ওজন কমাবার গল্প!

আড্ডাবাজ এর ছবি
লিখেছেন আড্ডাবাজ (তারিখ: রবি, ২০/০৭/২০০৮ - ১০:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(কেবল মানসিকভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য)
না, আর রাজনৈতিক কৌতুক নয়। এবার গল্পটা আমার মস্কো থেকে ফেরত আসা এক বন্ধুর। প্যান্ডোরার বাক্স খুললে বিপত্তি কি সেই গল্প নতুন করে ফাঁদার প্রয়োজন দেখছি না। তবে মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। স্বপ্ন দেখে অন্যদের মাইনাস করার, তারপর নিজেই মাইনাস হয়ে বসে থাকে। আশেপাশের গোমরা মুখের চেহারার লোকদের দেখে কস্ট লাগে। এখন একজন নাকি অস্ট্রেলিয়াতে রাস্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েও যেতে পারছেন না। সমস্যা না কি তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ আছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার তাকে গ্রহণ করছে না। সবকিছু হযবরল হয়ে যাচ্ছে দু'বছরের মাথায়।

চলুন এসব রাজাউজির মারার গল্পের চেয়ে ওজন কমাবার গল্পটা শুনি। অনেক বছর আগের কথা। মস্কোতে ওজন কমাবার এক সেন্টার খুলেছে। মস্কোর এক বিদেশী ছাত্রাবাসে বিদেশী বন্ধুরা আড্ডায় বসে করছে। তার মধ্যে মোটা বন্ধুটার ওজন এর মধ্যে পনের পাউন্ড কমে গেছে। হাঁপাতে হাঁপাতে মোটা বন্ধুটা বলতে থাকে। সব বন্ধুরা মুখ হা করে শুনতে থাকে। ঘটনা কি? ঘটনা হচ্ছে মস্কোতে ওজন কমাবার এই নতুন সেন্টারে ক'দিনের মধ্যেই বেশ নামডাক করেছে। মাত্র দশ রুবল দিয়ে ঢুকতে হয়। তিরিশ মিনিটের ট্রিপ। তাতে ওজন কমে দশ থেকে পনের পাউন্ড।

একটু পরে মোটা বন্ধুকে সবাই জেঁকে ধরল। ঘটনা কি? মোটা বন্ধুটা বলে, দশ রুবল দিয়ে ওজন কমাবার এই নতুন সেন্টারে ঢুকবার পর একটা রুমে ঢুকিয়ে দেয়। খালি রুম। উঁকি ঝুঁকি দিয়ে কিছুই দেখা যায় না। হালকা আলো আঁধারির মধ্যে রুম থেকে বের হয়ে হলওয়েতে এসে দেখে কেউ নেই। হঠাৎ হালকা আলোর মধ্যে দেখা যায়, টানেলের শেষ প্রান্তে এক স্বল্পবসনা সুন্দরী তন্বী তরুণী। হেঁটে যাচ্ছে। মোটা বন্ধু পিছু হাঁটতে থাকে। কাছাকাছি আসলে মেয়েটি জোরে হাঁটতে থাকে। মোটা দৌড়ায়। মেয়েটিও দৌড়ায়। মোটা আরও জোরে দৌড়ায়। মেয়েটি আরা জোর কদমে দৌড়াতে থাকে। একসময় টানটান উত্তেজনায় মোটা দৌড়ের গতি বাড়ায়। কিন্তু মোটা পেরে উঠে না, তন্বী মেয়ের দৌড়ের গতির সাথে। আধা ঘন্টার মাথায় হলওয়ে থেকে টানেল থেকে বের হয় উঠে আসে মস্কোর মেইন রোডে। কোথায় তন্বী সেই সুন্দরী? সবই স্বপ্ন। জনাকীর্ণ মস্কোর রাস্তায় উঠে এসে দেখে এর মধ্যে মোটার ওজন কমে গেছে দশ পাউন্ড।

আড্ডার বন্ধুতে ছিল ফিজিক্যালি ওভারফিট এক স্মার্ট দোস্ত। সে আবার ডাকসাঁইটে স্প্রিন্টার। দেশে অনেকগুলো মেডেলও পেয়েছে। মোটার কথায় সে নাক সিঁটকে বলল, "এটা কোন ব্যাপার? দেখ তোরা, আমি এখন যাচ্ছি"। যেই কথা, সেই কাজ। দশ মিনিটের মধ্যে স্প্রিন্টার দোস্ত ওজন কমাবার সেন্টারে হাজির। দশ রুবল দিয়ে ঢুকল। আশেপাশে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। হালকা আলো। মোটার কথা ভেবে হাঁটতে থাকে। কোথায় সেই স্বল্পবসনা তন্বী? হাঁটছে। ইতিমধ্যে প্রায় দশ মিনিট পার। মুখে খিস্তি আসতে লাগল। হঠাৎ পেছন ফিরে স্প্রিন্টার তাকিয়ে দেখে না, কোন স্বল্পবসনা সুন্দরী নয়। প্রায় সাড়ে ছয় ফিট উচ্চতার এক আফ্রিকান নগ্ন হাবশী একদম তাক করে তার দিকে ছুটছে। পড়িমরি করে দৌড়। এক দৌড়ে বিশ মিনিট। শুকনা স্প্রিন্টার দশ পাউন্ড ওজন কমিয়ে টানেল দিয়ে ছিটকে আড্ডার বন্ধুদের মধ্যে ফিরে আসল।

হায়রে কপাল! মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। অনেকেরই দৌড়ানি শুরু হয়েছে। তা প্রশ্ন হচ্ছে, তাড়াচ্ছেটা কে?


মন্তব্য

সৌরভ এর ছবি

হাহ হা। আড্ডাবাজ দা পুরনো ফর্মে।

সবাই দৌড়োয়। কেউ একটা, কিছু একটা তো তাড়ানি দিচ্ছেই।
অদৃশ্য হোক আর দৃশ্য, সে যে বড্ড "প্রভাবশালী"।


আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হা হা হা হা হা হা হা হা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দ্রোহী এর ছবি

হা হা হা.........সেই পুরাতন স্বাদ।

আড্ডাদা, পুরাতন ফর্মে সুস্বাগতম।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

এলোমেলো ভাবনা এর ছবি

হিঃহিঃহিঃ

দারুণ মজাদার।


হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।