এ শ্রাবণ সন্ধ্যায়
বৃষ্টিভেজা মৃদু বাতাস
অহেতুক, অকারণে
থমকে গেলো সময়।
হঠাৎ স্তব্ধতা।
নিঃশ্বাসের শব্দ।
কানে লাগে।
অসহ্য।
নিঃশ্বাসে বিষ যেন;
এ সন্ধ্যা,
মৃদু বাতাস,
সবকিছু স্তব্ধ- অসহ্য।
অসহ্য থমকে থাকা এ সময়।।
জুলাই ৩১, ২০০৬
বাস্তবতা আহার যোগায় সর্পিক শীতলতায়
পুজোর থালার ফুল শুকিয়ে যায়
ছুঁড়ে ফেলি মৃত্তিকার টান-
মর্ম নেই।
তবুও আশা-
মিথ্যের মৃত্যুদন্ড হবে...
আজকের সকালটা ছিল অদ্ভুত
জেগে দেখি আমার উঠোনে সূর্যের সিঁদূরে জোনাক
সেই সাথে কুয়াশা ভেজা ঝিরঝির হাওয়া
রান্না ঘরে চায়ের কাপে টুং টাং শব্দ
তবু আমার মনে রাত্রির নিস্তব্ধতার নির্জনতা
কিন্তু সে নির্জনতা ভেঙ্গে দিল আমার প্রিয়ার হাত।
স্পর্শের নিবিড় আবেদন আমায় শিহরিত করে
অথচ দেহের কামনার কোন শিখা উঁকি দেয় না মনের গভীরে
নিস্তব্ধতা আমায় গ্রাস করে নির্জনভাবে
পেছন ফেরা
মাঝে মাঝে প্রচন্ড শীতে জমে যাই।
ভেতরে ঢুকতে থাকি ক্রমাগত
ব্যাগ্র হয়ে খুঁজি, হারিয়ে ফেলা পথ
ভুল পথে টেনে নেয় ভায়োলিন সুর
মনস্তাপে পুড়ি বার বার,
পেছন ফেরা হয়না আমার।
মাঝে মাঝে কিছুদিন পৃথিবীকে চলতে দেখি খুব চেনা সহজ নিয়মে।
শহরেও ভোর হয়, পাখি ডাকে, দলে দলে উড়ে আসে কাক
সূর্য খুব ঘটা করে বিউটি পার্লারে সাজিয়ে নিয়ে মুখ
আধুনিকা বধুবেশে চড়ে বসে দিনের গাড়ীতে।
প্রাতঃরাশে তৃপ্ত কর্তা বাবু বেশে অফিসের পথে
যেতে যেতে পাণ্ডুর আলোর সন্ধানে ডুবেন প্রাত্যহিক
অগোছালো খবরের ধূসর কাগজে;
মণিহীন বিশীর্ণ চোখে তাঁর পাথর সময়―
বিপরীতধর্মী স্রোতে শহরের নদী চলে
জানালার ঠিক নিচে
ছেঁড়া ফ্রক, মাকে মনে পড়ে
কিশোরী যুবতী শিশু
জলে ডুব মাঘের সন্ধ্যায়
চুম্বক করেনি কিছু ক্ষতি
বাস্তবিক লোহা নই যে
পুড়বে পেটাবে আর অলংকার বানাবে
অযথা এ রঙ মাখা নিয়ন আলোর রাতে
জবুথবু রান্নাঘর
শেয়াল হত্যার ভোরে
মাটি ভেজে বনের কান্নায়
সঙ্গম করেনি কিছু ক্ষতি
বাস্তবিক ফুল নই যে
হাতের তালুতে ফেলে মৃত্যু দেখাবে
তুমুল বর্ষণ দিন ফুরিয়েছে বেশ আগে। বিস্রস্ত ভাবনার মতো
এখানে ওখানে ছেঁড়া মেঘ ঝুলে আছে ঈশান নৈঋতে।
চাদরের ওম খোঁজে বৃদ্ধ শরীর পাল ছেঁড়া বাতাসের শীতে।
ফসলের দিন শেষে উদাম হয়েছে ফের ফলবতী জমিনের ক্ষত।
কলার মোচায় জমেছে ক্লান্ত শিশির। বয়েসি পাতার ফাঁকে ফাঁকে
জেগে থাকে একলা ঘুঘু। গাছের পাতারা কাঁপে; শীত কি এলো?
মুঠো মুঠো কুয়াশায় মেখে থাকে বাঁকা চাঁদ আর পৌষের ধুলো।
পদ্মকোরকের মতো স্বাধীনতা
[i][=green]মুক্তশব্দ ঊত্তরীয়ে আবাহন শুনি
বাতাসে আলো এসে গভীর ক্ষতচিহ্ণ ভাঙে,
নীলাঁচল জড়ানো আকাশে সময়ের অকস্মাৎ
সকল আড়ম্বর থেমে আছে তোমাতে বিজয়-
সূর্য-ঊষ্ণ অরুণমুখ প্রশ্বাস-আশ
জমিন রঙ্গিন, গাঢ় সবুজ ছড়ানো স্রোত
উড়ছে পতাকা সমগ্র প্রান্তর কাঁপিয়ে-
ভাঙবে ক্ষুধা, অপলাপ, নির্যাতন স্তুপ।
হেঁটে হেঁটে যাবে পুরো পথ,
ঘুম পাড়ানিয়া গান আমাদের জন্য নয়,
বর্গী এলো দেশে বললেই আমরা ভয়ে
লুকোতাম গভীর ঘুমের আঁচলে। কেউ
গান বা গল্পে পাড়াবে ঘুম, অমন স্বপ্নের
প্রতিশ্রুতি ছিলোনা কখনো। শুধু প্রতি
ভোরে জেগে উঠে মনে হতো কি যেন
নেই… কি যেন নেই …কি যেন নেই…
তোমার নকশীকাঁথা করতল দেখে তাই
সাধ হলো কবে ফুরাবে সেই ভীত-নিদ্রার
দিন? কবে কপাল ছুঁয়ে যাবে আল্পনা
আঙুল, একটা পুরো সমুদ্র তার সবগুলো
পালিয়ে গ্যালে ডায়েরী পাতায়,
পালিয়ে গ্যালে ড্রইং খাতায়।
পালিয়ে গ্যালে সব কবিতায়,
পালিয়ে গ্যালে অবাস্তবতায়।
শেষ বিকেলের নরম আলোয়
পালিয়ে গ্যালে দূর আকাশে
খুব সকালের শিশির ছোঁয়ায়
পালিয়ে গ্যালে দূর্বাঘাসে