উচ্চ ফলনশীল ধান বিষয়ে কিছু কথাবার্তা-- মজহারীয় আস্ফলন : পর্ব/১

কুলদা রায় এর ছবি
লিখেছেন কুলদা রায় [অতিথি] (তারিখ: রবি, ২৯/০৮/২০১০ - ৮:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি)র পঞ্চাশ বছর পূর্তি উৎসব বাংলাদেশে পালিত হয়েছে। এক সেমিনারে ইরির মহাপরিচালকও উপস্থিত ছিলেন। সেই সেমিনারের বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে নয়া কৃষি আন্দোলন নামে একটি এনজিও সংবাদ সম্মেলনে খুব গোস্মা করে কিছু কথাবার্তা বলেছে। এবং তার একটি লিখিত ভাষ্য ফরিদা আখতার নাম্মী এক মহিলা চিন্তা পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ করেছেন—‘ইরির বিরুদ্ধে প্রধান আপত্তি হচ্ছে ইরি তার জিন ব্যাংকের সংগ্রহের জন্য ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়ার সকল ধান উৎপাদনকারী দেশ থেকে হাজার হাজার জাতের ধান নিয়ে দিয়েছে মাত্র ৫০টি’। ইরির হয়ে কাজটি করেছে বাংলাদেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। খুব চিন্তার বিষয়। সাধারণ পাঠকগণ ক্ষেপে উঠবেন এটাই স্বাভাবিক। জিম্মি রাখা মোটে ভাল কাজ নয়। ইরি রীতিমত ডাকাত শুধু নয়—ডাকাতের বাপেরও বাপ।

ফরিদা আখতারের লজেঞ্চুসের মত কথাটা পোলাপানের জন্য সুস্বাদু—কিন্তু ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য? বোঝেন হে পাঠক বেরাদরগণ। শুধু অসত্য নয়—ভয়ংকর রকম মিথ্যে কথা আছে।

ধানের জিন ব্যাংকে জিন পরী থাকে না—থাকে ধানের বীজ নমুণা। জিন ব্যাংকে ভবিষ্যতের জন্য ধান বীজ নমুণা যত্ন করে রাখা হয়। যদি কোনো কারণে মাঠ ক্ষেতে কোন কোন ধানের হারিয়ে যায় তাহলে ঐ হারিয়ে যাওয়া জিন ব্যাংক থেকে পাওয়া যাবে এবং বীজ চাষ করে আবার ফিরে পাওয়া যাবে। গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে এরকম একটি ধানের জিন ব্যাংক আছে। আমি বরিশালে চাকরীরত অবস্থায় এই ব্যাংক থেকে ধানের বিভিন্ন জাতের নমুণা এনেছিলাম। উপজেলা কৃষি অফিসে তার বৈশিষ্ট্য লিখে জাতগুলি প্রদর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখতাম। কৃষকগণ এগুলো দেখে তাদের জমির অবস্থা, আবহাওয়া, বাজারচাহিদা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে জাত নির্বাচন করতেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এইভাবে উপজেলায় পর্যায়ে রিসোর্স সেন্টার তৈরি করেছিল। এই জিন ব্যাংকে সংরক্ষিত ধান বীজের বৈশিষ্ট্য সমূহ সঠিকভাবে লেখা থাকে। সেখান থেকে কৃষি বিজ্ঞানীগণ কৃষি জলবায়ূ অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য অনুসারে বীজ নির্বাচন করতে পারেন।

বীজ একটি জীবন্ত সত্তা। সাধারণ আবহাওয়ায় এলে এ বীজগুলির ভিতরে জৈব-রাসায়নিক কাজকর্ম শুরু হয়ে যায়। ফলে বীজের অভ্যন্তরে মজুদকৃত খাদ্যভাণ্ডার ফুরিয়ে যায়। অনুকূল পরিবেশে কখনো কখনো বীজ গজানো শুরু করে। অথবা বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে বিভিন্ন রোগ পোকার আক্রমণে মারা যায়। এ কারণে সাধারণ আবহাওয়া বীজ সংরক্ষণ করা কঠিন। কৃষকগণ মাঝে মাঝে রোদে দিয়ে—বীজে পানির পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় কমিয়ে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে মজুদ করে রাখে। এভাবে ধান বীজ এক বছরের বেশী রাখা যায় না। বীজের গজানোর ক্ষমতা কমে যায়। একমাত্র বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অবস্থাধীনে বীজ দীর্ঘদিনের জন্য সংরক্ষণ করে রাখার ব্যবস্থা জিন ব্যাংকেই সম্ভব।

কোষের মধ্যে ক্রোমোজম থাকে--ক্রোমোজমের মধ্যে জিন থাকে। এই জীনগুলো জীবের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করে। যেমন ধানের সরু দানার আকারের জন্য একটি জিন কাজ করে। আবার মোটা দানার জন্য আরেকটি জিন কাজ করে। এরকম হাজার বৈশিষ্ট্যের জন্য হাজার হাজার জিন কাজ করছে।

বিজ্ঞানীগণ এই বৈশিষ্ট্যঅনুসারে জিন সনাক্ত করে কৃষকদের চাহিদা মোতাকে ধান বীজ উদ্ভাবন করে থাকেন। ধরা যাক ফরিদপুর এলাকায় রায়েন্দা নামে একটি আমন ধান জাত রয়েছে। ধানটি গভীর জলে জন্মে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতটির গাছ বাড়তে থাকে। ঐ অঞ্চলের কৃষকগণ এ খবরটি জানেন। কৃষি বিজ্ঞানীরাও জানেন। এই জানা দিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করতে পারেন না। কারণ রায়েন্দা ধানের আরও অনেক প্রকার বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন রায়েন্দা ধানে খুব বেশি উফরা রোগের আক্রমণ ঘটে। তাহলে নীচু জমির জন্য-- বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য রায়েন্দা ধানের লম্বা বৈশিষ্ট্যটি কৃষকদের দরকার। কিন্তু সঙ্গে উফরা রোগটি নিশ্চয়ই অদরকারী। তাহলে রায়েন্দা ধান থেকে লম্বা জাত বৈশিষ্ট্যই বিজ্ঞানীরা কোন নতুন জাতে আনতে চাইলে সরাসরি রায়েন্দা ধান বীজ থেকে তা আনা অসম্ভব। আনতে গেলে অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যও এসে পড়বে। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞানীগণ যদি লম্বা বৈশিষ্ট্যের জিনটিকে চিনতে পারেন—ধান বীজে তার অবস্থানটি জানতে পারেন তাহলে ঐ জিনটিকে নতুন জাতে আনতে পারেন। বাকীগুলো এড়াতে পারেন। এটা কঠিন কাজ। ফরিদা আখতারের কথা মত এটা পাঁচ মিনিটের ব্যাপার নয়। সফিস্টিকেটেড জিন কৌশল প্রযুক্তি ছাড়া করা যায় না।

ফিলিপাইনে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের কারিগরী সুবিধা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল। তাই তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা এরকম জিন বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত বের করেছেন। এইভাবে বৈজ্ঞানিক তথ্য আদানপ্রদান বৈজ্ঞানিকদের কাছে সাধারণ ঘটনা। এটা উল্লেখ করে ফরিদা আখতার লিখেছেন—‘’কোন ধরণের জিন বৈশিষ্ট্যের কারণে দুই সপ্তাহ পানির নিচে থাকলেও ধান নষ্ট হবে না তা ইরির কাছ থেকেই ব্রির বিজ্ঞানীরা জেনে কাজে লাগিয়েছেন। তবে এই জ্ঞানকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে আরও উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।’’ বলতে পারেন আমি প্রায় জোরে হেসে ফেলেছি। এই ধরণের কথার বিরুদ্ধে আমাদের বিজ্ঞানীরা কোন প্রতিবাদ কেন করেন নি আমি জানি না। তবে আমাদের কৃষকদের যে জ্ঞান আছে তার জন্যে ইরির কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।‘’
ঐ কৃষি বিজ্ঞানী কি কোন ভুল কথা বলেছেন? ইরির বিজ্ঞানীদের কাছে যাওয়া কি তাদের কোন অন্যায় হয়েছে। এত সহজ এই জিন প্রযুক্তি?

মনে পড়ছে এক নাপিতের গল্প। নাপিত ফোঁড়া কাটার চিকিৎসাও করত চুল-দাড়ি কাটার ফাঁকে ফাঁকে। রোগী পেলেই হল। সঙ্গে সঙ্গে খুর দিয়ে পোচ মেরে দিয়ে অপারেশন শেষ। এভাবে নাপিতটি খুব নাম কামিয়ে ফেলেছিল। মুশকিল হল—একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কি নাপিতের মত রোগী পেয়েই দেখে ঘ্যাচ করবেন? কি বলেন ফরিদা আখতার? পরীক্ষা নীরিক্ষার দরকার নেই? ঐ টি কী ধরনের ফোড়া, এখানে কোন ধরনের মাংসপেমী আছে, কী নার্ভ সিস্টেম আছে, রক্তনালী আছে ইত্যাদি বিষয়াদি চিন্তার দরকার নেই? দেখা গেল ফোঁড়া কাটা হয়েছে ঠিকই--কিন্তু লোকটি চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেল অপারেশনের সময়নার্ভ বা ভেইন কাটা পড়ার কারণে। এইখানেই বিশেষজ্ঞ এবং হাতুড়েদের পার্থক্য।

যাদের কৃষি বিজ্ঞান সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান আছে—তারা ফরিদা আখতারের এই হাসিটাকে কি বলবেন? কৃষকের জানা আর জিন বিজ্ঞানীর জানার ধরন কি এক? আমি পড়ে হেসেছি, এই মুর্খতা নিয়ে ফরিদা আখতার কৃষি নিয়ে—নয়া কৃষি আন্দোলন নিয়ে লাফালাফি করছেন, আর আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীদের উপহাস করছেন। বলিহারি বটে। তবে এদের একটা উদ্দেশ্য আছে। সেটা পরে।
তার আগে আরেকটি বিষয় বলা দরকার। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশের ধান বিজ্ঞানীগণ ৫০ টি জাতের ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। একটি ধানের জাত উদ্ভাবন করা এক দিনের কাজ নয। দীর্ঘদিন প্রয়োজন হয়। সুতরাং এই ৪০ বছরে ৫০টি ধানের জাত উদ্ভাবন করা কৃষি বিজ্ঞানীদের কৃতিত্বই ঘোষণা করে। এজন্যই বিদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আমাদের দেশের কৃষি বিজ্ঞানীদের সুনাম রয়েছে। তারা বিদেশে পড়াশুনা বা গবেসণার কাজে গেলে ঐ সব বিদেশী গবেষণা সংস্থাগুলো তাদের আকর্ষণীয় সুযোগ সুবিধাসহ রেখে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে-- নিশ্চয়ই ফরিদা আখতারের মত হাতুড়ে ফালতুদের নয়?


মন্তব্য

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

বর্বর ইসলামী জঙ্গীরাও যুদ্ধে বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কারগুলো ব্যবহার করতে চায়। আর মজহারীয়রা কৃষি কর্পোরেটদের সাথে শ্রেণীসংগ্রাম করছেন হাতুড়ে-বিদ্যা দিয়ে।

মজহারীয় বিজ্ঞানবিমুখীতার দার্শনিক স্বরূপ কিছুটা পাওয়া যাবে এখানে:


বিজ্ঞান, ইনফরমেশান কৃৎকৌশল হাতিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে বলে ভাববার কোন কারণ নাই যে মানুষকে চিন্তায়, জ্ঞানে ও দূরদর্শিতায় আরো পরিণত করে তোলার ক্ষমতা তার আছে। বাংলায় ‘বিজ্ঞান’ কথাটার মানে কিন্তু বিকৃত জ্ঞান, যে জ্ঞান তার স্বভাব হারিয়ে ফেলেছে এবং জ্ঞান চর্চার উদ্দেশ্য খুইয়েছে। ঠিক। বাংলার বৌদ্ধ দর্শনের মধ্যে ‘বিজ্ঞান’ ধারণার এই ইঙ্গিত আছে। এই সজ্ঞান সচেতনতা বাংলার ভাবচর্চার মধ্যে আজও আমরা টের পাই।

আশা করে বসেছিলাম বছে কিস্তিগুলান শেষ করবেন। তারপর একটা বিজ্ঞানের ওয়ান জিরো ওয়ান লিখপো ওনার জন্যে। সে আশায় গুঁড়ে বালি।

মজহার বিপ্লবীদের যেভাবে স্যাভেজ হওয়া শিখাচ্ছেন, এতে ওনাকেই বঞ্চিতের এক নম্বর শ্রেণীশত্রু মনে হচ্ছে।

কুলদা রায় এর ছবি

তবে শুভাশীষ দাশ লিখবেন--ওনার রাজনীতি-টাজনীতি নিয়ে। ফাঁকে ওনাগো নয়া কৃষির ভিতর বাড়ির গরুগুলান কোন কোন গাছে উঠেছে, তার একটু তত্ত্ব তাল্লাশ নেই।
আলেমুল গায়েব তাওফিক দিলে আজব বটে গুজব নয় মার্কা ধারাবাহিকভাবে কিসসা ও কাহিনীগুলান ফালা ফালা করে দেখানোর চেষ্টা করা হবে। আমেন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

পৃথিবী [অতিথি] এর ছবি

বিজ্ঞান, ইনফরমেশান কৃৎকৌশল হাতিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে বলে ভাববার কোন কারণ নাই যে মানুষকে চিন্তায়, জ্ঞানে ও দূরদর্শিতায় আরো পরিণত করে তোলার ক্ষমতা তার আছে। বাংলায় ‘বিজ্ঞান’ কথাটার মানে কিন্তু বিকৃত জ্ঞান, যে জ্ঞান তার স্বভাব হারিয়ে ফেলেছে এবং জ্ঞান চর্চার উদ্দেশ্য খুইয়েছে। ঠিক। বাংলার বৌদ্ধ দর্শনের মধ্যে ‘বিজ্ঞান’ ধারণার এই ইঙ্গিত আছে। এই সজ্ঞান সচেতনতা বাংলার ভাবচর্চার মধ্যে আজও আমরা টের পাই।

এরেই বোধহয় বলে ইসলামী কমিউনিস্ট। এরচেয়ে সৌদির আরবের ওয়াহাবী মতবাদও অনেক লিবারেল।

কুলদা রায় এর ছবি

আরেকটি গল্প মনে পড়ছে। রামের ভাই লক্ষণ শক্তিশেল বাণে মুর্চ্ছা গেল। মানে মারা গেল আর কি। তখন রাম কেঁদে কেটে অস্থির। বললেন, আমার বউ চাই না। আমার ভাই চাই। এক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক দেখে শুনে বললেন--এর জন্য দরকার বিশল্যা করণী নামে এক মেডিসিনাল প্লান্ট। উহা গন্ধমোদন পর্বতে পাওয়া যাবে। উহা রাত্রি থাকতেই আনতে হবে। সূর্য উঠে গেলে নো কাজ।
auto
রামের আদেশে বেচারা হনুমান রওনা হল। লাফিয়ে বহুদূরের গন্ধমোহন পর্বতে গিয়ে তার মনে হল--এই পর্বতে তো বিশল্যা করণী আরছে ঠিকই--কিন্তু সে গাছকোনটি? হনুমান তো চেনে না। এদিকে সূর্য উঠে যায় যায়। তখন হনুমান পুরা পর্বতটিকেই হাতে নিয়ে রওনা হল। রামও বিশল্যা করণী চেনেন না। কি আর করেন--বেচারা রাম। ভাইকে বাঁচাতে পুরো গন্ধমোদন পর্বতটিকেই লক্ষণকে গেলানো হল। পর্বতের মধ্যে বিশল্যা করণী ছিল বলে পুরা পর্বত গিলে লক্ষণ বেঁচে গেলেন সে যাত্রা। গল্পটি এই রকম হলে কেমন হয়?

হলে হতে পারে। গল্পের গরু গাছেও ওঠে। কিন্তু আসলে তো ঘটনা অন্যরকম। হনুমান চিনতে না পরেন, রামও না চিনতে পারেন--কিন্তু আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকটি গাছটিকে চেনেন। তিনি তো পুরা পর্বতকে গেলাতে গিয়ে আবার লক্ষণকে মারতে পারেন না। তিনি পর্বত থেকে বিশল্যা করণী খুঁজে নিয়ে তার কয়েকটি পাতা বেঁটে তার রস খাইয়ে দিয়েছিলেন। এইভাবে শ্রীমান লক্ষণ বেঁচে উঠেছিলেন।

ফরিদা আখতারের--'আমাদের কৃষকদের যে জ্ঞান আছে তার জন্যে ইরির কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না' মন্তব্য পড়ে এই গল্পটি মনে হল।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

অতিথি লেখক এর ছবি

দাদা, আপ্নের কথা শুনে কি মনে করে ওই পত্রিকায় ঢুকলাম।
অইখানে ঢুইকা ত মনে হইল দেশে মনে হয় শুধু একটাই দল আছে।
বিরোধী দল বলতে তো কোনো দলই পাইলাম না। অ্যাঁ

এলেবেলে
_________________________

অস্থির চিত্তের বিস্ময়কর পদচারনা

ইফতেখার [অতিথি] এর ছবি

ফরিদা আখতারের লেখা পড়ে মনে হয় দেশে রাজনৈতিক কৌতুকের পাশাপাশি এখন বৈজ্ঞানিক কৌতুকও শুরু হয়েছে। আমার মনে হয় মনসান্তো/সিঞ্জেন্টার সাথে এই মহিলার কোনো স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটেছে। আমার সংশয়বাদী চিন্তার জন্য লজ্জিত।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ লেখাটার জন্য। তবে উবিনীগ দেশে ভাত পাচ্ছে না। চিন্তা নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

এই ফরিদা আকতার কৃষিকৌশল বিষয়ে একজন মহামূর্খ প্রোপাগাণ্ডিস্ট। কৃষি-কর্পোরেটদের দৌরাত্ম্য ঠেকানোর প্রয়োজন অবশ্যই আছে, কিন্তু বিজ্ঞানবিমুখিতা দিয়ে নয়। ইনি নির্বিচারে অজ্ঞতাপ্রসূত বিপুলায়তন সব আর্টিকেল লেখেন, সেগুলো আলু পত্রিকা নির্বিচারে ছাপে। সম্ভবত ভাঁড়দের জন্যে একটা কোটা রাখা আছে, সেই কোটায়। মাস কয়েক আগে তিনি বিটি বেগুন নিয়ে প্রচণ্ড নর্তনকুর্দন শুরু করেছিলেন, বিটি বেগুনের রস নাকি মানুষের জন্য হানিকর। বুঝলাম উনি বেগুন ভালো পান, কিন্তু জিন-পরিবর্তিত বেগুন কীভাবে পোকার আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করে, তা বুঝতে হলে পোকা সম্পর্কে জানতে হবে, জানতে হবে মানুষ আর রসায়ন সম্পর্কেও। ফরিদা আখতার জানেন না কিছুই। বড় দৈনিকে এই ধরনের বিজ্ঞানমূর্খ বেগুনবিলাসিনীদের আর্টিকেল ছাপার আগে বিভাগীয় সম্পাদকদের আরো একটু ভাবা উচিত। সম্ভবত কৃষিকর্পোরেটকাগুরা এদের পয়সা দিয়েই ম্যানেজ করে, এবং সে পয়সার ভাগ পত্রিকার সম্পাদকেরাও পায়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মুস্তাফিজ এর ছবি

বাংলাদেশে যে কয়টা প্রতিষ্ঠান এখনও নিষ্ঠা আর ধৈর্যের সাথে দেশ সেবা করে যাচ্ছে তাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট অন্যতম।

আর “চিন্তা” হইলো তাদের মুখপাত্র যারা মনে করে আমাদের সংবিধান একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান না, তাদের কথায় “বাংলাদেশের সংবিধানকে গণতান্ত্রিক বলা যাবে না”।

...........................
Every Picture Tells a Story

কুলদা রায় এর ছবি

চিন্তার চিন্তামী আসেন ধানের খোসার মতো খুলে দেখি-- কত ধানে কত তুষ। সামু ব্লগের মঞ্জুরুল হক, সুমন রহমান, ভাস্কর আবেদীন, সোহেল হাসান গালিবকে কি খবর দেওয়া যায়? আলাপটা জমত তাহলে। ঘুম আসতে কাল কথা বলব।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

নৈষাদ এর ছবি

টাইটেলে ফরহাদ মজহারের কথা বলেছেন, লেখায় তো নেই। প্রেক্ষিতটা পাঠকের কাছে পরিষ্কার করে দিতে পারেন, ফরিদা আখতার মজহার সাহেবের স্ত্রী এবং দুজনেই উবিনীগ নামক এনজিওর সাথে জড়িত।

বাংলায় ‘বিজ্ঞান’ কথাটার মানে কিন্তু বিকৃত জ্ঞান, যে জ্ঞান তার স্বভাব হারিয়ে ফেলেছে এবং জ্ঞান চর্চার উদ্দেশ্য খুইয়েছে। কিংবা বলতে পারেন আমি প্রায় জোরে হেসে ফেলেছি। এই ধরণের কথার বিরুদ্ধে আমাদের বিজ্ঞানীরা কোন প্রতিবাদ কেন করেন নি আমি জানি না। - এ ধরণের কথায় প্রভাবিত হওয়ার মানুষও কিন্তু কম নেই। এই বিদ্যার দৌড় নিয়ে এবং আবেগ দিয়েই তো ‘করে খাচ্ছে’, - করপোরেটও খুশি, পাবলিকও খুশি, পেপারও খুশি...। ভালই তো।

কুলদা রায় এর ছবি

শুরুটা করলাম ভাই। ফরিদা আখতার মজহারের দ্বিতীয় স্ত্রী। উবিনীগের হর্তিনী কর্তিনী। অন্য পর্বে ফরহাদ আসবেন। তিনিই আসবেন। তিনি ছাড়া গীত নাই। এই গীত সুফি গীত--আফগানিস্তানের তোরাবোরা পাহাড়ে গজায়।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

ফারুক হাসান এর ছবি

খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখা। আপাতত লিংকটি শেয়ার দিলাম ফেসবুকে। বিস্তারিত পরে লিখছি।

কী কমু [অতিথি] এর ছবি

কুলদার জন্য: হনুমানের বয়ে আনা পাহাড়ের নামটা বোধ হয় গন্ধমাদন। আর নৈষাদের জন্য: ফরিদা আখতার কি স্ত্রী, না বিশেষ বান্ধবী? এঁরা শুনেছি লিভ-টুগেদার করেন (যদিও নিশ্চিত নই)।

ফরহাদ মহজার হলেন জামাতের গোপন অ্যাপলজিস্ট, আসিফ নজরুলের গুরু। বাকপটু বলে দ্বিতীয়জন টকশো-র নিয়মিত মলমবেচা বক্তা, আর প্রথমজন হাওয়াভবন-এর পতনের পর পালের হাওয়া কেড়ে নেওয়ায় আপাতত কিছুটা নিশ্চুপ আছেন। তবে জামাতের এই বিপদের দিনে প্রভুদের উদ্ধারে নিশ্চয়ই মুখ খুলতে শুরু করবেন। মাঝে মৌলবাদী তালেবানদের মানুষ প্রমাণের জন্য কলমের ডগা দিয়ে বহু মল বের করেছেন, এখন কৃষি নিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি চলছে খুব। প্রথমটায় মনে হবে কৃষকের জন্য দরদে বুক ফেটে যাচ্ছে, কিন্তু গভীরে গেলেই বুঝবেন, মূল উদ্দেশ্য হল কৃষিকর্পোরেটগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের 'মুখ বন্ধ করার ফান্ড' থেকে খানিকটা তোলা আদায়।

একাত্তরের লক্ষ লক্ষ কৃষক-শ্রমিকের খুনী, নারীধর্ষক আর ঘর পোড়ানোর পাণ্ডা রাজাকারদের যে 'ভাল মুসলমান' মনে করে, সে গরীব কৃষকের জন্য কী মায়া ধারণ করতে পারে, তা বোঝার জন্য সাবালক হতে হয় না। দু'কলম লিখতে পারে বলে এরা আজ কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী; নইলে রাজাকারের পোঁ ধরার অপরাধে লোকে উঠতে বসতে জুতোপেটা করত এদের। ভাগ্যিস বাঙালি স্মৃতিস্বল্পতায় ভোগা জাতি, নইলে একাত্তরের সব স্মৃতি থাকলে আর মেরুদণ্ড খানিক সোজা করে দাঁড়ালে এসব ভাঁড়কে দেশ থেকে পেঁদিয়ে বিদেয় করত বহু আগেই।

কুলদা রায় এর ছবি

ধম্য লিভ টুগেদার সমর্থন করে না। উনি ধর্মের ষাঢ়। সুতরাং মজহার কী করে ফরিদার আখতারের লগে লিভ টুগেদার করেন? ওনারতো তাইলে দোজখবাস নিশ্চিত। দোজখের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার উসিলায় কি উনি জামাতের লগে--হিজবুতের লগে--জঙ্গীদের লগে তফসিরে নেমেছেন?

অসাধারণ পর্যবেক্ষণআপনার --

প্রথমটায় মনে হবে কৃষকের জন্য দরদে বুক ফেটে যাচ্ছে, কিন্তু গভীরে গেলেই বুঝবেন, মূল উদ্দেশ্য হল কৃষিকর্পোরেটগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের 'মুখ বন্ধ করার ফান্ড' থেকে খানিকটা তোলা আদায়।

আপনাকে ধন্যবাদ।

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

তাসনীম এর ছবি

শিব্রামের একটা গল্প আছে...গল্পের নায়ক কৃষি বিষয়ক পত্রিকার সম্পাদক হয়েছিলেন কোন জ্ঞান ছাড়া। জ্ঞানগর্ভ সম্পাদকীয় লিখতেন সব বিষয়ে...যেমন ধান গাছে একটা বাচ্চা উঠিয়ে দিয়ে ধান পাড়া উচিত, এতে ধানের মান ভালো থাকবে ইত্যাদি...পত্রিকার কাটতি হু হু করে বাড়তে থাকে...মানুষ বিনোদন ভালোবাসে। ফরিদা আখতার হচ্ছেন এই পদের বিনোদন উদ্রেককারী। ফরিদা আখতার ও ফরহাদ মাজহাদের কাজ এন্টি-কর্পোরেশন না বলে এন্টি-টেকনোলজিই বলা যায়।

স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশের ধান বিজ্ঞানীগণ ৫০ টি জাতের ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। একটি ধানের জাত উদ্ভাবন করা এক দিনের কাজ নয। দীর্ঘদিন প্রয়োজন হয়। সুতরাং এই ৪০ বছরে ৫০টি ধানের জাত উদ্ভাবন করা কৃষি বিজ্ঞানীদের কৃতিত্বই ঘোষণা করে

এই বিষয়ে আরো লেখা আসা উচিত, বাংলাদেশে টেকনলজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধান গবেষণা সবসময়ই অগ্রগামী ছিল। বাবা ও বড়ভাইয়ের যথাক্রমে কৃষি গবেষণা ও ধান গবেষণা ইন্সিটিউটের চাকরির সুবাদে মোটামুটি এদের কাজের উচ্চমান জানা আছে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

শিব্রামের একটা গল্প আছে...গল্পের নায়ক কৃষি বিষয়ক পত্রিকার সম্পাদক হয়েছিলেন কোন জ্ঞান ছাড়া। জ্ঞানগর্ভ সম্পাদকীয় লিখতেন সব বিষয়ে...যেমন ধান গাছে একটা বাচ্চা উঠিয়ে দিয়ে ধান পাড়া উচিত, এতে ধানের মান ভালো থাকবে ইত্যাদি...পত্রিকার কাটতি হু হু করে বাড়তে থাকে...মানুষ বিনোদন ভালোবাসে।

ধুর তাসনীম ভাই, গল্পটা মার্ক টোয়েনের একটা গল্প থেকে মারা। আপনাকে আগেই বলেছিলাম, শিব্রাম কাজটা অহরহ করতেন। তবে, গল্পটার বঙ্গীকরণ করেছিলেন তিনি দারুণভাবে। মূল গল্পে এই জিনিস ছিলো না। একটা ছড়া এখনো মনে আছে:
"সিমের মাঝে অসীম তুমি, বাজাও আপন সুর,
ধামার মাঝে তোমার প্রকাশ তাই এতো মধুর।"

এনিওয়ে, তিনি বাচ্চা ছেলে দিয়ে ধান পাড়ানোর কথা কন নাই, কৈসিলেন মুলা গাছ থেকে মুলা পাড়ানোর কথা। আপনেরে মাইনাস আমার প্রিয় শিব্রামজির নামে গিবত করনের লাগি! মজহার সাব্রে প্লাস! উনারে ভালু পাই। উনি কিন্তু উত্তরাধুনিকও হৈতে হৈতে না হৈতেও পারেন, হ।
_____________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

কুলদা রায় এর ছবি

সুমন রহমান একাধিকবার বলেছিলেন--মজহার হলেন তার মহাজীবনে দেখা একমাত্র জীবিত সুফি, সাইজী, কবি, দার্শনিক, আলেম, কাম - - -। বাকী সবাই মৃত, নাকি? পড়ে হেসে বাচিঁ না। লগে একটি ফটো দিয়েছিলেন সুমন সাহেব--একদল বাউল টেবিলে বসে আছে, অপাঙ্গে হাস্য বিতরণ করছেন মজহার আর বুক চিতিয়ে আছেন সেখানে কবি সুমন। আহ, দেখে দেখে আঁখি না ফেরে, ওগো মা--তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে..

আর গৌতম চৌধুরী নামে এক কোলকাতাই কবি লিখেছিলেন--আহারে বঙ্গভঙ্গোত্তর একমাত্র জীবিত কবি, দার্শনিক--ইহার আগে কেহ ছিল না, বর্ত কেউ নাই--ভবিষ্যদে কেহু আসিবেক নাই। হেসে খুন।

আর ব্রাত্য রাইসু সাহাব আমার মিউ মিউ করা দেখে বলেছিলেন কেডায় আপনে, আপনের সাহস কত--আমারে আলেমরে লৈয়া বাহাস করতে আইসেন! গুড়ুম।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

কুলদা রায় এর ছবি

ধন্যবাদ ভাল মন্তব্যের জন্য। ওনাদের কি মহাধান্ধাবাজ আর স্ট্যান্টবাজি বলা যায়?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

ধুম্রজাল এর ছবি

কুলদা রায়,
আপনি ফরিদা আখতারের সমালোচনা করতে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমন করেছেন।
তার কথা যুক্তি দিয়ে মিথ্যা প্রমান করুন । তিনি বিশেষজ্ঞ না হাতুড়ে তা বলতেই বিশাল গল্প ফেদেছেন। তা না বলে দেশের হয়ে কিছু বলুন।
আপনি লিখছেন
"বিদেশে পড়াশুনা বা গবেসণার কাজে গেলে ঐ সব বিদেশী গবেষণা সংস্থাগুলো তাদের আকর্ষণীয় সুযোগ সুবিধাসহ রেখে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে-- নিশ্চয়ই ফরিদা আখতারের মত হাতুড়ে ফালতুদের নয়?"
কথা সত্য। তারা রাখতে চা্য় নিজেদের প্রয়োজনে।তা যে পরবরতীতে আমাদের জন্য বাশ হয়ে দাড়ায় তাই ফরিদা আখতার বলতে চান।

দাদা আপনি কার হয়ে কথা বলছেন ?

হাসিব এর ছবি

দেশের হয়ে গলাবাজি করতে গিয়ে আর্গুমেন্টের এ্যাকাডেমিক মেরিট খোয়ালে সেটা বিপ্লব না হয়ে প্রতিবিপ্লব হয়ে দাড়ায়। এই কথাটা যারা "দেশের হয়ে" কথাবার্তা বলেন তাদের স্মরণে থাকা জরুরি।

পোস্টে ব্যক্তিআক্রমন চোখে পড়েনি।

কুলদা রায় এর ছবি

ভাই ধুম্রজাল, আপনার ধুম্র উদগীরণকারী মন্তব্যে পুলক লাগে আমার গায়ে। আমি এই লেখাটায় ফরিদা আখতারের কুযুক্তিগুলি নিয়ারে একটু যুক্তিভরে কওনের চেষ্টা করছি মাত্র। আমার লেখায় যুক্তি ছাড়া কিছু নাই। অধম বছর দশেক কৃষি নিয়ে লেখাপড়া করছিলেন--১৫ বছর কৃষি নিয়ে গবেষণা, মাঠে কামকাজ করছিলেন। সুতরাং অধম কপি পেস্ট করার ধান্ধাবাজি করতেআছেন না।
আপনি দেখান এই লেখায় আমি, অপ্রমাণের কিছু বলেছি। আর আমার গল্পগুলোও প্রমাণের অনুকূলে আছে।

বিদেশ গমণ করে আমাদের বিজ্ঞানীরা দেশের জন্য বাঁশ হয়ে দাঁড়িয়েছেন--এর সপক্ষে প্রমাণ দাঁড় করান। শুধু অনুমানে তো কাজ হবে না ভাই ধুম্রজাল।

আর এই বিদেশ গমণ বিষয়ে ফরিদা আখতারের শ্লেষের ব্যাখ্যা কিন্তু অন্য রকম। মারাত্মক। আপনাকে একটা প্রশ্ন করি--উবিনীগে কয়জন কৃষিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞ--বিজ্ঞানী কাজ করছেন--তার তত্য দিন তো।

ভাই, আমি আপনার হয়ে কথা বলছি--আর কার হয়ে কথা বলব!

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

ধুম্রজাল এর ছবি

হাইব্রীড ধান যে আমাদের জন্য বাঁশ তা ফরিদা আখতারের লেখা পড়ে জেনেছি। সিবা-গেইগি(নুতন কি যেন নাম) হরেক পদের কীটনাশক দিয়ে আমাদের বাধিত করেছেন তা চিন্তা ম্যাগাজিন পড়ে জেনেছি।

আপনার লেখনীতে যুক্তির অভাব হবার কারনে উনি কার ২য় স্ত্রী আর কার সাথে বেড শেয়ার করেন এমন বিষয়ের অবতারনা করসেন।
এক চিমটি লবন আর এক মুঠ গুর থিওরী অনুযায়ী ফরহাদ মাযহারের জামাত-রাজাকার প্রসংগ এসেছে।

আর বিজ্ঞানীদের কথা বলছেন ????
মাছের সাথে ফরমালিন, মুড়ির সাথে হাইড্রোযেন পারঅক্সাইড, গরুর পেটে ইউরিয়া, কারবাইড দিয়ে আম কলা পাকানো আবিস্কার চাষীদের নয় ।
আমাদের বিজ্ঞানীদের।

উবিনীগে কয়জন কৃষিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞ--বিজ্ঞানী কাজ করছেন-- ভাই মাফ চাই। আমার ধরনা নাই।

ভাই ভালো থাকুন। আপনি লিখেন চমতকার

কুলদা রায় এর ছবি

এত কম ধারণা নিয়ে মজহারের পক্ষে কথাবার্তা বলতে আসাটা মুশকিল। তবু আপনাকে সাবাসী দিচ্ছি।
ফরিদা আখতারের, মজহারের, মঞ্জুরুল হকের মূর্খবিশেজ্ঞজনিত লেখাগুলো নিয়ে আলাপ করা হবে। ওনাদের হাইব্রিড আর বিজ্ঞানীদের ব্রিডের মধ্যে পার্থক্য আছে। আপনি এক কাজ করেন--মজহার, ফরিদা আখতার--এদরকে পাঠিয়ে দেন। এ সকল বিষয়ে একটু ভাবান্দোলন করি। আন্দোলন মানে নাড়াচাড়া করা--বলেছিলেন যতীন সরকার। মনে আছে।

কলা শব্দটির নানা অর্থ আছে। কৃষি বিজ্ঞানীগণ নানান জাতের কলা আবিষ্কার করেছেন। কোনটির পুষ্টিমান, বাজারমান, আবহাওয়ামান, রুচিমান-- ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তারা জাত বের করেছেন। প্রকৃতিও তাই করে। নাহলে কুটি কুটি চাম্পা কলা আর ইয়া বড় সবরি কলা কেন প্রকৃতিতে পাওয়া গেল? বিজ্ঞানীগণ এই পর্যবেক্ষণ থেকেই এই ভাবে জাত বের করছেন। এ নিয়ে কথা হবে। এখন এই কলা কেউ খান, আবার কেউ কলার সঙ্গে শিল্প যোগ করে শিল্পকলা চর্চা করেন। সবই ইতিবাচক। কিন্তু খাওয়ার কলাকে কেউ বুড়ো আঙুলে কাঁচ-কলা বানিয়ে কুকর্মে ব্যবহার করেন--এ দায় তো বিজ্ঞানীদের নয় ভাই। শুধু শুধু বেচারাদের দোষ দেন কেন ভাই?
ফরহাদের ব্যক্তিগত বেড নিয়ে আমার ভাবনা নেই--আছে সীড বেড নিয়ে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

অতিথি লেখক এর ছবি

সাধারণ মানুষের কাছে শ্যাওড়া গাছের জ্বীন আর বৈজ্ঞানিক জিন-খুব বেশি পার্থক্য বহন করে না। আর আমার এলাকার প্রয়াত কবি রূদ্রদা'র মতে-

এদেশের জ্বীন কেরুর বোতলে বন্দী হয়েছে সব
(কবিতাঃ ষাটগুম্বজ মসজিদ)

বৈজ্ঞানিক তথ্যবিকৃতির মাধ্যমে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া সবথেকে সহজ কারন অধিকাংশ মানুষের বিজ্ঞানভিত্তিক এ্যাকডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও অভিজ্ঞতা না থাকার জন্যে। আর যদি ধোঁকাবাজ কেউ করপোরেট প্যাট্রনাইজড হয় তবে তো কথাই নেই। আমি বিজ্ঞানধারণাবিবর্জিত একজন কেরানী। তাই আমার কাছে যখন যে যেটা ভালোভাবে, সুখপাঠ্যরূপে উপস্থাপন করতে পারেন সেটাকেই বেশি 'ভালু পাই'। ফরিদা আখতাররা যদি এই সূযোগটা নিয়ে থাকেন তবে তা নিন্দনীয়।

তবে ইরি-বিরি কাজ করে। তা না করলে আমার মতো (মানে আমার সংস্থার মতো) একটা 'কাউঠা-পিচাশ' বিরিকে ২০ লাখ দিতো না জেনেটিক রিসার্চ করার জন্যে। ড. আবুল বাশার তখন জেনেটিক রিসোর্স ডিপার্টমেন্টের হেড ছিলেন আর ড. খালীকুজ্জামান ছিলেন তার ডিপুটি। যথেষ্ঠ ভালো কাজ তারা করেছেন আমার প্রজেক্টের মেয়াদকালে। আর এখনও তারা অক্লান্তভাবে জিনকে বোতলবন্দী করে এবং নিয়মিত জিন কালচার করে মানবকল্যানে অবদান রেখে চলেছেন। ভাবতে হবে এই গবেষণাগুলো না হলে খাদ্য-নিরাপত্তাখাতে আমাদের জন্যে অনেক দূর্গতি ছিলো। আমার এলাকার বিল ডাকাতিয় সংলগ্ন এলাকাগুলোতে অনেক মানুষের শাপলা-শালুক খেয়ে জীবন কাটাতে হতো। আর আজ জলাবদ্ধতার অবসান ঘটিয়ে টেকসই প্রজাতির ধানেব আবাদের ফলে ফসলের বণ্যা। দাকোপের মানুষ আজ অধিকফলনশীল এবং স্থানীয় জলবায়ুতে টেকসই প্রজাতির ধান ফলাচ্ছে। এসবই বিরির শ্রমের ফল। তাই আমরা অবৈজ্ঞানিক জ্ঞ্যানলব্ধ মানুষ এধরনের রচনাকে একটু নেতিবাচকভাবেই দেখবো।

কৃষককে আমি সবসময় শ্রদ্ধার উচ্চতম স্থানে রাখি। তার মানে এই নয় যে কৃষককে উঁচুতে উঠাতে গিয়ে বৈজ্ঞানিককে ডাউন দিতে হবে। আমি সেদলের লোক না। কৃষক গবেষনালব্ধ প্রমিনেন্ট একটা আউটকাম বাস্তবায়নে দক্ষ তার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। কিন্তু মূল যে কাজ, গবেষনা, এখানে কৃষকের কোনও অবদান রাখার সুযোগ নেই তার প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতার অভাবে।

অনেকদিন আগে ফম'র একটা সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম টিভিতে শাইখ সিরাজের নেওয়া। তাতে হাইব্রিড ধান সম্পর্কে ফম যা বলছিলেন, আমার কাছ তার ব্যাখ্যা হচ্ছে উনি বাংলাদেশকে আরও খাদ্যসংকটের দিকে ধাবিত দেখতে চাচ্ছেন এবং খাদ্য সেক্টরে ব্যাপক বৈদেশিক আগ্রাসন কামনা করছেন।

রাতঃস্মরণীয়

কৌস্তুভ এর ছবি

দারুণ লিখেছেন।

এ কথা ঠিক যে কিছু কিছু বিষয়ে বিতর্কের অবকাশ আছেই। যেমন উচ্চফলনশীল ধান। প্রচুর জল এবং কেমিক্যাল সার ছাড়া তাদের চাষ করা মুশকিল, তাই মাটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে ক্রমে; এখন আমেরিকায় যে 'সাসটেনেবিলিটি' নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে সেইটা কম তাদের।
অথবা জিএম প্রজাতি। সেগুলির সমস্যা হল, যে ভাল গুণের জন্য জিনটিকে বাছা হয়েছে, সে ছাড়া তার আর কি কি খারাপ দিক আছে সেগুলি সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাওয়া যায় না অনেক ক্ষেত্রেই।

এইগুলি নিয়ে একটা চিন্তামূলক আলোঞ্চনা করার সুযোগ ছিল ওনার। কিন্তু তার বদলে প্রোপাগান্ডার দিকে চলে গেছে জিনিসটা। "তাহলে বিজ্ঞানীরা কষ্ট করে নিজের মান-মর্যাদা বিসর্জন দিয়ে কেন ইরির কাছে জ্ঞান নিতে যাচ্ছেন?" এইটা পড়ে আমারই বরং হাসি পেল। আপনি যেমন বলেছেন, 'এইভাবে বৈজ্ঞানিক তথ্য আদানপ্রদান বৈজ্ঞানিকদের কাছে সাধারণ ঘটনা।' অন্যদেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক তথ্য আদানপ্রদান করলে যে নিজেদের বা দেশের মানমর্যাদার কোনো হানি হয় না, এটুকু না জেনে আবেগতাড়িত হয়ে উনি লিখতে যাচ্ছেন।

কুলদা রায় এর ছবি

ধান উৎপাদনে সার, জল, কেমিকেল নিয়ে কোন এক পর্বে আলোচনা হবে। আশা করি--অংশ নেবেন। ধন্যবাদ।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

কৌস্তুভ এর ছবি

বাঃ, ভালো কথা। উৎসাহ নিয়েই পড়ব, আপনার সব লেখাই পড়ি।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

২য় পর্ব দ্রুত আসুক।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

প্রয়োজনীয় লেখা।

জিন প্রযুক্তির যে কুফলগুলি আছে, তা নিয়ে কি পরের পর্বে লিখবেন?

দ্রোহী এর ছবি

১.
ফরিদা আখতারের সাথে ফরহাদ মগবাজারের সংযোগটা ধরতে পারতাম না যদি নৈষাদ ভাই বলে না দিতেন।

আমাদের দেশটাই চলে উল্টো রথে। চোরাচালানী বাবর হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বাধীনতা পদক পায় শর্ষিনার পীর। জব্বারকাগু হয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা, যার তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়ার সমান বা তার চাইতেও কম!! কৃষিপ্রধান দেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের প্রতিনিধি হয় ফরিদা আখতারের মত গোমূর্খ কাগীমা।

আমাদের কী হবে!

২.

শিব্রামের একটা গল্প আছে...গল্পের নায়ক কৃষি বিষয়ক পত্রিকার সম্পাদক হয়েছিলেন কোন জ্ঞান ছাড়া। জ্ঞানগর্ভ সম্পাদকীয় লিখতেন সব বিষয়ে...যেমন ধান গাছে একটা বাচ্চা উঠিয়ে দিয়ে ধান পাড়া উচিত, এতে ধানের মান ভালো থাকবে ইত্যাদি...পত্রিকার কাটতি হু হু করে বাড়তে থাকে...মানুষ বিনোদন ভালোবাসে।

মার্ক টোয়েইনের লেখা গল্পটার নাম "The how I edited an Agricultural Paper"। গুরু শিবরামের গল্পটার নাম "আমার সম্পাদক শিকার"। প্রথমে গুরুর লেখাটা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। পরবর্তীকালে মার্ক টোয়েইনের গল্পটা পড়ামাত্রই বুঝতে পেরেছিলাম মার্ক টোয়েইন গল্পটা শিবরামের কাছ থেকে মেরে দিয়েছেন। হো হো হো মার্ক টোয়েইন আরো বেশ কয়েকটা গল্প শিবরামের কাছ থেকে মেরেছেন।

আমাদের শিবরামের লেখা চোথা মারে মার্ক টোয়েইন। আমাদের মাসুদ রানাকে চোথা মেরে বই লেখে জেমস হ্যাডলি চেজ, অ্যালিস্টার ম্যাকলিনের মত বড় বড় থ্রিলার লেখকেরা। আমাদের সাহিত্যের বিশ্বব্যাপী কদর দেখলে ভালই লাগে। হো হো হো


কি মাঝি, ডরাইলা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।