শিরা কাহিনী

কারুবাসনা এর ছবি
লিখেছেন কারুবাসনা (তারিখ: রবি, ০৫/০৪/২০০৯ - ৫:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শিরা কাহিনী শিরশির করতে পারে, কিন্তু কখনই সিরিয়াস নয়, কাজেই, নো হেলাফেলা : বিধিগত সতর্কীকরণ৷

গাছের তলায় যেমন থাকে, আমারও কিছু শিরা ছিল, আমার শরীরে, শরীরটা যদিও গাছ ছিলনা, শিরাগুলোকে আগাছা ভাবলেও ক্ষতি নেই, ছিল ব্যস, ছিল৷

শিরা বেয়ে সমস্ত রুটে, বে-রুটে, স্কয়ার রুটে, রুটি রুটি আইল্যান্ড ঘিরে চরে বেড়াত সমস্ত অটো, শিষ দিতে দিতে এ শিসমহল থেকে ও শিসমহল৷ শিশি-বোতলদের কেউ কেউ দদ দদ করতে করতে চার্লি চ্যাপলিন হয়ে যায়, ফলত: ছি: ছি: আমি তোমায় দেখেছি, শিরায় শিরায় যেমন উত্তেজনা, হাওয়া ছোটে, পাল বয়৷ বোতলের গায়ে জড়িয়ে দেওয়া ও উপ-শিরা, উপ-সংহার উপহার দেওয়ার মত পার্থপ্রতিম দেব সেগুলো জড়িয়ে দেয় গায়ে, শিশি বোতলদের গায়ে, বোতল বোতল থাকেনা, বাসুকি সাপের মত গোটানো প্যাচানো কেস, কেসের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেল অমৃত সঘন, বা কেশদামে৷ শিরার ভেতর তোমাদের বাগান, হলুদ বেগুনী ফুল, সেলোফেন পেপার, খসখস, চারটাকা ভাড়া, আন্দোলন৷ শিরার উপর বসতবাড়িগুলি, এ তলায় পাঙ্খা বাড়ি, ও তল্লাট হিলকার্ট৷ না নড়া, না চড়া বাড়িগুলি, বড় কুড়ে, কুড়েঘর নয়৷ রক্তে লাল আকাশ, আমার শিরা ও উপশিরাগুলি অপসৃয়মান জেট পরবর্তী ধাবমান রেখা, প্যারাসুট সুতো সংকল্প, হেলিকপ্টার ডানা, বনবন৷

যদি চাকুর জন্ম হয়, শিরাগুলি কাট কুচিকুচি, ভাজো ছাঁকা বাদামতেলে, হেব্বি স্বাদ সুগন্ধ অমলিন, ভুরু কুঁচকানো চোখ, যদি মনে পড়ে৷ শিরাগুলি, ভূমিকায় লেপ্টে থাকা চাদর ও অলক কুন্তল, বসতবাড়ি ও উপচিকীর্ষু সঘন নীলে রাত্রি টেনে আনে, তারায় তারায়, ভ্যান গঘ রাত্রি৷ বিষ রক্ত বয়ে চল শিরা, হয়ে ওঠ তরবারী আভিজাত্যের কোপে, কাস্তে যেন বাঁকা চাঁদ, হয়ে ওঠ গান, নিশীথ সমুদ্রে, সার সার জাহাজের আনাগোনা, হেলেন দাঁড়াবেন এসে, ট্রয় নগরী ও উত্তেজনা নিয়ে৷ সামাল সামাল, হেইয়ো হেইয়ো ভাই, চিকচিক বালি ভরে ওঠে সব মৃত মাছগুলি, জাল টানা শেষ, নৌকা ফিরেছে পাড়ে, বিন্দু হয়ে ওঠা আলোকপুরে জাহাজগুলি দীর্ঘঃশ্বাস ফেলছে পাড়ে এসে, মৃত মৃত মৃত মাছগুলি, মৃত চোখ ও চোখ ও চোখের সমন্বয়৷ কাজেই শান্ত এখন শিরা ঢিলেঢালা রাত্রির পাহারা, জোয়ার এখন ভাটা, জীবন তাই সাদামাটা৷

যদি এগুলো-ই হয়ে ওঠে তোমার রেলের লাইন, ট্রাম ট্র্যাকগুলি বেঁধে ফেল বান্ডিল বান্ডিল সুতোয়, পড়ে থাকে ষ্টেশন ও পাউরুটি, কুকুরেরা খেলা করে, বাঁকা লেজ সোজা করে, সহস্র জীবন, অনুক্ষণ, গতি গতি গতি, অগতির গতি, সশব্দে ছুটে যাও ট্রেন, বিন্দু ঘামগুলি জেগেছে শরীরে, উপাস্য কেবল নয়, চাহিবারে হয়, চাঁইবাসা ব্যান্ডেল মুম্বাই৷ প্রশ্নহীন শিরাগুলি হয়ে যায় ভারতের রাজনৈতিক নকশা, মানচিত্র জেগে ওঠে শিরায় শিরায়, হাতের মুদ্রায় কার্জন দেখাবেন কথাকলি, তালু জুড়ে রঙ, সবুজের উপর সাদা রঙ, সরের প্রলেপ, কম্বল চাদর লেপ, সিটি ও প্রেশার কুকার, গড়িয়ে পড়া জলবিন্দুগুলি গাত্রময়, ভেঙে যায় শিরা ও উপশিরায়, শরীরের উপর ছোট্ট শরীরের অংশ ফুঁসে ফুঁসে ওঠে, বেজে ওঠে সিটি ঘাম কুকার৷

লতায় পাতায়, সম্পর্ক যেমন বাড়ে, শিরায় শিরায় ডালে ডালে পাতায় পাতায় গেরস্থালী, কাঠবেড়ালী, পেয়ারা তুমি খাও? পুটুস পাটুস, ছাদঘরে যাও, পাকেচক্রে, চক্ররেলে বাগবাজার, ছেঁড়া তার ও সরোদে, রৌদ্রময় জীবন তোমার,স্বক্ষেদে শিরাগুলি সুবিন্যস্ত, যেন ছাতার উল্টোপিঠ, থরে থরে সাজানো, পাতাল সিড়ি কাঁচের চুড়ি স্লাইস পাউরুটি৷ কথা নেই, বার্তা নেই, প্রিয়া তুমি ফুটে ওঠ ডিজিটাল অক্ষরে, এই ফোন এলো বুঝি? মেঘ মাটি বায়ু, কে ধরিবে হায়, শিরায় শিরায়৷ কেবল বই হাতে থাকে, উল্টে যাওয়া পাতাগুলি, অক্ষর মুদ্রিত এইখানে, স্নায়ু ভ্যানিটিব্যাগ পরবেশ৷ টুসুতে মেতেছে লোকজন দীর্ঘ সূর্যের ছায়া নদীগুলি ধরেছে ঘিরে, জাতি জনজাতি উপপদগুলি, হাস-পিঠা হাঁড়িয়া হাই, তোল, টেনে তোল হাইহিল নদী বালু থেকে৷ নদীগুলি, শিরায় শিরায় বয়ে যাওয়া নদীগুলি নকশা ভুলে, কিঞ্চিত দ্বিধাগ্রস্ত ও ব্যাসদেব কমন্ডুলু ফেলে চলে এসেছেন রেল কম্পার্টমেন্টে, ফেল রাতভর ও ফেয়ারি টেল ...

সুতরাং আখ্যান আরম্ভ৷


মন্তব্য

শ্যাজা এর ছবি
কারুবাসনা এর ছবি

না, সেইটা অরজিন্যাল।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।