স্মৃতি

লাল মিয়া এর ছবি
লিখেছেন লাল মিয়া (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৮/২০০৭ - ২:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(দেশের অবস্থা যাই হোক ঝিমাইয়া পড়া খারাপ। ফাইটিং সারজীবন চলবো। তাই বইলা বাঁচা ছাইড়া দিলে তো ধরা! তাই শুরু করলাম সচলেও গল্প বলা। খেদাইয়া না দিলেই হয় দেঁতো হাসি)

আমাগো গলির মাথায় ভুইয়া কুঠির। ভুইয়ার ৪ পোলা। সবার নাম জানিনা। কারণ ভুইয়া সাহেব গলিতে ছোট পোলার নামে পরিচিত ছিলেন। আমরা তারে ফইটকার বাপ নামে চিনতাম। তার বাড়ি তখনো দালান হয় নাই। একটা টিনশেডের সামনে মাঠ এর মতো খালি জায়গা। পোলালাপান খেলতে যাইতো সেইখানে। মাঝে মধ্যে ভুইয়া সাহেব তাড়া করতেন কোদাল নিয়া, লুঙ্গী সামলাইতে সামলাইতে।

গলির অন্য মাথায় থাকতেন পাঠান সাহেব। তার বড় পোলার নাম ছিল নিষাদ। কইতাছি '৮০-'৮১ সালের কথা। তখনো মোটর সাইকেল থাকা একটা বিশেষ ব্যাপার ছিল এলাকায়। নিষাদ ভাই গল্লি কাপাইয়া হোন্ডা হাকাইতেন। সেই সময় তার চুল টিনিটিনের মতো উড়তো। দৃশ্যটা বেশ উপাদেয় ছিল।

এদিকে ফইটকার বাপের তাড়া সেই সময় প্রায় প্রতিদিনই খাইতাম। বন্ধু পারভেজ একদিন জিগাইছিলো তোমরা ফটিক ভাইয়ার আব্বুকে ফইটকার বাপ বলো কেন? সেই ফইটকার বাপের তাড়া খাইয়া একদিন আমাগো গুরু শাহ আলম ভাই এর মাথা ফাটলো উস্টা খাইয়া। সবাই দেখতে গেলাম তারে । সে এট্টু আট্টু গীটার বাজাইতো। মাথায় পট্টি নিয়াই গান বাধলেন, তখনকার বনি এম এর হিট গান "ওয়ান ওয়ে টিকেট"এর সুরে :

"ফইটাকার বাপের কোদাল
আর
নিষাদ ভাইয়ের চুল
ওওওওও
গলির আগায় লটকাইয়া রাখছি"

কিছুদিন পরের কথা। আমি তখন ক্লাস টু'র ফাইনাল দিতেছি। পরীক্ষা দিয়া বারান্দায় বইসা আছি। শমশের স্যার খুব আদর করতো। কইলো একটা গান গা। গাইলাম গলির জাতীয় সঙ্গীত। কয় তুই এতো খারাপ কথা কই শিখছিস? আমি কইলাম কই খারাপ কথা কইলাম? কয়, ঐ যে কইলি হোলের আগায় লটকাইয়া রাখছি!!! কইলাম হোলের আগা কই নাই তো! গলির আগা কইছি! তারে কিছুতেই বিশ্বাস করনো গেলো না। এমন কি হুজুর পর্যন্ত শমশের স্যারের কথাই বিশ্বাস করলো। বাজে ছেলে দের সাথে না মিশার পরামর্শ ইত্যাদি নানারকম ভুল পরামর্শ নিয়া সেদিন অনেক কষ্টে মুক্তি পাইলাম।

অনেক অনেক দিন পরে এক কল্কির আড্ডায় কইলাম এই গল্প। সবাইরেই তখন ধরছে। প্রিন্স কইলো , তুই আসলে হোলের আগাই কইছিলি।


মন্তব্য

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হুম!
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

ফারুক হাসান এর ছবি

হোলেও হতে পারে।

লাল মিয়া এর ছবি

দেঁতো হাসি


লাইন ছাড়া চলেনা রেলগাড়ি

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এইসব স্মৃতি আরো আসুক।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অচেনা এর ছবি

জটিল হইছে লালা মিয়া। চোখ টিপি

মহল্লায় ছিল পাঠান মন্জিল। বিখাউজ ছেলেরা পাঠান'র ন মুছে দেয়াতে শেষ পর্যন্ত্য নাম ফলক খুলে ফেলেছিল।

-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥

হিমু এর ছবি

তা-ও ভালো পয়ের সাথে ঠয়ের বদলাবদলি করে নাই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সবুজ বাঘ এর ছবি

হুউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউ।

লাল মিয়া এর ছবি

কুউউউউউউউউউ


লাইন ছাড়া চলেনা রেলগাড়ি

হিমু এর ছবি

একটা কমিউনিটি সেন্টার ছিলো কোথায় যেন, নাম ছিলো আল ফালাহ কমিউনিটি সেন্টার। কিন্তু কে এক বেয়াদ্দপ যেন একদিন আলটাকে বিকৃত করলো (তথ্যবিকৃতির উন্মেষকাল), বুঝতেই পারছেন কী হইতে কী হইলো। লোকে দাওয়াত খেতে এসে দেখে লেখা বাল ফালাহ কমিউনিটি সেন্টার। ম্যানেজার কিছুদিন ধোয়ামোছাপাহারা কইরা দেখলো কুলানো যাচ্ছে না (শিব্রামের সেই বক্কেশ্বরের লক্ষভেদের মতো আর কি), তখন কমিউনিটি সেন্টারের নাম পাল্টায় ফেললো।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুজন চৌধুরী এর ছবি

ধানমণ্ডী ৩-এ আছিল 'বিথিস হারবাল' কয়দিন পর তার পাশেই হইলো 'রতনস ডেন্টাল ক্লিনিক'। ভালোই চলতেছিল কয়দিন পর বিথির লগে রতন মিয়ার কী নিয়া জানি ক্যাচাল লাগলো, প্রায়ই ঝগড়া লাগে,কয়দিন পর কে বা কারা ডেন্টালটা মুছে লিখে হিজবাল। তারপর আর কাণ্ড দেখে কে হারবাল আর হিজবাল মিল্লা
পুরা পাড়া মাথয় তুলে।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

লাল মিয়া এর ছবি

দেঁতো হাসি


লাইন ছাড়া চলেনা রেলগাড়ি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।