আটপৌরে ঘোরাঘুরি ৩ - মাটারহর্নের কাছাকাছি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি
লিখেছেন ইয়াসির আরাফাত [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ১১/০৬/২০১৪ - ৭:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাটারহর্নের খোঁজ প্রথমে পাই এক সহকর্মীর কাছে। কয়েক মাস আগে দুইজন মিলে অফিসের দেয়ালে টানানো একটা ত্রিমাত্রিক মানচিত্র দেখছিলাম। সুইজারল্যান্ড বলতে আমি তখন চিনি কেবল ইয়ুংফ্রাউইয়োক আর ইন্টারলাকেন, সেখানেও আবার যাওয়াও হয় নি, গরমকালে যাব এরকম প্ল্যান। সম্ভাব্য সেই যাত্রার খুঁটিনাটি নিয়ে দুইজনে কথা বলছিলাম। সে হঠাৎ বলল, ‘তুমি মুঁ স্যারভাঁতে গিয়েছ’? যাব কি, আমি জীবনে নামই শুনিনি। ম্যাপের মাঝখান থেকে তার হাত একেবারে নীচের দিকে নেমে এলো, উঁচু একটা জায়গা দেখিয়ে বলল, ‘এই দেখো, এখানে। প্রতি বছর হাজারে বিজারে ট্যুরিস্ট এখানে বেড়াতে আসে’।

দেখলাম, খুব আহামরি কিছু একটা মনে হলো না। আল্পস পর্বতমালা দেশটির মোটামুটি মাঝখান দিয়ে চলে গেছে। এদিক সেদিক উঁচু পর্বত প্রায়ই চোখে পড়ে। সব বাদ দিয়ে এই জায়গাটা বেশি বিখ্যাত হতে যাবে কেন? কারণটা কি?

যুগের সারথি গুগুলের সাহায্য নিতেই অনেক কিছু জানা গেল। আমি যে থ্রি-ডি ম্যাপ দেখছিলাম সেটার গুণগত মান বেশি সুবিধার ছিলো না। নইলে দেখতে পেতাম অন্যান্য পর্বতগুলোর মত গা ঘেঁষাঘেঁষি না করে একা একটি চৌকোণাকৃতি চূড়া বেশ খোলা জায়গায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। তার গড়ন অনেকটাই পিরামিডের মত, মাথাটা পুরোপুরি চোখা না হয়ে একটু বাঁকানো। বুঝতে পারতাম বিভিন্ন সময়ে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ছবি বা স্যুভেনিরে একে নানাভাবে আঁকা বা খোদাই করা দেখেছি। উইকিতে বিবিধ বিবরণের পাশাপাশি পর্বতটিকে বিজয়ের কাহিনীটাও লেখা ছিলো। মন্ত্রমুগ্ধের মত সেই কাহিনী পড়লাম (আগের পোস্টে সেটি অনুবাদ করে তুলে দিয়েছি)। তারপর থেকে মাটারহর্ন আমাকে চুম্বকের মত টানছিলো।

সুইজারল্যান্ড ছাব্বিশটি নির্বাহী অঞ্চল (ক্যান্টন) এ বিভক্ত। সমন্বিত সরকারের চেয়ে আঞ্চলিক সরকার এখানে বেশি ক্ষমতা ধরে, যে যার হিসেবমত নিজের এলাকা চালায়। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিটি অঞ্চলের কিছু নিয়মনীতি অন্যদের থেকে আলাদা। মাটারহর্ন পড়েছে ভ্যালে (Valais) ক্যান্টনে। প্রকৃতি এই এলাকাটিকে একেবারে মনের মত করে সাজিয়েছে। যেখানেই যাবেন সেটাই ট্যুরিস্ট স্পট, চোখ ফেরাতে সময় লাগবে সবখানেই। বিশাল এই অঞ্চলটিতে সমতল জায়গা হাতের বিঘা দিয়ে মেপে ফেলা যাবে, চারিদিকে কেবল উঁচু উঁচু পর্বত। চূড়াগুলো বরফে ঢাকা আর নিচের দিকে মাইলের পর মাইল আঙ্গুর ক্ষেত। সুইসরা দাবী করে, ভ্যালের ওয়াইন বিশ্বসেরা। একই দাবী অবশ্য সাউথ আফ্রিকান আর ফ্রেঞ্চদেরও।

ছবি ১ - সুন্দরী ভ্যালে

ভ্যালের প্রসঙ্গ আসলেই একটু লাগামছাড়া রোমান্টিক হয়ে পড়ি। যা বলছিলাম, প্রতিটি ক্যান্টনের কিছু কিছু জিনিস ‘স্পেশাল’। ভ্যালের নাম বললে প্রথমেই চলে আসবে যারমাটের কথা। আল্পসের একেবারে পেটের মধ্যে সুইস ইটালিয়ান সীমান্তরেখায় অবস্থিত ষোলোশ মিটার উচ্চতার এই দুর্গম শহরে প্রতি বছর তিন মিলিয়নের বেশি পর্যটক আসে। এখানে ৩৬৫ দিন স্কি করা যায়, এখানে কেবল কার আর মাউন্টেন চেয়ারলিফটের ছড়াছড়ি, এখানে পাহাড়ের চূড়ায় একটা আইস মিউজিয়াম আছে, এখানে ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু খোলা রেললাইন আছে, এখানে জীবাশ্ম জ্বালানী চালিত গাড়ি ঢোকা বারণ ইত্যাদি অসংখ্য বৈশিষ্ট্য থাকলেও, এতো দর্শনার্থীর আসবার কারন আসলে একটি। সেটা হচ্ছে, মাটারহর্ন।

১৮৬৫ সালের মাটারহর্ন ট্র্যাজেডির পর থেকেই এখানে বেড়াতে আসা লোকের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। প্রথম দিকে শুধু অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিরাই এখানে আসত। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটার পর রাস্তা সহজ হয়ে গিয়েছে সবার জন্যই। আমরাও একদিন বিসমিল্লাহ বলে বেরিয়ে পড়লাম এই ঐতিহাসিক প্রাকৃতিক নিদর্শন দেখবার জন্য।

ভ্যালের পথেঘাটে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে চমৎকার লাগে আমাদের। অনেকবার একই পথ দিয়ে গিয়েছি, একমুহুর্তের জন্যও একঘেয়েমি পেয়ে বসেনি। শেষেরবার রোন গ্লেসিয়ার দেখতে গিয়েছিলাম এপথ দিয়েই। শরৎকাল প্রায় শেষের দিকে, পাতার রঙ গাঢ় হতে হতে লালচে আগুনের মত হয়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়। পর্বত চূড়ায় জমাট বরফ, নিচের দিকে এলোমেলোভাবে বেরিয়ে আছে তীক্ষ্ণ পাথর, বরফের চাদর সেগুলোকে ঢেকে দিতে পারেনি। কোথাও কোথাও পাহাড়ের অনেকখানিই ন্যাড়া, এতই খাড়া, বরফ জমে থাকা সম্ভব হয়নি।

মন্ট্রু, এইগল, মার্টিনি, সিয়োঁ হয়ে ভিস্প পর্যন্ত একেবারে সমতল, মুখস্থ রাস্তা। ভিস্প থেকে ডানে মোড় নিতেই হঠাৎ ম্যাজিকের মত বদলে গেলো চারপাশ। রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে সরু এক পাহাড়ী নদী, একটু দূরে পথরোধ করে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল এক পর্বত। দেখে মনে হয়, পথের শেষ বুঝি ওখানেই। সুইসরা টানেল বানাতে ওস্তাদ, আশা করছিলাম পাহাড় ফুঁড়ে বেরিয়ে যেতে হবে। আমাকে অবাক করে দিয়ে রাস্তা একেবেঁকে ঘুরে এগিয়ে চলল। হয়ত পর্যটকদের বেশি করে দেখবার সুযোগ করে দিতেই এই ব্যবস্থা। দুই পাহাড়ের মাঝে বিশাল এক খাদ, সেটার ওপর দিয়ে সেতু বানানো। গাড়ি নিয়ে পার হয়ে যাবার সময় পেটে কেমন একটা শিরশিরে অনুভূতি হলো।

রাস্তার দুই পাশে পাহাড় এবার চেপে এসেছে। কোথাও কোথাও একেবারে সরু, কোনমতে রাস্তা বানানো, আর পাশেই গহীন খাদ। মনে আছে, ক্লাস নাইনে পড়ার সময় রাঙ্গামাটি যাবার সময় খাদ দেখে কেমন ভয় পেয়েছিলাম। রাস্তার গা একেবারে খোলা, বাঁক ঘুরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালেই সোজা তিনশো ফুট নীচে। এখানেও দৃশ্য কাছাকাছি, কিন্তু ভয় লাগে না মোটেই। রাস্তার পাশে শক্ত রেলিং, হাল্ক সাহেবেরও সেটা উপড়ে ফেলতে কষ্ট হবে।

ছবি ২ - ইনি একজন বেপরোয়া ড্রাইভার। সর্পিল রাস্তায় রং সাইড দিয়ে আমাকে পাশ কাটিয়ে তুফান বেগে ছুটছিলেন। কিছুদূর এগিয়ে দেখি, কাফেলার কাছে আত্মসমর্পন করেছেন

একটা শহরের কাছাকাছি এসে পথ হঠাৎ সমতল আর চওড়া হয়ে গেলো, প্রকৃতির দয়া। একটানা বিশ কিলোমিটার স্লো মোশনে ড্রাইভ করে কেমন হাঁফ ধরে গেছিলো। একশোর ওপরে তুলে ফেললাম স্পীড, ভাবখানা এমন, এমনি করেই পোঁছে যাব গন্তব্যে। আসলে থামার সময় হয়ে এসেছিলো। যারমাটে শুধু ইলেক্ট্রিক কার নিয়ে যাওয়া যায়। আমাদেরকে ট্যাশ (Täsch) শহরে গাড়ি পার্ক করে ট্রেনে করে যেতে হবে। যারমাট এখান থেকে বেশি দূর নয়, তারওপর বিশ মিনিট পর পর শাটল ট্রেন আছে। বিশাল কমার্শিয়াল পার্কিং বানানো, তেরো ফ্রাঁ দিলে পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি রাখা যায়। নিঃসন্দেহে সস্তা।

ছবি ৩ - হঠাৎ সমতল রাস্তা। দূরে দেখা যাচ্ছে তীক্ষ্ণ শৃঙ্গ ক্লাইনে মাটারহর্ন

দশ মিনিটের ট্রেন। কিন্তু কিছুদূর চলে উল্টো দিক থেকে ট্রেন আসবার অপেক্ষায় বসে রইলো আরও মিনিট দশেক। পথ এখানে অত্যন্ত সরু, মেপে মেপে কেবল একসারি রেললাইন বসাবার ব্যবস্থা করা গেছে। আমাদের তর সইছিলো না। দীর্ঘ অপেক্ষার শেষদিকেই কেন আমরা এত ব্যাকুল হয়ে উঠি?

রেল স্টেশনের বাইরে পা দিয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখছিলাম চারিদিক। এসেই পড়লাম অবশেষে! ট্যুরিস্ট শহর, তবুও কোলাহল নেই। চারদিকে ইতস্ততঃ ঘুরে বেড়াচ্ছে লোকজন। কারও তাড়া নেই তেমন। আর গাড়িও নেই রাস্তায়। অনেকক্ষণ পর পর বাঁটুল সাইজের কিছু গাড়ি দেখা যায়, সবই ব্যাটারি চালিত। ছবি তুলছিলাম টুকটাক। দুপুর একটার বেশি বাজে, পেট তীব্রে ক্ষিধে জানান দেয়ায় ট্যুরিস্টগিরি বন্ধ করে কুইক সল্যুশন ম্যাকডোনাল্ড’সে ঢুকে পড়লাম।

ছবি ৪ - স্টেশনের বাইরে

আমার বন্ধু ইমতিয়াজ আর জয়া ছেলেমেয়ে নিয়ে বেড়াতে এসেছে তিনদিন আগে। খুব ব্যস্ত সময়সূচী, দেখা করবার একমাত্র সম্ভাবনা কোন ট্যুরিস্ট স্পটে গেলে। এর থেকে ভালো জায়গা আর কি হতে পারতো? দুই পরিবার মিলে একসাথে কেবল কারে করে মাটারহর্ন দেখতে যাব, সেই পরিকল্পনা করে এসেছি। কিন্তু সেই কখন থেকে তার মোবাইলে কল দিচ্ছি, বন্ধ পাচ্ছি কেবল। আজ মনে হয় আর দেখা হবে না। ওদের অনেক আগেই পৌঁছে যাবার কথা, হয়তো এতক্ষণে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে বসে আছে। নেটওয়ার্ক নেই, এতে আর আশ্চর্য কি?

খাওয়া প্রায় শেষের দিকে, এই সময় মোবাইল বেজে উঠল। ওরা আমাদের জন্য কেবল কার স্টেশনে অপেক্ষা করে আছে। পড়িমড়ি করে ছুট লাগালাম। ম্যাপ বলছে কিলোমিটার খানেক দূরে স্টেশন। হেঁটেই রওনা দিলাম। কিন্তু উঁচু নিচু রাস্তার গোলকধাঁধায় পথ হারিয়ে ফেললাম খুব দ্রুতই। উল্টোপথে হেঁটে আবার রেল স্টেশনে ফেরত এলাম, দেখি বাস টাস কিছু পাই কিনা। আগে খেয়াল করি নি, এবার দেখি একটা বাঁটুল গাড়ির গায়ে লেখা, ‘ট্যাক্সি’। বটে! অহো! চালক দেখি ইংরেজীও বলে। সোনায় সোহাগা একেবারে। বাঁটুল ট্যাক্সিতে করে তিন মিনিটে পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। যারা এখানে ঘুরতে যাবেন, এই বেলা জানিয়ে রাখি, স্টেশনের বাইরে বাঁ দিকে একটা বাস স্টপ আছে। মাটারহর্ন গ্লেসিয়ার প্যারাডাইস কেবল কার স্টেশন পর্যন্ত ফ্রি শাটল। ট্যাক্সি না খুঁজে নিশ্চিন্তে উঠে বসতে পারেন।

ছবি ৫ - বাঁটুল ট্যাক্সি

স্টেশনের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে একটা বরফ গলা ঝর্ণা। হেঁটে সেতুর ওপর উঠতেই চোখের সামনে ঝলমল করে উঠল মাটারহর্ন।

ছবি ৬ - মাটারহর্নঃ প্রথম সাক্ষাৎ

অনেক দিন পর পুরনো বন্ধুদের পেয়ে গল্পে আর ফটোসেশনে মেতে উঠলাম, দিন গড়িয়ে যাচ্ছে খেয়াল করা উচিৎ ছিলো। প্রাথমিক উচ্ছ্বাস কেটে যাবার পর কেবল কার স্টেশনে গিয়ে যখন টিকেট চাইলাম, ওরা জিজ্ঞেস করল ওয়ান ওয়ে টিকেট কাটছি কিনা। আমাদের মতো ভেতো বাঙালি পাহাড় চূড়া বেয়ে পদব্রজে নামবে? অসম্ভব। রিটার্ন টিকেট শুনে মেয়েটি উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, এতো দেরী করেছ কেন তোমরা? এখন বাজে তিনটা। পাহাড়ের ওপরে উঠতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগবে, পাঁচটায় শেষ কেবল কার নামে চূড়া থেকে। বড়জোর বিশ মিনিট সময় পাবে ওপরে থাকার। আইস মিউজিয়াম দেখবে কখন আর ওপরে বেড়াবে কখন?

আমরা মুখ চাওয়াচাওয়ি করলাম। এতদূরে এসে চূড়ায় না উঠেই ফেরত যাব? হোকগে বিশ মিনিট। আমরা তাতেই রাজি। টিকেট কেটে ঢুকতে যাচ্ছি, এমন সময় কাউন্টার থেকে মেয়েটা দৌড়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘তোমার মেয়ের বয়স যেন কত বললে? এক বছর? তিন হবার আগে ও এতো উঁচুতে উঠতে পারবে না। অক্সিজেনের সমস্যা হতে পারে’। আমি বেশি অবাক হলাম না। কদিন আগে মুঁ ব্লঁ তে যাবার প্ল্যান বাতিল করেছি ঠিক একই কারনে। এটার হাইট এক হাজার মিটার কম (৩৮৮৩ মি), ভেবেছিলাম এখানে সমস্যা হলে ওয়েবসাইটে বলা থাকত।

মেয়েটি হাতে করে নতুন টিকেট আর টাকা নিয়ে এসেছে। বলল, ‘এই নাও কিছু টাকা ফেরত। তোমাদের যে কোন একজন শেষের আগের স্টেশনে কার থেকে নেমে যেও’।
‘আগের স্টেশনের হাইট কতো’? জিজ্ঞেস করলাম আমি।
মেয়েটি জবাব দিলো, ‘ দুই হাজার নয়শো মিটার। হ্যাভ অ্যা নাইস ট্রিপ’।

একটু মন খারাপ হয়ে গেলো। এমন একটা অবস্থা, যে থাকবে তারও খারাপ লাগবে, যে যাবে তারও খারাপ লাগবে। প্রশ্ন হচ্ছে, কে যাবে? আগে তো ট্রোকেনার স্টেগ আসুক, তখন দেখা যাবে। হাতে ম্যাপ ছিলো, স্টেশনের নামগুলো দেখে নিয়েছি। প্রথম অংশে ছোট ছোট গনডোলা সাইজের কার, ফুরি স্টেশনে গিয়ে চেঞ্জ করে বড় কেবিনে উঠে যাওয়া যেতে পারে, এটা সরাসরি ট্রোকেনার স্টেগে থামে। অথবা চেঞ্জ না করে ছোট কেবিনেই ঘুরপথে ট্রোকেনার স্টেগে যাওয়া যায়। সার বেধে কেবিন এগিয়ে আসছে। লাফ দিয়ে একটাতে উঠে পড়লাম।

কিছুক্ষণের মধ্যেই যারমাট শহরের বাড়িঘরগুলো ছোট হয়ে আসতে থাকে। যত ওপরে উঠছি, আল্পসের চূড়াগুলো একে একে মাথা বের করছে, সুইস অংশে ৪৮টি চার হাজারি শৃঙ্গ আছে, এর মধ্যে ৩৮টাই যারমাটের আশেপাশে। মাটারহর্ন দশম উচ্চতম শৃঙ্গ, উচ্চতা ৪৪৭৮ মিটার। প্রথমে কিছুক্ষণ মুগ্ধ হয়ে এটা সেটা মন্তব্য করছিলাম দুজনে, কিন্তু পর্বতের বিশালতা আমাদের নির্বাক হয়ে সৌন্দর্য দেখতে বাধ্য করল। কাঁচের ভেতর দিয়ে চারদিক দেখা যাচ্ছিলো বটে, কিন্তু আমাদের চোখ ঘুরে ফিরে মাটারহর্নের দিকেই চলে যাচ্ছিলো একটু পর পর। আমার মাথায় ঘুরছে এডওয়ার্ড হুইম্পার আর তার একের পর এক ব্যর্থ অভিযানের কথা। শেষ অভিযানটি সফল, কিন্তু সাতজন আরোহীর মধ্যে চারজনের করুণ মৃত্যুবরণ। আসলেই কি সফল? ওই তো দেখা যাচ্ছে হোয়ের্নলি রিজ, যেটা ধরে ওঠা শুরু করেছিলো অভিযাত্রীর দল। কল্পনায় দেখতে পেলাম সাতজনের একটি দল কাঁধে ব্যাগ আর হাতে দড়ি গাঁইতি নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে পাথরের বাধা অতিক্রম করে।

ছবি ৭ - ছোট হয়ে আসছে যারমাট

ছবি ৮ - ঘুরেফিরে এনার দিনেই চোখ চলে যাচ্ছিলো

ছবি ৯ - একটানা উঠেই চলেছি বিরতিহীন। পেছনে ছবি হয়ে ভাসছে আল্পস

ছবি ১০ - সোয়ার্জসি (কালো হ্রদ)। উল্টোদিকের গোরনারগ্রাট থেকে মাটারহর্নের খুব চমৎকার প্রতিবিম্ব দেখা যায় সূর্যোদয়ের সময়। আবার সুযোগ পেলে, সেটাও দেখবার ইচ্ছে আছে।

ছবি ১১ - অদূরে বিশালবপু মন্টে রোসা, সুইজারল্যান্ডের উচ্চতম শৃঙ্গ

একটা ঝাঁকি খেয়ে ধ্যান ভাঙলো। ট্রোকেনার স্টেগ এসে গেছে। নেমে পড়লাম কেবিন থেকে, নয়তো ওটা আমাদের নিয়ে আবার ফিরতি পথে চলে যাবে। পরের কেবিন থেকে আমাদের সঙ্গীরাও নামলো। সাতপাঁচ আলাপের সময় নেই, কে যাবে এটা নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে মূল্যবান সময় নষ্ট হতে পারে। আমার স্ত্রীকে নীচু গলায় জানালাম যে আমি থাকছি, পরেরবার দুজন মিলে ওপরে ওঠা যাবে। সেও ব্যাপারটা বুঝেছে। কথা না বাড়িয়ে পরের কেবিনের দিকে হাঁটা দিলো সবাই।

আমি প্রায় এক ঘণ্টা ট্রোকেনার স্টেগে ঘুরেফিরে কাটালাম। এই স্টেশনটা অনেক কারনে গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে মাটারহর্ন গ্লেসিয়ার প্যারাডাইস যাবার কেবল কার ছাড়ে, আবার এখান থেকেই আরেকটা লাইন চলে গেছে সীমান্তের অন্যপাশে ব্রুইল-সারভিনিয়া গ্রামে। অনেকেই সেখান থেকে সুইজারল্যান্ডে কাজ করতে আসে, দিন শেষে নিজের বাড়িতে ফিরে যায়। আগেকার দিনে যোগাযোগের একমাত্র উপায় ছিলো পায়ে হেঁটে থিওডুল পাস পাড়ি দেয়া। এমনকি এখনো, কেবল কার না থাকলে গাড়িতে ২২৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হতো।

সঙ্গীদের ফিরতে দেরী দেখে একটু চিন্তিত হয়ে পড়লাম। শেষ কারটা মিস করলো নাকি? তাহলেই হয়েছে। আগামী কালের আগে আর ফিরতে হবে না ওখান থেকে। নির্ধারিত সময়ের পাক্কা বিশ মিনিট পর দেখা মিলল তাদের। শেষ গাড়ি বলে একটু দেরিতে ছেড়েছে, ওপরে থাকা সবাইকে নিয়ে। অন্য কারনটাও ভয়ানক। ইমতিয়াজের ছোট ছেলে আয়ান জ্ঞান হারিয়ে সটান মেঝের ওপরে পড়ে গেছে ওপর থেকে নামার পর। গালে একটু আঁচড়ের দাগ ছাড়া আর কোন চিহ্ন নেই যদিও। তারপরও, খারাপ কিছু ঘটতে পারত। ওদের মেয়েটা আরও ছোট, কিন্তু তার কিছু হয়নি দেখে ভালো লাগলো।

নীচের দিকে নামছি, যারমাট শহর হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে এত কাছে। হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাঁকি খেয়ে থেমে গেলো কেবল কার। বেশ ভালো গতিতে চলছিলো, একেবারে জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে যাওয়াতে ঝুলে থাকা ভারী কেবল টানা তারের সূত্রমতে আড়াআড়ি দোল খেতে শুরু করলো, সেই সাথে আমরা সহ পুরো কেবিন। কপাল খারাপ, আমরা এমন জায়গায় পড়েছি, যেটা দুই প্রান্তের ঠিক মাঝামাঝি। ফলে সর্বোচ্চ উল্লম্ব সরণের শিকার হলাম। আত্মা উড়ে যাওয়া সেই ঝাঁকুনি পুরো মিনিট দুয়েক ধরে চলল। পরে জেনেছি, শেষ বিকালে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের প্রয়োজনে পুরো সিস্টেম দাঁড় করিয়ে ফেলা একটি রুটিন। আমাদের জায়গায় স্পোর্টিং কেউ হলে হয়তো এতোটা ভয় পেতো না।

কথায় বলে, ভালো খারাপ পিঠাপিঠি থাকে। ঝাঁকুনি থেমে যেতে আবিষ্কার করলাম, আমরা পাহাড়ের গায়ে একটা ফাটলের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। সেটার ভেতর থেকে তীরবেগে বেরিয়ে আসছে পানির স্রোত। জায়গাটা দুর্গমও নয়। যারমাট শহর থেকে পায়ে হাঁটা পথ আছে, পাহাড়ের গায়ে লোহা গেঁথে রীতিমত প্যাসেজ বানিয়ে দেয়া, যাতে কেউ সেটা উপভোগ করতে পারে একেবারে কাছাকাছি গিয়ে। ধন্য সুইস ট্যুরিজম।

ছবি ১২ - এই ফাটলটার ওপর দাঁড়িয়ে গেলো কেবল কার।

ছবি ১৩ - ঝুলতে ঝুলতে যারমাটের একটা স্ন্যাপ নিয়ে নিলাম

বিধাতা বোধহয় আমার মন খারাপ দেখে মুচকি হেসেছিলেন। যারমাট থেকে ফেরার দিন কয়েক পরেই খবর এলো, ফিনল্যান্ড থেকে বন্ধু হাসিব আর বুলা বেড়াতে আসছে দুই দিনের জন্য। নভেম্বরের মাঝামাঝি ওরা এলে আলোচনা করে ঠিক হলো, যারমাট যাওয়া হবে। আবারও রওনা হয়ে গেলাম ভ্যালের পথ ধরে। পুরোটা পথ জুড়ে কেবল কুয়াশা, পঞ্চাশ ফুট দূরের জিনিস দেখতে কষ্ট হয় এমন। ভাবলাম, বন্ধুদের কপাল আজকে খারাপ। কুয়াশা ঢাকা আল্পসই দেখতে হবে আজকে।

ভিস্প থেকে ডানে মোড় নিয়ে একটু ওপরে উঠতেই রোদে ঝলমল করে উঠলো পথ আগলে দাঁড়ানো সেই বিশাল পর্বত। বিশ দিনেই বিশাল পরিবর্তন। চারদিক বরফে সাদা হয়ে গেছে। রাস্তা বরাবরের মতোই ঝকঝকে পরিষ্কার। বরফে মুড়ে আরো যেন খোলতাই হয়েছে পথের সৌন্দর্য।

ছবি ১৪ - ভিস্প থেকে অনেকটা ওপরে উঠেছি, কুয়াশা এখনো পিছু ছাড়েনি। তবে কড়া রোদের আভাস পাওয়া যাচ্ছে এখান থেকেই।

ছবি ১৫ - পথ আগলে দাঁড়ানো পর্বত

ছবি ১৬ - পথ গেছে পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে

ছবি ১৭ - তিন পাত লাগানো মাউন্টেইন রেলওয়ে

ছবি ১৮ - আরেক দফা যারমাট শহর

ছবি ১৮ ক - কেবল কার স্টেশনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ী ঝর্ণা। যারা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এই দৃশ্য দেখে, তাদের আমি ঈর্ষা করি।

ছবি ১৯ - এই কদিনে রূপ বেড়ে গেছে অনেকখানি, খালি চোখে তেমন নয়, তবে ফটোতে বন্ধুর ক্যামেরার গুণে

ছবি ২০ - বরফের চাদরে ঢেকে গেছে যারমাট

ছবি ২১ - মন্টে রোসা গ্লেসিয়ায়ের গলন্ত পানি বরফ হয়ে গেছে

কিছুক্ষণের মধ্যেই আগের রুটিনে যারমাট হয়ে পোঁছে গেলাম ট্রোকেনার স্টেগে। শেষ কেবলওয়ে টার চেহারা আসলেই ভীতিকর। এক কিলোমিটার উচ্চতা পেরিয়ে যাবার জন্য পথের দৈর্ঘ্য খুব বেশি নয়। দেখে মনে হয় যেন খাড়া উঠে গেছে। আমাদের আগের যাত্রীদের নিয়ে কেবিনটা ফিরে আসতেই দুই পাশ দিয়ে হুড়মুড় করে লোক ঢোকা শুরু হয়ে গেলো। নিজেদেরকে বড্ড বেমানান লাগছিলো, কারন নব্বই শতাংশের বেশি লোক স্কি নিয়ে উঠেছে। সবার পায়েই স্কি বুট, ধাতব মেঝেতে খটমট শব্দে কানে তালা লেগে যাবার দশা। কারো কারো কপালে স্পোর্টস ক্যামেরা বসানো, ক্লাইনে মাটারহর্ন থেকে স্কি করে নেমে যাবার দৃশ্য ভিডিও করে রাখার জন্য।

ছবি ২২ - ট্রোকেনার স্টেগ

কেবিন বেশ দ্রুতগতিতে চলে, অল্প সময় পরেই আমাদের ক্লাইনে মাটারহর্নের চূড়ায় নিয়ে এলো। এখান থেকে মাটারহর্নের সাউথ ফেস দেখা যায়। আর দেখা যায় উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত আল্পস পর্বতমালা। আল্পসের উচ্চতম শৃঙ্গ মুঁ ব্লঁ দেখে এতো কাছে মনে হয়, যেন হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। যেই কুয়াশা আমরা নীচে ফেলে এসেছি, সেই কুয়াশার ঘন বিস্তৃত আবরণ চোখে পড়লো পাহাড়ের গায়ে গায়ে। একেবারে সমতল লাগছিলো দূর থেকে, যেন সেখানে সমতল ভূমি, আর বিভিন্ন উচ্চতার পর্বতশৃঙ্গ সেটা ভেদ করে বেরিয়ে এসেছে।

ছবি ২৩ - নাম ফলক

ছবি ২৪ - ক্লাইনে মাটারহর্নে উঠে গেলে যারমাট আর ট্যাশ দুটোই দেখা যায়

অদূরেই ইটালির সীমান্ত। স্কিয়ার রা দেরি করলো না, সাঁই সাঁই করে নীচের দিকে নামতে শুরু করলো। কেউ যাচ্ছে যারমাটের দিকে, কেউবা ব্রুইল-সারভিনিয়ার দিকে। মুগ্ধ হয়ে সেটাই দেখলাম কিছুক্ষণ। আমার স্কি করার অভিজ্ঞতা নেই, তাই হয়তো ঈর্ষাও অনুভব করলাম কিছুটা। যেদিন থেকে হুইম্পার সাহেবের গল্প পড়েছি, সেদিন থেকেই মাটারহর্ন আর ব্রুইল-সারভিনিয়া গ্রাম নিজ চোখে দেখার তীব্র ইচ্ছা অনুভব করছিলাম মনে মনে। হোকনা দুটোই দূর থেকে দেখা, কেমন যেন একটা তৃপ্তি অনুভূত হলো।

ছবি ২৫ - স্কিয়ার দের কেবল পায়ে যন্ত্রপাতি লাগাবার অপেক্ষা, তারপরই দে ছুট

ছবি ২৬ - সামনে ইটালি আর ফ্রান্সের সীমান্ত, কিন্তু গায়ে গা লাগানো পর্বতমালা সীমান্তের ধার ধারে না। দূরে আল্পসের উচ্চতম শৃঙ্গ মুঁ ব্লঁ। বাঁয়ে ঘন শুভ্র মেঘ ভেদ করে উঠেছে ছোটবড় পর্বত।

ছবি ২৭ - মাটারহর্নের সাউথ ফেস (ইটালি সীমান্তে)। এতই খাড়া, বরফ জমতে পারে না।

ছবি ২৮ - ইটালি সীমান্তে কিছু স্থাপনা। অনেক নীচে ব্রুইল-সারভিনিয়া গ্রাম

দেখার আরো কিছু বাকি ছিলো। সেই যে, বরফ যাদুঘর। ক্লাইনে মাটারহর্নের পেট কেটে একটা গুহা বানানো। মাটারহর্ন, যারমাটের বাড়িঘর, পাহাড়ি ছাগল, হরিণশাবক, একাকী কৃষক ইত্যাদির প্রতিকৃতি স্বচ্ছ বরফ দিয়ে তৈরি। বাড়তি অনুষঙ্গ হিসেবে বিজলী বাতির আলো বিকিরণ করার ব্যবস্থা আছে, সেটা আবার ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায়। গুহার দেয়ালে শক্ত স্ফটিকাকার বরফ জমে আছে, সেগুলোর গা থেকে অদ্ভুত রঙ ঠিকরে বেরোচ্ছে। যত সুন্দরই হোক, বদ্ধ গুহায় কিছুক্ষণ পরেই অস্থির লাগতে শুরু করলো। আসলে বাইরের আল্পস পর্বতমালা টানছিলো ভীষনভাবে। আরো একদফা উপভোগ করলাম সেই দিগন্ত বিস্তৃত রুদ্ধশ্বাস প্রকৃতি। আমি জানি এখানে দীর্ঘদিন আমার আর আসা হবে না।

ছবি ২৯ - মাটারহর্নের বরফ প্রতিকৃতি

ছবি ৩০ - আবারও যারমাট

ছবি ৩১ - হরিণশাবক আর পাহাড়ী ছাগল

ছবি ৩২ - গুহার দেয়ালে স্ফটিক বরফ

কেবল কার চলে এসেছে। নামতে হবে। বিড়বিড় করে বললাম, বিদায় মাটারহর্ন। আবার দেখা হবে কোন একদিন।


মন্তব্য

এক লহমা এর ছবি

খুব ভালো বেড়িয়ে এলাম দেঁতো হাসি
পরের বেড়ানোর অপেক্ষায় থাকলাম। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ এক লহমা দাদা। লেখা শেষ করে উঠতে পারলে আরো কিছু কাহিনী আসতে পারে হাসি

মেঘলা মানুষ এর ছবি

চমৎকার সব ছবি! মাটারহর্ন জীবনেও যাওয়া হবে কি না সন্দেহ, আপনার কল্যাণে সেসব দেখা হয়ে গেল!

আরও আরও জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর আব্দার (মামুবাড়ি হতে) রেখে গেলাম খাইছে

শুভেচ্ছা হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ। সুইজারল্যান্ড ছেড়ে আসার আগে বিরামহীনভাবে ঘোরাঘুরি চালিয়েছি। সময় পেলে লিখে ফেলব আরও খান পাঁচেক গল্প হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাচাং

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখে এলাম মাটারহর্ণ।
আপনার লেখার সবচেয়ে ভালো দিক হলো ছবির সম্পৃক্ততা অনেক বেশী। লেখা পড়তে পড়তে যদি মনে হয় দেখতে কেমন ছিলো, তক্ষুনি ছবিটা পেয়ে যাই।
পরের পর্ব কবে পাবো?

ভালো থাকবেন ইয়াসির।
অনেক শুভকামনা।

-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ভালো লাগা জানানোয় কৃতজ্ঞতা। আপনিও ভালো থাকবেন পলাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

সুইজারল্যান্ডের নাম শুনলেই আমার বরফ ঢাকা পাহাড়ের কথা মনে হয়। জার্মানিতে থাকার সময় একবার শুধু Basel দেখার সুযোগ হয়েছিল। সেই সময় শীত ছিল কিন্তু বরফ ছিল না তাই সেই বরফে ঢাকা সুইজারল্যান্ড দেখার সুযোগ হয়নি। এবার আপনার লেখায় দেখে নিলাম।

ফাহিমা দিলশাদ

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

সময় করে পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ ফাহিমা।

মরুদ্যান এর ছবি

সুইজারল্যান্ড অনেক লাইক হইসে!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

হাতে কিছু টাকাপয়সা জমলে ঘুরান দিয়া আইসো। টাকা মাইর যাবে না হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।