সায়েন্স

৬- ইউরোপে খাদ্যাভাবে বা অপুষ্টিতে মৃত্যবরণের হার একদমই কম। সেতুলনায় আমাদের দেশে অনেক বেশি। শুধু রাতকাণা রোগের প্রকোপের মানচিত্রটি লক্ষ্য করলেই দেখা যায়। আবার শুষ্ক অঞ্চলে শুষ্কতা প্রতিরোধী, লবনাঞ্চলে লবনাক্ততা প্রতিরোধী ধান যদি কৃষক উৎপাদন করতে পারেন তবে তাতে কৃষকের লাভ। তবে অবশ্যই, কোম্পানি স্বার্থের বাইরে এসে।

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনার উত্তরের জন্যে ধন্যবাদ।
১) হাইব্রিড আর জিন ম্যনুপুলেশন কি এক? ইরি ধার বলে যেটি আমাদের দেশে প্রচলিত, এই কি হাইব্রিড নয়? জিন ম্যনুপুলেশন করে কতদূর যাওয়া যেতে পারে, তার কি কোনো সঠিক সীমারেখা স্থির করা হয়েছ?

২) যদি বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে প্রদান করা হয়, সেটি অবশ্যই ভালো ব্যাপার। কিন্তু এর স্থায়ীত্ব কতদিন, এই নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগই “সুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরুনোর” মতো অবস্থা হয়। আর সাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে যতদিন পরিস্কার কিছু জানা না যাবে, ততদিন অবস্থান পরিবর্তন করার কোনো কারণ দেখি না। আর “মনোকালচারের” ভীতিটি থেকেই যাবে। এই বিষয়টিও আপনি পাশ কাটিয়ে গেছেন প্রতিবারই। তবে এই ভীতি আপনার বা আমার অভ্যাসের ব্যাপার। আমি জীবনে, চালাফেরায়, খাবারে বৈচিত্র পছন্দ করি।

৩) আমি যে পরিসংখ্যান নিয়েছি, সেটি ইউরোপিয়ান কমিশনের করা। সেখানে আমেরিকার পরিসংখ্যান আসার কথাও নয়। সুতরাং চেপে যাবার কথা অবান্তর। আমেরিকারনরাও মোটামুটিভাবে শিক্ষিত, তবে তাদের ভেতরে ভীষন কনজারভেটিভ একটি অংশ আছে। এরা চরিত্রগতভাবেও আলাদা। এদের রাষ্ট্রিয় কাঠামোও অন্যরকম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপরের কাঠামোর প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। পরিবেশ রক্ষার প্রশ্নে ইউরোপীয়ানদের যে রকম ভাবনা চিন্তা, সেটি আমেরিকানদের মাঝে অনেক অনেক কম। এখানে শিক্ষিত, অশিক্ষিতের প্রশ্ন আসে না। আপনি জিএম খাবারের পক্ষে, আপনাকে কি আমি অশিক্ষিত বলব? কখনোই না। আমার কথা হচ্ছে, এত বড় কন্টিনেন্টের এমনি এক সমাজ, যাদের প্রতিরোধ এই খাবারের বিরুদ্ধে অবস্থান ক্রমশই বেড়ে চলেছে, সে থেকে একটুও জানতে চাইব না? এদের মহাজ্ঞনী ও মহামানব সাজানোর কোনই আগ্রহ নেই আমার, সেটি ওদের পাওনাও নয়। কিন্তু আমরা যদি ওদের এই চিন্তাভাবনাকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করি, তাহলে কি আমরা উন্নাসিকতার দোষে দূষ্ট নই?

৪) কে কোন সেন্টিমেন্ট কাজে লাগাচ্ছে, আসল কথা সেখানেই লুকিয়ে। আমাদের দেশে শিশুরা অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে, আপনি সে সেন্টিমেন্ট ব্যাবহার করে সোনালী ধানের পক্ষে মতামত সাজাচ্ছেন। আমরা যদি ঢেকিছাটা চাল খেতাম (চালের খোসার পর উপরের লালচে আস্তরণ থেকে যেত), তাহলে এই কারণে কিছু হলেও কম শিশু মারা যেত। কোনটা ভুল, কোনটা সত্য এসব সবাই নিজেদের সতামত প্রতিষ্ঠা করার জন্যেই বেশি বলে থাকে, সত্য জানার জন্যে নয়। আমি কোনোটাই উড়িয়ে দিতে চাইনা, কিন্তু নিজের বুদ্ধি বিবেচনা ও বাইরের আলোচনা শোনার পর আপাততঃ নিজের এই অবস্থানই আমার কাছে সঠিক মনে হয়।

৫) শিক্ষিত, অশিক্ষিতের প্রশ্নটি আগেই খোলাসা করেছি। শিক্ষা শুধুমাত্র পুথিগত শিক্ষাই না। ছোটো বেলা একটি কবিতা পড়েছিলাম। “ষোলো আনাই ফাঁকি”। কবিতার মাঝি আমার কাছে সাওয়ারী বাবুর চাইতে অনেক বেশি শিক্ষিত। আপনার লিংক আমি অবশ্যই পড়ে দেখব।

৬) বিপদে পড়লে গাছের ছালও খাবো। যদি সেভাবে দেখেন, তাহলে তো আমাদের দেশের মানুষদের আলকাতরা খেয়েও বাঁচতে হতে পারে। তাহলে আসুন, একসময় একসাথে বসে আলকাতরা খাই! তবে “কোম্পানীর স্বার্থের বাইরে” কথাটি বলার জন্যে ধন্যবাদ। তবে তা কতটুকু সম্ভব, সে বিশ্বাস এই কথার প্রতি ধীরে ধীরে কমেই আসছে। এই নব্য উপনিবেশিক ধারার বিকট চেহারা এই বিশ্বাহীনতার বাইরে আর কোনো পথ খোলা রাখে নি।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার প্রথম পয়েন্ট টা জরুরী, কারণ, বোঝা যাচ্ছে যে আপনি হাইব্রিড ধানকে জিন ম্যািপুলেশন ধরছেন না, কিন্তু সজীব ওসমান এটাকে জিন ম্যানিপুলেশন ধরছেন। আপনার দেয়া ই.ইউ এর লিংটাতেও দেখলাম যে "সিসজেনিক্স" নামে একটা টেকনোকলজির কথা আলাদা করে বলা আছে, যেটাও জেনেটিক ইনজিনিয়ারিং, কিন্তু শুধুমাত্র "ক্রসব্রিড করা যায় এমন প্রজাতিগুলো মধ্যে"। অর্থাৎ কিনা অস্ট্রেলিয়ান গরু আর দেশী গরুর মধ্যে আর্টিফিশিয়ালি জিন আদান প্রদান হচ্ছে সিসজেনিক্স, কিন্তু স্যামন আর গাজরের মধ্যে হলে সেটা সিসজেনিক্স নয়।

প্রশ্ন: সিসজেনিক্স কে কি আপনি আপত্তিকর তালিকায় রাখেন?

অবজার্ভেশন: যতদূর জানি, মানবদেহে ভাইরাসের জিন ঢুকে বসে আছে অনেক শত বছর আগে থেকেই। সাম্প্রতিক খবর, মানবদেহের জিনোমের শতকরা আট ভাগই বিভিন্ন ভাইরাসের থেকে এসেছে।

---দিফিও

সজীব ওসমান এর ছবি

হেহে.. ভাল পয়েন্ট।

আমি আর ঐদিকেই যাইনাই। পৃথিবীর সব জীবই হাইব্রিড জীব। এখনও যখন মানুষের ফ্লু বা এইডস রোগ হয় তখন মানুষটি মানুষ-ভাইরাস হাইব্রিডে পরিণত হন। যদি এমন হাইব্রিডাইজেশান আপনার ক্ষতি না করে বা উপকার করে তবে আপনি হয়তো বেঁচে থেকে প্রাকৃতিক নির্বাচনে হাইব্রিড হিসেবে বংশবৃদ্ধি করবেন।

এটা পড়তে কৌতুহল বোধ করতে পারেন।

তবে তীরন্দাজ ভাই কি ভাবেন দেখা যাক।

তীরন্দাজ এর ছবি

এটিও পড়ে দেখতে পারেন‍,

2. International scientists request PM not to okay GMO Bt
http://www.gmwatch.org/index.php/news/archive/2013/15090-high-court-bars-gm-eggplant-s-release-in-bangladesh

Brinjal release

Financial Express, 29 August 2013
http://www.thefinancialexpress-bd.com/index.php?ref=MjBfMDhfMjlfMTNfMV84OF8xODE1MzI=

A group of internationally recognised scientists have sent a letter to Prime Minster Sheikh Hasina requesting her not to approve release of genetically modified (GMO) variety eggplant -- Bt Brinjal in Bangladesh.

In the letter scientists said that without any research on consumption of Bt Brinjal and its health related effects on human body, the GMO variety release will be devastating for densely populated Bangladesh.

Authored by Prof David R Schubert at the Salk Institute for Biological Studies, California, USA, the letter was also signed by Prof Michael Antoniou, School of Medicine, King's College London; GMO expert at the rural development ministry in Hungary, Susan Berdoch; Vice Chairman of National Knowledge Commission of India; Puspa Bhargava, GMO food expert; Prof Dr Judy Carman, Flinders University in South Australia; Prof Jack Haniman, University of Canterbury; Co-chair at International Assessment of Agriculture Knowledge, Prof Hans R Haren; Senior Scientist of Swiss Federal Institute of Technology, Dr Angelica Hilbeck; Dr Robert Mann, University of Auckland; among others.

However, Bangladesh Agriculture Research Institute (BARI), the government-run research organisation, sought permission from the Ministry of Agriculture (MoA) last June to release four varieties of Bt Brinjal at the farmers' level.

The research organisation "developed" the seeds by injecting Bt gene into nine indigenous brinjal varieties, BARI sources said.

Bangladeshi biodiversity experts and environmentalists have protested the move saying that without a bio-safety guideline, BARI should not do any genetic modification over indigenous seed varieties.

A writ petition was also filed with High Court (HC) seeking its directive to restrain the government from giving approval to the release of four varieties of Bt brinjal at the farmers' level.

National green group Ubinig, sought the HC directive alleging that GMO Bt brinjal would harm biodiversity and cause severe health hazards to human beings, animals and plants.

The court has instructed BARI to submit scientific evidence on effect of Bt Brinjal on human body by September this year, Ubinig executive director Farida Akhter confirmed.

Meanwhile, the courts in India and the Philippines have banned Bt Brinjal cultivation at farmers' level for an indefinite period.

The letter sent to Bangladesh Prime Minister said that there are several reasons that this genetically engineered (GE) plant should not be introduced in Bangladesh.

The letter pointed out that Brinjal is not a crop threatened by an overwhelming insect infestation that it should be turned into GMO.

Pointing to the environmental risk it further said Brinjal is native to Bangladesh and the GE genes will unquestionably lead to its contamination.

The purchase of seeds on an annual basis, as opposed to saving seeds from year to year, will increase costs at all levels of the food chain, the letter said.

"Finally, Bt protein in Bt Brinjal poses a serious health risk for those who consume it. This is the issue that I wish to address," Dr David R Schubert said in his letter.

Multinational seed giant Monsanto and its Indian ally Mahyco, with the financial assistance of USAID, developed the Bt brinjal seed in India in 2005 which is now banned in that country amid massive protests from Indian environmentalists, biodiversity experts, and ordinary citizens.

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তীরন্দাজ এর ছবি

এটি হচ্ছে পক্ষ বিপক্ষ মিলিয়ে একটি আলোচনা।

বাকৃবি: Bacillus thuringiensis প্রজাতীর ব্যাকটেরিয়ার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে BT/বিটি শব্দটি এসেছে। এ প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়া Bio-Pesticide বা জৈব কীটনাশক হিসেবে ব্যাপক কার্যকর। বিটি প্রজাতীর ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের ক্রিস্টাল প্রোটিন প্রস্তুত করে যা বিশেষ কিছু পোকামাকড়ের জন্য বিষাক্ত। পোকার জন্য প্রাণঘাতী এই বিষ মানুষের জন্যও বিষাক্ত কী না তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।বিটির ক্রিস্টাল প্রোটিন যখন লেদা পোকার অন্ত্রে প্রবেশ করে তখন অন্ত্রের ক্ষারীয় পরিবেশে জৈব রসের (protease enzyme) উপস্থিতিতে ক্রিস্টাল প্রোটিন টি ভেঙে গিয়ে δ-endotoxin নামক বিষ তৈরি হয়। δ-endotoxin গ্রহণ করার জন্য লেদাপোকার অন্ত্রের কোষে এক ধরনের রিসেপ্টর থাকে। δ-endotoxin যখন রিসেপ্টরের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন লেদাপোকার অন্ত্রে ছিদ্র তৈরি হয়। এতে একপর্যায়ে পোকা মারা যায়।বিটি বেগুন ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বাকৃবির জেনেটিক্স ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জল কুমার নাথ বলেন, জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড বা ট্রান্সজেনিক শস্যগুলো সরাসরি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম। তবে, বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করলে ব্যবহারে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম। Solanacae পরিবারের অন্যান্য ফসলের সঙ্গে ক্রস পরাগায়ন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। এতে ওই সব ফসরের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে, এর ক্ষতিকর প্রভাব ফসলে ব্যবহৃত কীটনাশকের চেয়ে অনেকাংশে কম।জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড শস্য থেকে বীজ তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য শস্যের মতোই জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড শস্যগুলো থেকে পরের বছরের জন্য বীজ তৈরি করা যাবে। এ বিষয়ে অন্য কোনো ধারণা থাকলে তা ভুল। তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব প্রমাণ করতে না পারার কারণেই হয়ত হাইকোর্টের রায়ের পরই বিটি বেগুনকে চাষাবাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিটি বেগুন সর্ম্পকে বাকৃবির বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, বিটি বেগুন নিয়ে যেসব গুঞ্জন চলছে তা মোটেও সঠিক নয়। বিটি বেগুনের জিন কখনও অন্যান্য ফসলের জন্য ক্ষতিকর নয়। বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশে (বাংলাদেশ, ভারত ও ফিলিপাইন) বিটি বেগুন নিয়ে কাজ করা হয়েছে। ভারতে বিটি বেগুন নিষিদ্ধ হওয়াটা গণতন্ত্রের কুফল দাবি করে তিনি বলেন, বিটি তুলা চাষাবাদের সময়ও ভারতে এমনটি ঘটেছিল। ভারত এক সময় তুলা আমদানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে ভারত তুলা রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি। যার কারণ হচ্ছে বিটি তুলা। তিনি আরো বলেন, বিটি বেগুনের জিন নির্দিষ্ট। একটি নির্দিষ্ট জিন একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী। Solanacae পরিবারের বিভিন্ন ফসল যেমন- আলু, তামাক ইত্যাদি ফসলের সঙ্গেও তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায় নি। তাছাড়া, এই নির্দিষ্ট জিনটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পোকামাকড়ের (Lepidopteran Insects) জন্য ক্ষতিকর। অন্যকোনো পোকামাড়কের জন্য ক্ষতি হবে না।ড. নাসির বলেন, বিশ্বের প্রায় ২৮টি দেশে ট্রান্সজেনিক শস্যের চাষাবাদ হচ্ছে। বাংলাদেশেও জিএম শস্য চাষ হচ্ছে। জিএম শস্যগুলো যখন বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তার আগে এর বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে বিটি বেগুনের চাষাবাদে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে এবং বিভিন্ন মাঠ গবেষণায় আশানুরূপ ফল পাওয়ার পরেই বাংলাদেশে বিটি বেগুনকে চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন ড. নাসির।বিটি বেগুন মানবদেহের প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষতি, লিভার ক্ষয়, অঙ্গ ক্ষয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় কী না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. নাসির বলেন, জিএম শস্য বাজারজাত করার আগে কয়েকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে তা কখনই বাজারজাত করা হয় না।

এসব গবেষকদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বাকৃবির উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। তার মতে, জিএম শস্যগুলো যদিও জিন পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপন্ন করা হয় কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাব একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর শুরু হবে। কিন্তু কখন হবে অথবা কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না -এমন কোনো নিশ্চয়তা কেউ কখনো দিতে পারবে না। তাই বিটি বেগুন নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।তিনি বলেন, সাধারণ বেগুনের জিনোমে যে সিকুয়েন্স থাকে তার মধ্যে Bacillus thuringiensis এর একটি নির্দিষ্ট জিন প্রবেশ করানো হয়। এটি সাধারণত পোকা-মাকড়ের মিটগাট বা পাকস্থলির ভেতরের রিসেপ্টরের থেকে ভিন্ন হয়। যেহেতু পোকার রিসেপ্টরের ভেতরটা ক্ষারীয় প্রকৃতির তাই পোকার পাকস্থলি ফুলে গিয়ে ধীরে ধীরে মারা যায়। মানুষের পাকস্থলির ভেতরটা অ্যাসিডিক থাকায় ওই জিনটি মানুষের তেমন কোনো ক্ষতি সাধন করে না।তিনি আরো বলেন, জিন যেহেতু অ্যামাইনো এসিড বা প্রোটিন জাতীয়, তাই যেকোনো সময় এর সিকুয়েন্স পরিবর্তিত হতে পারে। এতে বিটি জিনের ওই সিকুয়েন্সটি পরিবর্তন কিংবা পোকা অথবা মানুষের পাকস্থলির প্রোটিনের জিন সিকুয়েন্সের পরিবর্তন হতে পারে। ওই (বিটি জিনের) প্রোটিনের সঙ্গে মানুষের পাকস্থলি অথবা শরীরের অন্যান্য রিসেপ্টর প্রোটিনের সঙ্গে যদি মিলে যায় সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে।

সবচেয়ে ভয়াবহ যে বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন তা হলো- যদি জিন সিকুয়েন্স পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিকর পোকা ওই বিষের বিপরীতে প্রতিরোধী (resistant) হয়ে যায়, তাহলে ওই বিটি বেগুনের জিন আর কাজ করবে না। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মহামারী আকারে ফসলের ক্ষতিসাধন করবে। এ ক্ষতি থেকে বাঁচতে উন্নতমানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে হবে, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।তিনি আরো বলেন, যদি বিটি গবেষকরা নিশ্চিত করতে পারেন যে বিটি জিনের সিকুয়েন্স সহজে পরিবর্তিত হবে না বা নির্দিষ্ট সময় পর পর গবেষণা করে প্রাপ্ত ফলাফল পর্যালোচনা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিংবা বিটি ফসলের সঙ্গে অন্যকোনো ফসলের সংস্পর্শ আসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেক্ষেত্রে বিটি বেগুন দেশে চাষ করার জন্য অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় একদিকে যেমন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হবে অন্যদিকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে মানুষ।বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৪ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ - See more at: http://www.banglanews24.com/new/%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE/264584-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%B0%3F.html#sthash.wT390gQQ.dpuf

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আপনার এই পোস্টটা দেখে আশান্বিত হয়ে ভেবেছিলাম এবার হয়তো বিটি বেগুন বর্জনের বস্তুনিষ্ঠ কার্যকরণ উপস্থাপন করেছেন, কিন্তু কই, যে কে সেই। প্রথমে আমদের মত মূর্খ বাঙ্গালরা কেন আপনার কথা বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নিল না, সে বিষয়ে কিছু তির্যক কথাবার্তা বলেছেন। অন্ধ্র প্রদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ মনসানটো বা সেরকম কোন একটা কিছুর কারনে আত্মহননের ভয়াবহ তথ্যও পেশ করেছেন। কিন্তু কোন প্রমান পত্র নয়, আপনি উপস্থাপন করেছেন একটি যুক্তি, তা হল- যেহেতু ইউরপিয়ানরা শিক্ষিত এবং যেহেতু তাদের বড় একটি অংশ জিন টেকনোলোজির বিপক্ষে, সুতরাং জিটি গ্রহণযোগ্য নয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মনসানটো বা এই জাতীয় বিশাল কোন কোম্পানির ভয় দেখানোর প্রয়োজন পড়ে নি। আমাকে একবার এক ছাগু বোঝানোর চেষ্টা করছিল- যেহেতু জনৈক আক্কাছ আলি আমেরিকা থেকে পিএইচডি অর্জন করেছেন এবং যেহেতু তিনি মনেপ্রাণে জামাতের রাজনীতি সমর্থন করেন, সুতরাং আমার মত অ পিএইচডি এর জামাতে শামিল না হওয়াটা মূর্খতার পরিচায়ক। ব্যাপারটা কি কিছুটা সেরকম হয়ে গেল?

এবার আসি অন্ধ্র প্রদেশের কৃষকদের ব্যাপক হারে আত্মহত্যার প্রসঙ্গে। আপনার লেখা পড়ে মনে হতে পারে সে সব মানুষ হয়তো জিটি ব্যবহারের কারনে, কিংবা জিটি বীজের সত্ত্বাধিকারী কোন কোম্পানির কারসাজিতে এরকম করেছে। জানতাম এর কারন ছিল সময়মত কৃষি ঋণ শোধ করতে না পারায় ঋণের বোঝা চেপে বসা, আর সময়মত ঋণ পরিশোধ করতে না পারার কারন ছিল অনাবৃষ্টি, খরা বা রোগবালাইয়ের কারনে ফসলহানি। আপনার কাছে যদি এমন তথ্য থেকে থাকে যে মনসানটো বা এ জাতীয় কোন কোম্পানির জিটি ব্যবহারই আত্মহত্যার কারন, তাহলে সেটাও একটু সুনিদ্রিস্টভাবে উল্লেখ করা দরকার ছিল না কি?

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনার আশা পুরণ না করতে পারা জন্যে দুঃখিত। কিন্তু বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবার কোনো কথা তো বলিনি।

এমন একটি সমাজে এই জিন পরিবর্তিত খাবারের প্রতি তাদের এতো অবিশ্বাস কেন? বিশ্বাস শুরু থেকে যতটা ছিল, সেটি কেনই বা আরও কমে আসছে? তাই আমার বক্তব্য, নিজেদের থালায় জায়গা দেবার আগে এই চিত্রের শিক্ষায় আমাদের আরও অনেক ভেবে দেখা দরকার।

আমার এই লাইনটি কি বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবার ডাক? বরং যারা বিনা বাক্যব্যয়ে এই ভাবার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, তাদেরকে ভেবে দেখার আহব্বান। আপনি একটি লেখা ভালো করে পড়ে মস্তব্য করেন, নাকি অন্যরকম?

সত্যি কথা বলতে গেলে, কিছু পশুর উপর পরীক্ষা ছাড়া সাস্থ্য বিষয়ক প্রশ্নে জিএম খাবারের পক্ষে বা বিপক্ষে, কোনো দিকেই কোনো পরিস্কার কোনো ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। সুদুর প্রসারী কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষাও হয়নি। সেজন্যে অনেক কিছুই অজানা ও সেখানেই আমি সংশয়ী, তাই বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। আপনি বিশ্বাসী, বিনা বাক্যব্যয়ে আপনার অবস্থান এর পক্ষে। আমি কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে আপনাকে ভেবে দেখার জন্যে অনুরোধ করলাম। আপনি বললেন, আমি আপনাকে বিনা বাক্যব্যয়ে আপনাকে মেনে নিয়ে বলছি। আশ্চর্য্য হওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই।

এর বিপক্ষে বাকী দিকগুলো নিয়ে আর্জেন্টিনা ও ভারতের কথা আগের লেখায় রেফারেন্স সহ দিয়েছি। আপনা সেটি পছন্দ না হলে, সার্চ দিয়ে খুঁজে দেখতে পারেন। ভুরি ভুরি পাবেন। ছাগু নিয়ে আক্কাস আলি নিয়ে যা লিখেছেন, তার উত্তর দিতে গেলে যতটা বোকামোর প্রয়োজন, সে অবধি নামার ক্ষমতা আমার সত্যিই নেই।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সজীব ওসমান এর ছবি

'কিছু পশুর উপর পরীক্ষা ছাড়া সাস্থ্য বিষয়ক প্রশ্নে জিএম খাবারের পক্ষে বা বিপক্ষে, কোনো দিকেই কোনো পরিস্কার কোনো ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।'

আপনি কি সত্যিই এইটা বললেন? আপনাকে ৬০০ টার বেশি প্রকাশিত পরীক্ষার রেফারেন্স এইখানে দিলাম।

এইখান থেকে শুধু পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় জীববিজ্ঞান, স্বাস্থ্য এবং কৃষি গবেষণা সংস্থাগুলোর লেখা নিয়ে পোষ্টারটায় চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।

আর আপনার বারবার ইউরোপের উদাহরণ টানার জন্যই বলছি (আমেরিকান গুলা বাদই দেন), বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কি বলছে দেখুন:

The efforts of more than 130 research projects, covering a period of more than 25 years of research and involving more than 500 independent research groups has concluded that biotechnology, and in particular GM foods, are no more risky than natural plant breeding techniques.

আরেকটু পরিষ্কারভাবে পড়ার জন্য এইটাও দেখে নিন। রেফারেন্সসহ আছে। বিশেষ করে ইউরোপের সংস্থাগুলোর কথাগুলোয় আপানার মনযোগ আকর্ষণ করছি।

ঔষধের পরীক্ষাও পশুর উপরেই হয় প্রথমে। তবে মানুষের উপরেও হয় তারপরে। এখন জিএম খাবার নিয়ে মানুষের উপরে পরীক্ষা নিয়ে ইউরোপের সংস্থা রয়্যাল সোসাইটি অফ মেডিসিন কি বলেছে?

Foods derived from GM crops have been consumed by hundreds of millions of people across the world for more than 15 years, with no reported ill effects (or legal cases related to human health), despite many of the consumers coming from that most litigious of countries, the USA

দিগন্ত এর ছবি

মনসানটো বা এ জাতীয় কোন কোম্পানির জিটি ব্যবহারই আত্মহত্যার কারন

- এই ব্যাপারটা গণহারে জিটির বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে কিন্তু আত্মহত্যার মূল কারণ অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সুরক্ষার অভাব। এর সাথে জিটির সম্পর্ক কেউ বের করতে পারেনি। ভারতের তুলো উৎপাদন জিটি আসার পরে অনেক বেড়ে গেছে।
এখানে দেখুন


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

আপনার লেখা আগের পর্বটি থেকে এই পর্বের শিরোনামটি বেশ ভাল হয়েছে। লেখার শুরুতেই সকল জিএম খাবার কে ঢালাও ভাবে এক বাক্যে ´না´ বলে খারিজ করে দেয়ার চেয়ে নিজের আশঙ্কাকে প্রশ্ন বোধক বাক্যে রেখে লেখাটি শুরু করায় আপনাকে সাধুবাদ।

তবে তির্যক বাক্যবানে `প্রতিপক্ষ` ঘায়েল করার গুলো অংশটুকু না থাকলে লেখাটি আরেকটু সুপাঠ্য হত বলে মনে করি।

আপনার উত্থাপিত প্রশ্ন `জিন পরিবর্তিত খাদ্য অনুমোদন কি খাল কেটে কুমীর আনা নয়?´ এর উত্তর সহজ ভাবে ´হ্যা´ অথবা ´না´ তে দেয়া সম্ভব না।

কারণ ন্যূন্যতম দুটি:

১। জনগনের স্বাস্থ্যে সংশ্লিষ্ট দিক এবং
২। এবং দেশের অর্থনৈতিক দিক

সাধারণ ভাবে, কোন একটি জিএম খাবারের অনুমোদনে দেশের কৃষি-অর্থনীতি সাময়িক ভাবে লাভবান হলেও অদূর/সুদূর ভবিষ্যতে যদি জনগনকে নিশ্চিত স্বাস্থ্যহানির মধ্যে পরতে হয় তাহলে সেটা কিছুতেই গ্রহন যোগ্য হতে পারে না।

অন্যদিকে, কোন একটি জিএম খাবারের যদি কোনরূপ স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা নাও থাকে কিন্তু কোন অসম চুক্তির কারণে দেশের অর্থনীতিতে সেটার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরার সম্ভাবনা প্রবল থাকে তাহলে সেটাও গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।

অন্ততপক্ষে এই দুটি বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা না নিয়ে কোন একটি নির্দিষ্ট জিএম খাবারের পক্ষে আর বিপক্ষে বলা কথাগুলো কোন উপসংহারে পৌছাতে পারবে না।

একটি জিএম খাবারের খারাপ কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলে সব জিএম খাবারেরই খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে এমন কোন কথা যেমন নেই। ঠিক তেমনি, কোন একটি জিএম খাবারের খারাপ কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলে সব জিএম খাবার ভালো তাও নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

তাই আমি মনে করি, যে, যেই জিএম খাবারটি নিয়ে উদ্বিগ্ন, (যেমন: বিটি বেগুন,) সে সেই খাবারটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার উপর করা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার ফলাফল গুলোর উপর আলোচনা/সমালোচনা মুলক লেখা দিয়ে সেই খাবারের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কতটা গ্রহনযোগ্য বা গ্রহনযোগ্য নয় সেটা আলোকপাত করতে পারে। এবং সেই খাবারটি বাংলাদেশে অনুমোদন দেয়ার ব্যাপারে ব্যাবসায়িক চুক্তি গুলো দেশের অর্থনীতির জন্য কতটা উপযুক্ত সেটার উপর আলোকপাত করতে পারে।

ইয়োরোপের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে জিএম খাবারের প্রতি তাদের ´বিশ্বাস´ আমাদের দেশের বাস্তবতার প্রেক্ষিতে কতটুকু অনুকরনীয় সেটাও প্রশ্নাতীত নয় ।

তীরন্দাজ এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ!

2. International scientists request PM not to okay GMO Bt Brinjal release

Financial Express, 29 August 2013
http://www.thefinancialexpress-bd.com/index.php?ref=MjBfMDhfMjlfMTNfMV84OF8xODE1MzI=

A group of internationally recognised scientists have sent a letter to Prime Minster Sheikh Hasina requesting her not to approve release of genetically modified (GMO) variety eggplant -- Bt Brinjal in Bangladesh.

In the letter scientists said that without any research on consumption of Bt Brinjal and its health related effects on human body, the GMO variety release will be devastating for densely populated Bangladesh.

Authored by Prof David R Schubert at the Salk Institute for Biological Studies, California, USA, the letter was also signed by Prof Michael Antoniou, School of Medicine, King's College London; GMO expert at the rural development ministry in Hungary, Susan Berdoch; Vice Chairman of National Knowledge Commission of India; Puspa Bhargava, GMO food expert; Prof Dr Judy Carman, Flinders University in South Australia; Prof Jack Haniman, University of Canterbury; Co-chair at International Assessment of Agriculture Knowledge, Prof Hans R Haren; Senior Scientist of Swiss Federal Institute of Technology, Dr Angelica Hilbeck; Dr Robert Mann, University of Auckland; among others.

However, Bangladesh Agriculture Research Institute (BARI), the government-run research organisation, sought permission from the Ministry of Agriculture (MoA) last June to release four varieties of Bt Brinjal at the farmers' level.

The research organisation "developed" the seeds by injecting Bt gene into nine indigenous brinjal varieties, BARI sources said.

Bangladeshi biodiversity experts and environmentalists have protested the move saying that without a bio-safety guideline, BARI should not do any genetic modification over indigenous seed varieties.

A writ petition was also filed with High Court (HC) seeking its directive to restrain the government from giving approval to the release of four varieties of Bt brinjal at the farmers' level.

National green group Ubinig, sought the HC directive alleging that GMO Bt brinjal would harm biodiversity and cause severe health hazards to human beings, animals and plants.

The court has instructed BARI to submit scientific evidence on effect of Bt Brinjal on human body by September this year, Ubinig executive director Farida Akhter confirmed.

Meanwhile, the courts in India and the Philippines have banned Bt Brinjal cultivation at farmers' level for an indefinite period.

The letter sent to Bangladesh Prime Minister said that there are several reasons that this genetically engineered (GE) plant should not be introduced in Bangladesh.

The letter pointed out that Brinjal is not a crop threatened by an overwhelming insect infestation that it should be turned into GMO.

Pointing to the environmental risk it further said Brinjal is native to Bangladesh and the GE genes will unquestionably lead to its contamination.

The purchase of seeds on an annual basis, as opposed to saving seeds from year to year, will increase costs at all levels of the food chain, the letter said.

"Finally, Bt protein in Bt Brinjal poses a serious health risk for those who consume it. This is the issue that I wish to address," Dr David R Schubert said in his letter.

Multinational seed giant Monsanto and its Indian ally Mahyco, with the financial assistance of USAID, developed the Bt brinjal seed in India in 2005 which is now banned in that country amid massive protests from Indian environmentalists, biodiversity experts, and ordinary citizens.

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তীরন্দাজ এর ছবি

এটি হচ্ছে পক্ষ বিপক্ষ মিলিয়ে একটি আলোচনা।

বাকৃবি: Bacillus thuringiensis প্রজাতীর ব্যাকটেরিয়ার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে BT/বিটি শব্দটি এসেছে। এ প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়া Bio-Pesticide বা জৈব কীটনাশক হিসেবে ব্যাপক কার্যকর। বিটি প্রজাতীর ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের ক্রিস্টাল প্রোটিন প্রস্তুত করে যা বিশেষ কিছু পোকামাকড়ের জন্য বিষাক্ত। পোকার জন্য প্রাণঘাতী এই বিষ মানুষের জন্যও বিষাক্ত কী না তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।বিটির ক্রিস্টাল প্রোটিন যখন লেদা পোকার অন্ত্রে প্রবেশ করে তখন অন্ত্রের ক্ষারীয় পরিবেশে জৈব রসের (protease enzyme) উপস্থিতিতে ক্রিস্টাল প্রোটিন টি ভেঙে গিয়ে δ-endotoxin নামক বিষ তৈরি হয়। δ-endotoxin গ্রহণ করার জন্য লেদাপোকার অন্ত্রের কোষে এক ধরনের রিসেপ্টর থাকে। δ-endotoxin যখন রিসেপ্টরের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন লেদাপোকার অন্ত্রে ছিদ্র তৈরি হয়। এতে একপর্যায়ে পোকা মারা যায়।বিটি বেগুন ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বাকৃবির জেনেটিক্স ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জল কুমার নাথ বলেন, জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড বা ট্রান্সজেনিক শস্যগুলো সরাসরি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম। তবে, বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করলে ব্যবহারে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম। Solanacae পরিবারের অন্যান্য ফসলের সঙ্গে ক্রস পরাগায়ন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। এতে ওই সব ফসরের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে, এর ক্ষতিকর প্রভাব ফসলে ব্যবহৃত কীটনাশকের চেয়ে অনেকাংশে কম।জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড শস্য থেকে বীজ তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য শস্যের মতোই জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড শস্যগুলো থেকে পরের বছরের জন্য বীজ তৈরি করা যাবে। এ বিষয়ে অন্য কোনো ধারণা থাকলে তা ভুল। তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব প্রমাণ করতে না পারার কারণেই হয়ত হাইকোর্টের রায়ের পরই বিটি বেগুনকে চাষাবাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিটি বেগুন সর্ম্পকে বাকৃবির বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, বিটি বেগুন নিয়ে যেসব গুঞ্জন চলছে তা মোটেও সঠিক নয়। বিটি বেগুনের জিন কখনও অন্যান্য ফসলের জন্য ক্ষতিকর নয়। বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশে (বাংলাদেশ, ভারত ও ফিলিপাইন) বিটি বেগুন নিয়ে কাজ করা হয়েছে। ভারতে বিটি বেগুন নিষিদ্ধ হওয়াটা গণতন্ত্রের কুফল দাবি করে তিনি বলেন, বিটি তুলা চাষাবাদের সময়ও ভারতে এমনটি ঘটেছিল। ভারত এক সময় তুলা আমদানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে ভারত তুলা রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি। যার কারণ হচ্ছে বিটি তুলা। তিনি আরো বলেন, বিটি বেগুনের জিন নির্দিষ্ট। একটি নির্দিষ্ট জিন একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী। Solanacae পরিবারের বিভিন্ন ফসল যেমন- আলু, তামাক ইত্যাদি ফসলের সঙ্গেও তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায় নি। তাছাড়া, এই নির্দিষ্ট জিনটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পোকামাকড়ের (Lepidopteran Insects) জন্য ক্ষতিকর। অন্যকোনো পোকামাড়কের জন্য ক্ষতি হবে না।ড. নাসির বলেন, বিশ্বের প্রায় ২৮টি দেশে ট্রান্সজেনিক শস্যের চাষাবাদ হচ্ছে। বাংলাদেশেও জিএম শস্য চাষ হচ্ছে। জিএম শস্যগুলো যখন বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তার আগে এর বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে বিটি বেগুনের চাষাবাদে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে এবং বিভিন্ন মাঠ গবেষণায় আশানুরূপ ফল পাওয়ার পরেই বাংলাদেশে বিটি বেগুনকে চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন ড. নাসির।বিটি বেগুন মানবদেহের প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষতি, লিভার ক্ষয়, অঙ্গ ক্ষয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় কী না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. নাসির বলেন, জিএম শস্য বাজারজাত করার আগে কয়েকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে তা কখনই বাজারজাত করা হয় না।

এসব গবেষকদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বাকৃবির উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। তার মতে, জিএম শস্যগুলো যদিও জিন পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপন্ন করা হয় কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাব একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর শুরু হবে। কিন্তু কখন হবে অথবা কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না -এমন কোনো নিশ্চয়তা কেউ কখনো দিতে পারবে না। তাই বিটি বেগুন নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।তিনি বলেন, সাধারণ বেগুনের জিনোমে যে সিকুয়েন্স থাকে তার মধ্যে Bacillus thuringiensis এর একটি নির্দিষ্ট জিন প্রবেশ করানো হয়। এটি সাধারণত পোকা-মাকড়ের মিটগাট বা পাকস্থলির ভেতরের রিসেপ্টরের থেকে ভিন্ন হয়। যেহেতু পোকার রিসেপ্টরের ভেতরটা ক্ষারীয় প্রকৃতির তাই পোকার পাকস্থলি ফুলে গিয়ে ধীরে ধীরে মারা যায়। মানুষের পাকস্থলির ভেতরটা অ্যাসিডিক থাকায় ওই জিনটি মানুষের তেমন কোনো ক্ষতি সাধন করে না।তিনি আরো বলেন, জিন যেহেতু অ্যামাইনো এসিড বা প্রোটিন জাতীয়, তাই যেকোনো সময় এর সিকুয়েন্স পরিবর্তিত হতে পারে। এতে বিটি জিনের ওই সিকুয়েন্সটি পরিবর্তন কিংবা পোকা অথবা মানুষের পাকস্থলির প্রোটিনের জিন সিকুয়েন্সের পরিবর্তন হতে পারে। ওই (বিটি জিনের) প্রোটিনের সঙ্গে মানুষের পাকস্থলি অথবা শরীরের অন্যান্য রিসেপ্টর প্রোটিনের সঙ্গে যদি মিলে যায় সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে।

সবচেয়ে ভয়াবহ যে বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন তা হলো- যদি জিন সিকুয়েন্স পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিকর পোকা ওই বিষের বিপরীতে প্রতিরোধী (resistant) হয়ে যায়, তাহলে ওই বিটি বেগুনের জিন আর কাজ করবে না। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মহামারী আকারে ফসলের ক্ষতিসাধন করবে। এ ক্ষতি থেকে বাঁচতে উন্নতমানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে হবে, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।তিনি আরো বলেন, যদি বিটি গবেষকরা নিশ্চিত করতে পারেন যে বিটি জিনের সিকুয়েন্স সহজে পরিবর্তিত হবে না বা নির্দিষ্ট সময় পর পর গবেষণা করে প্রাপ্ত ফলাফল পর্যালোচনা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিংবা বিটি ফসলের সঙ্গে অন্যকোনো ফসলের সংস্পর্শ আসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেক্ষেত্রে বিটি বেগুন দেশে চাষ করার জন্য অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় একদিকে যেমন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হবে অন্যদিকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে মানুষ।বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৪ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ - See more at: http://www.banglanews24.com/new/%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE/264584-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%B0%3F.html#sthash.wT390gQQ.dpuf

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পুতুল এর ছবি

http://de.wikipedia.org/wiki/Monsanto

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।