১। সেল বাজার
কি বললি, বলতো শুনি, সেল বাজারের কেসটা?
ফোন না শুধু, যা খুশী তোর বেচতে পারিস বেশটা।
আরেব্বাস, করবো নাকি দেশটা বেচার চেষ্টা?
পারবি নারে, তুই কোথাকার ক্যাবলা কান্ত কেষ্টা
তুই কি বেটা পারবি হতে মন্ত্রী-উপদেষ্টা ?
২। শিল্পীর লিমেরিক
দাদার জন্মে দাদাবাদের নাম শুনিনি আমি
প্রকাশ বাদের কথা শুনে কুলকুলিয়ে ঘামি
ইমেজিসম তুলিতে নেই
স্যুরিয়ালিজম ঝুলিতে নেই
চাষাবাদের হাভাত ঠেলেই শিল্পী আমি নামী।
৩। বিবরে বিলাস
নির্জনে যদি অরণ্যে খুঁজি শ্রান্তি
খোলা দরজায় সাহসী দাঁড়াবো ঘুরে
মাধুকরী মাগি যদি বা শীর্ণকান্তি
গোলাপকে নেব পুরোটা হৃদয় জুড়ে।
৪। নরকের দেউরী
নিশ্চিত পরশুই ফিরবে তাই... যদিও এ আশায় দুপুর এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকঠাক, বিকেলও গড়িয়ে সন্ধ্যা নামবে এইখানে, ওই দিঘির পাড় ঘেঁসে ঘনজলে। সাপ্তাহে একদিন ছুটি,... ইচ্ছে দু'দিন চাই, এই লোভে কখনও না-বলে চলে যাও! বুঝতে পারি না কখন ফিরবে… ফেরার পথে খুলে রাখি চোখ, কিন্তু স্বপ্ন খুলতে পারি না। কখনও না-ফেরার ক্ষণ এত দীর্ঘ হয় যে, অপেক্ষা টানতে টানতে ছিঁড়ে যায় অনিশ্চয়তাসহ দীর্ঘশ্বাসের নাড়িভূড়ি
তার বাড়িতে
স্বপ্নরা এসেছে দেখতে নীল-নাক-ফুল
ঘরময় শয্যায় ঝরে আছে ফুল
সে ঘুমিয়ে আছে
তাকে ডাকা যাবে না এখন
কাহিনীর অপশব্দ শুনি
জানাতে যেওনা ওকে,
সম্পর্কগুলো ভাঙছে রাতদিন
কেউ যেন বলো না তাকে
আমার কাঠিলজেন্সে তোমারো ভাগ ছিলো,
ছিলো আমার তেপান্তরের মাঠেও,
যদিও ডালিমকুমারের সাথে আড়ি ছিলো একা আমারই -
তোমার শিয়রের আইসক্রিমের কাঠি বদলাতে সাহস হয়নি কখনো,
চোখ খুলে যদি দ্যাখো, আমি ডালিমকুমার নই।
কাধে বাক্স নিয়ে আইসক্রিমওয়ালা আর আসেনা,
শিয়রের জায়গা দখল করেছে সেলফোন,
কুমারদের অপেক্ষা তোমার - জানি কাটেনি এখনো,
তেপান্তরের মাঠ যে এতো বড় হতে পারে,
তাই বা কে জানতো?
ইচ্ছাকে লালন করে পুড়ছো একা
আমাকে আর কতটুকু দূরে রেখে
বহন করা যাবে? নিয়ম ভাঙা যাবে
স্বার্থপর!
হতে পারে জলে ও জালে গোপনইচ্ছা
সুযোগময় স্বার্থপরকথা বুঝে না সময়
নিয়মফল দীর্ঘ হলে সবর্ত্রই খুলে রাখি
দরকারি আশা ও উচ্চারণ
ক্লান্তিঘাম; একটানা জড়িয়ে ধরো বিশ্রাম
এ-রকমও ঘটে যায়, গোপনইচ্ছা ও ভয়
এই বুঝি ফুরিয়ে গেল, ভয় জাগা সময়...
কখনো উঠোনে আমার দাঁতাল জন্তুর মতো
শীতের ছেদন দাঁত বড়ো বেশী হিংস্র হয়ে উঠে
কুয়াশার আবরণে লুকিয়ে কঠিন মুখ
আচম্বিতে সে ঢুকে পড়ে হুট-হাট
জানালার ফাঁকে বসা একচিলতে নরম সুখ
মৃত্যুময় হলুদ বৃন্তের মতো টুপটাপ শিশিরের শব্দে মিশে ঝরে পড়ে
উত্তরের জীর্ণ কপাটের ফাঁক গলে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া
শীতল সরীসৃপের মতো হিলহিলে নৈঃশব্দ্যে
ঝরাপাতার বুকজুড়ে ছড়ায় শ্বেত-সন্ত্রাস যত্রতত্র;
নেকড়ের মতো তার জান্তব হিমের ভয়ে সিটিয়ে পড়ে
কুঁকড়ানো বাস্তু কুকুর, চৌকাঠ, জলের কলস,
কানের পাতার কোল, আস্তিনের মলিন গুহা,
লেপের দূরবর্তী কোণ, কেদারার কাঠ, একগাছি বিশীর্ণ আঙুল।
‘একটি জটিল আয়ুরেখা’ চিরকাল হাত খুলে দেখায়
হারিয়ে যাওয়া; না-যাওয়া; সেও এক চিন্তানুভবফুল
যেহেতু তুমিও আত্মকাহিনিতে লেগে আছো; বাদবাকি
স্বার্থরক্ষার ভয়ে জড়িয়ে রাখছো আঁকাদৃশ্য; অস্থিসার
চুপিচুপি ফিরিয়ে দাও স্মৃতি-সম্পর্ক, চিহ্ন ও সুতায়
প্রথম-প্রথম কোন কথা বললে, দ্বিতীয় কথার ভেতর
বদলে ফেলা যায়; শুধু কিঞ্চিৎ মিথ্যা বলার ফর্মূলা
-জানা দরকার
জানার ভেতর যে রহস্য, তা কোত্থেকে আসে? তাকে
কি খাবো? মনে পরাবো? না বুকে রেখে ঠোকরাবো?
কারণ— ধ্বংস হবার পূর্বে আমাদের হৃদপিণ্ডের
বিষফল কাটছে করাত, আলজিভও কাটছে দ্বিধা ও ধার
তোকে জড়িয়ে ধরার শখ যেন স্মৃতি, সেই ছোট্টবেলাকার
অনেক রাতের গল্প আছে ক্ষয়ে যাওয়া চটি ও পথের
সরকারি কোয়ার্টারে হলুদ বাড়ির জানালার নীল পর্দার কাছে;
সেই সকল গল্প নতুন পোশাকে
আমাকে আবার মুখের দিকে দেখায়
কিছুদিন নীরবতা ভালো
নৈঃশব্দ্যের পাঠশালায় মূর্তি হয়ে থাকুক অন্ধ অক্ষর
আর চুমুর দুপুর অষ্পষ্ট থাকুক মৌলিক আয়নায়!
চলন্ত ট্রেনের ক্রন্দনে ভুলে থাকা যাক
চটি ও পথের বৃত্তান্ত...
ধ্বংসের নগরে বেঁচে থাকুক কিছু কঠিন অনুভব
তুমুল বৃ ...
কোনো প্রতিবিম্ব ছিল না চোখের
কাকে বলে ছায়া
বড় অদ্ভুত এই মনুষ্যজীবন
সংশয় ছিল না কোনো
কাকে বলে জটিল হৃদয়
ছায়াহীন দেখতে পেতাম
ভাসতো আকাশ নীল সমুদ্রে
কাকে বলে মেঘ
বড় অদ্ভুত এই মানসিক আকাশ
এ আমার কী হলো নিসর্গ ?
....
৪
আশ্রিত ছিলাম সন্ন্যাসীর ঘরে,
যে আমার মধ্যে বসত করে।
সময় কাটত বনচারির মর্যাদায়,
যে আমার মাথার সমান সমান
বয়সের চেয়ে অনেক গুণ বড় ;
তার মাথার ভেতরে ফোটে বনফুল
এখন বাড়ে বুনোলতা ...
লতার প্রেমটাও বলে রাখি :
লতাদের একজনের নাম প্রশান্তি,-
আমাদের কথা কিছু শোনো কবি ?
ভুল চালকের হাত কিন' সরিয়ে দিতে হবে,
ভালবাসা ধরে থাক পৃথিবীর হাত।
-শুনিনি, আর এমন সুললিত ধ্বনি!
৫
ঠিক সবুজ নয় জ্যোৎস্নায় ...