বাংলাদেশে "জিটি" বেগুন- “জিটি” খাবারকে না বলুন!

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: সোম, ০৩/০৩/২০১৪ - ৬:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ব্রিটেনের বৈজ্ঞানিক মহলে খাদ্য-বিষয়ক গবেষণায় খুব নামডাক ড: আরপাদ পুজতাই এর। ছোট্ট একটি সাক্ষাতকার দিলেন ব্রিটিশ টেলিভিশনে। বললেন, “জিটি-খাদ্যের কার্যকরীতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই আমার। কিন্তু এটি বৈধ করার আগে অবশ্যই সুদূরপ্রসারী পরীক্ষা নিরীক্ষার দরকার। বর্তমান এই অবস্থায় এই প্রযুক্তির কোনো ধরণের খাদ্য গ্রহণ করতে রাজি নই আমি”। নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে নিজের কিছু পরীক্ষার ফলাফল তুলে ধরলেন তিনি। কয়েকটি ইঁদুরকে জিটি-আলু খাওয়ানো হয়েছিল। তাতে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নানা ধরণের বিকৃতি পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের ক্ষতও দেখা যায় ইঁদুরগুলোর শরীরে। বক্তব্য প্রদানের কয়েক ঘণ্টার মাঝেই শুরু হয়ে গেলো পুজতাইএর উপর রাজনৈতিক বোমা বর্ষণ। নিজের রিসার্চ নিয়ে যে কোনো বক্তব্য প্রকাশ করতে কঠোর নিষেধাজ্ঞার খড়গ পড়ল তার মাথায়। উপর মহলের নিদারুণ রাজনৈতিক পেষণে দিন-কয়েকের মাঝেই তার গবেষক জীবনে ইতি সহ ব্যক্তিগত জীবনকে ধ্বংস করে দেয়া হল। এই নিদারুণ স্পর্শকাতরতার কারণ কি? জিটি-প্রযুক্তির খাদ্যকে পেটেন্টের দখল নিয়ে বাজারজাত করে বড়ো বড়ো সংস্থাগুলো যে আর্থিক লাভ, তাতে বাগড়া পড়াতেই এই স্পর্শকাতরতা। এই সংস্থাগুলো পৃষ্ঠপোষকতায় আছে বড়ো বড়ো রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন নেতার দল। সেই নেতাদের গডফাদার ভূমিকায় আছে মনসানোর মতো অসীম ক্ষমতাধর ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। সুতরাং প্রতিবাদী সাবধানী বৈজ্ঞানিকের ঘাড়ে খড়গ পড়াটাই স্বাভাবিক।

আমি কোনো বিজ্ঞানী নই। কিন্তু জিটি-প্রযুক্তিগত খাদ্যের শুধুমাত্র বিজ্ঞানীদের থালাতেই নয়, আমার থালাতেও স্থান। সুতরাং এ বিষয়ে কথা বলার অধিকার আমারও আছে। উদ্ভিদের জিনের কোনো এক অংশকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয় কোনো এক ব্যাকটেরিয়ার জিনের অংশ, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের প্রতিকুলে নিজের ভেতরে প্রতিরোধ তৈরি করা যার কাজ। কিন্তু উদ্ভিদের সাথে প্রাণীর মিলন? নব্বুইয়ের দশকে “বিএসএ” এর আক্রমণে লণ্ডভণ্ড পৃথিবী। হাজার হাজার গবাদিপশুকে হত্যা করতে হয় শুধুমাত্র ইউরোপেই। “বিএসএ” কারণ? পশুর (এমনকি গরুরও) হাড় শুকিয়ে চূর্ণ করে তৃণভোজী গরুকে প্রাণীজাত খাবার খাবার খাওয়ানো হয়। তাতে গরু মোটাতাজা হলেও ভাঙ্গা হয় প্রকৃতির নিয়ম। এই জিন ম্যানুপুলেশনে কি একই কাজ নয়? ফলাফলে গরুর মতো মানুষের বেলাতেও এমন কিছু যে ঘটবে না, এ পরীক্ষা আজ অবধি কখনোই করা হয়নি। এটি শুধুমাত্র আমার কথা নয়, বিভিন্ন গবেষকদের মিলিত বক্তব্য। এর বিরুদ্ধ বক্তব্যও থাকতে পারে। কোনটি বেছে নেব আমরা? অন্ধের মতো প্রকৃতির নিয়ম ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষাকে অবহেলা করে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করাবো না আরও সাবধানী হয়ে সুদূর প্রসারী পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নিজের সিদ্ধান্ত নেব। কোনটি বেশি বিপদজনক আমাদের উত্তরসুরীর জন্যে? আমরা কি চাই, আমাদের উত্তরসূরিরা ড: আরপাই এর ইঁদুরের মতো শারীরিক বৈকল্য নিয়ে জীবন শুরু করুক!

“জিটি খাবারে এই অবধি সবচাইতে প্রকট ভাবে যা চোখে পড়েছে, সেটি হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ শক্তির পরিবর্তন”, বলেছেন ক্রিষ্টফ থেন, এক জিন বিশারদ। ইঁদুর থেকে শুরু করে শুয়োর অবধি বিভিন্ন পশুর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা গেছে, এই খাবার পরিপাকতন্ত্রে যাবার পরই প্ররিরোধ ক্ষমতা পরিবর্তিত হতে শুরু করে। এর প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে, সে অজানা। এই অজানা দিকটাই সবচাইতে বড়ে সমস্যা। সুদূর প্রসারী পরীক্ষা নিরীক্ষা তো দূরের কথা, কোনো নর্ম বা স্ট্যান্ডার্ড ও স্থির করা হয়নি।

Wisconsin University তে জিন-বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেন ড: ব্রুস লিপটন। সেই সাথে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারি বিষয়েও গবেষণা করেন তিনি। জিটি প্রযুক্তির এই “বুদ্ধিমত্ত কোষ” সম্পর্কে মানবসমাজকে সাবধান করেছেন তিনি। তার কথানুযায়ী, এ কথা ভুললে চলবে না যে, আমরা প্রকৃতির সাথে আমাদের জেনেটিক ভাগ্য নিয়ে মিলেমিশে বাস করি। জিটি-খাদ্য হজম-ক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করে। “বুদ্ধিমত্ত কোষ” নামে একটি বই লিখেছেন তিনি। তার কথানুযায়ী, প্রকৃতির ভারসাম্য যে ভাবেই বিনষ্ট করা হোক না কেন, গাছ কেটে ধ্বংস করা বা ওজন স্তর নষ্ট করা বা জেনেটিক পরিবর্তন, এর সর্বশেষ প্রভাব মানুষকেই বহন করতে হয়।

জিন ব্যবসার হোতা, বিশেষ করে মার্কিনীরা তাদের প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে কতোটা সতর্ক, “উইকি লিকের” পাতাতেও তার স্থান পেয়েছে। সেখানে মার্কিন আর স্পেনের হোতাদের বিভিন্ন আলোচনায় জেনেটিক খাদ্যের প্রশ্নে ইউরোপিয়ান অনীহার কথা বলে সাবধান করে দেয়া হয়। আসলেই ইউরোপের সাধারণ মানুষ এই প্রশ্নে বেশ সাবধান। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ খুঁজে খুঁজে জিনপ্রযুক্তি ও পেসটিসাইডমুক্ত খাদ্য কেনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এদের ক্রেতার সংখ্যাও কম নয়। এটিও একটি ব্যবসা, তবে এদের প্রভাব মনসানোর তুলনায় নিতান্তই নস্যি। তবে ইউরোপিয়ানদের ভারী পকেটে অনেক কিছুই করা সম্ভব, যা আমাদের দেশে সম্ভব নয়। কিন্তু সেজন্যে নিজেদের ভেতরের সচেতনতাকে বিসর্জন দিতে হবে?

আর্জেন্টিনাতে এই প্রযুক্তিতে সয়াবিনের চাষ। কৃষিভূমিতে সয়াবিন ছাড়া অন্য কোনো উদ্ভিদ বেঁচে থাকতে পারে না। সে কারণে ভেতর থেকে জিন পরিবর্তন ও বাইরে থেকে আগাছা ধ্বংসের জন্যে ছড়ানো হয় গ্লুফোসাট। সয়াবিনের বীজ সহ কীটনাশক গ্লুফোসাটের একক বানিজ্যকরণ করে মনসানো। মনসানোর মনোপলির মতোই প্রকট পুরো কৃষিভূমি জুড়ে সয়াবিনের মনোপলি। বাংলাদেশের আয়তনের চাইতে দশগুণ বড়ো এলাকা জুড়ে সয়াবিন আর সয়াবিন। এই মনোপলির চাপে জমি আর প্রকৃতির কি অবস্থা হতে পারে, সেটি অনুমান করতে গিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞানী হয়ে হয়না। আর গ্লুফোসাট মানুষের পেটের জন্যে বিষাক্ত কি না, তার প্রমাণ এটিই করে যে, বাসভূমির কাছাকাছি যে সব কৃষিভূমি, সেখানে গ্লুফোসাট ব্যবহার নিষিদ্ধ।

অন্ধ্র প্রদেশের তুলা চাষি গজানন্দ গটাওয়ারের সামনে শুধুই অন্ধকার। প্রথাগত পদ্ধতির তুলা-বীজ বাজার থেকে উধাও। ধার দেনায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত, আকাশচুম্বী মূল্যে মনসানোর জিটি বীজ আর কীটনাশক কেনার সামর্থ্য তার নেই। অনেকেই এই বীজ কিনে সর্বস্বান্ত। যে পরিমাণ ফলন আশা করে কিনেছে অনেকে, তার সামান্যও হয়নি। সুতরাং স্ত্রী সন্তানের ভরণপোষণে অসামর্থ্য গজানন্দের সামনে একটি পথই খোলা, আত্মহত্যা। সে পথটিই বাছতে হল তাকে। গত দশ বছরে প্রায় দুই লক্ষ চাষিকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। যদি বলি, যেমন করে গ্লুফোসাট আগাছা ধ্বংস করার এক অস্ত্র, মনসানোর তুলা চাষ-নীতি তেমনি করেই গরীব চাষিদের নিশ্চিহ্ন ভয়াবহ আরেক অস্ত্র, তাহলে ভুল বলা হবে কি?

যাদের জিটি-খাদ্যের বিপক্ষে অবস্থান, তাদের বেশিরভাগই সাধারণ কৃষক, পরিবেশবাদী সংগঠন ও সুস্থভাবে জীবনযাপনের প্রত্যাশী কিছু মানুষ। এদেরকে মহল আখ্যা দিয়ে যারা আর্থিক প্রতিপত্তির লালসায় পুরো বিশ্বকে কব্জা করতে চায়, তাদেরকে মানব উপকারী সাজানো কি “উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে” চাপিয়ে দেয়া নয়? মনসানো থেকে শুরু করে আরও কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মিলে খাদ্যকে পুঁজি করে সারা পৃথিবী জুড়ে নতুন উপনিবেশিক ধারা স্থাপন করার অপ্রয়াসে লিপ্ত। শিক্ষিত শুভ-বুদ্ধিসম্পন্ন কেউ কি করে কেউ তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে? এর প্রতিবাদীদের মহল আখ্যা দেয়া কি পৃথিবীর ক্ষমতাধরদের অর্থলিপ্সাকে আড়াল রেখে কোনো রাজনৈতিক চাল নয়? প্রযুক্তিগত আলোচনাতেও এই মিথ্যাচার ছড়িয়ে দেবার প্রবণতার প্রতি নিন্দা জানাই। ফরহাদ মজহার রাজনৈতিক বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার বিকৃত বিতর্কিত অবস্থানের কারণে যথাযথভাবেই এদেশের স্বাধীনতা-পন্থী বিবেকের কাছে ধিক্কৃত। এই ধিক্কারের সাথে আমিও সমস্ত প্রাণশক্তিতে গলা মেলাই। কিন্তু পুরো আলাদা একটি বিষয়ের সাথে সে ধিক্কারের তুফানে পাল তুলে, সেইসাথে আরেক লেখিকা মহিলাকে উড়িয়ে দিয়ে রঙের ফানুসে যে পাল ওড়ানো হয়, সেটি কি সুবিধাবাদীতার দোষে দুষ্ট নয়?

জানি, বর্তমান পৃথিবীর আনন্দ আর আর্থিক প্রতিপত্তির পেছনে পাগলপারা ছুট। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর পতনের পর ভোগ-তান্ত্রিক চিন্তার প্রবল চোটপাট। এই পতনের কারণও মানুষ হিসেবে আমরা নিজেরাই। রাষ্ট্র আর সমাজতান্ত্রিক চিন্তা যতদিন ছিল, আমাদের মগজেও এর প্রভাব কোনো না কোনোভাবে অতি সামান্য হলেও পড়তো। আমরা অতি সামান্য সময়ের জন্যে হলেও আমাদের পাশের মানুষটি, আমাদের পরের মানুষটির, সমাজটির কথা ভাবতাম। পুঁজিবাদী শক্তিগুলোর শক্তিবৃদ্ধি অনেকের কাছেই সমাজতান্ত্রিক চিন্তার পরাজয়ের প্রমাণ। সেই সাথে উধাও আমাদের মগজ থেকে শুভবুদ্ধির শেষ চিহ্নটুকুও। অর্থ আর ভোগের লালসায় পাগল এ পৃথিবী! এই সুযোগে মনসানো জাতীয় কিছু শক্তিধর সুযোগসন্ধানী মার্কিনী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নতুন উপনিবেশিক শোষনপন্থা নিয়ে চেপে বসেছে আমাদের ঘাড়ে। এদের হাতে ক্রীড়নক কিছু বিজ্ঞানী ক্রীতদাসের মতো বিবেকহীন নতুন তথ্য তুলে ধরছে আমাদের সামনে। আর আমরা বগল বাজিয়ে বাহবা বাহবা আওয়াজ তুলে নিজেদের পাশের মানুষের, পরের মানুষের কথা ভুলে খাল কেটে কুমীর আনছি ঘরে। এর অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে আমাদের দেশের মতো গরীব একটি দেশ কতোটা দাঁড়াতে পারবে, তার উত্তর জানা নেই, কিন্তু একজন সচেতন মানুষ হিসেবে প্রতিবাদী অবস্থান ধরে রাখাটা কর্তব্য মনে করি।


মন্তব্য

সজীব ওসমান এর ছবি

১. বিটি-বেগুন কে 'জিটি-বেগুন' বলছেন কেন জানতে পারি?

২. কোন পরীক্ষারই রেফারেন্স দেন নি। বাংলা থেকে নাম ইংরেজী করে করে খুঁজতে খুবই অসুবিধা হয় রেফারেন্স এ এসে পৌঁছাতে।

৩. Árpád Pusztai এর কাজ সম্বন্ধে উইকি তে কি বলেছে দেখেছেন? রয়াল সোসাইটি অফ মেডিসিন তো পুরাই বাতিল করে দিল তার দাবী। আর আপনি যতটুকু দাবী করেছেন যে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, ষড়যন্ত্র কোন সুযোগ না থাকে সেজন্য পত্রিকার রিভিউয়ারগণ কি করেছে দেখেছেন? কতজন রিভিয়ার নিয়েছে দেখেছেন? Pusztai affair অংশের শেষ দুই প্যারা পড়ে ফেলুন:

Pusztai's experiment was eventually published as a letter in The Lancet in 1999.[9] Because of the controversial nature of his research the letter was reviewed by six reviewers - three times the usual number. One publicly opposed the letter, another thought it was flawed, but wanted it published "to avoid suspicions of a conspiracy against Pusztai and to give colleagues a chance to see the data for themselves," while the other four raised questions that were addressed by the authors.[10] The letter reported significant differences between the thickness of the gut epithelium of rats fed genetically modified potatoes, compared to those fed the control diet.[9]

The Royal Society of Medicine declared that the study ‘is flawed in many aspects of design, execution and analysis’ and that ‘no conclusions should be drawn from it’.[11] For example, too few rats per test group were used to derive meaningful, statistically significant data.[11]

৪. এধরনের রিপোর্ট জিএম-বিরোধী গ্রুপ খুব সহজেই ছড়ায়। সাধারন কৃষকের এতে কোনই দোষ নাই, কৃষকদের মধ্যে চাষ এবং খাদ্যভীতি ঢুকিয়ে দেয়া খুব সহজ। দোষটা হল সংঘবদ্ধ চক্রের।

সজীব ওসমান এর ছবি

৫. গত ১৩ বছর ধরে সোনালী ধানের উপর পরীক্ষা হয়েছে। সবগুলো পরীক্ষাতে পাশ করেছে। কত দীর্ঘ পরীক্ষা চান এবং কিকি চান সেটা স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করলে এরকম ধোঁয়াশা মাখা আবেগযুক্ত বক্তব্য থেকে কিছু বোঝার উপায় নাই।

৬. একবার বলছেন 'সুদীর্ঘ পরীক্ষার পরে সিদ্ধান্ত নেয়া শ্রেয়', কিন্তু টাইটেলে ইতমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন 'জিটি-কে না বলুন'। কেমন হয়ে গেলনা?

৭. গণহারে একটা প্রযুক্তি কখনই খারাপ হতে পারেনা। কোম্পানি স্বার্থের বাইরে এসে যদি জিএম-টেক পৃথিবীর মানুষের উপকারে আসে, খাদ্যাভাব, অপুষ্টি দূর করতে পারে তবে তাকে অন্ধের মত 'না' বলাটা মানবজাতির জন্য ক্ষতিকর।

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আগেই বলে নিয়েছি, আমি কোনো খাদ্যবিজ্ঞানী নই। আমার রেফারেস্স গুলো জার্মান ভাষার। ইংরেজির চাইতে সেখানেই আমি বেশী পারদর্শী।

১) জিটি বলতে গিয়ে জিন টেকনিক বোঝাতে চেয়েছি।
২) Dr. Bruce Lipton,
Lipton warnt davor, zu vergessen, dass die Menschen in einem Gleichgewicht mit der Welt leben und dass sie mit allen anderen Lebewesen ein gemeinsames genetisches Schicksal teilen. Die gentechnische Veränderung von Pflanzen und Nahrung hätte beispielsweise Auswirkungen auf den menschlichen Verdauungsprozess, so der Autor von „Intelligente Zellen“.
Christoph Then,
Am auffälligsten sind bisher immer noch die immunologischen Befunde", räumt daher auch Christoph Then ein, Gentechnik-Experte von Testbiotech, einem Institut für Technikfolgenabschätzung. Studien an verschiedenen Tieren - von der Maus bis zum Schwein - hätten inzwischen belegt, dass das Immunsystem reagiert, wenn Gentech-Lebensmittel in den Verdauungstrakt geraten. Ob und welche Folgen das habe, sei aber unklar.
আপনাকে হয়তো অনুবাদ করে নিতে হবে।

৩) সারা পৃথিবীতে যে পরিমান চায়ের বীজ সরবরাহ করা হয়, দুই তৃতীয়াংশ দশটি বড়ো বড়ো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হাতে।

মনসানো, ইউএসএ: বাৎসরিক বিক্রি: ৪৯৬৪ মিলিয়ন ডলার বাজারের অংশ: ২৩%
Du Pont, ইউএসএ: বাৎসরিক বিক্রি: ৩৩০০ মিলিয়ন ডলার বাজারের অংশ: ১৫%
Sygento,সুইস: বাৎসরিক বিক্রি: ২০১৮ মিলিয়ন ডলার বাজারের অংশ: ৯%
সুত্র: Food crash: Felix zu Löwenstein
বাকীদের নাম দিচ্ছি না। এদের কাছে সারা পৃথিবীটাই নস্যি। রয়াল মেডিসিন তো কোন ছাড়! তাছাড়া ওইকিপেডিয়ার প্রতি কতোটা বিশ্বাস রাখা যায়?

৪) তিন নম্বরে যে সব বড়ো বড়ো হোতাদের কথা বললাম, তারা সংঘবদ্ধ চক্রের নাকি সাধারণ ভোক্তা ও কৃষক? কাদের হাতের পুতুল পৃথিবীটা?
Gajanand Gattawar war verzweifelt, sah keine Zukunft mehr. Der Baumwollbauer war hoch verschuldet – und beging Selbstmord. So wie schätzungsweise 200 000 Kleinbauern in Indien in den letzten zehn Jahren. Die Baumwollbauern im sogenannten Selbstmordgürtel Indiens müssen jährlich teures, genverändertes Saatgut kaufen, viele verschulden sich massiv. Die Erträge sind aber nicht so hoch wie die der subventionierten Agro-Industrie in den USA und Europa. Die Weltmarktpreise reichen nicht zum Leben und zum Schuldenabbau schon gar nicht. Eine Experten-Untersuchung für das Oberste Indische Gericht kommt zu dem Schluss, dass die Indus-trie stark von transgener Agrotechnik profitiert habe, bei der überwiegenden Mehrheit der Bauern aber kein positiver Effekt angekommen sei.
এটি জার্মনির এক নম্বর টিভি প্রোগ্রাম ARD একটি রিপোর্ট।

৫) কী কী পরীক্ষা দরকার সেটি স্থির করা দ্বায়িত্ব নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের। এদেরকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্রীতদাস হলে চলবে না।

৬) আপাতত অবশ্যই না।

৭) গনহারে কখনোই খারাপ নয়। অর্থ ও ক্ষমতালিপ্সু ব্যবসায়ীদের হাতে পড়লে খারাপ হয়ে যায়। আর যেখানে বেঁচে থাকার জন্যে খাবারের কথা আসছে, সেখানে সামান্যতম সন্দেহ থাকলেই অনেক ভাবতে হয়। চোখের আড়ালে অনেক কিছুই ঘটছে, আমরা থামাতে পারছি না। চোখের সামনে যেখানে সে সম্ভাবনা, সেখানে সাবধান হওয়া, সাবধান করা অবশ্যই কর্তব্য। বর্তমান অবস্থায় এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্রীড়নক হয়ে জিটি খাবার মানবজাতির জন্যে আরো বেশী বিপদজনক।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সজীব ওসমান এর ছবি

'রয়াল মেডিসিন তো কোন ছাড়! তাছাড়া ওইকিপেডিয়ার প্রতি কতোটা বিশ্বাস রাখা যায়?'

আপনার কাছ থেকে এটা শুনে হতাশ হলাম।

উইকিপিডিয়া নিজে কোন মন্তব্য দেয়না কোন বিষয়ে। তাই 'তার উপর বিশ্বাস রাখার' কিছু নাই। কি রেফারেন্স ব্যবহার করা হয়েছে সেটা দেখুন। পত্রিকার রিভিউয়ারদের লেখা তো কেউ বানিয়ে দেয়নি, তাইনা?

রয়াল সোসাইটি অফ মেডিসিন কোন ছাড় মানে কি? আপনার ধারনা পয়সা দিয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্য ম্যানিপুলেট করা হয়েছে এবং তা করেছে রয়াল সোসাইটি অফ মেডিসিন? নাকি আপনার ধারনা বড় বড় কোম্পানিগুলো বৈজ্ঞানিক যেই তথ্য বলে সেটাই বিজ্ঞানীরা সঠিক হিসেবে ধরে নেয়? নাকি আপনার ধারনা রয়াল সোসাইটি অফ মেডিসিন এর বৈজ্ঞানিক তথ্যকে পাত্তা দেয়ার কিছু নাই? পরিষ্কার করুন।

বিজ্ঞান নিয়ে আপনার সবটুকু ধারনাই আমার কাছে অপরিষ্কার এবং ধোঁয়াশে মনে হয়েছে। সম্ভবত টিভি প্রোগ্রাম দেখে লিখেছেন বলে।

তীরন্দাজ এর ছবি

বিজ্ঞান নিয়ে আপনার সবটুকু ধারনাই আমার কাছে অপরিষ্কার এবং ধোঁয়াশে মনে হয়েছে। সম্ভবত টিভি প্রোগ্রাম দেখে লিখেছেন বলে।

কী করে জানলেন? আপনার কাছে যদি আমার লেখা ধোঁয়াশে মনে হয়, তাহলে আলোচনায় এলেন কেন?
এখানকার টিভি প্রোগ্রাম শুধুমাত্র টিভিতেই সীমাবদ্ধ থাকে না। সেটি নিয়ে আলোচনাও হয়। সেই আলোচনা থেকে নেয়া আমার লেখার সামান্য একটি অংশ। সেটি ভারতের উদাহরণ। পত্রিকা খুঁজে এর স্বপক্ষে ভুড়ি ভুড়ি আলোচনা পাবেন। এটি নতুন কিছু নয়। আর টিভি প্রোগ্রাম কী প্রহনযোগ্য নয়?

আপনি আগের উত্তরে সংঘবদ্ধ চক্রের কথা বলেছেন। সে চক্রের একটি নামও বললেন না। তাদের রেফারেনস কোথায়? আমিও সেখানে হতাশ। আমি যাদেরকে সংঘবদ্ধ চক্রে হিসেবে জানাতে চেয়েছি, তাদের কয়েকটা নাম তো দিলাম। প্রয়োজনে বাকীদেরও দিতে পারি।

উইকিতে যেমন ভালো ইনফরমেশন থাকে, সাজানো কথাও থাকে। উইকিতে অন্ধবিশ্বাস আমার নেই। কদিন আগে উইকিতে জামাতে ইসলামির করা ইতিহাস বিকৃতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

আপনি কি আমার কাছেই জিটি খাবারের বিরুদ্ধ মন্তব্য শুনলেন? আগে কখনও শোনেন নি? তাই আবারও আমার মুল কথাগুলো বলছি। এর জন্যে বিশেষজ্ঞ হবার দরকার পড়ে না।

এটি শুধুমাত্র আমার কথা নয়, বিভিন্ন গবেষকদের মিলিত বক্তব্য। এর বিরুদ্ধ বক্তব্যও থাকতে পারে। কোনটি বেছে নেব আমরা? অন্ধের মতো প্রকৃতির নিয়ম ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষাকে অবহেলা করে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করাবো না আরও সাবধানী হয়ে সুদূর প্রসারী পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নিজের সিদ্ধান্ত নেব। কোনটি বেশি বিপদজনক আমাদের উত্তরসুরীর জন্যে? আমরা কি চাই, আমাদের উত্তরসূরিরা ড: আরপাই এর ইঁদুরের মতো শারীরিক বৈকল্য নিয়ে জীবন শুরু করুক!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সজীব ওসমান এর ছবি

আমার আগে অনেকগুলি লেখা আছে সংগঠিত সংগঠন উল্লেখ করে। সেখানে উল্লেখ করেছি। আবারও করছি: গ্রীণপিস, জিএমওওয়াচ ইত্যাদি।

উইকি থেকে রেফারেন্স চেক করতে হয়। সেটা না করে 'উইকির কথা বিশ্বাস করিনা' বলাটা বালখিল্য আচরণ।

টিভি প্রোগ্রামে অনেক ধরনের কথা হয়। আমরিকার 'ফক্স নিউজ' বিভিন্ন দিক দিয়ে আলোচিত। আপনার টিভি নিয়ে আমার কোন ধারনাই নাই, যাচাইয়ের সুযোগও নাই। প্রকাশিত প্রবন্ধ রেফারেন্স হিসেবে দিলে আমি যাচাই করতে পারতাম।

বিজ্ঞান নিয়ে ধারনাটা হয়েছে আগের মন্তব্যে আপনার উল্লেখ করার বাক্যটি থেকে।

সেরালিনি'র পরীক্ষার উল্লেখও করেন অনেকে। যেটা মূল পত্রিকা থেকেই ভুয়া বিবেচনায় তুলে নেয়া হয়েছে। এখন আপনি সেটা নিয়েও বারবার রেফারেন্স দিয়ে বলতে পারেন, 'দেখেছেন?' আরপাই এর পরীক্ষা যে বায়াস্ড সেটা আমি আগের সূত্রেই উল্লেখ করেছি। সেটা বুঝতে চেষ্টা না করে বারবার একই কথা বললে কি বলবো বলুন?

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনি গ্রীণপিস, জিএমওওয়াচ কে সংঘবদ্ধ চক্রের সাথে তুলনা করছেন। সাবাস! এরা সংঘবদ্ধ বটে, তবে চক্র নয়। এরা একটি আন্দোলন। পৃথিবীতে পরিবেশ রক্ষার প্রশ্নে যতটুকু ভালো, তার বেশিরভাগ এদের হাতেই হয়েছে। এদের সাথে কাজ করি না বটে, পরিবেশের প্রশ্নে এদের মতো এতটা সচেতনও আমি নই। তারপরও এদের প্রতি আমার ও সাধারন মানুষের যথেষ্ট সমর্থন রয়েছে। ফুকোশিমার পর জার্মনিতে আনবিক শক্তি চালিত বিদ্যুত আহরণ থেকে সরে এসেছে। এটিও গ্রীণদের (রাজনৈকিত দল, গ্রীণপিসের নীতিকে সমর্থন করে) প্রাথমিক দাবী। প্রথমে চারণোবিল ও পরে ফুকোশিমার পর এই উপায়ে বিদ্যুত আহরণ মানবজাতির জন্যে মঙ্গলজনক বলতে আর রাজী নই আমি। এই সাথে আরো অনেক কর্মপ্রবাহ আছে এদের, যার প্রতিটিই সমাজ ও মানবকল্যানমূলক। কেনটি মানবকল্যান, এ নিয়ে মতদ্বৈধতা থাকলেও এরা যে অর্থলাভের জন্যে এই আন্দোলন করছে না, সেটি সবারই জানা। আপনি সেটি জেনেও জানেন না। আপনি বিজ্ঞানী না রাজনীতিবিদ, নাকি দুটোই?

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সজীব ওসমান এর ছবি

'গ্রীণপিস' রেজিষ্টার্ড অর্গানাইজেশান, মোটেই 'মুভমেন্ট' নয়। তাদের কাজ 'মুভমেন্ট' এর মত। তবে তাদের সম্বন্ধে এটা পড়ে নিন:

Greenpeace is the largest environmental organization in the world, with an international membership of over 3 million and offices in over 40 countries. Forbes magazine once described it as “a skillfully managed business” with full command of “the tools of direct mail and image manipulation — and tactics that would bring instant condemnation if practiced by a for-profit corporation.” But Greenpeace has escaped public censure by hiding behind the mask of its “non-profit” status and its U.S. tax exemption. In other countries, however, Greenpeace has not been as lucky: Both Canada and New Zealand have revoked the organization’s non-profit status, noting that the group’s overly politicized agenda no longer has any “public benefit.” [সূত্র]

এবার, আরেকটি তথ্যে আসুন: প্রাক্তন গ্রীণপিসের প্রেসিডেন্ট বলছেন, 'গ্রীণপিস' এর সোনালী ধানের বিরুদ্ধে অবস্থান হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

গতবছর তিনি টরন্টোতে প্রতিবাদও করে গেছেন 'গ্রীণপিস' অফিসের সামনে।

আমি দুটোই, এবং তাতে কোন সমস্যাও দেখিনা। হাসি

তীরন্দাজ এর ছবি

গ্রীনপিসকে উইকিপেডিয়া এভাবে দেখে:

গ্রিনপিস হল একটি বেসরকারী[২] আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদি সংস্থা। বিশ্বের চল্লিশটি দেশে এর শাখা রয়েছে যা নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম থেকে পরিচালিত হয়।[৩] এই সংস্থাটির মূল উদ্দেশ্য পৃথিবী নামক এই গ্রহের সব ধরনের জীববৈচিত্রের পরতিপালনের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।[৪] সংস্থাটি সারা বিশ্বে বন্য পরিবেশ ধ্বংশ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, অধিক হারে মাৎস্য শিকার, বানিজ্যিক ভাবে তিমি শিকার এবং পারমানবিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রচারনা চালিয়ে আসছে। এই লক্ষ্যে সংস্থাটি উচ্চপর্যায়ে লবিং এবং সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহন গ্রহন করে থাকে। গ্রিনপিস কোন সরকারী অনুদান গ্রহন না করে এর প্রায় তিন কোটি সমর্থকদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহন করে থাকে।[৫][৬]

ষাট এবং সত্তোরের দশকে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যানকুভারে পারমানবিক শক্তির বিরোধিতা করার মাধ্যমে এই সংস্থাটিস সূচনা ধটে। আলাস্কায় যুক্তরাষ্টের পারমানবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য ১৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত ডোন্ট মেক এ ওয়েভ কমিটি ফিলিস কোরম্যাক নামের একটি জাহাজ ভ্যানকুভার থেকে পাঠায়। ফিলিস কোরম্যাক জাহাজটির নাম সেসময় পরিবর্তন করে গ্রিনপিস রাখা হয়। পরবর্তীতে ডোন্ট মেক এ ওয়েভ কমিটিও গ্রিনপিস নামটি ধারন করে।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সজীব ওসমান এর ছবি

- নিজের পছন্দমত অংশটুকু উইকিপিডিয়া থেকে নিয়ে অন্য অংশটুকুর ক্ষেত্রে 'আমি উইকিপিডিয়া বিশ্বাস করিনা' অবস্থানে আপনি নেই সেটা ধরে নিলাম। সেটার জন্য সাধুবাদ।

- দুইটা সূত্রই বিবেচনায় নিয়ে তাহলে গ্রীণপিস যে 'আন্দোলন' শুধু নয় সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। তাদের ভাল কাজের কোনই সমালোচনা আমি করছিনা। কিন্তু সংঘবদ্ধভাবে অশুভ তথ্য ছড়ানোর ঘোর বিরোধী আমি।

- গ্রীণপিস এর এককালীন প্রেসিডেন্টই যখন তাদের জিএমও বিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে কথা বলেন তখন আপনার কাছে ব্যাপারটা কেমন মনে হয় জানতে ইচ্ছুক। হাসি

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকে খুশী করার জন্যেইতো উইকি নিলাম। সফলতায় আনন্দিত।

আপনাদের মতোই বিভিন্ন বিজ্ঞনীরা যখন জিএমও বিরোধী অবস্থানে যান, আপনার কি তাদের তোয়াক্কা করেন?

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রাগিব এর ছবি

" তাতে গরু মোটাতাজা হলেও ভাঙ্গা হয় প্রকৃতির নিয়ম। এই জিন ম্যানুপুলেশনে কি একই কাজ নয়? "

-> এখানে বুঝলাম না। গরুকে প্রসেস্ড ফিড (যার অংশবিশেষ প্রাণিজাত) খাওয়ানো আর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মধ্যে তুলনা আসে কীভাবে? বিএসই (নট বিএসএ) হলো এক ধরণের অসুখ যা প্রিওন নামের এক রকমের মিসফোল্ডেড প্রোটিন এর কারণে হয়। এখানে তো ঐ গরুর জেনেটিক কোনো পরিবর্তন হয়না। (অনেকটা অসুস্থ গরুর মাধ্যমে সংক্রমণের মতো, তফাত হলো প্রিওনকে ঠিক জীবিত জীবাণু বলা চলে না)।

সেটার সাথে তো জেনেটিকালি মডিফাইড বেগুনের একেবারেই কোনো সম্পর্ক বা তুলনা হয় না।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সজীব ওসমান এর ছবি

হাসি

সেইসঙ্গে আছে প্রকৃতির নিয়ম ভাঙা। আমি আগেও বলেছি কয়েক জায়গায়। মানুষ যখন কৃষিকাজ করে তখনও এনাদের অর্থে প্রকৃতির নিয়ম ভাঙা হয়। একটা নির্দিষ্ট স্থানে শুধু একধরনের উদ্ভিদের গণউৎপাদন প্রকৃতিবিরুদ্ধ। প্রকৃতির নিয়ম না ভাঙলে (এঁদের অর্থে) আজকের মানবসভ্যতাই তৈরি হতনা।

দিগন্ত এর ছবি

গোটা মানবসভ্যতা তৈরি হয়েছে প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তীরন্দাজ এর ছবি

গোটা মানব সভ্যতা বলতে কী বোঝেন? এই মানব সভ্যতার বয়েস কতো? প্রকৃতির সহ্যক্ষমতার পরিমাপের কোনো উপায় আছে কি, নাকি সে ক্ষমতা অসীম। প্রকৃতি কি কোনো প্রতিশোধ নেয়নি আজ আবধি? বুড়িগঙ্গা নদীর বাতাস কেমন লাগে আপনার?

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

দিগন্ত এর ছবি

মানব সভ্যতার বয়স হাজার দশেক বছর ধরতে পারেন, আবার শ'-দুয়েক বছর ধরতে পারেন। শেষ দুশ বছরে পৃথিবীর যা পরিবর্তন করা হয়েছে, আগের দশ হাজার বছরে ততটা হয়নি। সমস্যা হল, আমাদের এখন দুশ' বছর পুরনো পৃথিবীতে পাঠানো হলে কেউই থাকতে পারব না, প্রকৃতির প্রতিশোধ গুলো সত্ত্বেও।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

দেখুন আপনি দুটো জিনিস একসাথে উপস্থাপন করেছেন যাদের মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠিত সম্পর্ক নেই।
সমস্যা এক - বি টি বেগুন ও তার অপকারিতা
সমস্যা দুই - কিছু বহুজাতিক সংস্থার লাভ করার অপচেষ্টা।
দুটোকে আলাদা করে দেখে কি সমস্যা গুলোকে সমাধান করা সম্ভব?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

পুতুল এর ছবি

"গোটা মানবসভ্যতা তৈরি হয়েছে প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে।"

সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত। মানব সভ্যতা এগিয়েছে প্রকৃতিকে আশ্রয় করে, প্রকৃতির সঙ্গে। প্রকৃতিকে প্রতিপক্ষ নয় বন্ধু ভাবতে হবে।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সজীব ওসমান এর ছবি

প্রকৃতির নিয়ম ভাঙা (লেখক যে অর্থে বুঝিয়েছেন) মানে প্রকৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কে বললো? প্রকৃতির নিয়ম মানুষ প্রতিটি সেকেন্ডে ভাঙছে, তার মানে এই নয় যে সে প্রকৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে। মানুষ নিজেই প্রকৃতির অংশ। মানুষকে বিপন্ন হতে দিয়ে প্রকৃতি 'বাঁচিয়ে' রাখার কোন মানে নাই।

দিগন্ত এর ছবি

প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে চললে না খেতে পাওয়া মানুষদের মরতে দিতে হবে। কারণ প্রকৃতি এভাবেই পপুলেশন কন্ট্রোল করে এসেছে। পৃথিবীতে সাত বিলিয়ন মানুষ প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব্ব করে পাওয়া সম্ভব ছিল না। আপনি যদি ৩-৪ বিলিয়ন মানুষকে মরতে দিতে চান তাহলে জেনেটিক মডিফিকেশনের কোন দরকার পড়বে না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

পুতুল এর ছবি

বলে রাখি দুনিয়াতে না খেয়ে যখন যত মানুষ মারা গেছে তখন সব মানুষ খেয়ে বাঁচতে পারবে এমন খাদ্যশষ্য কিন্তু ছিল। ফলনের অভাবে নয়, সময় মতো অভুক্তদের কাছে খাবার পৌঁছানো ছিল সমস্যা।

এখন দুনিয়াতে যে পরিমান শষ্য উৎপন্ন হয় তাতে পৃথিবীর সব মানুষ খেয়ে আরো কিছু সঞ্চয় থাকবে। কিন্তু তার পরেও মানুষ না খেয়ে মরে কেন! প্রশ্নটার একটা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দরকার।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

দিগন্ত এর ছবি

আপনি তো কারণটা বলেই দিলেন - ডিস্ট্রিবিউশন। তখন সেটা সমস্যা ছিল, এখনও আছে। কিন্তু প্রসঙ্গ সেখানেই শেষ নয়, প্রকৃতির নিয়মে, মানুষের হাতে খাবার পৌঁছে দিলে মানুষ আরও বেশী বংশবৃদ্ধি করবে। নতুনদের হাতে খাবার কে তুলে দেবে? আপনি বিশ্বের জনসংখ্যার একটা তুলনামূলক চার্ট দেখুন -


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

পুতুল এর ছবি

"প্রকৃতির নিয়মে, মানুষের হাতে খাবার পৌঁছে দিলে মানুষ আরও বেশী বংশবৃদ্ধি করবে।"

ভেবে দেখুন; আরো আরো খাদ্য আরো আরো মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন, নাকী জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন করবেন?

গ্রাফিকটা ভয়াবহ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

দিগন্ত এর ছবি

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কিন্তু প্রকৃতির নিয়মবিরুদ্ধ। এই ভয়াভহ গ্রাফিকের কারণেই কিন্তু জি এম ফুড লাগছে, নাহলে লাগত না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

“জিটি” খাবারকে না বলুন!

আপনার লেখার শিরোনামটা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি কোন থেকে অবিবেচনা প্রসূত। কেননা যদি কোন নির্দিষ্ট জিটি খাবার (বেগুন, আলু যেটাই হোক) যদি খারাপ হয়েও থাকে তাহলেও তাবত জিটি খাবারকে এখুনি `না´ বলা যাবে না। মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে কিভাবে সেটাকে ট্রায়াল দেয়া যায় সেটা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলতে দেয়া উচিৎ বলে মনেকরি। জেনিটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ার্ড খাবারের মাধ্যমেই খুব সম্ভবত ভবিষ্যতের পৃথিবীর খাদ্য চাহিদা মেটাতে হতে পারে। নতুন একটি টেকনোলজির ব্যাবহার নিয়ে আমাদের যেমন সতর্ক থাকতে হবে ঠিক তেমনি অযৌক্তিক ভাবে ভীতিও যাতে না ছরায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

উদ্ভিদের জিনের কোনো এক অংশকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয় কোনো এক ব্যাকটেরিয়ার জিনের অংশ, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের প্রতিকুলে নিজের ভেতরে প্রতিরোধ তৈরি করা যার কাজ। কিন্তু উদ্ভিদের সাথে প্রাণীর মিলন?

উদ্ভিদ এর সাথে প্রাণীর জিনের মিলন হলে কি ক্ষতি? আর ব্যাকটেরিয়াকে `প্রাণী´ অন্তর্ভুক্ত মনে করা না করাটাও তো নির্ভর করে আপনি কোন শ্রেণি বিন্যাসটি কে অনুসরন করছেন তার উপর। এই প্রশ্নটিতে পাঠকরা বিভ্রান্ত হবার সম্ভাবনাই বেশি।

পরের লাইনেই বলেছেন ´ বিএসএ´ আক্রমনের কথা। কিন্তু স্পষ্ট করে বলেননি ঘটনাটি কি? হাইপার লিঙ্কও দেননি। প্রতি মন্তব্যে ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করবেন আশাকরি।

তীরন্দাজ এর ছবি

আগেই বলেছি, আমি বৈজ্ঞানিক নই, সচেতন একজন মানুষ মাত্র!

এটি যে জেনেটিক চাষের সথে সরাসরি তুলনা নয়, সেটি স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে। তৃণভোজী খাবারে অভ্যস্ত প্রাণীদের পশুজাত খাবার সহ্য হয়নি। জেনেটিক ইন্জিনীয়ারিঙে উদ্ভিদের জিনের সাথে সংযোজিত হচ্ছে ব্যকরেরিয়ার জিন। এখানেই মিল, আর কিছু নয়। বাকীটা চাইলে নিজ ক্ষমতায় চিন্তা করে নিতে পারেন।

আমরা নিজেরা কতোটা জানি, সেটি নিয়ে তুলনা করা যেতে পারে। হয়তো আপনি আমার চাইতে বেশি জানতে পারেন, আমি হয়তো অন্য কারো চাইতে সামান্য বেশী। তবে আর যা জানিনা, তা এতো বিশাল যে, সে বিচারে আমরা সবাই সমান। জেনেটিক খাবারের এই অজানা দিকটাই তুলে ধরতে চাইছি বারবার। এই অজানা দিকটাকে অবহেলা করার সময় এখনও আসে নি বলে আমার ধারণা। মনসানটোর মতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এই অজানা দিকটাকে অবহেলা করে মানুষের ক্ষুধাকে ব্যবহার করে নিজেদের সম্পদ বাড়াতে চাইছে। আমার আপত্তি সেখানেই।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তীরন্দাজ এর ছবি

রাগিব,
এটি যে জেনেটিক চাষের সথে সরাসরি তুলনা নয়, সেটি স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে। তৃণভোজী খাবারে অভ্যস্ত প্রাণীদের পশুজাত খাবার সহ্য হয়নি। জেনেটিক ইন্জিনীয়ারিঙে উদ্ভিদের জিনের সাথে সংযোজিত হচ্ছে ব্যকরেরিয়ার জিন। এখানেই মিল, আর কিছু নয়। বাকীটা চাইলে নিজ ক্ষমতায় চিন্তা করে নিতে পারেন।

সজীব ওসমান,
প্রকৃতির নিয়ম কতটা ভাঙ্গা যেতে পারে? এর কোনো ডিন বা নর্ম আছে কি? জেনেটিক খাবারেরবে লাতেও এমনি কোনো পিন বা নর্মের কথা ভেবেছেন বিজ্ঞানীরা? ভ্যক্সিনে কি রোগ প্রতিষেধকের বাইরে কোনো ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া নেই? তারপরওএ নিতে বাধ্য হই বলেই নেই। জিটি খবারও খেতে হবে আমাদের, এখনও খেয়ে যাচ্ছি কি না, সেটিও বা কী করে নিশ্চিত হয়ে বলি? মনসানটোরা বাধ্য করলে অবশ্যই খেতে হবে।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পুতুল এর ছবি

খুব সময় উপযোগী একটা লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ তীরুদা।

আলোচনায়;

"সেইসঙ্গে আছে প্রকৃতির নিয়ম ভাঙা। আমি আগেও বলেছি কয়েক জায়গায়। মানুষ যখন কৃষিকাজ করে তখনও এনাদের অর্থে প্রকৃতির নিয়ম ভাঙা হয়। একটা নির্দিষ্ট স্থানে শুধু একধরনের উদ্ভিদের গণউৎপাদন প্রকৃতিবিরুদ্ধ। প্রকৃতির নিয়ম না ভাঙলে (এঁদের অর্থে) আজকের মানবসভ্যতাই তৈরি হতনা।"

এই ধরণের বাক্য প্রতিপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করে। "এঁদের" শব্দটি ব্যবহার না করলেও মনে হয় চলতো। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি মাত্র। আমাদের আলোচনায় জিন মানিপুলেটেড খাবার ব্যবহারে বিশেষ কোন প্রভাব ফেলবে বলে আমার মনে হয় না। কাজেই যারা আনঅর্গানিক খাবারের বিপক্ষে তাদেরকে হেয় করে কথা বলার কোন মানে হয় না।

আমাদের ভাবতে হবে; জিনেটিক মানিপুলেটেড খাবার দুনিয়ার সব মানুষের জন্য ভাল হলেই আমাদের জন্যও ভাল কীনা?
আমাদের দেশে নীল চাষও আমরা করে দেখেছি। হালের হাইব্রীড ধানের ভাতও খেয়েছি। এখন এসেছি টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং যুগে।
ফসলের উৎপাদ বেড়েছে বহুগুন। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ক্ষুধার্থ মানুষের মিছিল। তা হলে অতিরিক্ত উৎপাদিত খাদ্যশষ্য গেল কোথায়? বহু দফায় বহু গুন বেড়েছে চালের দাম। কৃষকের তো কোন উন্নতী হয়নি। কৃষিরও হয়নি।

ঢেঁকি ছাটা চাল নেই। আজকাল ধানের তুষ ছাটার মেশিন হয়েছে। কিন্তু কৃষকের লাঙ্গল এখনো বলদেই টানে। আমাদের দেশের কৃষি পশ্চিমের কৃষির সাথে এগোয়নি। জমি এত ছোটছোট ভাগে বিভক্ত যে, উন্নত চাষাবাদ প্রায় অসম্ভব।

জেনেটিক পরিবর্তন প্রকৃতি নিজেই করে। তার প্রয়োজনে। আমরা করলে দোষ কোথায়! দোষ নেই। কিন্তু আমারা কেন করবো? কারণ ছাড়া তো করে কোন লাভ নেই। ধরাযাক এখন দেশে চাষ হচ্ছে জেনেটিক মডিফাইড বেগুন। বাংলাদেশের মানুষ সব্জী হিসাবে বেগুন খায় ঠিকই তবে তারা ভাতে মাছে বাঙ্গালী। জেনেটিক মডিফাইড ইলিশ মাছ পুকুরে চাষ করার পদ্ধতি আবিস্কৃত হলে মন্দ হতো না। দুই হাজার টাকা এক কেজি ইলিশ মাছের দাম! এত অর্থকরী একটা খাদ্য কিন্তু কেউ সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। কারণ কোম্পানীর কেউ ইলিশ মাছ খায় না।

তারা তৈরী করে বেগুন। ধান তৈরী করে কারণ; তার বিশ্বব্যাপী চাহিদা। এখন আমাদের ভেবে দেখতে হবে সেই ভিটামিন সমৃদ্ধ ধান আমাদের পেটে সইবে কী না। ভাতের অভাবে দুনিয়াতে বহু মানুষ মরেছে। এখন ভিটামি ভাত খেয়ে ভাতের পাবে ফাও পাবে ভিটামিন। না খেয়ে মরার ভয় আর নেই। বলে রাখি দুনিয়াতে না খেয়ে যখন যত মানুষ মারা গেছে তখন সব মানুষ খেয়ে বাঁচতে পারবে এমন খাদ্যশষ্য কিন্তু ছিল। ফলনের অভাবে নয়, সময় মতো অভুক্তদের কাছে খাবার পৌঁছানো ছিল সমস্যা।

এখন দুনিয়াতে যে পরিমান শষ্য উৎপন্ন হয় তাতে পৃথিবীর সব মানুষ খেয়ে আরো কিছু সঞ্চয় থাকবে। কিন্তু তার পরেও মানুষ না খেয়ে মরে কেন! প্রশ্নটার একটা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দরকার।

এত খাবার থাকতে হাউব্রীড বীজ দিয়ে আরো অতিরিক্ত উৎপাদনের প্রয়োজনটা কী! গুড ভিটামিন যুক্ত ভাতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু দেখা যায় আমাদেরকে যারা ভিটামিন যুক্ত ভাত দিচ্ছে তাদের দেশে মানুষ ভাত খায় না। তা হলে তাদের ভিটামিনের অভাব ঘুচবে কী করে! অবশ্য তারা কেউই জেনেটিক মানিপুলেটেড খাবার খায় না। অর্গানিক ফুড গায়। জার্মানে রীতিমতো জিন খাদ্যশষ্য চাষই নিষেধ। বিক্রয় করলে (অন্যদেশে উৎপাদিত) তার গায়ে খুব সহজে চোখে পরে এমন ভাবে লেখা থাকতে হবে। সে জন্য খাদ্যশষ্যে জিন মানিপুলেশন নেই। সার এবং কীঠনাশক ব্যবহার করা হয়েছে এমন খাবারও সংগতিপূর্ণ মানুষ কেনে না।

কেন? তারা জেনেটিক মানিপুলেটেড খাবার কেনে না কেন? তারা আমাদের চেয়ে অল্প বিজ্ঞান মনস্ক? নাকী বিজ্ঞানে পিছিয়ে আছে?

তারা সম্ভবত সুবিবেচক। কারণ টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং করে নিজের শরীরের কোষ দিয়ে ভেঙ্গে বা ক্ষয়ে যাওয়া হাড্ডি তো ঠিকই বানিয়ে নিচ্ছে। অপ্রয়োজনে প্রকৃতিকে চেলেন্জ না করাই ভাল। যে কোম্পানী আমাদেরকে জিন দিচ্ছে, তাদের প্রধান এবং প্রথম উদ্দেশ্য আয়। আমাদের ফ্লোরা কী লাভ/ক্ষতির সম্মুখীন হবে, সেটা নিয়ে তাদের কিছু যায় আসে না। আমরাও এমন বিজ্ঞান মনস্ক যে; কোন প্রকার ফিল্ড এবং প্রয়োগ পরীক্ষণ ছাড়াই তা গ্রহন করছি! ভারত কিন্তু ওদের বেগুন এখনো খায় নি।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সজীব ওসমান এর ছবি

চন্দ্রবিন্দু সহকারে 'এঁদের' ব্যবহার কেন হেয় প্রতিপন্ন করে বুঝিনি। অন্য কি শব্দ ব্যবহার করা যেত বলে দিলে ভাল হত। আমার মাথায় আসেনি।

আপনার ধারণা জিনেটিক্যালি মডিফাইড ইলিশ মাছ তৈরি করলে সেটা নিয়ে এমন নিবন্ধ লেখা হতোনা? যদি মনে করেন হতোনা তবে ভুল ধারনা। এই নিবন্ধ শুরুই হয়েছে একটি বায়াস্ড পরীক্ষাকে ভিত্তি করে এবং 'জিটি খাবারকে না' বলার আহবান জানিয়ে। বাংলাদেশের জিএম বিরোধী আন্দোলনগুলো কাছ থেকে ফলো করলে এমন ধারনা হতোনা। এঁরা (আবার চন্দ্রবিন্দু সহকারে ব্যবহার করেছি শব্দ, হেয় করে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত) পুরো জিএম টেকনিলজিরই বিপক্ষে অবস্থান করছেন। কিছু ছবি পত্রিকা থেকে দেখে নিতে পারেন।

মানুষ ভাত খেতে না পেরে মারা যায়। কিন্তু, সেই সমস্যা সমাধানের আগে ভিটামিনের সমস্যা সমাধান করা যাবেনা কেন বলতে পারেন? পুরো ইউরোপে জিএম খাদ্য নিষিদ্ধ। তাই, রোগ প্রতিরোধী আলু (যার জিন আরেকটি আলু জাত থেকে নেয়া, স্বাস্থ্যঝুঁকি শূণ্য) ইউকে তে তৈরি হলেও সেটার বাজার জাত হবে ইউএসএ তে। এবং ইউএসএ গত ২০ বছর ধরে জিএম খাদ্যশস্য খেয়ে বেশ বেঁচেবর্তে আছে। তার মানে এই নয় যে ইউরোপ খুব ভাল কাজ করছেন, মানুষের আবেগ রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে ভোটের কথা বিবেচনায়। সেই অনুযায়ী নেতাগণ নিয়ম প্রণয়ন করেন। এই লেখায় যেই বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে সেটাকে রিজেক্ট করেছেন বেশিরভাগ জীববিজ্ঞানী (রয়্যাল সোসাইটি সহ অন্য রেফারেন্স খুঁজলেই পাবেন)। তেমনটি করেছে সেরালিনি'র পরীক্ষাতেও। কিন্তু এইধরনের প্রচার প্রাথমিক ক্ষতিটা করেই দিচ্ছে। সেটা হল আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ের প্রতি ভীতি ধরিয়ে দেয়া। তার সঙ্গে আছে কোম্পানির স্বার্থ। পাবলিক সেন্টিমেন্টকে রাজনীতিবিদদের পুঁজি করতে হয়। উদাহরণটা হয়তো প্রাসঙ্গিক হতে পারে, আমেরিকার একটি প্রদেশে সম্প্রতি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিবর্তনতত্ত্ব পড়ানোতে বিধিনিষেধ জারি করেছে সেইখানের কনজারভেটিভ প্রাদেশিক প্রশাসন। বিবর্তনতত্ত্ব আধুনিক জীববিজ্ঞানের মূল কাঠামো হওয়া স্বত্ত্বেও।

বিজ্ঞানে পিছিয়ে থাকার কথা বলছেন। একটা পরিসংখ্যান দেই- আমেরিকার ২৫ শতাংশ মানুষ মনে করে পৃথিবী ৪০০০ বছর আগে সৃষ্টি। আবার জিএম বিরোধী অবস্থানও আমেরিকাতে অনেক প্রবল। এখানে টিকা বিরোধী আন্দোলনও বেশ জোড়েশোড়ে হচ্ছে। এখন আপনি বলতে পারেন, 'আমেরিকা কি জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে? তারা যে টিকা বিরোধী আন্দোলন করছে? তারা যে বিবর্তনবিরোধী বিল পাশ করিয়েছে?' এটা বিজ্ঞানে পিছিয়ে থাকার জন্য নয়, বরং মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করে তৈরি করে তোলার বিষয়, যার ব্যর্থতা বিজ্ঞানীদেরও।

পুতুল এর ছবি

১ "এঁদের" শব্দটির ভেতরে যারা বিটি/জিটি খাবারের ব্যাপারে সাবধান তাদের সবাই এঁরা (সেটা চন্দ্রবিন্দু দিয়ে লিখলেও) এক কাতারে চলে যায়। প্রবন্ধে বলা আছে জিটি খাবারের বিপক্ষে ফরহাদ মজহার -এর অবস্থানের কারণে আমরা যারা দীঘৃমেয়াদী পরিক্ষার ফলাফল দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চাই তাদেরকেও ফেলে দেয়া হচ্ছে। এঁরা শব্দের প্রতি এই প্রবদ্ধে এই জন্যই আপত্তি।
আপনি এঁরা বলে প্রবন্ধের লেখক এবু আমাকেও ফরহাদ মজহারের কাতারে নিয়ে ফেলেন। ব্যপারটা যে আমাদের জন্য বিব্রতকর সেটা আশা করি বুঝতে পারেছেন।

২ "এই নিবন্ধ শুরুই হয়েছে একটি বায়াস্ড পরীক্ষাকে ভিত্তি করে"
পরিক্ষাটি কেন বায়াস্ড তা কিন্তু বলেননি। এই পরিক্ষায় যা কিছু ভুল ছিল, সে সব শুধরে আর কী কোন পরিক্ষা হয়েছে? যা ঐ বায়াস্ড পরিক্ষাটির ফলাফল বাতিল করেছে?

৩ জিটি খাবারকে না বলা যাবে না কেন? আপনি কী খাবেন সেটা আমি ঠিক করে দেব? যে খাবারে আমার ভীতি আছে আমি তা বললেও দোষ হবে?

৪ এই প্রবন্ধে উল্লেখ করা আর্জেটিনার আগ্রাসী সওয়ার মতো বাংলাদেশে চাষের জন্য অনুমিত জিটি শষ্য যে হবে না, তার কোন পরিক্ষা হয়েছে?

৫ "মানুষ ভাত খেতে না পেরে মারা যায়।"
আপনি ভিটামিন ঢুকিয়ে দিয়েছেন ভাতের মধ্যে। এই ভিটামিন পেতে হলে সোনালী ভাত খেতে হবে। ভাতই খেতে পারে না, সে ভিটামিনটা কোথায় পাবে?

৬ আমেরিকার একটি প্রদেশে সম্প্রতি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিবর্তনতত্ত্ব পড়ানোতে বিধিনিষেধ জারি করেছে সেইখানের কনজারভেটিভ প্রাদেশিক প্রশাসন। বিবর্তনতত্ত্ব আধুনিক জীববিজ্ঞানের মূল কাঠামো হওয়া স্বত্ত্বেও।
এই উদারন দিয়ে যারা জিটি খাবারের দীর্ঘমেয়াদী পরিক্ষার ফল না দেখে গ্রহন করতে না রাজ তাদেরকেও এঁদের দলেই ফেলে দিলেন। পরের প্যরায়ও একই প্রবনতা।

৭ আপনার বিবেচনায় বায়াস্ড হলেও এই প্রবন্ধে একটি পরিক্ষার ফলাফল আছে জিটি খাবের বিপক্ষে। আপনি কিন্তু কোন পরিক্ষার ফলাফল জানানি। আমরা আপনার কথা বিস্বাশ করতে হবে।

আপনি নিজেই জানেন বিজ্ঞান বিস্বাশের বিষয় নয়। আজকে আপনার যে অস্থান জিটি খাবারে কোন ক্ষতিকর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করলে (আশা করি) আপনিই বলবেন; এই নিয়ে আমাদের আরো সর্ত হওয়া উচিৎছিল। পরিবেশ খুব জটিল। এবং জিটি এমন প্রযুক্তি যে চাইলেই আর তাকে আপনি গাড়ির মতো স্টার্ট বন্ধ করতে পারবেন না। প্রকৃতিতে ইরিভার্সিবল পরিবর্তনের আগে তাই দীর্ঘ মেয়াদী পর্যবেক্ষণ দরকার। এই প্রবন্ধে সেটাই বলা হয়েছে।

ক্ষুতক্ষতে সতর্ক অবস্থান কোন কাজের গতি কমিয়ে দেয়, কিন্তু অনেক বড় ধরণের ভুল থেকেও রক্ষা করে।

দূরকে নিকট এবং পরকে ভাই করেছে যে বিজ্ঞান তার জয় হোক।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সজীব ওসমান এর ছবি

- 'এঁরা এঁদের' নিয়ে অহেতুক আবেগআপ্লুত কথাবার্তায় আমি এখন সত্যিই বিরক্ত হচ্ছি। আপনাদের হেয় করার উদ্দেশ্যে কিছু বলিনি, প্রত্যেকবার 'ফরহাদ মাজহার ব্যতীত আপনারা' উল্লেখ করার সময় আমার নাই। আর কথা বাড়াবোনা এই বিষয়ে। কষ্ট পেয়ে থাকলে কিছু করার নাই।

- কেন বায়াস্ড সেটার সূত্র প্রথম কমেন্টে উল্লেখ করেছি। পড়ে নিন অনুগ্রহ করে।

- একটা টেকনোলজি কখনই সম্পূর্ণ খারাপ হতে পারেনা। 'জিএম-টেক বা খাবার খারাপ' এই সাধারণীকরণ কোনভাবেই সম্ভব নয়। সোনালী ধান নিয়ে ইরি'র বহু গবেষণা প্রকাশিত। 'জিএম যে খারাপ নয়' সেটা সেখান থেকে পাবেন। প্রত্যেকটা জিএম খাবার কঠোর বিধিনিষেধ, পরীক্ষা পাশ করে বাজারে আসে। প্রত্যেকটা 'পাশ' (সরকারী প্রতিষ্ঠান অনুমোদিত) তাই একেকটা প্রমাণ।

- 'ভাত সবার কাছে পৌঁছাচ্ছেনা বলে আমি ভিটামিনসহ সোনালী ধান পৌঁছানোর চেষ্টা করবো কেন'- খোঁড়া যুক্তি।

- এখন পর্যন্ত যত জিএম খাদ্য বাজারে এসেছে সব এতগুলি পরীক্ষার পরাকাষ্ঠা মেনে এসেছে যা 'প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত' বিষাক্ত খাবারের ক্ষেত্রে আপনি দাবীও করেন না। অদ্ভুত। সোনালী ধান নিয়ে বহু পরিসংখ্যান বলেছে যে যত দেরি হবে এটা আসতে তত মানুষ মারা যেতে থাকবে ভিটামিন-এ'র অভাবে। মানুষ অন্যখাবারের আগে ভাত কিনে খায়, তাই এই শস্য থেকে ভিটামিন পাওয়াটা সবচেয়ে কম খরচের। সবাই ভাত খেতে পাচ্ছেনা বলে যাদের কাছে পৌঁছাতে পারছি তাদেরকে সোনালী ধান দেয়া যাবেনা- এমন অবস্থান শুধু অযৌক্তিকই নয়, বরং ক্ষতিকর।

অতিথি লেখক এর ছবি

অবশ্য তারা কেউই জেনেটিক মানিপুলেটেড খাবার খায় না। অর্গানিক ফুড গায়।

আমেরিকাতে অরগানিক ফুডের দাম কিন্তু জেনেটিক মানিপুলেটেড খাবারের দামের চেয়ে বেশী। এই দেশে অরগানিক খাদ্যের দুটি প্রধান দোকান হল whole foods market এবং trader joe's। আমার ক্যাম্পাসের কাছে যে whole foods market আছে, সেখানে ১ গ্যালন অরগানিক দুধের দাম ৭.২৯ ডলার; trader joe's-এ ১ গ্যালন অরগানিক দুধের দাম ৬.২৫ ডলার। আর সুপারমার্কেটে গেলে ১ গ্যালন দুধের (নন-অরগানিক) দাম পড়ে ৪.২৫ ডলার। আমি কেন গ্যালন-প্রতি অন্ততঃ ২ ডলার বেশী দিয়ে অরগানিক দুধ কিনব, যেখানে অরগানিক বনাম নন-অরগানিক দুধের মধ্যে স্বাদ এবং উপকরণে আমি কোন পার্থক্য খুঁজে পাইনি? এই দুটি দোকান থেকে (whole foods market এবং trader joe's) খাদ্য ক্রয় করে সমাজের একটা নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোক - (মুলতঃ শ্বেতাঙ্গ) উচ্চ-মধ্যবিত্ত/উচ্চবিত্ত, যাদের এই চড়া দামে খাবার কেনার সামর্থ্য আছে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত এবং আমার মতো ছাত্রদের ভরসা কিন্তু সেই সুপারমার্কেট।

বাংলাদেশ যে ইদানীং ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, সেটা কিন্তু জেনেটিকালি মডিফাইড ধান চাষ করেই হয়েছে। সুতরাং আপনি যে বলছেন

এত খাবার থাকতে হাউব্রীড বীজ দিয়ে আরো অতিরিক্ত উৎপাদনের প্রয়োজনটা কী!

, "এত খাবার" কিন্তু উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে খাদ্য নিয়ে জেনেটিক গবেষণার মধ্য দিয়েই।

Emran

পুতুল এর ছবি

১ এই দুটি দোকান থেকে (whole foods market এবং trader joe's) খাদ্য ক্রয় করে সমাজের একটা নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোক - (মুলতঃ শ্বেতাঙ্গ) উচ্চ-মধ্যবিত্ত/উচ্চবিত্ত, যাদের এই চড়া দামে খাবার কেনার সামর্থ্য আছে।

তাদের কথাই বলেছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও দুধ খায় সেটা জানতাম না।

২ নন অর্গানিক মানেই কিন্তু জেনেটিক মডিফাইড নয়।

৩ "এত খাবার" কিন্তু উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে খাদ্য নিয়ে জেনেটিক গবেষণার মধ্য দিয়েই।
তাহলে তো আর কোন সমস্যাই নেই।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

"জিটি"(আমি অবশ্য "বিটি" হিসেবেই চিনি) বেগুনকে ঠিক কি কারনে না বলছেন, আমার কাছে ব্যাপারটা ঠিক পরিস্কার হলো না। ঠিক রেফারেন্স নয়, কিছু নাম এবং কিছু ঘটনার উল্লেখ অবশ্য অত্যন্ত খাপছাড়া ভাবে করেছেন, যা থেকে আপনার আহবানে সাড়া দেওয়া মুশকিল। আপনার মূল লেখা এবং বিভিন্ন মন্তব্য থেকে মনে হলো আপনি মূলতঃ অজানা আশংকায় ভুগছেন, যদি কিছু হয়ে যায়। অসুবিধা নাই, যদি কিছু হয়ে যায় তখন আবার অন্য বিধান আবিস্কৃত হবে, এখন আপাততঃ খেয়ে বাঁচি। বাংলাদেশের বাজারে কিছুদিন বিটি বেগুন বিক্রী হয়েছে, আমি এটা খেয়ে রীতিমত মুগ্ধ। পোকা নেই, বিরক্তিকর বিচি নেই, স্বাদে অনন্য। অজানা আশংকার কারনে কিংবা ফরিদা আন্টি'র বিরুপতার কারনে এই চমৎকার সব্জিটির স্বাদ থেকে খামাখা বঞ্চিত হতে চাই না।

পুতুল এর ছবি

"অজানা আশংকার কারনে কিংবা ফরিদা আন্টি'র বিরুপতার কারনে এই চমৎকার সব্জিটির স্বাদ থেকে খামাখা বঞ্চিত হতে চাই না।"

হেলায় সুবর্ণ সুযোগ ছাড়বেন না।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

দুর্দান্ত এর ছবি

ইরি আর বিরি উফশী ধানের সবচাইত সফল জাতগুলো কিন্তু 'হাইব্রিড'। মিল্কভিটা অনেকদিন থেকেই 'শন্কর' প্রজাতির গরুর দুধ খাওয়াচ্ছে বাংলাদেশের মানুষকে। দেশের হাজার হাজার মানুষ 'ফার্ম' এর মুরগী আর ডিম এর মাধ্য়মে দুটো পয়সা কামাই করছে। দেশের আনাচে কানাচে অন্তত সঔখিন বাগানে 'কাজী' পেয়েরা আর 'থাই' পেঁপে ও কুলবড়ই আর 'আম্রপলি' আম পাওয়া যায়। এইসব ধান, দুধ, মুরগী, ফল এগুলোতে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে?

কৃষিক্ষেত্র এখন যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে একদিকে লড়ছে ৬০-৭০ দশকের হোমরাচোমরা কেমিকেল কোম্পানিরা, যারা কীটনাশক বেচে পয়সা বানাতো। ইদানিং পশ্চিমা আইনের চাপে সুইস জার্মান আমেরিকান রথী মহারথীরা সামনে থেকে সরে এসেছে। তবে চিপাচাপা খোলা রেখে, মানে ঘুরপথে মারওয়ারী ও হান-চীনাদের মাধ্য়মে এরা এখনো কীটনাশক বিক্রীর পয়সা ঘুরপথে কামায়।

যুদ্ধের অন্য়দিকে আছে ডটকম আর ভেন্চার ক্য়াপিটালের পয়সার ঘাড়ে সওয়ার বীজ-বেনিয়ারা। এরা এক-বছরী বীজ বিক্রী করতে চায়। চাষীর ফি-বছর নিজের উতপাদিত বীজ বোনার অধিকার রহিত করে এরা তাদের বাজারজাত বীজের উপর চাষীকে নির্ভর করে রাখতে চায়। আমেরিকা কানাডার মত সুবিশাল কর্পোরেট খামারির জন্য় এটা তেমন কোন ব্য়াপারনা। কিন্তু পূর্ব গোলার্ধের ছোট-চাষীর জন্য় এটা মরনফাঁদ।

আমার কাছে তথ্য় নেই, কিন্তু বাংলাদেশে ভারতীয় কীটনাশকের পরিবেশক গং ও প্রবর্তনা ঘরানার এক্টিভিস্টদের মেলামেশার সাথে বিটি বেগুন ও সোনালী ধানের বিরুদ্ধের প্রচারণার একটা সমান্তরাল খোজার চেষ্টা করা যেতে পারে। ঠিক যেমন পশ্চিমা বানিজ্য়িক টেলিভিশনে বিশেষ বিশেষ আলোচনা আনুষ্ঠানগুলোর স্পন্সরশিপে আমরা ডুপন্ট, বায়ার, মনসান্টো ও সিন্জেন্টা এর মত বড় প্রতিষ্ঠানকে দেখতে পাবো।

যুদ্ধে বোধ করি বীজ কোম্পানিরা জিতে যাচ্ছে, কারন টুপ টাপ দুই একটা কেমিকেল কোম্পানিকে ভোল পাল্টে সার/বীজ-কোম্পানি হতে দেখছে প্রতি বছর। ওলন্দাজ কোম্পানি ডি-এস-এম আর আমেরিকান ডু-পন্টকে লক্ষ করুন।

কিন্তু শেষবিচারে চাষী আর ভোক্তার কিসে লাভ হয়? জিটি-বিটি-সার-কীটনাশক এগুলোর সবগুলোরই সচেতন ও টেকশই ব্য়াবহার সম্ভব, যদি চাষী-ভোক্তা-ও কেমিকেল ও সার/বীজ কারবারী একে অন্য়ের অধিকার ছিন্তাই করার পায়তারা না করে।

প্রযুক্তির কাজ উপায় বের করা। দায়িত্বশীল মানুষের কাজ সেটাকে ঠিক মত কাজে লাগানো ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তির হানিকর দিক থেকে দুরে সরে আসা।

তীরন্দাজ এর ছবি

পড়ে দেখতে পারেন‍,

CA: Bt eggplant field trials unsafe for humans, environment

Details Category: Agri-Commodities
22May2013.
.

THE Court of Appeals (CA) ruled recently that ongoing field trials for Bacillus thuriengensis (Bt) talong (eggplant) in the country pose risks to human health and the environment, it was learned on Wednesday.

In a 25-page decision penned by CA Associate Justice Isaias Dicdican, the appellate court’s Special 13th Division issued a writ of kalikasan ordering the Department of Environment and Natural Resources (DENR) and other concerned government agencies to stop the trials.

CA Associate Justices Myra Garcia-Fernandez and Nina Antonio-Valenzuela agreed with the decision.

According to the court’s ruling, the trials violated the people’s constitutional right to a balanced and healthful ecology.

“The field trials of Bt talong involve the willful and deliberate alteration of the genetics traits of a living element of the ecosystem and the relationship of living organisms that depend on each other for their survival,” the CA said.

“Consequently, the field trials…could not be declared by this Court as safe [for] human health and our ecology, [since they are] an alteration of an otherwise natural state of affairs in our ecology,” it added.

The government, the tribunal said, has failed to adopt sufficient biosafety protocols in conducting the trials, as well as feasibility studies on genetically modified organisms (GMOs), to protect the environment and people’s health.

The CA noted that, based on case records, the country is yet to have a law governing the study, introduction and use of GMOs. It said what the government has are insufficient regulations issued by the Department of Agriculture, the Department of Science and Technology, and the Philippine Environmental Impact Statement System of the Environmental Management Bureau.

“True, there are biosafety regulations that we follow. However, considering the irreversible effects that the field trials, and eventually the introduction of Bt talong to the market, could possibly bring, we could not take chances,” the court said.

Tests violate Constitution

THE case of the field trials began when environmental group Greenpeace, the Magsasaka at Siyentipiko sa Pagpapaunlad ng Agrikultura (Masipag) and other individuals filed a petition arguing that the tests violated Filipinos’ constitutional right to a balanced and healthy ecology.

They claimed that the trials might contaminate native genetic resources and cause an imbalance in the environment.

But the respondents—the DENR, the Bureau of Plant Industry, the Fertilizer and Pesticide Authority, University of the Philippines (UP) Los Baños Foundation Inc., UP Mindanao Foundation Inc., International Service for the Acquisition of Agri-Biotech Applications-Southeast Asia Center—disagreed, insisting that the trials were safe and harmless.

In its ruling, the CA said clear standards governing the study and research of GMOs should be adopted, and also ordered the respondents to rehabilitate the areas affected by the trials.

link: http://www.businessmirror.com.ph/index.php/business/agri-commodities/13830-ca-bt-eggplant-field-trials-unsafe-for-humans-environment

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সজীব ওসমান এর ছবি

সাইলেন্সিং দ্য সায়েন্টিস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস এ আমেরিকার একটি জিএম ট্রায়াল নিয়ে লেখা মূলতঃ, আগ্রহ পেতে পারেন।

সজীব ওসমান এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।