নির্লজ্জতার ব্যারোমিটার

আড্ডাবাজ এর ছবি
লিখেছেন আড্ডাবাজ (তারিখ: মঙ্গল, ৩০/১০/২০০৭ - ৯:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বায়ুর চাপ মাপার বদলে যদি ব্যারোমিটারে নির্লজ্জতা মাপা হয় তাহলে জাতির সামনে যে দুর্বিসহ ঘূর্ণিঝড় আসন্ন তা বলার জন্য আবহাওয়াবিদ হতে হয় না। স্বাধীনতার ৩৬ বছর পর এই জাতিকে এতোটা নির্লজ্জ আস্ফালনের সামনে আর কখনও হতে হয়নি। না, আমি রাজাকার ঘাতক জামাত শিবিরকে নির্লজ্জ বলব না। ৭১-এর ঘাতকরা নিস্পৃহ পশু। বিবেকবর্জিত মাংসপিন্ড। পশুর মধ্যে লজ্জার কোন অস্তিত্ব থাকে না। আমি বলছি এই নির্লজ্জ সামরিক মদদপুস্ট তত্বাবধায়ক সরকারের কথা। যারা গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিসংগ্রাম আর তিরিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগকে রক্ষা করতে চরমভাবে ব্যর্থ।

গতকাল সরকারের উপদেস্টা ব্যরিস্টার মইনুল হোসেন মুজাহিদ-হান্নানের বক্তব্য নিয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তত্বাবধায়ক সরকার নিতান্তই মানবিক কারণে তড়িঘড়ি করে কয়েক লাখ বিহারীদের নাগরিকত্ব দিতে বিলম্ব করে না। কিন্তু তিরিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ নিয়ে মুজাহিদ-হান্নানের বক্তব্যের সামান্যতম প্রতিবাদ করার মতো নৈতিক সাহস দেখাতে পারে না। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ আর ১৯৭১ নিয়ে এই সরকারের আর সামরিক বাহিনীর মায়াকান্না কি এখন উবে গেছে? আমার কলেজ পড়ুয়া ভাগ্নের কথার মধ্যে তিক্ত সত্য খুঁজে পাই:

"মামা, টিভিতে বা পাবলিকের সামনে গিয়া জেনারেল মইন আর মাসুদের বাচ্চারে একটা গালি দিয়া আসি, তা হইলে শুধু আমারে না, তোমারেও এখন আন্ডারওয়ার পড়াইয়া ঢাকা শহরে কানে ধরাইয়া চক্কর মারাইব"। তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর তিরিশ লাখ শহীদের ইজ্জততো অতো দামী না যে যৌথ বাহিনী এটা জিজ্ঞেস করতে মুজাহিদ- হান্নানের পশম ধরব"।

গতকাল একজন ব্লগার বন্ধু ই-মেইল করে অনুরোধ করল,

"আপনি একটা পিটিশন লেখেন প্লিজ। সরাসরি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর। তাঁর ব্যাক্তিগত ওয়েবসাইটের ফীডব্যাকে একটা এ্যানোনিমাস আবেদন জানিয়েছি। কাজ হবে না জানি, কিন্তু সেই আবেদনটা জানাতে গিয়ে মনে হলো, আমি একটা লিখলে কাজ হবে না, কিন্তু দশজনে লিখলে তো সেটা অন্তত তিনি পড়েও দেখবেন"!
আমার এই ব্লগার বন্ধুর মতো মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের হাজারও জনতার ফিডব্যাকে এই সামরিক সরকারের কি আসে যায়? সকল বিশ্ববেহায়াদের চরিত্র অভিন্ন। সময়ের ব্যবধানে তাদের চরিত্র বদলায় না। এদের দেশপ্রেম ও নৈতিকতাবোধ যখন খন্ডিত আর বিকলাংগ তখন এরা দেশদ্রোহী রাজাকারদের বিরুদ্ধে রা শব্দ করবে কিভাবে? নির্মম সত্য হচ্ছে দেশপ্রেম আর আনুগত্য প্রকাশের জন্য, প্রমানের জন্য আর রক্ষার জন্য কোন ফিডব্যাকের দরকার হয় না। নির্লজ্জতার ব্যারোমিটারে এই সরকার আর ক্ষমতাবানদের লজ্জা আর বিবেক কতোটা নীচে নামলে এতোটা নিস্পৃহ থাকতে পারে তাই এখনকার সবচেয়ে বড়ো দেখার বিষয়।


মন্তব্য

সৌরভ এর ছবি

সবচেয়ে বড় চোরাচালানি ভদ্রলোকটিকে শাস্তি দেয়া সম্ভব হলো, হোক না হয় একটা অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধ দেখিয়ে।
আর এই নোংরা কীটগুলোকে ছুঁতে এতো সমস্যা?



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

প্রধান উপদেষ্টার কাছে পিটিশন পাঠায়া লাভ কি ? তার বা তার সরকারের যদি চোখ থাকতো তাহইলে এত এত আলোচনা হইতেছে দেশ জুইড়া, পত্র পত্রিকায়... তাতেই তো কাজ হইতো। হইলে এমনেই হয়... না হইলে কোনোমতেই হয় না।
সরকার মৌলবাদীদের আবেদনে ভীষণ স্পর্শকাতর... রা করার আগে আপনের মুখ বন্ধ কইরা দিবো। কিন্তু এইসব ব্যাপার নিয়া চিল্লান... কোনো ফায়দা নাই।

এক কাম করা যায়... আমরা চান্দা তুইল্যা একটা মাদ্রাসা বানাই... হের বাদে সেই মাদ্রাসা থিকা টুপি পাঞ্জাবী পইরা মিছিল করি... যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই শ্লোগান তুলি... তাইলে যদি কাজ হয়। সরকার আবার টুপি পাঞ্জাবীরে খুব ডরায়... (পাঞ্জাবী এইখানে দুই অর্থেই ব্যবহৃত)

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আড্ডাবাজ এর ছবি
দুর্বাশা তাপস এর ছবি

কুত্তার বাচ্চাগুলিরে ছাড়ুম না, একটারেও না, চুন চুনকে খতম করুঙ্গা।

==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।