ছুটির দিনের গল্পঃ সৃজনী'র অর্ধযুগ পূর্তি উৎসব

অম্লান অভি এর ছবি
লিখেছেন অম্লান অভি [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০১/০৮/২০০৯ - ১২:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফেলে আসা সময় নিয়ে সবাই হা হুতাস করে। তারপরও স্মৃতিতে জমা হয় নতুন স্মৃতির রসদ। জমা হতে থাকে জীবনের পাতা ঝরা দিনের গল্প। সেইসব বহমান সময়কে মনে করে হঠাৎ স্বউচ্চারণে 'গল্প' দাবী করে লেখা দিতে ইচ্ছে হলো। খোলা আকাশের গায়ে যে তারারা বিরাজমান তাদেরও একটা ঠিকানা আছে হয়তো তারাও স্মৃতির রাশি ধারণ করে আছে অনাদি সময় জুড়ে।

২৪ জুলাই ২০০৯
মুনির হোসাইনঃ আমাদের জমানো গল্পের ভাগ নিতে আয়োজন করেছিল একটা আড্ডার। কে মুনির হোসাইন থুক্কু শুধু মুনির হোসাইন নয়.....সালাউদ্দিন, সাইফুল, সিজার, মুকিদ, মৌসুমী আরও অনেকে। হলো না কিস্যু হলো না ডেকেছিল 'সৃজনী' ডেকেছিল আমার 'ডুয়েট'। আমরা গিয়েছিলাম অনেকেই যারা ভালোবাসি আড্ডা-গল্প-গান; যারা ভালোবাসতাম মানুষ- রীতিনীতি আর রাজনীতির বাহিরে এসে। যারা জমে উঠতাম নিজেদের সহজাত প্রবৃত্তি সাথে নিয়ে আমাদের আসরে। নদী বয়ে যায় রেখে যায় অনেক চিহ্ন। সেই চিহ্নের পথ ধরে পুরানো পথিক বলতে পারে এই খানে নদী ছিল। নদী আর বহমা জীবন......বাঁকে বাঁকে জমে উঠে অসংখ্য চর, কোনটা উর্বর কোনটা পতিত।
তেমনি একটি চরের নাম 'সৃজনী' আমার ক্যাম্পার জীবনের। যারা কথা বলতে গিয়ে আবেগ জড়িত কণ্ঠ কিছুটা বাষ্পায়িত হয়েছিল আমাদের সুজিতের। সুজিত এই সৃজনীর গল্প পুরুষ। ছোট্ট গড়নের একটা বাঙালি ছেলে শিল্পী সুলতানের জন্মস্থান ঘ্যাঁসা এলাকার ছেলে। গলায় আছে গান আর জীবনে আছে ছন্দ। ওরাই কয়েক জন এক ক্লান্ত সময়ে মনের মিলন স্থান খুঁজতে মিলিত হয়েছিল স্বপ্নাসর রচনায়। ওরা আমার অনুজ প্রতীম সুজিত-উজ্জল-দেবু-মনোজ-শঙ্কর-সঞ্জীব-সুমন শৃঙ্খল মুক্ত একটা সাঙ্কৃতিক অংগন তৈরীর আশায়। তারপর হাত বাড়িয়েছে অনেকে, অনেকে করেছে ঋদ্ধ সেই চারা গাছটিকে (ঈর্ষায় কেউ কেউ চেয়েছে নস্যাৎ করতেও)। সৃজনী একটা সাঙ্কৃতিক সংগঠন সুজিতের রেখে আসা চারা গাছের পরিচর্যায় যারা ছিল তারাও সুজিতানুরাগী; গান ভালোবাসে ভালোবাসে কবিতা ভালোবাসে সুন্দরের পথচারী হতে।
থোকা থোকা কিছু নাম সৃজনী'র হাত ধরে উঠে আসার আমার সামনে তাদের অগ্রজের পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
সালটা ২০০২, চারিদিকে দখলদারীত্বের পায়তারা। ক্যাম্পাসও তার বাহিরে নয় আর ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক সংগঠন গুলোও। প্রায় সব বন্ধ হতে চলেছে। এমন সময় মক্ত মনা কিছু শিল্পী তাদের মন উজার করার আকুতি প্রকাশ করল। প্রকাশক সুজিত একটি ট্রিপল ই প্রযোজনায় দেয়ালিকা......নাম 'সৃজনী'।
প্রকাশমানতা আরো থেকে আরোতর হলো তৈরী হলো সংগঠন তাদের নিজস্ব উদ্যোগে যারা গান ভালোবাসে ভালোবাসে নাটক ভালোবাসে জীবন। সেই সুজিত উজ্জ্বল দেবু......সঙ্গে সমমনা কয়েক জন। গড়ে ওঠে সংগঠন-সৃজনী। দিবস কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান জমে উঠে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে।
আসে অন্য রকম দিন আন্দোলন নামান্দোলন অস্তিত রক্ষার আন্দোলন। শুরু হয় ডুয়েট আন্দোলন। উদ্ভ্রান্তের মত দিগদ্বিক ছোটা....ছোটাছুটি শেষে ক্লান্ত মন নিয়ে ফিরে আসা ঘরে। ঘরে এসে প্রশান্তির যায়গা এফ আর খান হলের সামেনের কাঠবাদামের তলা........সাঙ্কৃতিক স্কোয়াড......শিল্পী আর শিল্পী হয়ে উঠার মিলন মেলা........স্কোয়াডের ভার সুমন বসাক অর্নবের হাতে.......সহযোদ্ধার কাতারের সৃজনীর শিল্পীরা-সুজিত-উজ্জ্বল-দেবু-অমিত-শাহীন-সাকো আপা-ইতি-পপি-বকুল আরো অনেকে উৎসাহ দানের কাতারে থরে থরে চলে আসে বহু নাম। আন্দোলন সমাপ্তি.........ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় DUET.
নতুন আলোয় ক্যাম্পাস; আলোর মুখ ফুটতেই প্রত্যাবর্নের পালা। চলে এলাম ক্যাম্পাস থেকে নিয়ম বিদায়াঙ্ক অনুসরণ করে। তার কিছু দিন পরে সুমন বসাক অর্ণব আমাকে ডাক দিল -'এক কাপ চায়ে আড্ডা'। আমার জন্য এক অন্য রকম অনুভূতি 'সৃজনী' (দেশজ সংস্কৃতি বিকাশে আমরা সোচ্চার)'র তখন যারা আমাকে দিয়েছিল স্মারক উপহার তারা আজ সৃজনীর প্রাক্তন হয়ে গেছে।
বর্তমানের ডাকে ওরাও ছিল আমার সাথে সৃজনী’র অর্ধযুগ উৎসবানুষ্ঠানেঃ সুজিত, সুমন, অমিত, শংকর, মনোজ, শরীফ, সুলতান, প্রিন্স, বিপ্লব, লিটন, সেলিম, রুবেল, মাসুস আর বরকত সস্ত্রীক এবং রুবা (এখন বারডেমে অসুস্থ, দোয় চাই সুস্থতার) এছাড়া অনেকে সবাই তাদের অবস্থানে সৃজনী’কে বহন করছে। যারা আসতে পারেনি- উজ্জ্বল আমেরিকাবাসী তাই, দেবু মধ্য প্রাচ্যে থাকে কর্মের তাগিদে, সঞ্জীব অসময়ে ডাক দিয়েছিল তাই, এছাড়া অনেকে আড়ালের মুখশে থেকে কাজের ও পরিবারের তোড়ে ভেসে গেছে। আমরা তাদের উপলব্ধি করেছি বারবার।
অর্ধযুগ পূর্তি অনুষ্ঠানে আমরা সম্মাননা দিয়ে কৃতজ্ঞ হলাম- দেশ মাতৃকার জন্য হয়েছে মহান ত্যাগী একজন ভাষ্কর বিরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাসিনী’কে। অনুষ্ঠানে আতিথিয়তা গ্রহণ করেছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নাট্যজন শম্পা রেজা, পাখি বিশেষজ্ঞ উইং কমান্ডার ইনাম আল হক এবং জব্বার হোসেন সহযোগী সম্পাদক, সাপ্তাহিক।


মন্তব্য

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

পুরনো সেই দিনের কথা...

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

অর্ধযুগ পূর্তিতে শুভেচ্ছা!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।