ভাবনা নাইয়া

কারুবাসনা এর ছবি
লিখেছেন কারুবাসনা (তারিখ: শুক্র, ১৮/০৯/২০০৯ - ১:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মহালয়া

কোন এক পরী, সবুজ বেগুনি হলুদে তার ডানা, রোদ পোহাচ্ছে নরম জেলির মত উপত্যাকায়, চারপাশে ওয়েবসাইটের মূলপাতা রাখা দেওয়ালের মত,ঝড়ের পরপর, খুব জোরে ব্লেজিং ড্রাম বলে একটা আ্যলবাম বাজছে, শব্দের প্রাবল্যে মনে হয় মৃদু মৃদু নড়ছে ডানারা। সাদা মেঘের চাঁদোয়ার নীচে চিয়ার বয়েরা, শিভামনি, জাকির, ট্রলোক গুরটু, মাইকেল শ্রিভে, জেমস আ্যশার, ভিক্কু ভিনায়াকরাম, এদ মান, হোসাম রামজে ও আর অনেকে, হাত নড়ছে খেঁজুর পাতার মত, চার পাশে খেঁজুর গাছগুলি মুন্ডিত দাড়িয়ে,বেবাক।
ভাবনাভাবনা
এখন কিছু ভাবার সময় নয়, রাস্তায় জমেছে বরফ সরাতে হবে দ্রুত, বেরিয়ে আসছে ক্ষতসমূহ, জেব্রাক্রসিং। মহাসমুদ্রের মত হাওয়ায় দুলছে মিউজিক ও নার্ভাসসিস্টেম এই ঘরের ভতরে, দেশ-বিদেশে প্রচুর চাপ, দিশেহারা হাওয়ামোরগ জবাই হওয়ার জন্য লুটিয়ে পড়ছে ছুরিতে ছুরিতে। একে একে নিভে যায় ঘরের বাতিগুলি সেখানে ঝুলছে মদের গেলাস, ইতরদ্রব্যাদিহীণ এক দুপুরে মনে পড়ছে মাও দে জং এর কথা, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু অথবা পিস্তলে, মিলতে মিলতে আমিলগুলি বিঁধবে বুকে ও মাথার খুলিতে, একে সাতচল্লিশ।

শিলাজিৎ এর মত কড়া বাংলা খেতে খেতে, রাইচ চাইসি দোকানে, বাঁশফুল চাল, দুধ দিতে দিতে ক্রমশ চুরি হয়ে যাওয়া গাইটি ঠিক ঈদের আগে দোকানের ভীড় দেখে তথাগতকে স্মরণ করে আর বাসবদত্তা তার স্তনে সুগন্ধি মাখিয়ে ডাকে জলজোছনার দিকে, সে তট প্রবাল সবুজ, ভীষণ শিরিষ তাতে আর উদগত ডলারগুলি এক মৃত মন্থনের পর একদিন সাইকেলে চেপে চলে যেতে হবে হুগলি জেলের সামনের সেই সবুজ করুন ডাঙায়, হয়তবা শঙ্খচিল পাবলিকের বেশে।
আজ নাকি মহালয়া। ঘুমের ওসুধে ঘুমিয়ে ছিলাম, ভদ্রকন্ঠ টের পাই নাই। তন্দ্রার ভতরে কতদিনের গারো পাহাড় হালুয়াঘাটের কাছে সাজানো ঠিক পানের বরোজে বাজে সেই গান, কোনোদিনই কি শুনেছি মন দিয়ে? গানগুলি কেবল, রাতগুলি আর আমি বর্ধমানের বা বোলপুরের রাস্তায় লম্বা লম্বা দেওয়া পাড়ি, এক বিমোহিত পদ্মপুকুরে সেই পরীকে দেখি ঘুমিয়ে আছে খড়ের মাচায়, টাটাসুমো ছুটে চলে ধীরে ধীরে আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুলে খুলে পড়ে গাড়ির বাইরে তবু আমি নদীটির কথা ভুলি না, ঘুমের ভিতর আমি তাকে গড়ে নিতে চাই, ঘুমের ওসুধে ঘুমিয়ে ছিলাম, পাখির ডাকে উঠি জেগে, ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ি, আবার ফুলের মধু খেয়ে।

আমরা একটা নরম নদী ধরে এদিক সেদিক বাঁকাচ্ছিলাম। বেঁকে বসলো নদী। মেঘকে বললো হুস , নিজে তরমুজের ফালি হতে হতে, গুটিয়ে গেল যেন খন্ডিত কুত্তার ন্যাজ। পায়ের যন্ত্রণা এখন একটু কমছে, ঠিক জলতরঙ্গের মত, সরে সরে যাচ্ছে তারে মেলা শাড়ি, তার ছিদ্রটি দিয়ে মেঘ দেখা যায় মাঝে মাঝে, আমার বাংলাদেশ।


মন্তব্য

তীরন্দাজ এর ছবি

কোন এক পরী, সবুজ বেগুনি হলুদে তার ডানা, রোদ পোহাচ্ছে নরম জেলির মত উপত্যাকায়, চারপাশে ওয়েবসাইটের মূলপাতা রাখা দেওয়ালের মত ....

দারুন রকমের আধুনিক এক উপমা! কাব্য আর ভাবের বিন্যাস! .... বাপরে!!!
অসাধারণ!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রেনেসাঁ‌ এর ছবি

পিস্তলে মিলায় বস্তু থানা বহুদুর।

সবজান্তা এর ছবি

আজ নাকি মহালয়া। ঘুমের ওসুধে ঘুমিয়ে ছিলাম, ভদ্রকন্ঠ টের পাই নাই। তন্দ্রার ভতরে কতদিনের গারো পাহাড় হালুয়াঘাটের কাছে সাজানো ঠিক পানের বরোজে বাজে সেই গান, কোনোদিনই কি শুনেছি মন দিয়ে?

গত বেশ কয়েক বছর ধরেই আর 'ভদ্রকণ্ঠ' শোনা হয় না। যদিও সিডিতে স্থাণু হয়ে আছে সেই স্বর, তবু ভোরের 'আকাশবাণীতে' যে নস্টালজিয়া মিলে মিশে একাকার, তাকে পিছে ফেলে এসেছি বহুদিন।

যখন বিশ্বাস হারায়, তখন ছিনিয়ে নিয়ে যায় স্মৃতিটুকুও। হাসি


অলমিতি বিস্তারেণ

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

এক তন্দ্রা, আরেক ঘুম। পশ্চিমবঙ্গ-পূর্ববাঙলা । মনে হলো যাচ্ছি। হরিদাসপুর থেকে শিয়ালদাহ। ট্রেনে ট্রেনে। স্ট্রিম লাইনে . . .


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমার অনুভব থেকে আমার ভাবনা যোজন যোজন দূরে।

...........................
Every Picture Tells a Story

অনীক আন্দালিব এর ছবি

জলতরঙ্গের মত পায়ের যন্ত্রণা কমুক, আরো দ্রুত কমুক।

লেখাটা ভালো লাগছে বস। হাসি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চলুক চলুক চলুক
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।